11-12-2022, 06:45 PM
dice that always roll 6
বুধন চাইছে শায়িত কাবেরীর পেছনে এখুনি এলিয়ে পড়তে
সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়েছে। গোধূলির বিদুর আলোয় ভরে গেছে অরণ্য। ঘুম ভাঙলো কাবেরীর। টুনির ঘুম ভেঙেছে। কাবেরী পুনরায় ব্লাউজের হুক খুলে শুষ্ক স্তনটা দিল টুনির মুখে। বোকা মেয়ে টুনি এবারও দুধের আশায় এই নতুন মায়ের স্তনকে শক্ত করে চেপে ধরল তার দন্তহীন মুখে। বেশ ভালো লাগছে কাবেরীর, খোলা চুলে পাশ ফিরে স্তন দিচ্ছে টুনিকে। বেশ খানিক সময় চোষানোর পর পাল্টে দিল পুনরায়। তারপর টুনিকে নিয়ে খেলতে লাগলো আপন মনে। তাতান-পাপান যখন ছোট ছিল এভাবেই মায়ের ওপর নির্ভরশীলতা ছিল তাদের। পাপান তবুও খেলার সাথী পেয়েছিল দাদাইকে। তাতানের সময় তা ছিল না। অরুণাভ অফিস চলে গেলে, ছোট্ট তাতানকে নিয়ে একা একা দুপুরটা কাটতো কাবেরীর। শাশুড়ি মার চলাচল করতে সমস্যা হত। শ্বশুর মশাই পুরোনো বাড়ির দালানে বসে বই পড়তেন তখন। তাতানের যখন তিন-চার বছর বয়স হল বিকেলে মা'কেই বল ছুঁড়তে হত তাতানের দিকে। তাতান কোমল হাতে শট নিত ব্যাটে। একেবারেই সেই দিনগুলিতে চলে গেল কাবেরী। এর মাঝে বুধন যে কখন এসে পৌঁছেছে বুঝতেই পারেনি সে।
বুধন লক্ষ্য করছিল টুনির সাথে কাবেরীর খেলা। কাবেরীর মাতৃত্ব, মমত্ব বুধনকে নিশ্চিন্ত করে তুলছে মনে মনে। বুধন আবেগী নয়, বরাবরেরই সে রগচটা, ক্রোধী এক শক্ত পুরুষ। তবু নিজের ঔরসজাত সন্তানকে নিজের করে নিতে পারা কামনা বাসনার প্রিয়তমা নারীকে দেখে তার মনে ঢেউ খেলতে লাগলো এক কামঘন প্রেমাসক্ত সমুদ্রে। বুধন চাইছে শায়িত কাবেরীর পেছনে এখুনি এলিয়ে পড়তে। কাবেরীকে নিজের করে একটা পরিবারের বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে। ঠিক যেভাবে রাতের বিছানায় স্বামী, স্ত্রী ও সন্তান শোয়।
খোলা চুলে কাবেরীকে যেন আরো বেশি আবেদনময়ী লাগছে, ছোট্ট হাতে গলার সোনার চেনটা মুঠিয়ে রেখেছে টুনি। দোল খাচ্ছে বুধন, আশৈশব স্বপ্ন দেখা জঙ্গলের বুনো রাজা মনে হচ্ছে নিজেকে। এ দৃশ্যসুখ থেকে সে বঞ্চিত হতে চায় না। ফর্সা বনেদী রমণীর বুকের কাছে খেলছে তার কালো আদিবাসী ঔরসজাত শিশুটি।
---কখন এলে? চমকে উঠে বললে কাবেরী।
---তোর মা-বিটির খেলাটা দিখছি অনেকক্ষণটা।
কাবেরীর ইচ্ছে করছে না টুনিকে তার বাপের কাছে ফিরিয়ে দিতে। তবু এক প্রকার বাধ্য হয়ে দিল বুধনের কোলে। মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে কেড়ে নিলে যেমন হয়, ঠিক তেমন মনের অবস্থা কাবেরীর। মাত্র কয়েকটা ঘন্টা সময়েই তারা দুজনে এত কাছাকাছি এসে গেছে।
বুধনকে কিছু বলতে হল না, মায়ের শূন্যতা বুঝতে নীরবতাই যথেষ্ট। সে বললে---ক'টা দিন পর তো তোর কাছটা রাইখবি এরে।
বুধন দিগা বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তার বিশ্বাস প্রকট। সে নিশ্চিত কাবেরীর স্তনে দুধ আসবে, তার সন্তান বনেদী জমিদার বংশের উত্তরসূরি শিক্ষিতা এই রমণীর স্তনে লালিত-পালিত হবে। কিন্তু কাবেরী অতটা নিশ্চিত হতে পারছে না। অসহায় লাগছে তার। সাগিনার শরীরটা ভালো নেই, যে কোনো মুহূর্তে বিপদ কিছু হয়ে যেতে পারে, টুনির কী হবে তখন!
বুধনের যাবার পর ধীরে ধীরে বিকেল গড়াতে লাগলো। যে জগৎকে কাবেরী চিনে এসেছে এ তার ভিন্ন। এই জগতে থাকতে থাকতে কাবেরী নিবিড় একাত্মতা বোধ করছে এই অরণ্যনী, ফুলপাতা, পাহাড়, টিলা, জোছনার সাথে।
সন্ধের আলোতে তিন তলার উন্মুক্ত ছাদে নেয়ে আসা মহুলের গাছের ডাল থেকে একটা পাতা তুলে আনলো কাবেরী। বৃন্ত ছোট, ডিম্বাকার পাতায় হালকা কামড় দিল। তা দেখে হেসে কুটোপুটি গেল কুন্তী। বললে---দিদিমণি মহুলাটার ফুলটা না খায়ে পাতাটা চিবাইছেন!
----ফুলটা খেলে কী হবে শুনি? ওই যে নেশা হয়?
---হাঁ দিদিমনি, রসটা মিঠাটা আছে। বাপটা হাড়িয়া খায়। তাতে মিশাই দিলে নেশাটা হয়।
---তোর বাবা কী প্রতিদিন নেশা করে?
----প্রতিদিনটা করে লাই। গজু দাদুর পাল্লাটাই পড়ি নেশাটা করে মাঝে মধ্যেটা। আগে তো বোঙ্গা বাবার পূজাটার লগে শুধু খাতো। তখুন মাটাও খায়।
কাবেরী হেসে বললে---তোর মাও খেত?
----তখুন তো সক্কলে খায়। নাচটা, গানটা কুত হয়। পরবটার সময়টারে থাইকলে দিখবে।
কাবেরী পাহাড়ি অরণ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। দৌড়াদৌড়ি করতে থাকা কুশিকে নিজের কাছে টেনে আনলো যত্নে। বললে---ওই দেখ বাঁদর।
কুশি তাচ্ছিল্য করে বললে---বান্দরটা আমার উঠাটাতে আইসে দিনিমণি। কুমরি ফলটা দিলে মুঠায় লয়েটা খায়।
কাবেরী বুঝতে পারলো এ তার শহুরে ছেলে তাতান-পাপান নয়। অরণ্যে বেড়ে ওঠা কুশির কাছে বাঁদর দেখা নতুন নয়। তাতান কিংবা পাপান হলে এ বয়সেও বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকতো। মনে পড়ল; এই যাঃ আজ তো পাপানের পরীক্ষা! বাড়িতে ফোন করবার কথা। পাপানের ক্লাস টেস্ট শুরু হয়েছে। হায়ার সেকেন্ডারীর প্রিপারেশন কেমন তা টেস্ট করে নিতে কলেজগুলি এই প্রিটেস্ট-টেস্ট পরীক্ষাগুলি নিয়ে থাকে।
তৎক্ষনাৎ নীচে নেমে এসে রিসিভারটা ঘোরালো ও। ওপাশ থেকে পাপানই ধরল ফোনটা। মায়ের গলা চিনতে ভুল হল না তার। অবলীলায় বললে---মা?
----কীরে পরীক্ষা কেমন হল?
---ওই বাংলা যেমন হয়।
বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্ররা ভাষাগত বিষয়কে কেন যে তাচ্ছিল্য করে কাবেরীর বোধগম্য হয় না। কাবেরীর বাবা ছিলেন পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক। প্রায়ই বলতেন যে কল্পনা করে, যার মধ্যে শিল্পভাবনা আছে সে'ই বিজ্ঞানী হয়। বাবার কথাটা চিরকাল মনে রেখে দিয়েছে কাবেরী। বলল---ওমা! বাংলা হয়েছে তো কী হয়েছে। ওতে নম্বর দেবে না বুঝি।
ক্লান্ত ও বিরক্ত দেখালো পাপানকে----বাংলায় তো আর দু'শ দেবে না মা।
কাবেরীর মনে পড়ল তার ছোট ছেলে এই প্রথম টানা ছ'ঘন্টার পরীক্ষা দিচ্ছে। এর আগে দু'শ মার্কের পরীক্ষা কখনো দিতে হয়নি ওকে। ফলতঃ ধকল গেছে খুব। তাই আদরে করে বললে---খেয়েছিস এসে?
---হ্যা দাদাই নুডলস করে দিয়েছিল।
---দাদাই! তাতান করেছে?
----হ্যা।
কাবেরীর বুকটা আনন্দে ভরে উঠল। দুই ছেলেকে সমান ভাবে ভালোবাসলেও কাবেরী তাতানকে একটু বরাবরই বাড়তি গুরুত্ব দেয়। আসলে বড়টা একটু শান্ত প্রকৃতির বলেই।
---বাপি ফিরেছে নাকি? বলেই ঘড়ির দিকে তাকালো কাবেরী। ছ'টা দশ। এখন অরুণাভর ফিরবার কথা নয়। পাপানও জানালো অরুণাভ ফেরেনি। মালতী মাসি এসেছে রান্না করতে।
কথা সেরে কুন্তী-কুশিকে পড়াতে বসল কাবেরী। কুশিকে ইংরেজী শেখাতে লাগলো অক্ষর চিনিয়ে 'এ ফর আপেল'। আপেল ফলটা কুশির কাছে অপরিচিত। তাই কৌতূহলী হয়ে বলল----ইটা কি ফলটা আছে দিনিমণি?
কাবেরী বললে---ভুলে গেলি, সেদিন যে তোকে খেতে দিয়েছিলাম। যেদিন এখানে এলি প্রথমবার।
কুশি দ্রুত মনে করতে পারলো, বললে---সি মিঠা ফলটা?
----হুম্ম। খাবি? তোর হেমেন দাদু কিন্তু আনিয়ে রেখেছে। তবে তার আগে পড়াটা শেষ করে উঠতে হবে।
রাত্রি বয়ে গেল নির্দ্বিধায়। প্রকট অনুভূতি আজ আর কিছু হল না কাবেরীর। শুধু আকাঙ্খা রয়ে গেল মনে, তার স্তনদ্বয় আবার দুধে ভরে উঠুক, বাচ্চাটা দুধ পাক।
+++++++