03-11-2022, 08:53 PM
পর্ব- ৩
কলেজ মাঠের উত্তর পাশে একটা ঝুপের মত আছে তবে সেটাকে ঝুপ না বলে ছোটখাটো জংলা বলাও ভালো। আগে এখানে একটা ঘর ক্লাবঘর হিসেবে ছিল পরবর্তীতে নতুন ক্লাব ঘর তৈরী করা হলে এটাতে আর তেমন কেউ আসে না। আর মানুষের আনাগোনা না হওয়াতে আশাপাশের বড় গাছ গুলোর ছায়া আর ঘরেটাকে লতাপাতায় আষ্টেপৃষ্টে একটা জংলার মত হয়ে গেছে। এখন অবশ্য নির্জন রাতে এখানে প্রায়ই নেশাখোর দের আড্ডা বসে। ভগ্নদশায় ভোগতে থাকা ঘরটার বাইরে একটা বেঞ্চ পাতা আছে সেটাতেই অনির্বাণ বসে অপেক্ষা করছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার অপেক্ষায় তবে ঝোপঝাড়ের কারণে এখানে অন্ধকার একটু আগেভাগেই নেমে আসে। ঝিঁঝি পোকার ডাক আর মাঝে মধ্যে অজানা ছোট প্রাণীদের লাফালাফিতে শুকনো পাতার শব্দে গা ছমছম করে উঠে। পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে ফ্লাশ লাইটটা জ্বালিয়ে নেয় অনির্বান। গাছ থেকে পাতা পড়ার শব্দেও ওর ভীত মন কম্পিত হয়ে উঠে, হঠাৎ শুকনো পাতা মাড়িয়ে চলা মড়মড়ে একটা শব্দ কানে আসতেই আতকে উঠে অনির্বাণ ভীরু ভীরু দৃষ্টিতে পেছন ফিরে তাকায় আর ফ্লাশের আলোতে ঘোমটা টানা একটা মুখ দেখে একটু ভয় পেয়ে যায় আর সেটার ক্রিয়াতেই হাত থেকে মোবাইলটা নিচে পড়ে যায়।
কে কে ওখানে, আতঙ্কিত গলায় অনির্বান চিৎকার করে উঠে।
আরে আমি! ভীতুর ডিম একটা, ফিসফিসিয়ে একটা মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসে।
কণ্ঠটা অনির্বানের পরিচিত এবার মনে একটা জোড় পায় বেঞ্চ ছেড়ে উঠে এসে শুকনো পাতার আড়াল থেকে মোবাইলটা আবার হাতে তুলে নিয়ে ফ্লাশের লাইটা আবার সামনের দিকে তাক করে, ওহহ রুমা ওমন করে চুপিচুপি কেউ আসে নাকি। এমনিতেই কেমন ছমছমে চারদিকে তার উপর তোমার পায়ে মাড়ানো শুকনো পাতার শব্দ যে কারও পিলে চমকে দিবে।
হুম বুঝেছি তুমি যে ভীতু সেটা স্বীকার করো না। এতোবার ফোন করছিলে কেন? বাসায় আজ বাবা ছিল কেমন করে ম্যানেজ করে আসতে হয় সেটা জানবে কি করে। আমি তো আর তোমার মত ভবঘুরে বেকার না, রুমা এগিয়ে যায় অনির্বানের দিকে আর বেঞ্চের খালি পাশটায় বসে পড়ে।
ক্যাচ করে একটা শব্দ হয়ে উঠে। হওয়াটাই স্বাভাবিক রুমা ভালোই স্বাস্থ্যবতী মেয়ে আর উচ্চতার সাথে এমন স্বাস্থ্য মানান সই বলাই চলে। আমার কাছে একটু ভরাট শরীরের মেয়েরাই একটু বেশিই সুন্দরী লাগে তাদের আসল সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। সেদিক থেকে রুমার গায়ের রঙ উজ্জ্বল ফর্সা না হলেও স্বাস্থ্যবতী হওয়ার সৌন্দর্যে ওর দিক থেকে দৃষ্টি সড়ানো কষ্টদায়ক বটে আর বিশেষ করে ওর বুকে আর পাছায় যেন সৃষ্টিকর্তা আলাদা করে মাংস জুড়ে দিয়ে যেটা ওকে আরও পরিপূর্ণ করে তুলেছে। সবে কলেজে অনার্স এ ভর্তি হয়েছে কিছু ওর শরীরের ভাজে যে কেউ পূর্ণ যুবতী মহিলা বলে ভুল করতে বাধ্য। হাঁটার সময় রুমার পাছাদ্বয় যেমন করে দোলে উঠে তাতে আশেপাশের চলতি বা দাঁড়ানো পু্রুষ হৃদয়ে যে কেমন আলোড়ন তুলে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই সাথে বুকের নাচন তো গোগ্রাসে গিলতে থাকা বুভুক্ষু মানুষ গুলো বাকি সব ভুলে গিয়ে উন্নত মাংসপিণ্ডেই চুম্বকের মত আটকে থাকে। তবে রুমার সেদিকে কোন পাত্তা নেই ও ওর মত দিব্যি চলাফেরা করে, ওর কথা একটাই এই শরীর তো সৃষ্টিকর্তার দেয়া সেটাতে তো ওর কিছু করার নেই যা করার আছে সেটা হলো লেখাপড়া করে বড় একটা চাকরি করে পরিবারের হালধরা।
অনির্বাণের সাথে ওর পরিচয় বলতে ভালো করে জানাশোনা হয় একাদশ শ্রেণিতে ওরা একই স্যারের কাছে টিউশন নিতো। এর আগে একই পাড়ায় থাকায় এমনিতে একটু আধটু দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে তবে তেমন করে জানাশোনা হয়ে উঠেনি। টিউশনের নোট আদান প্রদানে প্রথম কথা বলা শুরু আর এখন সেটা প্রেম অব্দি এসে ঠেকেছে। অনির্বাণ দ্বাদশে ফেল করে এখন আগামী বারের প্রস্তুতি নিচ্ছে এটাও আবার রুমার কারণে। নইলে তো ওর পড়াশোনাতে মন বসে না, কিন্তু রুমা নাছোড়বান্দা যে করেই হোক পাশ করতেই হবে ওকে। অনির্বাণ ও রুমার কোন কথা ফেলতে পারে না তাই মন না চাইলেও পরীক্ষায় বসতে রাজি হয়েছে।
অনির্বাণ একটু সরে বসে রুমার দিকে আর ওর কাঁধে একটা হাত তুলে দিয়ে নিজের দিকে টেনে নেয়। না চাইতেও রুমা অনির্বাণের দিকে একটু সরে আসে ওর স্পর্শ কেন জানি অগ্রাহ্য করতে পারে না। অনিবার্নের হাত টা কাঁধ বেয়ে নিচের দিকে নেমে আসে ভরাট দুধের উপর, হালকা করে হাতের তালু দিয়ে ছোঁয়ে দিতে উদ্ধত হয়ে উঠে।
রুমা অনির্বাণের হাত টা নিজের দুধের উপর আসার আগেই চেপে ধরে, একদম না এাটু সুযোগ পেলেই হলো ওমনি বাবুর হাত চুলবুল করে নাকি।
প্লিজ একটাবার ধরবো শুধু আর কিছু না, কাতর স্বরে আকুতিভরা কন্ঠে রুমার সামনে মিনতি জানাতে থাকে।
প্রেমিকের আহ্বান উপেক্ষা করা কত কষ্টের হয় সেটা যে প্রেম করেছে সেই বলতে পারবে। রুমার হাতটা নরম হয়ে আসে অনেকটা আলগা করেই অনির্বাণের হাতটা ধরা আছে ওর মুঠোতে, না না তুমি একবারের কথা বলেই আর ছাড়তে চাও না। একদম হাত বাড়াবে না।
রুমার নরম হয়ে আসা হাত অনির্বাণকে হাত বাড়ানোর উৎসাহ দেয়। ও বুঝতে পারে মুখে না বললেও এখন আর তেমন বাঁধা পাবে না ওর কাছ থেকে। নিজের হাত টাকে সচল করে এগিয়ে নিয়ে যায় লক্ষ্যের দিকে। রুমার বয়সের তুলনায় বড় বুকের অধিকারী হয়ে উঠায় অনির্বাণ চাইলেও পুরো দুধের আয়ত্ত নিজের মুঠো তে নিতে পারে না। হাতের তালু দিয়ে হালকা করে পিসে দিতে থাকে নরম কোমল মাংসের দলা টাকে। উত্তেজনার বশে একটু জোরেই মর্দন শুরু করে রুমার দুধটাকে
উহহহ, হিসিয়ে উঠে রুমা। এতো জোরে কেউ টিপে নাকি আমার ব্যাথা করে তো নাকি। এই জন্যই তোমাকে ধরতে দেই না, একবার ধরতে পারলে আর হুশ থাকে না। রুমার মুখে যন্ত্রণার ছাপ টা স্পষ্ট দেখা যায়
সরি সোনা আর এমন হবে না। অনির্বাণ নিজেকে আরও সরিয়ে নেয় রুমার দিকে খালি হাত টাও চলে যায় অন্য দুধটার উপরে আর মুঠোতে পুড়ে নিয়ে আলতো মর্দনে তাতিয়ে দিতে থাকে রুমার শরীর কে। রুমার শরীরে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে আসে শিরা ধমনিতে রক্তের দাপাদাপি বাড়তে থাকে সময়ের কালক্ষেপণে। একটা অসহ্য সুখের আলোড়িত জোয়ারে শ্বাস গুলো দীর্ঘায়িত হয়ে আছড়ে পড়তে থাকে অনির্বাণের কাঁধের কাছে। রুমা কামভাবে জাগ্রত হতে থাকা শরীর এতোক্ষণে নিজেকে এলিয়ে দিয়েছে প্রেমিকের বাহুডোরে আর অনির্বাণও নিজের প্রেয়সীর বুকের সৌন্দর্য নারীর গৌরব গুলো ছানতে থাকে আপন মনে। নিজের ঘাড়ের কাছে আলতো করে কোমল ঠোঁটের ছোঁয়া পেতেই কেঁপে উঠে রুমার কোমল নধর মাতাল চোখে ফিরে তাকায় নিজ মনে জায়গা দেয়া স্বপ্নের রাজপুত্রের দিকে। তিড়তিড় করে কাঁপতে থাকা ঠোঁট গুলো অদৃশ্য মায়াবলে কিংবা শারীরিক চাহিদায় এগিয়ে যায় প্রিয়তমের ওষ্ঠের দিকে। অনির্বাণও প্রেয়সীর ডাক ফেরাতে পারে না আর এমন করে কামনাদেবীর আহ্বান ফেরাতে পারে এমন বীর পুরুষ কবে কোথায় জন্ম নিয়েছিল কেউ জানে না। কামনার জোয়ার জেগে উঠা দুটো শরীরে জেগে উঠে আপন মহিমায় স্পর্শকাতর ঠোঁট গুলো মেতে উঠে নিজস্ব খেলায়। নিস্প্রভ ওষ্ঠ জোড়া সজীব হতে শুরু করে কাঙ্ক্ষিত চুম্বনে মিশ্রিত লালারসে, এ রসে যে এতো প্রাণের আধার সেটা অনেকের অজানা।
দূরের মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে, কলেজ মাঠের পশ্চিম পাশের কয়েকটা বাসা থেকে উলুধ্বনি আর শাখের শব্দ ভেসে আসছে কানে। আদতেই সন্ধ্যা নেমে এসেছে ধরণীর বুকে। সময়ের সংকেতে মূহুর্তের মাঝেই রুমা নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় অনির্বাণের বুক থেকে। তড়িৎ গতিতে উঠে দাড়িয়ে খোলে যাওয়া চুল খোপা করে ওড়নাটা ঘুমটার মত করে মাথাটা ঢেকে নেয়।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমাকে বাসায় যেতে হবে, সন্ধ্যা বাতি জ্বালতে হবে। আর তুমিও বাসায় গিয়ে পড়তে বসো এবার পাশ না করতে পারলে আর দেখা করতে আসবো না বলে দিলাম।
অন্ধকারেই পা চালিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে রুমা, উত্তেজনার বশে এতোক্ষণের কার্যকলাপে নিম্নাঞ্চল যে ভিজে গিয়েছে সেটা অনুভব করতে পারছে। মন চাইছিলো আরও কিছুক্ষণ প্রিয়তমের বুকে নিজেকে মিশিয়ে রাখতে তবুও ঘরে ফেরার তাড়া সেটা আর হতে দিলো কই। থাকুক না জমা সবকিছু বড় চাকরি হবার পর যখন বিয়ে করবে তখন তো আর এতো বাঁধা ধরা থাকবে না। সেসময় সারাদিন অনির্বাণের সাথে লেপ্টে রাখবে নিজেকে মনপ্রাণ ভরে সুখের আলিঙ্গনে জড়াবে নিজেকে, অনেক স্বপ্ন আঁকা আছে হৃদয়ে সেগুলো সত্যি করার পালা। মাঠ পেরিয়ে রাস্তার কাছে এসে দ্রুত পায়ে বাড়ির পথ ধরে রুমা, অনির্বাণ খানিকটা সময় ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে রুমার চলে যাবার পথটার দিকে। একটা দীর্ঘশ্বাসের পর বিষন্ন মনে সেও বাড়ির পথে পা বাড়ায়। যে করেই হোক পাশ এবার করতেই হবে নইলে রুমা কে হারিয়ে ফেলতে পারে সে ভয়ে আজকাল নিদ্রাহীনতা চেপে বসেছে চোখের পাতায়।
বশির চাচার দোকানের গরমাগরম পাকোড়া গুলো নিয়ে স্কুটি চেপে বাড়ি পৌঁছেই আগে ঠাম্মার ঘরের দিকে ছুট দেয় মাধুরী। ওখানে আগে থেকেই লুডো সাজিয়ে বসে আছে লিলি আর ঠাম্মি। লিলি মাধুরীর ছোট বোন এবার ক্লাস সেভেনে উঠেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যায় ওদের তিনজনের লুডোর আসর বসে। যে হারে তাকে পরদিন কিছু না কিছু খাওয়াতে হয়, মাধুরী গতকাল হেরেছিলো তাই আজ শর্ত মতে গরমাগরম পাকোড়া নিয়ে এসেছে৷ যেখানেই থাকুক না কেন এই সময়টা ও বাসার জন্য রেখে দেয়। মা বাবার সাথে মাধুরীর দূরত্ব টা যতটা বেশি বোন আর ঠাম্মা ওর ততোটাই কাছের।
আমি ফ্রেশ হয়ে এখনি আসছি এর আগে খেলা শুরু করবে না বলে দিলাম,
মাধুরী কাঁধ ব্যাগটা নিয়ে দৌড়ে সিড়ি বেয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। ভেবেছিল এখন আর স্নান করবে না কিন্তু ঘাম শুকিয়ে গিয়ে শরীর কেমন চ্যাট চ্যাটে লাগছে। বাথরুমে ঢুকেই নিজেকে পুরো নগ্ন করে নেয় মাধুরী। দেয়ালে থাকা বিশাল আয়নায় আধ ঘন্টা আগেও কাম খেলার লেগে থাকা চিহ্ন গুলো দেখতে পায়। বুকের কাছে হালকা একটা লাল দাগ, উত্তেজিত অবস্থায় শুভ হয়তো ওর ফর্সা নরম বুকে দাঁত বসিয়ে দিয়েছিল। এটা মাধুরীর একদম পছন্দ না কয়েকবার শুভ কে সাবধান ও করে দিয়েছে কিন্তু কিসের কি কামনার আগুনে পোড়ার সময় কি এতদিকে খেয়াল থাকে নাকি। শাওয়ার টা ছেড়ে সেটার নিচে এসে নিজেকে সিক্ত করে নেয় মাধুরী, নিম্নাঞ্চলে হাত বুলাতে গিয়ে টের পায় গুদের উপরের বেড়ে উঠা গুপ্তকেশ গুলো জট লেগে আছে শুভর ছিটকে আসা বীর্যে। হাত দিয়ে হালকা ঘসা দিয়ে জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার করে নেয়। সারা গায়ে সাবান দিয়ে রতি খেলার শেষ ছাপ টুকুও ধুয়ে মুছে সাফ করে নেয়। জল নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র উপাদান তার ছোঁয়াতে সবকিছুই আবার পবিত্র হয়ে উঠে।
বাথরুমের দরজায় ধুপধাপ শব্দ হচ্ছে, কিরে দিদি তাড়াতাড়ি কর আর কতোক্ষণ লাগবে? পাকোড়া কিন্তু ঠান্ডা হয়ে গেল।
এইতো আমার হয়ে গেছে তুই নিচে যা আমি এক্ষুনি আসছি, চিৎকার করে জবাব দেয়।
মাধুরী আর দেরি করে না ঝটপট করে স্নান টা সেড়ে নেয়। দিনের এই সময়টা ওর সবচেয়ে কোয়ালিটি টাইম সেটা একদম নষ্ট করতে চায় না। বাথরুম থেকে বের হয়েই টিয়া রঙের একটা টপ আর ঢোলা প্যান্ট পরে লাফিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকে।
সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতের প্রথম প্রহরের সূচনা হয়েছে, এক ফালি চাঁদ হালকা মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলা শুরু করেছে পুবের আকাশে। মাত্রই শেষ টিউশনি টা সেরে বাড়ির জন্য পথ ধরেছে, নিজের লেখাপড়ার খরচ টা নিজেই চালানোর জন্য কয়েকটা টিউশনি করায় আলেয়া। নিজেও অনেক ব্রাইট স্টুডেন্ট ক্লাসে এ পর্যন্ত কখনো থার্ড পজিশনের বাইরে যায় নি। ওদের সমাজের ওর বয়সের অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে কিন্তু বশির চাচা মেয়েকে আরও পড়াতে চায়৷ আর্থিক অবস্থার জন্য বাধ্য হয়েই নিজের কলেজ শেষে আলেয়াকে টিউশনি করাতে হয়। রাস্তাটা বেশ অন্ধকার খানিকটা দূরে দূরে কারও বাড়ির বাল্বের আলো কিছুটা পথ আলোকিত করলেও বাকি সবটা অন্ধকারেই নিমজ্জিত। সড়কের বিদ্যুতের খুঁটি গুলোতে বাতি থাকলেও বছরের বেশিরভাগ সময় সেগুলো জ্বলতে দেখা যায় না।
আজ অন্যদিনের থেকে রাস্তাটা বেশিই নীরব লাগছে, এমনিতে আসা যাওয়ার পথে অনেকের সাথেই দেখা হয়। শন শন একটা আওয়াজে গা ছমছম করে উঠে। আসলে মনের ভয়টাই বড় ভয়, মনে ভয় ঢুকে গেলে নিজের পায়ের শব্দও পিলে চমকে দেয়। আলেয়ার মনে হয় কিছুটা দূরত্ব রেখে আরও কেউ একটা পেছন পেছন আসছে। পায়ের শব্দটা আধো আধো কানে বাজছে, পেছন ফেরে দেখবে কিনা সেটা ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ পেছন ফেরে কাউকেই দেখতে পায় না। চারদিক শূন্যতায় ঢাকা মানুষ কি একটা ব্যাঙেরও হদিস নেই। শুনশান নীরবতা মনে ভয়ে বাঘ হয়ে দেখা দেয়। আবার সামনের দিকে হাটতে শুরু করে আলেয়া ঠিক তখনি সেই দূর থেকে পায়ের শব্দটা আবার কানে আসতে থাকে। এবার বেশ ঘাবড়ে যায় সে চারিদিকের পরিস্থিতি ভালো নয় মনে নানা ধরণের বাজে আশঙ্কা জাগতে শুরু করে। বাড়ির দিকে দ্রুত পা চালায় আলেয়া সম্ভব হলে বাকি দূরত্বটা একলাফে পাড় করতে চাইছে। বাড়ির কাছাকাছি এসে এক প্রকার দৌড়েই কোনমতে বাড়ির ভেতরে ঢুকে উঠোনে দাড়িয়ে হাঁপাতে থাকে আলেয়া। বাইরের দিকে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে কেউ আসছে কিনা পেছন পেছন কিন্তু না কারও ছায়া টা অব্দি দেখতে পাওয়া যায় না।
কিরে আফা ওমন করে কি দেহস? আর হাফাইতাছস কে, আলেয়ার ছোট ভাই পেছন থেকে ডেকে উঠে।
হঠাৎ করেই গলার আওয়াজ শুনে আলেয়া আরও বেশি ভয় পেয়ে আতকে উঠে ভূত দেখার মত চেহারা বিকৃতি করে পেছন ফেরে তাকায়। নিজের ছোট ভাইকে দেখে একটু আশ্বস্ত হয়, না কিছু না তুই বাইরে কি করস যা পড়তে যা। ছোট ভাইকে নিয়ে আলেয়া ঘরে ঢুকে যায়।
খানিকবাদেই ওদের বাড়ির সামনের ঝুপটা থেকে একটা ছায়ামূর্তি রাস্তা ধরে চলে যেতে দেখা যায়।
মাত্রই মমতা রান্না ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়নের শাড়ির আঁচলে নিজের মুখ টা মুছে নিতে নিতে দোতলার সিঁড়ি ধরে উঠতে থাকে৷ সিঁড়ির উত্তর পাশে ছেলের ঘরের দিকে পা বাড়ায়, ঘরের ভেতর থেকে আবছা একটা বিড়বিড় করে কথা বলার কন্ঠস্বর ভেসে আসছে।
এ জীবন অনিন্দ্য
বড্ড সুন্দর
যে করেছে উপভোগ
ক্ষণজন্মা হয়েও সে
বড় ভাগ্যবর।
তুমি প্রিয়
শরতের শিউলি
রাতের সুঘ্রাণে স্বপ্ন সাজিয়ে
ভোরেই নিজেকে হারাও।
তোমাকে চেয়েছি
নিজের চেয়েও বেশি
তাইতো আটকে না রেখে
মুঠো ছেড়ে মুক্তি দিয়েছি।
অনেকটা নিঃশব্দে এসে ছেলের ঘরের দরজার কাছে এসে দাঁড়ালেও মায়ের গায়ের গন্ধটা কৌশিকের চিরচেনা, তাই মুচকি হেসে বলে উঠে
মা....
শতচেষ্টা করেও নিজেকে লুকাতে না পেরে ধরা পড়ে যাবার সুখে খিলখিলিয়ে হেসে উঠে মমতা,
কিরে কার সাথে কথা বলছি একা ঘরে।
কারও সাথে না মা। এদিকে আসো দেখো কত সুন্দর ঘ্রাণ আসছে শিউলি ফুলের। চোখ বন্ধ করে এমন ঘ্রানে মনে হয় স্বর্গে চলে গেছি।
ঘর পেরিয়ে বারান্দায় ছেলের কাছে গিয়ে দাঁড়ায় মমতা আর কৌশিকের ঘন ঘাড় অব্দি লম্বা চুলে বিলি কাটতে থাকে, পাগল ছেলে আমার এখানে তুই শিউলির গন্ধ কোথায় পেলি? আশে পাশে কোথাও কোন গাছ পর্যন্ত নেই।
মায়ের হাতের স্পর্শে স্নেহের পরশ পেয়ে নিজের মাথা টা মায়ের দিকে হেলিয়ে দেয় কৌশিক, মা আমরা কবে যাবো? আমর আর এখানে থাকতে ভালো লাগছে না দম বন্ধ হয়ে আসে।
ছেলেকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নেয় মমতা গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে, এই তো বাবা ঘর দেখা হয়ে গেছে টুকটাক রিপেয়ার করতে দিন সাতেক লাগবে। তার পরই আমরা চলে যাবো৷ ততোদিনে দেখ তোর জয়েনিং টাও হয়ে যায় নাকি। নিজেকে ব্যস্ত রাখলে দেখবি ভালো লাগবে।
মায়ের স্পর্শ পৃথিবীর সেরা সঞ্জীবনী ঔষধি যার ছোঁয়া পেতেই সব কষ্ট যন্ত্রনা মূহুর্তেই বিলীন করে দেয়। সকল দুঃখে ব্যাথায় উপশমের মলম হয়ে পরশ বোলায়, দেখি কাল একবার কলেজ টাতে যাবো পার্টটাইম লেকচার এর একটা পোষ্টে লোক নিচ্ছে। ওখানে চাকরিটা পেয়ে গেলে বেস্ট হবে কলেজ থেকে থাকার জায়গাটা বেশি দূর হবে না।