30-12-2022, 12:36 PM
ক্যাফেতে ঢোকার সময়েই দেখেন শাক্য বসে আছেন। ওঁকে দেখেই তাড়াতাড়ি উঠে সামনের চেয়ার টেনে দেন বসার জন্য।
একটু হাসেন সঞ্চারী। এটাকেই ভদ্রতা বলে! ওঁর জীবনে কেউ এমনি করেনি আগে কখনও…
"থ্যাংকইউ ফর কামিং, মিসেস সোম। থ্যাংকইউ সো মাচ।"
"আপনি এভাবে ডাকলেন, তাই এলাম… "
"থ্যাংকইউ। আমি আসলে আপনাকে ফেসবুকে একটা মেসেজও করেছিলাম, আপনি দেখেননি।"
"না তো?"
"স্প্যাম ফোল্ডারে চলে গেছিল বোধহয়! আচ্ছা, কি খাবেন? চা না কফি? আচ্ছা, আপনি তো আইসড টী পছন্দ করেন, তাই না?"
"আপনি কিভাবে জানলেন?"
"পছন্দের মানুষ সম্পর্কে সব খবর রাখতে হয় যে…" মিটিমিটি হাসতে হাসতে বলেন শাক্য।
'পছন্দের মানুষ!' কান, গাল গরম হচ্ছে সঞ্চারীর।
"হ্যাঁ…" তারপর একটু থেমে বলেন "আমার নাম তো শুনেইছেন - শাক্য মুখার্জী। এই কোম্পানিতে সিনিয়র ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছি, সামনে আরেকটা প্রোমোশন আছে পাওনা। হয়ত অন্য কোথাও চলে যাব… "
"আচ্ছা…"
"তার আগেই মিট করতে চাইছিলাম। আসলে… আমি…। ওকে… আমি খুলেই বলি সব, আমার আগে একটা বিয়ে হয়েছিল। কিছু কারণে টেকে নি সেটা। আমি তার দোষ দিই না, ইট ওয়াজ আ মিউচুয়াল ডিসিশান।"
"ওহ"
"আমার বয়স থার্টি সিক্স। হয়ত একটু বেশি। বাট আজকালকার দিনে এটা কি ম্যাটার করে খুব একটা?"
"ম্ মানে?" ভয় হচ্ছে সঞ্চারীর! ছেলেটি বুকের আওয়াজ শুনে ফেলবে না তো?
আর এরকম হচ্ছেই বা কেন? অদ্ভুত তো! বয়সকালে কখনও হয়নি… আর এখন… এই মেনোপজের সময়ে…
"মিসেস সোম? আর ইউ হিয়ার? প্লিজ বলুন, আপনার মত আছে?" 'গভীর গলা' কানে এলো আবার।
"মত? কিসের?"
"ওই যেটা বললাম… জিয়াকেও আসতে বলেছিলাম, কিন্তু শী ইজ টুউ শাই! বলছে আপনি যদিও ওর বন্ধুর মতো,,তাও ও আপনাকে কিছুতেই বলতে পারেনি আমাদের ব্যাপারে। আপনি নাকি আজও জিজ্ঞেস করেছিলেন? আসলে 'মা' তো, বুঝেছিলেন সবই, তাই না? দেখুন, আমার আর জিয়ার কিছু এজ গ্যাপ থাকলেও, আই লাভ হার আ লট! আমার পাস্টের কোনো ছায়া আমি পড়তে দেব না ওর মধ্যে।" একটানা বলে চলেন শাক্য।
আর বারবার একটাই কথা কানে আসে "জিয়া… আই লাভ হার আ লট!"
এটাই তো হবার ছিল!
সামান্য ক'টা কমেন্ট দেখে ভেবে নিয়েছিলেন…নাহ্!
আর মেয়েটাও কিচ্ছু বলেনি! 'শাই' নাকি! হুহ্!
আর ওঁরও বোঝা উচিৎ ছিল… পোষাকী 'জিনিয়া' নয়, 'জিয়া' বলে ডাক… বাড়ির কাছের কফি শপটার কথা জানা…
চেনাশোনা, মেলামেশা না থাকলে হয়?
কিন্তু, বুকের লাবডুব যে মরেও না!
আত্মজার জন্য হিংসে নয়… আবার বাঁধভাঙা খুশিও না… কেমন থম মেরে যাচ্ছেন উনি…
একটা ডিপ ব্রেথ নেন সঞ্চারী। আহ্!
"দেখুন, মেয়েটাকে সেভাবে কিছুই দিতে পারিনি। ভাল টিউটার ও না। যতটুকু পেরেছে নিজের চেষ্টায়। তবে খুব আদরের মেয়ে। তাই একটু ভাবতে দিন আমাকে…" ধীর গলায় বলেন সঞ্চারী।
উল্টোদিকে শাক্য চুপ।
"আপনার বাড়িতে কে কে আছেন? একদিন আসুন না আমাদের বাড়িতে। বসে কথা বলা যাবে?" একটু হাসেন বলতে বলতে উনি।
"ইজ দ্যাট আ 'ইয়েস'? মিটিমিটি হাসেন শাক্য।
কিচ্ছু বলেন না সঞ্চারী। একটু হেসে উঠে পড়েন। তারপর বেরিয়ে আসেন কফি শপ থেকে।
বিলটাও দেওয়া হলো না…
অন্তত অফারটুকু করা উচিৎ ছিল…
পিছন ফিরে তাকালেন একবার। ফোনে কথা বলছেন শাক্য, হাসিমুখে।
হয়ত অপরপ্রান্তে জিয়া ই…
সে ও হাসছে নিশ্চয়ই…
আহা! হাসুক!
সঞ্চারীর তো জাস্ট… ওই কি বলে? 'মিড লাইফ ক্রাইসিস' ছিল একটা…
চারিদিকে এত 'ক্রাশ ক্রাশ' শোনেন, তাই একটা...
ও কিছু নয়...
কিচ্ছু নয়...
মাথা নাড়তে নাড়তে বাড়ির পথ ধরেন সঞ্চারী…
কতকিছুর আওয়াজ পাওয়া যায়, শুধু মন ভাঙাই শব্দহীন…
"জুড়িয়ে দিল চোখ আমার
পুড়িয়ে দিল চোখ…
বাড়িতে এসে বলেছিলাম
ওদের ভাল হোক…"।।
রূপান্বিতা রায়
একটু হাসেন সঞ্চারী। এটাকেই ভদ্রতা বলে! ওঁর জীবনে কেউ এমনি করেনি আগে কখনও…
"থ্যাংকইউ ফর কামিং, মিসেস সোম। থ্যাংকইউ সো মাচ।"
"আপনি এভাবে ডাকলেন, তাই এলাম… "
"থ্যাংকইউ। আমি আসলে আপনাকে ফেসবুকে একটা মেসেজও করেছিলাম, আপনি দেখেননি।"
"না তো?"
"স্প্যাম ফোল্ডারে চলে গেছিল বোধহয়! আচ্ছা, কি খাবেন? চা না কফি? আচ্ছা, আপনি তো আইসড টী পছন্দ করেন, তাই না?"
"আপনি কিভাবে জানলেন?"
"পছন্দের মানুষ সম্পর্কে সব খবর রাখতে হয় যে…" মিটিমিটি হাসতে হাসতে বলেন শাক্য।
'পছন্দের মানুষ!' কান, গাল গরম হচ্ছে সঞ্চারীর।
"হ্যাঁ…" তারপর একটু থেমে বলেন "আমার নাম তো শুনেইছেন - শাক্য মুখার্জী। এই কোম্পানিতে সিনিয়র ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছি, সামনে আরেকটা প্রোমোশন আছে পাওনা। হয়ত অন্য কোথাও চলে যাব… "
"আচ্ছা…"
"তার আগেই মিট করতে চাইছিলাম। আসলে… আমি…। ওকে… আমি খুলেই বলি সব, আমার আগে একটা বিয়ে হয়েছিল। কিছু কারণে টেকে নি সেটা। আমি তার দোষ দিই না, ইট ওয়াজ আ মিউচুয়াল ডিসিশান।"
"ওহ"
"আমার বয়স থার্টি সিক্স। হয়ত একটু বেশি। বাট আজকালকার দিনে এটা কি ম্যাটার করে খুব একটা?"
"ম্ মানে?" ভয় হচ্ছে সঞ্চারীর! ছেলেটি বুকের আওয়াজ শুনে ফেলবে না তো?
আর এরকম হচ্ছেই বা কেন? অদ্ভুত তো! বয়সকালে কখনও হয়নি… আর এখন… এই মেনোপজের সময়ে…
"মিসেস সোম? আর ইউ হিয়ার? প্লিজ বলুন, আপনার মত আছে?" 'গভীর গলা' কানে এলো আবার।
"মত? কিসের?"
"ওই যেটা বললাম… জিয়াকেও আসতে বলেছিলাম, কিন্তু শী ইজ টুউ শাই! বলছে আপনি যদিও ওর বন্ধুর মতো,,তাও ও আপনাকে কিছুতেই বলতে পারেনি আমাদের ব্যাপারে। আপনি নাকি আজও জিজ্ঞেস করেছিলেন? আসলে 'মা' তো, বুঝেছিলেন সবই, তাই না? দেখুন, আমার আর জিয়ার কিছু এজ গ্যাপ থাকলেও, আই লাভ হার আ লট! আমার পাস্টের কোনো ছায়া আমি পড়তে দেব না ওর মধ্যে।" একটানা বলে চলেন শাক্য।
আর বারবার একটাই কথা কানে আসে "জিয়া… আই লাভ হার আ লট!"
এটাই তো হবার ছিল!
সামান্য ক'টা কমেন্ট দেখে ভেবে নিয়েছিলেন…নাহ্!
আর মেয়েটাও কিচ্ছু বলেনি! 'শাই' নাকি! হুহ্!
আর ওঁরও বোঝা উচিৎ ছিল… পোষাকী 'জিনিয়া' নয়, 'জিয়া' বলে ডাক… বাড়ির কাছের কফি শপটার কথা জানা…
চেনাশোনা, মেলামেশা না থাকলে হয়?
কিন্তু, বুকের লাবডুব যে মরেও না!
আত্মজার জন্য হিংসে নয়… আবার বাঁধভাঙা খুশিও না… কেমন থম মেরে যাচ্ছেন উনি…
একটা ডিপ ব্রেথ নেন সঞ্চারী। আহ্!
"দেখুন, মেয়েটাকে সেভাবে কিছুই দিতে পারিনি। ভাল টিউটার ও না। যতটুকু পেরেছে নিজের চেষ্টায়। তবে খুব আদরের মেয়ে। তাই একটু ভাবতে দিন আমাকে…" ধীর গলায় বলেন সঞ্চারী।
উল্টোদিকে শাক্য চুপ।
"আপনার বাড়িতে কে কে আছেন? একদিন আসুন না আমাদের বাড়িতে। বসে কথা বলা যাবে?" একটু হাসেন বলতে বলতে উনি।
"ইজ দ্যাট আ 'ইয়েস'? মিটিমিটি হাসেন শাক্য।
কিচ্ছু বলেন না সঞ্চারী। একটু হেসে উঠে পড়েন। তারপর বেরিয়ে আসেন কফি শপ থেকে।
বিলটাও দেওয়া হলো না…
অন্তত অফারটুকু করা উচিৎ ছিল…
পিছন ফিরে তাকালেন একবার। ফোনে কথা বলছেন শাক্য, হাসিমুখে।
হয়ত অপরপ্রান্তে জিয়া ই…
সে ও হাসছে নিশ্চয়ই…
আহা! হাসুক!
সঞ্চারীর তো জাস্ট… ওই কি বলে? 'মিড লাইফ ক্রাইসিস' ছিল একটা…
চারিদিকে এত 'ক্রাশ ক্রাশ' শোনেন, তাই একটা...
ও কিছু নয়...
কিচ্ছু নয়...
মাথা নাড়তে নাড়তে বাড়ির পথ ধরেন সঞ্চারী…
কতকিছুর আওয়াজ পাওয়া যায়, শুধু মন ভাঙাই শব্দহীন…
"জুড়িয়ে দিল চোখ আমার
পুড়িয়ে দিল চোখ…
বাড়িতে এসে বলেছিলাম
ওদের ভাল হোক…"।।
রূপান্বিতা রায়