01-12-2022, 03:04 PM
শেষ পর্ব
ছোট খাটে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা এক মেয়ে। সিঁদুরে রাঙিয়ে ওঠা কপাল তার এবং সোনালী বন্ধনে ঢাকা যৌবন। চারিপাশে ফুলের গন্ধে পরিপূর্ণ। বাইরের খোলা জানালা। তা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে কলঙ্ক মাখা চন্দ্রমা। সে দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে রঙিন রূপে সজ্জিত মেয়েটি। হয়তো কারও অপেক্ষায়। এতদিনের মুক্ত জীবন ছেড়ে আজ সে নতুন একজন হয়ে উঠেছে। এই চিরস্থায়ী পরিবর্তন সম্পূর্ণ রূপে মন থেকে মেনে নেওয়া সহজ নয় কোনো নারীর পক্ষেই। সময় লাগে। নেই আশেপাশে চেনা কেউ, সবাই অচেনা। ধীরে ধীরে নাকি এরাই হয়ে উঠবে আপন আর এই গৃহ হয়ে উঠবে সংসার।
ঐযে খুলে গেলো সবুজ দরজা খানা। প্রবেশ হলো নতুন কাপড় পরিহিত সদ্য পরিচিত পুরুষটির। নিজ বিছানায় বসে থাকা নব যৌবনে জীবিত সুন্দরীর পানে কিছুক্ষন অজানা চোখে তাকিয়ে থেকে লাগিয়ে দিলো দরজা খানা। ঢোক গিললো মেয়েটি। কেমন যেন অজানা কারণে ভয় হচ্ছে। এই নতুনত্ব যেন বড্ড অসহ্য। এগিয়ে এলো সেই মানুষটি খাটের কাছে। পিতা মাতার ইচ্ছায় আজ থেকে এই মানুষটিই নাকি ওই মেয়েটির প্রভু। প্রভুর সেবা করাই স্ত্রীয়ের ধর্ম। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো সে নিজ প্রভুকে। খুশি হলো সে নিজ অর্ধাঙ্গিনীর এই সম্মান প্রদর্শনে। নিষ্পাপ আঁখি জোড়া যেন তার বড্ড মায়াময়। আর সেটাই যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে স্বামীর অন্তরে। গ্রাম্য নববধূর এই রূপ যৌবনের আর বেশিক্ষন সহ্য করতে পারেনি সে পুরুষ। এতো সজ্জিত কেন এই মেয়ে? এই শরীরের বহির আবরণ এতো পরিপাটি করে সাজানো কেন? নানা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না এই রূপ। বিনষ্ট করতে উদ্যোত হলো সেই পুরুষ ওই পবিত্র উজ্জ্বল শক্তি। সেদিন প্রথমবার সেই মেয়ে বুঝেছিলো ব্যাথা বড়ো আজব জিনিস। ভালোবাসতেও লুকিয়ে থাকে আবার শরীরেও।
রাতে বৃদ্ধার সঙ্গে সময় কাটিয়ে ওই ঘরেই নিজ আহার সেরে বাসন পত্র ভৃত্তের হাতে দিয়ে এসে ওনাকে ঘুম পাড়িয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম ও ঘর থেকে। কোলে আমার মানিক। তার নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে আবোলতাবোল বকতে বকতে উঠোন পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি হটাৎ যেন বিশাল কোনো স্তম্ভতে ধাক্কা খেলাম। কোলেরটাকে অমৃত পান করিয়ে শান্ত করার তাড়াহুড়োয় এই দুর্ঘটনা। অসাবধানে এমন ধাক্কায় হয়তো আরও বড়ো কিছু হয়ে যেত কিন্তু একটা শক্তিশালী হাত টেনে নিলো আমায় নিজের কাছে। অজান্তেই কখন যেন লেপ্টে গেলাম ওই স্তম্ভর সহিত। চোখ তুলে তাকাতেই বুঝলাম সত্যিই আমি ঠিক। স্তম্ভই বটে..... এ গৃহের।
- ঠিক আছেন?
- আআ... আজ্ঞে! দুঃখিত! এই ভাবে
- নানা কোনো ব্যাপার নয়। আপনি ঠিক আছেন তো?
মুখ তুলে তাকালাম মুখপানে। এ কে? ইনি কি সেই ব্যাক্তি যিনি এই আশ্রিতার আবির্ভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে গিন্নিকে ধমক দিয়েছিলেন? এ কোন রূপ তার? এ কোন ভাষা?
- দেখে চলবেন না? আরেকটু হলেই তো নিজেও কষ্ট পেতেন আর খোকাকেও কষ্ট দিতেন।
- কষ্ট? সে তো সঙ্গে সর্বদা নিয়েই কাটাচ্ছি। নতুন করে আর কষ্টের মুখ দেখবো? বাকি রইলো এই কোলেরটা। সেও তো ওই নিয়েই একটু একটু করে বড়ো হবে। বাপ হারিয়েছে, পরিবার হারিয়েছে। আছে বলতে এই মাটা।
- এই বা কম কি? অনেকেরই কাছে তো সেই সম্বল টুকুও থাকেনা। ও অনেক ভাগ্যবান যে এমন একটা মা পেয়েছে।
কিছু বলতে পারিনি আর। শুধুই তাকিয়ে ছিলাম তার চোখের দিকে। রাগী কঠোর পুরুষের নম্র রূপ বুঝি এতো আকর্ষক হয়? কি জানি। আমারটাকে তো শুধুই রাগতে দেখেছি আর ব্যাথ্যা দিতে দেখেছি দু পায়ের মাঝে। লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলাম। পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলাম হটাৎ আবারো সেই পুরুষালি কণ্ঠ শুনলাম-
- শুনুন!
পা থামিয়ে একটু মাথা ঘুরিয়ে তাকালাম। কর্তাবাবু নিজেও সম্মুখে ফিরে বললেন 'সেদিনের জন্য দুঃখিত'। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম কোনদিনের জন্য?
- প্রথম যেদিন এসেছিলেন। আসলে এমনিতেই আমাদের জমির মামলাটা নিয়ে একটু চিন্তা যাচ্ছিলো তার মধ্যে আপনার আবির্ভাব। তাই ওই রাগের মাথায়.......
- আমি কিন্তু বলবো আপনার বিন্দুমাত্র দোষ ছিলোনা। ঠিকই তো। চেনেন না, জানেন না... এসে আশ্রয় চাইলেই কি হলো? এ গৃহ কি আশ্রয়ঘর নাকি?
আমার কথা শুনে বোধহয় সামান্য বিব্রত হতে হলো ওনাকে। কিন্তু আমি যেন এক অদ্ভুত তৃপ্তি পেলাম। মুখে যদিও বললাম - বড্ড ঝামেলায় ফেলেছিনা আপনাকে? আমি দুঃখিত
- নানা! আমিই আসলে একটু......... আমি চিনতাম না আপনাকে। আর যাকে আমি চিনিনা তাকে সহজে বিশ্বাসও করিনা। কিন্তু....... কিন্তু আসার পর থেকে যেভাবে আমার মায়ের সেবা করে চলেছেন। মাকে এতো সুস্থ বোধহয় অনেকদিন দেখিনি। ধন্যবাদ। আপনার ওই বন্ধুও পারেনি মায়ের এভাবে ফিরিয়ে আনতে। ধন্যবাদ।
- ওটি বলবেন না....ওটা আমার কর্তব্য। যে বাড়ির অন্ন খাচ্ছি সেবাড়ির সামান্য কাজে লাগতে পারলেও আমি ধন্য। আসি।
চলে এসেছিলাম আর কিছু না বলে এবং বলতে না দিয়ে। কিন্তু যেন বুঝতে পারছিলাম সে তখনও দাঁড়িয়ে আমাকেই দেখে চলেছে। হয়তো ক্রুদ্ধ নয়নে নয়, এক অজানা চোখের চাহুনি বর্তমান সে চোখে। কিন্তু ঘরে ফিরেও কি শান্তি পেয়েছিলাম? ভেতরের সেই জমে থাকা অজানা অনুভূতি গুলো জেগে উঠেছিল পুনরায়। ওই শয়তান পোকা গুলো মাথায় কিলবিল করতে শুরু করেছিল আবারো। এসব কি? এসব কেন? আজ কেন? এতো দুঃখের মধ্যেই বা কেন? তাহলে আমার বান্ধবীই কি ঠিক? আমি কি...... আমি এতটাই অসভ্য?
উত্তর পাইনি একটাও। কিন্তু বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠেছে দুটো পুরুষের মুখমন্ডল। একটা আমার সোনা মানিকের জন্মদাতা পিতা। যে ভালোবাসার কিছুই দিতে না পারলেও শরীরে আগুন জ্বালিয়ে না নিভিয়েই পালিয়ে গেছে। আর অন্য দিকে আরেক পুরুষ যে ওই আগুনে পুনরায় ঘি ঢালছে। আমি দুশ্চরিতত্রা নই। তাই যদি হতো কম বয়সেই করো হাতে নিজেকে সপে দিয়ে তার পৌরুষে শান্ত করতাম নিজের শরীরের উত্তাপ। কিন্তু আমি তা করার কথাও ভাবিনি। কিন্তু বিয়ের পর রাতের পর রাত ওই মানুষটা এই শরীরটা দখল করে এতোটাই নিজের তৃস্না নিবারণ করেছে যে পুরুষ সম্পর্কে আমার ভেতরের ধারণা অধিক পরিমানে পাল্টে গেছে। কিন্তু আজ এই সময় দাঁড়িয়ে কেন আবার অন্য এক অনুভূতি উঁকি মারছে অন্তরে? ছি! এসব কি হচ্ছে আমার সাথে? বড্ড অসভ্য হয়ে উঠছি আমি তো। সামান্য সেবিকা হয়ে এতো কিসের লোভ?
রাতের নিস্তব্ধ আঁধারে একটা নারী শরীর দ্রুত পায়ে নোমে আসছে দোতলা থেকে। বারান্দায় ঝুলন্ত হ্যারিকেনের আলোয় পাশের অমসৃন দেয়ালে পড়া নিজের ছায়া দেখে নিজেরই বুকটা কেঁপে উঠছে তার। বড্ড ভয় হচ্ছে তার। নানা অপার্থিব কোনো কিছুর নয়, একটু আগেই সাক্ষী হওয়া মায়াবি দৃশ্যকে ও সর্বোপরি নিজেকে!
হ্যা আমি! আমিই উঠেছিলাম দোতলায় এই রাতে। আবারো ওই সকলের চেনা অপাকে ছেলের পাশে ঘুম পাড়িয়ে রেখে উঠে এসেছিলাম গৃহের উচ্চ সীমায়। বারবার নিজেকে আটকে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বারবার পোকা গুলোর সংখ্যা বেড়ে বেড়ে এমন অসহ্যকর অবস্থায় ফেললো আমায় যে লজ্জার মাথা খেয়ে উঠে পড়তেই হয়েছিল। যত এগোচ্ছিলাম ততই একটা অজানা কৌতূহলের চাপে হৃদস্পন্দন বেড়ে চলেছিল। কিন্তু সেটাই যেন আরও অদম্য ইচ্ছা বাড়িয়ে তুলছিলো। সইয়ের মুখে শোনা কথাগুলোর সত্যতা যাচাই করার ভয়ানক স্পৃহা। ওতো বড় বাড়ির বিশাল সব বন্ধ কক্ষ গুলো পার করতে করতে এগিয়ে গেছিলাম আমার মূল গন্তব্যে। পৌঁছাবামাত্রই কানে এসেছিলো পালঙ্কের অশান্ত হয়ে ওঠার চিৎকার। সাথে মোর চেনা পুরাতন কণ্ঠের ব্যাথা মিশ্রিত শীৎকার। ব্যাপারটা বুঝতেই লজ্জায় ও অদ্ভুত শিহরণে আবারো কেমন করে উঠলো ভিতরটা। বন্ধু আমার তাহলে উচিত কথাই বলেছিলো দেখছি। কক্ষের অন্দরে প্রবেশের পথ বন্ধ থাকলেও হাওয়ার শীতল স্রোত প্রবেশ করার জন্য সৃষ্ট জানালা খানি খোলা। যেন কেউ পূর্বেই জানতো এক আগন্তুকের আবির্ভাব ঘটবে এই নিশিরাতে। অমন একটা পর্যায় পৌঁছেও বারবার তন্দ্রাচ্ছন্ন অপা ঘুম থেকে জেগে অনেকবার বলেছে আমায় ' ওরে হতচ্ছাড়ি যাসনি যাসনি! তোর এতো কিসের কুটকুটানি? লজ্জা করেনা তোর অসভ্য মাগি?' কিন্তু তাও সেই মমতাময়ী রূপের তোয়াক্কা না করে এগিয়ে গেছি জানালার দিকে। হ্যারিকেনের নিভু আলোয় দেখেছি সেই অদ্ভুত মায়াবি দৃশ্য। কি সাংঘাতিক সুন্দর সে মুহুর্ত! সই আমার বাচ্চার মতো হামা দিয়ে দাঁড়ানো আর পতিদেব পশ্চাৎ হতে কোমর সঞ্চলনে মত্ত। দুই শরীর লেপ্টে ওকে অপরের সহিত। যেন এই বন্ধন চিরকালের মতো অটুট। বন্ধু আমার সুখের ব্যাথা মুখে প্রকাশ করে অনবরত আবোলতাবোল বকে চলেছে আর রতিসুখে উন্মত্ত সেই ব্যাঘ্র নিজ হরিণীর মাংস আয়েশ করে উপভোগ করছে। চোখে মুখে কি বীভৎস উন্মাদনা। দিনের আলো গায়ে মেখে রাঙিয়ে ওঠা ওই উজ্জ্বল মুখশ্রী যতটা কঠোর ততটাই উগ্র এই রাতের রূপ তার। নিজের মহান পৌরুষ শক্তি দিয়ে ওই দুর্বল শরীরটাকে উল্টেপাল্টে খাচ্ছে। ইশ! আহাগো সই আমার! কিভাবে অসহায় হয়ে শুধুই দেখে চলেছে স্বামীর অসভ্যতামি। কিছুই করার নেই তার। আটকানোর নেই স্পর্ধা। হটাৎ মনে প্রশ্ন জাগে আমার। প্রতি রাতেই কি এরূপ সম্ভগক্রিয়া ঘটে নাকি আজকেরটি ভিন্ন? এক অজানা অচেনা নারীর সহিত আকস্মিক ধাক্কার ফলে লেপ্টে যাওয়া নরম স্তনের স্পর্শই কি আজ ওই পুরুষের লোভ শতগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে? তাকে আজ থামানো অসম্ভব। সে যথার্থ পুরুষ। হৃদয়ে কোমল, শক্তিতে বৃষ এবং কামে সিংহ!
সে পুরুষ অত্যাচারী নয়। কিন্তু এক যোগ্য স্বৈরাচারী। তাকে বাঁধা দেবার ক্ষমতা অনেক সমগোত্রীয়দেরই নেই তো ওই মেয়ে কিভাবে থামাবে তাকে। আসল কথা হলো সেও কি থামাতে চায় তাকে? তাই যদি হবে তাহলে ওই হালকা হাসি কেন শয়তানির ঠোঁটে? আসন পরিবর্তন করে স্বামীর বিশাল দেহের ওপর চড়ে নির্লজ্জ্ব হয়ে লাফালাফি করার মধ্যেই হেসে উঠছে সে। এখন কে অসভ্য সেটা গুলিয়ে যাচ্ছে আমার। আমি? ওই পুরুষ? নাকি তার সজ্জাসঙ্গিনী?
বুড়িমা সত্যিই পাগলী এবার বুঝলাম আমি। সেদিন গলা ভাত আর সবজি খাইয়ে দিচ্ছি তাকে আর সে আমার মানিককে নিয়ে খেলছে। যেন খুকি খেলছে পুতুল নিয়ে। খিলখিল করে হাসছে আমার মানিক। আমি সবে ভাতে সবজি মাখিয়ে ওনার মুখে তুলেছি অমনি বুড়ি বলে - কি মিষ্টি মুখখানা দেখ খোকার। এক্কেবারে তোর মতন। আর এমন একটা বাচ্চা বাপের আদর পেলোনা। আহারে। আর এই মাইয়াকে দেখো দিনরাত খেটে মরছে আমার পিছনে। বলি তুই কি এ বাড়ির দাসী নাকি রে? রান্না করবি, আমার সেবা করবি, ওই পোড়ামুখীর কাপড় কাচবি। ঝাঁটা মারি অমন ডাইনির মুখে। মেয়েটাকে খাটিয়ে মারলে গো!
সামান্য হেসে বললাম - এতে খাটনির আর কি গো কর্তা মা? এ আমার অভ্যেস আছে। আর আমি তো খারাপ নেই গো। শশুর বাড়ির চোখ রাঙানি, অত্যাচার, অপমান, বাপের বাড়ির অপমান সব যেখানে হজম করলুম,সেখানে এ তো স্বর্গ গো। তাছাড়া আমার মানিক তো আমার কোলে আছে। কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবেনা ওকে আমার থেকে। আপনাদের মতন আশ্রয়দাতা পেয়েছি। এ আমার কোনো পুণ্যের ফল মা জননী।
মানুষটা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলো - সোনা মা আমার। ওরে খোকা দেখে যা... দেখে যা একে বলে গৃহ লক্ষী। একা হাতে সব সামলায়। তোর ওই হতচ্ছাড়ির মতো নয়। সারাদিন পটের বিবিটি হয়ে বসে আছে। ইশ যদি ও বাড়ির সন্ধান না পেয়ে তোর বাপের বাড়ির সন্ধান আগে পেতুম......আজ তুই হতিস আমার বড়ো বউমা রে। এই থানের বদলে গায়ে থাকতো লাল বেনারসি, আর খোকা খুকি ঘুরে বেড়াতো সারা বাড়ি। তোর ওই নাগর তো তোকে এই একটা দিয়েছে, আমার খোকা হলে এতদিনে চার পাঁচটা পুরে দিতো ভেতরে হিহিহিহি।
- ইশ কর্তা মা! যাহ! কিচ্ছু আটকায়না না তোমার মুখে? তোমার বৌমা ঠিকই বলে। যা মুখে আসে বলে ফেলো। ছি!
- ছি কিরে পোড়ামুখী! ভুল কি বলেছি। বলি নিজেকে আয়নায় দেখেছিস ভালো করে? যৌবন রূপ যে ফেটে পড়ছে। এমন বৌমা কোন শাশুড়ি চায়না রে ছেলের জন্য? ওই শুটকিকে আমার খুব একটা পছন্দ না হলেও খোকার ভালো লেগে যাওয়াতে আনতে হলো বৌ বানিয়ে। ওখানে যদি তুইও থাকতিস না..... দেখতাম কেমন করে খোকার নজর ওই মাগীর ওপর যেত? আমার খোকাকে তো আমি চিনি। এই পেটেই জন্মেছে ওটা। একেবারে বাপের মতো হয়েছে। ওর বাপটা যেমন শয়তান ছিল, ছেলেও তাই হয়েছে। তোকে যেমন রাজরানী করে রাখতো তেমনি লুটে পুটে খেত তোর বদন। বুঝলি ছুড়ি হেহেহেহে। আরে পালাচ্ছিস কোথায়? হেহেহেহে
ঘরে পালিয়ে এসে নিজেকে ওই এক কোণে টাঙানো পুরানো আয়নাটায় ভালো করে দেখেছিলাম সেদিন। এর আগেও কতবার ওটায় দেখেছি নিজেকে। ইচ্ছে করেনি বেশিক্ষন ওটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে। কিন্তু কর্তা মায়ের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে যেন নিজেকে দেখতে খুব ইচ্ছে জেগেছিলো। নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করার লোভ। নিজের প্রতিফলিত চিত্র ফুটে উঠেছিল ওটায়। ভুল কিছু বলেনি বুড়ি। গায়ে যেমন মাংস আছে, তেমনি আছে রূপ। স্বেত আবরণের অন্দরে লুকিয়ে থাকা স্তন জোড়ার কম্পন, হালকা ঘেমে ওঠা গলা,অশান্ত চাহুনি। যেন কোনো দক্ষ মৃৎ শিল্পীর অন্যতম সেরা সৃষ্টি। কিন্তু এই সৃষ্টির জন্য লিখেছিলো এমন ভবিতব্য? এই অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো এইবভাবেই জাগ্রত হবে আর এই ভাবেই কি শীতল হবে? এইভাবেই চলতে চলতে একদিন এই শরীরেও আসবে দুর্বলতা। এই সৌন্দর্য অদৃশ্য হবে একটু একটু করে। কমে যাবে যৌবনের ভয়ঙ্কর তেজ। নিভে যাবে কামনার আগুন। ঝুলে যাবে সব মাংস। মস্তিক হারিয়ে ফেলবে স্মৃতি আর শেষে........!
ভয় বড্ড আজব বস্তু। কাউকে ভীতু বানিয়ে দেয়, আবার কাউকে সাহসী। কেউ একা রাতে উঠোন পেরিয়ে কলঘরে যেতে ভয় পায় আবার কেউ ভিজে গায়ে ছাদে দাঁড়িয়ে নিম্নে উপস্থিত কাউকে নিজ যৌবনের ঝলক দেখাতে পারে। কেউ বিপদজনক জায়গায় যাবার হাত থেকে রক্ষা পেতে নানা অছিলায় মুক্তিলাভ চায়, আবার কেউ নানা অছিলায় নিজেই বিপদের সম্মুখীন হতে চায়। কেউ ভয় নিজের নয়ন লুকায় হাতের আড়ালে আবার এই আমার মতো কেউ নয়ন মেলায় ওপর কারো নয়নের সাথে। সেই নয়নে হয়তো থাকে আমন্ত্রণ। কেউ রাতে একা শুতে ভয় পায়, আবার কেউ অপেক্ষায় থাকে কাম দানবের। জানি আমার এই ভুলের ক্ষমা নেই। কিন্তু আমি বড্ড ভয় পেয়ে গেছিলাম যে! কর্তা মায়ের বলা কথাগুলো যেন দিন রাত কানে বাজতো। ' আমার খোকা হলে এতদিনে অনেক গুলো বাচ্চা পুরে দিতো তোর পেটে, রাজরানী করে রাখতো তোকে'
তাই বুঝি বুড়ি ? এতো বীর্যবান পুরুষ তোমার ওই ছেলে? এতো বিষ আছে তার মধ্যে? তাহলে তো একটু বাজিয়ে দেখতেই হচ্ছে তোমার ওই পুত্রকে। কি জানি কি শয়তানি ভর করেছিল এই হতভাগীর মস্তিষ্কে যে সামান্য হরিণী হয়ে সিংহের গুহার সামনে গিয়ে তাকে রক্তের লোভ দিতে লেগেছিলাম। তার কঠিন শিক্ষা তো আমায় পেতেই হতো। পুরুষকে নাচানো সোজা কিন্তু পুরুষের গন্ডির মধ্যে একবার ধরা পরে গেলে মুক্তি অসম্ভব। তাই হলো আমার সাথে। মহান ও কর্তব্যপরায়ন এক পুত্র, এক স্বামী ও এক মালিক যিনি কঠোর ও শক্তিশালী হলেও আমারই ভুলে একটু একটু করে কমজোর হতে হতে হয়ে উঠলো প্রচন্ড ক্ষুদার্থ ও আহত বন্য মহারাজ। আর তাকে আটকানোর ক্ষমতা আমার কেন কোনো নারীর নেই।
যখন বুঝেছিলাম অনেক বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি, সামান্য খেলা এক ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে নিয়েছে তখন নিজেকে থামিয়ে নিয়েছিলাম। মুক্তি চেয়েছিলাম এমন খেলা থেকে। কিন্তু আমি চাইলেই কি তা সম্ভব? এ খেলার সৃষ্টি আমার হাত ধরে হলেও এখন চাল অন্য করো হাতে। অদৃশ্য সে হয়ে উঠেছে আসল খেলোয়াড়। আমি শুধুই তার অস্ত্র। সাপের মুখে অজান্তে পা যখন দিয়েই ফেলেছি তখন নামতে তো আমাকে হতোই। বারবার নিজের আশেপাশে উত্তাপ অনুভব করেছি আগুনের। কোনো বিদ্রোহী সৈন্ন কাম আগুনে জ্বলছে। তারই উত্তাপ সারা গৃহের প্রতিটি কোণে। সে লড়তে চায়। যে চায় যুদ্ধে নাম লেখাতে। অস্ত্র নিয়ে হুঙ্কার ছেড়ে লড়াইয়ে আমন্ত্রণ জানায় সে প্রতিবার মৌন হয়ে। কিন্তু আমি যে বড্ড ভীতু। উস্কে দিতে জানি কিন্তু থামাতে জানিনা। ফলাফল যা হবার তাই হলো। কোনো এক দুপুরে স্বপ্নে অনুভব করা অদ্ভুত কীট স্বয়ং বাস্তবে এসে হাজির হলো। প্রথম বার এমন কিছুর সাক্ষী হওয়ায় হাজার চিন্তা বয়ে গিয়েছিলো এই ছোট্ট মস্তিষ্কে। ঠিক ভুলের দাঁড়িপাল্লায় দুলতে দুলতে বার বার ছিটকে পড়ে যাবার ভয় যেন প্রতিবার সংকেত দিচ্ছিলো। এক অশনি সংকেত। প্রস্তুত হও....নিজ দোষে আজ তুমিও নষ্ট হতে চলেছো হে নারী.... প্রস্তুত হও!
এরপর যতবার সম্মুখীন হয়েছি আমি আর সে ততবার তার মধ্যে দেখেছি রিপু দুর্বল এক পুরুষকে। যে ভয়ঙ্কর, যে উগ্র, যে ব্যাকুল। তার মধ্যে প্রেমও আছে, তার মধ্যে আছে ভালোবাসাও কিন্তু সব ছাপিয়ে সে পুরুষ। আর পুরুষের যে বড্ড ক্ষিদে পায়। নারী যদি তার ক্ষুদা নিবারণ না করে তবে সে কেমন নারী? বহুবার ভেবেছি হায়রে পোড়ামুখী! এ আমি কি করেছি? সস্তার লোভে জর্জরিত হয়ে নিজ বান্ধবীরই আজ এতো বড়ো ক্ষতি করেছি! যার জন্য আজ মাথার ওপর ছাদ পেয়েছি তাকেই কিনা এতো বড়ো ধাক্কা দিয়েছি। এ আমি কি করেছি? এই কি আমার যৌনতা? আমার রূপ কি এটাই চায়?
-হ্যা রে মাগি হ্যা! ওতো কিসের ঢং তোর বুঝিনা বাপু! দেখ আমায়! তাকা এই আরশিতে! তাকা বলছি! দেখেছিস আমি কত প্রাণবন্ত? কত চঞ্চল? কত লাজুক?
- তুই নির্লজ্জ্ব! তুই বেহায়া! তুই নোংরা! থু!
- তাই বুঝি! তুই কি ভাবিস তোর ওই হেরে যাওয়া মানসিকতা নিয়ে তুই আজও বেঁচে আছিস? তোকে আমি বাঁচিয়ে রেখেছি বুঝলি! তোর এই শরীর আমার। আমি তোর যৌবন! আমি তোর মালকিন। তাই আমি যা বলবো তাই মেনে চলবি! ভালোমানুষ হতে গিয়ে তো সব হারালি। এবার এই শরীর আমায় নিয়ন্ত্রণ করতে দে। দেখ তোকে নতুন রূপ দেখাবো এই পৃথিবীর। যেখানে অন্ধকারের রাজত্ব। যেখানে রৌদ্র ছায়ার খেলা চলে দিন রাত। যেখানে কেউ আসল নয়, সব নকল। শুধুই আমি বাস্তব আর তুই পুতুল। আর পুতুলের নিয়ন্ত্রণ থাকবে আমার আর তার ওপর। খেলিয়ে তো ভালোই তুলেছি তাকে এতদিন ধরে। আর তুই কিনা তার আর আমার মাঝে বাঁধা হতে চাইছিস! এতো বড়ো স্পর্ধা! তোর খোকাকে যে আশ্রয় দিলো, যার জন্য দুবেলা পেট ভরছে তারই আহ্বান অস্বীকার করেছিস তুই পাপী!
- সে যে বিবাহিত! সে যে আমার সই নন্দার পতিদেব! আর আমি সামান্য আশ্রিতা!
- তাতে কি হয়েছে? ওরে মূর্খ তুই কি এতটাই অজ্ঞ? দেখতে পাস না নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতে সম্মুখে? দেখতে পাস না ওই বুড়ি পর্যন্ত তোর পক্ষে? তার প্রথম পুত্র তোকে চায়? তার ওই বিশাল পৌরুষ দেখেও কি জিভে জল আসেনা তোর পোড়ামুখী? তুই চাসনা যেমন করে ওই নন্দাকে নিজের মতো নিয়ন্ত্রণ করে সে তুইও তার অধীনে থেকে নিয়ন্ত্রিত হবি! তার প্রতিটা আজ্ঞা পালন হবে তোর কর্তব্য আর রাতে তার সঙ্গিনী হয়ে তাকে সুখের মুখ দেখানো হবে তোর ভাগ্য। তার সুখই হবে তোর সুখ। ধীরে ধীরে তুই হয়ে উঠবি এ বাড়ির রাজরানী। ওই রুগ্ন মাগিটাকে না হয় তারপরে কোনো ছুতোয়.............
- নাহ! নানানানা আমি পারবোনা! আমি পারবোনা!
- তুই কি পারবি না পারবি আমার চেয়ে ভালো কেউ জানেনা মাগি! না পেরেছিস বরটাকে বেঁধে রাখতে, না পেরেছিস ওই কচি দেওরকে ঘরে ঢোকাতে। তুই শুধুই পারিস ওই খোকাকে দুধ দিতে আর চাকরানীর জীবন বাঁচতে। কিন্তু আমি চাই স্বাধীনতা,উল্লাস। আর নয় অবহেলা, আমি চাই সুখ! বেরো এখান থেকে হতচ্ছাড়ি! আজ থেকে এই শরীর আমার হাতে নিয়ন্ত্রিত হবে। আমি যে চাই ওই সমর্থ পুরুষের সংস্পর্শ। তার নিকটে আমি আবার উর্বর হতে চাই।
শেষমেষ অপা হার মানতে বাধ্য হলো ওই বেহায়া মেয়েছেলেটার কাছে। সপে দিলো নিজ নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। নিজ মানিক কোলে নিয়ে আসা এই আশ্রিতার নবরূপের সাক্ষী হলো সেই বিশাল স্তম্ভ। যদিও পুনরায় বারবার সেই মমতাময়ী রূপ বাঁধা দিতে চেয়েছে নিজেকে কিন্তু ক্ষিদের তাড়না বড্ড সাংঘাতিক। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা আহত সিংহের হিংস্র রূপ ও ততোধিক ক্ষিপ্ত তার কাপড়ের আড়ালে থাকা পুরুষাঙ্গর অস্তিত্ব টের পেয়ে সেই অসভ্য মাগীটা বাইরে বেরিয়ে এসেছিলো। খুলে দিয়েছিলো নিজ দ্বার। ভয়ের মাঝে অজানা সুখ। কানে বেজে উঠেছিল -
ঐযে খুলে গেলো সবুজ দরজা খানা। প্রবেশ হলো নতুন কাপড় পরিহিত সদ্য পরিচিত পুরুষটির। নিজ বিছানায় বসে থাকা নব যৌবনে জীবিত সুন্দরীর পানে কিছুক্ষন অজানা চোখে তাকিয়ে থেকে লাগিয়ে দিলো দরজা খানা। ঢোক গিললো মেয়েটি। কেমন যেন অজানা কারণে ভয় হচ্ছে। এই নতুনত্ব যেন বড্ড অসহ্য। এগিয়ে এলো সেই মানুষটি খাটের কাছে। পিতা মাতার ইচ্ছায় আজ থেকে এই মানুষটিই নাকি ওই মেয়েটির প্রভু। প্রভুর সেবা করাই স্ত্রীয়ের ধর্ম। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো সে নিজ প্রভুকে। খুশি হলো সে নিজ অর্ধাঙ্গিনীর এই সম্মান প্রদর্শনে। নিষ্পাপ আঁখি জোড়া যেন তার বড্ড মায়াময়। আর সেটাই যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে স্বামীর অন্তরে। গ্রাম্য নববধূর এই রূপ যৌবনের আর বেশিক্ষন সহ্য করতে পারেনি সে পুরুষ। এতো সজ্জিত কেন এই মেয়ে? এই শরীরের বহির আবরণ এতো পরিপাটি করে সাজানো কেন? নানা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না এই রূপ। বিনষ্ট করতে উদ্যোত হলো সেই পুরুষ ওই পবিত্র উজ্জ্বল শক্তি। সেদিন প্রথমবার সেই মেয়ে বুঝেছিলো ব্যাথা বড়ো আজব জিনিস। ভালোবাসতেও লুকিয়ে থাকে আবার শরীরেও।
-------------------------------
রাতে বৃদ্ধার সঙ্গে সময় কাটিয়ে ওই ঘরেই নিজ আহার সেরে বাসন পত্র ভৃত্তের হাতে দিয়ে এসে ওনাকে ঘুম পাড়িয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম ও ঘর থেকে। কোলে আমার মানিক। তার নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে আবোলতাবোল বকতে বকতে উঠোন পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি হটাৎ যেন বিশাল কোনো স্তম্ভতে ধাক্কা খেলাম। কোলেরটাকে অমৃত পান করিয়ে শান্ত করার তাড়াহুড়োয় এই দুর্ঘটনা। অসাবধানে এমন ধাক্কায় হয়তো আরও বড়ো কিছু হয়ে যেত কিন্তু একটা শক্তিশালী হাত টেনে নিলো আমায় নিজের কাছে। অজান্তেই কখন যেন লেপ্টে গেলাম ওই স্তম্ভর সহিত। চোখ তুলে তাকাতেই বুঝলাম সত্যিই আমি ঠিক। স্তম্ভই বটে..... এ গৃহের।
- ঠিক আছেন?
- আআ... আজ্ঞে! দুঃখিত! এই ভাবে
- নানা কোনো ব্যাপার নয়। আপনি ঠিক আছেন তো?
মুখ তুলে তাকালাম মুখপানে। এ কে? ইনি কি সেই ব্যাক্তি যিনি এই আশ্রিতার আবির্ভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে গিন্নিকে ধমক দিয়েছিলেন? এ কোন রূপ তার? এ কোন ভাষা?
- দেখে চলবেন না? আরেকটু হলেই তো নিজেও কষ্ট পেতেন আর খোকাকেও কষ্ট দিতেন।
- কষ্ট? সে তো সঙ্গে সর্বদা নিয়েই কাটাচ্ছি। নতুন করে আর কষ্টের মুখ দেখবো? বাকি রইলো এই কোলেরটা। সেও তো ওই নিয়েই একটু একটু করে বড়ো হবে। বাপ হারিয়েছে, পরিবার হারিয়েছে। আছে বলতে এই মাটা।
- এই বা কম কি? অনেকেরই কাছে তো সেই সম্বল টুকুও থাকেনা। ও অনেক ভাগ্যবান যে এমন একটা মা পেয়েছে।
কিছু বলতে পারিনি আর। শুধুই তাকিয়ে ছিলাম তার চোখের দিকে। রাগী কঠোর পুরুষের নম্র রূপ বুঝি এতো আকর্ষক হয়? কি জানি। আমারটাকে তো শুধুই রাগতে দেখেছি আর ব্যাথ্যা দিতে দেখেছি দু পায়ের মাঝে। লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলাম। পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলাম হটাৎ আবারো সেই পুরুষালি কণ্ঠ শুনলাম-
- শুনুন!
পা থামিয়ে একটু মাথা ঘুরিয়ে তাকালাম। কর্তাবাবু নিজেও সম্মুখে ফিরে বললেন 'সেদিনের জন্য দুঃখিত'। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম কোনদিনের জন্য?
- প্রথম যেদিন এসেছিলেন। আসলে এমনিতেই আমাদের জমির মামলাটা নিয়ে একটু চিন্তা যাচ্ছিলো তার মধ্যে আপনার আবির্ভাব। তাই ওই রাগের মাথায়.......
- আমি কিন্তু বলবো আপনার বিন্দুমাত্র দোষ ছিলোনা। ঠিকই তো। চেনেন না, জানেন না... এসে আশ্রয় চাইলেই কি হলো? এ গৃহ কি আশ্রয়ঘর নাকি?
আমার কথা শুনে বোধহয় সামান্য বিব্রত হতে হলো ওনাকে। কিন্তু আমি যেন এক অদ্ভুত তৃপ্তি পেলাম। মুখে যদিও বললাম - বড্ড ঝামেলায় ফেলেছিনা আপনাকে? আমি দুঃখিত
- নানা! আমিই আসলে একটু......... আমি চিনতাম না আপনাকে। আর যাকে আমি চিনিনা তাকে সহজে বিশ্বাসও করিনা। কিন্তু....... কিন্তু আসার পর থেকে যেভাবে আমার মায়ের সেবা করে চলেছেন। মাকে এতো সুস্থ বোধহয় অনেকদিন দেখিনি। ধন্যবাদ। আপনার ওই বন্ধুও পারেনি মায়ের এভাবে ফিরিয়ে আনতে। ধন্যবাদ।
- ওটি বলবেন না....ওটা আমার কর্তব্য। যে বাড়ির অন্ন খাচ্ছি সেবাড়ির সামান্য কাজে লাগতে পারলেও আমি ধন্য। আসি।
চলে এসেছিলাম আর কিছু না বলে এবং বলতে না দিয়ে। কিন্তু যেন বুঝতে পারছিলাম সে তখনও দাঁড়িয়ে আমাকেই দেখে চলেছে। হয়তো ক্রুদ্ধ নয়নে নয়, এক অজানা চোখের চাহুনি বর্তমান সে চোখে। কিন্তু ঘরে ফিরেও কি শান্তি পেয়েছিলাম? ভেতরের সেই জমে থাকা অজানা অনুভূতি গুলো জেগে উঠেছিল পুনরায়। ওই শয়তান পোকা গুলো মাথায় কিলবিল করতে শুরু করেছিল আবারো। এসব কি? এসব কেন? আজ কেন? এতো দুঃখের মধ্যেই বা কেন? তাহলে আমার বান্ধবীই কি ঠিক? আমি কি...... আমি এতটাই অসভ্য?
উত্তর পাইনি একটাও। কিন্তু বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠেছে দুটো পুরুষের মুখমন্ডল। একটা আমার সোনা মানিকের জন্মদাতা পিতা। যে ভালোবাসার কিছুই দিতে না পারলেও শরীরে আগুন জ্বালিয়ে না নিভিয়েই পালিয়ে গেছে। আর অন্য দিকে আরেক পুরুষ যে ওই আগুনে পুনরায় ঘি ঢালছে। আমি দুশ্চরিতত্রা নই। তাই যদি হতো কম বয়সেই করো হাতে নিজেকে সপে দিয়ে তার পৌরুষে শান্ত করতাম নিজের শরীরের উত্তাপ। কিন্তু আমি তা করার কথাও ভাবিনি। কিন্তু বিয়ের পর রাতের পর রাত ওই মানুষটা এই শরীরটা দখল করে এতোটাই নিজের তৃস্না নিবারণ করেছে যে পুরুষ সম্পর্কে আমার ভেতরের ধারণা অধিক পরিমানে পাল্টে গেছে। কিন্তু আজ এই সময় দাঁড়িয়ে কেন আবার অন্য এক অনুভূতি উঁকি মারছে অন্তরে? ছি! এসব কি হচ্ছে আমার সাথে? বড্ড অসভ্য হয়ে উঠছি আমি তো। সামান্য সেবিকা হয়ে এতো কিসের লোভ?
---------------------------------------
রাতের নিস্তব্ধ আঁধারে একটা নারী শরীর দ্রুত পায়ে নোমে আসছে দোতলা থেকে। বারান্দায় ঝুলন্ত হ্যারিকেনের আলোয় পাশের অমসৃন দেয়ালে পড়া নিজের ছায়া দেখে নিজেরই বুকটা কেঁপে উঠছে তার। বড্ড ভয় হচ্ছে তার। নানা অপার্থিব কোনো কিছুর নয়, একটু আগেই সাক্ষী হওয়া মায়াবি দৃশ্যকে ও সর্বোপরি নিজেকে!
হ্যা আমি! আমিই উঠেছিলাম দোতলায় এই রাতে। আবারো ওই সকলের চেনা অপাকে ছেলের পাশে ঘুম পাড়িয়ে রেখে উঠে এসেছিলাম গৃহের উচ্চ সীমায়। বারবার নিজেকে আটকে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বারবার পোকা গুলোর সংখ্যা বেড়ে বেড়ে এমন অসহ্যকর অবস্থায় ফেললো আমায় যে লজ্জার মাথা খেয়ে উঠে পড়তেই হয়েছিল। যত এগোচ্ছিলাম ততই একটা অজানা কৌতূহলের চাপে হৃদস্পন্দন বেড়ে চলেছিল। কিন্তু সেটাই যেন আরও অদম্য ইচ্ছা বাড়িয়ে তুলছিলো। সইয়ের মুখে শোনা কথাগুলোর সত্যতা যাচাই করার ভয়ানক স্পৃহা। ওতো বড় বাড়ির বিশাল সব বন্ধ কক্ষ গুলো পার করতে করতে এগিয়ে গেছিলাম আমার মূল গন্তব্যে। পৌঁছাবামাত্রই কানে এসেছিলো পালঙ্কের অশান্ত হয়ে ওঠার চিৎকার। সাথে মোর চেনা পুরাতন কণ্ঠের ব্যাথা মিশ্রিত শীৎকার। ব্যাপারটা বুঝতেই লজ্জায় ও অদ্ভুত শিহরণে আবারো কেমন করে উঠলো ভিতরটা। বন্ধু আমার তাহলে উচিত কথাই বলেছিলো দেখছি। কক্ষের অন্দরে প্রবেশের পথ বন্ধ থাকলেও হাওয়ার শীতল স্রোত প্রবেশ করার জন্য সৃষ্ট জানালা খানি খোলা। যেন কেউ পূর্বেই জানতো এক আগন্তুকের আবির্ভাব ঘটবে এই নিশিরাতে। অমন একটা পর্যায় পৌঁছেও বারবার তন্দ্রাচ্ছন্ন অপা ঘুম থেকে জেগে অনেকবার বলেছে আমায় ' ওরে হতচ্ছাড়ি যাসনি যাসনি! তোর এতো কিসের কুটকুটানি? লজ্জা করেনা তোর অসভ্য মাগি?' কিন্তু তাও সেই মমতাময়ী রূপের তোয়াক্কা না করে এগিয়ে গেছি জানালার দিকে। হ্যারিকেনের নিভু আলোয় দেখেছি সেই অদ্ভুত মায়াবি দৃশ্য। কি সাংঘাতিক সুন্দর সে মুহুর্ত! সই আমার বাচ্চার মতো হামা দিয়ে দাঁড়ানো আর পতিদেব পশ্চাৎ হতে কোমর সঞ্চলনে মত্ত। দুই শরীর লেপ্টে ওকে অপরের সহিত। যেন এই বন্ধন চিরকালের মতো অটুট। বন্ধু আমার সুখের ব্যাথা মুখে প্রকাশ করে অনবরত আবোলতাবোল বকে চলেছে আর রতিসুখে উন্মত্ত সেই ব্যাঘ্র নিজ হরিণীর মাংস আয়েশ করে উপভোগ করছে। চোখে মুখে কি বীভৎস উন্মাদনা। দিনের আলো গায়ে মেখে রাঙিয়ে ওঠা ওই উজ্জ্বল মুখশ্রী যতটা কঠোর ততটাই উগ্র এই রাতের রূপ তার। নিজের মহান পৌরুষ শক্তি দিয়ে ওই দুর্বল শরীরটাকে উল্টেপাল্টে খাচ্ছে। ইশ! আহাগো সই আমার! কিভাবে অসহায় হয়ে শুধুই দেখে চলেছে স্বামীর অসভ্যতামি। কিছুই করার নেই তার। আটকানোর নেই স্পর্ধা। হটাৎ মনে প্রশ্ন জাগে আমার। প্রতি রাতেই কি এরূপ সম্ভগক্রিয়া ঘটে নাকি আজকেরটি ভিন্ন? এক অজানা অচেনা নারীর সহিত আকস্মিক ধাক্কার ফলে লেপ্টে যাওয়া নরম স্তনের স্পর্শই কি আজ ওই পুরুষের লোভ শতগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে? তাকে আজ থামানো অসম্ভব। সে যথার্থ পুরুষ। হৃদয়ে কোমল, শক্তিতে বৃষ এবং কামে সিংহ!
সে পুরুষ অত্যাচারী নয়। কিন্তু এক যোগ্য স্বৈরাচারী। তাকে বাঁধা দেবার ক্ষমতা অনেক সমগোত্রীয়দেরই নেই তো ওই মেয়ে কিভাবে থামাবে তাকে। আসল কথা হলো সেও কি থামাতে চায় তাকে? তাই যদি হবে তাহলে ওই হালকা হাসি কেন শয়তানির ঠোঁটে? আসন পরিবর্তন করে স্বামীর বিশাল দেহের ওপর চড়ে নির্লজ্জ্ব হয়ে লাফালাফি করার মধ্যেই হেসে উঠছে সে। এখন কে অসভ্য সেটা গুলিয়ে যাচ্ছে আমার। আমি? ওই পুরুষ? নাকি তার সজ্জাসঙ্গিনী?
------------------------------------
বুড়িমা সত্যিই পাগলী এবার বুঝলাম আমি। সেদিন গলা ভাত আর সবজি খাইয়ে দিচ্ছি তাকে আর সে আমার মানিককে নিয়ে খেলছে। যেন খুকি খেলছে পুতুল নিয়ে। খিলখিল করে হাসছে আমার মানিক। আমি সবে ভাতে সবজি মাখিয়ে ওনার মুখে তুলেছি অমনি বুড়ি বলে - কি মিষ্টি মুখখানা দেখ খোকার। এক্কেবারে তোর মতন। আর এমন একটা বাচ্চা বাপের আদর পেলোনা। আহারে। আর এই মাইয়াকে দেখো দিনরাত খেটে মরছে আমার পিছনে। বলি তুই কি এ বাড়ির দাসী নাকি রে? রান্না করবি, আমার সেবা করবি, ওই পোড়ামুখীর কাপড় কাচবি। ঝাঁটা মারি অমন ডাইনির মুখে। মেয়েটাকে খাটিয়ে মারলে গো!
সামান্য হেসে বললাম - এতে খাটনির আর কি গো কর্তা মা? এ আমার অভ্যেস আছে। আর আমি তো খারাপ নেই গো। শশুর বাড়ির চোখ রাঙানি, অত্যাচার, অপমান, বাপের বাড়ির অপমান সব যেখানে হজম করলুম,সেখানে এ তো স্বর্গ গো। তাছাড়া আমার মানিক তো আমার কোলে আছে। কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবেনা ওকে আমার থেকে। আপনাদের মতন আশ্রয়দাতা পেয়েছি। এ আমার কোনো পুণ্যের ফল মা জননী।
মানুষটা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলো - সোনা মা আমার। ওরে খোকা দেখে যা... দেখে যা একে বলে গৃহ লক্ষী। একা হাতে সব সামলায়। তোর ওই হতচ্ছাড়ির মতো নয়। সারাদিন পটের বিবিটি হয়ে বসে আছে। ইশ যদি ও বাড়ির সন্ধান না পেয়ে তোর বাপের বাড়ির সন্ধান আগে পেতুম......আজ তুই হতিস আমার বড়ো বউমা রে। এই থানের বদলে গায়ে থাকতো লাল বেনারসি, আর খোকা খুকি ঘুরে বেড়াতো সারা বাড়ি। তোর ওই নাগর তো তোকে এই একটা দিয়েছে, আমার খোকা হলে এতদিনে চার পাঁচটা পুরে দিতো ভেতরে হিহিহিহি।
- ইশ কর্তা মা! যাহ! কিচ্ছু আটকায়না না তোমার মুখে? তোমার বৌমা ঠিকই বলে। যা মুখে আসে বলে ফেলো। ছি!
- ছি কিরে পোড়ামুখী! ভুল কি বলেছি। বলি নিজেকে আয়নায় দেখেছিস ভালো করে? যৌবন রূপ যে ফেটে পড়ছে। এমন বৌমা কোন শাশুড়ি চায়না রে ছেলের জন্য? ওই শুটকিকে আমার খুব একটা পছন্দ না হলেও খোকার ভালো লেগে যাওয়াতে আনতে হলো বৌ বানিয়ে। ওখানে যদি তুইও থাকতিস না..... দেখতাম কেমন করে খোকার নজর ওই মাগীর ওপর যেত? আমার খোকাকে তো আমি চিনি। এই পেটেই জন্মেছে ওটা। একেবারে বাপের মতো হয়েছে। ওর বাপটা যেমন শয়তান ছিল, ছেলেও তাই হয়েছে। তোকে যেমন রাজরানী করে রাখতো তেমনি লুটে পুটে খেত তোর বদন। বুঝলি ছুড়ি হেহেহেহে। আরে পালাচ্ছিস কোথায়? হেহেহেহে
ঘরে পালিয়ে এসে নিজেকে ওই এক কোণে টাঙানো পুরানো আয়নাটায় ভালো করে দেখেছিলাম সেদিন। এর আগেও কতবার ওটায় দেখেছি নিজেকে। ইচ্ছে করেনি বেশিক্ষন ওটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে। কিন্তু কর্তা মায়ের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে যেন নিজেকে দেখতে খুব ইচ্ছে জেগেছিলো। নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করার লোভ। নিজের প্রতিফলিত চিত্র ফুটে উঠেছিল ওটায়। ভুল কিছু বলেনি বুড়ি। গায়ে যেমন মাংস আছে, তেমনি আছে রূপ। স্বেত আবরণের অন্দরে লুকিয়ে থাকা স্তন জোড়ার কম্পন, হালকা ঘেমে ওঠা গলা,অশান্ত চাহুনি। যেন কোনো দক্ষ মৃৎ শিল্পীর অন্যতম সেরা সৃষ্টি। কিন্তু এই সৃষ্টির জন্য লিখেছিলো এমন ভবিতব্য? এই অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো এইবভাবেই জাগ্রত হবে আর এই ভাবেই কি শীতল হবে? এইভাবেই চলতে চলতে একদিন এই শরীরেও আসবে দুর্বলতা। এই সৌন্দর্য অদৃশ্য হবে একটু একটু করে। কমে যাবে যৌবনের ভয়ঙ্কর তেজ। নিভে যাবে কামনার আগুন। ঝুলে যাবে সব মাংস। মস্তিক হারিয়ে ফেলবে স্মৃতি আর শেষে........!
ভয় বড্ড আজব বস্তু। কাউকে ভীতু বানিয়ে দেয়, আবার কাউকে সাহসী। কেউ একা রাতে উঠোন পেরিয়ে কলঘরে যেতে ভয় পায় আবার কেউ ভিজে গায়ে ছাদে দাঁড়িয়ে নিম্নে উপস্থিত কাউকে নিজ যৌবনের ঝলক দেখাতে পারে। কেউ বিপদজনক জায়গায় যাবার হাত থেকে রক্ষা পেতে নানা অছিলায় মুক্তিলাভ চায়, আবার কেউ নানা অছিলায় নিজেই বিপদের সম্মুখীন হতে চায়। কেউ ভয় নিজের নয়ন লুকায় হাতের আড়ালে আবার এই আমার মতো কেউ নয়ন মেলায় ওপর কারো নয়নের সাথে। সেই নয়নে হয়তো থাকে আমন্ত্রণ। কেউ রাতে একা শুতে ভয় পায়, আবার কেউ অপেক্ষায় থাকে কাম দানবের। জানি আমার এই ভুলের ক্ষমা নেই। কিন্তু আমি বড্ড ভয় পেয়ে গেছিলাম যে! কর্তা মায়ের বলা কথাগুলো যেন দিন রাত কানে বাজতো। ' আমার খোকা হলে এতদিনে অনেক গুলো বাচ্চা পুরে দিতো তোর পেটে, রাজরানী করে রাখতো তোকে'
তাই বুঝি বুড়ি ? এতো বীর্যবান পুরুষ তোমার ওই ছেলে? এতো বিষ আছে তার মধ্যে? তাহলে তো একটু বাজিয়ে দেখতেই হচ্ছে তোমার ওই পুত্রকে। কি জানি কি শয়তানি ভর করেছিল এই হতভাগীর মস্তিষ্কে যে সামান্য হরিণী হয়ে সিংহের গুহার সামনে গিয়ে তাকে রক্তের লোভ দিতে লেগেছিলাম। তার কঠিন শিক্ষা তো আমায় পেতেই হতো। পুরুষকে নাচানো সোজা কিন্তু পুরুষের গন্ডির মধ্যে একবার ধরা পরে গেলে মুক্তি অসম্ভব। তাই হলো আমার সাথে। মহান ও কর্তব্যপরায়ন এক পুত্র, এক স্বামী ও এক মালিক যিনি কঠোর ও শক্তিশালী হলেও আমারই ভুলে একটু একটু করে কমজোর হতে হতে হয়ে উঠলো প্রচন্ড ক্ষুদার্থ ও আহত বন্য মহারাজ। আর তাকে আটকানোর ক্ষমতা আমার কেন কোনো নারীর নেই।
যখন বুঝেছিলাম অনেক বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি, সামান্য খেলা এক ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে নিয়েছে তখন নিজেকে থামিয়ে নিয়েছিলাম। মুক্তি চেয়েছিলাম এমন খেলা থেকে। কিন্তু আমি চাইলেই কি তা সম্ভব? এ খেলার সৃষ্টি আমার হাত ধরে হলেও এখন চাল অন্য করো হাতে। অদৃশ্য সে হয়ে উঠেছে আসল খেলোয়াড়। আমি শুধুই তার অস্ত্র। সাপের মুখে অজান্তে পা যখন দিয়েই ফেলেছি তখন নামতে তো আমাকে হতোই। বারবার নিজের আশেপাশে উত্তাপ অনুভব করেছি আগুনের। কোনো বিদ্রোহী সৈন্ন কাম আগুনে জ্বলছে। তারই উত্তাপ সারা গৃহের প্রতিটি কোণে। সে লড়তে চায়। যে চায় যুদ্ধে নাম লেখাতে। অস্ত্র নিয়ে হুঙ্কার ছেড়ে লড়াইয়ে আমন্ত্রণ জানায় সে প্রতিবার মৌন হয়ে। কিন্তু আমি যে বড্ড ভীতু। উস্কে দিতে জানি কিন্তু থামাতে জানিনা। ফলাফল যা হবার তাই হলো। কোনো এক দুপুরে স্বপ্নে অনুভব করা অদ্ভুত কীট স্বয়ং বাস্তবে এসে হাজির হলো। প্রথম বার এমন কিছুর সাক্ষী হওয়ায় হাজার চিন্তা বয়ে গিয়েছিলো এই ছোট্ট মস্তিষ্কে। ঠিক ভুলের দাঁড়িপাল্লায় দুলতে দুলতে বার বার ছিটকে পড়ে যাবার ভয় যেন প্রতিবার সংকেত দিচ্ছিলো। এক অশনি সংকেত। প্রস্তুত হও....নিজ দোষে আজ তুমিও নষ্ট হতে চলেছো হে নারী.... প্রস্তুত হও!
এরপর যতবার সম্মুখীন হয়েছি আমি আর সে ততবার তার মধ্যে দেখেছি রিপু দুর্বল এক পুরুষকে। যে ভয়ঙ্কর, যে উগ্র, যে ব্যাকুল। তার মধ্যে প্রেমও আছে, তার মধ্যে আছে ভালোবাসাও কিন্তু সব ছাপিয়ে সে পুরুষ। আর পুরুষের যে বড্ড ক্ষিদে পায়। নারী যদি তার ক্ষুদা নিবারণ না করে তবে সে কেমন নারী? বহুবার ভেবেছি হায়রে পোড়ামুখী! এ আমি কি করেছি? সস্তার লোভে জর্জরিত হয়ে নিজ বান্ধবীরই আজ এতো বড়ো ক্ষতি করেছি! যার জন্য আজ মাথার ওপর ছাদ পেয়েছি তাকেই কিনা এতো বড়ো ধাক্কা দিয়েছি। এ আমি কি করেছি? এই কি আমার যৌনতা? আমার রূপ কি এটাই চায়?
-হ্যা রে মাগি হ্যা! ওতো কিসের ঢং তোর বুঝিনা বাপু! দেখ আমায়! তাকা এই আরশিতে! তাকা বলছি! দেখেছিস আমি কত প্রাণবন্ত? কত চঞ্চল? কত লাজুক?
- তুই নির্লজ্জ্ব! তুই বেহায়া! তুই নোংরা! থু!
- তাই বুঝি! তুই কি ভাবিস তোর ওই হেরে যাওয়া মানসিকতা নিয়ে তুই আজও বেঁচে আছিস? তোকে আমি বাঁচিয়ে রেখেছি বুঝলি! তোর এই শরীর আমার। আমি তোর যৌবন! আমি তোর মালকিন। তাই আমি যা বলবো তাই মেনে চলবি! ভালোমানুষ হতে গিয়ে তো সব হারালি। এবার এই শরীর আমায় নিয়ন্ত্রণ করতে দে। দেখ তোকে নতুন রূপ দেখাবো এই পৃথিবীর। যেখানে অন্ধকারের রাজত্ব। যেখানে রৌদ্র ছায়ার খেলা চলে দিন রাত। যেখানে কেউ আসল নয়, সব নকল। শুধুই আমি বাস্তব আর তুই পুতুল। আর পুতুলের নিয়ন্ত্রণ থাকবে আমার আর তার ওপর। খেলিয়ে তো ভালোই তুলেছি তাকে এতদিন ধরে। আর তুই কিনা তার আর আমার মাঝে বাঁধা হতে চাইছিস! এতো বড়ো স্পর্ধা! তোর খোকাকে যে আশ্রয় দিলো, যার জন্য দুবেলা পেট ভরছে তারই আহ্বান অস্বীকার করেছিস তুই পাপী!
- সে যে বিবাহিত! সে যে আমার সই নন্দার পতিদেব! আর আমি সামান্য আশ্রিতা!
- তাতে কি হয়েছে? ওরে মূর্খ তুই কি এতটাই অজ্ঞ? দেখতে পাস না নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতে সম্মুখে? দেখতে পাস না ওই বুড়ি পর্যন্ত তোর পক্ষে? তার প্রথম পুত্র তোকে চায়? তার ওই বিশাল পৌরুষ দেখেও কি জিভে জল আসেনা তোর পোড়ামুখী? তুই চাসনা যেমন করে ওই নন্দাকে নিজের মতো নিয়ন্ত্রণ করে সে তুইও তার অধীনে থেকে নিয়ন্ত্রিত হবি! তার প্রতিটা আজ্ঞা পালন হবে তোর কর্তব্য আর রাতে তার সঙ্গিনী হয়ে তাকে সুখের মুখ দেখানো হবে তোর ভাগ্য। তার সুখই হবে তোর সুখ। ধীরে ধীরে তুই হয়ে উঠবি এ বাড়ির রাজরানী। ওই রুগ্ন মাগিটাকে না হয় তারপরে কোনো ছুতোয়.............
- নাহ! নানানানা আমি পারবোনা! আমি পারবোনা!
- তুই কি পারবি না পারবি আমার চেয়ে ভালো কেউ জানেনা মাগি! না পেরেছিস বরটাকে বেঁধে রাখতে, না পেরেছিস ওই কচি দেওরকে ঘরে ঢোকাতে। তুই শুধুই পারিস ওই খোকাকে দুধ দিতে আর চাকরানীর জীবন বাঁচতে। কিন্তু আমি চাই স্বাধীনতা,উল্লাস। আর নয় অবহেলা, আমি চাই সুখ! বেরো এখান থেকে হতচ্ছাড়ি! আজ থেকে এই শরীর আমার হাতে নিয়ন্ত্রিত হবে। আমি যে চাই ওই সমর্থ পুরুষের সংস্পর্শ। তার নিকটে আমি আবার উর্বর হতে চাই।
শেষমেষ অপা হার মানতে বাধ্য হলো ওই বেহায়া মেয়েছেলেটার কাছে। সপে দিলো নিজ নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। নিজ মানিক কোলে নিয়ে আসা এই আশ্রিতার নবরূপের সাক্ষী হলো সেই বিশাল স্তম্ভ। যদিও পুনরায় বারবার সেই মমতাময়ী রূপ বাঁধা দিতে চেয়েছে নিজেকে কিন্তু ক্ষিদের তাড়না বড্ড সাংঘাতিক। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা আহত সিংহের হিংস্র রূপ ও ততোধিক ক্ষিপ্ত তার কাপড়ের আড়ালে থাকা পুরুষাঙ্গর অস্তিত্ব টের পেয়ে সেই অসভ্য মাগীটা বাইরে বেরিয়ে এসেছিলো। খুলে দিয়েছিলো নিজ দ্বার। ভয়ের মাঝে অজানা সুখ। কানে বেজে উঠেছিল -
আজ দখিন হাওয়ার সাথে
সে হৃদয়ে নাচিয়া যায়
আজ বধুয়া রাখি পাতে
কোন স্বপন এলো হায়
খোলো দ্বার বধুয়া
রয়েছে সে দাঁড়ায়ে
দেখ পরান উছলি যায়
রয়েছে সে দাঁড়ায়ে
প্রবেশ করেছিল সেই অতৃপ্ত ব্যাক্তি আমার কক্ষে। চোখে জ্বলন্ত আগুন। উদ্ধাঙ্গ অনাবৃত। বিশাল শরীরটায় কম্পন। আর অপেক্ষা করেনি সে। জড়িয়ে ধরেছিলো আমায়। তাকে আটকানোর যোগ্যতা বা ক্ষমতা কিছুই ছিলোনা। ছিলাম নিজের কাছেই নিরুপায়। সেই প্রথম মিশে গেছিলো দুটো শরীর একে ওপরের সাথে। অনেকদিন পর না চাইতেও সে দিয়েছিলো অসম্ভব শান্তি। কিন্তু তার ঠিক পূর্বে আগুন জ্বলেছিলো আমার অন্তরেও। তার অত্যাচারে পাগল হয়ে আঁকড়ে ধরেছিলাম তার চুল। সেই মুহূর্তে ঘুচে গেছিলো মালিক ভৃত্তের সম্পর্ক। তখন পুরোটাই বিপরীত শক্তিদের আকর্ষণের খেলা। বহুদিনের জমে থাকা তেষ্টা একটু একটু করে নিবারণ হতে থাকার আনন্দ ছুঁয়ে গেছিলো অন্তরের প্রতিটা স্পন্দন। আমি পেরেছি! এই পুরুষের সান্নিধ্যে আসতে পেরে আমি হয়েছি ধন্য। আহ্হ্হ কি আনন্দ! অথচ কেঁদেছি আমি ততবার। রাত্রির সেই কান্না শুনতে পায়নি কেহ। কেউ চায়না শুনতে। তাহলে বেশ তো। কান্নাটুকু থাকুক না হয় আমার জন্য, আর ওনার জন্য এই শরীর।
এরপর থেকে অনেক রাত হয়ে উঠেছে রঙিন মোদের মাঝে। সে এতটাই উদার মনের যে নিজ সঙ্গিনী প্রতি রাতের দায়িত্ব আগে পালন করে তারপরে এসেছে মোর নিকট। এক উলঙ্গ শরীরকে শান্ত করেও থামেনি তার আগুন। তাই সে ছুটে ছুটে এসেছে নিরুপায় হয়ে এই সামান্য মানুষটির কাছে। আমিও নিরাশ করিনি তাকে। তার এই মহান পৌরুষকে যোগ্য সম্মান দিয়ে তাকে স্থান দিয়েছি নিজ যোনি অন্তরে। ওই রূদ্ররুপী লৌহ সমান দন্ড সমস্ত বাঁধা অতিক্রম করে প্রবেশ করেছে আগ্নেয়গিরিতে। পোড়ার জ্বলন পুরুষের বিক্রম বহুগুনে বাড়িয়ে তোলে। তাই তো আমার এই দেহকে বিড়বিক্রমে কষ্ট দিয়েছে নানা আসনে। এ কষ্টের মধ্যে যে এতো সুখ তা বলার নয়। এ খেলা যতটা না পুরুষ নারীর তার চেয়ে অনেক অধিক ওই দুই বিশেষ অঙ্গের। তাদের দাস সমস্ত শরীর।
মিলন মুহূর্তে বহুবার চোখ গেছে জানালার বাহিরের আলোকিত চন্দ্রিমায়। আবারো অজান্তেই ফিরে গেছি কঠিন এক অতীতে। নাকে এসেছে ফুলের গন্ধ আর প্রাণে এসেছে দুরু দুরু ভয়। ঐযে সে প্রবেশ করছে দরজা ঠেলে ভেতরে। তার চোখেও কিছু পাওয়ার অসীম তৃস্না। কিন্তু ভিতরে আসতেই যেন থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছে। আঁখিতে বিস্ময়। বিশাল এক পুরুষ তার পূর্বেই যেন দখল করেছে তার ভাগের নারী দেহ। প্রচন্ড গতিতে কোমর সঞ্চালনার মাধ্যমে ভেসে চলেছে সুখে। তার সাথে যুদ্ধে নামা মূর্খামি। আমি দেখেছি যেন জল বিন্দু ওই নয়নে। দুই ভিন্ন সময় যেন বিশেষ লগ্নে মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। নিজেকে আড়াল করেছি ওই বিশাল পুরুষের নিম্নে। যেন কল্পনায় কাউকে দেখিয়ে দেখিয়ে আদর করেছি গৃহকর্তাকে। ঠোঁট ফাঁক করে অপেক্ষায় থেকেছি তাহার জবাবের। উত্তর পেয়েছি তার ঠোঁটের স্পর্শে। অনুভব করেছি তার কঠোরতা। বীর্যবান পুরুষের উগ্র রূপের ভীষণ তেজে পুড়ে আমিও হয়ে উঠেছি নির্লজ্জ্ব। তাহার শরীরে উঠে বসে আমিও চঞ্চল হয়ে উঠেছিলাম নিজ বন্ধুর মতো। আমার চঞ্চলতায় প্রভাবে দুলে দুলে উঠেছে মোর স্তনযুগল। বিশাল দুই থাবা খাবলে খাবলে সেগুলোকে শাস্তি দিয়েছে। বৃন্তে ওই পুরু ঠোঁটের চাপ আর জিহবার স্পর্শ ক্রমে ক্রমে আরও পাগল করে দিয়েছে আমায়। বারবার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয়েছে - ওগো বুড়ি! তুমি ঠিকই বলেছিলে গো! তোমার এই পুত্র বড্ড শয়তান! এই আশ্রিতার ক্ষুদা এই ভাবে মেটাচ্ছে সে। পাগলী মায়ের পাগল ছেলে!
এরপরের কাহিনী বড্ড ছোট। একদা এক আশ্রিতা ক্রমে ক্রমে হয়ে উঠলো গৃহের অন্যতম মূল্যবান সম্পত্তি। তাহার উপদেশ পরিবর্তন হলো আদেশে, তাহার বাক্যালাপ পরিবর্তন হলো সংলাপে। কোলের মানিক সত্যিই হয়ে উঠলো সকলের মানিক। আর সবশেষে অপার জিত হলো। ব্যাস সমাপ্ত।
হিহিহিহি ইয়ার্কি করলাম একটু। এমন কিছুই হয়নি। হতে দেয়নি সে। সে কে? সেও আমিই। আমি অপা। হতোভাগী অপা। যে পেলোনা স্বামী সুখ, যে পেলোনা গৃহ সুখ সে কিনা হয়ে উঠবে ওপরের গৃহের শ্রেষ্ঠ নারী? তা সম্ভব নাকি? ওই পোড়ামুখী ডাইনিটা যেটার বসবাস ওই ভাঙা আরশিতে সে যদিও কু-মন্ত্রনা দিয়ে আমায় একটু একটু করে সস্তা বানিয়ে তুলেছিল। আদরের দুলালকে স্তন দিয়ে শান্ত করে যে শরীর তাহাই হয়ে উঠছিলো কারোর ভোগ বস্তু! আর এই দুগ্ধথলি হয়েছে পরপুরুষের লোভের আকর্ষণ! ছি! একদা যে রাত্রি আমায় বারবার দিয়েছে দুঃখ, আমি কিনা সেই রাতের নেশায় জর্জরিত হয়ে পড়লাম? সন্ধের শঙ্খধ্বনি বাধ্য করেছে দু কান চেপে ধরতে, ভয় করেছে সবচেয়ে পবিত্র কক্ষে প্রবেশ করতে। যেন ওই সর্বশক্তিমান তারা আমার দিকেই তাকিয়ে থাকে। সেই দৃষ্টিতে ঘৃণা লুকিয়ে। ততদিনে একটা ভালো ব্যাপারও ঘটে গিয়েছে। আমার মানিকের সহিত বড়ো গিন্নির বেশ ভাব হয়ে গিয়েছে। নিঃসন্তান বন্ধু আমার এমন এক ছোট্ট শরীর হাতে পেয়ে যেন তার মধ্যেই খুঁজে পেয়েছে আলোক রশ্মি। তাকে সে নিজেই তেল মাখিয়ে দেয়, স্নান করিয়ে দেয় আর ওই শয়তান খিলখিলিয়ে হাসে আর চোখ পিটপিট করে দেখে অজানা বিশ্ব। আমি দূরে দাঁড়িয়ে সব দেখি। কাছে যেতে পারিনা। গেলেই হয়তো মানিক তাকাবে আমার পানে।
- তোর কি হলো ছুঁড়ি? এমন মনমরা হয়ে বসে থাকিস কেন সারাক্ষন? তুই আসার পরে এই ঘাটের মরা প্রাণ ফিরে পেলো আর এই পোড়ামুখী কিনা ঝিমিয়ে পড়ছে। বড্ড ধকল যাচ্ছে বুঝি?
- হেহে! তা যা বলেছো কর্তা মা। আচ্ছা মা জননী? ভুলের শাস্তি কি?
- ভুল? কেমন ভুল?
- যেকোনো ভুল? শাস্তি কি ভুলের?
- দেখ ছুঁড়ি ভুল নানা রকমের হয়। কেউ যদি কাউকে মনের কষ্ট দেয় তাহলে একরকম সাজা, শরীরে দিলে আরেক, কেউ মন চুরি করলে একরকম আবার ধন চুরিতে এক, আর কেউ কিছু ডাকাতি করলে একরকম সাজা।
- আর কেউ খুন করলে?
- মাগো মাগো! সে তো বিরাট পাপ রে ছুঁড়ি! কারো অধিকার নেই অন্যের প্রাণ নিয়ে খেলা করার। এ পাপের শাস্তি হওয়া উচিত ভয়ঙ্কর। কিন্তু হটাৎ এসব প্রশ্ন কেন রে? কি হয়েছে?
- মূর্খ মেয়েমানুষ আমি! একটু জ্ঞান ধার নিলাম গো তোমার থেকে। যাক এখন অনেকটা ভালো লাগছে। যাই তোমার সন্ধের আহারের ব্যবস্থা করি গিয়ে।
- পাগল মেয়ে বটে তুই হেহেহেহে!
আমার মানিক কে বুকের দুধ দিতে দিতে আজ হটাৎ মনে পড়ে গেলো ছোট্ট অপাকে। ছোটবেলায় একবার খেলতে গিয়ে পড়ে চোট পেয়েছিলাম পায়ে। আমার সই ছোট্ট নন্দা সে পায়ে কাপড় বেঁধে দিয়ে বলেছিলো 'আর কাঁদিসনি বাপ! এইটুকুতেই এতো কান্না? চল হারু জ্যাঠার বাড়ি। মলম লাগিয়ে দিলেই দেখবি সব ব্যাথা দূর হয়ে যাবে। আয় আমি তোর হাত ধরছি ওঠ।' সবুজে ঘেরা প্রকৃতির বুক থেকে দুই ছোট্ট প্রাণ বেরিয়ে এগিয়ে গেছিলো নিজ শান্তির পথে। আজও তাদের একজনের বড্ড শখ জেগেছে সেই বুকে ফিরে যাবার। বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে সেই ছোটবেলায় ফিরে যেতে সেই গ্রাম, সেই সবুজে ঘেরা প্রকৃতি, সেই নীল আকাশের বুকে হলুদ বৃত্ত। বড্ড সাধ জাগলো মনে আবার ফিরে যাই ছোট্টটি হয়ে মায়ের কোলে। আবার খাই আদর, আবার হাসি খিলখিলিয়ে। এখানে মিটেছে মোর দিন। আজ আবারো চাই দু হাত বাড়িয়ে সূয্যিমামার মিঠে রোদ। চোখের কোণে আসে পানি। সুখের মাঝে দুঃখের সুর। শেষ হয়েছে দিনের। হলো যে রাতের শুরু। এই রাত আর হবেনা ঘন অন্ধকারের। আর দেবোনা আসতে তাকে নিজের কাছে। নানা মোটেও সেই পুরুষের কথা বলছিনা। তিনি আমার কাছে আজ অনেক কিছু। তার স্থান আজ আমার হৃদয়ে। সেই হৃদয়ে আশ্রয় নেওয়া মানুষটাকে প্রণাম জানিয়ে চললাম আমি। রেখে গেলাম আমার সাত রাজার ধন এক মানিক। আর হয়তো প্রয়োজন নেই তার এই স্তনের তরলের। বড়ো হয়ে উঠছে সে। তার প্রয়জোন মায়ের ভালোবাসার। ওর জন্য রেখে গেলাম এক মা। সেই ছোট্ট নন্দা বড্ড ভালো মা হবে জানি। আর আছে ওই বুড়ি ঠাম্মি। ওরা যে বড্ড ভালোবাসে তোকে। আরেকজনও আছে যে তোকে ভালোবাসে। কিন্তু বলতে পারেনা। সে একটু কঠোর কিন্তু বেশ ভালো মানুষ। তার আশ্রয়ে অন্তত এই ছোট্ট জীবন খুঁজে পাবে নতুন সাফল্য। আমার যে আর কিছুই দেবার নেই কাউকে। নিঃস্ব আমি আজ সত্যিই ভিকিরি। শেষ সম্বল রেখে গেলাম আমার ভালোবাসার প্রমান স্বরূপ। চলি রে সই, চললাম বুড়ি, চললাম সোনামানিক, বিদায় নিলো এই আশ্রিতা কর্তাবাবু। আর জ্বালাবেনা সে। এই পর্যন্তই থাক মোদের আলাপ। এই মূর্খ মেয়েমানুষ আজ বিদায় নিলো। তাকে যে আবার ফিরতে হবে নতুন রূপে নতুন সাজে নতুন রঙে। আবারো কন্যা রূপেই। সাথে নিয়ে একবুক আশা। তাই দিলাম না হয় এই ভগ্নপ্রায় মূর্তির বিসর্জন।
সমাপ্ত