Thread Rating:
  • 43 Vote(s) - 2.74 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy ভূতের রাজা দিল বর
#82
6. সমান্তরাল পৃথিবী

স্বপ্ন তো এর আগেও দেখেছি। কত স্বপ্ন। কিন্তু তা তো এতটা সত্যি কখনও মনে হয়নি। কখনও না। আর দীপা ম্যাডাম এর বুকের খাঁজে ওই কালো তিল টা, ওটা কিকরে স্বপ্ন হয়। সত্যিই তো এর আগে কখনই দেখিনি যে ওনার বুকের খাঁজে একটা তিল আছে। কেউ কখনও বলেও দেয়নি। ওনার বাড়িও যে বিবেকানন্দ রোড এর কোন গলিতে, তাও তো কখনও দেখিনি, কারুর মুখে শুনিও নি। স্বপ্ন এরম কি করে হয়। সাই ফাই মুভি এক দুটো হয়ত দেখেছি কিন্তু আমার স্বপ্ন তো সবকিছুকে হার মানায়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই মাথায় একটাই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল আর তা হোল কখন কলেজ এ যাবো । তার সবচেয়ে বড় কারণ হোল আজ দীপা দিদিমনির একটা ক্লাস ও আছে। আচ্ছা, অমার মনের ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে জাচ্ছে, দীপা ম্যাডাম এর ও কি তাই? এর উত্তর হয়ত কলেজ এ গেলেই পাবো ।

স্নান করে যখন ডাইনিং টেবিল এ গেলাম বাবার অর্ধেক খাওয়া হয়ে গেছে। আমার খেতে খুব একটা সময় লাগেনা। কিন্তু বাবা বেশ সময় নিয়ে খায়। খেতে খেতে বাবাকে প্রশ্ন করলাম,
'বাবা আমরা স্বপ্ন কেন দেখি'
বাবা কিছুটা মুচকি হেসে উত্তর দিল,
'এর পেছনে অনেক বিজ্ঞান সম্মত যুক্তি আছে। তবে সাধারনত আমরা সারাদিনে যা ভাবি, স্বপ্ন কিছুটা সেরম ই হয়। তবে সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করলে, স্বপ্ন বলে কিছু সেভাবে আসেনা। কারণ শরীর মস্তিস্ক উভয় ই এতো ক্লান্ত থাকে যে স্বপ্ন আসেনা। '

এক নিস্বাসে বাবা কথাগুলো শেষ করে দিল। পিসেমশাই এর কালকের কথা গুলো এখনো আমার মাথায় ঘুরছে। তবে শুধু পিসেমশাই বলছে বলে না, আমি নিজেও ঠিক এটা জানতে চাই যে বাবা ঠিক আমার মতোই স্বপ্ন দেখে কিনা।
একটু গুছিয়ে নিয়ে বলে উঠলাম,
'বাবা, আমাদের ক্লাস টিচার কাল বলছিলেন, ডায়েরি লেখা খুব দরকার। আমাদের মনের মধ্যে ঠিক কি চলছে তা যদি কোথাও লিখে রাখি, মনের অস্থিরতা টা কমে'
বাবাকে এতো ভাবতে দেখে মনে হোল বাবা টোপ টা গিলেছে।
'ডায়েরি, তা ঠিক ই বলেছিস। তা লেখা যায়'
আমি আর কথা বাড়ালাম না। দেখা যাক আমার টোপ কাজ করে কিনা। শুধু পিসেমশাইকে একটা মেসেজ করে দিলাম,
'বাবাকে ডায়েরি লেখার কথা তো বললাম। দেখা যাক কি হয়'

..............................................................................
সেকেন্ড পিরিয়ড এ ছিল দীপা দিদিমনির ক্লাস। আমি বসেছি মাঝামাঝি একটা বেঞ্চে। একদম শেষ এর দিকে বসলে একটু দূর হয়ে যায় আর একদম সামনের দিকে বসলে নজরে পড়ার ভয়। তাই দীপা দিদিমনির ক্লাস যেদিন যেদিন থাকে আমাদের এই মাঝামাঝি বসার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আমার আশপাশে কতগুলো ডেপো ছেলে বসেছে। ভয় শুধু এটাই। কারণ খুব ভাল করেই জানি এই সন্ত, দিগন্ত, আফজল দের ম্যাডাম ও খুব ভাল করে চেনেন, কিন্তু কিছু বলতে পারেনা। আফজল তো এতটা সাহস দেখায় ভাবা যায়না। কতবার যে ক্লাসের মধ্যেই নিজের বাড়া টা বার করে খিচতে শুরু করেছে তার ইয়ত্তা নেই। আর ফিসফিস করে যত রাজ্যের বাজে কথা বলা। তাই ওদের পাশে বসার আলাদা মজাই আছে। কোনওরকমে প্রথম পিরিয়ড টা কাটিয়ে দিলাম। টিচার ক্লাস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ই আফজল শুরু করল,
'দীপা দি দীপা দি ডোন্ট ওরি দীপা দি, আমরা তোমার ই দীপা দি'
ওর প্যারডি শেষ হতে না হতেই সন্ত শুরু করল,
'গুদে গন্ধ নেই সেতো ভাবতেও পারিনা...'
প্রত্যেকেই দীপা ম্যাডাম এর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু পুরো ক্লাস এর কেউ জানেনা,যে আমার অপেক্ষা টা অনেক বেশী।
হনহন করে ক্লাস এ ঢুকলেন ম্যাডাম। বগলে গোঁজা এক বান্ডিল খাতা।
'আমার আজ খাতা চেক করতেই সময় কেটে যাবে। আজ ক্লাস নেবো না। তোরা যা মাঠে গিয়ে খেলবি যা। আর কেউ যদি এখানে থাকিস তো কথা না বলে পড়াশুনা কর, আমার যেন ডিস্টার্ব না হয়'
সেকেন্ড পিরিয়ড এ মাঠে যাওয়ার সুযোগ কেই বা ছাড়তে চায়। হুড়োহুড়ি করে সবাই ক্লাসের বাইরে বেরোতে লাগলো। বুকের মধ্যে অনেকটা সাহস নিয়ে আমি বসে থাকলাম ক্লাসের মধ্যে। সাহস তো আমাকে দেখাতেই হত।

'কিরে তুই গেলি না'
কিছুটা আমতা আমতা করে উত্তর দিলাম,
'না ম্যাডাম। আমার শরীর টা ভালো নেই। '
হঠাৎ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন ম্যাডাম। আর তারপর আমার দিকে এগিয়ে এলেন।

আমি ছিলাম বেঞ্চটার মাঝামাঝি। মানে বেঞ্চ এর শুরু থেকে প্রায় দুহাত দূরে। ওই অবস্থা থেকে ম্যাডাম ধীরে ধীরে আমার দিকে ঝুঁকতে আরম্ভ করলেন। মানে তৃতীয় কোন ব্যক্তি দেখলে অবশ্যই মনে করবে স্লো মোশন এ ম্যাডাম সামনে ঝুঁকছেন। ওনার হাতটা তো আমার কপালে কিন্তু আমার চোখ দুটো সোজা ওনার বুকের দিকে। লাল রঙের ব্লাউজ টা খুব টাইট। বোঝাই যাচ্ছে এই ব্রা আর টাইট ব্লাউজের জন্য ওনার স্তন নিজের স্বাভাবিক আকারের চেয়ে বেশ কিছুটা সংকুচিত হয়ে আছে। আসলে হয়তো এর চেয়ে 2 3 ইঞ্চি বড়ই সাইজ হবে। আমার কপালে উষ্ণতা অনুভব করতে করতে ম্যাডাম ও যেন বার কয়েক আমার চোখের দিকে তাকালেন। যেন দেখতে চাইলেন, আমি ওনার শরীরটা দেখছি কিনা। কিছুটা ভয় পেয়েই আমি চোখ টা সরিয়ে নিলাম।
ওই একিভাবে ঝুঁকে থেকে শান্ত ভাবে বলে উঠলেন,
'উহু তোর জ্বর তো নেই'
আমার শরীরে জ্বর তো নেই কিন্তু ম্যাডাম এর উষ্ণতায় আমার শরীরে কম্পন শুরু হয়েছে। উনি ধীরে ধীরে আবার নিজের চেয়ারে ফিরে গেলেন। আমিও নিজের এই নার্ভাসনেস আর অস্থিরতা টা কাটাতে অঙ্ক বই আর খাতাটা খুলে বার করলাম। এই অবস্থায় অঙ্ক কেই বা করতে পারে। তাও বইয়ে চোখ টা রেখে বেশ কিছুক্ষন পরে থাকলাম। মিনিট দুই পর একবার মুখটা উঠিয়ে ম্যাডাম এর দিকে তাকালাম। উনিও তখন পরীক্ষার খাতায় মুখ গুজেছেন। এক ঝলক দেখে চোখ টা নামিয়ে নেবো এমন সময় চোখ টা হঠাৎ আটকে গেলো টেবিলের তলায়। ম্যাডামের একটা পা আরেকটা পায়ের ওপর তোলা। আর এতেই কিছুটা চাপ পড়ে বাঁ পায়ের শাড়িটা অনেকটা উঠে গেছে। মানে হাঁটুর নিচেই কিন্তু পায়ের মাসল টা অনেকটাই দেখা জাচ্ছে। বাইরে থেকে ম্যাডাম যত ফর্সা, শরীরের যে জায়গায় সূর্যের রোদ লাগেনা সেটা আরো ফর্সা। মানে দুধে আলতা গায়ের রং যাকে বলে। বেশ কিছুক্ষন এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকার পর খেয়াল করলাম যে ম্যাডাম ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অর্থাৎ আমি ধরা পড়ে গেছি। সঙ্গে সঙ্গে চোখ টা বই এর দিকে নিয়ে এলাম। এভাবে যে কতক্ষন কেটেছে খেয়াল নেই। মিনিট ১০ ১৫ তো হবেই।

সাহস করে আবার চোখ টা তুললাম। প্রায় পিলে চমকে যাওয়ার মতো আমার অবস্থা। কালো শাড়ি আর সাদা সায়া টা এক পাশে করে ম্যাডামের বাঁ হাত দিয়ে চেপে ধরা। হাঁটুর বেশ কিছুটা উপরে ওঠানো। ম্যাডাম কি আমায় ? নিজের চোখ কেই বিস্বাস করাতে পারছিলাম না। চোখ টা একবার নিচের দিকে একবার ওপরের দিকে করতে লাগলাম। না এবার আর ম্যাডাম আমার দিকে তাকালেন না। আমিও অনেকটা সাহস পেলাম। এভাবে কখন যে সময় টা পেরিয়ে গেল আমরা দুজনেই বুঝিনি। পিরিয়ড শেষ হওয়ার ঘন্টি পড়তেই ম্যাডাম বেরিয়ে গেলেন।
বাকি ছেলেরাও এক এক করে ক্লাস এ ফিরে এলো। আমাদের ক্লাসের সামনের জানলা টা দিয়ে স্টাফ রুম আর অফিস রুম টা দেখা যায়। ওখানে কেমন একটা জটলা টাইপের হয়েছে। হেড স্যার ও আছেন। বেশ কিছুক্ষন পর দেখলাম প্রায় 5 6 জন টিচার আমাদের ক্লাস এর দিকে এগিয়ে আসছেন। হেড স্যার ও আছেন, দীপা ম্যাডাম ও আছেন।

ক্লাসে ঢুকতেই আমরা সবাই উঠে দাঁড়ালাম। ভূগোল স্যার সোজা ফার্স্ট বেঞ্চ এ যে বসেছিল তার ব্যাগ টা কেড়ে নিল। হাত ঢুকিয়ে হাতড়ে হাতড়ে কিছুটা সময় খুঁজে আবার ব্যাগ টা ফেরত দিয়ে দিলো। ওনার দেখাদেখি বাকি স্যার রাও একেক জনের ব্যাগ হাতড়ে হাতড়ে দেখতে শুরু করলেন। হঠাত এলো আমার পালা। একেকটা বই খাতা বার করে ওলোট পালট করে দু তিন জন মিলে দেখতে শুরু করলেন। বাকিদের ও চেক হোল কিন্তু এতো নিখুঁত ভাবে না। আমার ব্যাগ থেকে এক এক করে সব বই খাতা বার করা হল। বাকি ছেলেরাও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার বারবার মনে হচ্ছিল, চেকিং টা বোধ হয় আমার জন্য, বাকিরা শুধু ফরমালিটি। আমার ব্যাগ চেক করেই ক্ষান্ত হলেন না স্যার রা। আমার পকেট হাতড়ে মোবাইল টা নিয়ে যায় কিছু দূরে যেখানে দীপা ম্যাডাম বসে ছিলেন। বেশ কিছুক্ষন মোবাইল টা ঘেঁটে দেখে দিয়ে আবার ফেরত দিয়ে দেয় ।
ভূগোল স্যার এর দীপা ম্যাডাম এর কাছে গিয়ে ফিসফিস করে, 'না দীপা কিছু নেই' বলাটাও আমার কানে আসে।
...........................................................................
মনটা খুব খারাপ লাগছিল। আমি তো কারুর কোন ক্ষতি করিনি। পুরো ক্লাসের সামনে এরম অপমান..। শরীর ভালো নেই অজুহাত দিয়ে টিফিনে বাড়ি চলে এলাম। তাহলে কি আমার মতো দীপা ম্যাডাম ও কালকের স্বপ্ন টা দেখেছে। তাই কি আমায় হাতে নাতে ধরতে এতকিছু। মা হয়ত খুব তাড়াতাড়ি ধরে ফেলে আমার মন খারাপ থাকলে।
'কিরে আজ কলেজ থেকে চলে এলি যে'
মাকে তো লুকাতেই হত। তাই কোনভাবে সামলে নিয়ে উত্তর দিলাম,
'আরে আজ সেরম ইম্পরট্যান্ট আর কোন ক্লাস ছিল না। তার চেয়ে ঘুমাই তাতে বেশী ভালো হবে। সন্ধেবেলা পড়তে বসবো'
মাও আর ঘাটাল না আমায়। অনেক্ষন মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখিনি। হঠাৎ চোখ গেলো মোবাইলে। অনেকগুলো মেসেজ। প্রথম টা অজিতদার আর দ্বিতিয় টা পিসেমশাই এর।
'কিরে তুই তো কিছুই জানালি না। ফিজিক্যাল সাইন্স পড়ানোর কি হোল ।
দেখ আমি কিন্তু খারাপ নয়। আমি শুধু তোর বাড়িতে প্রবেশ করতে চাই আর কিছু না'
উত্তর তো আমাকে দিতেই হবে।
'আমায় কয়েকটা দিন সময় দাও। কলেজ এর কিছু বন্ধুর সাথে কথা বলেছি। ব্যাচ এর জন্য ছেলে জোগাড় করেই তোমায় জানাচ্ছি। ওয়েট কর কয়েকটা দিন'
সঙ্গে সঙ্গে ওকে বলে রিপ্লাই করে দিলো অজিতদা। পিসেমশাই এর মেসেজ গুলো পড়তে শুরু করলাম,
'সোমু, আজ সারাদিনে ঠিক কি কি হোল আমায় জানাস। কোথাও কিছু প্রবলেম হলেও আমায় জানাস।'
ঠিক কি উত্তর দেবো বুঝতে পারছিলাম না। তবে আমিও মনে মনে পণ করেছি, কিছুটা হলেও পিসেমশাইকে জানাবো । না জানালে বরং প্রবলেম আরো বাড়বে।

'আজ হঠাৎ দীপা ম্যাডাম আর বাকি স্যার রা আমার ব্যাগ চেক করল। মোবাইল চেক করল। পুরো ক্লাসের সামনে।'
'আমার খুব খারাপ লেগেছে। এর আগে ক্লাসে এরম কখনও হয়নি।'
'ওই যে অজিতদা আমায় মেসেজ করেছে। বাড়িতে আসতে চায়। আমি বুঝতে পারছি না কি করব'
সাথে সাথে উত্তর এলো,
'এই ব্যাপার তাই তো। দেখ অজিতের নাম্বার টা আমায় দে। ও আর তোকে ডিস্টার্ব করবে না। এটা আমার প্রমিস '
এটা তো আমার মাথায় আসেনি। সত্যিই তো বাবা বা পিসেমশাই কেউ যদি একটু ধমক দেয় হয়ত অজিতদার ঝামেলা টা একেবারে মিটে যাবে।
'কিরে উত্তর দিচ্ছিস না যে। আমি বলছি না এরপর থেকে ও আর তোকে ডিস্টার্ব করবে না'
এটা তো আমার কাছে জল না চাইতেই বৃষ্টি। এতক্ষনে একটু মনটা হালকা লাগলো। কিছু তো একটু সমাধান পেলাম। পিসেমশাইকে অজিতদার নাম্বার টা দিয়ে দিলাম।
'মা কি করছে রে?'
একবার আমার ঘরটা থেকে বেরোলাম। না মা বেড রুমে নেই। আকাশ টা কালো হয়ে গেছে। এক্ষুনি হয়ত বৃষ্টি আসবে খুব জোরে । টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়া শুরু ও হয়ে গেছে। ছাদের কাছে গিয়ে বুঝলাম মা ওপরে । কাপড় তুলছে। ওখানে দাঁড়িয়েই রিপ্লাই করলাম,
'এই বৃষ্টি আসছে। টিপ টিপ করে বৃষ্টি শুরু ও হয়ে গেছে। মা ছাদে কাপড় তুলছে '
'ওঃ আর তুই এখন কি করবি? পড়বি?'
'না গো ঘুম ঘুম পাচ্ছে। ঘুম থেকে উঠে পড়বো '
'আচ্ছা আচ্ছা শুয়ে পড়'
আমার ঘরটায় এসে যখন ঢুকলাম, চারপাশ এ ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছিল। ঘুমানোর এর চেয়ে ভাল সময় আর নেই, ক্লান্তি ও লাগছিল। চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকলাম। মাথাটা সেই রাতের মতোই ধরে এলো। কয়েক মুহুর্ত পর আর চোখ দুটো খুলতে পারলাম না। আসতে আসতে পউছে গেলাম অন্য একটা জগতে।
'প্রচণ্ড জোরে ঝোড়ো হাওয়া আর তার সাথে মুসুল ধারে বৃষ্টি। মা উপরে কাপড় গুলো তুলতে তুলতে চিতকার করে উঠল,
'সোমু দরজা জানালা গুলো বন্ধ করে দে। সব ভিজে যাবে। '
আমি তখন আমার ঘরে। জানলার পাল্লা দুটো টানলাম কিন্তু কিছুতেই ছিটকিনি টা লাগাতে পারলাম না। কিছুদিন আগেই জানলায় রং করেছিল। চিটিয়ে বসে গেছে। নখ দিয়ে খুব চেষ্টা করলাম। পারলাম না কিছুতেই। বাড়ির সবকটা জানালা ই এরম হবে। এদিকে প্রবল বৃষ্টির ছাট আসছে বন্ধ না করলেও না। অনেক্ষন ধরে চেষ্টা করেও যখন পারলাম না, দৌড়ে গেলাম বাবা মার শোয়ার ঘরে। জানলার ঠিক পাশেই আলনা। আর আলনা তে মূলত মায়ের নাইটি গুলোই ছিল। যখন পৌছালাম তখন ভিজে জব জবে । কিন্তু জানলার শিকল গুলো এমনভাবে আটকে রয়েছে কিছুতেই বন্ধ করতে পারলাম না। জানি মার কাছে বকা খাবো । কিন্তু কীই বা করবো। জানলা গুলো বন্ধ করতে না পেরে সোজা দৌড়ালাম সামনের দরজার দিকে। এখানেও জলে ঠিক থিক করছে। দরজাটা বন্ধ করতে যাব, হঠাৎ চোখ গেলো আমাদের বাড়ি লাগোয়া আম গাছ টা র দিকে। কোন একজন মহিলা যেন ওখানে দাঁড়িয়ে। অসহায় অবস্থা দেখে আমি ই আওয়াজ দিলাম,

'ওখানে কে? আপনি আমাদের বাড়ির ভেতরে এসে যান। এতো বৃষ্টি তে ভিজে যাবেন '
আমার কথা শুনে ভদ্র মহিলা পেছন ঘুরে তাকালেন আর আমিও পিলে চমকে গেলাম। দীপা দিদিমনি দাঁড়িয়ে আমাদের বাড়ির সামনে। আজি কলেজ এ ওরম হয়েছে। ওনার একটু দ্বিধা বোধ ছিল। কিন্তু বৃষ্টির জন্যই হয়ত না পেরে ছুটতে আমাদের বাড়ির ভেতরে চলে এলেন। যাকে বলে একেবারে কাক ভেজা। অনুরূপ ভিজে মাও নামল ওপর থেকে। দীপা দিদিমনিকে দেখে কিছুটা অবাক হয় মা। মা তো আর দিদিমনিকে চেনেনা। আমিই পরিচয় করিয়ে দিলাম,
'মা, উনি আমাদের ইতিহাস দিদিমনি। বাড়ি ফিরছিলেন। বৃষ্টি তে আটকে গেছেন'
মা কিছুটা অবাক হয়েই এগিয়ে এলেন।
'আপনি তো পুরো ভিজে গেছেন। দাঁড়ান একটা নাইটি দি নয়তো শরীর খারাপ করবে। আর বৃষ্টি থামতে থামতে আপনার কাপড় ও শুকিয়ে যাবে'
দীপা দিদিমনি আমতা আমতা করে কিছু বলে বাধা দিতে গেলেন কিন্তু মা সেরম ভাবে পাত্তাও দিলো না। অগত্যা দীপা ম্যাডাম ও মার পেছন পেছন ভেতরে ঢুকল। আর সবার পেছনে আমি দুজনকে ফলো করতে লাগলাম। একদম ভেতরের ঘরে যেখানে আলনা টা আছে, সেখানে গিয়ে তো মার মাথায় হাত। আলনায় রাখা সবকটা কাপড় ভিজে একদম চপচপ করছে। জানি মনে মনে মা আমার ওপর ই রাগ করছিল কিন্তু কিছু বললনা দীপা ম্যাডাম এর সামনে।
'কি করি বলুন তো, নাইটি গুলোও তো সব ভিজে গেছে। এদিকে আলমারির চাবি ও তো সমুর বাবার কাছে। ওর বাবা তো আবার আজ ফিরবে না। কি করি বলুন তো '
মায়ের এই ইতস্তত ভাব দেখে দীপা ম্যাডাম কিছুটা উদগ্রীব হয়ে বললেন,
'আরে এতো কেন ভাবছেন। বাড়িতে কোন তোয়ালে নেই। শুধু তো এই কাপড়গুলো একটু শুকিয়ে নিলেই হয়'
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে মা বলে 'না তোয়ালে তো নেই। কিন্তু গামছা আছে। '
তোয়ালে এর জায়গায় গামছা শুনে জিভ টা সামনের চারটে দাঁত দিয়ে একবার কেটে একটু লজ্জা বোধ প্রকাশ করেন দীপা ম্যাডাম। যতই হোক তোয়ালে তাও একটু মোটা হয়, গামছা তো একদম পাতলা। শরীরের প্রতিটা অঙ্গের স্পষ্ট অবয়ব ফুটে উঠবে। ম্যাডাম এর দ্বিধা বোধ দেখে মাই বলে ওঠে,
'আরে লজ্জা পাবেন না। সমুর বাবা আজ ফিরবে না। আপনার কাপড়টা শুকিয়ে যাওয়া অবধি এটা পড়ে থাকুন'
দীপা দিদিমনি কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই মা ম্যাডাম কে লাল মাঝারি সাইজের গামছা টা হাতে ধরিয়ে দেয় মা। আর নিজেও একটা অনুরূপ গামছা ওপরের দড়ি টা থেকে পেরে নেয়। মায়ের হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ভিজে শাড়িটা খুলতে দেখে দীপা দিদিমনি ও একটু বল পায়। মায়ের দিকে তাকিয়ে মাকে নকল করে লাল শাড়ি টা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খুলতে শুরু করে। জানলার গরাদ গুলো ধরে দাঁড়িয়ে থাকি আমি।
হঠাৎ একটা কলিং বেলের আওয়াজ। শুধু যে আমি ঘাবড়ে গেলাম তা নয়। ঘাবড়ে গেল মা আর দীপা ম্যাডাম ও। ওরা ঘাবড়ে গেল এই সময়ে বাড়িতে কে এলো আর নিজেদের অর্ধ নগ্ন অবস্থা ভেবে। আর আমি ঘাবড়ে গেলাম যদি ওরা পেছন ফিরে দেখে, যদি আমি ধরা পড়ে যাই সেই ভয়ে। যদিও আমি সাথে সাথে মুখটা সরিয়ে নিয়েছিলাম জানালা থেকে।
'সোমু দেখ তো কে এলো। সেরম কেউ হলে বাইরের ঘরে বসাবি। আমরা কাপড় ছারছি এখানে'
ওখানে আর না দাঁড়িয়ে সোজা মূল দরজার দিকে যেতে লাগলাম।
দরজা খোলা মাত্র সামনে দাঁড়িয়ে অজিতদা। এরমাঝে বেশ কয়েকবার মেসেজ এ কথা হয়েছে কিন্তু এভাবে যে খুঁজে খুঁজে কোনওদিন আমার বাড়িতে এসে যাবে তা আমি ভাবিনি।
'কে এসেছে রে?'
বেশ জোরে চিতকার করেই বলল মা। আমি আর কি বলি, একটু জোরে চেচিয়ে উত্তর দিলাম,
'মা ওই যে ফিজিক্যাল সাইন্স এর টিচার বলেছিলাম না, উনি এসেছেন'
ভেতর থেকেই মা উত্তর দিলো,
'তোরা ওপরের ঘরে চলে যা। এদিকটায় আসিস না কিছুক্ষন'
বুঝলাম মা আর দীপা দিদিমনি দুজনেই কিছুটা অপ্রস্তুত অবস্থায় আছেন। আমিও আর কথা না বাড়িয়ে অজিতদাকে নিয়ে সোজা উপরে চলে গেলাম। অজিতদা ভিজে চপ চপে হয়ে গেছে। আমিই বললাম,
'এদিকটা তে এখন কেউ আসবে না। তুমি জামা কাপড় গুলো ছেড়ে ফেলতে পার'
কিছুক্ষন আমতা আমতা করার পর, অজিতদা একে একে নিজের টি শার্ট প্যান্ট সব খুলে শুধু জাঙ্গিয়া টা পড়ে খাটে বসল। অজিতদার শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লিঙ্গ টার থেকে আমি কিছুতেই চোখ সরাতে পারলাম না।
'কিরে কি দেখছিস? '
অজিতদার কথায় তাড়াতাড়ি করে চোখ টা সরিয়ে নিলাম।
'তোর মাকে দেখতে পাবো যত ভাবছি তত ওই বাসের ঘটনা টা মনে পড়ে যাচ্ছে। (জাঙ্গিয়ার ওপর হাত বোলাতে বোলাতে) তাই এরম'
কথাটা শেষ করার সাথে সাথে বিশ্রী একটা হাসি।
'নে তুই বই খাতা বার কর। আমি নিচ থেকে তোর মার সাথে আলাপ করে আসি'
সঙ্গে সঙ্গে আমি উঠে দাঁড়িয়ে দুহাত বাড়িয়ে অজিতদা কে আটকানোর চেষ্টা করলাম।
আমায় এক ধাক্কা দিয়ে অজিতদা সোজা নিচের দিকে যেতে থাকলো । পেছন থেকে জোরে একবার চিত্কার করলাম,
'নিচে যেওনা। মা বারণ করেছে'
অজিতদা দেখলাম খিল খিল করে হেসে উঠল।
'আরে আমি সব জানি রে। দীপা ম্যাডাম এসেছে তাই তো। আমি সব জানি। তুই চিন্তা করিস না। দীপা ম্যাডাম কে আমি ওপরে পাঠিয়ে দিচ্ছি'
'শোন অজিতদা, প্লিস শোন প্লিস নিচে যেওনা। মা বকবে।'
..........….........................................................................................................................
'কিরে আবোল তাবোল কি সব বকে যাচ্ছিস । কে অজিতদা? কি স্বপ্ন দেখছিলি নাকি'
মার কথায় আমার ঘুমটা ভেঙে যায়। প্রায় ধরপরিয়ে উঠে বসি।
দেখি মা এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে।
'চল বাবা এসে গেছে। ডাকছে তোকে। '
বেসিনে গিয়ে চোখ মুখটা একটু ধুয়ে নিয়ে ভেতরের ঘরে গেলাম।
'এইযে সোমু এসে গেছে। কোথায় যাবে বলছিলে'
বাবা দেখলাম কিছুটা বিরক্তই হল।
'আরে ওকে ডাকলে কেন, ও পড়ুক না। এগুলো অফিস পার্টি ওর ভাল লাগবে না। আমরা দুজন যেতাম।'
[+] 9 users Like golpokar's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ভূতের রাজা দিল বর - by golpokar - 23-10-2022, 08:22 PM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)