06-11-2022, 02:53 AM
১২। মহাকালের জঙ্গলে
ভেবেছিলাম ফিরে যাওয়ার সময় পাপুর মন খারাপ হয়ে যাবে। কিন্তু দেখলাম উল্টো টা। ও যেন একটু দূরে যেতে পেরে হাফ ছেড়ে বাচছে। যা খুব ই অদ্ভুত। আমি আর বাবা ওকে শিয়ালদায় ট্রেনে তুলে বাড়ি ফিরে এলাম। ফেরার সময়ে শুধু একটাই কথা বলল,
'টেলিগ্রাম আর হ্যাং আউট চেক করতে থাকিস'
কাল খোলসা করে বলেনি, শুধু এটা বলেছিল যখন রবি বাবু পিসির শরীর টা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে ব্যস্ত। তখন নাকি ও রবি বাবুর মোবাইল চেক করেছে। রবি বাবু অনেকগুলো এডাল্ট সাইটের মেম্বার। সেখানে প্রায় ই পোস্ট করে,
'মা মেয়ে/ দুই জা/দুই বোন/ জা ননদ কে একসাথে সুখ দিতে চাই। কেউ যদি ইচ্ছুক হয় তো নিচে আমার হ্যাং আউট আর টেলিগ্রাম আইডি রইল'
বাড়ি ফিরেই তাই আগে মোবাইল চেক করি। কাল রাতে পাপু আমদের দুজনের জয়েন্ট দুটো অ্যাকাউন্ট বানিয়েছিল। দেখি পাপু অলরেডি টেলিগ্রাম এ মেসেজ করে দিয়েছে।
'হাই একটা সাইট থেকে আপনার আইডি টা পেয়েছি। আমি চাই আমার মা আর পিসিকে আপনার মতো কোন অভিজ্ঞ পুরুষ এর সাথে শেয়ার করতে। '
কিন্তু এখনো কোন রিপ্লাই আসেনি। এতক্ষন যা চলছিল তা ঠিক আছে। সে নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তা করিনি। ও গলা পাল্টে মা আর পিসির সাথে কথা বলছে, ঠিক আছে। কিন্তু রবি বাবুর মতো একজনের সাথেও এরম মজা করার কোন মানে হয়না। ধরা পড়লে জানিনা কি হবে। বেশ কিছুক্ষন পর রিপ্লাই আসে।
'তোমার মার নাম কি?'
সাথে সাথে পাপুর রিপ্লাই,
'ভাল নামটা বলব না। কারণ আমি চাই আপনি আমার মাকে ডাক নামে ডাকুন'
'আমার খুব উত্তেজনা বোধ হবে যখন আপনি 'মণি' বলে আমার মাকে ডাকবেন'
সাথে সাথে রবি বাবুর রিপ্লাই,
'তোমার মায়ের নাম মণি?'
সাথে সাথে পাপু হ্যা বলে রিপ্লাই করে।
'আর পিসির নাম?'
সাথে সাথে পাপুর উত্তর।
'পিসিকে বরং আপনিই একটা নাম দিয়ে দিন'
উত্তর আসে 'মমতা'। কিছুক্ষন চুপ চাপ আবার রবি বাবুর মেসেজ আসে,
'একটা কথা বলব? যদি কিছু মনে না করো'
পাপু কোন রিপ্লাই দেওয়ার আগেই রবি বাবুর রিপ্লাই,
'সত্যি বলতে আমার ফ্যান্টাসি যে দুজন মহিলাকে নিয়ে তাঁদের নাম মণি আর মমতা। মণি আমার অফিসের একজন স্টাফ এর ওয়াইফ। অনেক দিন ধরে অরুনের দিদি আর বৌ এর ওপর আমার লোভ'
পাপু কোন রিপ্লাই করেনা।
উনিও আর অনলাইন থাকেন না।
...................................................…..........................................................................................................
এতক্ষনে বুঝি পাপু এতো খুশি কেন। আমাদের যত সিক্রেট তা তো ওর জানা হয়ে গেছে। আমার থেকে দূরে থাকলে নিজের মর্জি মতো কাজ করতে পারবে। আমি পাশে থাকলে অসুবিধে। শিয়ালদা থেকে কল্যাণী যেতে দেড় ঘণ্টা। অর্থাৎ পাপুর এখন নামার সময় হয়ে গেছে। পাপুর মেসেজ।
'তুই একদম চিন্তা করিস না। কিচ্ছু হবে না। তবে জানিস তো কাল পিসিকে এমনভাবে বলেছি যে পিসী রবি বাবুর থেকে শত হাত দূরে থাকবে। আমি বাড়ি পউছে একটু ফাঁকা পেলে পিসিকে ফোন করব ওই নাম্বার থেকে'
কীই বা বলি। এমন ফিল হচ্ছিল যে কোনকিছুতেই আমার কোন আধিকার নেই। পাপু ঠিক যেভাবে চালনা করছে আমিও ঠিক সেভাবেই চলছি।
বেশ কিছুক্ষন পর পাপুর ফোন। ফোন টা রিসিভ করতেই ও বলল,
'এই শোন একদম কোন আওয়াজ করবি না। তোকে কনফারেন্স এ নিয়ে পিসিকে কল করব'
যেমন বলা তেমন কাজ। কিন্তু পিসী ফোন টা ধরেনা। আমি হাফ ছেড়ে বাচি। পাপু বলে ওঠে,
'এইরে পিসী মনে হয় একটু বেশীই ভয় পেয়ে গেছে'
ওর কথা শেষ হতে না হতেই পিসির ফোন। আমিও লাইনে থাকি।
'আমি রান্নাঘরে ছিলাম। ফোন টা এখানে ছিল'
সঙ্গে সঙ্গে গলাটা পাল্টে পাপু বলে ওঠে,
'কোন ব্যাপার নয়। দেখো মমতা একটা ব্যাপারে তোমায় একটু সাবধান করে দেওয়ার জন্য ফোন করলাম। রবি বাবুকে আবার চটিয়েও দিও না। এতে অরুনের বিপদ বাড়বে বই কমবে না। চেষ্টা করো ম্যানেজ করে চলার। আর নিজেও সাবধানে থেকো'
ফোন টা কেটে দেয় পাপু। আমি ঠিক বুঝিনা হঠাৎ ও এটা কেন করতে গেল। তাই পাপুকে ফোন করলাম।
'তুই হঠাৎ এই কথাটা পিসিকে কেন বললি?'
কিছুক্ষন চুপচাপ থেকে ও রিপ্লাই দেয়
'দেখ এটা তো বুঝিস যে রবি বাবু আর পিসেমশাই দুজনেই চাইবে যে তোর বাবা বিপদের মধ্যে থাকুক। তাই এতটাও ভয় দেখিয়ে দেওয়া ঠিক না'
বুঝলাম ওর কথায় যুক্তি আছে।
মিনিট দুই তিন ছাড়া টেলিগ্রাম এ ঢুকছি আবার বেরচ্ছি। অন্য কোন উপায় ও নেই। পাপু আমায় জানিয়ে সবসময় চ্যাট করবে তা সম্ভব না। বেশ কিছুক্ষন পর দেখলাম রবি বাবুর মেসেজ
'তুমিই বলো তোমার ফ্যান্টাসির কথা। আমি দেখি পারি নাকি তা ফুলফিল করতে। '
সাথে সাথে পাপুর উত্তর,
'আমরা 5 জন একটা লং ড্রাইভে গেছি। সামনে ড্রাইভার এর পাশে আমি আর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আর পেছনে আপনি মানে আমার বাবার বস পিসী ও মা। আপনি বসেছেন মাঝখানে। আপনার একদিকে মমতা আর একদিকে মণি। ওদের পড়নে শুধু সায়া আর ব্লাউজ। দুজনের ই শাড়ি নেই '
'বাপরে বাপ। তুমি তো লেভেল এর কল্পনা করতে পারো। সত্যিই ইরেকশন্ ফিল করছি। সত্যি বলছি এতো মজা আগে কেউ এরম রোল প্লে বা সেক্স চ্যাট এ দেয়নি। কিন্তু খুব সরি আমায় এক্ষুনি অফিস এ ঢুকতে হবে। ফ্রি হলে আবার কথা বলছি'
এবার আর পাপুকে ফোন করলাম না। কি দরকার ও ওর নিজের মতোই চলবে।
................…...............................................................................................................................................
এতক্ষন ধরে একের পর এক যা চলছিল তাতেও শেষ নেই। তার চেয়েও বড় ঘটনা অপেক্ষা করেছিল। তা হোল পিসী ফোন করে মাকে। আমি তখন মার পাশেই ছিলাম। তাই সবকিছু শুনতে পেলাম।
'মণি তোর সাথে আমার জরুরি কথা আছে। তুই কি বাড়িতে আছিস আমি আসব তাহলে'
মাও হয়ত পিসির ই অপেক্ষায় ছিল।
আমার খুব ভয় করে। যদি মা আর পিসী দুজনে দুজনকে সব কথা খুলে বলে। যদি আমায় আর পাপুকে সন্দেহ করে। পাপুর গলাটা পিসী ধরে ফেলেনি তো। এতটাও কি ভাববে। তবে আজ সকাল থেকে মার মুড টা খুব ভালো ছিল। মনে হয় কালকের ঘটনা মা আর কিছু মনে রাখতে চায় না। কিন্তু পিসী আবার খুচিয়ে ঝামেলা করবে না তো। এইসব হাজারো প্রশ্ন মাথায় কিলবিল করছিল আর নার্ভাস লাগছিল।
কথা হয়ে যাওয়ার পর মা আবার রান্না ঘরে চলে যায়। মার মোবাইল টা ওখানেই পড়ে থাকে। আমি চুপি চুপি তুলে নিয়ে হোয়াটস অ্যাপ টা খুলি। পাপু আমায় জানায় নি, ও মাকেও মেসেজ করেছে। পাপুর ওপর খুব রাগ হচ্ছিল কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। আমি চ্যাট বক্স থেকে মেসেজ গুলো পড়তে লাগলাম।
'হাই কাল তো ঠিক করে কথাই হলো না। একটা কথা জিজ্ঞেস করব কিছু মনে করবে না তো?'
মা রিপ্লাই করেছে,
'হ্যা বলুন'
'দিনুদার সামনে যখন তুমি ওরম নগ্ন হয়ে নিজের শরীর টা দেখালে কাজ হাসিল করার জন্য তোমার মধ্যে কোন উত্তেজনা হয়নি। মানে মেয়েদের ও তো উত্তেজনা হয়। দেখো প্লিস এটা বলো না যে এরম কিছুই হয়নি। আমি সব ই জানি। সব ই'
মায়ের রিপ্লাই দেখি,
'আপনি সেই একই কথা বলে যাচ্ছেন। এরম কিছু হয়নি। এছাড়া আমার ননদ খুব সুন্দরী'
'আমি জানি মমতা খুব সুন্দরী। কিন্তু তোমার মধ্যে একটা ঝাঁজ আছে। যা ওর নেই'
'দেখুন আমি একজন মহিলা। কোন লঙ্কা নয়। দয়া করে আমায় বিরক্ত করা বন্ধ করুন'
'তুমি বিরক্ত বলছ? কাল বললাম না আমি তোমার ওয়েল উইসার। দেখো তোমায় যে কারণে মেসেজ করা। তা হোল একটু সাবধানে থেকো। একবার দিনুদার সামনে নগ্ন হয়েছ। ও কিন্তু দ্বিতিয় বার একই জিনিস এর পুনরাবৃত্তি চাইবে। সাবধানে থেকো'
'দেখুন আমাকে যেকোনো বিপদে রক্ষা করার জন্য আমার হাসব্যান্ড রয়েছে। আপনার চিন্তা না করলেও চলবে'
'আর যদি ওই একই ঘটনা তোমার স্বামীর চোখের সামনে ঘটে?'
বেশ কিছুক্ষন পর দেখলাম মা রিপ্লাই করেছে।
'এরম হোতেই পারেনা'
পাপু আর কোন মেসেজ করেনি। পাপুর ওপর যা রাগ হওয়ার তা তো হয়েইছে। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় কতগুলো জিনিস ভাবলাম।
মা কি সত্যিই ভাবছে যে পিসেমশাই অন্য নাম্বার থেকে মেসেজ বা কল করছে। এটা আসলে পিসেমশাই এর কাজ? তাহলে কি মা পিসেমশাই কে এটা বোঝাতে চাইল যে সেদিন আমি অসহায় ছিলাম সাথে হাসব্যান্ড ছিল না তাই এরম হয়েছে। বাবা থাকলে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। মানে মা কি পিসেমশাইকে চ্যালেঞ্জ করল যে একই ঘটনা আপনি অরুনের চোখের সামনে ঘটিয়ে দেখান। এইসব ই হাবিজাবি ভাবছি এমন সময় পিসি ভেতরে ঢুকল। আমি ওঁৎ পেতে থাকলাম মা আর পিসির ঠিক কি কি কথা হচ্ছে তা শোনার জন্য।
............................................................................................................................................................
'যাক অরুনের সব ঝামেলা মিটল অবশেষে। এতো চিন্তায় ছিলাম না কি বলব'
সাথে সাথে মার উত্তর,
'নানা দিদি এইসব কিছুই দিনুদার জন্য। কাল ই মাকে বলছিলাম কপাল করে জামাই পেয়েছেন আপনি। দিনুদা না থাকলে যে কি হত'
জানিনা পিসিকে খুশি করার জন্য নাকি তাও কিকরে মায়ের মুখ দিয়ে এই কথা বেরোয় তাই ভেবে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেলো। জানিনা এসব বড়দের ব্যাপার। সাথে সাথে পিসির উত্তর আসে,
'আরে নানা। যা করার সব রবি বাবুই করেছেন। আমি অরুণ কে বলব ওই লোকটার সাথে একটু সদ্ভাব. নিয়ে চলতে।'
এতো করে পাপু বোঝালো এতো কিছু বলল তাও। কিকরে এই কথা বলে। কিকরে বলতে পারে।
'দিদি ওর বিপদ কিন্তু কাটেনি। ওকে নাকি অফিসে অব্জারভেসন এ রেখেছে।'
'অরুনকে একটু সাবধানে থাকতে বল। ও তো রবিবাবুর কাছে একটু ভাল করে কাজ শিখতে পারে। রবিবাবু একটু কড়া হতে পারে কিন্তু লোকটা উপকারী।'
প্রতিটা কথা আমার গায়ে তীরের মতো করে এসে বিধছিল।
'দিদি একটা কথা বলতাম। যদি কিছু মনে না করেন'
পিসী শুধু মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
'দিদি বলছিলাম এই কোম্পানি তে ওর এমন অবস্থা হয়ে গেছে। বলছিলাম যে কোনভাবে যদি ওকে দিনুদার কোম্পানি তে ঢোকানো যেতো। যতই হোক দিনুদা এতো ওপরের পোস্ট এ রয়েছেন। '
বেশ সিরিয়াস ভাবে পিসি উত্তর দেয়,
'দেখ আমি যতটা জানি তোর দিনুদা খুব প্রফেশনাল। মনে হয়না ও রাজি হবে। তাও আমি কথা বলছি খুব ভাল হয় যদি তুই ও একবার কথা বলিস'
কথাটা শেষ করেই পিসী ফোন টা লাগিয়ে দেয়,
'অফিসে আছো?'
'আচ্ছা একটা কথা বলছি, অরুন কে কোনভাবে তোমার অফিসে ঢোকানো যায়না?'
'নাও মনির সাথে একটু কথা বলো'
'দিনুদা ওহ আপনি যা উপকার টা আমাদের করলেন। আসুন একদিন আপনাকে ভাল করে রান্না করে খাওয়াই। আমরা আপনার প্রতি চির কৃতজ্ঞ।'
'দিনুদা একটা কথা বলছিলাম। জানেন তো ওর অফিসে ওর খুব বাজে অবস্থা। আপনার আর ওর কাজটা তো অনেকটাই এক। আমি ভাবছিলাম ও যদি আপনার সাথে থাকে তাহলে কাজ ও শিখবে...'
'দেখ এই লাইনে নিজের লোকেদের সাথে প্রফেশনাল রিলেশন না রাখাই ভাল। নিজেদের লোক কে কাজ করানো খুব কঠিন। '
'আরে সে আপনি ওকে বকবেন শাসন করবেন দিয়ে একটু শিখিয়ে পড়িয়ে নেবেন'
দাউ দাউ করে আমার ঝাঁট টা জ্বলে গেলো।
ঠিক যা যা হচ্ছে এক এক করে পাপুকে মেসেজ করতে লাগলাম। ওর ওপর আমার এখনো বিস্বাস আছে। যতই হোক এই প্রবলেম এর সলিউসন টা ওই বার করেছে। অনেকটা তা কাজ ও করে গেছে। হয়ত আজ মায়ের মুড টা কালকের মতো নয়, আজ মুড টা অনেক ভাল তাই আমার এরম মনে হচ্ছে।
'আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়'
বলে ফোন টা কেটে দিলো পিসেমশাই।
ওদিকে মার মোবাইল টা টেবিলের ওপর পড়ে ছিল অনেক্ষন ধরে ওটা ভাইব্রেট করে যাচ্ছে। পিসী বোধ হয় বাথরুম গেল। তাই মা ফোন টা উঠিয়ে সম্ভবত কিছু মেসেজ দেখতে লাগলো। মায়ের মুখে খুব মিষ্টি একটা হাসি। টাইপ করে কিসব রিপ্লাই ও করল। আর আমি অপেক্ষায় কখন মেসেজ গুলো পড়তে পারবো। পিসিও চলে আসে ততক্ষণে।
'আরে যে জন্য আসা, তাই তো বলা হোল না'
মা চুপ করে পিসির দিকে তাকিয়ে থাকে।
'অরুনের এতো বড় একটা ফাড়া গেল, চল পুজো দিয়ে আসি'
পিসির মত ওতো নিষ্ঠাবতি না হলেও পুজো আচ্ছা মাও করে। জানি না বলতে পারবে না।
'দেখ তারকেস্বর বা তারাপীঠ তো যাওয়া সম্ভব না। অনেক দূর। হুগলির গুড়াপ এ এক জাগ্রত কালী মন্দির আছে। চল আজ বিকেলে জাই'
'তুই যদি রাজি থাকিস, আমি গাড়ী বলে দেবো'
মা শুধু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।
'আপনি কি চা খাবেন' বলে মা আবার রান্না ঘরে যায়। পেছন পেছন পিসিও। টেবিল থেকে আমি ফোন টা তুলে নি।
...................................................................................................................................................................
প্রথম মেসেজ টা দেখে পাপুর ওপর রাগটা অনেকটাই কেটে যায়।
'দেখো মণি তোমার ভালর জন্য বলছি। দিনুদার কোম্পানিতে ভুল করেও অরুণকে ঢুকিও না। নিজেই নিজের ফাঁদ পাতছ এতে'
কিন্তু ঝাঁট টা জ্বলে যায় মার রিপ্লাই টা দেখে।
'কিচ্ছু হবেনা। দিনুদার সাথে থাকলে ও বরং কাজ শিখবে। ওর উন্নতি হবে'
রাগে মাথাটা ভোঁ ভোঁ করে ঘোরাচ্ছিল।পাপুর মেসেজ,
'দেখ ভাই সবকিছু কেমন বিগড়ে যাচ্ছে। তুই তো দেখলি আমি চেস্তা করলাম'
আমি রিপ্লাই করলাম,
'সবচেয়ে খারাপ কি লাগলো জানিস, মা আর পিসি দুজনেই দুজনকে লুকিয়ে গেল'
আবার পাপুর রিপ্লাই,
'দেখ অমার মতে যাই হোক না কেন মাসি আমাকে পিসেমশাই ই ভাববে'
'তারচেয়ে বরং মাসির সাথে আমি নিজেকে পিসেমশাই ভেবেই কথা বলি। খুব বড় কোন বিপদ না হলে আমিও আর সাবধান করছি না'
আমি কোন উত্তর দিলাম না। কিই বা বলতাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই পিসী বেরিয়ে গেল। মার রান্নাও প্রায় শেষ। এই সময়টা মা সাধারণত বিছানায় শুয়ে থাকে আর মোবাইল ঘাটে। আর এখন তো মোবাইল টা নিয়ে কখন একটু ফ্রী টাইম পাবে সেই চিন্তাতেই ছিল হয়তো।
শোয়ার ঘরের জানালা টা দিয়ে আমি উঁকি মারি। বিছানার ওপর শুয়ে পা দুটো ভাঁজ করে মা টাইপ করে চলছে। মাঝে মাঝে আপন মনেই হেসে উঠছে।
আমি অপেক্ষায় থাকি। আদি অনন্ত কালের অপেক্ষা কখন মার মোবাইল টা হাতে পাবো। অবশেষে ঘণ্টা খানেক পর সেই সুযোগ আসে। মা যায় স্নান করতে। সোজা মোবাইল টা নিয়ে আমি উপরের ঘরে চলে যাই।
একের পর এক মেসেজ। এতো কম সময়ে এতো কথা বলল কি করে,
'মণি তুমি কি আমার ওপর রাগ করেছ?'
'আরে রাগ কেন করতে যাবো। আজ বরং সকাল থেকে আমার মুড টা খুব ভালো।'
'আসলে তোমার দিনুদার নামে এতো বাজে কথা বলে জাচ্ছি কাল থেকে। আসলে লোক টা খারাপ না। এই যা তোমার ওপর একটু নজর আছে। এবার তুমি যদি এতো সেক্সি হও সেটা তো অন্যের দোষ না'
'সেক্সি? (একটা রাগের ইমোজি)
'তোমার কি মনে হয় তুমি সেক্সি নয়?'
দেখলাম কথাটা ঘোরানোর জন্য মা বলল,
'আচ্ছা আমার মুড টা আজ এতো ভাল কেন তা তো জিজ্ঞেস করলেন না?'
'কেন কেন ?'
'আজ সকালে অরুণ বলল আমায় লং ড্রাইভ এ নিয়ে যাবে এই রবিবার। আর কোথায় যাবো তাও আগে থেকে ঠিক করা হবে না। জাস্ট গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে যাবো যেদিকে মন চায়। যেখানে স্টে করতে মন চাইবে থেকে যাবো। আরেকটা জিনিস আছে, আমি বহু বছর ড্রিঙ্ক করিনি। আমাদের একসাথে ড্রিঙ্ক করার ও প্ল্যান হয়েছে। '
সাথে সাথে পাপুর রিপ্লাই।
'আর যদি গলার কাঁটা হয়ে আমি চলে আসি'
'কোথায় জাচ্ছি সেটা আপনি জানলে তবে না আসবেন'
'আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলব?'
'হা বলো না। তোমার কথা শোনার জন্যই তো বসে অছি'
'আমাকে তুমি না তুই করে বলুন। তাতে বেশী অথেন্তিক লাগে'
আমার তলপেট টা কেমন চিন চিন করে ওঠে। লিঙ্গ টা আসতে আসতে ফুলে উঠতে থাকে।
পাপুর রিপ্লাই,
'অথেন্তিক মানে? তুমি কি আমায় গেস করছ। এই তুমি আমায় আবার দিনুদা ভাবছ না তো'
'(একটা হাসির ইমোজি) কিজানি।'
'আচ্ছা তুই করেই বলছি'
'যদি দিনুদা চলে যায় ওখানে কি করবি'
'(লজ্জার ইমোজি দিয়ে) খুব লজ্জা করবে। এখানে যে ড্রেস গুলো পড়ি সব ছেড়ে যেতে হবে। জিন্স টপ পড়ে বেরোবো। আর রুমে পড়ার জন্য লো কাট ফ্রক বা টপ এরম কিছু। আজ নাকি অরুণ আমার জন্য স্পেশ্যাল শপিং করে আনবে'
'আমি যদি দিনুদা কে বলে দি যে তুই আর অরুণ এইসব প্ল্যান করেছিস আর তার সাথে তোর ড্রেস এর বিবরণ। ওর ঠিক কি অবস্থা হবে তা তুই জানিস তো'
'কোন ব্যাপার না প্ল্যান টা অরুনের আমার না। সেরম কিছু হলে ওই ম্যানেজ করবে'
'যাকগে এসব ছাড়, একটা কথার উত্তর দিবি? দেখ সত্যি উত্তর দিবি কিন্তু এই আগে থেকে বলে রাখলাম। '
'আজ আমার মুড খুব ভাল। তাই কথা দিলাম সত্যি কথা বলব'
'ধর, তোরা বেড়াতে গেলি আর ঠিক সেদিনের মতো কোন ইনসিডেন্ট আবার হোল। মানে অরুণ বিপদে। তুই যদি দিনুদাকে সিডিউস করিস তো ও বিপদ থেকে বেরোবে। কি করবি?'
'দেখুন সেদিন আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম। ওই ঘটনা আর ঘটবে না কখনও। এছাড়া অরুণ আছে তো'
'যদি দিনুদা অরুনের সামনেই কিছু করে আর অরুণ বাধা দিতে না পারে তাহলে'
'নানা দিনুদার ওতো সাহস নেই (দিয়ে একটা হাসির ইমোজি)
'তাই নাকি। আর যদি পেরে যায় তাহলে কি দিবি বল'
'কি চান বলুন'
'আরে আমি কিই বা চাইবো। চাইবে তো দিনুদা'
'কি চাইবে?'
'সম্ভবত দ্বিতিয়র পর তৃতীয় সুযোগ'
'আরে আগে আমরা কোথায় অছি তা খুঁজে তো বার করুক'
.................…......................................................................................................................
বাবা দুপুরে খেতে বাড়িতে আসে।
'ভাল লাগছে না মণি। আমায় অবসেরভেশন এ রেখেছে। সামান্য কোন কাজে ভুল ত্রুটি করা যাবে না। খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে তারপর বেরোবো'
আমি জানি বাবার রেস্ট নেওয়া মানে হচ্ছে ডায়েরি লেখা। আসলে বাবার মনেও হাজারো ঘাত প্রতিঘাত চলছে। বাবা তাই নিজেকে শান্ত করতে ওই ডায়েরি লিখেই সমাধান খোঁজে।
মা শুধু বলে 'চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে'
বাবার খাওয়া হয়ে যেতেই বাবা যেই যাবে বারান্দায় ডায়েরি টার কাছে, অমনি ফোন টা বেজে ওঠে,
'মণি ফোন করেছিল দুপুরে. তোর অফিসে নাকি এখনো প্রবলেম আছে।'
সাথে সাথে বাবা জবাব দেয়,
'দম বন্ধ করা পরিবেশ দিনুদা। একটুও কোন ভুল করা যাবে না। এমন অবস্থা। নিজেও জানিনা কিকরে এই অবস্থা থেকে বেরোবো'
'দেখ এর তো একটাই উপায়। কাজের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দে। তাহলে আর এসব চিন্তা মাথায় আসবে না'
'সেটাই তো পারছি না দিনুদা'
'দেখ আমি তোর একটু হেল্প করে দিতে পারি'
বাবা প্রায় অসহায়ের মতো জিজ্ঞেস করে
'কি হেল্প দিনুদা'
'আমাদের কোম্পানি আর তোদের কোম্পানির কলাবরেসন এ একটা কাজ চলছে। আমি তার প্রজেক্ট ম্যানেজার। অনেক বড় প্রজেক্ট। প্রায় এক কোটির। আমি তোর নাম তোর কোম্পানি তে রেকমেন্ড করবো। তুই ও একটু কোম্পানি এর গতানুগতিক কাজের বাইরে বেরোতে পারবি। এভাবেই অনেকটা অবস্থা পাল্টাবে। '
বাবাকে ঐভাবে লাফিয়ে উঠতে দেখে ভেতরের ঘর থেকে মা চলে আসে আর পিসেমশাই যে হেল্প করছে এটা বুঝে মুচকি মুচকি হাসে।
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোন এর ওই প্রান্ত থেকে পিসেমশাই আর এই প্রান্ত থেকে বাবার কথা শুনতে থাকি।
'তবে আমি কিন্তু খুব প্রফেশনাল। আমার আন্ডার এ কাজ করলে তোকে ভুলে যেতে হবে যে তুই আমার শালা'
'অবশ্যই দিনুদা'
'আমি ফোন করলে বলবি অফিস থেকে ফোন। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক টা আজ থেকে প্রফেশনাল। আমি তোর বাড়িতে গেলেও তাই। মনে থাকবে তো?'
পিসেমশাই ফোন টা কেটে দিলো। বাবাও বসে গেলো ডাইরি লিখতে। আর মা আবার হাতে ফোন টা নিয়ে ভেতরে গেল।
...................................................................................................................................................................
বাবার ডায়েরি লেখা তখনও সম্পূর্ণ হয়নি। মা ফোন টা রেখে দিয়ে কোথাও একটা গেল। আমিও সেই সুযোগে ফোন টা তুলে নিলাম। আবার শুরু করলাম মেসেজ পড়া
'যাক গে দিনুদা হেল্প করে দিলেন। কোন একটা বড় প্রজেক্ট এ অরুণ কে ঢুকিয়ে দিলো'
'বাহ দারুণ তো। এর বদলে দিনুদা কেও কিছু দাও'
'একটা হাসির ইমোজি দিয়ে দিনুদা এর বদলে কি চান?'
'দেখো আমার মনে হয় ড্রিঙ্ক করলে মানে একটা লিমিট এর ওপর ড্রিঙ্ক করলে তুমি রাতে কি কি করলে তা আর সকালে মনে থাকেনা'
'বাকি তুমি বুদ্ধিমতী'
মা কোন রিপ্লাই করেনা।
ডায়েরি টা সস্থানে রেখে দিয়ে বাবা অফিসে চলে যায়। আমি গুটি গুটি পায়ে বারান্দায় গিয়ে ডায়েরি টা বার করি,
"আমার যে ঠিক কি হচ্ছে তা আমি নিজেও জানিনা। কাল কি বিশ্রী একটা স্বপ্ন দেখলাম। দিনুদা আমাদের হেল্প করেছে তা আমি জানি কিন্তু মণির ওই নগ্ন হয়ে যাওয়া দিনুদার সামনে। আমি কেন এরম স্বপ্ন দেখলাম। ঠিক করেছি এই রবিবার মনিকে নিয়ে বেরিয়ে যাবো। ওর ও একটু মনটা পাল্টাবে। কিন্তু যা বাজে চিন্তা আজ সকাল থেকে মাথায় ঘুরছে বারবার ভয় লাগছে। এরম কিছু বাস্তবে হবে না তো। আমি বসে একটা হোটেল এর রুম এ। সামনের দিকে তাকিয়ে ল্যাপটপ এ অফিসের কাজ করছি। পেছনে আমার স্বল্প পোশাক পরিহিতা স্ত্রী ও দুসচরিত্র জামাইবাবু। মাঝে মাঝেই মনির খিল্খিল করে হাসির শব্দ আসছে। অথচ আজকের রাত টা আমার ছিল। যে বোতল টা থেকে দামি বিদেশি হুইস্কি টা বার করে ওরা দুজন পান করছে সেটাও আসলে আমার ই আনা। আজ অনেক প্ল্যান ছিল। জানিনা দিনুদা কিকরে আমায় ট্রেস করে নিল। অমার ওপর অর্ডার আছে। প্রফেসনালিসম এর জন্য দিনুদাকে দিনুদা বলাও মানা। বলতে হবে স্যার। আর আমার স্যার আমায় অর্ডার করেছে আজ সারারাত এই একিভাবে পেছনের দিকে না তাকিয়ে কাজ টা কমপ্লিট করতে। "
আমাদের গাড়িটা বাইপাস ধরে সোজা এগিয়ে চলছে। দুধারে পাতলা গাছের জঙ্গল। আমরা সেই কালী মন্দিরের খুব কাছাকাছি পউছে গেছি। অনেক্ষন ধরে দেখছি একটা গাড়ী কেমন যেন আমাদের পিছু নিয়েছে। মানে আমাদের গাড়িটা স্লো হলে ওরাও স্লো হচ্ছে, আমাদের টা জোরে হলে ওদের তাও জোরে হচ্ছে। একবার পেছন ঘুরে দেখলাম। গাড়িতে বেশ কয়েকজন চেহারাবান লোক। আমার বেশ ভয় ভয় ই করছিল। কারণ প্রায় সুর্যাস্তের সময়। কিছুক্ষন পরে অন্ধকার নামবে। এই বলতে বলতে আমাদের গাড়িটা এসে থামল একটা বড় মন্দিরের সামনে। মা আর পিসী লক্ষ্য করেনি আমি করেছি। ওদের গাড়িটাও বেশ কিছুটা দূরে থামল। ওরা নিজেদের মধ্যে কিসব আলচনা করছে।
গাড়ির লুকিং গ্লাসে ওদের লক্ষ্য করার জন্যই আমি আর মন্দির গেলাম না। গাড়িতেই বসে থাকলাম। মা আর পিসী গেল মন্দির পুজো দিতে।
ভেবেছিলাম ফিরে যাওয়ার সময় পাপুর মন খারাপ হয়ে যাবে। কিন্তু দেখলাম উল্টো টা। ও যেন একটু দূরে যেতে পেরে হাফ ছেড়ে বাচছে। যা খুব ই অদ্ভুত। আমি আর বাবা ওকে শিয়ালদায় ট্রেনে তুলে বাড়ি ফিরে এলাম। ফেরার সময়ে শুধু একটাই কথা বলল,
'টেলিগ্রাম আর হ্যাং আউট চেক করতে থাকিস'
কাল খোলসা করে বলেনি, শুধু এটা বলেছিল যখন রবি বাবু পিসির শরীর টা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে ব্যস্ত। তখন নাকি ও রবি বাবুর মোবাইল চেক করেছে। রবি বাবু অনেকগুলো এডাল্ট সাইটের মেম্বার। সেখানে প্রায় ই পোস্ট করে,
'মা মেয়ে/ দুই জা/দুই বোন/ জা ননদ কে একসাথে সুখ দিতে চাই। কেউ যদি ইচ্ছুক হয় তো নিচে আমার হ্যাং আউট আর টেলিগ্রাম আইডি রইল'
বাড়ি ফিরেই তাই আগে মোবাইল চেক করি। কাল রাতে পাপু আমদের দুজনের জয়েন্ট দুটো অ্যাকাউন্ট বানিয়েছিল। দেখি পাপু অলরেডি টেলিগ্রাম এ মেসেজ করে দিয়েছে।
'হাই একটা সাইট থেকে আপনার আইডি টা পেয়েছি। আমি চাই আমার মা আর পিসিকে আপনার মতো কোন অভিজ্ঞ পুরুষ এর সাথে শেয়ার করতে। '
কিন্তু এখনো কোন রিপ্লাই আসেনি। এতক্ষন যা চলছিল তা ঠিক আছে। সে নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তা করিনি। ও গলা পাল্টে মা আর পিসির সাথে কথা বলছে, ঠিক আছে। কিন্তু রবি বাবুর মতো একজনের সাথেও এরম মজা করার কোন মানে হয়না। ধরা পড়লে জানিনা কি হবে। বেশ কিছুক্ষন পর রিপ্লাই আসে।
'তোমার মার নাম কি?'
সাথে সাথে পাপুর রিপ্লাই,
'ভাল নামটা বলব না। কারণ আমি চাই আপনি আমার মাকে ডাক নামে ডাকুন'
'আমার খুব উত্তেজনা বোধ হবে যখন আপনি 'মণি' বলে আমার মাকে ডাকবেন'
সাথে সাথে রবি বাবুর রিপ্লাই,
'তোমার মায়ের নাম মণি?'
সাথে সাথে পাপু হ্যা বলে রিপ্লাই করে।
'আর পিসির নাম?'
সাথে সাথে পাপুর উত্তর।
'পিসিকে বরং আপনিই একটা নাম দিয়ে দিন'
উত্তর আসে 'মমতা'। কিছুক্ষন চুপ চাপ আবার রবি বাবুর মেসেজ আসে,
'একটা কথা বলব? যদি কিছু মনে না করো'
পাপু কোন রিপ্লাই দেওয়ার আগেই রবি বাবুর রিপ্লাই,
'সত্যি বলতে আমার ফ্যান্টাসি যে দুজন মহিলাকে নিয়ে তাঁদের নাম মণি আর মমতা। মণি আমার অফিসের একজন স্টাফ এর ওয়াইফ। অনেক দিন ধরে অরুনের দিদি আর বৌ এর ওপর আমার লোভ'
পাপু কোন রিপ্লাই করেনা।
উনিও আর অনলাইন থাকেন না।
...................................................…..........................................................................................................
এতক্ষনে বুঝি পাপু এতো খুশি কেন। আমাদের যত সিক্রেট তা তো ওর জানা হয়ে গেছে। আমার থেকে দূরে থাকলে নিজের মর্জি মতো কাজ করতে পারবে। আমি পাশে থাকলে অসুবিধে। শিয়ালদা থেকে কল্যাণী যেতে দেড় ঘণ্টা। অর্থাৎ পাপুর এখন নামার সময় হয়ে গেছে। পাপুর মেসেজ।
'তুই একদম চিন্তা করিস না। কিচ্ছু হবে না। তবে জানিস তো কাল পিসিকে এমনভাবে বলেছি যে পিসী রবি বাবুর থেকে শত হাত দূরে থাকবে। আমি বাড়ি পউছে একটু ফাঁকা পেলে পিসিকে ফোন করব ওই নাম্বার থেকে'
কীই বা বলি। এমন ফিল হচ্ছিল যে কোনকিছুতেই আমার কোন আধিকার নেই। পাপু ঠিক যেভাবে চালনা করছে আমিও ঠিক সেভাবেই চলছি।
বেশ কিছুক্ষন পর পাপুর ফোন। ফোন টা রিসিভ করতেই ও বলল,
'এই শোন একদম কোন আওয়াজ করবি না। তোকে কনফারেন্স এ নিয়ে পিসিকে কল করব'
যেমন বলা তেমন কাজ। কিন্তু পিসী ফোন টা ধরেনা। আমি হাফ ছেড়ে বাচি। পাপু বলে ওঠে,
'এইরে পিসী মনে হয় একটু বেশীই ভয় পেয়ে গেছে'
ওর কথা শেষ হতে না হতেই পিসির ফোন। আমিও লাইনে থাকি।
'আমি রান্নাঘরে ছিলাম। ফোন টা এখানে ছিল'
সঙ্গে সঙ্গে গলাটা পাল্টে পাপু বলে ওঠে,
'কোন ব্যাপার নয়। দেখো মমতা একটা ব্যাপারে তোমায় একটু সাবধান করে দেওয়ার জন্য ফোন করলাম। রবি বাবুকে আবার চটিয়েও দিও না। এতে অরুনের বিপদ বাড়বে বই কমবে না। চেষ্টা করো ম্যানেজ করে চলার। আর নিজেও সাবধানে থেকো'
ফোন টা কেটে দেয় পাপু। আমি ঠিক বুঝিনা হঠাৎ ও এটা কেন করতে গেল। তাই পাপুকে ফোন করলাম।
'তুই হঠাৎ এই কথাটা পিসিকে কেন বললি?'
কিছুক্ষন চুপচাপ থেকে ও রিপ্লাই দেয়
'দেখ এটা তো বুঝিস যে রবি বাবু আর পিসেমশাই দুজনেই চাইবে যে তোর বাবা বিপদের মধ্যে থাকুক। তাই এতটাও ভয় দেখিয়ে দেওয়া ঠিক না'
বুঝলাম ওর কথায় যুক্তি আছে।
মিনিট দুই তিন ছাড়া টেলিগ্রাম এ ঢুকছি আবার বেরচ্ছি। অন্য কোন উপায় ও নেই। পাপু আমায় জানিয়ে সবসময় চ্যাট করবে তা সম্ভব না। বেশ কিছুক্ষন পর দেখলাম রবি বাবুর মেসেজ
'তুমিই বলো তোমার ফ্যান্টাসির কথা। আমি দেখি পারি নাকি তা ফুলফিল করতে। '
সাথে সাথে পাপুর উত্তর,
'আমরা 5 জন একটা লং ড্রাইভে গেছি। সামনে ড্রাইভার এর পাশে আমি আর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আর পেছনে আপনি মানে আমার বাবার বস পিসী ও মা। আপনি বসেছেন মাঝখানে। আপনার একদিকে মমতা আর একদিকে মণি। ওদের পড়নে শুধু সায়া আর ব্লাউজ। দুজনের ই শাড়ি নেই '
'বাপরে বাপ। তুমি তো লেভেল এর কল্পনা করতে পারো। সত্যিই ইরেকশন্ ফিল করছি। সত্যি বলছি এতো মজা আগে কেউ এরম রোল প্লে বা সেক্স চ্যাট এ দেয়নি। কিন্তু খুব সরি আমায় এক্ষুনি অফিস এ ঢুকতে হবে। ফ্রি হলে আবার কথা বলছি'
এবার আর পাপুকে ফোন করলাম না। কি দরকার ও ওর নিজের মতোই চলবে।
................…...............................................................................................................................................
এতক্ষন ধরে একের পর এক যা চলছিল তাতেও শেষ নেই। তার চেয়েও বড় ঘটনা অপেক্ষা করেছিল। তা হোল পিসী ফোন করে মাকে। আমি তখন মার পাশেই ছিলাম। তাই সবকিছু শুনতে পেলাম।
'মণি তোর সাথে আমার জরুরি কথা আছে। তুই কি বাড়িতে আছিস আমি আসব তাহলে'
মাও হয়ত পিসির ই অপেক্ষায় ছিল।
আমার খুব ভয় করে। যদি মা আর পিসী দুজনে দুজনকে সব কথা খুলে বলে। যদি আমায় আর পাপুকে সন্দেহ করে। পাপুর গলাটা পিসী ধরে ফেলেনি তো। এতটাও কি ভাববে। তবে আজ সকাল থেকে মার মুড টা খুব ভালো ছিল। মনে হয় কালকের ঘটনা মা আর কিছু মনে রাখতে চায় না। কিন্তু পিসী আবার খুচিয়ে ঝামেলা করবে না তো। এইসব হাজারো প্রশ্ন মাথায় কিলবিল করছিল আর নার্ভাস লাগছিল।
কথা হয়ে যাওয়ার পর মা আবার রান্না ঘরে চলে যায়। মার মোবাইল টা ওখানেই পড়ে থাকে। আমি চুপি চুপি তুলে নিয়ে হোয়াটস অ্যাপ টা খুলি। পাপু আমায় জানায় নি, ও মাকেও মেসেজ করেছে। পাপুর ওপর খুব রাগ হচ্ছিল কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। আমি চ্যাট বক্স থেকে মেসেজ গুলো পড়তে লাগলাম।
'হাই কাল তো ঠিক করে কথাই হলো না। একটা কথা জিজ্ঞেস করব কিছু মনে করবে না তো?'
মা রিপ্লাই করেছে,
'হ্যা বলুন'
'দিনুদার সামনে যখন তুমি ওরম নগ্ন হয়ে নিজের শরীর টা দেখালে কাজ হাসিল করার জন্য তোমার মধ্যে কোন উত্তেজনা হয়নি। মানে মেয়েদের ও তো উত্তেজনা হয়। দেখো প্লিস এটা বলো না যে এরম কিছুই হয়নি। আমি সব ই জানি। সব ই'
মায়ের রিপ্লাই দেখি,
'আপনি সেই একই কথা বলে যাচ্ছেন। এরম কিছু হয়নি। এছাড়া আমার ননদ খুব সুন্দরী'
'আমি জানি মমতা খুব সুন্দরী। কিন্তু তোমার মধ্যে একটা ঝাঁজ আছে। যা ওর নেই'
'দেখুন আমি একজন মহিলা। কোন লঙ্কা নয়। দয়া করে আমায় বিরক্ত করা বন্ধ করুন'
'তুমি বিরক্ত বলছ? কাল বললাম না আমি তোমার ওয়েল উইসার। দেখো তোমায় যে কারণে মেসেজ করা। তা হোল একটু সাবধানে থেকো। একবার দিনুদার সামনে নগ্ন হয়েছ। ও কিন্তু দ্বিতিয় বার একই জিনিস এর পুনরাবৃত্তি চাইবে। সাবধানে থেকো'
'দেখুন আমাকে যেকোনো বিপদে রক্ষা করার জন্য আমার হাসব্যান্ড রয়েছে। আপনার চিন্তা না করলেও চলবে'
'আর যদি ওই একই ঘটনা তোমার স্বামীর চোখের সামনে ঘটে?'
বেশ কিছুক্ষন পর দেখলাম মা রিপ্লাই করেছে।
'এরম হোতেই পারেনা'
পাপু আর কোন মেসেজ করেনি। পাপুর ওপর যা রাগ হওয়ার তা তো হয়েইছে। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় কতগুলো জিনিস ভাবলাম।
মা কি সত্যিই ভাবছে যে পিসেমশাই অন্য নাম্বার থেকে মেসেজ বা কল করছে। এটা আসলে পিসেমশাই এর কাজ? তাহলে কি মা পিসেমশাই কে এটা বোঝাতে চাইল যে সেদিন আমি অসহায় ছিলাম সাথে হাসব্যান্ড ছিল না তাই এরম হয়েছে। বাবা থাকলে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। মানে মা কি পিসেমশাইকে চ্যালেঞ্জ করল যে একই ঘটনা আপনি অরুনের চোখের সামনে ঘটিয়ে দেখান। এইসব ই হাবিজাবি ভাবছি এমন সময় পিসি ভেতরে ঢুকল। আমি ওঁৎ পেতে থাকলাম মা আর পিসির ঠিক কি কি কথা হচ্ছে তা শোনার জন্য।
............................................................................................................................................................
'যাক অরুনের সব ঝামেলা মিটল অবশেষে। এতো চিন্তায় ছিলাম না কি বলব'
সাথে সাথে মার উত্তর,
'নানা দিদি এইসব কিছুই দিনুদার জন্য। কাল ই মাকে বলছিলাম কপাল করে জামাই পেয়েছেন আপনি। দিনুদা না থাকলে যে কি হত'
জানিনা পিসিকে খুশি করার জন্য নাকি তাও কিকরে মায়ের মুখ দিয়ে এই কথা বেরোয় তাই ভেবে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেলো। জানিনা এসব বড়দের ব্যাপার। সাথে সাথে পিসির উত্তর আসে,
'আরে নানা। যা করার সব রবি বাবুই করেছেন। আমি অরুণ কে বলব ওই লোকটার সাথে একটু সদ্ভাব. নিয়ে চলতে।'
এতো করে পাপু বোঝালো এতো কিছু বলল তাও। কিকরে এই কথা বলে। কিকরে বলতে পারে।
'দিদি ওর বিপদ কিন্তু কাটেনি। ওকে নাকি অফিসে অব্জারভেসন এ রেখেছে।'
'অরুনকে একটু সাবধানে থাকতে বল। ও তো রবিবাবুর কাছে একটু ভাল করে কাজ শিখতে পারে। রবিবাবু একটু কড়া হতে পারে কিন্তু লোকটা উপকারী।'
প্রতিটা কথা আমার গায়ে তীরের মতো করে এসে বিধছিল।
'দিদি একটা কথা বলতাম। যদি কিছু মনে না করেন'
পিসী শুধু মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
'দিদি বলছিলাম এই কোম্পানি তে ওর এমন অবস্থা হয়ে গেছে। বলছিলাম যে কোনভাবে যদি ওকে দিনুদার কোম্পানি তে ঢোকানো যেতো। যতই হোক দিনুদা এতো ওপরের পোস্ট এ রয়েছেন। '
বেশ সিরিয়াস ভাবে পিসি উত্তর দেয়,
'দেখ আমি যতটা জানি তোর দিনুদা খুব প্রফেশনাল। মনে হয়না ও রাজি হবে। তাও আমি কথা বলছি খুব ভাল হয় যদি তুই ও একবার কথা বলিস'
কথাটা শেষ করেই পিসী ফোন টা লাগিয়ে দেয়,
'অফিসে আছো?'
'আচ্ছা একটা কথা বলছি, অরুন কে কোনভাবে তোমার অফিসে ঢোকানো যায়না?'
'নাও মনির সাথে একটু কথা বলো'
'দিনুদা ওহ আপনি যা উপকার টা আমাদের করলেন। আসুন একদিন আপনাকে ভাল করে রান্না করে খাওয়াই। আমরা আপনার প্রতি চির কৃতজ্ঞ।'
'দিনুদা একটা কথা বলছিলাম। জানেন তো ওর অফিসে ওর খুব বাজে অবস্থা। আপনার আর ওর কাজটা তো অনেকটাই এক। আমি ভাবছিলাম ও যদি আপনার সাথে থাকে তাহলে কাজ ও শিখবে...'
'দেখ এই লাইনে নিজের লোকেদের সাথে প্রফেশনাল রিলেশন না রাখাই ভাল। নিজেদের লোক কে কাজ করানো খুব কঠিন। '
'আরে সে আপনি ওকে বকবেন শাসন করবেন দিয়ে একটু শিখিয়ে পড়িয়ে নেবেন'
দাউ দাউ করে আমার ঝাঁট টা জ্বলে গেলো।
ঠিক যা যা হচ্ছে এক এক করে পাপুকে মেসেজ করতে লাগলাম। ওর ওপর আমার এখনো বিস্বাস আছে। যতই হোক এই প্রবলেম এর সলিউসন টা ওই বার করেছে। অনেকটা তা কাজ ও করে গেছে। হয়ত আজ মায়ের মুড টা কালকের মতো নয়, আজ মুড টা অনেক ভাল তাই আমার এরম মনে হচ্ছে।
'আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়'
বলে ফোন টা কেটে দিলো পিসেমশাই।
ওদিকে মার মোবাইল টা টেবিলের ওপর পড়ে ছিল অনেক্ষন ধরে ওটা ভাইব্রেট করে যাচ্ছে। পিসী বোধ হয় বাথরুম গেল। তাই মা ফোন টা উঠিয়ে সম্ভবত কিছু মেসেজ দেখতে লাগলো। মায়ের মুখে খুব মিষ্টি একটা হাসি। টাইপ করে কিসব রিপ্লাই ও করল। আর আমি অপেক্ষায় কখন মেসেজ গুলো পড়তে পারবো। পিসিও চলে আসে ততক্ষণে।
'আরে যে জন্য আসা, তাই তো বলা হোল না'
মা চুপ করে পিসির দিকে তাকিয়ে থাকে।
'অরুনের এতো বড় একটা ফাড়া গেল, চল পুজো দিয়ে আসি'
পিসির মত ওতো নিষ্ঠাবতি না হলেও পুজো আচ্ছা মাও করে। জানি না বলতে পারবে না।
'দেখ তারকেস্বর বা তারাপীঠ তো যাওয়া সম্ভব না। অনেক দূর। হুগলির গুড়াপ এ এক জাগ্রত কালী মন্দির আছে। চল আজ বিকেলে জাই'
'তুই যদি রাজি থাকিস, আমি গাড়ী বলে দেবো'
মা শুধু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।
'আপনি কি চা খাবেন' বলে মা আবার রান্না ঘরে যায়। পেছন পেছন পিসিও। টেবিল থেকে আমি ফোন টা তুলে নি।
...................................................................................................................................................................
প্রথম মেসেজ টা দেখে পাপুর ওপর রাগটা অনেকটাই কেটে যায়।
'দেখো মণি তোমার ভালর জন্য বলছি। দিনুদার কোম্পানিতে ভুল করেও অরুণকে ঢুকিও না। নিজেই নিজের ফাঁদ পাতছ এতে'
কিন্তু ঝাঁট টা জ্বলে যায় মার রিপ্লাই টা দেখে।
'কিচ্ছু হবেনা। দিনুদার সাথে থাকলে ও বরং কাজ শিখবে। ওর উন্নতি হবে'
রাগে মাথাটা ভোঁ ভোঁ করে ঘোরাচ্ছিল।পাপুর মেসেজ,
'দেখ ভাই সবকিছু কেমন বিগড়ে যাচ্ছে। তুই তো দেখলি আমি চেস্তা করলাম'
আমি রিপ্লাই করলাম,
'সবচেয়ে খারাপ কি লাগলো জানিস, মা আর পিসি দুজনেই দুজনকে লুকিয়ে গেল'
আবার পাপুর রিপ্লাই,
'দেখ অমার মতে যাই হোক না কেন মাসি আমাকে পিসেমশাই ই ভাববে'
'তারচেয়ে বরং মাসির সাথে আমি নিজেকে পিসেমশাই ভেবেই কথা বলি। খুব বড় কোন বিপদ না হলে আমিও আর সাবধান করছি না'
আমি কোন উত্তর দিলাম না। কিই বা বলতাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই পিসী বেরিয়ে গেল। মার রান্নাও প্রায় শেষ। এই সময়টা মা সাধারণত বিছানায় শুয়ে থাকে আর মোবাইল ঘাটে। আর এখন তো মোবাইল টা নিয়ে কখন একটু ফ্রী টাইম পাবে সেই চিন্তাতেই ছিল হয়তো।
শোয়ার ঘরের জানালা টা দিয়ে আমি উঁকি মারি। বিছানার ওপর শুয়ে পা দুটো ভাঁজ করে মা টাইপ করে চলছে। মাঝে মাঝে আপন মনেই হেসে উঠছে।
আমি অপেক্ষায় থাকি। আদি অনন্ত কালের অপেক্ষা কখন মার মোবাইল টা হাতে পাবো। অবশেষে ঘণ্টা খানেক পর সেই সুযোগ আসে। মা যায় স্নান করতে। সোজা মোবাইল টা নিয়ে আমি উপরের ঘরে চলে যাই।
একের পর এক মেসেজ। এতো কম সময়ে এতো কথা বলল কি করে,
'মণি তুমি কি আমার ওপর রাগ করেছ?'
'আরে রাগ কেন করতে যাবো। আজ বরং সকাল থেকে আমার মুড টা খুব ভালো।'
'আসলে তোমার দিনুদার নামে এতো বাজে কথা বলে জাচ্ছি কাল থেকে। আসলে লোক টা খারাপ না। এই যা তোমার ওপর একটু নজর আছে। এবার তুমি যদি এতো সেক্সি হও সেটা তো অন্যের দোষ না'
'সেক্সি? (একটা রাগের ইমোজি)
'তোমার কি মনে হয় তুমি সেক্সি নয়?'
দেখলাম কথাটা ঘোরানোর জন্য মা বলল,
'আচ্ছা আমার মুড টা আজ এতো ভাল কেন তা তো জিজ্ঞেস করলেন না?'
'কেন কেন ?'
'আজ সকালে অরুণ বলল আমায় লং ড্রাইভ এ নিয়ে যাবে এই রবিবার। আর কোথায় যাবো তাও আগে থেকে ঠিক করা হবে না। জাস্ট গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে যাবো যেদিকে মন চায়। যেখানে স্টে করতে মন চাইবে থেকে যাবো। আরেকটা জিনিস আছে, আমি বহু বছর ড্রিঙ্ক করিনি। আমাদের একসাথে ড্রিঙ্ক করার ও প্ল্যান হয়েছে। '
সাথে সাথে পাপুর রিপ্লাই।
'আর যদি গলার কাঁটা হয়ে আমি চলে আসি'
'কোথায় জাচ্ছি সেটা আপনি জানলে তবে না আসবেন'
'আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলব?'
'হা বলো না। তোমার কথা শোনার জন্যই তো বসে অছি'
'আমাকে তুমি না তুই করে বলুন। তাতে বেশী অথেন্তিক লাগে'
আমার তলপেট টা কেমন চিন চিন করে ওঠে। লিঙ্গ টা আসতে আসতে ফুলে উঠতে থাকে।
পাপুর রিপ্লাই,
'অথেন্তিক মানে? তুমি কি আমায় গেস করছ। এই তুমি আমায় আবার দিনুদা ভাবছ না তো'
'(একটা হাসির ইমোজি) কিজানি।'
'আচ্ছা তুই করেই বলছি'
'যদি দিনুদা চলে যায় ওখানে কি করবি'
'(লজ্জার ইমোজি দিয়ে) খুব লজ্জা করবে। এখানে যে ড্রেস গুলো পড়ি সব ছেড়ে যেতে হবে। জিন্স টপ পড়ে বেরোবো। আর রুমে পড়ার জন্য লো কাট ফ্রক বা টপ এরম কিছু। আজ নাকি অরুণ আমার জন্য স্পেশ্যাল শপিং করে আনবে'
'আমি যদি দিনুদা কে বলে দি যে তুই আর অরুণ এইসব প্ল্যান করেছিস আর তার সাথে তোর ড্রেস এর বিবরণ। ওর ঠিক কি অবস্থা হবে তা তুই জানিস তো'
'কোন ব্যাপার না প্ল্যান টা অরুনের আমার না। সেরম কিছু হলে ওই ম্যানেজ করবে'
'যাকগে এসব ছাড়, একটা কথার উত্তর দিবি? দেখ সত্যি উত্তর দিবি কিন্তু এই আগে থেকে বলে রাখলাম। '
'আজ আমার মুড খুব ভাল। তাই কথা দিলাম সত্যি কথা বলব'
'ধর, তোরা বেড়াতে গেলি আর ঠিক সেদিনের মতো কোন ইনসিডেন্ট আবার হোল। মানে অরুণ বিপদে। তুই যদি দিনুদাকে সিডিউস করিস তো ও বিপদ থেকে বেরোবে। কি করবি?'
'দেখুন সেদিন আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম। ওই ঘটনা আর ঘটবে না কখনও। এছাড়া অরুণ আছে তো'
'যদি দিনুদা অরুনের সামনেই কিছু করে আর অরুণ বাধা দিতে না পারে তাহলে'
'নানা দিনুদার ওতো সাহস নেই (দিয়ে একটা হাসির ইমোজি)
'তাই নাকি। আর যদি পেরে যায় তাহলে কি দিবি বল'
'কি চান বলুন'
'আরে আমি কিই বা চাইবো। চাইবে তো দিনুদা'
'কি চাইবে?'
'সম্ভবত দ্বিতিয়র পর তৃতীয় সুযোগ'
'আরে আগে আমরা কোথায় অছি তা খুঁজে তো বার করুক'
.................…......................................................................................................................
বাবা দুপুরে খেতে বাড়িতে আসে।
'ভাল লাগছে না মণি। আমায় অবসেরভেশন এ রেখেছে। সামান্য কোন কাজে ভুল ত্রুটি করা যাবে না। খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে তারপর বেরোবো'
আমি জানি বাবার রেস্ট নেওয়া মানে হচ্ছে ডায়েরি লেখা। আসলে বাবার মনেও হাজারো ঘাত প্রতিঘাত চলছে। বাবা তাই নিজেকে শান্ত করতে ওই ডায়েরি লিখেই সমাধান খোঁজে।
মা শুধু বলে 'চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে'
বাবার খাওয়া হয়ে যেতেই বাবা যেই যাবে বারান্দায় ডায়েরি টার কাছে, অমনি ফোন টা বেজে ওঠে,
'মণি ফোন করেছিল দুপুরে. তোর অফিসে নাকি এখনো প্রবলেম আছে।'
সাথে সাথে বাবা জবাব দেয়,
'দম বন্ধ করা পরিবেশ দিনুদা। একটুও কোন ভুল করা যাবে না। এমন অবস্থা। নিজেও জানিনা কিকরে এই অবস্থা থেকে বেরোবো'
'দেখ এর তো একটাই উপায়। কাজের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দে। তাহলে আর এসব চিন্তা মাথায় আসবে না'
'সেটাই তো পারছি না দিনুদা'
'দেখ আমি তোর একটু হেল্প করে দিতে পারি'
বাবা প্রায় অসহায়ের মতো জিজ্ঞেস করে
'কি হেল্প দিনুদা'
'আমাদের কোম্পানি আর তোদের কোম্পানির কলাবরেসন এ একটা কাজ চলছে। আমি তার প্রজেক্ট ম্যানেজার। অনেক বড় প্রজেক্ট। প্রায় এক কোটির। আমি তোর নাম তোর কোম্পানি তে রেকমেন্ড করবো। তুই ও একটু কোম্পানি এর গতানুগতিক কাজের বাইরে বেরোতে পারবি। এভাবেই অনেকটা অবস্থা পাল্টাবে। '
বাবাকে ঐভাবে লাফিয়ে উঠতে দেখে ভেতরের ঘর থেকে মা চলে আসে আর পিসেমশাই যে হেল্প করছে এটা বুঝে মুচকি মুচকি হাসে।
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোন এর ওই প্রান্ত থেকে পিসেমশাই আর এই প্রান্ত থেকে বাবার কথা শুনতে থাকি।
'তবে আমি কিন্তু খুব প্রফেশনাল। আমার আন্ডার এ কাজ করলে তোকে ভুলে যেতে হবে যে তুই আমার শালা'
'অবশ্যই দিনুদা'
'আমি ফোন করলে বলবি অফিস থেকে ফোন। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক টা আজ থেকে প্রফেশনাল। আমি তোর বাড়িতে গেলেও তাই। মনে থাকবে তো?'
পিসেমশাই ফোন টা কেটে দিলো। বাবাও বসে গেলো ডাইরি লিখতে। আর মা আবার হাতে ফোন টা নিয়ে ভেতরে গেল।
...................................................................................................................................................................
বাবার ডায়েরি লেখা তখনও সম্পূর্ণ হয়নি। মা ফোন টা রেখে দিয়ে কোথাও একটা গেল। আমিও সেই সুযোগে ফোন টা তুলে নিলাম। আবার শুরু করলাম মেসেজ পড়া
'যাক গে দিনুদা হেল্প করে দিলেন। কোন একটা বড় প্রজেক্ট এ অরুণ কে ঢুকিয়ে দিলো'
'বাহ দারুণ তো। এর বদলে দিনুদা কেও কিছু দাও'
'একটা হাসির ইমোজি দিয়ে দিনুদা এর বদলে কি চান?'
'দেখো আমার মনে হয় ড্রিঙ্ক করলে মানে একটা লিমিট এর ওপর ড্রিঙ্ক করলে তুমি রাতে কি কি করলে তা আর সকালে মনে থাকেনা'
'বাকি তুমি বুদ্ধিমতী'
মা কোন রিপ্লাই করেনা।
ডায়েরি টা সস্থানে রেখে দিয়ে বাবা অফিসে চলে যায়। আমি গুটি গুটি পায়ে বারান্দায় গিয়ে ডায়েরি টা বার করি,
"আমার যে ঠিক কি হচ্ছে তা আমি নিজেও জানিনা। কাল কি বিশ্রী একটা স্বপ্ন দেখলাম। দিনুদা আমাদের হেল্প করেছে তা আমি জানি কিন্তু মণির ওই নগ্ন হয়ে যাওয়া দিনুদার সামনে। আমি কেন এরম স্বপ্ন দেখলাম। ঠিক করেছি এই রবিবার মনিকে নিয়ে বেরিয়ে যাবো। ওর ও একটু মনটা পাল্টাবে। কিন্তু যা বাজে চিন্তা আজ সকাল থেকে মাথায় ঘুরছে বারবার ভয় লাগছে। এরম কিছু বাস্তবে হবে না তো। আমি বসে একটা হোটেল এর রুম এ। সামনের দিকে তাকিয়ে ল্যাপটপ এ অফিসের কাজ করছি। পেছনে আমার স্বল্প পোশাক পরিহিতা স্ত্রী ও দুসচরিত্র জামাইবাবু। মাঝে মাঝেই মনির খিল্খিল করে হাসির শব্দ আসছে। অথচ আজকের রাত টা আমার ছিল। যে বোতল টা থেকে দামি বিদেশি হুইস্কি টা বার করে ওরা দুজন পান করছে সেটাও আসলে আমার ই আনা। আজ অনেক প্ল্যান ছিল। জানিনা দিনুদা কিকরে আমায় ট্রেস করে নিল। অমার ওপর অর্ডার আছে। প্রফেসনালিসম এর জন্য দিনুদাকে দিনুদা বলাও মানা। বলতে হবে স্যার। আর আমার স্যার আমায় অর্ডার করেছে আজ সারারাত এই একিভাবে পেছনের দিকে না তাকিয়ে কাজ টা কমপ্লিট করতে। "
আমাদের গাড়িটা বাইপাস ধরে সোজা এগিয়ে চলছে। দুধারে পাতলা গাছের জঙ্গল। আমরা সেই কালী মন্দিরের খুব কাছাকাছি পউছে গেছি। অনেক্ষন ধরে দেখছি একটা গাড়ী কেমন যেন আমাদের পিছু নিয়েছে। মানে আমাদের গাড়িটা স্লো হলে ওরাও স্লো হচ্ছে, আমাদের টা জোরে হলে ওদের তাও জোরে হচ্ছে। একবার পেছন ঘুরে দেখলাম। গাড়িতে বেশ কয়েকজন চেহারাবান লোক। আমার বেশ ভয় ভয় ই করছিল। কারণ প্রায় সুর্যাস্তের সময়। কিছুক্ষন পরে অন্ধকার নামবে। এই বলতে বলতে আমাদের গাড়িটা এসে থামল একটা বড় মন্দিরের সামনে। মা আর পিসী লক্ষ্য করেনি আমি করেছি। ওদের গাড়িটাও বেশ কিছুটা দূরে থামল। ওরা নিজেদের মধ্যে কিসব আলচনা করছে।
গাড়ির লুকিং গ্লাসে ওদের লক্ষ্য করার জন্যই আমি আর মন্দির গেলাম না। গাড়িতেই বসে থাকলাম। মা আর পিসী গেল মন্দির পুজো দিতে।