21-11-2022, 08:53 PM
যদিও রুদ্রর যৌনতার বিষয়ে তখন তেমন কোনো জ্ঞান ছিল না, তবুও ওর পড়ার নেশার কারণেই কোথাও দেখেছিল, এমন ফিগারের মেয়েরা নাকি শঙ্খিনী গোত্রভুক্ত, যারা যৌনক্রীড়ায় অতীব চাহিদাসম্পন্ন এবং পারঙ্গম হয়ে থাকে। এমন একটা মেয়েকে নিজের এ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে পাবার কথা হয়ত রুদ্রও কল্পনা করেনি। মেয়েটির কানায় কানায় পূর্ণ রূপ-যৌবনকে বিস্ফারিত দুই চোখ দিয়ে গোগ্রাসে গিলতে গিলতে এতটাই মসগুল হয়ে গেছে যে তাকে বসতে বলতেও সে ভুলে গেছে। “বসব স্যার…?” – মেয়েটার কথাটি রুদ্রকে বাস্তবের মাটিতে পটকে মারল।
“ওহঃ সিওর…! টেক ইওর সীট।” – হড়বড়িয়ে বলল রুদ্র – “কি নাম তোমার…? তুমি করেই বললাম। উড ইউ মাইন্ড….?”
“অফকোর্স নট্…! যদি জবটা হয়ে যায় তাহলে তো আপনি আমার স্যার হবেন। আর স্যারেরা নিজেদের ইনটার্নকে তো তুমি করেই বলবেন। আর আমার নাম মোনালিসা, মোনালিসা চ্যাটার্জী।” – মেয়েটা স্মার্টলি রুদ্রর সাথে কথা বলে যাচ্ছিল।
যদিও রুদ্র মেয়েটাকে দেখা মাত্র পুরো বোল্ড হয়ে গেছে, তবুও নিজের উত্তেজনাকে মেয়েটার সামনে উন্মোচিত হ’তে না দিয়ে রিজ়ার্ভ হয়ে বলল – “ওয়েল, ইন দ্যাট কেস আমার এখনই তোমাকে তুমি করে বলা উচিৎ হয় নি। বিকজ় তোমার জবটা এখনই কনফার্ম নয়। তোমার ইন্টারভিউ এখনও কিছুই হয় নি।”
কথাটা শুনে মেয়েটাকে ইষদ্ বিব্রত দেখালেও এবারেও বেশ স্মার্টলি বলল -“আই এ্যাম রেডি ফর এনিথিং স্যার। আপনি আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন। আমি যদি উত্তর দিতে না পারি, সেটা আমার ব্যর্থতা। তবে জবটা আমার চাই স্যার। বাবা প্যারালাইজ়ড্ হবার পর এভরিথিং ডিপেন্ডস্ অন মী। তবে আমি আপনাকে জোর করব না। আপনি যদি আমাকে ইনকম্পিটেন্ট পান, ইউ ক্যান ইজ়িলি রিজেক্ট মী। এখানে নয় তো, অন্য কোথাও নিজের উপযুক্ত কিছু কাজ নিশ্চয় জুটে যাবে।”
মেয়েটার কনফিডেন্স দেখে রুদ্র মুগ্ধ হয়ে গেল । তবুও ওকে বাজিয়ে নিতে জিজ্ঞেস করল -“যদি তুমি নিজে একজন ডিটেক্টিভ হ’তে তাহলে একটা কেস কে কিভাবে এ্যাপ্রোচ করতে?”
“দেখুন স্যর, প্রথমত আমি সন্দেহের তালিকা থেকে কাউকেই বাদ দিতাম না। ঘটনাস্থলে একটা টেনে নেওয়া সিগারেটের ফিল্টার পড়ে থাকতে দেখলেও প্রথমেই তার ব্র্যান্ডটা দেখতাম। আর হাতে গ্লাভস্ না পরে কোনো কিছুতেই হাত দিতাম না।” -মেয়েটা নিজের বায়োডাটাটা রুদ্রর দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলল -“আফটার অল, দ্য গ্রেট রুদ্রদেব সান্যালের অধীনে কাজ করতে গেলে কিছুতো নিজস্বতা থাকতে হবে!”
মেয়েটা যেটুকু বলল সেটুকু গোয়েন্দাগিরির হাতেখড়ি হলেও আক্ষরিক অর্থে ওর বসন্ত সমীরণে প্রস্ফুটিত পলাশ ফুলের মত লালায়িত যৌবনকে দেখেই রুদ্র আপ্লুত হয়ে বলল -“ইউ আর ইন। তবে একটা কথা, তোমাকে কখনও কখনও আমার ফুলটাইম এ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে আমার সাথেই থাকতে হবে। এমনও হতে পারে যে কোলকাতার বাইরের কোনো কেস এলো, তখন তোমাকে সেখানেও আমার সাথে যেতে হবে। কখনও কখনও তোমাকে আমার সাথে গোটা রাত কাটাতে হবে। তুমি এই সব কিছুর জন্য তৈরী তো…?”
“আমার কাছে কোনো অপশান নেই স্যার। জবটা চালিয়ে যাবার স্বার্থে আমাকে সব কিছুই করতে হবে। সেটা আমিও জানি। টিউশানি করে সংসারের ভার টানতে পারছি না। আজকাল ছাত্র-ছাত্রীরা কোচিং-এই বেশি ভিড় করছে।” -মেয়েটা নির্লিপ্ত ভাবে কথাগুলো বলে গেল।
“দেন্ মিস্ লিসা… ক্যান আই কল ইউ সো…?”
“সিওর স্যার… ইট সাউন্ডস্ কুল…! বাট্ ইউ উইল কল মী ওনলি লিসা। নো মিস্ বিফোর দ্যাট…”
“ও কে দেন্, ইউ আর ওয়ার্কিং উইথ মী। বাট্ তুমি আমাকে স্যার নয়, বস্ বলবে। আমি কোনো টিচার নই, না তো পুলিশ অফিসার।”
রুদ্রর কথা শুনে পাহাড়ী ঝর্ণার ঝংকার তুলে খিল খিল করে হেসে লিসা বলল -“ঠিক আছে, তাই হবে।”
“তবে আমি তোমাকে কোনো স্যালারি দেব না। ইনস্টেড, রিউয়ার্ড হিসেবে যা পাবো তার থার্টি পারসেন্ট তোমার। ডান্…?”
পেপারে রুদ্রর অগ্রবাল ঘোটালা কেস সলভ্ করার পর প্রাপ্ত রেমুনারেশানের এ্যামাউন্টটা মনে পড়তেই লিসা একবাক্যে রাজি হয়ে গেল -“ও কে বস্। আপনার লিসা তাতেই সন্তুষ্ট।”
লিসা কাজে জয়েন করার পর পরই আরও একটা বড় এ্যাসাইনমেন্ট এলো। রুদ্র সেটারও জড় পর্যন্ত পৌঁছে কেস সলভ্ করে দিয়েছিল। এবারেও পারিশ্রমিক হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা পেয়েছিল। চুক্তিমত লিসা তার থার্টি পারসেন্ট পেয়ে খুব আনন্দিত হয়েছিল। কাজে যোগ দিয়েই এত বড় একটা পারিশ্রমিক পেয়ে লিসা বলল -“বস্, এত তাড়াতাড়ি এত টাকা রোজগার করব ভাবতে পারি নি। থ্যাঙ্ক ইউ বস্।”
“শুধু থ্যাঙ্কস্…? সেলিব্রেট করবে না…?” -রুদ্রর মনে শয়তানি খেলতে লেগেছিল।
“সে তো করতে ইচ্ছে করছেই বস্, কিন্তু আমি ড্রিঙ্ক করি না যে…!” -লিসা আমতা আমতা করছিল।
“আমি কি করি…? সেলিব্রেট করা মানে কি শুধুই ড্রিঙ্ক করা…! আমরা কি অন্য কিছু করতে পারি না…?”
“বলুন বস্, কি করতে চান…?” -লিসার চোখদুটো বড় বড় হয়ে গেল।
রুদ্র ঝট্ করে কব্জিটা উল্টে দেখে নিল, চারটে কুড়ি। তারপর বলল -“তুমি না হয় একবার বাড়ি থেকে ঘুরে এসো। আর আসার সময় বাড়িতে বলে এসো-একটা কেস স্টাডি আছে। তাই হয়ত তুমি আজ রাতে ফিরতে পারবে না।”
রুদ্র আগেই ওকে শর্ত দিয়ে রেখেছিল, প্রয়োজনে রাতে থাকতেও হ’তে পারে। তাই রুদ্রর প্রস্তাব শুনে সে আর কিছু বলতে পারল না। “ঠিক আছে বস্। তাই হবে। আমি তাহলে আসি !”
“ও কে, এসো। আর সাবধানে যেও। কাছে অনেক টাকা আছে।” -রুদ্র লিসাকে সাবধান করে দিল।