Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 2.68 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy Come in, এসো! --- রাখাল হাকিম
#5
সেদিন একটু তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠলাম। জীবনে প্রথম শাহানাকে মা বলেই ডাকলাম, মা, একটু তাড়াতাড়ি বেড়োতে হবে। নাস্তা পানি কিছু থাকলে দে!
শাহানা রান্না ঘর থেকেই বললো, দিচ্ছি, দিচ্ছি! এত তাড়াহুড়া করিস না। তাড়াহুড়া করে এটা ফেলে যাবি, ওটা ফেলে যাবি। শেষ পর্য্যন্ত দেখবি, দশগুনই দেরী হয়ে গেছে।

আমি নাস্তার টেবিলে বসতেই দেখি, ওপাশের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছে মিমি। পরনে এস কালারের একটা গলায় মেশানো টপস। মুচকি হেসে বললো, ভাইয়া, আজকে কি বার?
আমি নাস্তা মুখে দিতে দিতেই বললাম, কেনো, বৃহস্পতিবার!
মিমি বললো, সবই ঠিক আছে। এত ব্যাস্ততা দেখাচ্ছিস, কিন্তু এই বারটা কার?
আমি তাড়াহুড়া করে নাস্তা মুখে নিতে নিতেই বললাম, শোন, বেশী পাগলামী করিস না। বারটা তোর। আমার আজকে জরুরী কাজ আছে। শুনিসনি অম্মৃতার বাবা মারা গেছে। সবাই দায়ী করছে আমাকে। তুই তো আছিস তোর বার নিয়ে। আমার বারোটা বাজতে চলেছে। পেপার পত্রিকা কিছু পড়িস?
মিমি মুচকি হেসেই বললো, পড়ি। ভাবীর বাবা মারা গেছে, এতে তোর এত মাথা ব্যাথা কেনো? মানুষ কি মরে না?
আমি বললাম, হ্যা মরে, কিন্তু অম্মৃতার বাবা একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি। তার মেয়ের জামাই আমি। সবাই বলছে, আমার জন্যেই নাকি সে আত্মহত্যা করেছে।
মিমি বললো, তুই এমন কি করেছিস যে, যেনো সত্যি সত্যিই তোর জন্যে ভাবীর বাবা আত্মহত্যা করেছে।
আমি বললাম, ওসব তুই বুঝবি না।
আমি মিমিকে আর পাত্তা দিতে চাইলাম না আমার সমস্যা আমিই তো ভালো বুঝি অম্মৃতার সাথে আমি অসম্ভব দুর্ব্যাবহার করেছিলাম তার বাবাকেও অপমান করেছিলাম খুব সেই অপমানে তার বাবা আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলো সাথে সাথে মরেনি ঠিকই, হাসপাতালে দীর্ঘ দিন মরণের সাথে যুদ্ধ করেছে শেষ পর্যন্ত্য তাকে আর বাঁচানো গেলো না
পেপার পত্রিকায় যা লিখা লিখি হচ্ছে, সবই যেনো আমার দোষ। আমি নাকে মুখে কটা মুখে দিয়ে, ছুটতে ছুটতে বাইরে বেড়িয়ে পরলাম।
কি আশ্চর্য্য! গাড়ীটার আবার কি হলো? কিছুতেই তো স্টার্ট নিচ্ছে না। আমি আবারো চাবীটা ঘুরিয়ে স্টার্ট দেবার চেষ্টা করলাম। ভুট ভুট করে শব্দ হয় ঠিকই, কিন্তু স্টার্ট নিচ্ছে না।

মিমি বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। খিল খিল করে হাসতে থাকলো। মিষ্টি সাদা দাঁত গুলো বেড় করে খিল খিল হাসিতেই বললো, খুব মজা! আমার এই বিশেষ দিনটিতে তুই পালিয়ে বাঁচতে পারবি না।

আমি গাড়ীতে আবারো স্টার্ট দেবার চেষ্টা করি। অথচ, কিছুতেই গাড়ী স্টার্ট নিচ্ছিলো না। আমি এক্সিলারেটরে একটা লাথি মেরেই ড্রাইভিং সীট থেকে বাইরে বেড়িয়ে এলাম। মিমিকে ধমকেই বললাম, তাহলে তুইই গাড়ীটা নষ্ট করেছিস।
মিমি খিল খিল হাসিতেই বললো, ওমা, আমি ঘর থেকে বেড়োলাম কখন? আমি তো তোর জন্যেই অপেক্ষা করছিলাম। প্রতিদিন সাইকেলে করেই তো কাজে যাই। শুধু এই দিনটিতেই তোর গাড়ীতে করে যাই। নিশ্চয়ই আমাকে ফেলে চলে যেতে চেয়েছিলি, তাই আমার বদ দোয়া লেগেছে। আয়, তাহলে আমার সাইকেলে উঠ
মিমি তার সাইকেলটা টেনে এনে তার সীটে চেপে বসতে থাকলো খিল খিল হাসিতে
আমি আহত হয়েই বললাম, তুই বুঝতে পারছিস না মিমি। আমার অনেক বিপদ! বিদেশী পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছে বিশিষ্ট শিল্পপতি আত্মহত্যা! আরো লিখেছে বিশিষ্ট হোটেল ব্যবসায়ীর এক মাত্র পুত্র নব্য হোটেল ব্যাবসায়ী তাহার জামাতা। কন্যাকে ছেড়ে চলে যাবার জন্যেই নাকি নিজ অপরাধ স্বীকার করে আত্মহত্যা করেছে।
মিমি আমার কথাগুলোকে খুব গভীর ভাবে নিলো বলে মনে হলো না। খিল খিল করে হাসতে হাসতেই বললো, খুব বেশী কষ্ট পেলে মানুষ আত্মহত্যা করতেই চায়। আমিও কতবার করতে চেয়েছি। আসলে, মরে গেলেই ভালো। আর কোন কষ্ট থাকে না। ভাবীর বাবা মারে গিয়ে ভালোই করেছে। এই জীবনে তার আর কোন কষ্টই রইলো না। আসলে বেঁচে থাকার মাঝেই হলো শুধু অনেক যন্ত্রণা।
আমি আহত গলায় ডাকলাম, মিমি?
মিমি তার সাইকেলটার প্যাডেলে পা চেপে বললো, উঠ। কোথায় যেতে চাইছিলি চল, নামিয়ে দিয়ে আসি।
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: Come in, এসো! --- রাখাল হাকিম - by ddey333 - 29-10-2022, 02:47 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)