Thread Rating:
  • 159 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
[Image: Polish-20221110-162709565.jpg]

(৪)

চাঁদের হাটে দেখেছিলাম মুখখানি, ভালোবাসার তখনই হয়তো হয়েছিল দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি। মনের উঠোন জুড়ে নিঃশব্দে বয়ে যাওয়া জীবন্ত প্রেম, হঠাৎই নিস্তব্দতার হলো অবসান খসে পরে কিছু শব্দের আর্তনাদ। তারমানে সকল আশঙ্কা সত্যি করে শেষে রূপ নিলে বিকলাঙ্গ প্রেমে? মনের কোণে জমা বেওয়ারিশ লাশ, ছেঁড়া সুতো জুড়ে নতুনের আশ। নিত্যদিনের সঙ্গী বুঝি ভাঙ্গা গড়াতে, পরে আছে ধুলো মাখা গাঢ় পরতে। যদি ধীরে ধীরে বেড়ে যাওয়া দূরত্বকে গ্রহণ করে নিতাম তাহলে হয়তো আমাদের নিঃস্তব্ধতা এতটা গাঢ় হতো না। তাহলে আমাদের গল্পটা একদম অন্যরকম হতো, যেটা শুধুই আমাদের দু'জনের গল্পই হতো। এখন তো এই গল্পে তুমি আছো আমিও আছি, গল্পতো তখনই হতো .. আমি আর তুমি মিলে আমাদের হতো। আরো কত ভাবনা আসে এই মনে যদি অতীতকে পাল্টে দিতে পারতাম।

সময়ের টানে হারিয়ে যাচ্ছে দিন, কাল, বছর .. পরে আছে একাকীত্ব। অন্তরালে লুকিয়ে আছে মোহ, খুব নিরবে পুড়ে প্রেম রেখে যায় শুধু বিষন্নতার ছোপ। একাকীত্ব খুঁজে চলে এক টুকরো আলোর দিশা, চোরাবালিতে ডুবে গিয়েও ভেসে ওঠা আবার নতুন করে গড়া। নক্ষত্র ভরা রাত জানে বিরহ, বাকরুদ্ধ প্রেম যন্ত্রনা চলে অবিরত। এভাবেই একদিন মলিন হয়ে যাবে সব, শুধু রয়ে যাবে অমলিন ক্ষত। যদি তুমি থাকতে আমার পাশে, তাহলে? তুমি থাকলে তোমাকে দেখে এই চোখের পলকই পড়তো না। তুমি থাকলে .. এই মুহূর্তে তোমার হাত ধরতে বড়ো সাধ জাগতো। যদি তুমি থাকতে, তাহলে আমার শুধু এই হাত নয় আমাদের হাতের রেখাও এক হতো, সাথে ভাগ্যটাও। ছায়ার পেছনে ছুটে ছুটে যায় এই মন চাঁদকে হাতের মুঠিতে খুব যত্নের সাথে আদর করতো। পিপাসা বুকে এই ছোট্ট পাখিটাকে কোনো নদীর সন্ধানে একটু গভীর ঘুম অনেক স্বপ্ন দেখতো। হলুদ খামে খুব যত্নের সাথে ওই নীল আকাশের ঠিকানায়  চিঠি পাঠাবো ..
অবসরে পড়ে নিতে ভুলো না যেনো!

যখন রাতের অন্ধকার কেটে গিয়ে ভোরের আলো ফুটলো .. হিয়ার কথা ভেবে ভেবে সারারাত দু-চোখের পাতা এক না করা গোগোলের মন তখন যাবতীয় পার্থিব সম্পর্ক, মায়া, মোহ, প্রেম অতিক্রম করে এক নতুন ভোরের সন্ধান চাইছে। আসলে জীবনের লক্ষ্য যদি স্থির থাকে, তবে এই পৃথিবীর কোনো মোহমায়াই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না মানুষের লক্ষ্য পূরণের পথে। তার মনের চঞ্চলতা হ্রাস পেয়ে সেখানে স্থান করে নেয় ধৈর্য আর উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা। তেইশ বছরের গোগোল আজ অনেক ধৈর্যশীল এবং পরিণত। মাঝের কয়েকটা বছরে অনেক কিছুর অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। বৈশাখী ঝড়ের রাক্ষুসে দাপট দেখেছে সে, গনগনে আলোয় তেজদীপ্ত সূর্য দেখেছে। আবার বসন্তে - ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়ায় সবুজ ফসলে বিস্তীর্ন মাঠের অপরূপ শোভা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে তার। কালো মেঘহীন অসীম নীলাকাশ দেখেছে, সাদা পাখনায় ভর দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে বলাকাদের উড়তে দেখেছে। দুর্বৃত্ত শিকারীর গুলিতে আহত হয়ে মাটিতে মুখ থুবরে ওদের ডানা ঝাপটাতে দেখেছে .. ফোঁটা ফোঁটা রক্তে সবুজ ঘাস রঞ্জিত হতে দেখেছে। পিতৃমাতৃহীন সন্তানের বেদনা যেমন আত্মস্থ করেছে ঠিক সেই ভাবেই  অনেক মাকে তাদের সন্তানদের যুদ্ধের সাজে সাজিয়ে দিতে দেখেছে। আবার যুদ্ধ শেষে অনেক মায়ের চোখে অশ্রুর বন্যা বইতে দেখেছে। তার মাতৃদেবীর কাজলকালো যে চোখে অন্তহীন ভালবাসার, মমতার আর মাতৃত্বের ছাপ দেখেছে, সে চোখেই আবার দেখেছে প্রচন্ড ঘৃনা, ক্রোধ আর ভয়। তার মনে পড়ে এখনো মায়ের বুকে হিংস্র পশুর ধারালো নখের দাগ। দৃশ্যটা মনে পড়লেই এখনও সে আয়নার সামনে নিজের চোখে চোখ রেখে তাকাতে পারে না। তাকালেই নাকে বারুদের গন্ধ আসে, বুকে প্রবল ঝড় ওঠে, চোখে গনগনে আগুন জ্বলে ঘৃনার, ক্রোধের, প্রতিশোধের।

 এই সবকিছুর জন্য অহেতুক নিজেকে দায়ী করে নিয়ে  ভিতরে ভিতরে একটা অপরাধবোধে ভুগতে থাকা সুজাতা .. গোগোলের সঙ্গে চোখে চোখ মেলাতে পারছিলো না। আর ওদিকে গোগোল যেদিন কোনো বিশেষ কাজের সংকল্প করে, সেদিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত কারোর সঙ্গে কথা বলে না, পাছে তার মনঃসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই আজ সকালে উঠে দু'জনের সেই অর্থে কথাই হয়নি। গোগোলের জন্য সকালের জলখাবার বানিয়ে সেটা টেবিলের উপর ঢাকা দিয়ে রেখে "মনে করে খেয়ে নিস, আমি বেরোলাম .." এই বলে হসপিটালের উদ্দেশ্যে ডিউটিতে বেরিয়ে গেলো সুজাতা। তার মামণি বেরিয়ে যেতেই নাকে-চোখে-মুখে কিছুটা খেয়ে তার থেকে অর্ধেকের বেশি ফেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইকে স্টার্ট দিলো গোগোল। তারপর সোজা পৌঁছে গেলো আলতারা কলিহারি রোডের পশ্চিমপ্রান্তে  যে পেট্রোলপাম্পটা আছে তার উল্টোদিকে ধনঞ্জী ভাইয়ের গ্যারেজে।

★★★★

নিশীথ বটব্যালের মৃত্যুর পর কলেজ পরিচালন কমিটির দ্বারা একজনকে টিচার ইনচার্জ নির্বাচিত করা হলেও স্থায়ীভাবে এই কয়েক বছর কোনো প্রধানশিক্ষক ছিলেন না গুরুকুল বিদ্যামন্দিরে। বছরখানেক হলো অনাদি কুন্ডু নামের একজনকে স্থায়ী প্রধানশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে গুরুকুলে। যদিও তার সঙ্গে পূর্বতন হেডমাস্টার নিশীথ বাবুর মতো কামরাজ এবং মিস্টার সামন্তর কোনো সখ্যতা তো ছিলই না, বরং বিধায়ক মশাইয়ের সুপারিশ করা একজন অযোগ্য ছাত্রর ভর্তির ব্যাপার নিয়ে কিঞ্চিত মনোমালিন্য হয়েছিলো অনাদি বাবুর সঙ্গে।

যাক সে কথা। অনাদি বাবুর পত্নী বছর বিয়াল্লিশের গৃহবধূ প্রতিমা দেবীর সঙ্গে তার স্বামীর বয়সের প্রায় অনেকটাই পার্থক্য। অনাদি বাবুর বয়স প্রায় সাতান্ন বছর হতে চললো, অবসরের আর তিন বছর মাত্র বাকি। তার উপর বহুদিন ধরে মধুমেহ রোগে ভুগছেন, এর সাথে রয়েছে স্নায়ুর সমস্যা। শরীরের যাবতীয় উদ্দাম উদ্দীপনা সবকিছু শেষ এই দীর্ঘ রোগভোগের ফলে। ওনাদের একমাত্র পুত্র অসীম .. জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ে।

চ্যাপ্টা ঠোটের অধিকারিনী স্বাস্থ্যবতী গৃহবধূ প্রতিমা দেবীকে সেই অর্থে সুন্দরীর পর্যায়ে ফেলা না গেলেও তার মুখমণ্ডলে একটা কামুকী ভাব আছে। তবে উনার গতরখানা বেশ আকর্ষণীয়। ৩৮-ডি সাইজের ব্রা আর ৪০ সাইজের প্যান্টি ব্যবহার করা প্রতিমা দেবীর স্তনযূগল এবং নিতম্বজোড়া অত্যন্ত ভারী, বিপুল এবং প্রবৃদ্ধ। গায়ের রঙ মোটামুটি ফর্সার দিকেই। নাভির আকৃতি বর্ণনা করতে গেলে বলতে হয় একটা দশ টাকার কয়েন সহজেই তার নাভিকুণ্ডে প্রবেশ করানো যাবে। কনকনে ঠান্ডা না পড়লে সর্বদা স্লিভলেস ব্লাউজ পড়তে পছন্দ করা প্রতিমা দেবী চুল বাঁধা বা উঁচু দড়িতে কাপড় মেলার সময় তার হাত দুটো তুললেই উনার ফর্সা বগলের নিচে কয়েকগাছি ছোট করে ছাঁটা চুল দৃশ্যমান হয়। চোখ দুটো পটলচেরা না হলেও ভ্রু-যুগল বেশ সুন্দর করে প্লাক করা। মাথার ঘন কালো চুল খুললে পিছনে প্রায় কোমর অবধি লম্বা। স্নান সেরে শাড়ি-ব্লাউজ পড়ার আগের মুহূর্তে ব্রা আর পেটিকোট পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজের দিকে তাকিয়ে ওনার ভিতর থেকে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। বিয়াল্লিশ বছর বয়সী শরীরে তার এখন ভরা যৌবন উথাল-পাখাল করছে। রাতে যখন বিছানাতে কেবলমাত্র হাতকাটা ঢলঢলে একটা নাইটি পরে স্বামীর সাথে আলিঙ্গন করে আহ্লাদীপনা করতে যান, "উফফ ছাড়ো তো, বিরক্ত করো না আমাকে, এমনিতেই কাজের প্রচণ্ড চাপ তার মধ্যে আবার এইসব .. একটু শান্তিতে ঘুমাতে দাও" এই বলে এক ঝটকাতে অনাদি বাবু কামুকী দেহের অধিকারিনী সহধর্মিনীর ওই কামজাগানো রূপ অগ্রাহ্য করে তার বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেন। প্রতিমা দেবী যৌন হতাশার এক অসহ্য বেদনাতে নীরবে কাঁদতে থাকেন পাশ ফিরে শুয়ে। অতঃপর দু'জনে দু'দিকে মুখ করে শুয়ে পড়েন। একসময়, ফোঁপাতে ফোঁপাতে প্রতিমা দেবী ঘুমিয়ে পড়েন।

বয়স্ক স্বামীর এই অকর্মণ্যতায় কামক্ষুধায় ভরপুর প্রতিমা দেবী নিজের অজান্তেই ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিলেন নিজের উপর থেকে। বাজার-দোকানে বের হলে আজকাল একটু বেশিমাত্রায় শরীর দেখিয়ে শাড়ি পড়েন। বাড়ির বাইরে আগে স্লিভলেস ব্লাউজ না পড়লেও এখন পড়তে দ্বিধাবোধ করেন না, তার সঙ্গে সায়ার দড়িটা নাভির বেশ কিছুটা নিচেই বেঁধে বের হন। বাজারে কতো লোলুপ বয়স্ক, কমবয়সি পুরুষ প্রতিমা দেবীর মাংসল থলথলে পাছাতে ভীড়ের মধ্যে হাত বুলিয়ে দেয়, আবার কখনো সুযোগ বুঝে খামচে ধরে। কখনো বা গুরুকুলের প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী যখন নীচু হয়ে সামনে ঝুঁকে পড়ে মাটিতে বসা সবজি-বিক্রেতার কাছে সবজি বাছেন, তখন সামনে বসা সবজি-বিক্রেতা তার খসে পড়া আঁচলের তলা দিয়ে যেমন তার গভীর স্তন বিভাজিকা দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে, আবার ওনার উঁচু হয়ে থাকা লদলদে পাছাতে বাজার করতে আসা বিভিন্ন বয়সী বিভিন্ন ক্লাসের কামুক পুরুষেরা তাদের পায়জামা অথবা লুঙ্গির ভিতরে ঠাঁটিয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গটা ঘষতে থাকে। এগুলো যে প্রতিমা দেবী বুঝতে পারেন না তা একদমই নয়। বরং মনে মনে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে পরপুরুষের স্পর্শে ভেতর ভেতর একটা নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজনা অনুভব করেন। কিন্তু ভদ্রঘরের গৃহবধূ এবং এক কলেজপড়ুয়া সন্তানের জননী বলে লজ্জায় এর থেকে বেশি কিছু করার কথা ভাবতেও পারেন না।

আজকাল তার মাতৃদেবীর বাড়ির বাইরে বেরোবার পোশাক দেখলে মাথা ঘুরে যায় অসীমের। আর বাড়ির ভেতরে তো কথাই নেই .. ওইরকম মারকাটারি, উত্তেজক, স্বাস্থ্যবতী ফিগারে নিচে শুধু প্যান্টি পড়ে ঊর্ধাঙ্গের অন্তর্বাস ছাড়াই উপরে একটি হাতকাটা সুতির পাতলা ফিনফিনে নাইটি পড়ে সর্বদা ঘুরে বেড়ান। অসীম তার মাতৃদেবীকে এইভাবে দেখে মাঝে মাঝে কামোত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরমুহূর্তেই ভাবে - 'ছিঃ ছিঃ   নিজের জন্মদাত্রী মায়ের সম্পর্কে এইসব কি ভাবছে সে!' কিন্তু তথাপি নিজেকে সামলাতে পারে না অসীম। তার উনিশ বছরের ছয় ইঞ্চি লম্বা এবং বেশ কিছুটা মোটা তাগড়াই পুরুষাঙ্গটা আজকাল কেমন যেন টনটন করে, যখন সে বাথরুমে ঢুকে দেখে কাপড় কাচার গামলাতে তার মায়ের ছেড়ে রাখা ৩৮-ডি সাইজের রঙবাহারী ব্রেসিয়ার, হাতকাটা ব্লাউজ, চিকনের ডিজাইন করা পেটিকোট পরে আছে। অসীম বাথরুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। প্রতিমা দেবী তার সাংসারিক কাজ, রান্নাবান্না নিয়ে ব্যস্ত তখন। অসীম স্নান করতে ঢুকে বাথরুমে মায়ের ছেড়ে রাখা ব্রেসিয়ার, পেটিকোট, প্যান্টি হাতে নিয়ে গন্ধ শুঁকতে থাকে। বিশেষ করে প্যান্টির গোপন জায়গাটিতে। তারপর উলঙ্গ হয়ে নিজের ঠাঁটানো ধোনটাতে তার মায়ের প্যান্টিটা জড়িয়ে ঘষতে থাকে, কামোত্তেজিত হয়ে। একদিন তো হস্তমৈথুনের ফলে অতিমাত্রায় উত্তেজিত হয়ে অসীম তার মাতৃদেবীর একটি গোলাপী রঙের প্যান্টিতে নিজের বীর্য্য উদগীরণ করে ফেলেছিল। তারপর ব্যাপারটা সামলে নিতে তার মায়ের প্যান্টিটা ভালো করে ধুয়ে ছেড়ে রাখা অন্যান্য জামা কাপড়ের সঙ্গে সাবান জলে ভিজিয়ে দিয়ে স্নান সেরে বাইরে এসে বলেছিল "মা, আজ আমি তোমার সব জামাকাপড় ভিজিয়ে দিয়েছি.." ছেলের এইরূপ উক্তিতে কিছুটা বিস্মিত হয়ে গিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও, প্রতিমাদেবী অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলেন অসীমের দিকে।

অসীম জলপাইগুড়ি থেকে কয়েকদিনের ছুটিতে বাড়িতে এসেছে এবং সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে একটি দুঃসংবাদ। ওই কলেজে তাদের উপর মাত্রাতিরিক্ত র‍্যাগিং করছে সিনিয়র ব্যাচের ছাত্ররা। কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিও কোনো লাভ হচ্ছে না। তাই সে  আর কিছুতেই ওখানে ফিরে যেতে চায় না, ট্রান্সফার নিয়ে কলকাতার কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হতে চায়। এখানকার কলেজ অনেক উন্নত মানের এবং সপ্তাহান্তে বাড়িও আসতে পারবে সে। কিন্তু চাইলেই তো আর সবকিছু পাওয়া যায় না। জলপাইগুড়ির কলেজ যে গ্রুপের অন্তর্গত ছিলো, কলকাতায় অবস্থিত সেই গ্রুপের অন্তর্গত কলেজ ছাড়া তো আর ভর্তি হওয়ার উপায় নেই। কিন্তু "মাঝপথে এইভাবে এডমিশন হয় না" অথবা "ওই স্ট্রিমে কোনো সিট খালি নেই" এই ধরনের মন্তব্য শুনতে শুনতে জুতোর সুকতলা খুইয়ে ফেলেছিল অসীম এবং তার মাতৃদেবী। অনাদি বাবু নিজের কলেজ এবং শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে, ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো হেলদোল ছিলো না তার।

“কি অসভ্য সব লোকজন, আমার দিকে যেন কিরকম ভাবে তাকায় লোকগুলো, সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ে একেবারে আমার মুখের উপর। একদম নোংরা পরিবেশ অসীম যে কলেজে পড়ে সেই গ্রুপের কলকাতার ব্রাঞ্চ আফিসে.." প্রতিমা দেবী ওনার প্রাণের বান্ধবী কাকলিকে টেলিফোনে একদিন কথাগুলো বলছিলেন। হ্যাঁ পাঠকবন্ধুরা, আপনারা ঠিকই ধরেছেন .. ইনিই সেই কাকলি, যার স্বামী একসময় গঙ্গানগর মিউনিসিপাল হসপিটালে আর.এম.ও ছিলেন। মাঝে খড়গপুর বদলি হয়ে গিয়েছিলেন, বর্তমানে ডক্টর দাশগুপ্তের বদলে আবার ফিরে এসেছেন এখানে। কাকলি দেবীর বয়স বর্তমানে ছেচল্লিশ, কিন্তু তার অভ্যন্তরীন যৌন ভাবাবেগের কোনোরূপ পরিবর্তন হয়নি বরং তা উথলে উঠছে। বর্তমানে তিনি তার পুরনো দুই প্রেমিক কামরাজ আর সামন্তর প্রায় প্রতিদিনের বিছানা গরম করার সঙ্গিনী হয়ে উঠেছেন।

তার বান্ধবীর কথার প্রত্যুত্তরে কাকলি দেবী বললেন "ঠিকই বলেছিস প্রতিমা, রাস্তাঘাটে বেরোলে দেখি তো এখন সব পুরুষ মানুষের বিশেষ করে যেগুলো পঞ্চাশ পেরিয়েছে সেগুলোর শুধু খাই খাই একটা ভাব। এর মধ্যে ব্যতিক্রম শুধু আমার কর্তাটি। উনি তো আমার উপর উঠতে না উঠতেই বিছানাতে ডিসচার্জ করে দেন। আমার যে কি জ্বালা, সে শুধু আমিই জানি! আমার ছেলে রোহিত যে কলেজে ডাক্তারি পড়তো, সেখানেও এরকম একটা সমস্যা হয়েছিলো। আমার কর্তাটির তো সেদিকে খেয়াল পর্যন্ত ছিলো না। তারপর আমি আমাদের এলাকার বিধায়ক মশাইকে পুরো ব্যাপারটা খুলে বললাম, উনি কয়েকদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করে দিলেন। খুব ভালো লোক, তবে ওনার একটাই সমস্যা। ভদ্রলোকের জানিস তো একটু ইয়ের 'দোষ' আছে।"

প্রতিমা - "কাকলি দি, ইয়ের 'দোষ' মানে কিসের দোষ গো? তোমার কি মনে হয়, উনি কি পারবেন অসীমের কলেজের সমস্যাটা মিটিয়ে দিতে, মানে কলকাতায় ওর ট্রান্সফারটা করিয়ে দিতে?"

"আরে বুঝলি না? মধ্যবয়স্ক পুরুষ মানুষের যা হয়, কিসের আবার দোষ, 'আলুর দোষ' .. আর বলিস না প্রতিমা, রোহিতের কাজটা হয়ে যাওয়ার পর একদিন ওনাকে আমার ফ্ল্যাটে চা খেতে ডেকেছিলাম। রোহিত কলেজে আমার কর্তাটিও হসপিটালে, বাড়ি একদম ফাঁকা। ইশশশশ, কি বলবো মানিক বাবুর ব্যাপারে .. সেদিন যা হয়েছিল বলতে গিয়ে ভীষণ লজ্জা করছে আমার। এখন রাখি রে, কেউ একজন কলিং বেল বাজালো, পরে ফোন করছি।" এইটুকু বলে টেলিফোনে অপর প্রান্ত থেকে ছেনালী করে খিলখিলিয়ে হেসে উঠে ফোনটা কেটে দিলেন কাকলি দেবী।"

★★★★

আজ বৃহস্পতিবার, দুপুরবেলা খাওয়াদাওয়া করে অসীম গেছে কলকাতার কাছাকাছি এক বন্ধুর বাড়ি দুর্গাঠাকুর ভাসান দেখতে .. যাওয়ার সময় বলে গেছে ফিরতে রাত হবে, আবার সেরকম হলে ওখানে থেকেও যেতে পারে। প্রতিমা দেবী খাওয়া দাওয়া সেরেছেন। অনাদি বাবু গেছেন বৈঁচিতে, তার এক বোনের বাড়ি .. ফিরতে ফিরতে প্রায় সাড়ে ন'টা দশটা বেজে যাবে।

আজ তাহলে সারা দুপুর, সারা বিকেল, সারা সন্ধ্যে তাকে একা একাই কাটাতে হবে। কারণ কাজের মাসি মালতিও আজ বিকেলে আসবে না বলে গেছে .. সুযোগ পেলেই আজকাল হাফ বেলা ছুটি নিয়ে নিচ্ছে মালতি, ভালো একটা কাজের লোক পেলে ওকে ছাড়িয়ে দেবে .. এই কথাই মনে মনে ভাবছিলো প্রতিমা দেবী। এই অলস দুপুরে সুতির একটা ফিনফিনে হাতকাটা নাইটি পড়ে বিছানায় আধশোয়া অবস্থায় থেকে মোবাইল ঘাঁটছিলেন প্রতিমা দেবী।

অকস্মাৎ প্রতিমা দেবীর মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো। অচেনা নম্বর .. অসীমের মা মুঠোফোনটা হাতে নিয়ে কিঞ্চিত ভাবছেন - কল'টা রিসিভ করবেন কিনা। কে হতে পারে? আজকাল ভীষণ উল্টোপাল্টা ফোন আসে। ইশশশশ, কি সব অসভ্য অসভ্য কথা বলে, কুপ্রস্তাব দেয় অচেনা পুরুষকন্ঠ। কোথা থেকে যে তার নম্বর ওরা পায়, ভগবান জানে। মিনিট দুয়েক বেজে চললো ফোনটা । তিনি ধরলেন না .. কে জানে বাবা, আবার যদি অসভ্যতা করে ফোনের ও প্রান্ত থেকে। পুনরায় বেজে উঠলো প্রতিমা দেবীর স্মার্টফোন .. এবার ধরলেন তিনি।

“হ্যালো .. আপনি কি মিসেস প্রতিমা কুন্ডু বলছেন?” ফোনের ওপাশ থেকে এক অচেনা গম্ভীর পুরুষকণ্ঠ ভেসে এলো। একটু থমকে গিয়ে অসীমের মা উত্তর দিলেন “হ্যাঁ বলুন, কে আপনি? কাকে চাই? আমার হাজব্যান্ড তো বাড়ি নেই এখন।”

"নমস্কার আমি বিধায়ক মানিক সামন্ত কথা বলছি।আপনার বান্ধবী কাকলির কাছ থেকে আপনার ফোন নম্বরটা পেয়েছি। আপনার ছেলে তো জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ে, শুনলাম ওখানে নাকি কিছু সমস্যা হয়েছে তাই ওই গ্রুপের আন্ডারে কোনো কলকাতার কলেজে ভর্তি হতে চায়। ওদের কলেজের ফাউন্ডার আমার বিশেষ পরিচিত, যদিও এখন দীর্ঘদিন যোগাযোগ নেই, তবুও দেখা যাক যদি কিছু করা যায়। আপনার ছেলের ওখানকার কলেজের কাগজপত্রগুলো লাগবে আমার .. যদি সেগুলো রেডি করা থাকে, তাহলে না হয় আমি গিয়ে .." ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তিটির পরিচয় এবং তার ফোন করার হেতু জানতে পেরে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠলেন প্রতিমা দেবী। প্রথমতঃ এলাকার বিধায়ক তাকে নিয়ে ফোন করেছেন। দ্বিতীয়তঃ কাগজপত্র নিতে তিনি নিজে তাদের বাড়ি পদধূলি দিতে চাইছেন। তার মানে তার ছেলের কলকাতায় কলেজে পড়া এবার কেউ আটকাতে পারবেনা।

"হ্যাঁ স্যার আপনার অনেক সুখ্যাতি কাকলি দিদির মুখে শুনেছি। আপনি আমাদের বাড়িতে আসবেন এবং আমার ছেলের ভর্তির ব্যাপারে সাহায্য করবেন এটা শুনে যে কি ভালো লাগছে আপনাকে বলে বোঝাতে পারবো না। সব কিছু রেডি করা আছে, যদি আপনার সময় হয় তাহলে আপনি চাইলে আজকেও আসতে পারেন।" গদগদ কন্ঠে কথাগুলো বললেন প্রতিমা দেবী।

"আসতে পারি নয়, এসে গেছি। আমি আপনার বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে আছি।" ফোনে এমএলএ সাহেব এই কথাটা বলা মাত্রই কলিং বেল বেজে উঠলো অনাদি বাবুর বাড়ির। এই মুহূর্তে উনি চলে আসবেন এটা বোধহয় কল্পনা করতে পারেননি প্রতিমা দেবী। অনাদি বাবুর একতলা বাড়ি। হঠাৎ এই রকম পরিস্থিতিতে এতটাই ঘেঁটে গিয়েছিলেন অনাদিবাবু স্ত্রী, তাই নিজের বর্তমান পোশাক সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সচেতন না হয়ে  বেডরুম থেকে বেরিয়ে বৈঠকখানায় এসে সদর দরজা খুলে দিয়ে দেখলেন পাতলা হয়ে আসা অর্ধেকের বেশি পেকে যাওয়া মাথার চুল ব্যাকব্রাশ করে আঁচড়ানো, চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা পরা, অত্যাধিক পরিমাণে ফোলা ফোলা দুটি গাল দেখে মনে হয় কিছুক্ষণ আগেই সেভ করে এসেছেন, নাক আর ঠোঁটের মাঝখানে একটি কাঁচাপাকা মোটা গোঁফযুক্ত, পায়জামা-পাঞ্জাবি এবং জহরকোট পরিহিত মধ্য পঞ্চাশের হৃষ্টপুষ্ট এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন। তিনিই যে এই এলাকার বিধায়ক সেটা বুঝতে অসুবিধা হলো না প্রতিমা দেবীর।
[+] 9 users Like Bumba_1's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গোলকধাঁধায় গোগোল (চলছে) - by Bumba_1 - 10-11-2022, 08:41 PM



Users browsing this thread: 33 Guest(s)