30-12-2022, 12:34 PM
কোভিডের সময়েই সঞ্চারীর অফিস থেকে কয়েকজনের ছাঁটাই হয়েছিল। উনিও ছিলেন তাঁদের মধ্যে। তবে মোটামুটি একটা কমপেনসেশান পাওয়া গেছিল। জিয়াও চাকরি পেয়ে গেছিল। তাই খুব বেশি চিন্তার মধ্যে পড়তে হয়নি। এখনও তাই মোটামুটি ঠিকই আছেন সঞ্চারী। শুধু দুপুরগুলোই বড্ড বড় যেন। কাটতেই চায় না। বইপত্র পড়ার সেভাবে অভ্যাস নেই ওঁর, তাই এদিক ওদিকের ভিডিও দেখেই সময় কাটান। আজ ফোন করলেন একবার মেয়েকে।
"হ্যালো? বলো?" তাড়া লাগানো গলায় বলল জিয়া।
"কি করছিস?"
"এই একটা মিটিং থেকে বেরোলাম। কিছু হয়েছে? শরীর ঠিক আছে তো তোমার?" একনিঃশ্বাসে বলে মেয়ে।
একটু থমকে যান সঞ্চারী।
সত্যি তো, উনি অফিসে থাকাকালীন ফোন এলে উনিও তো বিরক্ত আর উৎকন্ঠিত হতেন…
"না না এমনি। লাঞ্চ করেছিস?"
"মা! জাস্ট একটা বাজে। আরেকটু পরে করব। রাখি?"
কিছু বলার আগেই ফোন কেটে দিয়েছিল মেয়ে। রেগে গেল কি? এভাবে ফোন না করলেও পারতেন…
বসে থাকতে থাকতেই তন্দ্রা মতো এসেছিল ওঁর। কিন্তু ফোনের আওয়াজে কেটে গেল।
জিয়া।
"হ্যালো?"
"মা? কি করছিলে?"
"তেমন কিছু না। এই একটু…"
"আচ্ছা শোনো না! তোমার এই নতুন ধোসা তো সুপারহিট। খুব ভাল খেয়েছি…।"
"তাই? বাহ!"
"আর তুমি ভাবছিলে কেমন না কেমন হবে! আচ্ছা… শোনো একটু ফোনটা ধরো, একজন কথা বলবে…" জিয়া বলার সঙ্গে সঙ্গেই আরেকটি গভীর কন্ঠ ভেসে এলো "হ্যালো মিসেস সোম! ডিস্টার্ব করছি না তো আপনাকে?"
"না না" তাড়াতাড়ি বলে উঠলেন সঞ্চারী।
"আমার নাম শাক্য মুখার্জী। আমি জিয়ার কলিগ।"
"ও.. আচ্ছা…" কি বলবেন বুঝতে পারছেন না সঞ্চারী।
"আসলে আমি রোজ জিয়ার টিফিনে ভাগ বসাই। আপনি আমাদের লোকাল মাষ্টারশেফ!"
"আরে না না, আমি তেমন কিছু পারিনা।"
"বলেন কি মিসেস সোম! আপনি পারেন না? জিয়ার কাছে শুনেছি আপনি কত ফাইট করে ওকে বড় করেছেন। তাই হয়ত, ইভেন শী ইজ আ ফাইটার। নইলে আমাদের অফিসের ডেডলাইন আর টার্গেটের চাপ সহ্য করা বেশ শক্ত।"
"কী যে বলি… থ্যাংকইউ! " লজ্জা লজ্জা গলায় বলেন সঞ্চারী।
"আচ্ছা, একটা কথা বলার ছিল আপনাকে। আপনার ফোন নাম্বারটা পেতে পারি?"
"ওকে। নাইন এইট থ্রি…" বলতে বলতে কাঁপছিলেন ভেতর ভেতর সঞ্চারী।
"থ্যাংকইউ। প্লিজ, জিয়া কে বলবেন না আমি আপনার নাম্বারটা নিয়েছি। আর, আমি আপনাকে একটু পরে ফোন করতে পারি একবার? একটা কথা বলার ছিল।"
কোনোরকমে "হ্যাঁ" বলে ফোনটা রেখে দেন সঞ্চারী।
বুকের মাঝে লাবডুব হচ্ছে একটা।
ফোন কেন করতে চান উনি?
আর নিজেকে এতটা অচেনাই বা লাগছে কেন? মনে হচ্ছে যেন আঠেরোর যুবতী! চেনেন না শোনেন না… সামান্য ক'টা ফেসবুকের ছবি দেখে…
কিন্তু 'গর্জিয়াস' বলেছেন এই শাক্যবাবু ওঁকে।
কোনোদিন এই কথাটা কেউ বলেনি…
আপন মনেই জিয়ার ইনস্টল করে দেওয়া অ্যাপটা খুললেন সঞ্চারী। এখনও অ্যাপ থেকে কেনাকাটা করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না উনি। বরং পাড়ার দোকানই বেশি প্রিয়। তাও দেখতে ভাল লাগছিল। জিয়ার তো সবই এখন অনলাইন শপিং। পুজোর জামাটাও…
ভাবতে ভাবতেই ফোন এলো "হ্যালো? মিসেস সোম? আমি শাক্য।"
"হ্যাঁ, বলুন।"
"আসলে, অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম আপনার সাথে কথা বলব। সুযোগ পাচ্ছিলাম না। আজ পেলাম।"
"বলুন…"
"একবার দেখা করা যায়, প্লিজ?"
"দেখা? কেনো বলুন তো?" উফ! এই হতচ্ছাড়া হার্টটা আজ ফেইল করবেই।
"প্লিজ, কারণটা ফোনে জানতে চাইবেন না। আই নিড টু স্পিক টু ইউ। প্লিজ।"
"আচ্ছা… ওকে…"
"আজ হবে? আপনার সুবিধা মতো?"
"আজই কেন?"
"আমি আর লেট করতে চাই না তাই। এমনিতেই আমার জন্যই দেরি হয়ে গেছে অনেকটা। বছরের শেষটা ভাল হোক, সেটাই চাই।"
"আচ্ছা… কোথায়? আসলে আমি এভাবে কখনও দেখা করিনি কারো সাথে.."
"আমি বুঝতে পারছি। আপনার বাড়ির কাছেই একটা ক্যাফে আছে না? সেখানে আসি? ছ'টা নাগাদ? প্পিজ?"
"আচ্ছা.."
'আচ্ছা' বলেও বিপদে পড়লেন সঞ্চারী । মাত্র ঘন্টাতিনেক সময় আছে হাতে। কি যে পরবেন…
আচ্ছা, এত ভাবছেন ই বা কেন? যা খুশি একটা পরলেই তো হয়…
কিন্তু যা খুশি না, সাদা চিকনের শাড়িটাই পরেন উনি। একটা ঝুটো মুক্তোর হার গলায়। হাতে ঘড়ি… ব্যস। আর, হাল্কা গোলাপী লিপস্টিক…
"হ্যালো? বলো?" তাড়া লাগানো গলায় বলল জিয়া।
"কি করছিস?"
"এই একটা মিটিং থেকে বেরোলাম। কিছু হয়েছে? শরীর ঠিক আছে তো তোমার?" একনিঃশ্বাসে বলে মেয়ে।
একটু থমকে যান সঞ্চারী।
সত্যি তো, উনি অফিসে থাকাকালীন ফোন এলে উনিও তো বিরক্ত আর উৎকন্ঠিত হতেন…
"না না এমনি। লাঞ্চ করেছিস?"
"মা! জাস্ট একটা বাজে। আরেকটু পরে করব। রাখি?"
কিছু বলার আগেই ফোন কেটে দিয়েছিল মেয়ে। রেগে গেল কি? এভাবে ফোন না করলেও পারতেন…
বসে থাকতে থাকতেই তন্দ্রা মতো এসেছিল ওঁর। কিন্তু ফোনের আওয়াজে কেটে গেল।
জিয়া।
"হ্যালো?"
"মা? কি করছিলে?"
"তেমন কিছু না। এই একটু…"
"আচ্ছা শোনো না! তোমার এই নতুন ধোসা তো সুপারহিট। খুব ভাল খেয়েছি…।"
"তাই? বাহ!"
"আর তুমি ভাবছিলে কেমন না কেমন হবে! আচ্ছা… শোনো একটু ফোনটা ধরো, একজন কথা বলবে…" জিয়া বলার সঙ্গে সঙ্গেই আরেকটি গভীর কন্ঠ ভেসে এলো "হ্যালো মিসেস সোম! ডিস্টার্ব করছি না তো আপনাকে?"
"না না" তাড়াতাড়ি বলে উঠলেন সঞ্চারী।
"আমার নাম শাক্য মুখার্জী। আমি জিয়ার কলিগ।"
"ও.. আচ্ছা…" কি বলবেন বুঝতে পারছেন না সঞ্চারী।
"আসলে আমি রোজ জিয়ার টিফিনে ভাগ বসাই। আপনি আমাদের লোকাল মাষ্টারশেফ!"
"আরে না না, আমি তেমন কিছু পারিনা।"
"বলেন কি মিসেস সোম! আপনি পারেন না? জিয়ার কাছে শুনেছি আপনি কত ফাইট করে ওকে বড় করেছেন। তাই হয়ত, ইভেন শী ইজ আ ফাইটার। নইলে আমাদের অফিসের ডেডলাইন আর টার্গেটের চাপ সহ্য করা বেশ শক্ত।"
"কী যে বলি… থ্যাংকইউ! " লজ্জা লজ্জা গলায় বলেন সঞ্চারী।
"আচ্ছা, একটা কথা বলার ছিল আপনাকে। আপনার ফোন নাম্বারটা পেতে পারি?"
"ওকে। নাইন এইট থ্রি…" বলতে বলতে কাঁপছিলেন ভেতর ভেতর সঞ্চারী।
"থ্যাংকইউ। প্লিজ, জিয়া কে বলবেন না আমি আপনার নাম্বারটা নিয়েছি। আর, আমি আপনাকে একটু পরে ফোন করতে পারি একবার? একটা কথা বলার ছিল।"
কোনোরকমে "হ্যাঁ" বলে ফোনটা রেখে দেন সঞ্চারী।
বুকের মাঝে লাবডুব হচ্ছে একটা।
ফোন কেন করতে চান উনি?
আর নিজেকে এতটা অচেনাই বা লাগছে কেন? মনে হচ্ছে যেন আঠেরোর যুবতী! চেনেন না শোনেন না… সামান্য ক'টা ফেসবুকের ছবি দেখে…
কিন্তু 'গর্জিয়াস' বলেছেন এই শাক্যবাবু ওঁকে।
কোনোদিন এই কথাটা কেউ বলেনি…
আপন মনেই জিয়ার ইনস্টল করে দেওয়া অ্যাপটা খুললেন সঞ্চারী। এখনও অ্যাপ থেকে কেনাকাটা করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না উনি। বরং পাড়ার দোকানই বেশি প্রিয়। তাও দেখতে ভাল লাগছিল। জিয়ার তো সবই এখন অনলাইন শপিং। পুজোর জামাটাও…
ভাবতে ভাবতেই ফোন এলো "হ্যালো? মিসেস সোম? আমি শাক্য।"
"হ্যাঁ, বলুন।"
"আসলে, অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম আপনার সাথে কথা বলব। সুযোগ পাচ্ছিলাম না। আজ পেলাম।"
"বলুন…"
"একবার দেখা করা যায়, প্লিজ?"
"দেখা? কেনো বলুন তো?" উফ! এই হতচ্ছাড়া হার্টটা আজ ফেইল করবেই।
"প্লিজ, কারণটা ফোনে জানতে চাইবেন না। আই নিড টু স্পিক টু ইউ। প্লিজ।"
"আচ্ছা… ওকে…"
"আজ হবে? আপনার সুবিধা মতো?"
"আজই কেন?"
"আমি আর লেট করতে চাই না তাই। এমনিতেই আমার জন্যই দেরি হয়ে গেছে অনেকটা। বছরের শেষটা ভাল হোক, সেটাই চাই।"
"আচ্ছা… কোথায়? আসলে আমি এভাবে কখনও দেখা করিনি কারো সাথে.."
"আমি বুঝতে পারছি। আপনার বাড়ির কাছেই একটা ক্যাফে আছে না? সেখানে আসি? ছ'টা নাগাদ? প্পিজ?"
"আচ্ছা.."
'আচ্ছা' বলেও বিপদে পড়লেন সঞ্চারী । মাত্র ঘন্টাতিনেক সময় আছে হাতে। কি যে পরবেন…
আচ্ছা, এত ভাবছেন ই বা কেন? যা খুশি একটা পরলেই তো হয়…
কিন্তু যা খুশি না, সাদা চিকনের শাড়িটাই পরেন উনি। একটা ঝুটো মুক্তোর হার গলায়। হাতে ঘড়ি… ব্যস। আর, হাল্কা গোলাপী লিপস্টিক…