30-10-2022, 10:02 AM
মহিলার বয়েস আন্দাজ বছর চল্লিশ-বিয়াল্লিশ হবে। পরনে ছাই রঙের রং জ্বলা একটা সুতির ছাপা। গায়ের রং কোনো এককালে ফর্সা ছিল। এখন রোদে পুড়ে বাদামি। পরিশ্রমী চেহারার একটা বিশেষ মাধুর্য থাকে, কপালের ভাঁজেও অভিজ্ঞতার চিহ্ন লেগে থাকে। হাতে ব্যাগ নিয়ে ঘুরে ঘুরে বাজার করছেন মহিলা।
দুপিস পেটির মাছ দাও, আর দু পিস গাদার। বড় বড় করে কাটবে। পাঁচভাজায় একটা পেটি দেবো।
মাছওয়ালা মাছ কাটতে কাটতেই বললো, ছেলের জন্মদিনে কী মায়ের মাছ খাওয়া বারণ? চারপিস মাছে হবে?
মহিলা হেসে বললেন, ছেলের একপিস ভাজা, দুপিস ঝালে দেবো। ওর বাবার এক পিস, ওই হবে গো... যা দাম আর দিতে হবে না।
মাছওয়ালা বললো, তাহলে তুমি কী খাবে বৌদি?
মহিলার মুখে তৃপ্তির হাসি, সে বিট্টু আমায় না দিয়ে খাবে না। ওই ঝালের দুপিসের একপিস আমায় জোর করে খাওয়াবে।
মাছওয়ালা বললো, আর যদি সে খেয়ে নেয়? তাহলে তুমি কি খাবে? মহিলা বললেন, তুমি তাড়াতাড়ি দাও দিকি। আমায় এরপর ছুটতে হবে মিষ্টির দোকানে। মিষ্টি নিয়ে যেতে হবে মুদিখানার। পায়েসের চাল, ঘি, কাজু, কিসমিস সব কেনা বাকি। মন্দিরে যেতে হবে পুজো দিতে।
ওর বাবা তো সকালেই কাজে বেরিয়ে গেছে। ফিরবে সেই দুপুরে।
মাছওয়ালা ছেলেটার বয়েস বছর চব্বিশ হবে। ছেলেটা পাঁচপিস মাছ ব্যাগে ভরে দিয়ে বললো, তুমি একটু কম করেই দাম দাও বৌদি। কিন্তু নিজেও মাছ খেও। তোমরা মায়েরা বুঝতেই পারো না, তোমাদের শরীরেও প্রোটিন দরকার।
আমার মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেই ডাক্তার বলে, সব ছেলেকে খাইয়েছেন? নিজের শরীরে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম সব ঘাটতি হয়েছে। ঐজন্য কোমরে, হাঁটুতে ব্যথা হয়। আমি বড় হয়েছি তো, এগুলো শুনে খুব কষ্ট হয় বৌদি। তখন তো এত বুঝতাম না। মা বলতো -তুই খেলেই আমার খাওয়া। এখন বুঝি কত বড় ভুল করেছি।
মহিলা হেসে বললেন, তোমার মা তো বিশাল ধনী মানুষ গো, এমন একটা ছেলে পেয়েছে সে। আর কী চাই!
কিছু সম্পর্কে হিসেব-নিকেস, লাভ-লোকসানের সমীকরণ কাজ করে না। পৃথিবীর আহ্নিকগতির মতই সত্য হয় এ সম্পর্ক।
অর্পিতা সরকার
দুপিস পেটির মাছ দাও, আর দু পিস গাদার। বড় বড় করে কাটবে। পাঁচভাজায় একটা পেটি দেবো।
মাছওয়ালা মাছ কাটতে কাটতেই বললো, ছেলের জন্মদিনে কী মায়ের মাছ খাওয়া বারণ? চারপিস মাছে হবে?
মহিলা হেসে বললেন, ছেলের একপিস ভাজা, দুপিস ঝালে দেবো। ওর বাবার এক পিস, ওই হবে গো... যা দাম আর দিতে হবে না।
মাছওয়ালা বললো, তাহলে তুমি কী খাবে বৌদি?
মহিলার মুখে তৃপ্তির হাসি, সে বিট্টু আমায় না দিয়ে খাবে না। ওই ঝালের দুপিসের একপিস আমায় জোর করে খাওয়াবে।
মাছওয়ালা বললো, আর যদি সে খেয়ে নেয়? তাহলে তুমি কি খাবে? মহিলা বললেন, তুমি তাড়াতাড়ি দাও দিকি। আমায় এরপর ছুটতে হবে মিষ্টির দোকানে। মিষ্টি নিয়ে যেতে হবে মুদিখানার। পায়েসের চাল, ঘি, কাজু, কিসমিস সব কেনা বাকি। মন্দিরে যেতে হবে পুজো দিতে।
ওর বাবা তো সকালেই কাজে বেরিয়ে গেছে। ফিরবে সেই দুপুরে।
মাছওয়ালা ছেলেটার বয়েস বছর চব্বিশ হবে। ছেলেটা পাঁচপিস মাছ ব্যাগে ভরে দিয়ে বললো, তুমি একটু কম করেই দাম দাও বৌদি। কিন্তু নিজেও মাছ খেও। তোমরা মায়েরা বুঝতেই পারো না, তোমাদের শরীরেও প্রোটিন দরকার।
আমার মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেই ডাক্তার বলে, সব ছেলেকে খাইয়েছেন? নিজের শরীরে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম সব ঘাটতি হয়েছে। ঐজন্য কোমরে, হাঁটুতে ব্যথা হয়। আমি বড় হয়েছি তো, এগুলো শুনে খুব কষ্ট হয় বৌদি। তখন তো এত বুঝতাম না। মা বলতো -তুই খেলেই আমার খাওয়া। এখন বুঝি কত বড় ভুল করেছি।
মহিলা হেসে বললেন, তোমার মা তো বিশাল ধনী মানুষ গো, এমন একটা ছেলে পেয়েছে সে। আর কী চাই!
কিছু সম্পর্কে হিসেব-নিকেস, লাভ-লোকসানের সমীকরণ কাজ করে না। পৃথিবীর আহ্নিকগতির মতই সত্য হয় এ সম্পর্ক।
অর্পিতা সরকার