Thread Rating:
  • 159 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
অপূর্বর মায়ের কথাটা যে ১০০% ঠিক, সেটা জ্যাকি খুব ভালো করেই জানে। তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না হলেও এই ডাকটা যে ভীষণ সস্তার এবং সেই জন্যই সে বর্ণালী দেবীকে 'মাস্টারনী' বলে সম্বোধন করতে চায়।

- "না না, এ তোমার ভুল ধারণা। আমি ভালোবেসেই তো তোমাকে এই নামটা দিলাম। তাছাড়া তুমি সামনে থাকলে তো আর তোমাকে এই নামে ডাকবো না।"

- "ঠিক আছে .. তোমার যা খুশি। এই নাও প্রসাদ .. প্রায় একটা বাজতে চললো .. আমার এখনো ভাত বসানো হয়নি। তোমার মাসি সব রান্না করে দিয়ে যায়, কিন্তু একদম গরম গরম ভাত খেতে পছন্দ করি, তাই খাওয়ার আগে ভাতটা বানিয়ে নিই।"

- "রাখো রাখো খাচ্ছি পরে। এখনো যখন ভাত বসানো হয়নি তখন আর বসাতে হবে না। যা রান্না হয়েছে সেগুলো সব রাতে খেও, আজ আমি খাওয়াচ্ছি। তোমাদের বাড়ির গলি থেকে বেরিয়ে বড় রাস্তার মোড়ের ডান পাশে যে জয়সওয়াল ফাস্টফুড সেন্টারটা আছে, ওটা আমার বন্ধুর দোকান। এখনই ফোন করে দু-প্লেট মটন বিরিয়ানি আর দু-প্লেট চিকেন চাপের অর্ডার দিয়ে দিচ্ছি। আধ ঘন্টার মধ্যে দিয়ে যাবে। তোমরা নিশ্চয়ই দুপুরে দেড়টার আগে খাও না! তুমি মাটন চিকেন খাও তো?"

- "সে খাই .. কিন্তু এসবের কি দরকার? তাছাড়া আপনি মানে তুমিই বা খাওয়াতে যাবে কেন?"

- "কেন, কি হয়েছে? আমি খাওয়াতে পারিনা? তোমার সঙ্গে আগে পরিচয় থাকলে কাল আমার জন্মদিনে তোমাকেও নেমন্তন্ন করতাম। কালকে মিস হয়ে গেছে, ধরে নাও এটা আমার জন্মদিনের খাওয়া। খাবে না? আমি খাওয়ালে?

- "ঠিক আছে অর্ডার দাও .. আজ আমাদের বাড়িতে ডাল তরকারি আর ডিমের ঝোল হয়েছিল। সেটা দিয়ে না হয় ডিনার করা হবে।"

সেই মুহূর্তে মাথার উপর সিলিং ফ্যানটা বন বন করে ঘুরতে আরম্ভ করে দিলো .. কারেন্ট চলে এসেছে। পাখার হাওয়ায় অপূর্বর মাতৃদেবীর খোলা চুল অবিন্যস্তভাবে উড়তে লাগলো। স্নান করে আসার পর পুজো করা হয়ে গেছে অনেকক্ষণ। কিন্তু এখনো পর্যন্ত চুল বাঁধা হয়নি বর্ণালী দেবীর। এমত অবস্থায় চুলে একবার জট পেকে গেলে ছাড়াতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে গায়ে পড়া ছেলেটাকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলতে পারছেনা। ফলে তার পোশাক পাল্টানো সম্ভবপর হচ্ছে না। তাই জ্যাকি নির্লজ্জের মতো ওই ঘরে দাঁড়িয়েই ফোন নিয়ে অর্ডার করতে থাকলে একপ্রকার বাধ্য হয়ে পুজোর গরদের শাড়িটা পড়া অবস্থাতেই ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চিরুনি দিয়ে মাথার চুল আঁচড়াতে লাগলেন বর্ণালী দেবী।  

ফোনে অর্ডার দেওয়ার ফাঁকে জ্যাকি লক্ষ্য করলো ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের দুই হাত উঠিয়ে চুল বাঁধছে অপূর্বর মা। সে ভালো করেই জানে একটু আগেই এই মহিলাকে প্রায় অর্ধনগ্ন দেখার পরেও যখন তার কথার বা তার আচরণের প্রতিবাদ করে মুখ ফুটে তাকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলতে পারেনি এই মহিলা, তখন সেই মনের জোর সঞ্চয় করে তার বিরুদ্ধে কথা বলার হিম্মত জোটাতে পারবে না অপূর্বর মাতৃদেবী। যেন কিছুই হয়নি ঘরের মধ্যে হাঁটাচলা করছে - এরকম একটা ভাব করে ফোন করা অবস্থাতেই এক পা এক পা করে বর্ণালী দেবীর পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো নেপালিটা। জ্যাকি লক্ষ্য করলো অসম্ভব ফর্সা গায়ের রঙের অধিকারিনী এই মহিলার বগলের তলা দুটো কিছুটা হালকা বাদামি রঙের এবং সেখানে খুব বেশি না হলেও খুব পাতলা এবং ছোট ছোট কয়েকগাছি কোঁকড়ানো চুল বর্তমান। এ যেন একদম তার জন্যেই সাজানো হয়েছে .. ধোনটা টনটন করে উঠলো জ্যাকির। আরো এক পা এগিয়ে বর্ণালী দেবীর উদ্দেশ্যে কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তে উনি সামনে ঘুরে গলায় কিছুটা দৃঢ়তা এনে বললেন "তুমি তো খাবার অর্ডার দিয়েছো .. এখনই হয়তো এসে যাবে। তুমি একটু ড্রইংরুমে গিয়ে বসো, আমি চেঞ্জ করে এখনই আসছি।"

"ও আচ্ছা, ঠিক আছে .. আমি তাহলে বাইরে বেরিয়ে সামনেটা অপেক্ষা করছি। যে খাবার দিতে আসবে, সে তো এই বাড়ির ঠিকানাটা চেনে না। তাই আমি ওর কাছ থেকে খাবারটা নিয়ে নেবো।" এই বলে অপূর্বর মায়ের দিকে তাকিয়ে জিভটা একবার চেটে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো জ্যাকি। 'আজ একেবারে আঁটঘাট বেধেই এই বাড়িতে ঢুকেছিলাম। তারপর ভগবান সবদিক সামলে সুযোগটাও করে দিয়েছিল। দু'বার সুযোগ পেয়েছিলাম মাগীটাকে কাছে টানার। কিন্তু শালা তিরে এসে তরী ডুবে গেলো। মাস্টারনীর মনে কি আছে এখনো ধরতে পারিনি, তবে মহিলা মুখচোরা স্বভাবের, তাছাড়া অনেকটা কন্ট্রোলে নিয়ে ফেলেছি মাগীটাকে, তাই আমার মুখের উপর আর কিছু বলতে পারবে না। এখনো সময় আছে, আর কিছু না পারি আজ পুরো বশে নিয়ে নিতে হবে মাগীটাকে।' -  সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে একটু হেঁটে গিয়ে বাইরের গ্রিলের গেটের সামনে অপেক্ষারত অবস্থায় কথাগুলো ভাবছিলো জ্যাকি। মিনিট দশেকের মধ্যে প্যাক করা খাওয়ার চলে এলো।

খাবার নিয়ে পুনরায় বাড়ির ভেতর ঢুকে জ্যাকি দেখলো খাটের উপর ছেড়ে রাখা জামাকাপড় গুলো ততক্ষণে পড়ে ডাইনিং টেবিলের উপর প্লেট সাজাচ্ছিলেন বর্ণালী দেবী। কাজ করার জন্য হাত পা নাড়ানোর ফলে সদ্যস্নাতা মাস্টারনীর কোমর থেকে মাঝেমধ্যে সরে যাওয়া শাড়ির আঁচলের আড়াল থেকে উঁকি মারা গভীর উত্তেজক নাভিটা দেখে বাঁড়াটা আবার কুটকুট করতে লাগলো জ্যাকির। তার সামনে গিয়ে খাবারের প্যাকেটগুলো রেখে বললো "তাড়াতাড়ি খেতে দাও ডিয়ার .. ভীষণ খিদে পেয়েছে।"

জ্যাকির মুখে এই সম্ভাষণ শুনে অবাক হয়ে গেলেন বর্ণালী দেবী। তারপর বড় বড় চোখ করে তার দিকে তাকিয়ে বললেন "এসব আবার কি ভাষা? আমি একজন শিক্ষিকা, আমাকে এসব বলো না প্লিজ। আচ্ছা এখানে তিন প্যাকেট মাটন বিরিয়ানি আর তিনটে ফয়েলে চিকেন চাপ কেন? আমরা তো দু'জন।"

"তুমি কি গো? আমরা ভালো ভালো খাবার খাবো, আর তোমার ছেলে ফিরে এসে ডাল তরকারি আর ডিমের ঝোল খাবে? এক্সট্রা প্যাকেটটা অপূর্বর জন্য। ও কলেজ থেকে ফিরলে ওকে গরম করে দিও খাবারটা।" কথাগুলো বলে একটু দম নিয়ে আবার বলতে শুরু করলো জ্যাকি "আর খারাপ ভাষা কি বললাম? ম্যায় তো কোই গালাত শব্দ ইস্তেমাল নেহি কিয়া .. আমি তো শুধু তোমাকে 'ডিয়ার' বলেছি। ডিয়ার মানে তো প্রিয়। তুমি তো একদিনেই আমার পছন্দের মানুষ হয়ে গেছো .. তাই বলেছি। এবার বলো আমি ভুল কিছু বলেছি?"

তার ছেলের জন্য মনে করে খাবার এনেছে জ্যাকি। এই লোকটা হয়তো গায়ে পড়া, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো ভুলভাল কথা বলে ফেলে। কিন্তু মনের দিক দিয়ে খারাপ নয়। "তোমার সঙ্গে আমি কথায় পারবো না, নাও এবার খেতে বসো।" হাসতে হাসতে কথাগুলো বললেন বর্ণালী দেবী।

দুপুরের খাবার খাওয়ার পরে হয়তো এই বাড়িতে থাকার কারণ হিসেবে আর কিছু অজুহাত দেখানো যাবে না .. হয়তো তাকে চলে যেতে হবে। তাই খেতে খেতে এই মহিলার সঙ্গে যেটুকু কথা বলে নেয়া যায়, সেটুকুই প্রাপ্তি।

- "কেমন লাগছে ডিয়ার? আগে খেয়েছো নিশ্চয়ই এই দোকানের খাবার!"

- "আবার ডিয়ার? না, এই প্রথম খাচ্ছি। আসলে বাইরের খাবার আমাদের বাড়িতে খুব একটা আনা হয় না। তাছাড়া দোকানটাও তো মনে হয় খুব বেশিদিন খোলা হয়নি .."

- "হ্যাঁ, মাস দুয়েক হলো হয়েছে। আচ্ছা সেই যে তখন হোয়াটসঅ্যাপে বললে সামনে দেখা হলে বলবে। তোমার বর কবে মারা গেছে? কি হয়েছিলো?"

- "সে অনেক কথা, প্রায় দশ বছর আগের ঘটনা। উনি যে অফিসে কাজ করতেন এখানে ক'দিন ধরেই ভীষণ সমস্যা চলছিল। মালিকপক্ষের সঙ্গে কর্মচারীর .. সম্ভবত অফিস লকআউট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। একদিন অফিস থেকে বুকে ব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন অপূর্বর বাবা। রাতের দিকে ব্যথা ক্রমশ বাড়তে লাগলো। হসপিটালে নিয়ে যেতে যেতেই সব শেষ হয়ে গেলো .. আমার ছেলেটার বয়স তখন মাত্র আট।" কথাগুলো বলতে বলতে গলাটা ধরে এলো বর্ণালী দেবীর।

- "কেঁদো না ডিয়ার কেঁদো না। যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে .. নিজেকে সামলে নিয়েছো, নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছো আর ছেলেটাকে মানুষ করছো .. এটাই তো বড় কথা। তোমরা আগে কোথায় থাকতে? আগে তো কোনদিন দেখিনি তোমাকে এখানে। রেলপাড়ের কলেজে চাকরি পেলে কি করে? ওটা তো সরকারি কলেজ।"

- "আমরা আগে দক্ষিণ পাড়ায় থাকতাম। বছর চারেক হলো এই পুরনো বাড়িটা কিনে এখানে এসেছি। হ্যাঁ ওটা সরকারি কলেজ কিন্তু আমার চাকরিটা সরকারি নয় .. কন্ট্রাকচুয়াল। খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল কিছু অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য। বিজ্ঞাপনটা দেখে ইন্টারভিউ দিতে আসি .. ইন্টারভিউতে পাশ করার পর আমার চাকরি হয়ে যায়।"

- "ও আচ্ছা, তোমার চাকরিটা সরকারি নয়? কিন্তু এরকম অস্থায়ী চাকরিতো যে কোনো দিন চলে যেতে পারে। এটাতো ভীষণ রিস্কি .. তব কেয়া করোগি তুমলোগ?"

- "চলে যেতে পারে নয়, এবার মনে হয় চলে যাবে। কলেজটা তো মিউনিসিপালিটির আন্ডারে। গরমের ছুটির আগে মিউনিসিপালিটি থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে অস্থায়ী টিচিং আর নন-টিচিং স্টাফদের আর রাখা হবে না। সেই নিয়েই তো ভীষণ চিন্তায় আছি।"

- "চিন্তা মাত করো .. আমি যখন এসে গেছি তোমার জীবনে মেরা মতলব তোমাদের সঙ্গে যখন আমার পরিচয় হয়েছে, তখন তোমার চাকরি যাবে না। তোমাকে পার্মানেন্ট করার ব্যবস্থা আমি করবো .. যাতে তোমার চাকরি আর কেউ খেতে না পারে।"

- "ধুর, কি বলছো? এই বয়সে আমাকে পার্মানেন্ট কি করে করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ? তাছাড়া এটাতো মিউনিসিপালিটির হাতে, তুমি তো পৌরসভার সঙ্গে যুক্ত নও, তাহলে তুমি কি করবে?"

- "করবে করবে সব করবে। তুমি কতটুকু জানো আমার বা আমাদের ক্ষমতার ব্যাপারে? আমার যে ওস্তাদ আছে তার কথায় এলাকার বিধায়ক মানিক সামন্ত ওঠে-বসে। আজকে বাড়িতে গিয়ে ওস্তাদকে তোমার কথা বলবো। তারপর যা ব্যবস্থা করার উনি করবেন।"

জ্যাকির মুখে কথাগুলো শুনে একটা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো বর্ণালী দেবীর। উৎসাহিত হয়ে বলে উঠলো "সত্যি বলছো তুমি? আসলে এই চাকরিটা হারালে ভীষণ সমস্যার মধ্যে পড়ে যাব আমরা। যদি আমার এই উপকারটা করতে পারো তাহলে খুব ভালো হয়।"

- "কথা যখন দিয়েছি তখন নিশ্চয়ই করবো মাই ডিয়ার ফ্রেন্ড। আচ্ছা তোমার বাপেরবাড়ির বা শ্বশুরবাড়ির কোনো আত্মীয়স্বজন নেই?"

- "নাহ্ , আমার মা-বাবা এবং শ্বশুর-শাশুড়ি সকলেই গত হয়েছেন। আমার স্বামী একমাত্র সন্তান ছিলেন তার মা-বাবার। আর আমার এক দাদা আছে অবশ্য, কিন্তু ওর পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমার আত্মীয়, আমার পরিবার বলতে আমি আর আমার ছেলে .. ব্যাস।"

কথাটা শুনে মনে মনে উৎফুল্ল হয়ে উঠলো জ্যাকি। এবারে এমন একজনকে তারা ফাঁসাতে চলেছে, যার তিনকূলে কেউ নেই .. এদের হয়ে কথা বলতে আসা বা জবাবদিহি চাওয়ার কোনো লোক নেই। একমাত্র যে ছেলে আছে, সেও এদের হাতের পুতুল হয়ে গেছে বর্তমানে। দুপুরের খাওয়া সমাপ্ত হওয়ার পর, আরো কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে "ঠিক আছে এবার আমাকে যেতে হবে, খুব ভালো লাগলো তোমার সঙ্গে এতটা সময় কাটিয়ে। আমি কিন্তু রাতের দিকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করবো। আজ কিন্তু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লে হবে না.." বুক ঠুকে কথাগুলো বলে অপূর্বদের বাড়ি থেকে বিদায় নিলো জ্যাকি।

সকালে কলেজে যাওয়ার যাওয়ার আগে তার মনটা এমনিতেই খুশি খুশি ছিলো। বিকেলে কলেজ থেকে ফিরে সবসময় গম্ভীর এবং মন মরা হয়ে থাকা তার মা'কে উৎফুল্ল হয়ে থাকতে দেখে এবং মাটন বিরিয়ানি আর চিকেন চাপ দিয়ে পেটপুজো করে পুনরায় খুশিতে ভরে গেলো অপূর্বর মন। তারপর যখন শুনলো খাবারটা তার অসমবয়সী বন্ধু জ্যাকি দিয়ে গেছে, তখন তার মনে এবং শরীরে একটা অজানা শিহরণ খেলে গেলো .. যার প্রকৃত কারণ সে নিজেও অনুধাবন করতে পারলো না।

[Image: images-3-1.jpg]


রাত তখন ঠিক সাড়ে দশটা .. ডিনার শেষ করে অপূর্ব নিজের ঘরে শুতে চলে গেছে। বর্ণালী দেবী নিজের বেডরুমে খাটের উপর বসে একটা গল্পের বইয়ের পাতা উলটাচ্ছিলেন .. কিন্তু আজ তার পড়ায় কিছুতেই মন বসছে না। ভালো-মন্দ মিশিয়ে সকাল থেকে এত কিছু ঘটনা ঘটে গিয়েছে, কিন্তু বাথরুম থেকে বেরোনোর পর তাকে ওই অবস্থায় একজন পর পুরুষের দেখে ফেলা এবং পরবর্তীতে অন্তর্বাস তো দুরস্ত, সায়া-ব্লাউজ বিহীন শুধুমাত্র একটি আট-হাতের পাতলা গরদের শাড়িতে অতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে একজন প্রায় অচেনা ব্যক্তির সময় কথা বলা .. এই দুটো ব্যাপার তাকে বারবার বিচলিত করে দিচ্ছিলো। ঠিক সেই মুহূর্তে তার মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের নোটিফিকেশনের ঘন্টা বেজে উঠলো। পাশে রাখা মোবাইলটা তুলে নিয়ে দেখলো জ্যাক মেসেজ করেছে।

- "কি করছো ডিয়ার?"

- "সেরকম কিছু না। এই একটু আগে ডিনার করলাম,
এখন বিছানায় বসে একটা গল্পের বই পড়ছি।"

- "ছেলে কোথায়?"

- "পাশের ঘরে, কেন?"

- "ঘুমাবে কখন?"

- "এই তো, একটু পরে শুয়ে পড়বো।"

- "তোমার লাইফটা কি বোরিং .. খাও-দাও, কলেজ খোলা থাকলে কলেজে যাও আর বাড়িতে এসে শুয়ে পড়ো। রাতে শোবার পর ঘুম আসে?"

- "না সঙ্গে সঙ্গে কি আর ঘুম আসে? সময় লাগে ঘুম আসতে। আর যখন ঘুম আসে না, তখন ঘুমের ওষুধ খেতে হয়।"

- "সে কি, এই বয়সেই ঘুমের ওষুধ ধরে ফেলেছো?"

- "না না, রোজ খাই না .. ওটা তো মাঝে মধ্যে।"

- "ঘুম আসতে চায় না কেন? কি ভাবো এত?"

- "নানারকম দুশ্চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়। আমার এখন প্রধান দুশ্চিন্ত হলো চাকরিটা আদৌ থাকবে কিনা আমার।"

- "আমার উপর বিশ্বাস নেই? আমি যখন বলেছি তোমার চাকরি শুধু থাকবে তা নয়, চাকরি পাকা হবে। ওস্তাদের সঙ্গে তোমার ব্যাপারে কথা হয়েছে। একটা সুখবর আছে, কিন্তু এখানে বলবো না। তোমার বাড়িতে গিয়ে বলবো। আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দেবে তো? তাড়িয়ে দেবে না তো?"

- "সত্যি বলছো? আমার চাকরি থাকবে? তোমার ওস্তাদ কি বলল বলো, আমার যে আর তর সইছে না।"

- "উঁহু .. সব কিছুরই একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে। তাছাড়া এই যে তোমার মাঝে মাঝে ঘুম হয় না, ওষুধ খেতে হয় .. এটা তো শরীরের পক্ষে ভালো নয়। এটাকে দূর করার একটা উপায় আছে আমার কাছে। এরকম কত লোকের অসুখ সারিয়ে দিলাম আমি।"

"কি উপায়? আর তুমিই বা কবে আসছো?"

"কাল সকাল ঠিক সাড়ে এগারোটায় যাবো। কিছুই না কয়েকটা সাধারণ যোগব্যায়াম দেখিয়ে দেবো তোমাকে। এখন শুয়ে পড়ো লক্ষ্মী মেয়ের মতো .. দেখো এতক্ষণ কথা বললাম কিন্তু একটাও হিন্দি ওয়ার্ড ইউজ করিনি .. তোমার সঙ্গে থেকে আমিও পুরোপুরি বাঙালি হয়ে যাচ্ছি .. গুড নাইট।"

- "ও আচ্ছা, যোগব্যায়াম! তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই .. গুড নাইট।"

জ্যাকি ভালো করেই জানে সাড়ে এগারোটার মধ্যে রান্নার কাজ সেরে বেরিয়ে যায় সবিতা। এদিকে আজ অপূর্বর কলেজ ছুটি, সে বাড়িতে থাকবে। তবুও আজকের দিনটাকে বেছে নিলো ধূর্ত শয়তান জ্যাকি। কারণ অপূর্বর সঙ্গে কাল রাতেই ফোনে কিছু একটা কথা হয়ে গিয়েছে তার। ওদিকে বর্নালী দেবী আজ অনেক বেশি কনফিডেন্ট। সকালে এগারোটার মধ্যে স্নান, পুজো সব কিছু করা হয়ে গেছে তার। আজ আর পর পুরুষের সামনে তাকে এম্ব্যারেসিং সিচুয়েশনে পড়তে হবে না। সর্বপরি তার ছেলে আছে বাড়িতে .. চাপের কোনো ব্যাপারই নেই .. সেই জন্যই তো লোকটাকে  বাড়িতে আসার পারমিশন দিয়েছে সে। তাছাড়া আজ জ্যাকি তার জন্য একটা ভালো খবর নিয়ে আসছে .. এসব মিলিয়ে অপূর্বর মাতৃদেবীর মনটা ফুরফুরে আজ।

বাড়ির বাইরে গলির মুখেই দাঁড়িয়েছিল জ্যাকি। সবিতা কাজ করে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সদর দরজায় এসে কলিংবেল টিপলো সে। হয়তো জ্যাকি আশা করেছিল দরজা খুলেই সে মাস্টারনীর মুখ দেখতে পাবে, কিন্তু তার বদলে অপূর্ব দরজা খুলে "মা দেখো জ্যাকি দা এসেছে" বলে তাকে ভেতরে নিয়ে গেলো। অপূর্বর বাড়িতে থাকার ব্যাপারে সে আগে থেকে সবকিছুই জানে, তবুও সব কিছু না জানার ভান করে বললো "ও তুই বাড়িতে আছিস? তাহলে আজ জমিয়ে আড্ডা হবে।"

ড্রয়িংরুমের সোফার উপর পাশাপাশি বসলো অপূর্ব আর জ্যাকি। সেই মুহূর্তে রান্নাঘর থেকে শাড়ির আঁচলে হাত মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলেন অপূর্বর মাতৃদেবী। সাদার উপর নীল প্রিন্টেড একটা নতুন ছাপাশাড়ি পড়েছেন। শাড়িটা যথারীতি নাভির নিচে পড়লেও তার সঙ্গে কালো রঙের থ্রি কোয়ার্টার ব্লাউজ পরিহিতা বর্ণালী দেবীর দিকে তাকিয়ে স্বগতোক্তি করে উঠলো জ্যাকি "আজ মাগী নিজেকে একটু বেশিই ঢেকে রেখেছে, তার উপর নিজের ছেলেকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে। কিন্তু এই ছেলেই যে কখন ঢাল থেকে তরোয়াল হয়ে যাবে সেটা বুঝতেও পারবে না।"

"আজ কিন্তু দুপুরে খেয়ে যেতে হবে এখানে .. তবে আজ আর বাইরের খাবার নয়, বাড়ির খাবার .. এই আমি ভাতটা বসিয়ে এলাম।" বর্ণালী দেবীর এই কথার উত্তরে অপূর্ব দিকে তাকিয়ে জ্যাকি বললো "বেশ তো .. তাহলে আগে লাঞ্চ করে নিই তারপর, রাতে ভালো ঘুম হওয়ার টোটকা বলবো তোর মা'কে।"

খেতে খেতে কাজের থেকেও অকাজের কথায় বেশি হলো। অপূর্ব ছোটবেলার গল্প, কলেজের গল্প, তার মায়ের কলেজের গল্প, জ্যাকির ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু কথা .. এই সমস্ত সাইড টক হতে লাগলো। কিন্তু যে কারণে জ্যাকি এখানে এসেছে সেই বিষয়ে একটাও কথা হচ্ছিলো না। আসলে এই সমস্ত গুরুত্বহীন কথা বলে খাওয়ার সময়টা তাড়াতাড়ি কাটিয়ে দিতে চাইছিল সে। দুপুরের খাওয়া শেষ হওয়ার পর জ্যাকি  সুসংবাদটা দিলো অপূর্বর মাতৃদেবীকে "আমার ওস্তাদের সঙ্গে কাল দুপুরেই তোমার ব্যাপারে কথা বলেছিলাম। কাল রাতে বিধায়ক মানিক সামন্তর সঙ্গে ওস্তাদের মিটিং ছিলো অন্য একটা ব্যাপারে। সেখানে তোমার নামটা প্রস্তাব করা হয়েছে এবং সবচেয়ে আনন্দের কি ব্যাপার জানো? এমএলএ সাহেব বলেছেন বর্তমানে তিনি একটু ব্যস্ত আছেন পরে ব্যাপারটা তিনি অবশ্যই বিবেচনা করবেন। শুধু তোমাকে একটা এপ্লিকেশন করতে হবে। সেটা ওস্তাদকে দিলেই চলবে, তবে আমি বলছিলাম কি .. তোমার ব্যাপারে তো আমিই ওকালতি করছি, তুমি যদি নিজে একবার যাও আমার ওস্তাদের কাছে এবং তাকে নিজের হাতে এপ্লিকেশনটা দাও তাহলে বোধহয় কাজটা আরো তাড়াতাড়ি হয়ে যেতে পারে।"

"অবশ্যই যাবো, আমার এত বড় উপকার যিনি করছেন, তার কাছে গিয়ে এপ্লিকেশন দিলে যদি কাজ হয়ে যায়, তাহলে যাবো না কেন? তাছাড়া কাল তোমার কাছ থেকে তোমার ওস্তাদের কথা শোনার পর আজ সকালে ওই ব্যাপার নিয়ে তোমার বন্ধু, মানে আমার ছেলের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। ও বললো তোমার জন্মদিনে নাকি তোমার ওস্তাদ এসেছিলেন এবং উনি নাকি খুব ভালোমানুষ .. নিজের হাতে কাবাব বানিয়ে খাইয়েছেন আমার ছেলেকে।" উৎসাহের সঙ্গে কথাগুলো বললেন বর্ণালী দেবী।

- "আরে বাবা, সেই জন্যেই তো বলছি। দেখি উনি কবে ডেট দেন, সেদিন তোমাকে ওনার কাছে নিয়ে যাবো। আচ্ছা এবার কি এক্সারসাইজগুলো দেখে নেবে?"

- "হ্যাঁ নিশ্চয়ই দেখে নেবো .. এগুলো করলে যদি রাতে ঘুম হয় তাহলে তো খুব ভালোই।"

- "তাহলে চলো তোমার বেডরুমে .."

- "বেডরুমে? কেন? এখানেই তো যোগব্যায়াম কি শেখাবে সেটা শেখাতে পারো।"

- "মাটির উপর বসে বা দাঁড়িয়ে সব কটা ব্যায়াম দেখানো বা শেখানো যাবে না। কিছু ক্ষেত্রে খাটের প্রয়োজন হবে। এখানে খাট কোথায়? তাছাড়া তোমার বেডরুমে যে আজ প্রথম যাচ্ছি তা তো নয়, কালকেও তো ঢুকেছিলাম .."

জ্যাকির কথা শেষ হওয়ার আগেই অপূর্ব বলে উঠলো "তাই মা? জ্যাকি দা আবার কাল কখন এসেছিল? ও আচ্ছা ভুলেই গিয়েছিলাম তুমি তো বললে কালকের খাবারগুলো সব জ্যাকি দা দিয়ে গেছে।"

তার ছেলের সামনেই এই সমস্ত কথা হচ্ছিল। তার উপর অপূর্বর এইরূপ উক্তিতে প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে গেলেন বর্ণালী দেবী। ঠিক সেই সময় অপূর্বর মোবাইলে একটা ফোন এলো। পাশের ঘরে গিয়ে ফোনে কিছুক্ষণ কথা বলে পুনরায় এই ঘরে ফিরে এসে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে অপূর্ব বললো "মা .. আজ সন্ধ্যেবেলা থেকে ‌যে কোচিং ক্লাসটা ছিলো, সেটা দুপুর দু'টো থেকে শুরু হবে। আমাকে একটু পরেই বেরোতে হবে।"

তার ছেলের মুখে এই কথাটা শুনে কিছুটা দমে গেলেন বর্ণালী দেবী। তবে এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলে রাখা ভালো .. অপূর্বর কোচিং ক্লাস এমনিতেই আজ সন্ধ্যের বদলে দুপুরে ছিলো, যেটা গতকালই জানতে পেরেছিল সে। কিন্তু জ্যাকির নির্দেশে ইচ্ছে করে আগে এই কথাটা তার মা'কে না জানিয়ে অন্তিম মুহূর্তে জানাচ্ছে .. কিন্তু এর পেছনের কারণ স্থূলবুদ্ধি সম্পন্ন অপূর্বর কাছে পরিষ্কার না হলেও জ্যাকির প্ল্যান সাকসেসফুল। প্রথমতঃ অপূর্বর উপস্থিতির জন্যই এই বাড়িতে আসার পথ তার প্রশস্ত হয়েছে আজ এবং দ্বিতীয়তঃ এমত অবস্থায় কোনোভাবে যাতে আর নিজের মত পরিবর্তন করতে না পারে বর্ণালী দেবী। একবার ছেলেটা বেরিয়ে গেলে তার মা'কে কালকের মত কথার জাদুতে বশ করতে বেশি সময় লাগবে না তার। আর ফোনটা অন্য কেউ নয় কথা বলার ফাঁকে নিজের ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার অছিলায় জ্যাকিই করেছিল তাকে, তাইতো পাশের ঘরে চলে যেতে হলো অপূর্বকে।

"ঠিক আছে তুমি জ্যাকি দাদার কাছে এক্সারসাইজ শেখো আমি বেরোচ্ছি .." এই বলে ঘরে উপস্থিত দুই ব্যক্তিকে বিদায় জানিয়ে জামাকাপড় পড়ে পিঠে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলো অপূর্ব।

"বাইরের দরজাটা বন্ধ করে আসি, যাতে কাজের সময় কেউ ডিস্টার্ব করতে না আসে। আর তুমি এখানে হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন? বললাম না বেডরুমে যাও, আমি আসছি এখনই।" জ্যাকির কথা বলার ভঙ্গিমায় এতটাই দৃঢ়তা এবং আদেশ সুলভ আচরণ ছিলো যে বর্ণালী দেবী আর দ্বিরুক্তি না করে ধীর পায়ে বেডরুমের উদ্দেশ্যে হাঁটা দিলেন। দরজা বন্ধ করে বেডরুমে ফিরে এসে জ্যাকি দেখলো অপূর্বর মা ড্রেসিং টেবিলের পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।

সেই দিকে তাকিয়ে জ্যাকি বললো "এক্সারসাইজ তো অবশ্যই শেখাবো। কিন্তু তার আগে কয়েকটা বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন। শরীরের নানান সমস্যা দূর করতে আমাদের অনেক রকম ওষুধের সাহায্য নিতে হয়। এ ছাড়াও যারা সুস্থ থাকতে চেষ্টা করেন, তারা যোগ ব্যায়াম, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ইত্যাদি করেই থাকেন। কিন্তু আমরা বেমালুম ভুলে যাই নাভির কথা। নাভি আমাদের দেহের বহিরাঙ্গের একটি বিশেষ স্থান। মাতৃগর্ভে থাকার সময় মানব ভ্রূণে যে নাড়ির মাধ্যমে মায়ের শরীর থেকে খাদ্য সংবাহিত হয় শিশুর জন্মকালে তা কেটে ফেলা হয়। তারপর একটি প্যাঁচ দিয়ে কাটা মুখ বন্ধ করা হয়। কিই, কথাটা ঠিক বললাম তো? যাই হোক এবার আসল কথায় আসি তুমি কি জানো নাভির আকৃতি মানুষের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু ইঙ্গিত করে থাকে? আমাদের বাহ্যিক আচরণ এবং মানসিক গঠন ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে নাভি থেকে এমন অনেক ধারনাই পাওয়া সম্ভব। নাভির আকৃতি যদি হয় বেশ বড় এবং তা যদি হয় গভীর, তাহলে তুমি মনের দিক থেকেও অনেকটা উদার।  নাভির আকৃতি যদি হয় ছোট এবং অগভীর, তাহলে তা তোমার ব্যক্তিত্বের নেগেটিভ দিকটিকেই বেশি চিহ্নিত করে। তোমার চোখে সচরাচর একজন মানুষের মনের নেতিবাচক দিকগুলোই আগে নজরে আসে। নাভির আকৃতি যদি হয় একটু লম্বা বা নিম্নাভিমুখী, তাহলে কিন্তু তা তোমার লো-এনার্জি লেভেলকেই ইঙ্গিত করে। অর্থাত্‍, তোমার পরিশ্রম করার ক্ষমতা হবে কম। যদি নাভি হয় ওভাল শেপের তাহলে তুমি অত্যন্ত সংবেদনশীল একজন মানুষ। তুমি কখনোই কাজ না করে বসে থাকায় পছন্দ করে না এবং সময়ের সদব্যবহার করো। নাভির আকৃতি যদি হয় চওড়া, তাহলে তুমি মানুষকে অত্যন্ত তাড়াতাড়ি এবং গভীরভাবে বিশ্বাস করে ফেলো। আর সবশেষে নাভি যদি খানিকটা বাইরে বেরিয়ে থাকে, তাহলে তুমি অত্যন্ত একরোখা প্রকৃতির। এ কথা অনেকেই জানে না নাভির সঙ্গে যোগ রয়েছে আমাদের সমগ্র শরীরের। বিশেষত আমাদের মস্তিষ্কের সঙ্গে। যদি ঠিকঠাক ভাবে নাভির থেকে সংবেদন পৌঁছে দেওয়া যায় মস্তিষ্ক পর্যন্ত তাহলে অনিদ্রার মতো রোগ কোনোদিন গ্রাস করতে পারবে না তোমাকে। এবার বলো আমি যে উদাহরণগুলো দিলাম, তার মধ্যে তোমার নাভিটা কি রকম?"

ছেলেটাকে দেখলে আপাতভাবে অশিক্ষিত মনে হলেও মানুষের শরীর সম্পর্কে তার এরকম জ্ঞানের কথা শুনে প্রথমে কিছুটা মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন বর্ণালী দেবী। তারপর জ্যাকির শেষ প্রশ্নে সম্বিত ফিরে পেয়ে লজ্জায় রাঙা হয়ে গেলো তার মুখ - "ধ্যাত .. ওসব আমি বলতে পারবো না। তাছাড়া আমি জানিও না।"

- "তুমি কি জানো আর না জানো তাতে আমার কিছু যায় আসে না আর তুমি কিছু বললেও সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না যতক্ষণ না আমি নিজের চোখে দেখছি। সেই ভাবেই তো ম্যাসাজ হবে। দেখি কোমর থেকে শাড়ির আঁচলটা সরাও, তুমি তো নাভির নিচেই শাড়ি পরো।"

জ্যাকির এই কথায় চমকে উঠলেন বর্ণালী দেবী - "হ্যাঁ মানে, না মানে .. কিন্তু আমি কি করে সরাবো .. আর ম্যাসাজ মানে?"

"বুঝেছি .. তুমসে কুছ নেহি হো পায়েগা .. কোমরের উপর থেকে শাড়ির আঁচলটা সরাতে বললাম .. সেখানেও বলছো 'আমি কি করে সরাবো' .. ঠিক আছে তোমাকে কিছু করতে হবে না, যা করার সব আমি করছি .." বর্ণালী দেবীর বেডরুমে তার বিছানাতে বসে অনতিদূরে দাঁড়িয়ে থাকা অপূর্বর মায়ের কোমরটা দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে তাকে নিজের ঠিক সামনে এনে দাঁড় করালো জ্যাকি।

(ক্রমশ)

ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply


Messages In This Thread
RE: গোলকধাঁধায় গোগোল (চলছে) - by Bumba_1 - 15-09-2022, 09:04 PM



Users browsing this thread: 63 Guest(s)