Thread Rating:
  • 159 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
[Image: Polish-20220913-115829703.jpg]

(১৩)

রাত তখন প্রায় এগারোটা। পাশের ঘরেই তার ওস্তাদ ওসমান আছে .. সম্ভবত এতক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছে। জ্যাকি একটা বারমুডা পড়ে খালি গায়ে শুয়ে আছে। মোবাইল স্ক্রিনে মেসেজ প্রেরকের নাম দেখে ঠোঁটের কোণায় দুষ্টু হাসি ফুটে উঠলো তার। "আপনি সম্ভবত শুয়ে পড়েছেন। সবকিছু মিটিয়ে মেসেজ করতে একটু দেরি হয়ে গেলো। আমি এখন ঠিক আছি .. আপনি জানাতে বলেছিলেন, তাই জানিয়ে দিলাম .. শুভরাত্রি।" জ্যাকি দেখলো তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে এই মেসেজটি করেছে বর্ণালী দেবী। ডিপিতে মা আর ছেলের ছবি দৃশ্যমান।

না না না .. এত সহজে তো এই মেসেজের প্রতুত্তরে 'শুভরাত্রি' বলে এখনই নিষ্কৃতি দেওয়া যাবেনা দিদিমণিকে .. কিছুতেই না। তাই তৎক্ষণাৎ জ্যাকি টাইপ করলো "শুনে খুব ভালো লাগলো আপনি ঠিক আছেন। তবে আমার এত তাড়াতাড়ি 'গুডনাইট' হয় না ম্যাডাম। খেটে খাওয়া মানুষ তো, তাই সব কাজ মিটিয়ে রাতে ঘুমোতে যেতে প্রায় বারোটা বেজে যায়।"

- "ও আচ্ছা .. আপনি কি কাজ করেন?"

- "আমার আর ওস্তাদ .. এই দুজনের পার্টনারশিপে ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা আছে।"

- "ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা? তাহলে তো বিশাল ব্যাপার। আর ওস্তাদ মানে?"

- "না ম্যাডাম, সেরকম বিশাল কিছু নয়। এই কয়েক বছর হলো শুরু করেছি, তবে ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে ব্যবসাটাকে বড় করার। যাকে ওস্তাদ বলছি, উনি আমার বিজনেস পার্টনার। আসলে আগে আমরা ট্রাক চালাতাম। উনি ড্রাইভার ছিলেন আর আমি ছিলাম  খালাসী। উনাকে 'ওস্তাদ' ডাকতাম, সেই থেকে ওই নামেই ডাকি এখনো।"

- "বুঝলাম .. ঠিক আছে এবার off হচ্ছি, অনেক রাত হলো, আর আপনার বাড়ির লোকও আপনার জন্য অপেক্ষা করছে নিশ্চয়ই.."

- "রাত কোথায় ম্যাডাম? আমাদের তো এই সময় সন্ধ্যে বলা চলে। আর অপেক্ষা বলতে বিছানায় আমার জন্য কারোর অপেক্ষা করার কথা বলছেন তো? আমি বিবাহিত নই আর আমার তিনকূলেও কেউ নেই .. আমি একাই থাকি।"

এই মেসেজ করার পর প্রায় মিনিটখানেক অতিবাহিত হয়ে গেলো, অথচ উল্টোদিক থেকে কোনো রিপ্লাই এলো না। জ্যাকি ভাবলো 'বিছানায় অপেক্ষা' করার কথা শুনে দিদিমণি কি ঘাবড়ে গিয়ে উত্তর দেওয়া বন্ধ করে দিলো, নাকি মালটা সত্যি সত্যি ফোন বন্ধ করে শুয়ে পড়েছে! এইসব ক্ষেত্রে বরাবরই একগুঁয়ে এবং নাছোড়বান্দা জ্যাকি এত সহজে রণে ভঙ্গ দিতে রাজি নয়। তাই সে পুনরায় মেসেজ করলো "স্যার বোধহয় রাগ করছেন তার স্ত্রী এত রাতে হোয়াটসঅ্যাপে অন্য কারুর সঙ্গে কথা বলছে বলে। হ্যাঁ সেটাই হয়তো স্বাভাবিক, আপনার মতো একজন সুন্দরী স্ত্রী থাকলে আমিও কখনো অ্যালাও করতাম না।"

আসলে "off হচ্ছি" এই মেসেজটা করার পর বর্ণালী দেবী বাথরুমে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে ফোনটা বন্ধ করতে যাওয়ার আগে হোয়াটসঅ্যাপ চেক করতে গিয়ে দেখলেন জ্যাকির আরোও দুটো মেসেজ এসেছে। প্রথম আর দ্বিতীয় দুটো ম্যাসেজ পড়ার পর কিছু একটা লিখতে শুরু করেও থেমে গেলেন, তারপর ফোনটা বন্ধ করে লাইট নিবিয়ে শুয়ে পড়লেন। এদিকে জ্যাকি শ্যেন দৃষ্টিতে মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বসেছিলো। সে দেখলো,  অপূর্বর মা অনলাইন হয়ে তার মেসেজ সিন করেছে এবং typing শুরু করেও হঠাৎ করে থেমে গেলেন। "ঠিক হ্যায়, কোই বাত নেহি .. আজ নেহি তো ফির কাভি সাহি .. মেসেজ তো তুম জরুর কারোগি শালী রেন্ডি .." মনে মনে এই কথা বলে অপূর্বর থেকে নেওয়া তার মায়ের নাইটি পরা ছবিতে কিস করে শুয়ে পড়লো জ্যাকি।

অন্যদিনের তুলনায় অপূর্বকে আজ অনেক চনমনে এবং উৎফুল্ল মনে হলো তার মায়ের। সব সময় মনমরা হয়ে থাকা তার ছেলে এতদিন পর কোনো বন্ধুর সান্নিধ্যে এসে যে ভালো আছে, এটা ভেবে ভালো লাগলো বর্ণালী দেবীর। সাড়ে ন'টা নাগাদ অপূর্ব কলেজ বেরিয়ে যাওয়ার কিছু পরে রান্নার মাসি সবিতা এলো। সাধারণত এই সময়েই আসে সে, রান্না মিটতে মিটতে প্রায় এগারোটা থেকে সাড়ে এগারোটা বেজে যায়। "আসছি বৌদি" বলে যাওয়ার সময় সবিতাকে দাঁড়াতে বললেন বর্ণালী দেবী।

- "তোমরা কয় বোন গো?"

- "তিন বোন, আমি মেজো। কেন গো বৌদি?"

- "না এমনি জিজ্ঞাসা করছি। তা তোমার বাকি দুই বোন কোথায় থাকে .. এখানেই?"

- "ছোট বোন আমাদের দেশের বাড়ি মুর্শিদাবাদে থাকে। আর বড় দিদি এখানেই থাকতো, বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছে।"

- "ও আচ্ছা বুঝলাম। তোমার তো ছেলেপুলে নেই। তোমার বোন বা দিদির ছেলেমেয়ে আছে নিশ্চয়ই।"

- "হ্যাঁ আছে তো .. আমার ছোট বোনের দুই মেয়ে, তার ভিতরে একজনের বিয়ে হয়ে গেছে আরেক মেয়ে পড়াশোনা করছে এখনও। দিদির একটাই ছেলে .. আমাদের পাড়া কৃষ্ণপট্টিতেই থাকে। বাপ-মা মরা ছেলে হলে কি হবে, ভীষণ কর্মঠ এবং পরোপকারী। অল্প বয়সেই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে গেছে। আমাকে খুব ভালোবাসে।"

- "নাম কি তোমার দিদির ছেলের?"

- "ওর নাম তো জ্যাকি। কিন্তু কেন বলতো বৌদি? আমার দিদির ছেলের নাম তুমি হঠাৎ জিজ্ঞাসা করছো!"

- "কাল তোমার বোনপো'র জন্মদিন ছিলো। তাই কাল ওর বাড়িতে আমার ছেলের নেমন্তন্ন ছিলো। রাতে আমার ছেলেকে পৌঁছতে এসেছিল তোমার বোনপো। তখন কথায় কথায় বললো তুমি ওর মাসি হও, তাই জিজ্ঞাসা করলাম।"

- "ও আচ্ছা এই ব্যাপার? হ্যাঁ, কাল জ্যাকির জন্মদিন ছিল তো। আমি অবশ্য যাইনি, ওইসব অল্পবয়সীদের মধ্যে আমি গিয়ে কি করবো বলো! তবে ছেলে আমার খুব ভালো .. একেবারে হীরের টুকরো ছেলে যাকে বলে। পড়াশোনাটাই শুরু করতে পারেনি, এটাই যা আক্ষেপ। ঠিক আছে বৌদি, আমি তাহলে এখন আসি।"

নিজের বোনের সম্পর্কে সব সঠিক তথ্য দিলেও। আজ সকালেই এখানে আসার আগে জ্যাকির শিখিয়ে দেওয়া কথাগুলো অর্থাৎ তার কাল্পনিক দিদি এবং দিদির সাজানো ছেলের সম্পর্কে ঝুড়িঝুড়ি মিথ্যে কথা বলে বিদায় নিলো সবিতা। ব্যাকব্রাশ করে আঁচড়ানো বেশ লম্বা চুলে বাঁধা পনিটেল, লাল আপেলের মতো ফোলা ফোলা দুটো গাল  আর রক্তবর্ণ হয়ে থাকা ঢুলু ঢুলু  দুটো চোখ দেখে এবং কাল রাতে করা শেষ মেসেজটা পড়ে জ্যাকির সম্পর্কে একটা অন্যরকম ধারণা হয়েছিল বর্ণালী দেবীর। ছেলেটাকে লক্করমার্কা ছাড়া আর কিছু মনে হয়নি তার। কিন্তু এখন তাদের রান্নার মাসি সবিতার কাছ থেকে কথাগুলো শুনে জ্যাকির সম্পর্কে ধারণাটাই বদলে গেলো তার। ছেলেটা নিজের সম্পর্কে সব সত্যি কথা বলেছে। হয়তো সঙ্গদোষে পড়ে একটু অকালপক্ষ আর বাচাল হয়ে গেছে। কিন্তু কাল যদি ও না থাকতো, তাহলে ওই বিষধর সাপের হাত থেকে তাকে কে বাঁচাতো? সর্বোপরি তার ছেলে একজন বন্ধু পেয়ে এতদিন পর প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে .. এটাই তার সবথেকে বেশি ভালো লাগছে।

গরমের ছুটি শেষ হতে এখনো প্রায় দিন পনেরো বাকি। সব কাজ শেষ, এই সময় বাড়িতে বসে বসে ভীষণ বিরক্ত লাগছিলো বর্ণালী দেবীর। গতকাল রাতে পড়া নাইটিটাই পড়েছিল সে। সবিতা বেরিয়ে গেছে, উঠে দরজাটা বন্ধ করতে যাবে সেই সময় হঠাৎ মনে পড়লো ছেলেটা এত উপকার করলো কালকে, অথচ ওর শেষ মেসেজের রিপ্লাইটা দেওয়া হয়নি। পাশে রাখা মোবাইলটা তুলে নিয়ে ভাবলো - আগে কিছু একটা লিখে দিই, তারপর গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে আসবো।

- "আসলে কাল অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল তাই আর রিপ্লাই দেওয়া হয়নি। আজ সকালে আপনার মেসেজ দেখলাম। আপনি কথাটা জেনে শুনে বললেন, নাকি না জেনে বললেন বুঝতে পারলাম না। আপনার বন্ধু আমার ছেলে, অথচ আপনি ওর কাছ থেকে কিছুই শোনেন নি?"

জ্যাকি যে আজ সকাল থেকেই তাদের বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করছে সেই ব্যাপারে কোনো ধারনাই ছিলো না বর্ণালী দেবীর। এই মুহূর্তে উনার বাড়ির অনতিদূরে বড় রাস্তার মোড়ের ডানপাশে জাসওয়াল ফাস্টফুড সেন্টার সংলগ্ন পানের দোকানের ঠিক সামনে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল সে। হোয়াটসঅ্যাপ নোটিফিকেশনের ঘন্টা বাজতেই পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলো জ্যাকি।

- "কি শুনিনি ম্যাডাম? কোন জিনিসটা শোনার কথা বলছেন আপনি?"

- "আপনি জানেন না? অপূর্বর বাবা নেই!"

- "না ম্যাডাম ওর সঙ্গে এই বিষয়ে কোনো কথা আমার হয়নি। অপূর্বর সঙ্গে আমার খেলাধুলা, সিনেমা, তারপরে পড়াশোনা এইসবের বাইরে আর কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় না। আপনার বিশ্বাস না হয় ওকে জিজ্ঞেস করে দেখুন।"

জ্যাকির রিপ্লাই পেয়ে বর্ণালী দেবী বুঝলেন আবারও তার ভুল হয়েছে, সত্যিই ছেলেটা না জেনে কালকে তাকে ওই কথাগুলো বলেছিলো।

- "আচ্ছা, বুঝলাম। আপনি তো এখন কাজের জায়গায় আছেন নিশ্চয়ই। আপনাকে ডিস্টার্ব করলাম, আপনি কাজ করুন আর আমিও তাহলে .."

- "আরে ম্যাডাম কাজে থাকি আর অকাজে থাকি আপনার জন্য সব সময় হাজির। ওই ঘটনাটা মেরা মাতলাব আপনার স্বামী মারা গেলেন কিভাবে?"

- "সে অনেক কথা, এই সমস্ত আলোচনা তো ফোনে করা যায় না, সাক্ষাতে কোনোদিন বলবো। ঠিক আছে এখন তাহলে রাখছি।"

- "জো হুকুম ম্যাডামজি .."

অপূর্বর মা বৈঠকখানা ঘরের সোফা থেকে উঠতে যাবেন ঠিক সেই সময় মাথার উপরে বনবন করে ঘুরতে থাকা সিলিং ফ্যানটা হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলো .. "ওহো আবার কারেন্ট গেলো, যত গরম বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং এর বহর তত বাড়ছে .. অসহ্য একেবারে। এখন কারেন্ট গেলো, কখন আসবে তার ঠিক নেই। সেই সকালে পাম্প চালিয়ে ট্যাঙ্ক ভর্তি করা হয়েছে। বারোটা বাজতে যায়, এরপর জল চলে গেলে তার স্নান করাটাই হবে না।" স্বগতোক্তি করে মোবাইলটা হাতে নিয়ে সোফা থেকে উঠে পড়লেন বর্ণালী দেবী। তারপর বেডরুমে ঢুকে আলনা থেকে একটি কাচা প্রিন্টেড ছাপা শাড়ি, কালো রঙের সায়া, সাদা রঙের ব্লাউজ আর ওই একই কালারের ব্রা নিয়ে খাটের উপর রেখে বৈঠকখানা সংলগ্ন বাথরুমে ঢুকে গেলেন। বেডরুমের সঙ্গে একটি অ্যাটাচ ওয়াশরুম অবশ্য আছে .. কিন্তু সেখানে শুধু টয়লেট আর ল্যাট্রিন করার ব্যবস্থা আছে। জ্যাকিকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা, হঠাৎ করে কারেন্ট চলে যাওয়া এবং ট্যাঙ্কের জল ফুরিয়ে গেলে লোডশেডিং হওয়ার দরুন পাম্প চালানো যাবে না বলে তাড়াতাড়ি বাথরুমে স্নান করতে চলে যাওয়া .. এই সবকিছুর মাঝে বর্ণালী দেবী ভুলে গেলেন সদর দরজা বন্ধ করা হয়নি।

ঠিক তখনই একটা বাইক এসে থামলো অপূর্বদের বাড়ির সামনে। বাইক থেকে নেমে গ্রিলের গেট খুলে ছোট্ট বাগানটা পেরিয়ে সদর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিংবেল বাজালো জ্যাকি। বেলের কোনো শব্দ না হওয়াতে, সে ভাবলো - তাহলে বোধহয় লোডশেডিং। দরজা ধাক্কানোর জন্য দুই হাত দিয়ে মেইন গেটটা ঠেলতেই খুলে গেলো সদর দরজাটা। "আজিব বাত হ্যায়, দারওয়াজা খুলা ছোড় দিয়া হ্যায়!" স্বগতোক্তি করে ভেতরে প্রবেশ করলো জ্যাকি। দরজা দিয়ে ঢুকেই কাঁচের জানলা দিয়ে ঢাকা একটা ছোট্ট বারান্দা পেরিয়ে একটু গলা খ্যাঁকারি দিয়ে বৈঠকখানার ঘরে প্রবেশ করলো নেপালিটা। কেউ কোত্থাও নেই, কোনো সারাশব্দ নেই। ঠিক সেই মুহূর্তে বাথরুমে অঝোরধারায় জল পড়ার শব্দ পেলো জ্যাকি। সেই সঙ্গে তার কানে ভেসে এলো গুনগুন করে গাইতে থাকা এক নারী কন্ঠের রবীন্দ্রসঙ্গীত "আমায় যে সব দিতে হবে, সে তো আমি জানি .."

মুহূর্তের মধ্যে মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেলো জ্যাকির। সবকিছু একে একে পরিষ্কার হতে শুরু করলো তার কাছে। তারমানে মাগীটা বাথরুমে ঢুকে স্নান করছে আর যে কোনো কারণেই হোক বাইরের দরজা আটকাতে ভুলে গিয়েছে। এখন বাড়িতে ওই গান্ডু অপূর্বটাও নেই, যদিও থাকলেও কিছু যেত আসতো না তার। একটা সুবর্ণ সুযোগ এসে গেছে তার সামনে .. এই সুযোগের পুরো ফায়দা তো তাকে তুলতেই হবে। পা টিপে টিপে বাথরুমে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো জ্যাকি। তারপর নিচু হয়ে কোনো ছিদ্র বা 'কি-হোল' খোঁজার চেষ্টা করলো, যদি ভেতরের কোনো দৃশ্য দেখা যায়। সিনটেক্সের দরজা, পুরোটাই নিরেট .. কোনো ছিদ্র খুঁজে পেলো না সে। শুধু জল ঢালা আর গানের আওয়াজ কানে আসছিলো। বিফল মনোরথ হয়ে ফিরতে গিয়ে হঠাৎ বেডরুমের দরজায় চোখ পড়লো তার।

বর্ণালী দেবীর শোওয়ার ঘরে প্রবেশ করলো জ্যাকি। প্রথমেই তার চোখ পড়লো খাটের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা শাড়ি, সায়া, ব্লাউজ আর অন্তর্বাসের দিকে। দ্রুতপায়ে বিছানার কাছে এগিয়ে গিয়ে সাদা রঙের ব্রা'টা তুলে নিলো সে। তারপর জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে প্রাণভরে শুঁকতে লাগলো ব্রায়ের কাপদুটো। "তারমানে মাগী বাড়িতে প্যান্টি পড়ে না। কাচা ব্রা দিয়ে যদি এরকম গন্ধ বের হয়, তাহলে মাগীর সদ্য ছাড়া ব্রায়ের গন্ধ তো পাগল করে দেবে।" এইরূপ স্বগতোক্তি করে ব্রেসিয়ারটা খাটের উপর রেখে দিয়ে বেডরুম থেকে বেরিয়ে এসে ড্রয়িংরুমে বাথরুমের দিকে মুখ করে থাকা একটি সিঙ্গেল সোফার উপর বসলো জ্যাকি। তারপর নিজের মোবাইলটা বের করে বর্ণালী দেবীর হোয়াটসঅ্যাপে একটা মেসেজ করলো "আপনে বুলায়া আউর হাম হাজির ম্যাডামজি .. এখন ফ্রি আছি কাজের চাপ নেই, তাই আপনার বাড়িতে আসছি। যদি ব্যস্ত থাকেন তাহলে 'না' লিখে জানিয়ে দিন, আমি অন্য কোনোদিন আসবো।" সঙ্গে সঙ্গে শোওয়ার ঘরের বেড টেবিলের উপর রাখা অপূর্বর মায়ের মোবাইলে একটা হোয়াটসঅ্যাপ নোটিফিকেশন এলো।

বর্ণালী দেবী কোনওদিনই বাথরুমে জামাকাপড় নিয়ে ঢোকেন না। কাচা জামাকাপড়গুলো বেডরুমে রেখে আসেন, স্নান হয়ে গেলে শুকনো করে গা মুছে সেই গামছাটি শরীরের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে বাথরুম থেকে বের হন। তারপর বেডরুমের ভেতরেই কাঠের পার্টিশন দিয়ে বানানো ছোট্ট ঠাকুরঘরে রাখা একটি  গরদের শাড়ি গায়ে জড়িয়ে পুজো করে তবেই কাচা জামাকাপড় পড়েন। বহুদিন ধরে এটাই তার ডেইলি রুটিন। আজকেও তার অন্যথা হয়নি। এরপর প্রায় মিনিট দশেক অতিক্রান্ত হয়ে গেলো। জল পড়ার শব্দ বন্ধ হলো, গান তখনো চলছে। রিনিঝিনি চুড়ির শব্দে জ্যাকি বুঝতে পারলো এখন গা মোছা হচ্ছে। দাঁতে দাঁত চেপে বাথরুমের দরজার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো জ্যাকি।

[Image: images-1-2.jpg]



'খুট' করে বাথরুমের দরজার খোলার আওয়াজ হলো। তার প্রতিদিনের অভ্যাস অনুযায়ী একটা ভেজা গামছা শরীরের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে বাথরুম থেকে বের হলেন বর্ণালী দেবী। জ্যাকির চোখের সামনে মধ্য চল্লিশের স্বাস্থ্যবতী, সুন্দরী রেলপাড়ের প্রাইমারি সেকশনের বাংলা দিদিমণি প্রায় অর্ধেকের বেশি স্তন বিভাজিকা উন্মুক্ত করে, মাঝারি আকারের গামছাটা হাঁটুর অনেকটা উপরে উঠে গিয়ে ফর্সা, মাংসল ঊরুদুটোর অনেকটা প্রকাশিত করে এবং ভিজে যাওয়া পাতলা গামছার আড়ালে বৃহৎ আকার স্তনজোড়া এবং স্তনবৃন্তের অবস্থান প্রকট করে দাঁড়িয়েছিল। এতটাও বোধহয় আশা করেনি জ্যাকি। বিস্ফোরিত নেত্রে মুখ হাঁ করে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো অপূর্বর মায়ের দিকে।

কয়েক মুহূর্তের অবকাশ .. তারপরেই প্রায় আর্তনাদের ভঙ্গিতে বলে উঠলেন বর্ণালী দেবী "এ কি .. আ..আপনি এখানে কি করছেন?" তারপর নিজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অতিমাত্রায় সচেতন হয়ে এক দৌড়ে ঢুকে গেলেন বেডরুমের ভেতর। অপূর্বর মা দৌড়ে পালানোর সময় জ্যাকি লক্ষ্য করলো তার তরঙ্গ তোলা মাংসলো পাছার খাঁজে গামছাটা আটকে গিয়ে আরো উত্তেজক মুহূর্তের সৃষ্টি করেছে। অবাঞ্ছিত অতিথির মুখের উপর বেডরুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলেও ভেতর থেকে ছিটকানি আটকাতে পারলেন না বর্ণালী দেবী, কোনো বাধ্যবাধকতার জন্য নয়, ছিটকিনির আংটা বা গোঁজটা কয়েকদিন হলো ভেঙে গিয়েছে। আজ সারাবো কাল সারাবো করে একটা ছুতোর মিস্ত্রী ডেকে সারানোর সময় আর হয়নি তার। ওদিকে অপূর্বটাও হয়েছে গুড ফর নাথিং, কোনো দিকে তার খেয়াল নেই।

অতিথি নারায়ন হোক অথবা বিন বুলায়ে মেহমান .. তার আগমনের হেতু জানা প্রয়োজন। "আপনি এখন আমাদের বাড়িতে? কিছু দরকার ছিলো? তাছাড়া আপনি বাড়ির ভেতর এলেন কি করে?" গামছাটা গা থেকে খুলে ফেলে কাঠের পার্টিশন দিয়ে বানানো ছোট্ট ঠাকুরঘরে রাখা গরদের শাড়িটা গায়ে জড়িয়ে নিতে নিতে গলার স্বর কিছুটা স্বাভাবিক করে বেডরুমের ভেতর থেকে জিজ্ঞাসা করলেন বর্ণালী দেবী।

ধূর্ত জ্যাকি বুঝতে পেরেছে বেডরুমের দরজায় ছিটকানি দেয়নি অপূর্বর মাতৃদেবী। তাই সন্তর্পনে দরজাটার দিকে এগিয়ে এগিয়ে যেন কিছুই হয়নি এরকম একটা ভাব করে বললো "আপনি কিছুটা অপ্রস্তুতে হয়ে গেছেন সেটা আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু আমার কথাগুলো শুনলে বুঝতে পারবেন যা ঘটেছে পুরোটাই অ্যাক্সিডেন্টলি। তখন আপনি হোয়াটসঅ্যাপে লিখলেন 'এই সমস্ত আলোচনা তো ফোনে করা যায় না, সাক্ষাতে কোনোদিন বলবো' তার উত্তরে আমি লিখলাম 'জো হুকুম ম্যাডামজি' .. তারপর দেখলাম ওদিকে আমার কাজ মিটে গেছে, হাতে অনেকটা সময় আছে, তাই ভাবলাম আপনাদের বাড়িতে এসে আমার বন্ধু অপূর্বর সঙ্গে একটু গল্প করে যাই। কারণ ও আমাকে প্রায়ই আসতে বলে, কিন্তু আমার সময় হয় না। আর এলে আপনার সঙ্গেও কথা হবে, তাই চলে এলাম আপনাদের বাড়িতে। তবে আসার আগে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মেসেজ করেছিলাম দেখে নিন। আপনি 'না' লেখেন নি, তাই ভাবলাম আপনাদের কোনো অসুবিধা নেই। তারপর গ্রিলের গেট খুলে ভেতরে আসার পর অনেকবার বেল বাজানোর পর দরজা ধাক্কাতে গিয়ে দেখলাম দরজাটা খুলে গেলো। আমি ভাবলাম ভেতরে অপূর্ব আছে, তাই ডাকাডাকি করতে করতে ভেতরে ঢুকলাম। তারপর সোফায় যখন বসতে যাচ্ছি তখন দেখি আপনি বের হচ্ছেন বাথরুম থেকে। তারপরেটা তো আপনি সবই জানেন। আচ্ছা এখানে আমার দোষটা কোথায় বলুন তো!"

জ্যাকির মুখে কথাগুলো শুনে সম্বিত ফিরলো বর্ণালী দেবীর। সুইচ বোর্ডে পাখার সুইচটা চালিয়ে দেখলেন এখনো কারেন্ট আসেনি। পরমুহূর্তেই তার মনে পড়ে গেলো সদর দরজা আটকাতে ভুলে যাওয়ার কথা। তারপর খাটের পাশে রাখা ছোট টেবিলটার উপর থেকে মোবাইলটা তুলে নিয়ে দেখলো কিছুক্ষণ আগে করা জ্যাকির মেসেজ। আজ যা কিছু হয়েছে সব তার অসতর্কতার জন্য, সত্যিই তো ছেলেটাকে কোনোভাবেই দোষ দেওয়া যায় না। তবে সে ছেলেটাকে আসতে বলেনি এ কথাও সত্যি। সর্বোপরি বাথরুম থেকে বেরোনোর সময় শুধুমাত্র একটা ভেজা গামছা জড়ানো তার অর্ধরগ্ন শরীরটাকে জ্যাকি দেখেছে .. এটা ভেবেই লজ্জায় রাঙা হয়ে গেলো তার দুটো গাল। গলাটা একটু ঝেড়ে নিয়ে বললেন "না না আপনার কোনো দোষ নেই, আপনি একটু বসুন, আমি পুজো করে আসছি।"

ঘন্টা বাজিয়ে শুরু হলো পুজো। কিছুক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পর উসখুস করতে লাগলো জ্যাকি। তারপর অতি সন্তর্পণে ভেজানো দরজাটা কিছুটা ফাঁক করে দেখলো অপূর্বর মা দরজার দিকে পিঠ করে মাটিতে একটা আসনের উপর বসে কাঠের পার্টিশন দেওয়া ঠাকুর ঘরটায় ঠিক সামনে বসে আছে।  জ্যাকি ভেবেছিল হয়তো খাটের উপর রাখা জামাকাপড় গুলো পড়েই পুজো করছে অপূর্বর মা। তারপর যখন তার কামনার নারীকে দেখলো নগ্ন শরীরের উপর শুধুমাত্র একটা বস্ত্রখন্ড জড়িয়ে আছে, তখন শরীরটা উত্তেজনায় শিরশির উঠলো তার। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শাঁখ বাজিয়ে শেষ হলো পুজো।

- "আপনি দরজা বন্ধ করে পুজো করছেন কেন? হামেশা কি এরকমই করেন?"

- "না মানে হ্যাঁ মানে, এইতো এবার পুজো শেষ হলো দরজা খুলে দেবো।"

- "এটা কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর হলো না। ঠিক হ্যায় জানে দিজিয়ে। পুজো করেছেন প্রসাদ খাওয়াবেন তো?"

- "প্র..প্রসাদ? ঠিক আছে প্রসাদ দিচ্ছি।"

- "পুজো তো শেষ আর প্রসাদ যখন দেবেন বলছেন তাহলে ম্যায় আন্দার আ জাঁউ? আমি তাহলে ভেতরে আসছি ম্যাডাম।"

- "ভেতরে? এই না না .. এখনই না .. এখনো তো .."

"এখনো তো কি? আর কি বাকি আছে? বহুত ভুখ লাগা হ্যায় মুঝে, প্রসাদ দিজিয়ে না .." এই বলে বর্ণালী দেবীকে তার কথা শেষ করতে না দিয়েই ভেজানো দরজা ঠেলে বেডরুমে প্রবেশ করলো জ্যাকি।

ঘরে ঢুকেই ধূর্ত শয়তান নেপালিটা দেখতে পেলো ঠাকুরঘরের সামনে হাতে একটা থালা নিয়ে জড়োসড়ো অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে অপূর্বর মাতৃদেবী। পরনের পাতলা আট-হাত শাড়িটা খুব কষ্ট করে তার খানদানি আকর্ষণীয় শরীরটাকে ঢেকে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখনো কারেন্ট আসেনি .. ভিতরে সায়া, ব্লাউজ এবং কোনরকম অন্তর্বাস না থাকার ফলে ঘামে ভিজে জবজব করতে থাকা শরীরের সঙ্গে পাতলা শাড়িটা আটকে দিয়ে বর্ণালী দেবীর অত্যন্ত ভারী বিপুলাকার স্তনযুগল এবং মাংসল নিতম্বদ্বয় ভীষণভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে ঘরে উপস্থিত অপর ব্যক্তিটির সম্মুখে। এমনকি পাতলা শাড়ির আড়ালে স্তনবৃন্তের আভাস এবং চর্বিযুক্ত পেটের সঙ্গে শাড়িটা সেটে থাকার পরে গভীর নাভির উত্তেজক উপস্থিতি বারবার প্রকট হচ্ছিল জ্যাকির সামনে। শয়তান নেপালিটা ভালো করেই জানে তাকে প্রসাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বিদায় করে পোশাক পরিবর্তন করতে চাইবে অপূর্বর মা। কিন্তু এই অপরূপ দৃশ্য থেকে নিজেকে কিছুতেই বঞ্চিত করতে চায় না সে। তাই সে বারবার প্যান্টের আড়ালে উত্তেজিত হয়ে ফুঁসতে থাকা ঠাটানো পুরুষাঙ্গটা নিয়ন্ত্রণ করতে করতে নানারকম অর্থহীন কথায় ব্যস্ত করে রাখতে চাইলো বর্ণালী দেবীকে।

- "এটাই কি আপনার পুজোর পোশাক?"

- "হুঁ"

- "দুর্দান্ত মানিয়েছে আপনাকে এই পোশাকে, আসলে বাঙালী গৃহবধূদের এরকম পবিত্র পুজোর পোশাকে দেখলে আমার মন জুড়িয়ে যায়।"

- "ও আচ্ছা .. কিন্তু আপনিও তো বাঙালি .. তবে সব কথায় এত হিন্দি শব্দ এবং বাক্য ব্যবহার করেন কেন বুঝিনা। আমাদের বাড়িতে রান্নার কাজ করে সবিতা .. সে তো আপনার নিজের মাসি হয়। সকালে ওর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়েছে আমার।"

বর্ণালী দেবী কথা বলছিলেন ঠিকই, কিন্তু সর্বদা নিজের বর্তমান পোশাক সম্পর্কে অতিমাত্রায় সচেতন হয়ে আড়ষ্ট হয়ে থাকছিলেন এবং মনে মনে চাইছিলেন যাতে জ্যাকি এই ঘর থেকে চলে যায়, কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে মুখে কিছু বলতে পারছিলেন না।

- "আপনার প্রশ্নের উত্তর আমি দিচ্ছি, কিন্তু তার আগে বলুন তো আপনার বয়স কত?"

- "আ..আমার বয়স? হঠাৎ এই প্রশ্ন করছেন কেন?"

- "বোলো না ইয়ার .. আরে বলুন না ম্যাডাম .. আমি কি খুব খারাপ এবং ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে ফেললাম?"

- "না না তা নয়, আমার বয়স ৪৩ , কিন্তু কেন?"

- "আমি এবার তিরিশে পড়লাম, তার উপর আমি আপনার ছেলের বন্ধু। আমাকে 'আপনি' না বলে 'তুমি' বলুন প্লিজ।

- "ঠিক আছে, এই তো সবে পরিচয় হয়েছে, সে না হয় দেখা যাবে পরবর্তীকালে।"

- "বাদ মে নেহি .. এখনই বলতে হবে, তবেই আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবো যে আমি এত হিন্দি সেন্টেন্স ব্যবহার করি কেন!"

- "ঠিক আছে বাবা ঠিক আছে .. এবার তো বলো।"

- "ইয়ে হুই না বাত .. আসলে আমিও না কাউকে খুব বেশিক্ষণ আপনি-আজ্ঞে করতে পারি না। তুমি যখন গ্রিন সিগন্যাল দিলে, অর্থাৎ আমাকে 'তুমি' করে বললে, তাহলে আমিও তোমাকে এখন থেকে 'তুমি' করেই বলবো আর ম্যাডামজি বলতে পারবো না কিন্তু, কি বলে ডাকি বলতো তোমাকে?"

একেই বোধহয় বলে নাছোড়বান্দা গায়ে পড়া পাবলিক। উল্টোদিকের ব্যক্তি তার সব কথা আদৌ পছন্দ করছে কিনা বা তাকে সম্মোধনের অনুমতি দিচ্ছে কিনা .. তার তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যায়। নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আবার বলতে শুরু করলো জ্যাকি "আসলে আমার মা বাঙালি হলেও আমার বাবা নেপালি ছিলেন। আমার বাবা সুদের ব্যবসা করতেন। আমার মামার-বাড়ির দাদু বাবার কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা ধার করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা তিনি সময়ের মধ্যে শোধ করতে পারেননি। আসল দেওয়া তো দূরের ব্যাপার এমনকি সুদ টুকুও দিতে পারছিলেন না আমার দাদু। যদিও সেই সময় পঞ্চাশ হাজার টাকার বিশাল মূল্য ছিলো। আমার মা খুব সুন্দরী মহিলা ছিলেন। মাকে একদিন দাদুর বাড়িতে বাবা দেখে। প্রথম দেখাতেই পছন্দ হয়ে যায়। তারপর দাদুকে অফার দেয় যদি মায়ের সঙ্গে বাবার বিয়ে দেয় তাহলে সুদ-আসল সব মাফ। প্রথমে কিছুটা আপত্তি থাকলেও পরে অগত্যা রাজি হতে হয় আমার দাদুকে। তাছাড়া আমি ছোটবেলা থেকেই নন-বেঙ্গলি এরিয়ায় বড় হয়ে উঠেছি, তারপর ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা। সব মিলিয়ে হিন্দিটা মিলেমিশে থাকে বাংলার সঙ্গে।  এবার বিষয়টা পরিষ্কার হলো?"

- "ও আচ্ছা, আপনি মানে তুমি তারমানে আধা বাঙালি আধা নেপালি।"

- "বিলকুল সহি পাকড়া তুমনে। কিন্তু বললে না তো তোমাকে কি নামে ডাকবো!"

- "যা খুশি .. খারাপ কিছু না বললেই হলো।"

- "আরে খারাপ কথা বলবো কেন? দেখো তোমার সঙ্গে আমার যা বয়সের তফাৎ তাতে তোমাকে 'আন্টি' বলা যায় না। 'বৌদি' বলা যায়, কিন্তু আমার অনেক ভাবি আছে তাই ওই নামে ডাকবো না। তুমি তো কলেজের দিদিমণি। আমরা দিদিমণিকে 'মাস্টারনী' বলি। তোমাকে ওই নামেই ডাকি, কেমন?"

- "এ মা মাস্টারনী আবার কি কথা? এই সম্বোধনের মধ্যে সম্মান প্রদর্শনের থেকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যটাই বেশি প্রকাশ পায় বলে আমার মনে হয়।"
[+] 8 users Like Bumba_1's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গোলকধাঁধায় গোগোল (চলছে) - by Bumba_1 - 15-09-2022, 08:59 PM



Users browsing this thread: 38 Guest(s)