Thread Rating:
  • 40 Vote(s) - 2.7 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
হোগলমারা রহস্য- রতিপতি (সমাপ্ত)
#6
দু’জনে একসঙ্গে হলে এসে সোফায় বসে রুদ্র লিসাকে বলল -“আমার বেডরুমে যাও। কিছু জিনিস তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।”
লিসার ভুরু দুটো ঈষদ্ কোঁচকোতে চোখদুটো একটু ছোটো হয়ে গেল। ভাবখানা এমন কি জিনিস রে বাবা…!
রুদ্র মুচকি হেসে বলল -“গিয়ে নিজেই দেখে নাও না…!”
আনন্দে একরকম নাচতে নাচতে লিসা বসের বেডরুমের দিকে এগিয়ে গেল। এই প্রথম সে রুদ্রর বেডরুমে ঢুকল। ঘরটা বেশ ছিমছাম্। আসবাব পত্রের ভারিক্কি নেই। বড় ঘরটার উত্তর দিকে জানলার সামনে একটা ডিভান খাট। পূর্ব দিকের গোটা দেওয়াল জুড়ে সুন্দর একটা গ্রাম্য পরিবেশের ছবি আঁকা প্লাস্টিক রঙ দিয়ে। পশ্চিম দিকের দেওয়ালের গায়ে একটা আলমারী এবং তার উপরে একটা এসি বসানো। আলমারীর উত্তরে একটা আলনা, যার উপরে রুদ্রর পোশাকগুলো এলোমেলো হয়ে ঝুলছে। লিসার বুঝতে অসুবিধে হয়না, একা পুরুষ মানুষের ঘর এমনই হবে। আর আলমারীর দক্ষিণে একটা বড় ড্রেসিং টেবিল, যার ধাপির উপরে বেশ কিছু বডি স্প্রে এবং সেন্ট আর দু’টো চিরুনি। দক্ষিণ দিকের দেওয়ালে, যেদিক দিয়ে সে ঘরে ঢুকেছিল, একটা বাহান্ন ইঞ্চির এলইডি টিভি লাগানো আছে। নিচে একটা ফ্ল্যাট ডেস্কের উপরে একটা ডিভিডি প্লেয়ার এবং পাশে একটা রিমোট। তবে ঘরে কোনো স্টাডি টেবিল নেই। তার মানে রুদ্র এ ঘরে ওর কোনো কাজ করে না। একজন গোয়েন্দার এ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে লিসা বেশ সজাগ চোখে ঘরটার একটা সমীক্ষা করে নিল।
সবশেষে বিছানার দিকে চোখ যেতেই ওর মনটা হেসে উঠল। ব্লু রঙের শাড়ীটা দেখে ওর মনটা বাচ্চা ছেলেদের মত নেচে উঠল। আফটার অল, ভেলভেট ব্লু যে ওর ফেভারিট রং ! তবে শাড়ী উপরে রাখা অন্তর্বাস গুলো দেখে লিসা কিছুটা লজ্জাও পেল। লাল নেলপলিশ, লাল লিপস্টিক, পাশের ফ্রেঞ্চ পারফিউম… লিসা আহ্লাদিত হয়ে উঠল। কাছে এসে ব্রা-টা হাতে নিয়ে সাইজ় দেখতেই সে অবাক হয়ে গেল। বস্ কিভাবে ওর পারফেক্ট সাইজ় বুঝতে পারলেন ! জিনিস গুলো দেখে লিসার বুঝতে অসুবিধে হয় না যে ওকে এগুলো সব পরতে হবে। ভেতর থেকে রুদ্র লিসার আওয়াজ শুনতে পেল -“আমার কিন্তু একটু সময় লাগবে।”
লিসা যে ওর গিফ্টগুলো গ্রহণ করেছে সেটা জেনে রুদ্রও খুশি হয়ে মুচকি হেসে বলল -“টেক ইওর টাইম সুইটি…!”
লিসা প্রথমেই নিপুনভাবে হাতের এবং পায়ের আঙ্গুলগুলোতে নেলপলিশটা পরে নিল। একে একে নিজের পোশাক এবং অন্তর্বাসগুলো খুলে পুরো উলঙ্গ হয়ে নিজের শরীরটাকে লিসা দেখল কিছুক্ষণ। তারপর প্রথমে ব্রা এবং পরে প্যান্টিটা পরে নিল। বিছানায় বসে বাম পা-টা লম্বা করে বিছিয়ে রেখে ডান পা-য়ের হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা বিছানায় রেখে কমনীয় ভঙ্গিতে আলতো স্পর্শে ডানহাতের আঙ্গুলগুলো হাঁটুর নিচের অংশে, লোমহীন, চকচকে বাঁশির উপরে বুলাতে বুলাতে লিসার ঠোঁটদুটো একে অপরকে স্পর্শ করে রেখেই কিছুটা প্রসারিত হ’য়ে গেল। আজকে বসের মাথা ঘুরিয়ে দেবে ও। এতদিন থেকে একসাথে এত এত সময় কাটাচ্ছে। আর বস্ কি না একবারও ওকে সেভাবে খেয়ালই করে না ! “আজ তোমার চোখদুটো ছানাবড়া না করে ছড়ছি না, বুঝলে হে ডিটেক্টিভ রুদ্রদেব সান্যাল…!” -লিসা নিজের সাথে বিড়বিড় করল ।
খাট থেকে নেমে লিসা প্রথমেই ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে পেটিকোটটা পরে নিল। পেটিকোটের ফাঁসটা ইচ্ছে করেই নাভীর বেশ কিছুটা নীচে, মানে যেখানে ওর যৌনকেশের রেখা শুরু হয়েছে সেই লেভেলে বাঁধল, যাতে ওর মখমলে নাভি এবং লদলদে দাবনার বেশ কিছুটা উন্মুক্ত অবস্থাতেই থেকে যায়। তারপর ব্লাউজ়টা পরে একটা একটা করে সবকটা হুঁক লাগিয়ে দিল। সত্যিই বসের চোখ আছে বটে। ওকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই একদম পারফেক্ট মাপের ব্রা এবং ব্লাউজ় কেনার দক্ষতার প্রশংসা করল লিসা মনে মনে। তবে তাতে করেও লিসার মাইজোড়া যেন ব্লাউজ় ফেটে বেরোতে চাইছে। নিজের স্তনের কথা ভেবে লিসা গর্ব বোধ করতে লাগল। ব্লাউজ়টা পরা হয়ে গেলে লিসা এবার শাড়ীটার পাড় ভাঙল। সায়ার শক্ত বাধনের সাথে শাড়ীর একটা প্রান্ত গুঁজে দিয়ে উল্টে পাল্টে পাক ঘুরিয়ে সে শাড়ীটাকেও পরে নিল। শাড়ীটাকে এমনভাবে কোঁচা করে পরল যাতে ওর নাভীর নিচের তলপেটটাও বেশ কিছুটা উন্মুক্তই থেকে গেল। আর আঁচলটা ভাঁজ করে কেবল বাম স্তনটার উপরে এমনভাবে রাখল, যাতে ওর ভরাট স্তনযূগলের বিভাজিকা রেখাটিও কিছুটা দেখা যাচ্ছিল। লিসা ঘুরে ঘুরে আয়নায় নিজেকে দেখে রুদ্রকে কুপোকাৎ করার ভঙ্গিমার মহড়া করল কতগুলো।
ড্রেসিং টেবিলের এক প্রান্তে একটা হেয়ার জেল দেখে সেটাকে কিছুটা বের করে নিজের চুলে ভালো করে মাখিয়ে নিয়ে চুলটাকে একটু আঁচড়ে নিল। তারপর প্রথমে ডিজ়াইনার হারটা পরে কানের দুলগুলোও পরে নিল।
প্রায় আধ ঘন্টা হয়ে গেছে লিসার ঘরে ঢোকা। বাইরে রুদ্র বিরক্ত হয়ে হাঁক ছাড়ল -“আর কতক্ষণ…? সারা সন্ধ্যেটা কি এখানেই মাটি করবে…?”
প্রত্যুত্তরে লিসা সশব্দে বলল -“এই হয়ে গেছে বস্, আর একটু…” আর নিজের সাথে বিডবিড় করে বলল -“তোমার চক্ষু চড়কগাছ করতে হবে না, ডিটেক্টিভ রুদ্রদেব সান্যাল…!”
লিসা তারপর ঠোঁটে যত্নসহকারে লিপস্টিকটা লাগিয়ে নিজের সাইডব্যাগ থেকে লিপ্ জেলটা বের করে ঠোঁটের উপরে মাখিয়ে দিল। এক বিন্দু পরিমাণ লিপস্টিকও ঠোঁটের বাইরে বেরতে না দিয়ে মেকআপ আর্টিস্টের মত নিপুনভাবে লিসা লিপস্টিকটা লাগানোর কারণে ওর ঠোঁটদু’টো অত্যন্ত কামুকভাবে সুন্দর দেখাচ্ছিল। তার উপরে জেল লাগানোর কারণে ঠোঁটদু’টো ঘরের আলোয় যেন বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছিল।
রুদ্র আবার বাইরে থেকে তাড়া দেওয়াই লিসা নিজের ঘন, কালো, রেশমি চুলগুলো আবার শেষবারের মত আঁচড়ে নিতে নিতে বলল -“হয়ে গেছে বস্, বেরচ্ছি।”
তারও মিনিট দু’য়েক পর যখন লিসা ঘর থেকে বের হ’ল, রুদ্রর চোখদু’টি সত্যিই বিস্ফারিত হয়ে গেল। সে যতটা আশা করেছিল, লিসাকে তার চাইতে অনেকগুণ সুন্দরী দেখাচ্ছিল। না, শুধু সুন্দরী কেন, লিসাকে যেন সাক্ষাৎ যৌনতার দেবী রতিই মনে হচ্ছিল। ওর দেহবল্লরী তখন রম্ভা, ঊর্বষী, মেনকাদের চাইতে কম কিছু লাগছিল না। ওর উন্মুক্ত নির্মেদ, তুলতুলে পেট, নাভি, এবং কোমরের নিচে অনাবৃত দাবনার লদলদে মাংসের দলা রুদ্রর মনে কামনার উদ্বেলিত ঝড় তুলতে লাগল। তারপর যখন ওর চোখদু’টো লিসার বুকের দিকে গেল, ওর ধোন বাবাজী তো যেন বিদ্রোহ করে উঠল। ভরাট, মাংসল স্তনযূগলের মাঝে দু’দিকের চাপে সৃষ্ট, গিরিখাতের মত গভীর বিভাজিকা রেখাটিতে রুদ্র যেন নিজের বিপদ দেখতে পাচ্ছিল। আক্ষরিক অর্থেই ওর মুখটা বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেছিল। লিসা ওর কাছে এসে ওর থুতনির তলায় হাত লাগিয়ে মুখটা বন্ধ করে দিয়ে বলল -“চলুন বস্, কোথায় যাবেন চলুন। আমি রেডি তো !”
“তোমাকে এতটা সুন্দরী এর আগে কোনোও দিনও লাগে নি লিসা। ইউ আর ওয়ান হেক অফ আ বিউটি। ইটস্ আ প্রিভিলেজ টু হ্যাভ ইউ এ্যাজ় এ্যান এ্যাসিস্ট্যান্ট। আজ রাস্তায় তোমাকে যেই দেখবে, পাগল হয়ে যাবে। পাড়ার সব মৌমাছি গুলো তোমার মধু দু’চোখ ভরে গিলবে।” -রুদ্রর তখনও ঘোর কাটে না।
রুদ্রর কথা লিসার মনে অহংকারের সঞ্চার করলেও চরম কামুকি একটা চাহনি দিয়ে বলল -“বয়েই গেছে লিসার পাড়া মাতাতে ! যার জন্য সেজেছি তার ভালো লাগলেই হ’ল
রুদ্র কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মত একটা ভঙ্গিমা করে মনে মনে বলল -“উইল ইউ ম্যারি মী লিসা…?” তারপর হঠাৎ আবার আচমকা কিছু একটা মনে পড়ে যাবার মত করে রুদ্র বলে উঠল -“ও মাই গড্ ! তুমি এক মিনিট দাঁড়াও লিসা, আমি এক্ষুণি আসছি। একটা জরুরী জিনিস ভুলে গেছি। এক মিনিট থামো, আমি এখুনি আসছি…”
প্রায় মিনিট তিন চারেক হয়ে গেল রুদ্র আসছে না দেখে এবার লিসা বিরক্ত হয়ে ওকে ডাক দিল -“এবার আপনার কি হ’ল…!”
ভেতর থেকে আওয়াজ ভেসে এলো -“জাস্ট কামিং…!”
আরও প্রায় মিনিট খানেক পরে রুদ্র বেরিয়ে এলো। ফ্ল্যাটে তালা লাগিয়ে বাইরে বেরিয়ে সামনের চৌরাস্তার মোড়ে আসা পর্যন্ত ওরা ফুটপাত ধরে হেঁটেই যাচ্ছিল। রুদ্রর কথা মত সত্যিই রাস্তার সব ছেলেরাই লিসাকে চোখ দিয়েই ;., করছিল যেন। লিসারও চোখ সেটা এড়ায় না। তাতে লিসার অবশ্য মন্দ লাগছিল না। ভগবান যখন ওকে এমন রূপ যৌবন দান করেছেনই, তখন তা দিয়ে কিছু উচকে ছোকরার মাথা ঘুরিয়ে দিতে আপত্তি কিসের ?
“বলেছিলাম না, সবার মাথা ঘুরে যাবে ! দেখছো তো, ছেলেগুলো কেমন গিলছে তোমাকে !” -রুদ্র লিসার কুনুই-এর নিচে চিমটি কাটল।
“তাতে আমি কি করব ? ওদের চোখে তো আর আমি পট্টি পরিয়ে দিতে পারি না…!” -লিসা রুদ্রর কাছে এসে ওর বাহুতে নিজের উষ্ণ বামস্তনের ছোঁয়া দিল একটা, ইচ্ছে করেই।
লিসার মাই-এর পরশ পাওয়া মাত্র রুদ্রর হলহলে লিঙ্গটা একটা মোচড় মেরে উঠল। এমনিতেই লিসার যৌবন দেখে একরকম কুপোকাৎ হয়েই ছিল, তার উপরে ওর গরম মাইুর ছোঁয়া পেয়ে এক ফোঁটা মদনরস টুপ করে বেরিয়ে ওর জাঙ্গিয়াটাকে একটু ভিজিয়ে দিল। রুদ্র নিজেও সেটা উপলব্ধি করল।
বড় রাস্তায় এসে রুদ্র একটা ট্যাক্সিকে ইশারা করল। সেটা সামনে এসে দাঁড়াতেই রুদ্র ড্রাইভারকে বলল -“ইকো পার্ক।”
“ব্যায়ঠিয়ে সাব…!” -ড্রাইভারটি মিটার চালু করে দিল।
প্রায় এক ঘন্টা পরে তারা ইকো পার্কের সামনে এসে নামল। টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করেই জানতে পারল, পার্ক আর মাত্র এক ঘন্টাই খোলা থাকবে। রুদ্রর মনটা খারাপ হয়ে গেল। ভেতরে ঢুকে মোটামুটি একটু ঘুরে ওরা একটা ছোট ডোবার সামনে একটা ঝাউ গাছের পাশে বলে পড়ল। “থ্যাঙ্ক ইউ বস্, এমন একটা সন্ধ্যা উপহার দেবার জন্য। এভাবে সন্ধ্যাবেলা কারো সাথে পার্কে ঘুরব, কল্পনাও করি নি। কোলকাতা শহরে মধ্যবিত্ত একটা পরিবারে জন্ম গ্রহণ করা যে কি পাপ, আমার চাইতে ভালো কেউ বোঝে না। সামান্য বেতনের চাকরি করত বাবা। প্যারালাইজ়ড্ হবার পর সেটাও বন্ধ হয়ে গেল। কত কষ্টে, কত সংগ্রাম করে যে নিজেকে টিকিয়ে রেখেছি, আমিই জানি। রাস্তায় বেরলেই শেয়াল-কুকুরের দল যেন হামলে পড়তে চাইত। কিন্তু একজন প্রেমিকেরও বিলাসিতার কথা কল্পনা করতে পারি নি। এই চব্বিশ বছর পর্যন্ত এখনও সিঙ্গেলই আছি। বুড়ো বাপ আর মা-টার একমাত্র ভরসা আমি। তাদের করুন মুখের দিকে তাকিয়ে সেসব পথে নিজেকে পরিচালিত করার সাহসই পায় নি…!”
“থাক না লিসা এসব কথা…! অতীতকে ভুলে সামনে এগিয়ে চলাই তো জীবন। তুমি কি আজকের এই রোম্যান্টিক সন্ধ্যেটা তোমার কষ্টসঙ্কুল অতীতকে চারণ করে কাটাতে চাও ? দেখ, জীবন তোমাকে কেমন সুযোগ দিয়েছে ! তুমি কি সেসব থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতে চাইছো…? একটা কথা মনে রেখো লিসা, যদি তুমি দেখো যে কেউ নেই তোমার পাশে, তবুও বুঝবে অন্ততপক্ষে একজন সব সময়ের জন্য তোমার পাশে আছে। আর সে অন্য কেউ নয়, স্বয়ং রুদ্রদেব সান্যাল।” -কথা গুলো বলার সময় রুদ্র লিসার ঠোঁটের বেশ খানিকটা কাছে নিজের ঠোঁট দুটোকে নিয়ে চলে গেছিল। ওর গরম নিঃশ্বাসের তাপ লিসার নিঃশ্বাসকেও ভারী করে তুলছিল। একটা সোহাগী পরশের আলতো চুমু যখন ভবিতব্য হ’তে যাচ্ছে, ঠিক সেই সময়েই লিসা মাথাটা পেছনে টেনে নিল।
রুদ্র আর এগোলো না, যদিও সে জানত, ও জোর করলে লিসাও হয়ত বাধা দিত না। কিন্তু জীবনের প্রথম কিস্ টা সে পার্টনারের অমতে, জোর করে করতে চাইল না। ডোবার স্থির জলে বিচ্ছুরিত হ’তে থাকা একটা লাইটের দিকে স্থির দৃষ্টিতে লিসাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রুদ্র জিজ্ঞেস করল -“বোর হচ্ছো না তো লিসা…?”
“কি যে বলেন বস্…! এমন একটা সন্ধ্যেতে এমন একটা জায়গায় এসে কেউ বোর হয়…! সরি বস্, আসলে একটু অতীতে হারিয়ে গেছিলাম। আপনার দৌলতে কতদিনের পুরনো একটি ইচ্ছা আজ পূরণ হ’ল….”
“যদি তাই হয়, তবে তোমার মুখে একটু হাসি নেই কেন ?” -রুদ্র নিজের চেহারাটা ঠিক লিসার চেহারার সামনে এনে ধরল।
কথা শোনা মাত্র লিসা পাহাড়ী একটা ঝর্ণার কলকলানি তুলে খিলখিল করে হেসে উঠল। অবশ্যই সে হাসি ছিল অকৃত্রিম।
“দ্যাটস্ মোর লাইক এ গুড গার্ল…! দেখ তো, কি সুন্দরী লাগছে তোমাকে ! জানো লিসা, একজনের মন খুব খারাপ !”
“কার…? আপনার…? কি হ’ল আবার…?”
“না, আমার নয়, অন্য একজনের। আসলে সে এতদিন একাই রাজত্ব করত। আজকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী চলে আসায় সে চরম চিন্তিত। তার চাহিদা এবার কমে যাবে না তো…!”
“কি বলছেন বস্ এসব…? আপনাদের গোয়েন্দাদের এই এক দোষ। কোন কথা যে কি অর্থে বলেন, বোঝা দায় হয়ে ওঠে কখনও কখনও। কার মন খারাপ ? আর কেই বা প্রতিদ্বন্দ্বী…?”
রুদ্র পূর্ব আকাশে থালার মত বড়, পূর্ণিমার পূর্ণ চাঁদটার দিকে ইশারা করে বলল -“ওর। ওই চাঁদটার মন খারাপ। এতদিন তুমি ছিলে না কিনা, তাই ও প্রেমিকদের মনে একাই রাজত্ব করত। আজকে তোমার আগমণে ওর রাজত্বে অংশীদারিত্ব চলে আসার কারণেই বেচারার মন খারাপ। ও তো আসলে ভয় করছে যে তুমি ওকে না ছাপিয়ে চলে যাও।”
“ধ্যাৎ, কি যে বলেন বস্…! গাছে ওঠাচ্ছেন…? মইটা সরিয়ে নেবেন না কিন্তু। নইলে নামার সময় হাড়গোড় সব ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।” -লিসাও কম যায় না।
তবে রুদ্রর প্রেম নিবেদন করার ভঙ্গিটা লিসার মন ছুঁয়ে যায়। এমন একজন নামকরা গোয়েন্দাকে এভাবে তার রূপের প্রশংসা করতে দেখে লিসার বেশ ভালো লাগে।
দেখতে দেখতে পার্ক বন্ধ করার সময় হয়ে যায়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও এমন একটা রোম্যান্টিক পরিবেশ ছেড়ে রুদ্রকে উঠতেই হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে রুদ্র লিসাকে নিয়ে আবার ট্যাক্সি করে একটা ফাইভ স্টার রেস্টুরেন্টে চলে আসে। রাত তখন প্রায় সাড়ে ন’টা। রুদ্রর এই একটা অভ্যেস খুব ভালো। ডিনারটা ও বরাবর একটু আগেই সেরে নেয়। তবে আজকের ডিনারটা ওর কাছে বেশ স্পেশাল। কেননা, এর আগে কোনো মেয়েকে সাথে নিয়ে সে ডিনার টেবিলে বসে নি। ওয়েটার সামনে এসে দাঁড়াতেই রুদ্র দু’প্লেট করে মটন বিরিয়ানি, মটন চাপ এবং স্যালাড অর্ডার করল। সঙ্গে দু’টো কোকেরও অর্ডার করে দিল।
ওয়েটারটি চলে যেতেই রুদ্র এদিক-ওদিক তাকিয়ে লক্ষ্য করল যে আশেপাশের সমস্ত টেবিলে বসা ছেলেরা শুধু লিসার দিকেই তাকিয়ে আছে। অবশ্য লিসা বেশ কিছু সময় আগেই বুকের উপরে নিজের আঁচলটা ঠিক করে নিয়েছিল। তাই ওর স্তনযূগল অন্যের দৃষ্টিগোচর হ’বার কোনো সুযোগই ছিল না। তবুও নিজের সঙ্গিনীকে এভাবে পরপুরুষদের চোখে গোগ্রাসে গিলতে দেখে রুদ্রর মনে বেশ ভালো একটা অনুভূতি হচ্ছিল। এখন শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষা। বিয়ে একে করুক, না করুক, সম্ভোগ করার সুযোগ পেলে সে ছাড়বে না। আসলে রুদ্র নিজের মধ্যে একটা জেমস্ বন্ড দেখতে পায়, যে তদন্ত করার মাঝে সুযোগ পেলে তন্বী রমণীদের দেহ ভোগ করে আত্মার তৃপ্তি করে নিতে চায়। সবাইকে ওভাবে লিসার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রুদ্র ঠোঁটে একটা মুচকি হাসি খেলিয়ে বলল -“দেখছো, এখানেও তুমি সবার কেন্দ্রবিন্দু। গোগ্রাসে গিলছে সবাই তোমাকে।”
“কে কি করছে তাতে আমার কিছু এসে যায় না। যার জন্য এত সাজগোজ করেছি, তার কেমন লাগল সেটাই আমার কাছে মুখ্য।” -লিসা অকপটে নিজের মনের কথা বলে দিল।
ওয়েটার এসে খাবারগুলো দিয়ে গেল। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যখন ওরা রেস্টুরেন্ট থেকে বেরলো, রাত তখন সাড়ে দশটা। রুদ্র লিসাকে নিজের মনের কথাটা বলার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছিল না। তাই লিসাকে জিজ্ঞেস করল -“আর কোথাও যাবে…? নাকি ফ্ল্যাটে ফিরব এবার ?”
“রাত হয়ে গেছে বস্, আর কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না। তাছাড়া কি একটা কেস স্টাডি আছে বলছিলেন..! চলুন, আপনার ফ্ল্যাটেই চলে যায়।”
রুদ্র মনে মনে যেন এটাই চাইছিল। পকেট থেকে সিগারেটের খাপটা বের করে তাতে আগুন সংযোগ করে একমুখ ধোঁয়া নিয়ে বলল -“আমারও আর ভালো লাগছে না লিসা। এবার একটু নিরিবিলি চাই।”
[+] 4 users Like MNHabib's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: হোগলমারা রহস্য- রতিপতি (সংগৃহীত) - by MNHabib - 22-11-2022, 02:38 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)