05-12-2022, 10:19 AM
(04-12-2022, 11:10 PM)ray.rowdy Wrote:ভাই, তোমার এই খসড়া পড়ে সবার প্রথমে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক রচনা পড়ার অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেলো. নারায়ণ স্যানালও একটা-দুটো লিখেছিলেন যতোটা মনে পড়ে; ওনি শরদিন্দুবাবুর ভাবশিষ্য ছিলেন মনে হতো. ওনার ঐতিহাসিক লেখাতেও সেই ধরণের রস ছিলো বলেই সেটা মনে হয়েছিলো.
যাক, গল্প তো দারুণ হবে. একটা জায়গায় কিছুটা খচখচানি রয়ে গেলো. কীরাতদেশ (এখনকার ত্রিপুরা) হতে পুরো অঙ্গ পার হয়ে (তার মানে পুরো বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ পার হয়ে) মগধে গিরিব্রজ (পরে রাজগৃহ - এখন রাজগীর) -এর প্রায় কাছাকাছি চলে যাওয়া, কিছুটা অদ্ভূত ঠেকলো - ও তো কোনো পরিব্রাজক নয়, যতোটা মনে হলো ভাগ্যসন্ধানী. যাক আগে দেখি তুমি কি লিখবে. জানিনা, তোমার কাহিনীর সময়কালের বিস্তৃতি কতোটা - যে সময়টা তুলে ধরলে, যদি বিম্বিসারের শাসনকালেরও কিছুটা অচিন্ত্যর কথায় ওঠে আসে তবে হয়তো মহাবীর আর শাক্যমুনি (গৌতম বুদ্ধ)-এর কথা লোকমুখে-চর্চায় শোনা যেতে পারে.
আগে ভালো হয়ে ওঠো, পরে এই বিষয় নিয়ে চর্চা করা যাবে.
শরদিন্দুবাবুর ঐতিহাসিক কাহিনী সকলের পুনঃস্মরণ করাইতে পারিয়াছি ইহা আমার পরম ভাগ্য মহাশয় না হইলে ওই প্রশান্ত মহাসাগর সম্মুখে এই রাস্তার এঁদোখালের দাঁড়াইবার সাধ্য কোথায়। নারায়ণ স্যান্যালের লেখনী অবশ্য পড়ার সৌভাগ্য এখনও হয় নাই।
সত্য কহিয়াছেন, ভাগ্যান্বেষীর ভাগলপুর পৌঁছাইয়া যাওয়ার পিছনে কারণ কী! উত্তর দিতে গেলে ভারি লম্বা লিখিতে হইবে আমি সংক্ষেপে দিবার প্রচেষ্টা করিতেছি।
এক কাহিনী লিখিবার কালে বা অন্য কাহারো কাহিনী পড়িবার সময়ই মাথায় আরেক কাহিনীর খাঁচা বাসা বাঁধে। সরলবাবুর কাহিনী লিখিবার সময় রাজনন্দিনীর কথা মাথায় আসিয়াছিল। যদি ভাঙ্গিয়া দেখেন বুঝিবেন দুইটি কাহিনীতেই মৌলিক একটী মিল আছে, এক্ষেত্রে পরকীয়া। সেইরূপ রাজনন্দিনী লিখিবার সময় প্রাচীনকালের ধারণা মাথায় বাসা বাঁধিয়াছিল যে সময়ের সরণি বেয়ে আরও পিছনে চলিয়া গেলে কেমন হয়! সেই হেতু অচিন্ত্যের নির্ম্মাণ।
যেহেতু সকলই একটী মালার নয় সংযোজিত থাকে তাই এক কাহিনী শেষ হইলে খাতা আর কলম লহিয়া পরবর্তী কাহিনীর সেই খাঁচাকে সামান্য রূপ দেওয়া তাহার পর অবসর সময়ে মালমশলা দিয়া তাহাকে আগাইয়া লহিয়া যাওয়া হয় পরিণতির দিকে। সব শেষে মোবাইলের কীবোর্ডে ওয়ার্ডপ্যাড খুলিয়া পাণ্ডুলিপিকে টাইপ করা বা অক্ষরবিন্যাস করা। এই হইলো আমার পুরা প্রসেস আর এই কারণেই আমি আগেভাগে বলিয়া দিতে পারিতাম কোন কাহিনী ইহার পর আসিবে।
এক্ষণে, সমস্যা হইল অচিন্ত্যের কাঠামো বানাইয়াছিলাম এক মাস পূর্ব্বে তাহার পর জীবনে যে ঝড় আসিয়াছিল তাহা সম্পর্কে আপনি অবহিত। এই ঝামেলায় পড়িয়া সমস্যা হইল ঠিক কোন রাস্তায় গল্পখানি লইয়া যাইব আজ তাহা গুলাইয়া গিয়াছে। পূর্ব্বতন মহাবীর্য্যের মস্তিষ্কে কোন খেয়াল বাজিতেছিল তাহার শেষ চিহ্ন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। বিস্তর কারণ রহিয়াছে ওই সময় আমার আর বাবানের মধ্যে শীতের কালে ভূতের গল্প লইয়াও আলোচনা হইতেছিল তাই হয়তো এই কাহিনীকে অতিপ্রাকৃত করিতাম আবার অন্যদিকে ওই সময় টাইম মেশিন নামের একটী পশ্চিমী গল্প পড়িতেছিলাম তাই হয়তো কালান্তর আনিতাম। এখন যেমন মহাকবি বাণভট্টের কাদম্বরী উপন্যাস পড়িতেছি তো মনোমধ্যে রোম্যান্টিক কাহিনী লিখিবার বাসনা জাগিতেছে তাই বলা ভারী শক্ত!
বিম্বিসারের সিংহাসনে বসিবার আগেই সম্ভবতঃ এই কাহিনী শেষ হইতো। তাই কতজনের উল্লেখ হইতো কহা মুশকিল।
আপনার ওই প্রশ্নের উত্তরে আমার যদ্দুর মনে হয়, খসড়াতে এক স্থানে মাতুলালয়ের উল্লেখ রহিয়াছে। অর্থাৎ অচিন্ত্য ত্রিপুরা ছাড়িয়া বিহারে যাইতেছিল মামাবাড়ির উদ্দেশ্যে কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতি বুঝিয়া সে উক্ত বাড়ীতে যাইতে নিমরাজী হইয়াছিল।