11-10-2022, 10:10 PM
(This post was last modified: 11-10-2022, 10:14 PM by Tilottama. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(04-10-2022, 05:08 PM)Henry Wrote: অরুণাভ স্ত্রীর মেজাজ বুঝতে পেরে ঘুরে পড়ল কাবেরীর দিকে। গাল ছাড়িয়ে হাসল,---লাইফটা এনজয় করতে শেখো কাবেরী। তোমার হাতে তো অফুরন্ত সময়। স্বামী নামক বস্তুটির ওপর খামোখা রাগান্বিত হওয়া কমবে বৈকি। এখন আমায় ঘুমোতে দাও।
অরুণাভর এই হাসিটা আজকাল কাবেরীর বড্ড বিরক্তিকর লাগে। এই হাসি যেন তাচ্ছিল্যের হাসি। কাবেরীর আজকাল দেরীতে ঘুম আসে। তাতানের ঘরের টেবিল ল্যাম্পের আলো ছড়িয়ে পড়ছে ড্রয়িং রুমে। আইআইটির প্রিপারেশন নিচ্ছে ও। ছেলেটার একাগ্রতা ভীষণ। চোখে স্বপ্ন। সকলের যেমন থাকে। কাবেরীর নেই। কতক্ষণ এপাশ-ওপাশ হল। এই লাইফ এনজয়ের ব্যাপারটা কাবেরীর মাথায় একেবারেই আসে না। সকাল থেকে কলেজে আর সংসারের একটার পর একটা দিন পেরোতে পেরোতে যখন ছেলেরা বড় হয়ে গেল, তখন দেখতে পেল চারপাশটা কেমন নিঃসঙ্গ হয়ে রয়েছে। অরুণাভর কথাটা তখন থেকে ভাবাচ্ছে তাকে। হয়ত তার নিঃসঙ্গতার এটাও একটা কারণ। তার জীবনটা বড্ড একপেশে, দেওয়ালে আঁটা ক্যালেন্ডারের মতন। ইউনিভার্সিটির বন্ধুদের মধ্যে একমাত্র অসীমকেই তার স্বল্প হলেও ভালো লাগতো। অসীমের কবি কবি ভাবটার জন্যই হয়ত। বাংলায় এমএ করায় অসীমের এটা সহজাত হয়ে গিয়েছিল। কাবেরীকে ওর পছন্দ ছিল। যদিও কাবেরী ওকে তেমন পছন্দ না করলেও, আবার অপছন্দও করত না। তবে অসীমের প্রতি কাবেরীর কোনোদিন প্রেম জেগে না ওঠায় সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। অসীম এখন কলেজে অধ্যাপনা করে। বেশ কয়েকটা কবিতার বইও বেরিয়েছে অসীমের। গড়িয়াতে থাকত কিছুদিন আগে পর্যন্ত। মাত্র ছয় মাস হল বদলি হয়ে চলে গিয়েছে নর্থ বেঙ্গলে, ইউনিভার্সিটিতে। মাঝে মধ্যেই ও কাবেরীদের বাড়ি আসত, কখনো কখনো ওর স্ত্রী ললিতাকেও সঙ্গে নিয়ে আসত। বিশেষ করে ওর নতুন কোনো লেখা ছাপা হলে কাবেরীর হাতে বইটা তুলে দিতে ও একবার আসবেই। অসীমের সাময়িক সাহিত্য চর্চাকেন্দ্রিক আড্ডার কারণে সংসার আর কলেজের শিক্ষিকা জীবনের একঘেয়েমিতার মাঝে কাবেরী স্বল্পকালীন মুক্তি পেত তবুও। সুযোগ পেলে অসীম উপদেশও দিত দেদার। কাবেরীর মধ্যে জীবনের ঘাটতি দেখে একদিন বলেছিল -----দেখ কাবেরী, বার্ধক্য আর বৃদ্ধত্ব এক নয়। বয়স আমাদের বার্ধ্যক এনে দেয়। আর বৃদ্ধত্ব আসে মন থেকে। দেখ না আমরা যে সব সাহিত্য সৃষ্টি করি, চরিত্রগুলোকে সজীব করি, সুন্দর করি, এককথায় যৌবনের দূত তৈরি করি, সেসব আমাদের মনের মধ্যে যৌবন থাকে বলেই। তা নাহলে বয়সের সাথে সাথে আমাদের সাহিত্যের চরিত্রগুলো লোলচর্ম হয়ে লাঠি ধরত।
স্বামী থেকে অন্য পুরুষ, সবাই বিনা চাওয়াতেই উপদেশ দিচ্ছে। ওদের সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্স দেখে গা রিরি করে।
খুব ভাল ছবি আঁকছেন, চমৎকার তরতরিয়ে চলেছে গল্প। মন বলছে আরো একজন লেখকের সন্ধান পেলাম যিনি মেয়েদের মনের কথা বলেন।