05-11-2022, 09:24 AM
ঘড়িতে ১০টা পঞ্চাশ বাজে। আমি বোটানিক্যালের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আজকের রোদটা চমৎকার লাগছে। রোদ আছে ঠিকই কিন্তু সেই রোদ যেন উত্তাপহিন একেবারেই, শুধু আলো দিয়ে যাচ্ছে। চারপাশে প্রেমের সব রংবেরঙের জুটি ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভালোই লাগছিল তরুণ এই কাপলদের দেখতে। ওদের সবার চোখেই যেন আজ পরম প্রশান্তি, প্রিয় মানুষটি পাশে থাকার।
বার বার মোবাইল বের করে সময় দেখছি আমি। এটা বলা চলে আমার একটা বদ-অভ্যাস। আমি কারও জন্যে অপেক্ষা করতে পারিনা। দশ মিনিট হল আমি দাঁড়িয়ে আছি, এখন বাজে ১১টা। মাত্র ১০মিনিট সময় কেটে গিয়েছে তবুও মনে হচ্ছে বছরের পর বছর দাঁড়িয়ে আছি এখানে। শেষে ঠিক করলাম ফোন দিব শশীকে।
- হ্যালো?
- হ্যাঁ রওনক...
- তুমি কি আসছ?
- হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি পথেই... আর বইলোনা, শ্যামলীতে প্রচন্ড জ্যাম ছিল।
- এখন কোথায় তুমি?
- আমি চলে এসেছি... সনির এখানে
- ও আচ্ছা...
- তুমি কই?
- আমি দাঁড়িয়ে আছি গেটের সামনে...
- বাব্বাহ... অবশেষে এই তুচ্ছ জীবনটায় এমন কাউকে পেলাম যে আমার জন্য দাঁড়িয়ে আছে...
- তাড়াতাড়ি এসো...
- একদম বেরসিক! আসছি!
কেটে দিলাম লাইন। সনি থেকে আসতে বেশি সময় লাগবেনা। বাস নিয়েছে না রিক্সা কে জানে...! যাইহোক আমি পায়চারী করতে লাগলাম গেটের সামনে দিয়ে। কতক্ষণ কেটে গিয়েছে জানিনা তবে হঠাত একটা কালো ফোর্ডকে আসতে দেখলাম। গাড়িটা বেশ সুন্দর, আমার আবার গাড়ি সম্পর্কে কোন আইডিয়া নেই তাই মডেল টডেল বুঝলাম না। তবে গাড়িটা দেখে দামী মনে হচ্ছে। গাড়ীটার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। পেছনের ডান বা পাশের দরজাটা খুলে গেল হঠাত করে। বেরিয়ে এলো একটা মেয়ে, শশী?...! আমি নিশ্চিত ছিলাম না কেননা শশীর সাথে আমার দেখা আগে খুবই কম হয়েছে তাও ইন্ডাইরেক্টলি বাকীটা ফোন আর ফেসবুকেই। খুব সিম্পলি ড্রেস-আপ করা একটা মেয়ে। চমৎকার ভাবে ফিট হয়ে যাওয়া সালোয়ার-কামিজ তবে কামিজের জামার গলাটা কিছুটা বড়। আর বড় হবার কারণে মেয়েটার বুক বরাবর একটা গভীর লাইন যেন চলে গিয়েছে জামার তলদেশে...। জামাটার হাতাটা না লম্বা না খাটো, এগুলোকে কি বলে আমার জানা নেই। লাল রং-এর অসাধারণ প্রিন্টে সাধারণ সেই জামাটাও মনে হচ্ছে অসাধারণ কোন রাজকন্যার স্পেশালি অর্ডার্ড ড্রেস। চমৎকার গঠন মেয়েটার। বয়সের সাথে মানানসই বুক, পাতলা কোমর আর ধীরে ধীরে প্রশস্ত হয়ে ওঠা মাজা। চুলটা টেনে পেছন দিকে বেঁধে রেখেছে মেয়েটা, একটা খোপা হবে সম্ভবত। এখনও পেছনটা দেখছি না। ঠোঁটে লিপস্টিক নিয়েছে কিনা বুঝতে পারছি না তবে মেয়েটার ঠোঁট গোলাপি। আমাদের দেশে বেশিরভাগ মেয়ের আবার ঠোঁট কিছুটা কালচে হয়, কি যেন হয়ত গোলাপি রং-ই মেখেছে। কেউ যদি আমাকে মেয়েটার চেহারা দেখে ১০ এর মধ্যে মার্কিং করতে বলে তবে আমি একে ৭ দিব। আর ৭ কোন অংশেই খারাপ নয়। মেয়েটা গাড়ি থেকে নেমেই সোজা আমার দিকে হেটে আসতে শুরু করল মেয়েটা। আমি মেয়েটাকে তখনো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি। আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
- বাহ, আসলেইতো... তুমি দেখি আগের চাইতে সুন্দর হয়ে গেছে!
- তুমি শশী?
- হায় হায়! এ আমি কার সাথে দেখা করতে এলাম!! আমাকে দেখি চেনেই না...
- না চিনব না কেন, কিন্তু তোমাকে আজকে স্বাভাবিকের চাইতেও বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে।
- বাব্বাহ... মিঃ রওনক দেখি ইদানীং কথাও বলতে শিখে গিয়েছে!
- কেন এমন বলছ, কমপ্লিমেন্টতো সবাই দিতে পারে তাইনা?
- আচ্ছা হইছে হইছে, চলো। বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকবা নাকি?
আমি দুটা টিকিট কিনলাম, কেনার সময় আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল শশী। কাউন্টারের লোকটির হাত থেকে টিকিট নিয়ে টাকা ফেরত দিতে গিয়ে দেখি লোকটা খুব বাজে ভাবে শশীর দিকে তাকিয়ে আছে। খুব রাগ হল হঠাত করে, রাগ হবার কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা। লোকটা ওর শরীরের দিকে বাজে ভাবে তাকিয়ে আছে এটা দেখে রাগ হচ্ছে কেন আমার? কিছুক্ষণ আগে আমিওতো ওকে কিছুটা সময় খুঁটিয়ে দেখেছি, তবে হ্যা আমার মনে কোন বাজে চিন্তার জন্ম নেয়নি সে কারণে অবশ্যই। তবে তাকিয়েতো ছিলাম। এটা মনে হবার পর ভাবলাম তাহলে কি আমি যখন ওকে দেখছিলাম তখন আমাকেও এই লোকটার মত হারামি টাইপ দেখাচ্ছিল? আমি হালকা গলা খেকর দিলাম, লোকটা আমার দিকে ফিরে চাইল, অনেকটাই অনিচ্ছাসত্ত্বে। মিচকি হেসে বলল 'ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড টা মেলা সুন্দর আছে...'!
মানুষের রাগ কি এমনিই বাড়ে? আমারতো মনে হচ্ছে ঐ ব্যাটার দৃষ্টির থেকে কথা আর হাসি আরও বেশি জঘন্য এবং বিরক্তিকর। আমার রাগ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কোয়ান্টাম মেথডের একটা কথা মনে পরল, 'রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন..'। তবে সে মুহুর্তে আমার পক্ষে রাগ কমানো সম্ভব ছিলনা, পাছে ঐ বেটাকে কি না বলে ফেলি পরে গার্ডেনের মধ্যে ক্ষতি করতে পারবে তাই সরে আসলাম কাউন্টার থেকে, মেইন গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়লাম শশীকে নিয়ে।
------------------------------------
বার বার মোবাইল বের করে সময় দেখছি আমি। এটা বলা চলে আমার একটা বদ-অভ্যাস। আমি কারও জন্যে অপেক্ষা করতে পারিনা। দশ মিনিট হল আমি দাঁড়িয়ে আছি, এখন বাজে ১১টা। মাত্র ১০মিনিট সময় কেটে গিয়েছে তবুও মনে হচ্ছে বছরের পর বছর দাঁড়িয়ে আছি এখানে। শেষে ঠিক করলাম ফোন দিব শশীকে।
- হ্যালো?
- হ্যাঁ রওনক...
- তুমি কি আসছ?
- হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি পথেই... আর বইলোনা, শ্যামলীতে প্রচন্ড জ্যাম ছিল।
- এখন কোথায় তুমি?
- আমি চলে এসেছি... সনির এখানে
- ও আচ্ছা...
- তুমি কই?
- আমি দাঁড়িয়ে আছি গেটের সামনে...
- বাব্বাহ... অবশেষে এই তুচ্ছ জীবনটায় এমন কাউকে পেলাম যে আমার জন্য দাঁড়িয়ে আছে...
- তাড়াতাড়ি এসো...
- একদম বেরসিক! আসছি!
কেটে দিলাম লাইন। সনি থেকে আসতে বেশি সময় লাগবেনা। বাস নিয়েছে না রিক্সা কে জানে...! যাইহোক আমি পায়চারী করতে লাগলাম গেটের সামনে দিয়ে। কতক্ষণ কেটে গিয়েছে জানিনা তবে হঠাত একটা কালো ফোর্ডকে আসতে দেখলাম। গাড়িটা বেশ সুন্দর, আমার আবার গাড়ি সম্পর্কে কোন আইডিয়া নেই তাই মডেল টডেল বুঝলাম না। তবে গাড়িটা দেখে দামী মনে হচ্ছে। গাড়ীটার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। পেছনের ডান বা পাশের দরজাটা খুলে গেল হঠাত করে। বেরিয়ে এলো একটা মেয়ে, শশী?...! আমি নিশ্চিত ছিলাম না কেননা শশীর সাথে আমার দেখা আগে খুবই কম হয়েছে তাও ইন্ডাইরেক্টলি বাকীটা ফোন আর ফেসবুকেই। খুব সিম্পলি ড্রেস-আপ করা একটা মেয়ে। চমৎকার ভাবে ফিট হয়ে যাওয়া সালোয়ার-কামিজ তবে কামিজের জামার গলাটা কিছুটা বড়। আর বড় হবার কারণে মেয়েটার বুক বরাবর একটা গভীর লাইন যেন চলে গিয়েছে জামার তলদেশে...। জামাটার হাতাটা না লম্বা না খাটো, এগুলোকে কি বলে আমার জানা নেই। লাল রং-এর অসাধারণ প্রিন্টে সাধারণ সেই জামাটাও মনে হচ্ছে অসাধারণ কোন রাজকন্যার স্পেশালি অর্ডার্ড ড্রেস। চমৎকার গঠন মেয়েটার। বয়সের সাথে মানানসই বুক, পাতলা কোমর আর ধীরে ধীরে প্রশস্ত হয়ে ওঠা মাজা। চুলটা টেনে পেছন দিকে বেঁধে রেখেছে মেয়েটা, একটা খোপা হবে সম্ভবত। এখনও পেছনটা দেখছি না। ঠোঁটে লিপস্টিক নিয়েছে কিনা বুঝতে পারছি না তবে মেয়েটার ঠোঁট গোলাপি। আমাদের দেশে বেশিরভাগ মেয়ের আবার ঠোঁট কিছুটা কালচে হয়, কি যেন হয়ত গোলাপি রং-ই মেখেছে। কেউ যদি আমাকে মেয়েটার চেহারা দেখে ১০ এর মধ্যে মার্কিং করতে বলে তবে আমি একে ৭ দিব। আর ৭ কোন অংশেই খারাপ নয়। মেয়েটা গাড়ি থেকে নেমেই সোজা আমার দিকে হেটে আসতে শুরু করল মেয়েটা। আমি মেয়েটাকে তখনো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি। আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
- বাহ, আসলেইতো... তুমি দেখি আগের চাইতে সুন্দর হয়ে গেছে!
- তুমি শশী?
- হায় হায়! এ আমি কার সাথে দেখা করতে এলাম!! আমাকে দেখি চেনেই না...
- না চিনব না কেন, কিন্তু তোমাকে আজকে স্বাভাবিকের চাইতেও বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে।
- বাব্বাহ... মিঃ রওনক দেখি ইদানীং কথাও বলতে শিখে গিয়েছে!
- কেন এমন বলছ, কমপ্লিমেন্টতো সবাই দিতে পারে তাইনা?
- আচ্ছা হইছে হইছে, চলো। বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকবা নাকি?
আমি দুটা টিকিট কিনলাম, কেনার সময় আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল শশী। কাউন্টারের লোকটির হাত থেকে টিকিট নিয়ে টাকা ফেরত দিতে গিয়ে দেখি লোকটা খুব বাজে ভাবে শশীর দিকে তাকিয়ে আছে। খুব রাগ হল হঠাত করে, রাগ হবার কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা। লোকটা ওর শরীরের দিকে বাজে ভাবে তাকিয়ে আছে এটা দেখে রাগ হচ্ছে কেন আমার? কিছুক্ষণ আগে আমিওতো ওকে কিছুটা সময় খুঁটিয়ে দেখেছি, তবে হ্যা আমার মনে কোন বাজে চিন্তার জন্ম নেয়নি সে কারণে অবশ্যই। তবে তাকিয়েতো ছিলাম। এটা মনে হবার পর ভাবলাম তাহলে কি আমি যখন ওকে দেখছিলাম তখন আমাকেও এই লোকটার মত হারামি টাইপ দেখাচ্ছিল? আমি হালকা গলা খেকর দিলাম, লোকটা আমার দিকে ফিরে চাইল, অনেকটাই অনিচ্ছাসত্ত্বে। মিচকি হেসে বলল 'ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড টা মেলা সুন্দর আছে...'!
মানুষের রাগ কি এমনিই বাড়ে? আমারতো মনে হচ্ছে ঐ ব্যাটার দৃষ্টির থেকে কথা আর হাসি আরও বেশি জঘন্য এবং বিরক্তিকর। আমার রাগ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কোয়ান্টাম মেথডের একটা কথা মনে পরল, 'রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন..'। তবে সে মুহুর্তে আমার পক্ষে রাগ কমানো সম্ভব ছিলনা, পাছে ঐ বেটাকে কি না বলে ফেলি পরে গার্ডেনের মধ্যে ক্ষতি করতে পারবে তাই সরে আসলাম কাউন্টার থেকে, মেইন গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়লাম শশীকে নিয়ে।
------------------------------------