12-08-2022, 03:42 PM
৪২
ট্রান্স-ইয়ুরোপীয়ান হাইওয়ে - ই-৮০ (২)
এয়ারফোর্সের স্পেশাল প্লেনে চেপে চন্দ্রকান্তা পৌছে যায় ফ্রাঙ্কফার্ট থেকে ভার্জিনিয়া আইল্যান্ড… প্রায় ৪,১৬৮ মাইল বা ৬,৭০৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে… অন্য সাধারন প্লেনে আসতে গেলে প্রায় আট থেকে নয় ঘন্টা লেগে যেতো, কিন্তু যেহেতু এয়ার ফোর্সের জেট বিমান, তাই পুরো পথটা মোটামুটি ছয় ঘন্টার মধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছিল সে… পৌছায় গিয়ে ভার্জিনিয়ার প্রত্যন্ত এক অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত একটি ফার্ম হাউসের মধ্যে… শহর থেকে প্রায় অনেকটাই দূরে অবস্থিত সেটি… সি আই এ’র ট্রেনিং গ্রাউন্ড, তাদের সমস্ত সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টসদের জন্য…
পুরো ফার্মটা ভার্জিনিয়ার এই প্রত্যন্ত এলাকায় কুড়ি বর্গমাইল জুড়ে অবস্থিত… এতটাই বিশাল তার আয়তন… চতুর্দিকে উঁচু কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা… সেই সাথে কড়া সিকিউরিটি দ্বারা বেষ্টিত… সহজে এই অঞ্চলে কারুর প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ… জায়গাটা বেশিরভাগই সুউচ্চ পাইন গাছের জঙ্গলে ভরা … মাঝে কয়েকটি বাড়ি রয়েছে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে, যেগুলি বাইরের প্রধান ফটক থেকে প্রায় মাইল দুয়েক ভিতরে অবস্থিত… আর বাড়ির আশপাশটাও জঙ্গলের ঘন লতাপাতা দিয়ে এমন ভাবে ঘিরে রয়েছে যে বাইরে থেকে বাড়িগুলি চোখে পড়া সম্ভব নয় কোন মতেই… কম্পাউন্ডের ভিতরেই নিজস্ব এয়ার স্ট্রীপ রয়েছে, যেখানে চন্দ্রকান্তারা এসে অবতরণ করে… ভিতরটা যেন একটা সম্পূর্ন আলাদা পৃথিবী… বাইরের জগত থেকে…
চন্দ্রকান্তা ভেবে ছিল যে তার সাথে অনেকেই হয়তো থাকবে ট্রেনিংএর জন্য… কিন্তু না… খুব বেশি জন কে সে দেখতে পায় না সেখানে… তার মত বড় জোড় জনা তিরিশেক লোক অপেক্ষা করছে… তাদের মধ্যে কেউ চিনা, কেউ জার্মান, এদের মধ্যে কেউ শিল্পী, কেউ কাঠের মিস্ত্রি, কেউ প্রফেসর আবার কেউ চাষির ঘর থেকে আসা… আর মজার ব্যাপার হলো, এই পুরো গ্রুপটার মধ্যে সেই একমাত্র মহিলা…
সবারই আলাদা রুম নির্দিষ্ট করা রয়েছে… রুম গুলো একদম ব্যাচেলার্স কোয়ার্টের মত… সাদা মাটা… সে রকম কোন বাহ্যিক সুখ সুবিধার বন্দোবস্থ নেই… চন্দ্রকান্তার বুঝতে অসুবিধা হয় না এই ট্রেনিং পিরিয়ডটা বেশ কষ্টকর হতে চলেছে…
সেদিন আর কেউ কিছু বলে না তাদেরকে… তারা যে যার নিজের মত ঘরে সময় কাটায়… শুধু সময় মত ডাক আসে… প্যান্ট্রিতে গিয়ে তাদের লাঞ্চ বা ডিনার সেরে আসতে হয়… সেখানেই আলাপ হয় চন্দ্রকান্তার, এই ট্রেনিংএ অংশগ্রহনকারিদের সাথে… কুশল বিনিময় করে একে অপরের নাম জানতে পারে… কে কোথা থেকে আসছে, সেই সবও…
পরদিন তারা গিয়ে জমায়েত হয় একটি অডিটোরিয়ামে… সেখানে একজন শক্ত সমর্থ অ্যাফ্রোআমেরিকান কর্নেল সমস্ত গ্রুপের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে… তার পরণের ইয়ুনিফর্ম বলে দেয় যে সে এয়ার ফোর্সএর কোন অফিসার হবে… মোটামুটি মাঝ পঞ্চাশ বয়েস… প্রথম দর্শনেই তার শীতল আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ছড়িয়ে পড়ে উপস্থিত সমস্ত অংশগ্রহনকারির মধ্যে…
কোন সময় নষ্ট না করে একদম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাষায় জলদ গম্ভীর কন্ঠস্বরে শুরু করে তার বক্তৃতা…
“আই অ্যাম কর্নেল ফ্র্যাঙ্ক জনসন… আই ওয়ান্ট টু ওয়েলকাম ইয়ু হেয়ার… ডিউরিং ইয়োর স্টে, ইয়ু উইল ইয়ুজ ওনলি ইয়োর ফার্স্ট নেমস… ফ্রম দিস মোমেন্ট অন, ইয়োর লাইভস্ উইল বি আ ক্লোজড্ বুক… ইয়ু হ্যাভ অল বিন সোর্ন টু সিক্রেসি… আই উড অ্যাডভাইস ইয়ু টু টেকে দ্যাট ওথ ভেরি, ভেরি সিরিয়াসলি… ইয়ু আরে নেভার টু ডিসকাস ইয়োর ওয়ার্ক উইথ এনিওয়ান… ইয়োর ওয়াইভস্, হাজবেন্ড, ইয়োর ফ্যামিলি, ইয়োর ফ্রেন্ডস্… ইয়ু হ্যাভ বিন সিলেক্টেড টু কাম হেয়ার বিকজ ইয়ু হ্যাভ স্পেশিয়াল কুয়ালিফিকেশন্স্… দেয়ারস্ আ লট অফ হার্ড ওয়ার্ক এহেড অফ ইয়ু টু ডেভেলপ দোজ কুয়ালিফিকেশন্স্… অ্যাান্ড লেট মী ভেরি ক্লিয়ার অন ইয়োর ফার্স্ট ডে দ্যাট নট অল অফ ইয়ু আর গোইং টু মেক ইট…” বলে একটু থামে কর্ণেল… তার শ্যেণ দৃষ্টি ফিরে যায় প্রত্যেকের মুখের উপর দিয়ে, যেন তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে বুঝে নিতে চাইছে সে, সে যা কথাগুলো বলছে, তা কতটা কার কার মধ্যে ঢুকছে… প্রথম মুহুর্ত থেকেই যেন প্রত্যেককে চুল চেরা বিচারের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে…
“ইয়ু আর গোইং টু বি ইনভল্ভড ইন থিংস ইয়ু হ্যাভ নেভার ইভিন হার্ড বিফোর… আই ক্যাননট স্ট্রেস এনাফ ইম্পর্টেন্স অফ দ্য ওয়ার্ক ইয়ু উইল বি ডুইং হোয়েন ইয়ু ফিনিশ হেয়ার… বাট আই ক্যান অ্যাসিওর ইয়ু… দ্যাট ইয়ু উইল সাচ আ টাইপ অফ পার্সন দ্যাট ইটস গোইং টু বি ইয়োর জব টু হেল্প আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন মেনি রেস্পেক্ট টু প্রিভেন্ট ফ্রম লটস্ অফ থিংস… দোজ অফ ইয়ু হু ডু পাস উইল বিকাম কেস অফিসার… টু পুট ব্লান্টলি, আ কেস অফিসার ইজ আ স্পাই… হি অর শী ওয়ার্কস আন্ডার কভার…” বলে ফের থামে কর্ণেল… চোখ তার সমানে একজনের মুখের থেকে আর একজনের মুখের উপরে ক্রমাগত ঘুরে বেড়াতে থাকে কথা বলার সময়… সমগ্র অডিটরিয়ামে সকলে একেবারে চুপ করে শুনতে থাকে কর্নেলের বক্তব্য… কারুর মুখে কোন কথা নেই…
“হোয়াইল ইয়ু আর হেয়ার, ইয়ু আর গোইং টু গেট দ্য বেস্ট ট্রেনিং ইন দ্য ওয়ার্ল্ড… ইয়ু উইল বি ট্রেএন্ড ইন সার্ভেলেন্স অ্যান্ড কাউন্টার সার্ভেলেন্স… ইয়ু উইল হ্যাভ কোর্স ইন রেডিও কমুনিকেশনস্, এনকোডিং অ্যান্ড ওয়েপোনারি অ্যান্ড ম্যাপ রিডিং…
ইয়ু উইল অ্যাটেন্ড আ ক্লাস ইন ইন্টারপার্সোনাল রিলেশনস্… ইয়ু উইল বি টট হাউ টু বিল্ড আ র্যাপোর্ট, হাউ টু ড্র আউট আন ইন্ডিভিডুয়ালস্ মোটিভেশনস্ অ্যান্ড হাউ টু মেক ইয়োর টার্গেট ফীল অ্যাট ইজ…”
ক্লাসের প্রত্যেকে চোখ তখন এক দৃষ্টিতে কর্ণেলের উপরে নিবদ্ধ...
“ইয়ু উইল লার্ন অ্যাবাউট ‘ডেড ড্রপস্’, হাউ টু কোভার্টলি কমিউনিকেট উইথ ইয়োর কন্ট্যাক্টস্… ইফ ইয়ু আরে সাকসেসফুল অ্যাট হোয়াট ইয়ু ডু, ইয়ু উইল ক্যারি আউট ইয়োর আসাইনমেন্ট আননোটিসড অ্যান্ড আনডিটেক্টেড…”
শুনতে শুনতে চন্দ্রকান্তা অনুভব করতে পারে ওই জায়গাটার আবহাওয়া কি অসম্ভব ভাবে চার্জড্ হয়ে উঠেছে… প্রতিটা মানুষ সেই মুহুর্তে স্থির দৃষ্টিতে কর্ণেলের দিকে তাকিয়ে তার প্রতিটা কথা গিলে চলেছে যেন…
“সাম অফ ইয়ু উইল ওয়ার্ক আন্ডার অফিসিয়াল কভার… ইট কুড বি ডিপ্লোম্যাটিক অর মিলিটারি… আদার্স উইল ওয়ার্ক আন্ডার আনঅফিসিয়াল কভার অ্যাজ প্রাইভেট ইন্ডিভিডুয়ালস্… লাইক বিজনেসম্যান, আরকিওলজিস্ট অর নভেলিস্ট অর ডক্টর…” বলতে বলতে কর্ণেলের চোখ ঘুরে যায় চন্দ্রকান্তার মুখের উপর দিয়ে… “এনি প্রফেশন দ্যাট উইল গিভ ইয়ু আকসেস টু দ্য এরিয়াস অ্যান্ড টাইপ অফ পিপল লাইকলি টু হ্যাভ দ্য ইনফর্মেশন ইয়ু আর লুকিং ফর… ইট নট দ্যাট দিস ট্রেনিং ইয়ু উইল ইউজ ফ্রম টুমরো… ইট মে নীড ইয়ু হোয়েন এভার ইট রিকয়ার্ড… ইয়ু নেভার নো…” একটু থামে কর্ণেল… তারপর বলে ওঠে, “অ্যান্ড নাও আই অ্যাম গোইং টু টার্ন ইয়ু ওভার টু আওয়ার ইন্সট্রাকটরস্, গুড লাক…”
ট্রেনিং শুরু হয়ে যায় চন্দ্রকান্তাদের… চন্দ্রকান্তার কাছে এই ট্রেনিংটা ভিষন ভাবে উত্তেজক লাগে… ইন্সট্রাকটাররা নিজের নিজের জায়গায় ভিষন ভাবে পারদর্শী… প্রতিজনই অভিজ্ঞ এবং পেশাদার…
চন্দ্রকান্তা শুষে নিতে থাকলো যেন সমস্ত টেকনিকাল ইনফর্মেশনগুলি, যা যা তাদের শেখানো হতে থাকলো… সেই সাথে তাদেরকে ট্রেনিং এর পাশাপাশি একটা আলাদা কোর্স করিয়ে নেওয়া হতে লাগলো ভাষা আর ক্রিপটিক কোডএর উপরে…
ট্রেনিংএর সময় মাঝে মধ্যেই দেখা হয় কর্ণেল জনসন এর সাথে... চন্দ্রকান্তার কাছে কর্ণেল যেন একটা জীবন্ত রহস্য… ভিষন কম কথা বলে… শুধু মাত্র যতটুকু দরকার তার বেশি একটা কথাও কখন তাকে কারুর সাথে বলতে শোনা যায় নি… আর লোকটির দৃষ্টি… সামনে দাঁড়ালে যেন মনে হয় শরীরের ভিতরে থাকা মনটাকে একেবারে খোলা পাতার মত পড়ে ফেলতে পারে সে… ওখানেই কানাঘুষোয় শুনেছে সে যে কর্ণেলএর অনেক উঁচু অবধি হাত রয়েছে… আর শুধু তাই নয় সি আই এ’এর অনেক বড় ধরণের গোপন কার্যকলাপের সাথেও সে যুক্ত… এমনকি হোয়াট হাউসের সাথেও যোগাযোগ আছে… আরো একটা জিনিস চন্দ্রকান্তা খেয়াল করেছে… তাদের টেনিংএর সময়… মাঝে মধ্যেই একেবারে হাওয়া হয়ে যায় কর্ণেল… কোথায় যায় তা কেউ জানে না… আবার হটাৎ করেই উদয় হয় তাদের মাঝে…
সেদিন রন নামে একটি এজেন্ট ক্লাস নিচ্ছিল চন্দ্রকান্তাদের…
“আমরা কাউকে নিজের কাজে লাগিয়ে যদি কোন কার্যসিদ্ধি করতে চাই, এমন কোন গোপন অপরেশনকে আমরা চার ভাবে ভাগ করবো…” বলতে থাকে রন… উপস্থিত শ্রোতাদের মুখের উপরে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে… “প্রথম হচ্ছে ‘স্পটিং’… যখন তোমার কোন তথ্য বা ইনফর্মেশন পাওয়ার প্রয়োজন হবে, তখন তোমার প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আগে চিনে নেওয়া বা আইডেন্টিফাই করা সেই ব্যক্তিকে যার থেকে তোমার ইনফর্মেশন তুমি পেতে পারো…”
“দ্বিতীয় অধ্যায় হচ্ছে ‘আসেসমেন্ট’… একবার তোমার টার্গেট ঠিক হয়ে যাওয়ার পর তোমায় নিশ্চিত হতে হবে যে সেই টার্গেট তোমায় তোমার প্রয়োজনিয় ইনফর্মেশন দিতে পারবে কি না… অথবা তাকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে কি না নিজের কার্য সিদ্ধি করার জন্য… তার কি মোটিভ সেটা জানতে হবে তোমায়… সে যে কাজ করে, তাতে কি সে খুশি? নাকি তার বস্এর প্রতি তার অভিযোগ আছে? সে যা করে তাতে সে ফিনান্সিয়ালি সাফিসিয়েন্ট? তাতে তার পরিবার সচ্ছল ভাবে চলে যায়? এই সমস্ত তথ্যগুলো তোমার জানা হয়ে গেলে ভেবে নিতে হবে যে সেই টার্গেটএর মোটিভেশন কাজে লাগিয়ে নিজের কার্য সিদ্ধি করতে পারবে কিনা!... যদি দেখা যায় সেটা সম্ভব, তবে পরবর্তি তৃতীয় স্টেপ বা ফেজ…”
“ফেজ থ্রী হলো ডেভেলপমেন্ট… তোমার প্রস্পেক্টএর সাথে রিলেশন তৈরী করা… তার সাথে এমন ভাবে মিশে যেতে হবে যাতে তার সাথে তোমার একটা র্যাপো বা সম্পর্ক তৈরী হয়ে যায়… এরপর যখন বুঝবে, তখন তার উপরে সাইকোলজিকাল প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে দিতে হবে… এখানে সাইকোলজিকাল অস্ত্র বলতে তোমার হাতে অনেক কিছুই হতে পারে… ওর বসের প্রতি ঘৃণা বা টাকা পয়সা অথবা অন্য কিছু… যদি তুমি ঠিক মত তোমার প্রভাব তোমার টার্গেটের উপরে বিস্তার করতে পারো, দেখবে তোমার টার্গেট তুমি যেমনটা বোঝাবে, তেমনই সে বুঝবে… তারমানে তুমি তোমার জন্য একজন স্পাই তৈরী করে ফেলেছ তারই অজান্তে… যে তোমায় তোমার চাহিদা মত ইনফর্মেশন এনে দেবে কিছু না বুঝেই…”
“তাকে এবার তুমি ধীরে ধীরে তৈরী করে নাও নিজের কাজের জন্য… তাকে ট্রেন করো কি ভাবে মাইক্রোফ্লিম ব্যবহার করবে… অথবা যেখানে প্রয়োজন গোপনে কি ভাবে রেডিওতরঙ্গের সাহায্যে বার্তা তোমায় পাঠাবে… তাকে সেখাও কি ভাবে সে তার অনুসরণকারিকে শনাক্ত করবে… এবং যদি কখনও সে কোন কারুর প্রশ্নের সন্মুখিন হয়, তখন কি ভাবে সেই পরিস্থিতি সামলাবে… ইত্যাদি ইত্যাদি…”
“এবার আসে শেষ পর্যায়ে… এটাকে আমরা বলবো “ডিসকানেক্টিং”… কিছু সময়ের পরে দেখা যাবে যে যে লোকটিকে তুমি কাজে লাগিয়ে তোমার ইনফর্মেশন পাচ্ছ, তাকে আর তোমার প্রয়োজন নেই অথবা সে যে যে তথ্য তোমায় দিয়েছে তার পরে আর নতুন কিছু তোমায় দেবার কিছু নেই… তখন তাকে তোমার নিজের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে… কিন্তু সেটাও এমন ভাবে তোমায় করতে হবে যাতে সে এটা না বোঝে যে তাকে তুমি ব্যবহার করে ছেড়ে দিচ্ছ… যাতে পরবর্তী সময় সে তোমার বিপদের কারণ হয়ে না ওঠে… তাই অতি সাবধানতায় নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে তাকে নিজের থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে…”
চন্দ্রকান্তা খেয়াল করে যে কর্নেল জনসন ঠিকই বলেছিল… এখানে নির্বাচিত সকলের পক্ষে এই ট্রেনিংএর শেষ অবধি থাকা সম্ভব নয়… আর তাই সে খেয়াল করে ট্রেনিং চলার সময়ে ধীরে ধীরে কিছু অংশগ্রহনকারির হারিয়ে যাওয়া তাদের মধ্যে থেকে… কেন বা কোথায় কেউ জানে না… কেউ প্রশ্নও করে না সে নিয়ে…
একদিন চন্দ্রকান্তাদের এক ইন্সট্রাকটর এসে বলে, “আজ তোমাদের থেকে একজনকে আমি বেছে নেবো… তাকে আমরা রীচমন্ডএ পাঠাবো সার্ভেলান্স এক্সার্সাইজের জন্য… দেখতে চাই কত ভালো ভাবে এই পরীক্ষা উত্তীর্ণ হতে পারে সে…” বলে উপস্থিত পুরো টিমের উপরে নজর বোলাতে বোলাতে এসে থামে চন্দ্রকান্তার উপরে… “ইয়েস ডক্টর… আপনি কি এই টেস্ট দিতে প্রস্তুত?”
নিজের নাম কানে যেতেই সচকিত হয়ে তাকায় চন্দ্রকান্তা… “ইয়েস স্যর…”
“গুড লাক দেন…” বলে ওঠে ইন্সট্রাক্টর…
ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে বাস নিয়ে রিচমন্ডএ এসে নামে চন্দ্রকান্তা… তারপর হাঁটতে শুরু করে ফুটপাত ধরে…
পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তার ট্রাকারকে চিনে ফেলে সে… খেয়াল করে দেখে দুজন রয়েছে… একজন পায়ে হেঁটে তার পিছনে আসছে, আর আর একজন গাড়িতে… একটা রেস্তোরায় ঢুকে তার পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় নিজেকে আড়ালে রাখার চেষ্টা করে… তারপর চেষ্টা করে একটা দোকানে ঢুকে চট করে অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার… কিন্তু না… তাদের ঝেড়ে ফেলতে সমর্থ হয় না কিছুতেই সে… তারা যথেষ্ট পারদর্শি এ ব্যাপারে যে সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না চন্দ্রকান্তার… এই ভাবে প্রায় সারা অঞ্চলটাই সে ঘুরে ফেলে ততক্ষনে… কিন্তু কিছুতেই সে পারে না এদের নজর থেকে বেরিয়ে যেতে… ধীরে ধীরে হাতের সময়ও শেষ হওয়ার পথে… এবার ফিরে যেতে হবে তাকে ক্যাম্পাসে… পরীক্ষায় অনুতীর্ণ হয়ে… না… সেটা সম্ভব নয়… সে কখনও হারতে শেখেনি… আর এটা তো একটা সাধারন এক্সার্সাইজ… এদের নজর এড়িয়ে পালিয়ে যাওয়া… সেটা পারবে না?
হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে যায় চন্দ্রকান্তা… সামনে একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দেখে সেখানে ঢুকে পড়ে… তারপর নজর করে দেখে যে পিছনে আসা ওই দুটি লোক বেরুবার আর ঢোকার দুটো দরজার সামনেই এসে দাঁড়িয়ে পড়ে… মানে ওদের চোখে ধূলো দিয়ে বেরুনো সম্ভব নয়… সে সামনের এলিভেটরে করে উঠে যায় উপরে… গিয়ে ঢোকে একটু মেয়েদের জামা কাপড়ের দোকানে… প্রায় মিনিট তিরিশ পরে যখন সে নীচে নেমে আসে তখন তার পোষাক বদলে গিয়েছে… মাথার চুলের রঙও আলাদা… আর সেই সাথে আর একটি মহিলার সাথে কথা বলতে বলতে এগিয়ে যায় বেরুবার গেটের দিকে… কোলে তখন তার মহিলারই বাচ্ছা… অনুসরণকারীর সামনে দিয়েই বেরিয়ে চলে যায়, চিনতেও পারে না তাকে লোকটি একেবারেই…
শুধু সেদিন সেই নয়… এর পরে তাদের গ্রুপের বাকিদেরও একই রকম পরীক্ষা দিতে হয়েছিল, কিন্তু সে ছাড়া কেউই সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে নি…
এরপর আর একদিন তাদের ক্লাস হলো ‘জার্গন’ বা অর্থহীন ভাষার উপরে…
“তোমরা হয়তো এই সমস্ত কথাগুলো কোনদিন ব্যবহারই করবে না… কিন্তু তাও… তোমাদের জেনে রাখা খুবই জরুরী আমাদের এই ধরনের কাজে…” বলতে থাকে ইন্সট্রাক্টর… “দুই ধরনের এজেন্ট হয়ে থাকে… এক, ‘এজেন্ট অফ ইনফ্লুয়েন্স’ আর দুই, ‘এজেন্ট অফ প্রোভোকেটর’… তোমরা জানবে যে প্রথম এজেন্টএর কাজ হলো যে দেশে সে কাজ করবে সেখানে সে চেষ্টা করবে মানুষের মতামত বদলে দেওয়ার… যেমন ধরো কেউ কোন একটা পার্টিকে সমর্থন করে থাকে সেই দেশে, এবার এই এজেন্ট এমন ভাবে সেই মানুষটার ব্রেন ওয়াশ করবে যে পরবর্তী কালে দেখা যাবে যে সেই মানুষটা আগের পার্টি নয়, যে পার্টি এই এজেন্ট সমর্থন করতে বলছে, সে সেটাই করছে… আর দুই নম্বর এজেন্টএর কাজ হচ্ছে সেই দেশের মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টি করা… মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ঢুকিয়ে দিয়ে…”
“’বাইওগ্রাফিক লিভারেজ’… মানে সিআইএর কোড অনুসারে এটা আর কিছুই নয়, ব্ল্যাকমেল… বা এটাকে ‘ব্লাচক-বাগ জবস্’ ও বলা হয়ে থাকে যেটা কিনা ঘুষ থেকে শুরু করে রাহাজানি অবধি বোঝায়… এই যে ‘ওয়াটারগেট’ কেলেঙ্কারির কথা আমরা শুনেছি, সেটা এই ‘ব্ল্যাক-ব্যাগ জব’…” বলতে বলতে ইন্সট্রাক্টর চোখ ফেরায় সামনে বসে থাকা সমবেত শ্রোতাদের উপরে… প্রত্যেকে তখন একেবারে যেন জাদুমুগ্ধ হয়ে শুনে চলেছে তার কথা গুলো…
“কাজের মধ্যে মাঝে মধ্যেই তোমরা আর একটা কথা শুনতে পাবে… ‘কব্লার’ বা ‘মুচি’… এটার মানে এই নয় যে এ জুতো সারায়…” ইন্সট্রাক্টরের কথায় হাসির রোল ওঠে… “যদি কখনও শোনো ‘কব্লার’এর কথা, তার মানে এরা নকল পাসপোর্ট তৈরী করে দেয়… ভবিষ্যতে তোমাদের অনেক কাজেই এদের প্রয়োজন হবে হয়তো…
চন্দ্রকান্তা শুনে মনে মনে ভাবে, আমারও কি কখনও প্রয়োজন হবে নাকি কব্লারের?
“আর একটি কথা… যদি কখনও শোনো ‘ডিমোট ম্যাক্সিমালি’… এটা কিন্তু খুবই সাংঘাতিক কথা… এটার মানে হলো একেবারে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া… পথ থেকে পরিষ্কার করে দেওয়ার জন্য… এটার আর একটা কথাও বলা যেতে পারে… ‘টার্মিনেট’…”
“’ফার্ম’ কথাটার মানে হলো ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিস…”
“যদি শোনো অফিসকে ‘ফিউমিগেট’ করতে হবে… মানে ধোঁয়া দিয়ে জীবানুমুক্ত করতে হবে… তার মানে সত্যিই কিন্তু আমরা উই পোকা খুজতে যাবো না… এটার মানে হচ্ছে অফিসে কোথাও লুকানো শ্রবণ যন্ত্র রয়েছে, সেটাকে খুঁজে বার করতে হবে… আর তাকে নষ্ট করতে হবে…” মুগ্ধ হয়ে এই গোপনীয় কোডগুলো শুনতে থাকে চন্দ্রকান্তা…
“… ‘লেডিজ’ হচ্ছে কোন মহিলাকে কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে… ‘লেজেন্ড’ হচ্ছে কোন গুপচরের জীবনপঞ্জী… ‘গোইং প্রাইভেট’ মানে হচ্ছে সার্ভিস থেকে অবসর বা অব্যহতি নেওয়া…” বলতে বলতে ফের দৃষ্টি ফেরায় ক্লাসে উপস্থিত শ্রোতাদের উপরে ইন্সট্রাক্টর…
“কেউ বলতে পারবে ‘লায়ন টেমার’ মানে কি?” প্রশ্ন করে ইন্সট্রাক্টর সামনের দিকে তাকিয়ে… চুপ সকলে… কোন উত্তর আসে না… মাথা নাড়ে ইন্সট্রাক্টর… “যখন কোন এজেন্টকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয় তখন সে মাঝে মধ্যে হয়তো একটু ব্যাগড় বাঁই করে ফেলে… মানে আর কিছুই নয়… সে একটু উল্টো পালটা কাজ করে ফেলে রেগে গিয়ে… বা ভয় দেখায় যে সে যা জানে তা অন্যকে বলে দেবে… তখন তাকে নরম করানোর বা চুপ করানোর প্রয়োজন পড়ে এজেন্সির… আর তখনই মাসলম্যান বা লায়ন টেমারের দরকার পড়ে… যে কিনা সেই এজেন্টকে শান্ত করার কাজ করবে… আশা করি তোমাদের কারুরই লায়ন টেমারের প্রয়োজন পড়বে না…”
ইন্সট্রাক্টরের কথায় হেসে ওঠে ঠিকই উপস্থিত সকল শ্রোতা, কিন্তু সে হাসিতে মিশে থাকে অস্বস্থি…
“আচ্ছা… আর একটা টার্ম বলি… ‘মিজিলস্’… কোন টার্গেট যদি মিজিলস্এ মারা গিয়েছে বলে, তার মানে সে খুন হয়েছে এমন ভাবে যাতে তার মৃত্যুটা দেখে হয় অ্যাক্সিডেন্ট অথবা সাধারন মৃত্যু বলে মনে হবে… আর এই মিজিলস্ প্রয়োগের একটা পদ্ধতি হলো ‘ট্যাবুন’ ব্যবহার করা… এটা একটি বর্ণহীন গন্ধহীন জলীয় পদার্থ যেটার প্রয়োগে ব্যক্তির গায়ের চামড়া এই পদার্থটাকে শরীরের মধ্যে টেনে নিয়ে দেহের ভিতরের সমস্ত নার্ভগুলোকে প্যারালাইসিস করে দেবে…”
“… ‘মিউজিক বক্স’ মানে হচ্ছে ওয়ারলেস ট্রান্সমিটার… আর ট্রান্সমিটার অপরেটরকে ‘মিউজিসিয়ান’ বলা হয়…”
“ভবিষ্যতে যদি কখন বলা হয় ‘নেকেড’ হয়ে কাজ করতে হবে… তার মানে কিন্তু জামাকাপড় খুলে ফেলো না কেউ… তার মানে হচ্ছে তোমায় সম্পূর্ণ নিজের বুদ্ধি আর ক্ষমতার উপরে ভরসা রেখে কাজটা সম্পন্ন করতে হবে কারুর কোন রকম সাহায্য ছাড়াই… সেখানে কেউ তোমায় সাহায্য করার মত নেই ধরে নিয়ে…” বলতে বলতে থামে ইন্সট্রাক্টর… তারপর গলাটা পরিষ্কার করে ফের বলা শুরু করে… “আর একটা কথা বলতে চাই তোমাদের… এটা ভিষন প্রয়োজনীয় আমাদের কাজের ক্ষেত্রে… কথাটা হলো ‘কোয়েন্সিডেন্স’… সন্নিপাত বা সমাপতন… আমাদের কাজে এই ধরনের কোন কিছু নেই বলে মনের মধ্যে গেঁথে নাও একেবারে… এটার মানেই হচ্ছে বিপদ… যদি ধরো তুমি কোন কাজ করার সময় একই গাড়িকে বার বার সব জায়গাতেই দেখতে পাচ্ছো… বা কোন একজন ব্যক্তিকে যেখানেই যাচ্ছ দেখা হয়ে যাচ্ছে তার সাথে… তাহলে সাবধান হয়ে যাও… এটার একটাই মানে… তুমি বিপদে আছো…”
আরো একবার সমস্ত শ্রোতাদের মুখের উপরে চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলে ওঠে ইন্সট্রাক্টর… “আশা করি আজকের মত এটাই যথেষ্ট… আমরা আবার কাল শুরু করবো আরো কিছু কথা দিয়ে…”
সময় সময়ে চন্দ্রকান্তা একটা জিনিস খেয়াল করে যে তাকে অস্ত্র চালানো আর সেই সাথে শারীরিক কসরতের শিক্ষাটা যেন একটু বেশি পরিমানেই দেওয়া হচ্ছে অন্যান্যদের তুলনায়… কেন, সেটা বুঝে উঠতে পারে না সে… তবে কি… তবে কি জেনারেল সেদিন তাকে স্পেশাল মিশনের কথা যেটা বলেছিল, তার জন্যই এই ব্যবস্থা? তবে একটা জিনিস সে বুঝতে পারে যে এখানে তাকে একটা বিশেষ কারনেই পাঠানো হয়েছে বলে… তা না হলে এখানকার আর যারা অংশগ্রহনকারিরা রয়েছে তারা এজেন্ট হবার জন্যই এসেছে, কিন্তু সে তো তা হতে চায় না… হবেও না… তাও তাকে তার দেশ থেকে রেকমেন্ড করে পাঠিয়েছে এখানে… কিন্তু কেন, সেটাই সে জানে না শুধু… তাকে এখনও বলা হয় নি সেটার… এটার সাথে তাকে মাঝে মধ্যেই কর্ণেল ডেকে পাঠায় তার কাছে… এমনিই… কাজের কোন কথা নেই… শুধু মাত্র গল্পগুজব করার জন্য… এই যেমন তার দেশের কথা… তার বাড়ির কথা… কে আছে বাড়িতে… কেন সে এখানে চলে এসেছে… কেন দেশে ফিরে যেতে চায় না?... তার জীবনে কেউ ভালোবাসার মানুষ আছে কি না… তাদের জন্য সে কতটা চিন্তা করে… তার অনুপস্থিতিতে তাদের উপরে কোন রকম কোন প্রভাব পড়বে কিনা… ইত্যাদি ইত্যাদি… তারা কথা বলে আনুগাত্য বা বিশ্বস্ততা নিয়ে… কর্তব্য নিয়ে… আবার অনেক সময় কর্ণেল তার সাথে আলোচনা করে মৃত্যু নিয়েও… কিন্তু সে সবই সাধারন আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়… তার থেকে যে কি কর্ণেল জানতে চাইছে, সেটা বুঝতে পারে না চন্দ্রকান্তা… চেষ্টা করে পরে সেটা নিয়ে ভেবে বের করার কিন্তু সমস্তটাই তার কাছে একটা ধোঁয়াশার মত যেন... একদিন চন্দ্রকান্তাকে সরাসরি প্রশ্ন করে কর্ণেল... “ইফ ইয়ু ফেস ডেথ… আর ইয়ু অ্যাফ্রেড টু ডাই?”
খানিক ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়ে থাকে চন্দ্রকান্তা কর্ণেলের দিকে… তারপর মাথা নাড়ে… “নো… নট অ্যাটল…” তারপর একটু থেমে যোগ করে সে… “বাট টু ডাই ফর আ গুড রিজিন্…”
প্রশ্নটা কেন হটাৎ করে কর্ণেল করলো তাকে বুঝতে পারে না চন্দ্রকান্তা… এই কর্ণেলের সামনে এসে বসলে কেমন যেন তার মনে হয় যে সে একটা একমুখো আয়নার সামনে বসে রয়েছে… যেখানে সে শুধু উপরটা দেখছে… অথচে কর্ণেল যেন ওপাশ থেকে তার ভিতরটাকে সম্পূর্নভাবে দেখে চলেছে… সব ব্যাপারটাই কেমন অদ্ভুত গোপনীয়তার কুয়াশায় ঢাকা…
পুরো ট্রেনিংটা প্রায় ষোল সপ্তাহ ধরে চলল… এই সময়ের মধ্যে কোন অংশগ্রহনকারিকেই সুযোগ দেওয়া হয়নি বাইরের পৃথিবীর সাথে কোন রকম যোগাযোগ রাখতে… চন্দ্রকান্তা ভিষন ভাবে মিস করতো জোর্ডিকে... দিম্মিকে তাদের আলাপ হবার পর থেকে এত দীর্ঘ সময় তারা কোন দিন আলাদা থাকে নি কখনও…
চার মাস শেষ হতে কর্ণেলের ডাকে এসে বসে চন্দ্রকান্তা তার অফিসে…
“দিস ইজ গুডবাই টু সে… ইয়ু হ্যাভ ডান অ্যান এক্সিলেন্ট জব ডক্টর… আই থিঙ্ক ইয়ু আরে গোইং টু ফাইন্ড ইয়োর ফিউচার ভেরি ইন্টারেস্টিং…” বলে ওঠে কর্ণেল চন্দ্রকান্তার উদ্দেশ্যে…
“থ্যাঙ্ক ইয়ু স্যর… আই হোপ সো…” উত্তর দেয় চন্দ্রকান্তা…
“গুড লাক টু ইয়ু ডক্টর…”
চন্দ্রকান্তা ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কর্ণেল প্রায় মিনিট পাঁচেক চুপ করে বসে থাকে… তারপর উঠে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়… নিজের ডেস্কে ফিরে এসে ফোনটা হাতে তুলে নিয়ে ডায়াল করতে থাকে…