Poll: চটি গল্প এর পাশাপাশি ভিন্ন ধরনের গল্প কি চলবে।
You do not have permission to vote in this poll.
Yes
77.78%
7 77.78%
No
22.22%
2 22.22%
Total 9 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 3.13 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
থ্রিলার গল্প -সাজু ভাই - সিরিজ - (গল্প: সাজু ভাই) (সমাপ্ত গল্প)
#1
cool2 fight fight



গল্পঃ- সাজু ভাই

লেখক - সাইফুল ইসলাম সজীব

পর্বঃ- ০১ 



আমার বান্ধবীকে গতকাল রাতে ওর স্বামী খুন করেছে, অথচ কাল বিকেলে ও কল দিয়ে বলেছে "এবার বাপের বাড়ি এলে তোদের বাড়ি গিয়ে দুদিন থাকবো। কতদিন তোর সঙ্গে দেখা হয় না, কলেজের সেই দিনগুলো আজও খুব মনে পরে।"

আমার বান্ধবীর নাম শারমিন, আমরা একসাথে এসএসসি পাশ করেছি। পরীক্ষার পরে কলেজে ভর্তি হলাম আমি, কিন্তু শারমিনের বিয়ে হয়ে গেল আঙ্কেল আন্টির পছন্দের ছেলের সঙ্গে। শারমিন নিজেও তাকে খুব পছন্দ করেছিল, নিজের স্বামীর প্রশংসা করতো সবসময়। সকাল বেলা খবরটা শুনে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হলাম, কারণ শারমিন ছিল আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।

ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখি কান্নাকাটির ভিড় জমে উঠেছে, সবাই কেমন আহাজারি করছে। আমার নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেল কিন্তু মুছতে ইচ্ছে করছে না। আর বেশিক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে না তাই তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে হাঁটতে লাগলাম। বান্ধবীর লাশ নাকি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেছে তাই সেখান থেকে নিয়ে আসলে আবার আসবো।

বাড়ি ফিরে কিছু ভালো লাগছে না, মোবাইল বের করে অনলাইনে গেলাম। সাজু ভাইয়ের গল্প পড়ে মন খারাপ দুর করতে চাই, জানিনা সম্ভব হবে কি না, কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কি?

সাজু ভাইয়ের গল্প খুব ভালো লাগে, তার অনেক পাঠক পাঠিকা আছে। তার নিজের একটা ছোট্ট ব্যক্তিগত গ্রুপ আছে, সেখানে সবাই খুব হাসির পোস্ট করে।

নিউজফিডে সাজু ভাইয়ের গ্রুপের একটা পোস্ট ভেসে আসলো, মোঃ সজীব নামের একটা আইডি দিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। সজীব ছেলেটাকে এর আগেও বিভিন্ন পোস্ট করতে দেখেছি। সাজু ভাই তার খুব ভালো বন্ধু, আর তারা নাকি একসাথে কলেজে পড়াশোনা করেছে।

সজীব ছেলেটার পোস্টটা ছিল বেস্ট ফ্রেন্ড নিয়ে, সে লিখেছেনঃ-

" প্রতিটি মানুষের জীবনে একটা ভালো বন্ধ থাকে যেটা খুবই স্পেশাল। সাজু, শফিক, রকি আর আমি সজীব ছিলাম সবচেয়ে ভালো বন্ধু। কিন্তু সেই চারজনের মধ্যে থেকে যেদিন শফিক হারিয়ে গেল আকাশের তারা হয়ে, সেদিন আমরা তিনজন খুব কেঁদেছিলাম। আজও মাঝে মাঝে শফিকের জন্য কান্না আসে, রকি সাজু আর আমি, আমরা এখন একেকজন একেক জেলায় ছড়িয়ে আছি। তিনজনের কারো সঙ্গে কারো দেখা হয় না, কিন্তু তবুও একটা আশা আছে একদিন হঠাৎ করেই দেখা হবে। কিন্তু শফিকের সঙ্গে কোনদিন দেখা হবে না, সৃষ্টিকর্তা একবার যাকে আকাশে উঠিয়ে নিয়ে যায় তাকে আর ফেরত দেয়না। ভালো থেক বন্ধু শফিকুল ইসলাম শফিক। "

পোস্টটা পড়ে মনটা আরও বেশি খারাপ হয়ে গেল কারণ বান্ধবীর কথা মনে পরছে। আমি তখন ওই পোস্টের মন্তব্যে লিখলামঃ-

" আপনার পোস্ট পড়ে দুচোখ ভর্তি পানি এসেছে কারণ আজকেই আমার বান্ধবী তার স্বামীর হাতে খুন হয়েছে। ওর মৃত্যুর জন্য এতটা কষ্টে হচ্ছে যে কষ্ট কাউকে বোঝানো সম্ভব না। "

কমেন্ট করে গল্প পড়ছিলাম, কিছুক্ষণ পর দেখি আমার কমেন্টের রিপ্লাই এসেছে।

সে লিখেছেনঃ-

- কীভাবে আপনাকে শান্তনা দেবো জানা নেই, তবে ধৈর্য ধরুন আপনি। আর আপনার বান্ধবীর স্বামী কেন তাকে হত্যা করেছে, কৌতুহল হচ্ছে জানার জন্য।

- আমি লিখলাম, জানি না কেন তাকে খুন করল, যদি জানতে পারতাম তাহলে তো মনকে একটু শান্তনা দিতাম।

- সে আবার লিখলো, কোন জেলায় এই ঘটনাটা ঘটেছে? মানে আপনাদের এলাকা কোথায়?

- টাঙ্গাইলের ঘটনা, আমাদের বাড়ি টাঙ্গাইল।

- ওহ্ আচ্ছা, ঠিক আছে মনকে শক্ত করুন আর দোয়া করবেন আপনার বান্ধবীর জন্য।

এরপর আর কোন রিপ্লাই আসেনি, আমি তখন ভাবলাম " তার মাধ্যমে যদি সাজু ভাইয়ের সঙ্গে একটু পরিচিত হতে পারতাম? কারণ আজ পর্যন্ত সাজু ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়নি, মেসেজ করেছি কিন্তু রিপ্লাই আসেনি।

তাই সজীব ছেলেটার আইডি তে গিয়ে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে মেসেজ দিলাম। এবং দুই মিনিট পরেই রিপ্লাই আসলোঃ-

- আসসালামু আলাইকুম।

- ওয়া আলাইকুম আসসালাম, কেমন আছেন?

- আলহামদুলিল্লাহ, আপনি তো একটু আগেই মনে হয় কমেন্ট করছিলেন তাই না?

- জ্বি, আমার নাম রুহি।

- ওহ্ আচ্ছা আমি সজীব। তবে আপনার বান্ধবীর কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে, সাজু নিজেও সেই কমেন্ট দেখে মন খারাপ করেছে।

- আপনি সাজু ভাইয়ের খুব ভালো বন্ধু তাই না?

- হ্যাঁ, আমরা একসাথে পড়াশোনা করেছি তবে আমি এখন চট্টগ্রামে আছি আর সাজু ওদের বাড়ি আছে।

- আমাকে একটা উপকার করবেন?

- জ্বি চেষ্টা করবো, বলেন কি করতে হবে?

- আমি আপনার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে চাই, তার গল্পগুলো ভালো লাগে আমার।

- ওহ্ আচ্ছা, ঠিক আছে চিন্তা করবেন না সাজু নিজেই আপনাকে নক দেবে, আমি ব্যবস্থা করে দেবো।

- মেলা মেলা ধন্যবাদ।

- মেলা মেলা শব্দটা নিশ্চয়ই সাজুর কাছ থেকেই শিখেছেন?

- হিহিহি জ্বি ঠিক বলেছেন।

- আপনার আপত্তি না থাকলে আমি কি আপনার সঙ্গে পরিচিত হতে পারি? যদিও এটা ঠিক নয় কারণ সাজুর পাঠিকার সঙ্গে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে ভয় করে, যদি বিচার দেয়?

- ওমা, বিচার দেবো কেন? তাছাড়া আপনাকে তো আমি আগে নক দিয়েছি।

- আচ্ছা, আমি মোঃ সজীব, জেলা বাগেরহাট, আপাতত চট্টগ্রামে একটা কোম্পানিতে আছি।

- আমি রুহি, বাসা টাঙ্গাইল, এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবো। আচ্ছা, সাজু ভাইয়ের বাসাও তো মনে হয় বাগেরহাট জেলা, তাই না?

- হ্যাঁ।

আর বেশি কথা এগোতে পারে নাই কারণ আমি ডাটা বন্ধ করে মাকে কাজে সাহায্য করতে চাই গেলাম। মোবাইল নিয়ে বসে থাকলে সারাক্ষণ শুধু বকাবকি করে তাই কাজ করতে হয়। আগের চেয়ে মনটা একটু ভালো লাগছে, ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলে নাকি সাজু ভাইয়ের সঙ্গে কথা হবে সেজন্য,  সেটা বুঝতে পারছি না।

দুপুরের খাবার খেতে বসে বাবার কাছে একটা কথা শুনে খাবার গলায় আটকে গেল। শারমিনের লাশের কাছেই নাকি একটা বাঁধাই করা কাগজে লেখা ছিল, "প্রথম শিকার"।

কিন্তু এর মানে কি? শারমিনের স্বামী যদি খুন করে তাহলে "প্রথম শিকার" মানে কি? তিনি কি আবার খুন করবেন কাউকে? নাকি অন্য কিছু?

- বাবা বললো, অনেকেই ধারণা করছে যে সেই ছেলে নাকি খুন করেনি। এটা নাকি বাহিরের কোন চক্রের আয়োজনে ষড়যন্ত্র চলছে, এবং তার সঙ্গে জড়িত হতে পারে আরও অনেকেই।

পুলিশ নাকি ধারণা করছে যে, খুব তাড়াতাড়ি অন্য কেউ খুন হতে পারে। আর যদি খুন হয় তবে বোঝা যাবে কাদেরকে খুন করবে খুনী? আপাতত ওর স্বামী পুলিশের হেফাজতে আছে কিন্তু তবুও শারমিনের সকল আত্মীয় স্বজনদের সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে।

বিকেলে বিছানায় শুয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে ডাটা চালু করে দেখি সাজু ভাইয়ের মেসেজ।

- সে লিখেছে, কেমন আছো তুমি? তোমার বান্ধবী খুন হয়েছে খবরটা শুনে কষ্ট হচ্ছে, আমাদের এক বন্ধু ছিল কলেজ জীবনে। যার জন্য পোস্ট করল সজীব, সেই শফিকের জন্য আমাদের কত কষ্ট হচ্ছে সেটা আমরা জানি।

- আমি বললাম, ভাইয়া আপনার সঙ্গে এভাবে যে কথা হবে ভাবতে পারিনি। তবে এমন একটা দিনে যোগাযোগ হচ্ছে যে মনটা খুব খারাপ।

- সমস্যা নেই, স্বাভাবিক হতে চেষ্টা করো।

- সাজু ভাই আপনার গল্পগুলো খুব সুন্দর।

- ধন্যবাদ।

- না নেবো না।

- কেন?

- মেলা মেলা ধন্যবাদ বলতে হবে তাহলে আমি নেবো।

- হাহাহা, এটা তো গল্পের মধ্যে ব্যবহার করি তাই বলে বাস্তবে বলতে হবে?

- হ্যাঁ, আমার সঙ্গে বলতে হবে, পারবেন না?

- পারবো, আচ্ছা তোমার বাসা কোথায়?

- টাঙ্গাইল, আপনার তো বাগেরহাট?

- হ্যাঁ বাগেরহাট, তোমাদের জেলায় যাবার খুব ইচ্ছে আছে আমার। একটা খুব পরিচিত মানুষ আছে তার সঙ্গে দেখা করতে যাবো।

- ওয়াও, কবে আসবেন? আমাকে সেদিন কিন্তু বলবেন প্লিজ প্লিজ প্লিজ।

- কেন?

- আমি আপনার সঙ্গে দেখা করবো।

- তাই?

- হ্যাঁ, সাজু ভাই আপনার গল্পগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগে তাই সবসময় কথা বলতে মন চায়। আর দেখা করতে পারলে তো কোন কথাই নেই, টাঙ্গাইল এলে বলবেন তো?

- আচ্ছা ঠিক আছে, যেদিন যাবো সেদিন বলবো।

- আর আপনার বন্ধু সজীবকে নিয়ে আসবেন।

- কেন?

- তার সঙ্গেও দেখা করবো।

- ও চাকরি করে তাই সুযোগ পাবে কিনা জানি না বলে কথা দিতে পারি না।

- আপনাদের বন্ধু শফিক ভাই কীভাবে মারা গেছে বলা যাবে? খুব জানতে ইচ্ছে করছে।

- সে তো অনেক বড় কাহিনি।

- বলেন সমস্যা নেই, আমি ফ্রী আছি তাই আমার অফুরন্ত সময়।

- কিন্তু এত কথা লিখতে সময় লাগবে।

- মেসেঞ্জারে কল দেবো? যদি আপনার আপত্তি না থাকে তাহলে।

- আজকেই শুনতে হবে? মাত্র তো পরিচয়।

- এখন বলতে না চাইলে পরে বলবেন।

- ঠিক আছে পরে একসময় বলবো।

---

মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে শারমিনের লাশ কবর দেয়া হয়েছে, অনেক মানুষের ভিড় ছিল কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে গেছে তাই তাড়াতাড়ি দাফনকাফনের  কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। মানুষের জীবন এতটুকু কেন? মরে গেছে তাই এখন সবাই তাড়াতাড়ি মাটির নিচে রাখতে ব্যস্ত। সন্ধ্যা হয়ে গেছে তাই সবাই কত তাড়াহুড়ো করে কবর দিলো, আজকের পর থেকে শারমিনের চিরদিনের জন্য একটা ঘর হলো। হাশরের আগ পর্যন্ত তাকে আর পৃথিবীর কেউ বিরক্ত করবে না।

আমি যখন মাঝে মাঝে ওকে জিজ্ঞেস করতাম, কোই যাস? শারমিন বলতো, পরের বাড়ি। আবার বাপের বাড়ি এলে বলতো "বাপের বাড়ি এসেছি"
পৃথিবীতে মেয়েদের কোন বাড়ি নেই, একটা হচ্ছে স্বামীর বাড়ি আরেকটা হচ্ছে বাপের বাড়ি অথবা ভাইদের বাড়ি। এদের কোন বাড়ি নেই।

রাতের খাবার খেয়ে দশটার দিকে অনলাইনে গেলাম, সজীব নামে ছেলেটার আইডির পাশে সবুজ বাতি জ্বলছে।

- নক দিয়ে লিখলাম, কেমন আছেন?

- সঙ্গে সঙ্গে রিপ্লাই এলো, আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি, আপনি?

- আমিও ভালো আছি।

- সাজুর সঙ্গে কথা হয়েছে?

- হ্যাঁ, আপনি রাতে খেয়েছেন?

- হ্যাঁ হোটেল থেকে খেয়ে আসলাম।

- হোটেলে কেন?

- ব্যাচেলর জীবন তো।

- নিজে রান্না করতে পারেন না? নাহলে যেহেতু চাকরি করেন তাই বিয়ে করুন।

- হাহাহা, বিয়ে?

- কেন? হাসির কারণ কি?

- আচ্ছা সরি, হাসবো না।

- হাসার কারণ থাকলে অবশ্যই হাসবেন কিন্তু অকারণে কেন?

- আর হবে না।

- মনে থাকে যেন।

- জ্বি সবসময় মনে থাকবে।

ছেলেটা আর মেসেজ দেয়নি, একটু ভালো লাগল কারণ অকারণে মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করে না। রাতে আরও কিছুক্ষণ অনলাইনে থেকে তারপর ঘুমিয়ে গেলাম। শারমিনের বিষয়টা মন থেকে বের করতে চাচ্ছি কিন্তু পারছি না।

সকাল বেলা মায়ের চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দিলাম। মা বললোঃ-

- সর্বনাশ হয়ে গেছে, তোর আরেকটা বান্ধবী আছে না ববিতা? গতকাল রাতে নাকি ববিতা খুন হয়েছে, আর ওর লাশের পাশেও একটা কাগজে লেখা ছিল " দ্বিতীয় শিকার "।

- আমি হতবাক হয়ে বললাম, কিহহ...?

- হ্যাঁ রুহি, আর শুধু তাই নয়, " দ্বিতীয় শিকার " শব্দের নিচে আরেকটা লেখা ছিল।

- সেটা কি?

- লেখা ছিল " সব বান্ধবীরা অপেক্ষা করো "। সেটাই যদি হয় তাহলে তো তোরও বিপদ আছে।

.
.
.

চলবে...
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 3 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
থ্রিলার গল্প -সাজু ভাই - সিরিজ - (গল্প: সাজু ভাই) (সমাপ্ত গল্প) - by Bangla Golpo - 20-11-2022, 10:55 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)