21-12-2022, 02:37 PM
রূপান্তর:১০
বাবুল মজুমদার। ২২ বছরের এক মেধাবী উচ্ছল যুবক। ক্যামব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হ্যাকিংয়ের উপর পিএইচডি করছে। খবর পেল তার বাবা মা চট্রগ্রামে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছে। সাথে সাথে দেশের ফ্লাইট ধরে চট্রগ্রাম। এসে বাবা মার শেষ কৃত্য সম্পন্ন করল। সপ্তাহখানেক যাওয়ার পর বাবুল আবিষ্কার করল তার বাবার ব্যক্তিগত কত সম্পদ ছিল তা সে জানেনা। কোনোদিন জানার প্রয়জন মনে করেনি। উচ্চমাধ্যমিকের পর লন্ডন সেখান থেকে ক্যামব্রিজ। পড়াশুনা তার উপর কম্পিউটারে যার ধ্যান জ্ঞান, বৈশিক ধন সম্পদে তার কোনো আগ্রহ বা মন থাকেনা। কিন্তু বাবুল এতটুকু বুঝত যে তাদের কয়েক কোটি টাকার আর্থিক সম্পদ রয়েছে। আর যৌথ মালিকানায় বাবুলের জ্যাঠুর সাথে তাদের যে ব্যাবসা তা-ও প্রায় ৮-১০ কোটি টাকার ব্যাবসা।
বাবুল তাদের সম্পত্তির দলিল দস্তাবেজ খুঁজল কিন্তু সারা বাসা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোথাও কোনো দলিল-দস্তাবেজ পেলনা। দেখেই বোঝা যায় কেমন যেন সব হাওয়া হয়ে গেছে। বাবুল তার জ্যাঠু মানিক মজুমদারের কাছে গেল। জ্যাঠু যা বলল তা শুনে বাবুল তো আকাশ থেকে পড়ল। বাবুলকে তার জ্যাঠু বলল ‘তোর বাবুর তো কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল না। ও আমার সাথে ব্যাবসা করত। কত করে বললাম নিজে কিছু কর। তা না শুনে মাসে দুই লাখ টাকা নিত, কিন্তু ব্যাবসার মালিকানা কোনোদিন নিতে চাইত না। বাবুল তোর বাবু আসলে রিস্ক নিতে চাইত না তাই সে ব্যাবসার মালিকানা না নিয়ে শুধু মাসিক বেতনে ‘আমার ব্যাবসা’ দেখাশুনা করত’।
বাবুল বলল- ‘জ্যাঠু তাহলে আমাদের যৌথ মাছের ব্যাবসা? তাতেও কি আমাদের কোনো মালিকনা নেই?’
মানিক মজুমদার এবার রেগে গেলেন আর বললেন ‘ব্যাটা বাংলা কথা বোঝস না, নাকি? তোরে কইলাম না তোর বাবু আমার কোনো ব্যাবসার পার্টনার না। আমাদের কোনো যৌথ ব্যাবসাও নাই। তোর বাবু মাসিক বেতন নিত দুই লাখ টাকা। তুই কি মনে করস তোর বাবুর দুই লাখ টাকার বেতনের যোগ্যতা আছে? কিন্তু আমি ওরে দিতাম, কেন দিতাম জানস? কারণ ও আমার ভাই ছিল। আহারে ভাইডা আমার অকালে স্বর্গে চইলা গেল!’ বলে মানিক দুই ফোটা চোখের জল ছেড়ে দিল।
বাবুল ২/৩ দিন পর স্থানীয় কমিশনারের কাছে গেল বিচার নিয়ে। কমিশনার বলল ৭ দিন পর শোনা মেলা হবে।
৭দিন পর হল। তবে বিচার/শালিশ নয়, প্রহসন। সমস্ত ব্যাবসার মালিকনা মানিক মজুমদার একাই পেয়ে গেল। বাবুলের কাছে কোনো ডকুমেন্ট নেই তাই সে যৌথ বা ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তির ব্যাপারেই কোনোরকম মালিকানা দাবি করতে পারল না।
বিচারের নামে যে নাটকটা কমিশনার, মানিক মজুমদার এবং এলাকার আরো ২/১ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি সাজালো তার শেষ দৃশ্যে এসে কমিশনার বলছে, ‘মানিক মশাই, শত হলেও ছেলেটা আপনারই ভাইপো। বাবা-মা অকালে মারা গেল। আপনি বাদে ওর কেউ নাই। তাই আমি বলছিলাম কি, নিজের ভাইপোকে আপনি কিছু সম্পত্তি দিয়ে দেন যাতে ও চলতে ফিরতে পারে!’।
মানিক- ‘বাবুল আমার ভাইস্তা তা আপনারাও জানেন, আমিও জানি। কিন্তু ও কি কাজটা করল? ও আমার বিরুদ্ধে, ওর জ্যাঠার বিরুদ্ধে এলাকায় শালিশ বসাল? না আমি ওরে এক কানা কড়িও দিমুনা’।
বাবুল তাদের এই নাটক বুঝে গেল তাই সে বলল, ‘থাক জ্যাঠা বাবা মা আমাকে পড়াশুনা শিখিয়েছে, ভিক্ষা করা শেখায়নি। আর আপনাদের আশির্বাদে আমি আমার নিজের ব্যাবস্থা করে নিতে পারব। তাই আমি আপনাদের সবার কাছে আশির্বাদ চাই’। এই বলে সে কমিশনার এবং শালিশে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে হ্যান্ডশেক করে শালিশ ছেড়ে বেড়িয়ে যেতে চাইল।
মানিক- ‘দেখছ নি কমিশনার কত বড় বেয়াদ্দপ! অরে আমি চাইর আনাও দিমুনা, ও পারলে কিছু করুক’।
বাবুল শুধু তার জ্যাঠার দিকে একবার শীতল দৃষ্টিতে তাকাল, কিছু বললনা। সে শালিশ ছেড়ে বেড়িয়ে আসল।
বাবুল মজুমদার। ২২ বছরের এক মেধাবী উচ্ছল যুবক। ক্যামব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হ্যাকিংয়ের উপর পিএইচডি করছে। খবর পেল তার বাবা মা চট্রগ্রামে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছে। সাথে সাথে দেশের ফ্লাইট ধরে চট্রগ্রাম। এসে বাবা মার শেষ কৃত্য সম্পন্ন করল। সপ্তাহখানেক যাওয়ার পর বাবুল আবিষ্কার করল তার বাবার ব্যক্তিগত কত সম্পদ ছিল তা সে জানেনা। কোনোদিন জানার প্রয়জন মনে করেনি। উচ্চমাধ্যমিকের পর লন্ডন সেখান থেকে ক্যামব্রিজ। পড়াশুনা তার উপর কম্পিউটারে যার ধ্যান জ্ঞান, বৈশিক ধন সম্পদে তার কোনো আগ্রহ বা মন থাকেনা। কিন্তু বাবুল এতটুকু বুঝত যে তাদের কয়েক কোটি টাকার আর্থিক সম্পদ রয়েছে। আর যৌথ মালিকানায় বাবুলের জ্যাঠুর সাথে তাদের যে ব্যাবসা তা-ও প্রায় ৮-১০ কোটি টাকার ব্যাবসা।
বাবুল তাদের সম্পত্তির দলিল দস্তাবেজ খুঁজল কিন্তু সারা বাসা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোথাও কোনো দলিল-দস্তাবেজ পেলনা। দেখেই বোঝা যায় কেমন যেন সব হাওয়া হয়ে গেছে। বাবুল তার জ্যাঠু মানিক মজুমদারের কাছে গেল। জ্যাঠু যা বলল তা শুনে বাবুল তো আকাশ থেকে পড়ল। বাবুলকে তার জ্যাঠু বলল ‘তোর বাবুর তো কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল না। ও আমার সাথে ব্যাবসা করত। কত করে বললাম নিজে কিছু কর। তা না শুনে মাসে দুই লাখ টাকা নিত, কিন্তু ব্যাবসার মালিকানা কোনোদিন নিতে চাইত না। বাবুল তোর বাবু আসলে রিস্ক নিতে চাইত না তাই সে ব্যাবসার মালিকানা না নিয়ে শুধু মাসিক বেতনে ‘আমার ব্যাবসা’ দেখাশুনা করত’।
বাবুল বলল- ‘জ্যাঠু তাহলে আমাদের যৌথ মাছের ব্যাবসা? তাতেও কি আমাদের কোনো মালিকনা নেই?’
মানিক মজুমদার এবার রেগে গেলেন আর বললেন ‘ব্যাটা বাংলা কথা বোঝস না, নাকি? তোরে কইলাম না তোর বাবু আমার কোনো ব্যাবসার পার্টনার না। আমাদের কোনো যৌথ ব্যাবসাও নাই। তোর বাবু মাসিক বেতন নিত দুই লাখ টাকা। তুই কি মনে করস তোর বাবুর দুই লাখ টাকার বেতনের যোগ্যতা আছে? কিন্তু আমি ওরে দিতাম, কেন দিতাম জানস? কারণ ও আমার ভাই ছিল। আহারে ভাইডা আমার অকালে স্বর্গে চইলা গেল!’ বলে মানিক দুই ফোটা চোখের জল ছেড়ে দিল।
বাবুল ২/৩ দিন পর স্থানীয় কমিশনারের কাছে গেল বিচার নিয়ে। কমিশনার বলল ৭ দিন পর শোনা মেলা হবে।
৭দিন পর হল। তবে বিচার/শালিশ নয়, প্রহসন। সমস্ত ব্যাবসার মালিকনা মানিক মজুমদার একাই পেয়ে গেল। বাবুলের কাছে কোনো ডকুমেন্ট নেই তাই সে যৌথ বা ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তির ব্যাপারেই কোনোরকম মালিকানা দাবি করতে পারল না।
বিচারের নামে যে নাটকটা কমিশনার, মানিক মজুমদার এবং এলাকার আরো ২/১ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি সাজালো তার শেষ দৃশ্যে এসে কমিশনার বলছে, ‘মানিক মশাই, শত হলেও ছেলেটা আপনারই ভাইপো। বাবা-মা অকালে মারা গেল। আপনি বাদে ওর কেউ নাই। তাই আমি বলছিলাম কি, নিজের ভাইপোকে আপনি কিছু সম্পত্তি দিয়ে দেন যাতে ও চলতে ফিরতে পারে!’।
মানিক- ‘বাবুল আমার ভাইস্তা তা আপনারাও জানেন, আমিও জানি। কিন্তু ও কি কাজটা করল? ও আমার বিরুদ্ধে, ওর জ্যাঠার বিরুদ্ধে এলাকায় শালিশ বসাল? না আমি ওরে এক কানা কড়িও দিমুনা’।
বাবুল তাদের এই নাটক বুঝে গেল তাই সে বলল, ‘থাক জ্যাঠা বাবা মা আমাকে পড়াশুনা শিখিয়েছে, ভিক্ষা করা শেখায়নি। আর আপনাদের আশির্বাদে আমি আমার নিজের ব্যাবস্থা করে নিতে পারব। তাই আমি আপনাদের সবার কাছে আশির্বাদ চাই’। এই বলে সে কমিশনার এবং শালিশে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে হ্যান্ডশেক করে শালিশ ছেড়ে বেড়িয়ে যেতে চাইল।
মানিক- ‘দেখছ নি কমিশনার কত বড় বেয়াদ্দপ! অরে আমি চাইর আনাও দিমুনা, ও পারলে কিছু করুক’।
বাবুল শুধু তার জ্যাঠার দিকে একবার শীতল দৃষ্টিতে তাকাল, কিছু বললনা। সে শালিশ ছেড়ে বেড়িয়ে আসল।