Poll: চটি গল্প এর পাশাপাশি ভিন্ন ধরনের গল্প কি চলবে।
You do not have permission to vote in this poll.
Yes
77.78%
7 77.78%
No
22.22%
2 22.22%
Total 9 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 3.13 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
থ্রিলার গল্প -সাজু ভাই - সিরিজ - (গল্প: সাজু ভাই) (সমাপ্ত গল্প)
#20
 পর্ব:-০৯





খুনি ধরা পরেছে শুনে বিভিন্ন পত্রিকা থেকে ছবি তোলার জন্য সাংবাদিক এসেছে। তাদেরকে একা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে কনস্টেবল, কিন্তু তার কাছে বেশ লাগছে। সাজু ভাইকে যখন জেলে যেতে হয়েছে ঠিক তার আগেই সে সকলের সামনে মোবাইল বের করে দ্রুত একটা মেসেজ সেন্ট করে দিল। গতকাল রাতে সাজু মেসেঞ্জারে মেসেজ পাঠানোর সময় এটাও লিখে রেখেছিল।

কালকে রাতে সাজু ভাই তার বন্ধু সজীবকে ওই মেসেজ লিখেছিল, আর এখন যেটা দিয়েছে সেটাও সজীবকে দিয়েছে। 

গতকাল রাতের মেসেজ ছিল:- 

সজীব, এখানের পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এখর মনে হয় আমাকেও জেলে যেতে হবে তাই অসমাপ্ত কাজ করতে তোকে টাঙ্গাইলে আসতে হবে। সরাসরি টাঙ্গাইলের বাসে না এসে তুই ঢাকা নেমে যাবি, তারপর মনির ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে আমার কিছু তথ্য নিয়ে আসবি। একটা নাম্বার দিয়ে কল এসেছিল আমার কাছে, আমি সেই নাম্বার মনির ভাইয়ের কাছে দিয়ে দিচ্ছি। মনির ভাই সেই নাম্বার দিয়ে তার সবকিছু ডিটেইলস বের করবে, সাবধান কারণ সবকিছু গোপন রাখতে হবে। 

আমাদের দুজনের কলের কথাবার্তার রেকর্ডস আমার কাছে রয়েছে। আমি তোর হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার সেই রেকর্ড পাঠিয়ে দিচ্ছি, আমাকে কল করা সেই নাম্বারের যাবতীয় ডিটেইলস বের করে তুই মোটামুটি ৫০% এগিয়ে যেতে পারবি। তারপর তুই মিরপুরে আজমল আঙ্কেলের সঙ্গে দেখা করে নিবি কারণ তিনিও তোকে কিছু জানাবে। হয়তো সময় লাগবে কিন্তু তবুও সেই তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত তুই টাঙ্গাইলে আসলেও কোন লাভ হবে না। 

কি কি বের করতে হবে সবকিছু তাদের বলা হয়ে গেছে, তুই শুধু রেজাল্ট নিয়ে আসবি। তারপর সেই রেজাল্ট নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করবি, তবে আমার মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই আমার সঙ্গে তোর যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। যদি সত্যি সত্যি সেটা হয় তাহলে সকাল বেলা আমি আরেকটা মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দেবো। 

----

সকাল বেলা দ্বিতীয় মেসেজ:-

আমার ধারণা সত্যি হয়েছে, তোকে ঠিক যতটুকু বলা হয়েছে ঠিক তাই তাই করবি। মুনির ভাই এবং আজমল আঙ্কেলের কাছ থেকে রেজাল্ট না নিয়ে টাঙ্গাইলে আসবি না। আমাকে এখন জেলে যেতে হচ্ছে তাই যোগাযোগ বন্ধ থাকবে, হয়তো আমি রিমান্ডের সম্মুখীন হবো কিন্তু তোর আনা রেজাল্ট ছাড়া কিন্তু মুখ খুলতে পারবো না। খুনি মোটামুটি আমার চোখের সামনে ভাসছে, কিন্তু সেটা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। টাঙ্গাইলে এসেই আগে তুই রুহির বিষয় একটু খোঁজ নিয়ে নিবি কারণ রুহি কোথায় সেটাও জানা দরকার। 

খবরদার তুই সজীব পরিচয় নিয়ে বা আমার বন্ধু সেই হিসাবে টাঙ্গাইলে প্রবেশ করবি না। তোকে কিন্তু একজন সাংবাদিক বা অন্যকিছু রূপ ধরে আসতে হবে নাহলে ঝামেলা হবে। সেই হিসেবে তুই কারওয়ান বাজারে গিয়ে জাহাঙ্গীর টাওয়ারে যেতে পারো, একসঙ্গে দুটো কাজ করতে পারবি। একুশে টিভির সাংবাদিক আতিক আহমেদ এর সঙ্গে দেখা করতে পারিস, আর এয়ার আরাবিয়্যা অফিসে গিয়ে বাকি কাজটা শেষ করবি। 

- - - - -

অফিসে বসে মেসেজ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সজীব তার স্যারের কাছে ছুটির আবেদন দিল। তারপর ছুটি নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে সরাসরি বাসায় গিয়ে সামান্য কাপড়চোপড় নিয়ে বেরিয়ে গেল। চট্টগ্রাম থেকে দিনরাত ২৪ ঘন্টা ঢাকার বাস পাওয়া যায় তাই এখনই রওনা দিয়েছে। এঁকে খান মোড় থেকে "ইউনিক" পরিবহনের টিকিট সংগ্রহ করে বাসের অপেক্ষা করতে লাগলো। চট্টগ্রাম থেকে বাস যখন ছাড়লো তখন সময় সাড়ে বারোটা পেরিয়ে গেল। 

পাঁচ ঘন্টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে সজীব সরাসরি প্রথমে গেল কারওয়ান বাজার। এয়ার আরাবিয়্যা অফিস বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু সাংবাদিক আতিককে পাওয়া গেল এবং তিনি রাজি হলেন। ঠিক হলো যে ওই খুনের বিভিন্ন রিপোর্টের জন্য আতিক ভাই সেখানে যাবে এবং তার সহকর্মী হিসেবে সজীব থাকবে সঙ্গী। 

মুনির ভাইয়ের কাছ থেকে সজীবকে যেই নাম্বার দিয়ে কল করা হয়েছে সেই নাম্বারের যাবতীয় ডিটেইলস বের করা হয়েছে। 

মিরপুরে গিয়ে ঝামেলা হয়ে গেল, কারণ আজমল আঙ্কেল বললেন আজকে রাতে নাকি সম্পুর্ণ খবর তিনি জানাতে পারবেন। তাই আজকে সজীবকে ঢাকায় থাকতে হবে, সকাল বেলা সজীব সেই সব তথ্যাদি নিয়ে টাঙ্গাইল যেতে পারবে। 

একটা বিষয় সজীব বুঝতে পারছে না, গতকাল রাতে যে নাম্বার দিয়ে তাকে খুনী কল করেছে সেই নাম্বার নাকি পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এলাকার। যে ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা সেই ঠিক পটুয়াখালীর এবং নাম্বার আজকে সকাল পর্যন্ত সেখানে লোকেশন দেখাচ্ছে। তাহলে সেটা যদি খুনি হয় তবে সে টাঙ্গাইল থেকে পটুয়াখালী গিয়ে কি করে? রহস্য কি? 

বিকেলে সাজু ভাই ও হাসান সাহেবকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানেই সাজু ভাইয়ের সঙ্গে সরাসরি এমপি জেলা প্রশাসক নিজে দেখা করতে এসেছেন। এতবড় একটা বিষয় নিয়ে সমগ্র জেলায় হৈচৈ বাধাতে এখন সবাই কেসটা নিয়ে চিন্তিত। 

সাজু ভাইকে আলাদা কক্ষে নিয়ে জেলা প্রশাসক এর সামনে বসানো হয়েছে। তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে অত্র থানার একজন দারোগা ও একজন এস আই। 

- জেলা প্রশাসক বললেন, আপনার সাহস এবং বুদ্ধি দেখে অবাক হলাম সাজু সাহেব। আমি শুধু জানতে চাই আপনার উদ্দেশ্য কি ছিল? কেন এই একের পর একটা মেয়ে খুন করলেন। 

- সাজু ভাই শান্ত গলায় বলল, আমি কিছু করিনি। 

- চুপ করুন, সবকিছু পরিষ্কার হবার পরও আপনি অস্বীকার করছেন? আমরা আদালত থেকে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি, আশা করি সেটা পাশ হয়ে যাবে। তখন কিন্তু কীভাবে সত্যি কথা বের করতে হবে সেই ট্রেনিং আমাদের আছে। 

- তার দরকার পরবে না। 

- ভেরি গুড, তুমি যদি তার আগেই সবকিছু নিজে স্বীকার করে নাও এবং উপযুক্ত কারণগুলো বলো তাহলে রিমান্ডের দরকার নেই। তখন সরাসরি আদালতে হাজির করা হবে এবং জজ সাহেব বিচারের রায় দেবে। 

- আমি স্বীকার করার কথা বলিনি, আপনার সেই রিমান্ড আবেদন পাশ করার আগেই আসল রহস্য বের হবে আশা করি। শুধু একটু সময়ের অপেক্ষা ছিল সেটা শেষ হচ্ছে, এতটুকুই। 

- মানে কি? 

- সেটা আমি সময় হলেই আপনাকে বলবো স্যার, আপনি এখন কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। কারণ আমি একটু অন্যভাবে গুটি সাজাচ্ছি তাই সেখানে ঘাবলা করতে চাই না। 

- এমন সাজানো গোছানো কথা বলে কোন লাভ নেই সাজু সাহেব, কি হবে আর কি হবে না সেটা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই আমার। 

- তাহলেই ভালো, একটা অনুরোধ রাখবেন? 

- কি অনুরোধ? 

- সময় হলে আমাকে কিছুক্ষণের জন্য আপনার ওই এলাকায় নিয়ে যেতে হবে। আপনি সম্পুর্ন কড়া নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাবেন সমস্যা নেই। সবকিছু ঠিকঠাক হলেই আমি আপনাকে জানাবো তখন আপনি ব্যবস্থা করবেন। আসল খুনি তখন আমি বের করে দেবো এবং সেটা এলাকাবাসীর সামনেই। 

- এটা তোমার কত নাম্বার প্ল্যান? 

- সময় সবকিছুর বড় সমাধান স্যার। 

- তুমি কি জানো? তোমার বিষয়ে সবচেয়ে বড় সাক্ষী দেবে কে? 

- না জানি না। 

- রুহি। 

- রুহি? মানে কি? সে তো কিডন্যাপ হয়েছে। 

- হাহাহা, কিডন্যাপ হয়েছে নাকি করেছো? তুমিই তো তাকে কিডন্যাপ করেছো, কিন্তু সে এখন তার মা-বাবার কাছে আছে। আমার তার জবানবন্দি নিয়ে এসেছি এবং কোর্টে সেই সাক্ষী দেবে। 

- স্যার রুহি কখন ফিরে এসেছে? তাকে কি কেউ উদ্ধার করেছে নাকি সে একা একা এসেছে? 

- সে একা একাই এসেছে, তুমি তাকে যেখানে আটকে রেখেছিলে সেখান থেকে কৌশলে রুহি পালিয়ে আসতে পেরেছে। ভোরবেলা সে তার বাবার কাছে কল দিয়েছে এবং তার বাবা বিষয়টা পুলিশকে জানায়। পুলিশ তখন উত্তরা থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে, কিন্তু একটু যেন সমস্যা হয়ে গেল। রুহি সেই বাসার ঠিকানা মনে করতে পারলো না, নাহলে যেখানে তাকে আটকে রাখা হয়েছে সেখানে অভিযান করা হতো।

- আপনাকে অনেক ধন্যবাদ স্যার। 

- মানে? 

- রুহির ফিরে আসার ঘটনা জানানোর জন্য যে কতটা উপকার হয়েছে সেটা বোঝাতে পারবো না। মেলা মেলা ধন্যবাদ স্যার, মেলা মেলা ধন্যবাদ। 

- আজব তো। 

- স্যার আর কিছু জিজ্ঞেস করবেন? 

- নাহ, রিমান্ডের জন্য তৈরি থেকো। 

- ঠিক আছে স্যার আসসালামু আলাইকুম। 

- - - - -

হাসান সাহেব নিজেও অবাক হয়ে গেল, কারণ রুহি যেহেতু একা একা ফিরেছে। এখন শুধু সজীব এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে, এই মুহূর্তে তারা বাহিরে থাকলে ভালো হতো। মিরপুর থেকে সেই আজমল আঙ্কেলের রিপোর্ট পেলেই মোটামুটি সব পরিষ্কার হবে। অনেকদিন পর সাজু ভাইয়ের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে, জেলের মধ্যে থেকেও সাজু ভাই হাসছেন। 

.

.

রাতে আজমল আঙ্কেলের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে সজীব সকাল বেলা সাংবাদিক আতিককে নিয়ে টাঙ্গাইল রওনা দিল। ঘটনা ঘটিত উপজেলা গিয়ে জানতে পারলো সাজুকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তাই সেখান থেকে আবারও জেলা কারাগারে রওনা দিল, আতিক সাহেব কষ্ট করে সাজুর সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করলেন। 

সজীবকে দেখেই সাজু ভাইয়ের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে আবারও, সে কিছু না বলে সজীব এর কাছ থেকে কিছু শোনার অপেক্ষা করতে লাগলো। 

- সজীব বললো, সাজু তোর সন্দেহ ঠিক আছে, চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে মামার বাসায় গিয়ে এক্সিডেন্টে মারা যায় নাই। সে এখন সৌদি আরব আছে, তার বাবা মানে চেয়ারম্যান সাহেব নিজে তাকে সৌদি আরব পাঠিয়েছে। কিন্তু গ্রামের সকল মানুষের সঙ্গে মিথ্যা বলেছেন। 

- ভেরি গুড, তারপর? 

- তোকে যেই নাম্বার দিয়ে কল করা হয়েছে সেই নাম্বার পটুয়াখালীর লোকেশনে আছে। 

- এটাও ধারণা ছিল, আচ্ছা ওই নাম্বারে চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে সৌদি আরব থেকে কল দিয়ে কথা বলে? 

- হ্যাঁ বলে। আর যেই ছেলে কল দিয়ে তোর সঙ্গে কথা বলেছে সেই ছেলেও সৌদি আরব থাকে।

- এখন সে দেশে এসেছে এবং তাকে দিয়ে সেই চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে হুমকি দেওয়াচ্চছে। কারণ সে জানে আমি লোকেশন বের করতে চাইবো। 

- কিন্তু এতকিছুর সঙ্গে তাহলে ওই এলাকার কার সঙ্গে হাত আছে? 

- সেও গ্রামের মধ্যে আছে। 

- আচ্ছা রুহি এখন কোথায়? 

- রুহি গতকাল রাতে পালিয়েছে, এবং সেই সময়ে খুন হয়েছে পঞ্চম বান্ধবী। 

- বলিস কি? রুহি তোর হাত থেকে বের হয়ে গেল কীভাবে? তারমানে কি... 

- হ্যাঁ সজীব, খুনির সঙ্গে রুহির সম্পুর্ন যোগাযোগ বা সম্পর্ক আছে। 

- কীভাবে? 

- মাথা মোটা তুই? রুহি বের হবার সঙ্গে সঙ্গে খুন হয়েছে পঞ্চম বান্ধবী, আবার সকালেই আমাকে কল দিয়ে খুনি বলে যে রুহি তাদের হাতে। এদিকে রুহি গ্রামে ফিরেছে বিকেলে, তাহলে খুনি যদি তাকে কিডন্যাপ না করে তবে জানলো কীভাবে রুহি রাতে বের হয়ে গেছে? নিশ্চয়ই রুহি তাকে কল দিয়ে বলেছে যে আমার থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছে সে। 

- তারমানে কি রুহির সঙ্গে চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের কোন সম্পর্ক? 

- সেটাই ভাবছি। 

.
.

(বানান ভুল গুলো ক্ষমা করবেন) 
.
.

চলবে....  
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 3 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: থ্রিলার গল্প -সাজু ভাই - সিরিজ - (গল্প: সাজু ভাই) - by Bangla Golpo - 23-12-2022, 11:27 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)