20-12-2022, 03:38 PM
ত্রয়োপঞ্চাশৎ অধ্যায়
ট্রাম থেকে নেমে দীপশিখা কয়েক মুহূর্ত ভেবে সামনের ওষুধের দোকানে গিয়ে প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধগুলো কিনলেন।ড.কাঞ্জিলালের সাজেশনের সঙ্গে ওষুধের কি সম্পর্ক।তারপর ফ্লাটে উঠে গেলেন।শাড়ী বদলে সোফায় হেলান দিয়ে বসলেন।ডাক্তার তার অনেক কথা জেনে নিয়েছেন।দাদার কথা কমলের কথা কিছুই তো ডাক্তারকে বলেনি।কিন্তু তিনি সব জানেন। কমল বিয়ে করেছে সুখে আছে তাতে তার ঈর্ষার কি আছে।মানুষ চাহিদানুযায়ী তার প্রাপ্য না পেলে তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে।ডাক্তারের কিছু কিছু কথা তার ভাল লেগেছে।পরিবারগুলো ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আজ এক নতুন সমস্যা তৈরী হয়েছে।এই কথাটা মর্মে মর্মে বুঝেছেন দীপশিখা।
সন্ধ্যে হয়ে এল এবার চা করা যাক।একার জন্য রান্না করা চা করা ভাল্লাগে না।তিন কাপ জল চাপিয়ে দিলেন।মাছের ঝোল তরকারী করা আছে কেবল গরম করে নিতে হবে।ভাতটা শুধু করতে হবে।আরেকটু পরে করলেই হবে। ড.কাঞ্জিলালের সাজেশন ঘুরে ফিরে মনের মধ্যে উকি দিচ্ছে।একটা অচেনা অজানা লোকের সঙ্গে ভাবে গা গুলিয়ে উঠছে।চা করে এক কাপ নিয়ে বাকীটা ফ্লাক্সে ঢেলে রাখলেন।বারবার চা করা ভাল লাগে না।
বৈঠকখনায় এসে টিভি চালিয়ে চায়ে চুমুক দিতে থাকেন।ডাক্তার একজন মহিলা হয়ে কীভাবে একথা বললেন ভেবে অবাক লাগে।একটা কথা ঠিক যে সময়ের যা চাহিদা তা পূরন না হলে নানা কমপ্লিকেশন দেখা দিতে পারে।উনি অবশ্য বললেন আপনি একজন অধ্যাপিকা একটা সম্মানীয় পদে আছেন।সেদিকটা আমি ভুলে যাইনি।কলিং বেল বাজল মনে হল।টিভির সাউণ্ড কমিয়ে দিয়ে কান খাড়া করে থাকেন।হ্যা কলিং বেল বাজছে।এসময় আবার কে?টিভিটা বন্ধ করে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে অবাক।শুক্লা সঙ্গে একজন মোটাসোটা ছেলে।
কিরে তুই এসময়?
ভিতরে যেতে দেবে নাকি এখানেই সব বলতে হবে?
আয় ভেতরে আয়।
শুক্লা ছেলেটিকে নিয়ে সোফায় গিয়ে বসল।দীপশিখা দরজা বন্ধ করে ভিতরে আসতে শুক্লা বলল,তুমি আজ কলেজ যাওনি তাই দেখতে এলাম।
সঙ্গে ছেলেটি কে?দীপশিখার চোখে প্রশ্ন।
দীপুদি ইনি ড.সুজিত চৌধুরী।তোমার সঙ্গে আলাপ করাতে নিয়ে এলাম।ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বলল, আর ইনি আমার কলিগ কাম দিদি আপনাকে তো এর কথা বলেছি।
নমস্কার দিদি।ড.সুজিত দু-হাত জোড় করে বলল।
দীপশিখার ব্যাপারটা বুঝতে অসুবিধে হয়না।বললেন,বসুন একটু চা করি।
না দিদি অনেক রাত হয়ে গেছে,আরেকদিন এসে অনেক গল্প করা যাবে।ছেলেটি দাঁড়িয়ে বলল,দিদি আপনার উপর আমার ভাগ্য নির্ভর করছে।
আমার উপর?
হ্যা মিস বোস আপনাকে দেখাবার জন্য আমাকে নিয়ে এসেছে।আপনি বলবেন পাত্র পছন্দ হল কিনা?
ছেলেটি বেশ কথা বলে।দীপশিখা হেসে শুক্লাকে বললেন,তুই কলেজ যাসনি?
কলেজে গেছিলাম বলেই তো জানলাম তুমি যাওনি।এক্টু তাড়াতাড়ি বেরিয়ে ওনার সঙ্গে দেখা করেছি।
ড.সুজিতকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে গেল শুক্লা।
দরজার কাছে গিয়ে ড.সুজিত জিজ্ঞেস করে,কোন বার্তা নিয়ে যাব?
আপত্তির কোনো কারন দেখছি না।
থ্যাঙ্ক ইউ।সুজিত বেরিয়ে গেল।
শুক্লা ফিরে আসতে দীপশিখা বললেন,এমনি খারাপ নয় তবে একটু মোটা।
যাক তোমার পছন্দ হয়েছে।চিন্তা কোরো না দুদিনে চর্বি ঝরিয়ে দেব।দীপুদি একটু চা হবে না?
বোস আসছি।
দীপশিখা দু-কাপ চা নিয়ে টেবিলে রেখে সোফায় বসে বললেন,তারপর বল সারাদিন কি কথা হল?
চায়ের কাপ নিয়ে শুক্লা বলল,হাবিজাবি অনেক কথা।আপনি অধ্যাপনা লাইনে কেন এলেন?আগে কোনো এ্যাফেয়ার ছিল কিনা এই সব।
তুই কি বললি?
বললাম এ্যাফেয়ার কিনা জানি না তবে ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় একটা ছেলের সঙ্গে দোকানে রেষ্টুরেণ্টে ঘুরেছি।তারপর পাস করে যে যার মত নিজ নিকেতনে।
তুই কিছু জিজ্ঞেস করিস নি?
জিজ্ঞেস করতে হয়নি।নিজেই বলল,ডাক্তারী পড়ার সময় একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছিল কিন্তু মেয়েটি যদি অসভ্যতা না করতো তাহলে মেয়ে দেখে বেড়াতে হতো না।
তোর কথা শুনে সুজিত কিছু বলল না?
কি বলবে?ও যেমন খোলাখুলি বলেছে আমিও শুনিয়ে দিলাম।
দ্যাখ শুক্লা হাজার হলেও তুই মেয়ে।
দেখো দীপুদি তোমাকে আমি শ্রদ্ধা করি ভালবাসি।আমি মেয়ে ঠিকই কিন্তু মেয়ে হওয়া কি অপরাধ? আমরা মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের মনে করি মাটীর ভাড়।চা খেয়ে ফেলে দাও।প্রকৃতি নারী পুরুষ সৃষ্টি করেছে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে।চীনে মাটীর কাপে চা খাচ্ছে তারপর ধুয়ে সেই কাপে আরেকজনকে পরিবেশন করছে।মেয়েরা কি চীনে মাটির বাসনের চেয়েও ঠুনকো?ধরো বিয়ের পর যদি আমাদের ডীভোর্স হয়ে যায় তাহলে কি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারব না।পুরুষ শাসিত সমাজ সতীত্ব ইত্যাদি বড় বড় কথা আরোপ করে মেয়েদের দমিয়ে রাখতে চেয়েছে।বিদ্যাসাগর মশাই সমস্যাটা বুঝতে পেরেই বিধবা বিবাহ আন্দোলন করেছিলেন।বিধবা হলেই কি তার শারীরি ক্ষিধেতেষ্টা নষ্ট হয়ে যায়?
তাই বলে যার তার সঙ্গে?
আমি তো সে কথা বলিনি।হি মাস্ট বি ওয়ান অফ দা চয়েস।
খুব পাকা পাকা কথা শিখেছিস।
শুক্লা খিল খিল করে হেসে উঠল।হাসি থামতে বলল,তোমাকে বলিন,আমাদের সময় একজন অধ্যাপিকা ছিলেন কেতকী কর্মকার। শুনেছি উনি স্বামীকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু সেই ভদ্রলোক বউয়ের টাকায় বিদেশ গিয়ে আর ব্যাক করেন নি।কেকে ম্যাডাম আর বিয়ে করেন নি।সত্য মিথ্যে জানি না শুনেছি বাড়ীতে ওকে নাকি সার্ভিস দিতে আসে।
দীপশিখা চমকে উঠলেন বললেন,সেটা কি ভাল মনে করিস?
মন্দই বা বলব কি করে?একজন পুরুষের ক্ষেত্রে যদি মেনে নিতে পারি তাহলে মহিলার ক্ষেত্রে মানতে বাধা কোথায়? ম্যাডাম তো স্বামীর সঙ্গে প্রতারণা করেন নি বরং ওর স্বামী বেইমানী করেছে।কেকে ম্যাডামের পড়ানো নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী মহলে বেশ সুনাম আছে।এসবের কি কোনো মূল্য নেই?
দীপশিখা ঠোটে ঠোট চেপে নিজের চিবুকে হাত বোলাতে থাকেন।
শুক্লা বলল, উঠি দীপুদি কাল কলেজে দেখা হবে।শুক্লা উঠে দাড়াল।
উম যাচ্ছিস?দীপশিখা অন্য জগতে হারিয়ে গেছিলেন বললেন,হ্যা অনেক রাত হয়েছে।
রান্না ঘরে গিয়ে ভাতের হাড়ি চাপিয়ে দিলেন।ভাত ফুটছে শুক্লার কথাগুলো মনের মধ্যে বিজকুড়ি কাটতে থাকে।ভাত উতল আসতে হাড়ি না্মিয়ে উপুড় করে দিয়ে ঘরে এসে বসলেন।টিভি চালিয়ে দিয়ে ভাবতে থাকেন।বাল বিধবা একাদশীর উপোস করেছে আর বাড়ীর বয়স্করা গাণ্ডেপিণ্ডে ভাল মন্দ গিলছে।বিধবা বিবাহের এটাই একমাত্র কারণ ছিল না।ড কাঞ্জিলাল বলছিলেন চাহিদা পুরন না হলে বিকার দেখা দিতে পারে।ব্যাগ খুলে ঠিকানাটা চোখের সামনে মেলে ধরলেন।একাবার ফোন করে দেখাই যাক না ভেবে টিভি মিউট করে নম্বর টিপলেন।
হ্যালো বলুন কি করতে পারি?ওপার থেকে শোনা গেল।
সার্ভিসের ব্যাপারে কথা বলতে চাই।
একটা লিঙ্ক টেক্সট করে দিচ্ছি আপনি ফর্মটা ফিল আপ করে দেবেন।
কি রকম লাগতে পারে?
লিঙ্কে যান সব দেওয়া আছে।গুড নাইট।
দীপশিখা ফোন রেখে রান্না ঘরে গিয়ে ভাতের হাড়ী তুলে সকালে রান্না করা খাবারগুলো মাইক্রোভেনে গরম করতে থাকেন।ক্রিং করে শব্দ হতে দেখলেন লিঙ্ক পাঠিয়েছে।
ট্রাম থেকে নেমে দীপশিখা কয়েক মুহূর্ত ভেবে সামনের ওষুধের দোকানে গিয়ে প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধগুলো কিনলেন।ড.কাঞ্জিলালের সাজেশনের সঙ্গে ওষুধের কি সম্পর্ক।তারপর ফ্লাটে উঠে গেলেন।শাড়ী বদলে সোফায় হেলান দিয়ে বসলেন।ডাক্তার তার অনেক কথা জেনে নিয়েছেন।দাদার কথা কমলের কথা কিছুই তো ডাক্তারকে বলেনি।কিন্তু তিনি সব জানেন। কমল বিয়ে করেছে সুখে আছে তাতে তার ঈর্ষার কি আছে।মানুষ চাহিদানুযায়ী তার প্রাপ্য না পেলে তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে।ডাক্তারের কিছু কিছু কথা তার ভাল লেগেছে।পরিবারগুলো ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আজ এক নতুন সমস্যা তৈরী হয়েছে।এই কথাটা মর্মে মর্মে বুঝেছেন দীপশিখা।
সন্ধ্যে হয়ে এল এবার চা করা যাক।একার জন্য রান্না করা চা করা ভাল্লাগে না।তিন কাপ জল চাপিয়ে দিলেন।মাছের ঝোল তরকারী করা আছে কেবল গরম করে নিতে হবে।ভাতটা শুধু করতে হবে।আরেকটু পরে করলেই হবে। ড.কাঞ্জিলালের সাজেশন ঘুরে ফিরে মনের মধ্যে উকি দিচ্ছে।একটা অচেনা অজানা লোকের সঙ্গে ভাবে গা গুলিয়ে উঠছে।চা করে এক কাপ নিয়ে বাকীটা ফ্লাক্সে ঢেলে রাখলেন।বারবার চা করা ভাল লাগে না।
বৈঠকখনায় এসে টিভি চালিয়ে চায়ে চুমুক দিতে থাকেন।ডাক্তার একজন মহিলা হয়ে কীভাবে একথা বললেন ভেবে অবাক লাগে।একটা কথা ঠিক যে সময়ের যা চাহিদা তা পূরন না হলে নানা কমপ্লিকেশন দেখা দিতে পারে।উনি অবশ্য বললেন আপনি একজন অধ্যাপিকা একটা সম্মানীয় পদে আছেন।সেদিকটা আমি ভুলে যাইনি।কলিং বেল বাজল মনে হল।টিভির সাউণ্ড কমিয়ে দিয়ে কান খাড়া করে থাকেন।হ্যা কলিং বেল বাজছে।এসময় আবার কে?টিভিটা বন্ধ করে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে অবাক।শুক্লা সঙ্গে একজন মোটাসোটা ছেলে।
কিরে তুই এসময়?
ভিতরে যেতে দেবে নাকি এখানেই সব বলতে হবে?
আয় ভেতরে আয়।
শুক্লা ছেলেটিকে নিয়ে সোফায় গিয়ে বসল।দীপশিখা দরজা বন্ধ করে ভিতরে আসতে শুক্লা বলল,তুমি আজ কলেজ যাওনি তাই দেখতে এলাম।
সঙ্গে ছেলেটি কে?দীপশিখার চোখে প্রশ্ন।
দীপুদি ইনি ড.সুজিত চৌধুরী।তোমার সঙ্গে আলাপ করাতে নিয়ে এলাম।ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বলল, আর ইনি আমার কলিগ কাম দিদি আপনাকে তো এর কথা বলেছি।
নমস্কার দিদি।ড.সুজিত দু-হাত জোড় করে বলল।
দীপশিখার ব্যাপারটা বুঝতে অসুবিধে হয়না।বললেন,বসুন একটু চা করি।
না দিদি অনেক রাত হয়ে গেছে,আরেকদিন এসে অনেক গল্প করা যাবে।ছেলেটি দাঁড়িয়ে বলল,দিদি আপনার উপর আমার ভাগ্য নির্ভর করছে।
আমার উপর?
হ্যা মিস বোস আপনাকে দেখাবার জন্য আমাকে নিয়ে এসেছে।আপনি বলবেন পাত্র পছন্দ হল কিনা?
ছেলেটি বেশ কথা বলে।দীপশিখা হেসে শুক্লাকে বললেন,তুই কলেজ যাসনি?
কলেজে গেছিলাম বলেই তো জানলাম তুমি যাওনি।এক্টু তাড়াতাড়ি বেরিয়ে ওনার সঙ্গে দেখা করেছি।
ড.সুজিতকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে গেল শুক্লা।
দরজার কাছে গিয়ে ড.সুজিত জিজ্ঞেস করে,কোন বার্তা নিয়ে যাব?
আপত্তির কোনো কারন দেখছি না।
থ্যাঙ্ক ইউ।সুজিত বেরিয়ে গেল।
শুক্লা ফিরে আসতে দীপশিখা বললেন,এমনি খারাপ নয় তবে একটু মোটা।
যাক তোমার পছন্দ হয়েছে।চিন্তা কোরো না দুদিনে চর্বি ঝরিয়ে দেব।দীপুদি একটু চা হবে না?
বোস আসছি।
দীপশিখা দু-কাপ চা নিয়ে টেবিলে রেখে সোফায় বসে বললেন,তারপর বল সারাদিন কি কথা হল?
চায়ের কাপ নিয়ে শুক্লা বলল,হাবিজাবি অনেক কথা।আপনি অধ্যাপনা লাইনে কেন এলেন?আগে কোনো এ্যাফেয়ার ছিল কিনা এই সব।
তুই কি বললি?
বললাম এ্যাফেয়ার কিনা জানি না তবে ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় একটা ছেলের সঙ্গে দোকানে রেষ্টুরেণ্টে ঘুরেছি।তারপর পাস করে যে যার মত নিজ নিকেতনে।
তুই কিছু জিজ্ঞেস করিস নি?
জিজ্ঞেস করতে হয়নি।নিজেই বলল,ডাক্তারী পড়ার সময় একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছিল কিন্তু মেয়েটি যদি অসভ্যতা না করতো তাহলে মেয়ে দেখে বেড়াতে হতো না।
তোর কথা শুনে সুজিত কিছু বলল না?
কি বলবে?ও যেমন খোলাখুলি বলেছে আমিও শুনিয়ে দিলাম।
দ্যাখ শুক্লা হাজার হলেও তুই মেয়ে।
দেখো দীপুদি তোমাকে আমি শ্রদ্ধা করি ভালবাসি।আমি মেয়ে ঠিকই কিন্তু মেয়ে হওয়া কি অপরাধ? আমরা মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের মনে করি মাটীর ভাড়।চা খেয়ে ফেলে দাও।প্রকৃতি নারী পুরুষ সৃষ্টি করেছে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে।চীনে মাটীর কাপে চা খাচ্ছে তারপর ধুয়ে সেই কাপে আরেকজনকে পরিবেশন করছে।মেয়েরা কি চীনে মাটির বাসনের চেয়েও ঠুনকো?ধরো বিয়ের পর যদি আমাদের ডীভোর্স হয়ে যায় তাহলে কি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারব না।পুরুষ শাসিত সমাজ সতীত্ব ইত্যাদি বড় বড় কথা আরোপ করে মেয়েদের দমিয়ে রাখতে চেয়েছে।বিদ্যাসাগর মশাই সমস্যাটা বুঝতে পেরেই বিধবা বিবাহ আন্দোলন করেছিলেন।বিধবা হলেই কি তার শারীরি ক্ষিধেতেষ্টা নষ্ট হয়ে যায়?
তাই বলে যার তার সঙ্গে?
আমি তো সে কথা বলিনি।হি মাস্ট বি ওয়ান অফ দা চয়েস।
খুব পাকা পাকা কথা শিখেছিস।
শুক্লা খিল খিল করে হেসে উঠল।হাসি থামতে বলল,তোমাকে বলিন,আমাদের সময় একজন অধ্যাপিকা ছিলেন কেতকী কর্মকার। শুনেছি উনি স্বামীকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু সেই ভদ্রলোক বউয়ের টাকায় বিদেশ গিয়ে আর ব্যাক করেন নি।কেকে ম্যাডাম আর বিয়ে করেন নি।সত্য মিথ্যে জানি না শুনেছি বাড়ীতে ওকে নাকি সার্ভিস দিতে আসে।
দীপশিখা চমকে উঠলেন বললেন,সেটা কি ভাল মনে করিস?
মন্দই বা বলব কি করে?একজন পুরুষের ক্ষেত্রে যদি মেনে নিতে পারি তাহলে মহিলার ক্ষেত্রে মানতে বাধা কোথায়? ম্যাডাম তো স্বামীর সঙ্গে প্রতারণা করেন নি বরং ওর স্বামী বেইমানী করেছে।কেকে ম্যাডামের পড়ানো নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী মহলে বেশ সুনাম আছে।এসবের কি কোনো মূল্য নেই?
দীপশিখা ঠোটে ঠোট চেপে নিজের চিবুকে হাত বোলাতে থাকেন।
শুক্লা বলল, উঠি দীপুদি কাল কলেজে দেখা হবে।শুক্লা উঠে দাড়াল।
উম যাচ্ছিস?দীপশিখা অন্য জগতে হারিয়ে গেছিলেন বললেন,হ্যা অনেক রাত হয়েছে।
রান্না ঘরে গিয়ে ভাতের হাড়ি চাপিয়ে দিলেন।ভাত ফুটছে শুক্লার কথাগুলো মনের মধ্যে বিজকুড়ি কাটতে থাকে।ভাত উতল আসতে হাড়ি না্মিয়ে উপুড় করে দিয়ে ঘরে এসে বসলেন।টিভি চালিয়ে দিয়ে ভাবতে থাকেন।বাল বিধবা একাদশীর উপোস করেছে আর বাড়ীর বয়স্করা গাণ্ডেপিণ্ডে ভাল মন্দ গিলছে।বিধবা বিবাহের এটাই একমাত্র কারণ ছিল না।ড কাঞ্জিলাল বলছিলেন চাহিদা পুরন না হলে বিকার দেখা দিতে পারে।ব্যাগ খুলে ঠিকানাটা চোখের সামনে মেলে ধরলেন।একাবার ফোন করে দেখাই যাক না ভেবে টিভি মিউট করে নম্বর টিপলেন।
হ্যালো বলুন কি করতে পারি?ওপার থেকে শোনা গেল।
সার্ভিসের ব্যাপারে কথা বলতে চাই।
একটা লিঙ্ক টেক্সট করে দিচ্ছি আপনি ফর্মটা ফিল আপ করে দেবেন।
কি রকম লাগতে পারে?
লিঙ্কে যান সব দেওয়া আছে।গুড নাইট।
দীপশিখা ফোন রেখে রান্না ঘরে গিয়ে ভাতের হাড়ী তুলে সকালে রান্না করা খাবারগুলো মাইক্রোভেনে গরম করতে থাকেন।ক্রিং করে শব্দ হতে দেখলেন লিঙ্ক পাঠিয়েছে।