25-12-2022, 09:56 PM
তমসা বাড়ি গিয়ে বাথরুমে গেল ফ্রেশ হতে। রাগে গজ গজ করছিল ও, ছেলেটা প্রচণ্ড বদ, একেবারে দুশ্চরিত্র ছেলে। ওত গুলো লোকের সামনে যে ভাবে ওর দিকে তাকাচ্ছিল ওর কেমন গা ঘিন ঘিন করছিল, ইচ্ছে করছিল ঠাস করে একটা সাপাটে চড় কসিয়ে দেয় কিন্তু ওর ইনফ্লুয়েন্স পাওয়ার আর হবু এম এল এ হওয়ার জন্য ও ঐরকম একটা প্রোগ্রামে কিছু করতে পারে নি।
এদিকে তমসা কে এত কাছে থেকে দেখার পর থেকে হোসেন পাগল হয়ে গেছে প্রায়। দিন রাত পরিতোষ আর পারিজাতের ফাইল হাথে নিয়ে বসে আছে আর প্লান করে যাচ্ছে কি করে এদের কে ফাঁসানো যায়। পরিতোষের ক্লিন রেকর্ড দেখতে দেখতে হোসেন বিড় বিড় করে উঠল পরিতোষ বাবু আপনি নিতান্তই ভাল ছেলে বাট কি আর করবেন ব্লুন আপনার একটাই দোষ আছে যে আপনার অমন একটা ডাঁশা গতরের মা আছে। অনেক ক্ষণ ধরে ভাবনা চিন্তা করে হোসেন একটা কল করল আর তারপর গাড়ি নিয়ে বেরল।
এই সবে দু দিন হল পরিতোষের ট্রান্সফার হয়েছে একটা বড় ডিপার্টমেন্টে। ও নিজেও বেশ অবাক হয়েছে এই ট্রান্সফার টায়। তবে এমন একটা পোস্টে ও এসেছে যে খুব সেনসিটিভ সব ইসু তাঁর দায়িত্বে এসেছে যেমন বর্ডার এলাকা দিয়ে স্মাগ্লিং। পরিতোষ গিয়ে বাড়িতে সেই দিন খাবার টেবিলে তাঁর নতুন প্রমসান আর বারতি দায়িত্বের ব্যাপারে সবাই কে বলল। সবাই খুব খুশি হল আর তাকে বাহবা দিল বাট তমসার ব্যাপার টা খচ খচ করতে লাগল। যেদিন থেকে ও হোসেনের ব্যাপারে শুনেছে সেদিন থেকেই ও হোসেনের ব্যাপারে খোঁজ নিতে শুরু করেছে আর তাতে ও যা জেনেছে তাতে এই ট্রান্সফার টা যে কিভাবে হয়েছে তা কেউ না বুঝলেও তমসা ঠিক বুঝেছে। আর তাই ও ঠিক করেছে আজ এই ব্যাপার টার একটা হেস্ত নেস্ত করতেই হবে। প্রথমেই ওকে এই সব বন্ধ করতে হবে না হলে ওর সঙ্গে সঙ্গে ওর পরিবারেরও সর্বনাশ করে দেবে ঐ হোসেন। তমসা খবর নিয়ে শুনেছে, ঐ হোসেনের নেশা হচ্ছে ম্যাচিয়র * গৃহবধূ বা মা। আর বাঙালি নারী দের প্রতি তো ওর একটা বারতি নেশা আছে। তমসা যত শুনেছে ঐ জানোয়ারটার ব্যাপারে ততই ওর মাথায় আগুন জ্বলে গেছে কিন্তু ও কি করবে ঠিক বুঝতে পারছে না তাই ও ঠিক করল যে ও খুব শিগগিরি ওর বন্ধু পুলিশ কমিশানারের (যার বউ অনুত্তমা কে হোসেন খেয়েছে) সঙ্গে দেখা করবে।
এদিকে হোসেন সেদিন দুপুরে আই এস পরিতোষ ভট্টাচার্যের অফিসে এসে পৌঁছল, সঙ্গে তার গুণধর ভাই খালিদ। পরিতোষ অবাক হয়ে গিয়েছিল হটাৎ করে যখন সেক্রেটারি এসে বলল স্যার হোসেন সাহেব এসেছেন আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান। একটু ভেবে পরিতোষ বলল নিয়ে এস ওনাকে। হোসেন এসেই এক গাল হাঁসি দিয়ে বলল, পরিতোষ বাবু এসেছিলাম এই অঞ্চলেই, আসলে এই বর্ডার এলাকায় আমারও বেশ কিছু বিশনেস আছে, তাই ভাবলাম আপনার সঙ্গে দেখা করে আসি। পরিতোষ একটু হাসার চেষ্টা করল আর বলল ভালই করেছেন। এ কথার সে কথার পর হোসেন হট করে বলে বসল আপনার সঙ্গে দেখা করার আমার আর একটা কারন আছে আর সেটা খুবই ব্যেক্তিগত বলে ও সেক্রেটারির দিকে তাকাল। পরিতোষ ওর সেক্রেটারি কে বলল একটু বাইরে যেতে। সেক্রেটারি বাইরে গেলে হোসেন বলল আসলে কিছুই না আপনাকে দেখতে আমার খুব ভাল লাগে কারন আপনাকে দেখলেই আমার আপনার মায়ের কথা মনে হয়, উফফফফফফফফফফফফ ওমন একটা মহিলা ভাবা যায়! পরিতোষ হোসেনের সম্পর্কে খানিকটা জানত বাট ও যে এত টা অসভ্য সেটা ও ভাবতেও পারে নি। পরিতোষ বেশ রেগে বলল, আপনি বলতে কি চান? সন্মান দিয়ে কথা ব্লুন, উনি একজন সন্মানীয় মহিলা। হোসেন এবার বেশ ঠাণ্ডা গলায় বলল, সে তো বটেই পরিতোষ বাবু উনার মত মহিলা আমি জীবনে এর আগে দেখিনি। আর এটাই আমার আফসোস যে উনাকে আমি আগে কেন দেখিনি। বাট এনিওয়ে আগে না দেখলেও এখন তো দেখলাম আর সত্যি বলছি পরিতোষ বাবু আপনার মা কে দেখে আমি ধন্য হয়ে গেছি কিন্তু কি জানেন শুধু দেখে ধন্য থাকার বান্দা তো আর এই মাহামাদুল্লাহ হোসেন নয় তাই……………….। পরিতোষ এবার বেশ রাগ মিশ্রিত কৌতূহল নিয়ে বলল তাই কি? হোসেন বলল তাই টা এত তারাতারি জেনে কি করবেন তার জন্য অনেক সময় আছে। এনিওয়ে আচ্ছা একটা কথা ব্লুন পরিতোষ বাবু আপনার মা এমন একজন মহীয়সী সুন্দরী স্বর্গের অপ্সরা যার পায়ের নখ থেকে মাথার চুল অব্ধি সবটাই যে কোন পুরুষ কে ধন্য করে দেওয়ার মত সঙ্গে ওনার এমন মহময়ি ব্যেক্তিত, তার সামনে আপনার বাবা কে এমন একটু ছোট ছোট মনে হয় না। পরিতোষ এবার খুব রেগে গেল, মানে টা কি আপনি কি এখানে আমার সঙ্গে এসব আলোচনা করতে এসেছেন? মনে রাখবেন এটা আমার পারিবারিক কথা বলার জায়গা নয় আর আমি আমার ব্যেক্তিগত কোন কথা আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে চাই না। আর তাছাড়া আপনি আমার বাবা কে ছোট বলার কে? কি জানেন আপনি আমার বাবার সম্বন্ধে? হোসেন যেন বল টা লুফে নিল আর বলল, বেশি না জানলেও যে টুকু জানি তাতে আমার মনে হয় যে আপনার মায়ের সামনে উনি কিছুই নয়। আপনার মায়ের তো কোন একজন বড় স্ট্রাচারের সম্ভ্রান্ত ব্যেক্তিতবান পুরুষ প্রয়োজন ছিল। আই থিঙ্ক পরিতোষ বাবু “ইউ ডিস্রাভ এ মোর পাওয়ারফুল ফাদার”। পরিতোষ আর সহ্য করতে পারল না, দাঁড়িয়ে উঠে হোসেন কে বলল জাস্ট গেট আউট অফ মাই অফিস। আপনার মত অস্যভ লোকের সঙ্গে কথা বলতে আমার রুচিতে বাঁধে। আপনার বিরুদ্ধে আমি পুলিশ কমপ্লেন করব। হোসেন দাঁড়িয়ে উঠল আর বলল, তাই নাকি? বটে তো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ টা কি শুনি? পরিতোষ বলল আপনি আমার মায়ের সম্পর্কে কুরুচিকর কথা বলেছেন। হোসেন হা হা হা করে হেঁসে উঠল আর বলল কারোর প্রশংসা করা টা নিশ্চয় কুরুচিকর মন্তব্যের মধ্যে পরে না পরিতোষ বাবু? এনিওয়ে আপনি চাইলে স্বছন্দে কমপ্লেন করতে পারেন। তবে কমপ্লেন যখন করবেনই তখন জেনে রাখুন আপনার যেকোনো কমপ্লেন সামলানোর বা উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে, মানে আমি তো আর আপনার বাবার মত পুরুষ নই তাই আপনার এসব থ্রেট সামলানোর পাওয়ার আমার আছে, মানে কি ব্লুন তো আমার সব কিছুই একটু বড় বড়, লারজার দ্যান লাইফ, সবকিছুই……বলতে বলতে হোসেন ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।