21-12-2022, 10:45 AM
এর কয়েকদিন পর হটাৎ সাবিত্রী দেবী আমায় ডেকে আবার দিব্যি দিয়ে বিকালে সাজতে বললেন আর বললেন একটা সারপ্রাইজ আছে তো আমি যথারীতি সেলোয়ার-কামিজ পড়ে বসে আছি তখন উনি আর সৃষ্টি এক সাথে হাতে দুটো থালা নিয়ে ঘরে ঢুকলেন আর আমি সৃষ্টি কে দেখে দৌড় দিয়ে আমার ঘরে ঢুকে গেলাম লজ্জায় এই সময়ে সাবিত্রী দেবী আমার ঘরে ঢুকে বললেন যে সৃষ্টি সব কিছুই জানে তাই ওর কাছে লজ্জার কিছুই নেই। আমি আড় চোখে তাকিয়ে দেখি সৃষ্টি আমাকে দেখে মুচকি হেসে ঘরে ঢুকলেন আর আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে বসে আসি তখন সে আমার চিবুকে হাত দিয়ে আমার মাথা উপরে তুলে বলল যে ভগবান তোমাকে বড়ই রূপবতী বানিয়েছেন শুধু মেকআপ করা বাকি আর ওটা করলেই আমাকে আর কেউ পুরুষ বলতে পারবেনা।আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম আর সে কথা না বাড়িয়ে সাথে আনা মেকআপ কীট বের করে আমাকে হালকা করে সাজিয়ে দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে বসার ঘরে নিয়ে গিয়ে সোফাতে বসিয়ে দিল আর মা মেয়ে আমার সামনে বসল।আমাকে সাজানোর ব্যাপারটা সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাকে বলল যে তারা সুনিলের জন্য মেয়ে দেখতে যাচ্ছে কারন সুনিলের বাবা অতি শীঘ্রই ঘরে পুত্রবধূ দেখতে চান। এই কথা শুনার পর আমার পায়ের নিচের মাটি যেন সরে গেল আর মাথায় যেন বাজ পড়লো। আর আমি কাদতে কাদতে ঘরে চলে গেলাম। আমার মনে হচ্ছিল যেন আমি তখনি মরে যায় কারন আমি আমার স্বামী কে আর করোর সাথে দেখতে পারবোনা। এই সব সাত পাচ ভেবে আমি কেদেই চলেছি এমন সময় সাবিত্রী দেবী আমার সামনে একটি ছবি দিয়ে বললেন ছবিটি দেখে বলো তো এর সাথে আমার ছেলেকে কেমন মানাবে? আমি রাগ করে ছবিটি নিয়ে ছিড়ব এমন সময় আমার চোখ ছবির দিকে চলে গেলো আর সেটা দেখে আমি চমকে উঠলাম কারন ছবিটি ছিল আমার প্রথম দিনটা থ্রি-পিস পড়ার ছবি তা দেখে আমি সাবিত্রী দেবীকে বললাম যে দিদি আমার সাথে মজা করছেন এটাতো আমার ছবি কিন্তু কে তুললো?? উত্তরে তিনি হেসে বললেন সৃষ্টি তুলেছে আর এখন থেকে আমাকে আর দিদি ডাকবি না। আমি বললাম তাহলে কি বলে ডাকবো? আরে পাগলী আমাকে মা বলে ডাকবি, বল মা বলে ডাক আমি বলে উঠলাম যে আমি পুরুষ আমি কিভাবে সুনিলের বউ হতে পারি? সমাজ আমাকে মেনে নিতে পারবেনা। উত্তরে উনি বললেন আমি বা আমরা চাই আমার ছেলের সুখ। আমার ছেলে যাকে বিয়ে করে সারাজীবন সুখে থাকবে তার সাথেই আমার ছেলের বিয়ে দিব এতে সমাজের কি করার আছে? তারাতো এসে আমার ছেলের সাথে সংসার করবে না আর খুশিতেও রাখতে পারবেনা তাই সমাজকে গুলি মেরে ভূলে গিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে। আর তোর এবং সুনিলের ভালোবাসার কথা আমরা সবিই জানি তাই ন্যাকামি ছেড়ে বল আমার পুত্রবধূ হবি কিনা? যদি হতে চাস তাহলে আমাকে মা বলে ডেকে প্রণাম কর। আমি দেরি না করে তাড়াতাড়ি সেটাই করলাম। এরপর উনি আমাকে বললেন যে যা বাথরুমে গিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে আয় সৃষ্টি তোকে ভালো করে আবার সাজিয়ে দিবে তোর হবু শশুর আসছে তার বউমা কে দেখার জন্য। আর তিনি ঘরে ঢুকলে প্রণাম করবি পা ধরে।এই বলে উনি চলে গেলেন আর আমি বাথরুমে গিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে বেরিয়ে আসলাম দেখি সৃষ্টি ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আসে আমার অপেক্ষায়। আমি এসে টুলের উপর বসলাম এর পর শুরু হয়ে গেলো সৃষ্টি এর হাতের জাদুর খেলা আমাকে ভালো করে মনের মতো করে সাজাতে লাগলো। একে একে মাথার চুল হতে পা পর্য্ন্ত আমাকে সাজালো। এই সময় আমি শুধু চোখ বন্ধ করে ছিলাম। যখন সৃষ্টির কাজ শেষ হলো তখন আমাকে চোখ খুলতে বলল আর আমাকে আয়নার দিকে তাকাতে বলল। আমি তাকাতেই আমার চোখকে আর বিশ্বাস করতে পারলাম না। দেখলাম একটি তরুনী দাড়িয়ে আছে যার কপালে গোলাপী একটু বড় টিপ,চোখের পাতায় স্মোকি শ্যাডো, চোখে কাজল,ঠোটে হালকা গোলাপী লিপস্টিক,চিকে হালকা লালের আভা,নখে লাল নেইল পালিশ। আমি হতবাক হয়ে দেখছি আর বললাম সৃষ্টি এ তুমি কি করেছ? আমি যে আমাকেই চিনতে পারছি না। এই কথা বলতেই সৃষ্টি কপট রাগ দেখিয়ে আর আমার কাধেঁ আলতো চাপড় মেরে চোখ রাঙিয়ে মুচকি হেসে বলল কি বললে তুমি? আমি বললাম কি আর সৃষ্টি……..কথা শেষ করার আগেই সৃষ্টি বলে উঠল সৃষ্টি নয় দিদি হবে আর তুমি নয় হবে আপনি,ভেলে যেও না আমি তোমার হবু স্বামীর বড় দিদি সেই সুবাধে আমিও তোমার দিদি হই তাই নয় কি? আমি লজ্জায় কাচুমাচু হয়ে বললাম স্যরি দিদি বড় ভুল হয়ে গেছে এবারের মতো ক্ষমা করে দাও।কথা দিচ্ছি আর কখোনো ভুল হবে না। দিদি মুচকি হেসে বলল ঠিক আছে বৌদিমনি। তা আমার সাজানো কেমন লাগল? কি আমি ভালো বিউটিশিয়ান না? আমি বললাম আলবৎ দিদি। আমি আবেগপ্রবণ হয়ে বললাম দিদি আপনি কি আমায় মন থেকে মেনে নিয়েছ তো আপনার বৌদি হিসেবে? উত্তরে সে বলল হ্যা গো হ্যা।সাথে সাথে আমি দিদিকে প্রণাম করলাম আর উনিও আমাকে আর্শিবাদ করলেন এই বলে যে সদা সোহাগান রাহো। এরপর আমাকে বললেন যে বেডের উপর একটি প্যাকেট রাখা আছে ওটা খুলে সেটাই পরিধান কর আর পরতে কষ্ট হলে আমাকে ডেক আমি ঠিকমতো পরিয়ে দিব। প্যাকেটটি খুলেই আমি অবাক হয়ে এটি দেখলামি,ভিতরে একটি সিল্ক এর চকলেট কালারের বেলুচুড়ি শাড়ি সাথে ম্যাচিং সায়া আর ব্যাকলেস ট্রান্সপারেন্ট ব্লাউস। আমি এটা দেখে শিহরতি হয়ে উঠলাম। স্বভাবতই প্রথমবার শাড়ি পড়ব আর ট্যাগে এর দাম দেখে। এর দাম দেওয়া আছে ১৬০০০/- টাকা। মনের ভিতরে নারী স্বত্বা উঁকি দিয়ে বলল দেখ প্রথমবারই এতো দামি শাড়ি পাচ্ছিস আর ভবিষ্যৎ এ নাজানি আরো কত টাকা খরচ করবে তোর জন্য তোর শশুর বাড়ির লোকেরা। শাড়িটা দু’চোখে আর কপালে ঠেকিয়ে প্রণাম করলাম আর ভগবানের কাছে থেকে আরো বেশি সুখ আর ভালোবাসা পাবার দাবি করলাম। এরপর আমি ব্রা বাদেই ব্লাউস পড়ে শাড়িটি পরলাম কারন ইউটিউবের যুগে আগে থেকেই আমার হালকা পাতলা শেখা হয়ে গেছে যে কিভাবে শাড়ি পরতে হয়। তা যাহোক শাড়ি পরে আমার রুমে এসে দিদির সামনে দাড়ালাম আর দিদি আমাকে বসতে বলেই আমার চারপাশে ঘুরে ঘুরে আমাকে দেখে বললেন সুনিল আসলেই ভাগ্যবান যে তোর মতো সুন্দরী একটা বৌ পেতে যাচ্ছে আমি সাথে সাথেই বলে উঠলাম যে উনি নয় আমি সৌভাগ্যবতি যে কপালগুনে উনার মতো স্বামী আর পরিবার পেতে যাচ্ছি। হটাৎ মনে হলো আমি শুধু স্বার্থ্পরের মতো নিজের কথাই চিন্তা করছি। কিন্তু আমার ছেলে আমাকে বা আমার এই নতুন রূপকে মেনে নেবে কি?? এই প্রশ্ন মনে জাগতেই আমি দিদির কাছে মিশুর কথা জিজ্ঞাসা করতেই দিদি হেসে বলল ভাইপোকে নিয়ে তোমার অযাচিত চিন্তা করতে হবে না এবং সে এই সব কিছুর সর্ম্পকে অবগত আছে আর সে কিছুক্ষনের মধ্যেই বাড়ি ফিরবে তার মায়ের নতুন সম্মদ্ধকে আরো পাকাপোক্ত করতে সাহায্য করবে। এটা শুনেই আমি মনে মনে প্রার্থ্না করলাম যাক বাবা বাঁচা গেলো কিন্তু এই সাজে আমি কিভাবে মিশুর সামনে যাব? তো এই সব ভাবতেই ভাবতেই দিদি বলে উঠল সুমনা তোর তো কান আর নাক ফুটো করতে হবে বিয়ের গয়না পরার জন্য। এই সব ভাবতেছি আর আমাকে মেকআপ এর ফাইনাল টাচ্ দিচ্ছে তখনি বেল বেজে উঠল। আর কিছুক্ষন পর মনে হলো কে যেন আামকে দেখছে? আগি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি মিশু আর সে মুচকি মুচকি হাসছে।
Life is for living, So Live it