13-12-2022, 09:06 PM
পর্ব-১০
রুদ্র বেলা করে ঘুম থেকে উঠল। সকালে জাহানারা কয়েকবার ডেকে গেলেও রুদ্র উঠেনি। আজ শুক্রবার সে-কারণে তাকে ঘুম থেকে উঠার জন্য জাহানারা তারা দেয়নি। তবে এখন দুপুর বারোটা। ছেলেটা সকালে কিছু খায়নি। সে আবার ডাকতে এসে দেখল রুদ্র উঠেছে। কিন্তু তার চোখ টকটকে লাল। সে জিজ্ঞেস করল, "রাতে ঘুমাস নেই, বাবা?"
"একটা কাজ ছিল, মা। সেটা করতে করতে সকাল হয়ে গেছে।" রুদ্র মিথ্যে বলে। অবশ্য তার মা সেটা বুঝলো না। কারণ রুদ্র প্রায়ই রাত জাগে। ভার্সিটির কোনো কাজ থাকলে সেটা সে রাত জেগে শেষ করে।
"একবারে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নে। আজ শুক্রবার। একটু পরেই আজান দিবে।"
"আচ্ছা, আম্মু।"
জাহানারা চলে গেলে রুদ্র আবার আলস্য ভঙ্গিতে শুয়ে পরলো। বালিশের নিচে হাত দিতেই সেখানে তরুর চিঠিটা অনুভব করল। গতকাল রাতে সে চিঠিটার দিকে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে ছিলো। সেখানে পড়ার মত কিছু নেই। কয়েকটা শব্দ মাত্র। যা রুদ্রকে পুরো হতাশ করেছে। এই কারণে সে সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। রাত জেগে তরুকে নিয়ে নানা কথা ভেবেছে।
সে চিঠিটা আবার খুলল। সেখানে তরু লিখেছে, "Rudro, I am sorry!" এটুকুই। হ্যাঁ, এইটুকু। কিন্তু এই চিঠির মানে কি? তরু কিসের জন্য সরি? রুদ্রের কাছে কোনো উত্তর নেই। সে তার সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চায়। কিন্তু সে আগেও চেষ্টা করেছে। তার সেই চেষ্টায় কোনো লাভ হয় নি। একমাত্র তরুই পারে তার সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে। এছাড়া সে শুধু অপেক্ষা করতে পারে তরুর পরের চিঠির জন্য। সে চাইলেও অন্য কিছু করতে পারবে না। আসলে সত্যিই তার করার কিছু নেই। তাকে আবার অপেক্ষা করতে হবে। দীর্ঘ অপেক্ষা। এক সপ্তাহ। দুই সপ্তাহ। রুদ্র জানেনা তরুর পরের চিঠি কবে আসবে। আর আসবে কি-না সেটাও সে নিশ্চিত না। রুদ্রের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তার কেনো কষ্ট হচ্ছে? তরু কে? কেনো তার জন্য কষ্ট হবে? কেনো?
মিলি ঘরে ঢুকল। সে এসেই অভিমান কণ্ঠে বলল, "ভাইয়া, আমি রাগ করে আছি!"
রুদ্র কিছু বুঝলো না। সে জিজ্ঞেস করে, "কে তোমার সাথে আবার দুষ্টু করেছে?"
"কেউ কোনো দুষ্টুমি করেনি।"
"তাহলে, রাগ করে আছ কেনো?"
"হ্যাঁ, আমি রাগ করে আছি। তোমার উপর অনেক রাগ করে আছি।" সে এতক্ষণ খাটের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। সে এখন খাটে বসল। মুখ ভাড়। চোখমুখে রাগ আনার চেষ্টা করছে।
"আমার উপর? আমি আবার কি করলাম? আমি কি কোনো ভুল করেছি?" রুদ্র শিশুর মত ভঙ্গি করে জিজ্ঞেস করে।
"তুমি অনেক পঁচা হয়ে গেছে। আমাকে এখন আর ভালোবাসো না।"
"আমি আবার বুড়িটাকে ভালোবাসিনা? এই পঁচা কথা কে বলল তোমাকে?"
"কেউ বলেনি। আমি বড় হয়েছি। আমি এখন সবকিছু বুঝি।"
রুদ্র শোয়া থেকে উঠে মিলিকে টেনে কলের ভেতর টেনে নেয়৷ তারপর কপালে চুমু দিতে দিতে বলে, "আমি আমার বুড়িটাকে সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসি।"
মিলির রাগ কমল না। সে গালের উপর হাত দিয়ে বসে আছে রুদ্রের কোলে।
"কি হলো, রাগ কমেনি এখনো?" রুদ্র বলল।
"না, কমেনি। তুমি মিথ্যে করে বলছ, ভালোবাসি।" মিলি বলল।
"আমি মিথ্যে বলছি?"
"হ্যাঁ, মিথ্যে। তুমি এখন আর আগের মত আমার সাথে কথা বলো না। আমাকে আইসক্রিম কিনে দেও না। আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া।" মিলির কন্ঠে হাজারো অভিযোগ।
"এই কারণে আমার বুড়িটা রাগ করেছে? আচ্ছা আজকে বিকালে আমরা সবাই মিলে ঘুরতে যাবো, ঠিক আছে?"
মিলি মনে মনে খুশি হলেও সে দ্রুত সেটা প্রকাশ করল না। সে বলল, "আমাকে দুইটা আইসক্রিম কিনে দিতে হবে।"
"একসাথে দুইটা আইসক্রিম খেলে-তো ঠান্ডা লেগে যাবে। তখন কষ্ট হবে না বুড়িটার?"
"ঠান্ডা লাগবে না। আমাকে দুইটাই কিনে দিতে হবে।"
"আচ্ছা, দিবো। এবার রাগ কমেছে?"
"হ্যাঁ, কমেছে।" মিলির কথা শেষ হতেই সে রুদ্রের কোল থেকে নেমে চলে যেতে থাকে।
"আমিও কিন্তু রাগ করেছি।" রুদ্র বলল।
"আই লাভ ইউ ভাইয়া!" মিলি একরাশ হাসি নিয়ে রুদ্রকে বলল। রুদ্রের মুখে হাসি ফুটে এলো মুহুর্তেই।
রুদ্র গোসল করতে করতে নানা কথা ভাবল। আজকাল সে বাসায় খুব কম সময় দিচ্ছে। সারাক্ষণ বাইরে বাইরে, যতক্ষণ বাসায় থাকে নিজের ঘরে একা একা থাকে। অবশ্য, নানা কারণে সে কিছুটা ডিপ্রেশনে আছে। সবকিছু কেমন করে বদলে যাচ্ছে। দ্রুত বদলে যাচ্ছে। বদলে যাওয়াই নিয়ম।
রুদ্র ঠিক করল আজ যেহেতু শুক্রবার সে সবাইকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাবে। তার মা জাহানারা, তার ছোট বোন, মিলি। তার দাদী, আলেয়া। আজ বিকালটা সে সবার সাথে কাটাবে। হাতে কিছু টাকা জমা আছে, সেটা আজ সে খরচ করবে। পরিবারের জন্য টাকা খরচ করার মত আনন্দ অন্য কিছুতেই নেই। এই আনন্দটুকু পাওয়ার জন্য মানুষ সারাজীবন এতো সংগ্রাম করে।
ক্লাস, প্রেজেন্টেশন, প্রজেক্ট, ফ্যামিলি, সবকিছু মিলিয়ে ব্যস্ততায় আবারও রুদ্রের সময় বয়ে যেতে লাগল। নদীর স্রোতের মত সে সময়ের ঢেউয়ে নিজেকে ছেড়ে দিয়েছে। পরিবারের দায়িত্ব ধীরে ধীরে তার উপর চলে আসতে শুরু করেছে। জাহানারার শরীরটা ভাল যাচ্ছে না। এদিকে তার দাদী আলেয়া সবসময় অসুস্থ থাকে। তার ছোট বোন নদী এখনো ছোট। বড় ছেলে হিসাবে তার দায়িত্ব সে অনুধাবন করতে পারছে। সে বুঝতে পারছে বছরখানেকের মধ্যে পরিবারের দায়িত্ব তার কাঁধে চলে আসবে। এদিকে এই সেমিস্টার ফাইনালের পর পরই ছয় মাসের ইন্টার্নি শুরু হবে। তখন ব্যস্ততা বেড়ে দিগুণ। মানুষের জীবনটাই অদ্ভুত। পৃথিবীতে অন্যের জন্য বাঁচতে হয়। তবে যারা এটায় অনন্দ খুজে পায়, তাদের চেয়ে সুখী আর কেউ হতে পারে না।
তরুর সেই ছোট্ট চিঠির পরে আর কোনো চিঠি আসে নি। সে যা ভেবেছিল সেটাই হয়েছে। তরুর ছোট্ট চিঠিটা দেখে যে কেউ বুঝবে এটাই তার শেষ চিঠি। কিন্তু এভাবে এটা শেষ হোক সে চায় নি। সে একটাবার চেয়েছিল, তরু নামে যে মেয়েটা তাকে চিঠি দেয় তার সাথে দেখা করতে। যে এতো সুন্দর চিঠি লিখতে পারে, এতো সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে, এতো সুন্দর হাতের লেখা, সেই মানুষটা কেমন হবে, সেটা জানার তৃষ্ণা এখনো রুদ্রের মনের মধ্যে রয়েছে। সে সেই অনুভূতি জীবনের বাস্তবতার দোহাই দিয়ে চেপে রাখে। সেটাকে বের হতে দেয় না। প্রকাশ পেতে দেয় না। তরু জেনো তার জীবনে কোনো এক অমীমাংসিত রহস্য। সে ভুলে যেতে চায়। কিন্তু পারে কি না তা বোঝা যায় না।
একটা মানুষ কি করে এমন করে কোনো মানুষকে ভালোবাসতে পারে? তরুর চিঠিগুলো তার কাছে না এলে সে জানতেই পারতো না। কিন্তু সে একটা বিষয় ভেবে পায় না, তরু যে রুদ্রকে ভালোবাসে সে কেনো তরুর কাছ থেকে দূরে চলে গেলো। এমন কাউকে কি করে ভুলে গেলো। সে কোনো খোঁজই নিলো না। অভিমান করে মানুষ বলতেই পারে দূরে যাওয়ার জন্য তাই বলে দূরে চলে যেতে হবে? রুদ্র কি তরুর চোখে ভালোবাসা দেখতে পায় নি? আসলে যে ভালোবাসা পায় না, সে পাগলের মত ভালোবাসা খুঁজে বেড়ায়। আর যে ভালোবাসা পায়, সে নিজ ইচ্ছে সেটাকে হারায়। রুদ্রের প্রতি তার অনেক হিংসা হয়। রুদ্রের জায়গায় সে থাকলে সে কখনোই তরুকে ছেড়ে যেতো না। যতই তাকে দূরে ঢেলে দিক, সে তাকে আগলে রাখতো, ভালোবেসে কাছে রেখে দিতো।
তরুর কথা আর কখনো ভাববে না করেও দিনের অবসর সময়টুকু রুদ্র তরুর কথাই ভাবে। সে যতই নিজেকে দেখাক সে তরুর কোনো কিছু নিয়ে কেয়ার করে না। কিন্তু তার মনে আসলে ঠিক তার উলটো। সে তরুর চিঠি পড়ার প্রবল তৃষ্ণায় ভোগে। তরুর সাথে একবার দেখা করা ইচ্ছেটা তাকে খুরে খুরে শেষ করে দিচ্ছে। তরুর এবং রুদ্রের মধ্যে কি এমন হয়েছিল যে এতোটা ভালোবাসার পরেও বিচ্ছেদের দেয়াল টেনে ন
দিতে হয়েছে? সেটা জানার জন্য সে মরে যায়।
তরুর ব্যাপারে এরকম হাজারটা প্রশ্ন রুদ্রের মনে মধ্যে বাস করছে। কিন্তু তার কাছে সে সব কোনো প্রশ্নের উত্তর নেই। এই জীবনে তাকে কি এই বোঝাটা বয়ে বেঁচে থাকতে হবে? রুদ্র জানেনা। সে কিছু জানতে চায় না। এভাবে হলে, সে এভাবেই বেঁচে থাকবে। তরুর স্মৃতি সঙ্গে। তার চিঠিগুলোর সঙ্গে। মানুষ তাকে পাগল ভাববে, বোকা ভাববে, কিন্তু মানুষের ভাবনায় কখনো কারো জীবনের গতিপথ পরিবর্তন হয় না। জীবন যেদিকে যাওয়ার সে সেদিকেই যাবে।
আজ রুদ্রের শরীরটা ভালো না। সে আজ ক্লাসে যায় নি। সে বসে বসে সেই সকাল থেকে টিভি দেখছে। এছাড়া সে সকালে মিলিকে কলেজে দিয়ে এসেছিল, দুপুরে আবার গিয়ে নিয়ে এসেছে। মিলি অবশ্য এখন একাই কলেজে যায়। একাই আসে। কিন্তু মাঝেমধ্যে রুদ্র এগিয়ে দেয়। মিলি এটা খুব পছন্দ করে। রুদ্রেরও ভালো লাগে৷
টিভিতে একটা পুরনো মুভি হচ্ছে। মুন্না ভাই এমবিবিএস। সে আগেও এই মুভিটা দেখেছে। একবারের বেশি কিন্তু এখন আবার দেখতে তার মন্দ লাগছে না। সে গুরুত্বপূর্ণ একটা সিনে আছে, ঠিক সেই মুহুর্তে কলিংবেল বাজলো। সে বসা থেকে উঠল না। কিছুক্ষণ পরে আবার কলিংবেলের শব্দ হলে সে অনিচ্ছায় সত্ত্বেও উঠল। দরজা খুলে দিলো। দরজার বাইরে যে দাঁড়িয়ে আছে, সে তার পরিচিত। অনেক দিন না দেখলে মানুষটাকে তার মনে আছে। সে একটা সময় এই মানুষটার জন্য অপেক্ষা করতো।
"আজকে কি বুধবার?" রুদ্র হঠাৎ ভদ্রলোককে প্রশ্নটা করল। সে আসলে মনে মনে নিজেকে প্রশ্নটা করতে চেয়েছিল।
"জি স্যার, আজ বুধবার।" লোকটা ছোট্ট করে জবাব দিলো। সে আবার বলল, "স্যার আপনার জন্য একটা পার্সেল আছে।"
রুদ্র অবাক হলো। পার্সেল? তাহলে তরুর চিঠি না? সে লোকটাকে দেখে প্রচন্ড খুশি হয়েছিল। কিন্তু লোকটার কথা শুনে সে তাৎক্ষণিক হতাশ হয়ে গেলো।
লোকটা একটা মেমো এগিয়ে দিয়ে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলল, "স্যার এখানে, আর এখানে সাক্ষর করতে হবে।"
রুদ্র কাগজটা হাতে নিল। সে একটু আগে যতটা হতাশ হয়েছিল কাগজের উপর প্রেরকের নাম দেখে তারচেয়ে দিগুণ খুশি হয়ে উঠল।
রুদ্র সাক্ষর করে কাগজটা ভদ্রলোকের দিকে এগিয়ে দিলো। এবং সে তার ব্যাগ থেকে প্যাকেট করা একটা পার্সেল বের করে রুদ্রকে দিলো। রুদ্র পার্সেলটা নিলো। ভদ্রলোকটা চলে যেতে লাগল। হঠাৎ রুদ্র বলল, "এক্সকিউজ মি!"
ভদ্রলোকটা ঘুরে তাকালো। সে বলল, "স্যার, কোনো সমস্যা?"
"না, কোনো সমস্যা নেই। আসলে একটা প্রশ্ন ছিলো।"
"জি স্যার বলুন। উত্তর জানা থাকলে আমি অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করবো।"
"এই পার্সেলে প্রেরকের কোনো ঠিকানা নেই। কোনো ভাবে কি ঠিকানা জানা সম্ভব? আসলে ঠিকানা জানাটা খুব জরুরি।"
"সরি স্যার। আসলে এটা কনফিডেনসিয়াল একটা ইস্যু। এছাড়া আমার কাজ শুধু প্রাপকেরা ঠিকানায় পার্সেল ডেলিভারি দেওয়া।"
রুদ্র কি বলব ঠিক করে নিচ্ছে। সে বলল, "কোনো ভাবে কি জানা সম্ভব? আসলে ঠিকানা জানা খুব জরুরি। এখানে একটা ভুলবোঝাবুঝি হয়ছে। একটা মিস্টেক হয়েছে।"
ভদ্রলোকটা উত্তর দিলো, "যেহেতু এখানে প্রেরকের ঠিকানা নেই, সেহেতু আপনি যদি আমাদের অফিসেও যান তাহলে সেখান থেকেও আপনাকে কোনো সাহায্য করতে পারবে না। তার মূল কারণ, প্রেরক নিজেই তার গোপনীয়তা বজায় রাখতে চাচ্ছে। তার অনুমতি ব্যাতিত অফিস থেকে কোনো ভাবেই তার কোনো তথ্য আপনাকে দিবে না। তারচেয়ে বড় আরেকটা কথা হলো, সে যদি তার ঠিকানা গোপন করেই পার্সেল পাঠায় তাহলে অফিসেও তার ঠিকানা পাওয়া যাবে এটার সম্ভাবনাও অনেক কম। "
লোকটার কথায় রুদ্র হতাশ হলো। সে তাকে আরো কিছুটা সময় নানা ভাবে বুঝিয়ে বলল। কিন্তু লোকটার কোনো কথায় কোনো আশার আলো দেখলো না রুদ্র। সে বলল, "হ্যাঁ, আপনার সকল কথা বুঝলাম। কিন্তু এটা জানার অধিকার আমার আছে, কে আমাকে পার্সেল পাঠাচ্ছে রেগুলার। কি অধিকার নেই।"
"সরি স্যার। আপনার বিষয়টা বুঝতে পারছি। আপনি চাইলে আমাদের অফিসে একবার খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। আশা করি তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারবে।"
রুদ্র আর কিছু বলল না। ভদ্রলোকটা চলে গেলো। সে দরজা বন্ধ করে সরাসরি তার রুমে চলে এলো। সে মুভি দেখার কথা ভুলেই গেলো।
রুদ্র রুমে এসে পার্সেলটা খুলল। সেখানে সুন্দর একটা ঘড়ি এবং তার পাশে একটা চিরকুট। সে চিরকুটটা আগে খুলল। নীল রঙের চিরকুটে লেখা, "রুদ্র, তোর হাতটা ধরে এই পৃথিবীতে চিরকাল রয়ে যেতে পারলে রয়ে যেতাম। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সেই ভাগ্যটা দেয় না। যেমন আমাকে দেয়নি। তাই তোর জন্য এই ছোট্ট উপহার। তুই যখন এই ঘড়িটা পরবি তখন মনে করিস আমি তোর হাত ধরে আছি। তারপর আনন্দের পথ ধরে ছুটে চলিস। এভাবেই জীবনটা কাটিয়ে দিস। আমি জানি, আমার হাত ধরে তুই কখনো দুঃখ ভারাক্রান্ত পথের দিকে পা বাড়াবি না। এটুকু বিশ্বাস আছে আমার।"
চিরকুটটা পড়া শেষ হলে, রুদ্র ঘড়িটা হাতে পরলো। ঘরিটা তার পছন্দ হয়েছে। এটা তার নয়, নাকি তারই? এতোদিনে এটুকু অধিকার তৈরি হয়েছে নিশ্চয়ই। সে এই উপহারটুকু রাখতে পারে। তার জন্য না হলেও, এটা পাওয়ার অধিকার সে রাখে। যে রুদ্র তরুকে রেখে পালিয়ে গেছে, এটা সে পাওয়া যোগ্য নয়। হ্যাঁ, সে পাওয়ার যোগ্য নয়!
বক্সের নিচে রুদ্র একটা খাম দেখতে পেলো। আজকে একটার পর একটা সারপ্রাইজ। সে কি স্বপ্ন দেখছে? না এটা সত্যি। কোনো এক অলৌকিক কারণে সে আজ প্রচন্ড খুশি। সে চিঠি পড়ার জন্য তারাহুরো করল না। আজকের জন্য এটুকুই যথেষ্ট। চিঠি না-হয় অন্য কোনো দিন, অন্য কোনো সময় পড়া যাবে।
চলবে...!
===========================
পড়তে থাকুন চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।
Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.
( Post By- Kam Pagol)