21-12-2022, 11:27 AM
ভোর বেলায় ভিখু আর পাঁচী গাড়ি থেকে নামল। নেমে একটু রেস্টুরেন্টে ঢুকল। পাঁচী কিছুটা খেতে পারলেও, ভিখু কিছুই খেতে পারলনা।
পাঁচী- ‘খাস না কেন কি হইছে?’
ভিখু- ‘রতনের কথা মনে পড়ছেরে, পোলাডা আমাগো বাচাইতে নিজে মইরা গেল, আর আমি তার কোনো উপকারই করতে পারলাম না’। ভিখুর চোখ ভিজে গেল, এক ফোটা জলও গড়িয়ে পরল।
পাঁচী ভিখুর চোখে জল দেখে অবাক হয়ে গেল কিন্তু কিছু বললনা।
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরহয়ে ভিখু আর পাঁচী কক্সবাজারের গাড়ীতে উঠল। সারাটা পথে পাঁচী ঘুমাল আর ভিখু চুপ করে রইল। সে একটি কথাও বলল না। শুধু কিছুক্ষণ পরপর দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল।
কক্সবাজার নেমে ভিখু আর পাঁচী মহেশখালীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল। ঘন্টাখানেক পর তারা মহেশখালী পৌছাল। মহেশখালী হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ যার আয়তন সাড়ে তিনশ বর্গকিলোমিটারের কিছু বেশি। এখানে '.ের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক * , বৌদ্ধ এবং কিছু খ্রীষ্টান রয়েছে, রাখাইন আদিবাসীরাও এখানে আছে। এখানকার মৈনাক পাহাড়ের উপর রয়েছে আদীনাথ মন্দির। দ্বীপের বাসিন্দাদের শিক্ষার হার সারাদেশের তুলনায় কম এবং বাসিন্দাদের আয়ের অন্যতম উৎস সমুদ্র থেকে মাছ ধরা। কিন্তু যারা এই মাছ ধরে অর্থাৎ জেলেরা প্রায় সবাই মহাজনদের কাছে জিম্মী। জেলেদের নিজেদের ট্রলার নেই, জাল নেই, আছে শুধু জীবন যা মাছ ধরতে গিয়ে অনেকেই সাগরে রেখে আসে। আর যারা ভাগ্যবান তারা মাছ ধরতে ধরতেই তাদের জীবন শেষ করে দেয়।
সম্পূর্ণ দ্বীপের মাছের ব্যাবসাটা মাত্র ৪ জন মহাজনের হাতে নিয়ন্ত্রিত। ৪ জন মহাজনের ৩ জন থাকে মহেশখালী। আর অন্যজন মানিক মজুমদার থাকেন চট্রগ্রামে। তিনি চট্রগ্রামে থেকেই তার মহাজনি ব্যাবসা চালান। মহাজনেরা জেলেদের অফ-সিজনে উচ্চ হার সুদে টাকা ধার দেয়। আর মাছের সিজনে জেলেরা মহাজনদের কাছ থেকে ট্রলার, জাল নিয়ে সাগরে যায়। ১৫ দিন থেকে এক মাস পরে ট্রলারের পেট ভরে মাছ নিয়ে ফিরে আসে। সেই মাছ জেলেরা তাদের নিদৃষ্ট মহাজনের কাছে প্রকৃত দামের ৬০% বা তারও কমে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এতে করে ঐ জেলে অফ-সিজনে ধার নেয়া টাকা শোধ করতে পারলেও সুদের টাকা পুরোটা আর শোধ করতে পারেনা। কিছু টাকা বাকি থেকে যায়। এভাবেই মহাজনদের Vicious Circle যুগের পর যুগ চলতে থাকে । মহাজনেরা জেলেদের রক্ত চুষে চুষে শারীরিক ভাবে এবং আর্থিক ভাবে উভয় ভাবেই ফুলে ফেপে উঠে।
ভিখু দ্বীপে আবাস গড়ার ২ মাসের ভিতর মহাজনি ব্যাবসার নাড়ি-নক্ষত্র সব জেনে বুঝে যায়। তার কাছে প্রায় এক কোটি নগদ টাকা আছে। সেও মহাজনি ব্যাবসা শুরু করে। কিন্তু মাছের এই মহাজনি ব্যাবসায় শত শত কোটি টাকা মুনাফা তাই অন্য ৪ মহাজন এত সহজে ভিখুকে ব্যাবসা করতে দেবেনা। তারা ভিখুকে নানাভাবে ভয়-ভিতী দেখাতে লাগল। জানে মেরে ফেলার হুমিকি দেয়া হল। এতটুকুতেই এর আগে অনেক অনেক ব্যাবসায়ী তাদের সমস্ত ব্যাবসা গুটিয়ে জান নিয়ে মহেশখালী ছেড়ে পালিয়েছিল। কিন্তু মহাজনেরা দেখল হুমকি-ধামকিতে ভিখু ব্যাবসা ছাড়ছেনা তাই ওই ৪ মহাজন তাদের হাতের সর্বশেষ অস্ত্র ভিখুর বিরুদ্ধে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিল।
ভিখু কোনো ভদ্র ঘরের শিক্ষিত সন্তান নয়। সে কি অস্ত্রের বিরুদ্ধে চুপ করে থাকবে?
______________________________
পাঁচী- ‘খাস না কেন কি হইছে?’
ভিখু- ‘রতনের কথা মনে পড়ছেরে, পোলাডা আমাগো বাচাইতে নিজে মইরা গেল, আর আমি তার কোনো উপকারই করতে পারলাম না’। ভিখুর চোখ ভিজে গেল, এক ফোটা জলও গড়িয়ে পরল।
পাঁচী ভিখুর চোখে জল দেখে অবাক হয়ে গেল কিন্তু কিছু বললনা।
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরহয়ে ভিখু আর পাঁচী কক্সবাজারের গাড়ীতে উঠল। সারাটা পথে পাঁচী ঘুমাল আর ভিখু চুপ করে রইল। সে একটি কথাও বলল না। শুধু কিছুক্ষণ পরপর দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল।
কক্সবাজার নেমে ভিখু আর পাঁচী মহেশখালীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল। ঘন্টাখানেক পর তারা মহেশখালী পৌছাল। মহেশখালী হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ যার আয়তন সাড়ে তিনশ বর্গকিলোমিটারের কিছু বেশি। এখানে '.ের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক * , বৌদ্ধ এবং কিছু খ্রীষ্টান রয়েছে, রাখাইন আদিবাসীরাও এখানে আছে। এখানকার মৈনাক পাহাড়ের উপর রয়েছে আদীনাথ মন্দির। দ্বীপের বাসিন্দাদের শিক্ষার হার সারাদেশের তুলনায় কম এবং বাসিন্দাদের আয়ের অন্যতম উৎস সমুদ্র থেকে মাছ ধরা। কিন্তু যারা এই মাছ ধরে অর্থাৎ জেলেরা প্রায় সবাই মহাজনদের কাছে জিম্মী। জেলেদের নিজেদের ট্রলার নেই, জাল নেই, আছে শুধু জীবন যা মাছ ধরতে গিয়ে অনেকেই সাগরে রেখে আসে। আর যারা ভাগ্যবান তারা মাছ ধরতে ধরতেই তাদের জীবন শেষ করে দেয়।
সম্পূর্ণ দ্বীপের মাছের ব্যাবসাটা মাত্র ৪ জন মহাজনের হাতে নিয়ন্ত্রিত। ৪ জন মহাজনের ৩ জন থাকে মহেশখালী। আর অন্যজন মানিক মজুমদার থাকেন চট্রগ্রামে। তিনি চট্রগ্রামে থেকেই তার মহাজনি ব্যাবসা চালান। মহাজনেরা জেলেদের অফ-সিজনে উচ্চ হার সুদে টাকা ধার দেয়। আর মাছের সিজনে জেলেরা মহাজনদের কাছ থেকে ট্রলার, জাল নিয়ে সাগরে যায়। ১৫ দিন থেকে এক মাস পরে ট্রলারের পেট ভরে মাছ নিয়ে ফিরে আসে। সেই মাছ জেলেরা তাদের নিদৃষ্ট মহাজনের কাছে প্রকৃত দামের ৬০% বা তারও কমে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এতে করে ঐ জেলে অফ-সিজনে ধার নেয়া টাকা শোধ করতে পারলেও সুদের টাকা পুরোটা আর শোধ করতে পারেনা। কিছু টাকা বাকি থেকে যায়। এভাবেই মহাজনদের Vicious Circle যুগের পর যুগ চলতে থাকে । মহাজনেরা জেলেদের রক্ত চুষে চুষে শারীরিক ভাবে এবং আর্থিক ভাবে উভয় ভাবেই ফুলে ফেপে উঠে।
ভিখু দ্বীপে আবাস গড়ার ২ মাসের ভিতর মহাজনি ব্যাবসার নাড়ি-নক্ষত্র সব জেনে বুঝে যায়। তার কাছে প্রায় এক কোটি নগদ টাকা আছে। সেও মহাজনি ব্যাবসা শুরু করে। কিন্তু মাছের এই মহাজনি ব্যাবসায় শত শত কোটি টাকা মুনাফা তাই অন্য ৪ মহাজন এত সহজে ভিখুকে ব্যাবসা করতে দেবেনা। তারা ভিখুকে নানাভাবে ভয়-ভিতী দেখাতে লাগল। জানে মেরে ফেলার হুমিকি দেয়া হল। এতটুকুতেই এর আগে অনেক অনেক ব্যাবসায়ী তাদের সমস্ত ব্যাবসা গুটিয়ে জান নিয়ে মহেশখালী ছেড়ে পালিয়েছিল। কিন্তু মহাজনেরা দেখল হুমকি-ধামকিতে ভিখু ব্যাবসা ছাড়ছেনা তাই ওই ৪ মহাজন তাদের হাতের সর্বশেষ অস্ত্র ভিখুর বিরুদ্ধে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিল।
ভিখু কোনো ভদ্র ঘরের শিক্ষিত সন্তান নয়। সে কি অস্ত্রের বিরুদ্ধে চুপ করে থাকবে?
______________________________