21-09-2022, 02:09 PM
কয়েকটা দিন কেটে গেলো। সমীরের সাহসেই কুলোচ্ছিলোনা এধরণের কথা অনুরিমার সামনে রাখতে। অনুরিমা কি ভাববে ? ওর চোখে সে কতোটা নিচে নেমে যাবে এসব বলার পর ? কিন্তু মন ? মনের খিদে ? সেটা কে সামাল দ্যায় কি করে ? সমীরের তো এখন অফিসেও মন বসছিলো না। বারবার এসব উদ্ভট চিন্তা মাথায় আসে। তার আর ভালো লাগছে না। সে হাঁফিয়ে উঠেছে নিজের মনের সাথে দ্বন্দ্ব করতে করতে।
এরই মধ্যে একদিন হঠাৎ রাস্তায় অনুরিমার সাথে দেখা সুচরিতার। তার সেই পুরোনো রুমমেট যাকে সমীর পছন্দ করতো না। অনুরিমা তিন্নি কে নিয়ে একটু বেড়িয়ে ছিল , বিগ বাজারে টুকিটাকি জিনিস পত্র কিনতে। আর সেখানেই কলেজ বন্ধুর সাথে দেখা।
"কি রে অনু ? চিন্তে পারছিস ? "
"আরে , সুচরিতা তুই ! কেমন আছিস ? কতোদিন পর !"
"তুই তো একটুও চেঞ্জ হোসনি দেখছি। সেই অপরূপা সুন্দরীই রয়েগেছিস। বিয়ের পর তো আর যোগাযোগ রাখিস নি। হ্যা রে , সমীর আছে তো নাকি ছেড়ে দিয়েছিস ওকে , হি হি। "
"ধ্যাৎ , যতো সব বাজে কথা। আমার সব ঠিকই আছে , তোর কথা বল। "
সুচরিতা না জানুক , অনুরিমা তো মনে মনে জানে কেন সে তার কলেজের বন্ধুর সাথে যোগাযোগ রাখেনি। তার স্বামীই রাখতে বারণ করেছিল। আগেই বলেছি সমীর ঠিক পছন্দ করতো না সুচরিতা কে। আর না করার যথেষ্ট কারণও ছিল। ভীষণ বাচাল , যখন তখন আলটপকা মন্তব্য করে দ্যায়। এই যেমন ছোট্ট তিন্নির সামনেই জিজ্ঞেস করে বসলো, ওর মা কি ওর বাবা কে ছেড়ে দিয়েছে ? এটা কোনো কথার কথা হলো !
দুজনের অনেকদিন পর দেখা। তাই একটা ক্যাফেতে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ কথা বার্তা হলো , অল্প-স্বল্প পেট পুজো হলো। সুচরিতা তিন্নি কে একটা চকলেট কিনে দিলো , যদিও অনুরিমা না করছিলো , তবুও সে জানে তার বান্ধবীর কথা সে কলেজ লাইফ থেকেই ফেলতে পারেনা। দুজনের মধ্যে ফোন নম্বরের আদান-প্রদান হলো। তারপর অনুরিমা সুচরিতার সাথে যোগাযোগ রাখার প্রমিস করে তিন্নি কে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো।
অনুরিমা ভাবছিলো সুচরিতার সাথে দেখা করার কথাটা সে সমীরকে বলবে কি না। কিন্তু সে তো কোনোদিনও তার স্বামীর কাছ থেকে কিচ্ছুটি লুকোয়নি। তাহলে আজ কেন অন্যথা করবে। রাতের বেলা তিন্নি ঘুমোনোর পর অনু সমীরকে আজকের ঘটনাক্রম শুরু থেকে সব বললো। সুচরিতার কথা শুনে সমীর তেমন ভাবে কোনো রিএক্ট করলো না , যা অনুরিমা কে একটু অবাক করলো।
অনুরিমা কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছিলো সমীর প্রচন্ডভাবে সব ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়েছে। অনুরিমার সমীরের জন্য চিন্তা হচ্ছিলো। অনুরিমা তাই ফের জিজ্ঞেস করলো সমীর কে সবকিছু ঠিক আছে। সমীর চুপ করে রইলো। কোনো উত্তর দিলো না। অনু এবার সমীর কে জড়িয়ে ধরে আরো আদর করে জিজ্ঞেস করলো , "সমু , কি হয়েছে , বলোই না সোনা !"
"কি করে বলি তোমায় অনু , তুমি আমায় ভুল বুঝবে। "
"তোমার কি আমার উপর এইটুকু বিশ্বাস নেই সোনা , এতোদিনে তুমি আমায় এই চিনলে ? তুমি সৎ ভাবে কিছু বললে আমি কেন তার ভুল ব্যাখ্যা করতে যাবো ?"
সমীর চুপ করে রইলো , তা দেখে অনুরিমা আবার বললো , "এবার দয়া করে বলবে , কি এমন কথা যা তুমি আমায় বলতে পারছো না ?"
"আচ্ছা অনু , তুমি কি খুশি ?"
"মানে ?"
"মানে , তোমার একঘেয়েমি লাগেনা এই জীবনটা নিয়ে ?"
"আচ্ছা সমু , তোমার জীবনে কি অন্য কেউ এসছে ?", আতঙ্কিত হয়ে অনুরিমা জিজ্ঞেস করলো। সচরাচর বিবাহীত মহিলারা নিজের স্বামীকে নিয়ে যেরকম ওভারথিঙ্কিং করে থাকে আর কি, অনুরিমাও তার ব্যাতিক্রম ছিলোনা।
"ধুর , তুমি কি বলোনা , সত্যি ! তোমার মতো এতো সুন্দরী মেয়ে কে ছেড়ে আমি অন্য কোথাও মন দেবো , সেটা ভাবলেও বা কি করে। "
"তাহলে ? ব্যাপারটা কি ?"
"সেটাই তো বলবো বলবো করে বলে উঠতে পারছি না। একটু ধৈর্য ধরে শুনতে হবে। "
"ঠিক আছে , বলো। "
"আচ্ছা আমাদের যে এতো বছর বিয়ে হয়ে গেলো , তোমার একবারও একঘেয়েমী লাগেনা , আমাদের সেক্সউয়াল লাইফ নিয়ে ?"
"সত্যি বলতে এখন এতো বছর পর আমাদের জীবনের প্রায়োরিটি অনেকটা বদলে গ্যাছে , তাই নয় কি ? আমরা আরো বেশি সংসারী হয়েছি। আমাদের মেয়ে হয়েছে , তার দেখভাল করাটা আমাদের কর্তব্য। তাই এখন আর এসব নিয়ে অতো ভাবিনা। তাছাড়া আমরা তো প্রায়ই মিলিত হই। সবকিছু তো ঠিকই আছে। "
"তুমি আসলে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়েছো বলেই তোমার অসুবিধা হচ্ছেনা। "
"কেন ? তোমার বুঝি সমস্যা হচ্ছে ? আমি কি তোমাকে সুখী করতে পাচ্ছিনা ?"
"নাহঃ , সেরকম নয়। এখন মনে হচ্ছে আমিই ভুল। আমার এখন তোমার মতো নিজের কাজে , সংসারে মন দেওয়া উচিত। তা না করে আমি কিসব আলটপকা জিনিস ভাবছি। "
"আচ্ছা তুমি কি আমাকে নিয়ে আনস্যাটিসফাইড , বিছানায়?"
"তোমায় কি করে বলি , সমস্যাটা তোমার নয় , আমার। বেশ কয়েকমাস ধরে আমার মাথায় এক অদ্ভুত চিন্তা জেঁকে বসেছে , যেটা আমি কিছুতেই নামাতে পারছি না। "
"কি চিন্তা , বলো। "
"বলে লাভ নেই। তুমি আমাকে ভুল বুঝবে। এটা এক ধরণের বিকট ফ্যান্টাসি। "
"আরে বাবাহঃ, বলেই দেখো না। আমি তো তোমার স্ত্রী নাকি। আমাকে বলবে না তো কাকে বলবে। প্রমিস করছি , আমি কিচ্ছু মাইন্ড করবো না।"
"তুমি কাকোল্ড ফ্যান্টাসির কথা শুনেছো ?"
"কাকোল্ড ফ্যান্টাসি ? নাহঃ তো। তুমি তো জানোই এসব ব্যাপারে আমার নলেজ একটু কম। আমি তো আর সুচরিতার মতো এঁচোড়ে পাকা নই। হি হি। .."
"তোমাকে তাহলে কয়েকটা এরোটিক গল্প পড়তে দিচ্ছি , যা কাকোল্ড ফ্যান্টাসি নিয়ে লেখা। সেগুলো পড়লে তুমি বুঝতে পারবে , আমি কি বলতে চাইছি। কিন্তু একটাই রিকোয়েস্ট , দয়া করে আমাকে ভুল বুঝো না। তোমাকে আমি কোনো ব্যাপারেই কোনো কিছু করতে বাধ্য করবো না। মানুষের চাহিদার কোনো সীমা পরিসীমা নেই , তাই হয়তো এসব খেয়াল আমার মাথায় এসেছে। ভালো না লাগলে , এই ব্যাপারটা ভুলে যেও। মনে কোরো যে এরকম কোনো কথা আমাদের মধ্যে কোনোদিনও হয়নি। ঠিক আছে।.... "
"আচ্ছা বেশ , আমি পড়বো , জানবো তোমার কি এমন ফ্যান্টাসি আছে যা আমাকে বলতে তুমি এতোটা দ্বিধা বোধ করছো। আর ইন কেস যদি ভালো লাগে , তাহলে তোমাকে জানাবোও। কেমন। ...."
সমীর ড্রয়ার থেকে একটা পেনড্রাইভ বের করে দিলো , সেটা অনুরিমার হাতে দিয়ে বললো , "এতে সেই গল্পগুলো রয়েছে। কালকে তিন্নি কে কলেজে দিয়ে এসে , বাড়ির সব কাজ সেরে ল্যাপটপে কানেক্ট করে সব গুলো পোড়ো। "
"ঠিক আছে। ", এই বলে অনুরিমা সমীরের কাছ থেকে পেনড্রাইভ টা নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিলো।
পরের দিন নিয়মমাফিক সমীর অফিসের জন্য বেড়িয়ে গেলো। অনুরিমা তিন্নিকে কলেজে দিয়ে এলো। ফেরাটা ওর ঠাকুরদা নিয়ে আসে কলেজ থেকে। সেদিন সমীরের আরোই অফিসের কাজে মন বসছিলো না। খুব টেনশন হচ্ছিলো ওর এটা ভেবে যে বাড়ি ফিরে অনুর কোনো রূপটা ওকে ফেস করতে হবে। অনু কি খুব রেগে যাবে এসব দেখে ? সারাটা দিন অনু একবারও ফোন করেনি। রোজ তো এরকম হয়না। ও কি এখন ওইসব সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ গল্পগুলো পড়ছে আর মনে মনে আমার প্রতি ক্ষোভে ফেটে পড়ছে ? নাহলে জল খেতে খেতেও আমি এতো বিষম খাচ্ছি কেন ? জানিনা বাড়ি গিয়ে কি দেখবো ?
এসি ঘরে বসেও সমীর এসব আকাশকুসুম ভেবে নিজের বিপি বাড়াচ্ছে , আর দর দর করে ঘামছে। ওর নিজেরও অনুকে ফোন করার সাহস হচ্ছে না। ও শুধু কাঁপা কাঁপা হাতে অনুকে একটা মেসেজ করলো , "খাওয়া হয়েছে?"
অনু কোনো রিপ্লাই দিলো না , যা যথেষ্ট ছিল সমীরকে একটা মিনি হার্ট অ্যাটাক দেওয়ার জন্য। অবশেষে সমীর ভাবলো , "যা হবে বাড়ি গিয়ে দেখা যাবে। আমি তো শুধু নিজের গভীর সুপ্ত বাসোনাটাই সৎ ভাবে নিজের স্ত্রীয়ের কাছে প্রকাশ করেছি মাত্র। খুব জোড় কি আর হবে , রাগ করবে , অশান্তি করবে। আমি মাথা নিচু করে ওর সব রাগ কে অ্যাবসর্ব করে নেবো। পারলে পা ধরে ক্ষমাও চেয়ে নেবো। কিন্তু এই বিকট ফ্যান্টাসিকে এতো মাস ধরে কাউকে না বলে নিজের ভেতরে রেখে বয়ে নিয়ে চলার থেকে তো মুক্তি পাবো। "
এরই মধ্যে একদিন হঠাৎ রাস্তায় অনুরিমার সাথে দেখা সুচরিতার। তার সেই পুরোনো রুমমেট যাকে সমীর পছন্দ করতো না। অনুরিমা তিন্নি কে নিয়ে একটু বেড়িয়ে ছিল , বিগ বাজারে টুকিটাকি জিনিস পত্র কিনতে। আর সেখানেই কলেজ বন্ধুর সাথে দেখা।
"কি রে অনু ? চিন্তে পারছিস ? "
"আরে , সুচরিতা তুই ! কেমন আছিস ? কতোদিন পর !"
"তুই তো একটুও চেঞ্জ হোসনি দেখছি। সেই অপরূপা সুন্দরীই রয়েগেছিস। বিয়ের পর তো আর যোগাযোগ রাখিস নি। হ্যা রে , সমীর আছে তো নাকি ছেড়ে দিয়েছিস ওকে , হি হি। "
"ধ্যাৎ , যতো সব বাজে কথা। আমার সব ঠিকই আছে , তোর কথা বল। "
সুচরিতা না জানুক , অনুরিমা তো মনে মনে জানে কেন সে তার কলেজের বন্ধুর সাথে যোগাযোগ রাখেনি। তার স্বামীই রাখতে বারণ করেছিল। আগেই বলেছি সমীর ঠিক পছন্দ করতো না সুচরিতা কে। আর না করার যথেষ্ট কারণও ছিল। ভীষণ বাচাল , যখন তখন আলটপকা মন্তব্য করে দ্যায়। এই যেমন ছোট্ট তিন্নির সামনেই জিজ্ঞেস করে বসলো, ওর মা কি ওর বাবা কে ছেড়ে দিয়েছে ? এটা কোনো কথার কথা হলো !
দুজনের অনেকদিন পর দেখা। তাই একটা ক্যাফেতে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ কথা বার্তা হলো , অল্প-স্বল্প পেট পুজো হলো। সুচরিতা তিন্নি কে একটা চকলেট কিনে দিলো , যদিও অনুরিমা না করছিলো , তবুও সে জানে তার বান্ধবীর কথা সে কলেজ লাইফ থেকেই ফেলতে পারেনা। দুজনের মধ্যে ফোন নম্বরের আদান-প্রদান হলো। তারপর অনুরিমা সুচরিতার সাথে যোগাযোগ রাখার প্রমিস করে তিন্নি কে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো।
অনুরিমা ভাবছিলো সুচরিতার সাথে দেখা করার কথাটা সে সমীরকে বলবে কি না। কিন্তু সে তো কোনোদিনও তার স্বামীর কাছ থেকে কিচ্ছুটি লুকোয়নি। তাহলে আজ কেন অন্যথা করবে। রাতের বেলা তিন্নি ঘুমোনোর পর অনু সমীরকে আজকের ঘটনাক্রম শুরু থেকে সব বললো। সুচরিতার কথা শুনে সমীর তেমন ভাবে কোনো রিএক্ট করলো না , যা অনুরিমা কে একটু অবাক করলো।
অনুরিমা কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছিলো সমীর প্রচন্ডভাবে সব ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়েছে। অনুরিমার সমীরের জন্য চিন্তা হচ্ছিলো। অনুরিমা তাই ফের জিজ্ঞেস করলো সমীর কে সবকিছু ঠিক আছে। সমীর চুপ করে রইলো। কোনো উত্তর দিলো না। অনু এবার সমীর কে জড়িয়ে ধরে আরো আদর করে জিজ্ঞেস করলো , "সমু , কি হয়েছে , বলোই না সোনা !"
"কি করে বলি তোমায় অনু , তুমি আমায় ভুল বুঝবে। "
"তোমার কি আমার উপর এইটুকু বিশ্বাস নেই সোনা , এতোদিনে তুমি আমায় এই চিনলে ? তুমি সৎ ভাবে কিছু বললে আমি কেন তার ভুল ব্যাখ্যা করতে যাবো ?"
সমীর চুপ করে রইলো , তা দেখে অনুরিমা আবার বললো , "এবার দয়া করে বলবে , কি এমন কথা যা তুমি আমায় বলতে পারছো না ?"
"আচ্ছা অনু , তুমি কি খুশি ?"
"মানে ?"
"মানে , তোমার একঘেয়েমি লাগেনা এই জীবনটা নিয়ে ?"
"আচ্ছা সমু , তোমার জীবনে কি অন্য কেউ এসছে ?", আতঙ্কিত হয়ে অনুরিমা জিজ্ঞেস করলো। সচরাচর বিবাহীত মহিলারা নিজের স্বামীকে নিয়ে যেরকম ওভারথিঙ্কিং করে থাকে আর কি, অনুরিমাও তার ব্যাতিক্রম ছিলোনা।
"ধুর , তুমি কি বলোনা , সত্যি ! তোমার মতো এতো সুন্দরী মেয়ে কে ছেড়ে আমি অন্য কোথাও মন দেবো , সেটা ভাবলেও বা কি করে। "
![[Image: Swikrit-324576.jpg]](https://i.ibb.co/RHZPYfH/Swikrit-324576.jpg)
"তাহলে ? ব্যাপারটা কি ?"
"সেটাই তো বলবো বলবো করে বলে উঠতে পারছি না। একটু ধৈর্য ধরে শুনতে হবে। "
"ঠিক আছে , বলো। "
"আচ্ছা আমাদের যে এতো বছর বিয়ে হয়ে গেলো , তোমার একবারও একঘেয়েমী লাগেনা , আমাদের সেক্সউয়াল লাইফ নিয়ে ?"
"সত্যি বলতে এখন এতো বছর পর আমাদের জীবনের প্রায়োরিটি অনেকটা বদলে গ্যাছে , তাই নয় কি ? আমরা আরো বেশি সংসারী হয়েছি। আমাদের মেয়ে হয়েছে , তার দেখভাল করাটা আমাদের কর্তব্য। তাই এখন আর এসব নিয়ে অতো ভাবিনা। তাছাড়া আমরা তো প্রায়ই মিলিত হই। সবকিছু তো ঠিকই আছে। "
"তুমি আসলে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়েছো বলেই তোমার অসুবিধা হচ্ছেনা। "
"কেন ? তোমার বুঝি সমস্যা হচ্ছে ? আমি কি তোমাকে সুখী করতে পাচ্ছিনা ?"
"নাহঃ , সেরকম নয়। এখন মনে হচ্ছে আমিই ভুল। আমার এখন তোমার মতো নিজের কাজে , সংসারে মন দেওয়া উচিত। তা না করে আমি কিসব আলটপকা জিনিস ভাবছি। "
"আচ্ছা তুমি কি আমাকে নিয়ে আনস্যাটিসফাইড , বিছানায়?"
"তোমায় কি করে বলি , সমস্যাটা তোমার নয় , আমার। বেশ কয়েকমাস ধরে আমার মাথায় এক অদ্ভুত চিন্তা জেঁকে বসেছে , যেটা আমি কিছুতেই নামাতে পারছি না। "
"কি চিন্তা , বলো। "
"বলে লাভ নেই। তুমি আমাকে ভুল বুঝবে। এটা এক ধরণের বিকট ফ্যান্টাসি। "
"আরে বাবাহঃ, বলেই দেখো না। আমি তো তোমার স্ত্রী নাকি। আমাকে বলবে না তো কাকে বলবে। প্রমিস করছি , আমি কিচ্ছু মাইন্ড করবো না।"
"তুমি কাকোল্ড ফ্যান্টাসির কথা শুনেছো ?"
"কাকোল্ড ফ্যান্টাসি ? নাহঃ তো। তুমি তো জানোই এসব ব্যাপারে আমার নলেজ একটু কম। আমি তো আর সুচরিতার মতো এঁচোড়ে পাকা নই। হি হি। .."
"তোমাকে তাহলে কয়েকটা এরোটিক গল্প পড়তে দিচ্ছি , যা কাকোল্ড ফ্যান্টাসি নিয়ে লেখা। সেগুলো পড়লে তুমি বুঝতে পারবে , আমি কি বলতে চাইছি। কিন্তু একটাই রিকোয়েস্ট , দয়া করে আমাকে ভুল বুঝো না। তোমাকে আমি কোনো ব্যাপারেই কোনো কিছু করতে বাধ্য করবো না। মানুষের চাহিদার কোনো সীমা পরিসীমা নেই , তাই হয়তো এসব খেয়াল আমার মাথায় এসেছে। ভালো না লাগলে , এই ব্যাপারটা ভুলে যেও। মনে কোরো যে এরকম কোনো কথা আমাদের মধ্যে কোনোদিনও হয়নি। ঠিক আছে।.... "
"আচ্ছা বেশ , আমি পড়বো , জানবো তোমার কি এমন ফ্যান্টাসি আছে যা আমাকে বলতে তুমি এতোটা দ্বিধা বোধ করছো। আর ইন কেস যদি ভালো লাগে , তাহলে তোমাকে জানাবোও। কেমন। ...."
সমীর ড্রয়ার থেকে একটা পেনড্রাইভ বের করে দিলো , সেটা অনুরিমার হাতে দিয়ে বললো , "এতে সেই গল্পগুলো রয়েছে। কালকে তিন্নি কে কলেজে দিয়ে এসে , বাড়ির সব কাজ সেরে ল্যাপটপে কানেক্ট করে সব গুলো পোড়ো। "
"ঠিক আছে। ", এই বলে অনুরিমা সমীরের কাছ থেকে পেনড্রাইভ টা নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিলো।
পরের দিন নিয়মমাফিক সমীর অফিসের জন্য বেড়িয়ে গেলো। অনুরিমা তিন্নিকে কলেজে দিয়ে এলো। ফেরাটা ওর ঠাকুরদা নিয়ে আসে কলেজ থেকে। সেদিন সমীরের আরোই অফিসের কাজে মন বসছিলো না। খুব টেনশন হচ্ছিলো ওর এটা ভেবে যে বাড়ি ফিরে অনুর কোনো রূপটা ওকে ফেস করতে হবে। অনু কি খুব রেগে যাবে এসব দেখে ? সারাটা দিন অনু একবারও ফোন করেনি। রোজ তো এরকম হয়না। ও কি এখন ওইসব সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ গল্পগুলো পড়ছে আর মনে মনে আমার প্রতি ক্ষোভে ফেটে পড়ছে ? নাহলে জল খেতে খেতেও আমি এতো বিষম খাচ্ছি কেন ? জানিনা বাড়ি গিয়ে কি দেখবো ?
এসি ঘরে বসেও সমীর এসব আকাশকুসুম ভেবে নিজের বিপি বাড়াচ্ছে , আর দর দর করে ঘামছে। ওর নিজেরও অনুকে ফোন করার সাহস হচ্ছে না। ও শুধু কাঁপা কাঁপা হাতে অনুকে একটা মেসেজ করলো , "খাওয়া হয়েছে?"
অনু কোনো রিপ্লাই দিলো না , যা যথেষ্ট ছিল সমীরকে একটা মিনি হার্ট অ্যাটাক দেওয়ার জন্য। অবশেষে সমীর ভাবলো , "যা হবে বাড়ি গিয়ে দেখা যাবে। আমি তো শুধু নিজের গভীর সুপ্ত বাসোনাটাই সৎ ভাবে নিজের স্ত্রীয়ের কাছে প্রকাশ করেছি মাত্র। খুব জোড় কি আর হবে , রাগ করবে , অশান্তি করবে। আমি মাথা নিচু করে ওর সব রাগ কে অ্যাবসর্ব করে নেবো। পারলে পা ধরে ক্ষমাও চেয়ে নেবো। কিন্তু এই বিকট ফ্যান্টাসিকে এতো মাস ধরে কাউকে না বলে নিজের ভেতরে রেখে বয়ে নিয়ে চলার থেকে তো মুক্তি পাবো। "