Thread Rating:
  • 22 Vote(s) - 2.95 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance সম্পর্কের মায়াজাল --- ami_keu_noi
#10
(পর্ব-০৪)



হ্যা, যা ভেবেছিলাম তাই। মাসুদের রুম থেকে যে মেয়েটি বের হয়েছিল তার নামই শেফা। মাসুদের একমাত্র ফুপির একটি মাত্রই মেয়ে। ওরাও এই এলাকাতেই কোথাও থাকে, কাছা কাছি বাসা হবার কারণে শেফা ওর ছোট মামার বাসায় এসে থাকে বেশিরভাগ সময়েই। শেফার এই একটাই মামা, তাই হয়তো মামা-ভাগ্নির সম্পর্কটা বেশ ভালোই হবে। নইলেতো আর বেশিরভাগ সময় এই বাসাটায় কাটিয়ে দিত না। শেফা অনেক সুন্দর ছবি আঁকতে পারে অবশ্য ওর এবিষয়ে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তবে নাচের স্কুলে যায়। কথ্যক। স্কুলে এবং কলেজে বেশ কিছু পুরষ্কারও বাগিয়ে নিয়েছে মেয়েটা। শুধু তাই নয়, অসম্ভব মেধাবী এই মেয়ে কলেজের বিতর্ক প্রতিযোগীতায়ও কলেজের মুখ উজ্জ্বল করেছে। কম কথা বলে তবে মাসুদের সাথে অবশ্য অনেক কথা বলে। ভাবছেন এত কিছু আমি কীভাবে জানলাম? সিথি আপা ঠিকই বলেছিলেন, মাসুদ অনেক বেশিই ফাঁকিবাজ! আর তাই আমি যখন পড়ানোর এক ফাকে জিজ্ঞেস করলাম 'রুম থেকে একটু আগে যে মেয়েটা বের হয়ে গেল সে কে', উত্তরে গরগর করে এই সব কথা আমায় বলতে লাগলো। যতটুকু সম্ভব সময় নিয়ে বলতে লাগলো যেন আজ আমার কাছে পড়ার সময়টা শেষ হয়ে যায়। শুধু যে এসব তথ্যই দিয়েছে তাই নয়, ওর শেফাপুর কি পছন্দ না পছন্দ এগুলোও বলেছে। আমি আবার ফাঁকিবাজি একদমই পছন্দ করিনা তবে এটা মেনে নিতে আপত্তি নেই যে পিচ্চিটা ফাঁকিবাজ হওয়াতে অবশ্য একটু লাভই হল। মেঘ থেকে ধরণিতে নেমে আসা রাজকন্যার সম্পর্কে বেশ ভালোই জানতে পেলাম। যাই হোক, মাসুদকে পড়ানো শেষ হয়েছে অনেক আগেই। আমি মাসুদের বাসা থেকে নেমে হেটেই তনিমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। খুব বেশিদূর হবেনা এখান থেকে তাই মেঘকণ্যার কথা ভাবতে ভাবতেই হাটতে থাকলাম তনিমার বাসার দিকে। মেঘকণ্যাকে দেখার পর থেকে তনিমা আর শশীর কথা ভূলেই বসেছিলাম কিন্তু যতই তনিমাদের বাসার কাছাকাছি যাচ্ছিলাম ততই যেন মনের মধ্যে কেমন খচখচানি কাজ করছিল, সত্যি বলতে আমার যেতেই ইচ্ছে করছিল না। কিন্তু কি করার.. রাসেলকে কথা দিয়ে ফেলেছি! পিছে হাটবার পথ নেই যে আর।

------------------

তনিমা দরজা খুলে সোজা ওর রুমে নিয়ে এলো। ওর রুমে আসার জন্যে ড্রয়িং এবং ডাইনিং রুম পার হতে হয়। একটু অবাক হলাম কেননা বাসার মধ্যে কোন মানুষজনের সাড়াশব্দ ছিলোনা একদমই। ভাবলাম হয়তো দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়েছে তনিমার আম্মু, তবে আমারই বিশ্বাস হচ্ছিল না। যাই হোক, তনিমার রুমে আসার পর টেবিলের চেয়ারটায় আমায় বসতে দিয়ে টেবিলের সাথেই প্রায় লাগানো খাটের উপর বসল। কথা শুরু করলো প্রথমে তনিমাই..

তনিমা - তারপর? মাসুদকে কেমন পড়ালেন?
আমি - এইতো, পিচ্চিটা দুষ্ট।একদমই ফাঁকিবাজ..
তনিমা - জানি.. রাসেলের মাথায় উঠেও বসে থাকে মাঝে মধ্যে! আপনি নতুন দেখে ওরকম করা উচিত কিনা সেটা বুঝে উঠতে পারেননি হয়ত.. দু'দিন পর দেখবেন ঘার থেকে নামতেই চাইছেনা আর!
আমি - সাংঘাতিক তথ্য! ধন্যবাদ.. তবে আশা করি আমার সাথে ওমনটা করে সাহস পাবেনা! রাসেলের মত আমি ওতটা নরম নই।

তনিমা - (মিচকি মিচকি হাসছে..) হ্যা, জানিতো.. আপনি শক্ত! ভীষণ..
আমি - মানে? কীভাবে জানলে? আমিতো তোমাকে আমাকে নিয়ে কিছু বলিনি কখনোই..
তনিমা - না না, আপনি নন.... শশী বলেছে!
আমি - ..মানে?
তনিমা - না মানে কিছুই না.. শুধু বলেছে আপনি নাকি অনেক শক্ত! সব দিক থেকেই..

তনিমার মিচকি হাসির পরিমাণ বেড়ে যায়। তনিমা মেয়েটা সুন্দর, ওর হাসিটাও। কিন্তু কেন যেন এখন ওর হাসিটা একটুও ভালো লাগছেনা। বরং মনে হচ্ছে কোন ডাইনী কালো জাদু করে সফল হবার পর তার সফলতার হাসি হাসছে। হাসতে হাসতেই তনিমা বলে উঠলো..

তনিমা - আচ্ছা ঠিক আছে, অনেক পচাইলাম আপনাকে। আজকের মত আর পচাবো না, পরে দেখা যাবে পচানি খাবার ভয়েই আপনি আর আসছেন না আমাকে পড়াতে, কি বলেন?
আমি - (কথার প্রসংগ পরিবর্তন করে) তারপর তুমি কতটুকু এগুলে বলো..

আমরা পড়াশোনার ব্যাপারে কথা-বার্তা শুরু করলাম এবং শেষ পর্যন্ত রাসেলের বলে দেয়া পরীক্ষাটি দিতে ওকে রাজিও করালাম। একটা খাতায় কিছু অংক তুলে দিলাম আর একমনে করতে শুরু করল। আমি একা বসে আর কি করব, টেবিলে কোন গল্প উপন্যাসের বইও ছিলোনা.. তাই চেয়ারে বসেই ঘার ঘুরিয়ে ওর রুমটাই এক্সপ্লোর করা শুরু করলাম। রুমের এক প্রান্তে একটা সেলফ দেখতে পেলাম, তাতে দূর থেকে মনে হচ্ছে বেশ কিছু গল্প-উপন্যাসের বই রাখা। আমি তনিমার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই সেলফের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।


সেলফে বেশ কিছু ভালো ভালো লেখকের বই রাখা তবে সেলফের একটা তাক জুড়েই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে হুমায়ুন আহমেদ স্যারকে। হিমু সমগ্রর পুরোটাই আমি দেখতে পেলাম খন্ডাকারে। ভালো লাগলো বিষয়টা। হুমায়ুন স্যার আমার প্রিয় লেখকদের একজন এবং তার সৃষ্টি হিমু আর রুপা আমার প্রিয় দুটি চরিত্র। যদিও রুপার সম্পর্কে খুবই কম লিখেছেন স্যার তবুও.. আসলে ভালো লাগাতো আর কম-বেশি দেখে-জেনে হয়না.. ভালো যা লাগবার তা হঠাত করে লেগে যায়। যাই হোক, সেলফের চারটি তাকের তিন নম্বর তাকে বেশ কিছু বই মলাটে বাধা ছিল। সেই বইগুলোর মাঝে একটা সিডির প্যাকেটের সামান্য মাথা বের হয়ে দেখতে পেলাম। জানিনা কেন তবে আমি সেটা টেনে বের করে হাতেও নিলাম, আর নিয়েই বুঝলাম... এমনটা করা উচিত হয়নি আমার!

--------------

আমার হাতের মধ্যে শোভা পাচ্ছিল এমন একটা ডিভিডির প্যাকেট যার মলাটে আলেট্টা অসিন, জায়েডেন জেমসের ছবি! আমার পছন্দের পর্ণ ক্যারেকটার! আমি থমকে গিয়েছিলান কয়েকটি কারণে।


এক, এই ডিভিডি আমি কিনেছিলাম কেননা কভারের উপর লাল মার্কার দিয়ে আমার লেখা 'R' অক্ষরটিও আমি দেখতে পাচ্ছি!
দুই, এটা আমার কাছ থেকে রাসেল নিয়েছিল এবং সহজ কথা হচ্ছে রাসেলের মাধ্যমেই তনিমার কাছে এসেছে এই জিনিষ।

তিন, এটা তনিমার ঘর এবং তনিমার সেলফ থেকে আমি একটা পর্ণ ডিভিডি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি..!

আমি যদি এখন ডিভিডিটা আবার আগের জায়গায় রাখতে চাই তবে আমাকে বেশ কষ্ট করতে হবে কেননা বইগুলো এমন চেপে চেপে রাখা হয়েছে যেখান থেকে টেনে এটা বেরতো করেছি কিন্তু আবার ঢুকিয়ে রাখতে গেলে আমাকে অন্তত একটা বই টেন্ব বের করতে হবে! কিন্তু তাতে আমার যে মুভমেন্ট হবে সেটায় তনিমার সন্দেহ হয়ে যেতে পারে আর আমি মরে গেলেও এই ডিভিডির ব্যপারটা যে আমি দেখেছি তা ওকে জানতে দিতে চাইনা, কক্ষনো না! হঠাত একটা ব্যাপার মাথায় এলো, ভাবলাম হয়ত তনিমা এখানে রেখে বেমালুম ভুলে বসে আছে। নয়তো বুক সেলফে নিশ্চয়ই কেউ এরকম কিছু রাখবেনা! মা-বাবা বা অন্য কেউওতো আমার মত টেনে দেখে নিতে পারে! আর যদি সত্যিই ভুলে গিয়ে থাকে তবে আমি এখন যদি এটা চুরি করে এখান থেকে নিয়ে যাই তবেই না সব ল্যাঠা চুকে যায়। যেই ভাবা সেই কাজ, আমি ডিভিডিটা আমার প্যান্টের পকেটে আস্তে আস্তে রাখতে শুরু করলাম। ভাগ্যিস মোবাইল প্যান্ট পড়া ছিলাম আজ, পকেট টা ঢোলা! জিন্সের প্যান্ট হলে পকেটে আটতই না। যাই হোক, পকেটে ডিস্কটা ঢুকিয়েছি মাত্র ওমনি একদম পেছন থেকে তনিমার গলা শুনে একেবারেই জমে গেলাম যেন!

তনিমা - কি করছেন রওনক ভাইয়া?

[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সম্পর্কের মায়াজাল --- ami_keu_noi - by ddey333 - 03-11-2022, 11:17 AM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)