11-08-2022, 01:49 PM
(This post was last modified: 11-08-2022, 02:22 PM by Bumba_1. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
|| বিন্দা পিসি জিন্দাবাদ ||
নাট্যকার এবং প্রচ্ছদ :- বুম্বা
(ছয় দৃশ্যের কিশোর নাটক)
নাটকের চরিত্রসমূহ
ফুটবল টিমের ছেলেরা :- রাজু (ক্যাপ্টেন), দুলু, রনি, শঙ্কু, অন্তু, প্রয়োজনে আরো কয়েকজনকে নেওয়া যেতে পারে .. সকলেই কিশোর।
অন্যান্য চরিত্র :-
জগৎ দা - ক্লাবের সেক্রেটারি ও কোচ
ডাক্তার জেঠু - ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এবং পাড়ার ডাক্তার
দেবুদা - বডি বিল্ডার, পাড়ার একজন যুবক
পাগল - নাম শিবু
টুনু বাবু - বিন্দা পিসির ভাইপো
অভয়চরণ - প্রোমোটার এবং টুনু বাবুর বন্ধু
বিন্দা পিসি - পাড়ার পিসিমা এবং খেলার মাঠের মালকিন
নাটকের সময় :- ভোর পাঁচটা থেকে রাত আটটা
ক্লাবের নাম :- বেনু সংঘ
মাঠের নাম :- বেনু সংঘের মাঠ
দৃশ্য বিভাগ
প্রথম দৃশ্য - ভোর পাঁচটা বেনু সংঘের মাঠ
দ্বিতীয় দৃশ্য - বিকেল চারটে জগৎদার বাড়ি
তৃতীয় দৃশ্য - বিকেল পাঁচটা প্রেসিডেন্টের বাড়ি
চতুর্থ দৃশ্য - সন্ধে ছ'টা বেনু সংঘের মাঠ
পঞ্চম দৃশ্য - সন্ধ্যে সাতটা বিন্দা পিসির বাড়ি
ষষ্ঠ দৃশ্য - রাত আটটা প্রেসিডেন্টের বাড়ি
বিঃ দ্রঃ নাট্যাভিনয়ের সময় আনুমানিক ৩০ মিনিট (নাট্যাভিনয়ের জন্য নাট্যকারের অনুমতি আবশ্যক)
প্রথম দৃশ্য
দৃশ্যপট :- একটা পাড়ার দৃশ্য। মঞ্চের ডানদিকে থাকবে কতকগুলি বাড়ি ঘরের বোর্ড কাটিং, দু-একটা গাছের সিম্বল আর মঞ্চের বাঁদিকে থাকবে দূরে একটা গাছ, ফুটবল মাঠ আঁকা দৃশ্য (হলে ভালো হয়) একটা গোলপোস্টের সিম্বল।
বাঁ দিকের গাছের আড়ালে গা-ঢাকা দিয়ে বসে থাকবে একটা লোক, তাকে সামান্য দেখা যাবে।
সময় :- ভোরবেলা .. মঞ্চ আধো অন্ধকার, মাঠটা অস্পষ্ট দেখা যাবে। বলে ড্রপ দিতে দিতে দু'জন ছেলের মঞ্চের ডানদিক অর্থাৎ পাড়ার দিক থেকে প্রবেশ .. প্রথমে রাজু তার পিছনে দুলু। একটা স্পটলাইট ওদের অনুসরণ করবে।
রাজু - (বাড়িগুলির দিকে তাকিয়ে চাপা গলায়) রনি, এই রনি .. রনি এ....ই রনি।
দুলু - কি ঘুম রে বাবা! ভাবজিলাম ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখিস। আমি জানি ও দেয়নি .. একটুও সিরিয়াস নয় . রনি, এই রনি।
রনি - (একটা বাড়ির ভেতর থেকে) যা...ই , আসছি, দাঁড়া।
শঙ্কু - (পিছন থেকে) রাজু সরি, একটু লেট হয়ে গেল রে।
রাজু - অন্তুকে ডেকেছিস? ও যা ঘুমকাতুরে!
শঙ্কু - ডেকেছি, মুখ ধুয়ে আসছে।
(ইতিমধ্যে আরও দু'জন মঞ্চে প্রবেশ করে। ছেলেরা স্বল্পপরিসরে বেশ কায়দা করে বল কাটাতে কাটাতে মাঠের দিকে এগিয়ে যায়। হঠাৎ মাঠের ও পাশে বসা লোকটা যেন জেগে ওঠে। হাতে লাঠি নিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে পড়ে .. লোকটা একটা পাগল)
রাজু - কি আপদ রে বাবা, এই ভোররাতে পাগল এলো কোত্থেকে?
শঙ্কু - পালাই চল, এ বদ্ধ পাগল, কোত্থেকে এসেছে কে জানে (পিছিয়ে আসে শঙ্কু)
দুলু - চুপ কর তো .. আমি দেখছি দাঁড়া (একটু এগিয়ে যেতেই পাগলটা আস্তে আস্তে উঠতে থাকে, একটা লাফ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়)
পাগল - ও .. আমাকে ধরবি? মাঠে ঢুকবি? দাঁড়া .. ঠ্যাং ভেঙে দেবো তোদের। (মাটিতে লাঠি ঢুকতে ঢুকতে নানা অঙ্গভঙ্গি করে ভয় দেখাতে থাকে) হুঁ হুঁ .. মাঠে একবার পা দিয়ে দেখ না .. এই মাঠটা আমার, আমার বাবার আর আমার চৌদ্দপুরুষের। যা ভাগ এখান থেকে .. পালা (বলে আবার চলে যায়)
দুলু - (সকলের দিকে তাকিয়ে) চল তো, ওকে জাপটে ধরি সবাই মিলে।
রাজু - দুলু যাস না .. বেশি মস্তানি দেখাস না। পাগলের সাথে কিচ্ছু চলে না, ওরা যা খুশি তাই করতে পারে। (দুলুর হাত ধরে)
দুলু - তুই কি ভীতু রে .. পালাবো? প্র্যাকটিস করবো না? কাল ফাইনাল খেলা, মাঠটাও ঠিক করতে হবে।
রাজু - (রাগতভাবে) সবই তো বুঝতে পারছি, কি করবো বল না! ক্ষতি তো আমাদের হবে, তা ভালো রকম বুঝতে পারছি। কিন্তু উপায় কি বল? চল, ও বেলায় প্র্যাকটিস করব পাগলের সাথে লড়া যাবে না।
(পাগলটা হঠাৎ বিকট হাসি হেসে ওঠে, ঠিক যেন মনে হয় যাত্রা করছে। আর তাই শুনে আশেপাশের কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে লাগলো .. বাদ্যযন্ত্র একটা বাজানো হবে)
শঙ্কু - চল বাবা চল, ভয় করছে কেমন। (দুলুর পিঠে হাত রেখে বলে)
দুলু - কাল ফাইনাল খেলা, আজকের সকালটা মাঠে মারা গেলো। জগৎদা কি করে দ্যাখ .. মাথাটা আস্ত চিবিয়ে খাবে।
রাজু - এখন কিচ্ছু করার নেই, ও বেলাটা তো হাতে আছে। জগৎদাকে পরে বললেই হবে, এর মধ্যে মনে হয় পাগলটা চলে যাবে।
সকলে - হ্যাঁ বাবা .. চল চল।
(ধীরে ধীরে সকলের প্রস্থান / মঞ্চ অন্ধকার হয়। পাগলটা গিয়ে আবার বসে নিজের জায়গায়)
দ্বিতীয় দৃশ্য
দৃশ্যপট এবং সময় :- বিকেল চার'টে জগৎ দার বৈঠকখানার ঘর। মঞ্চে পর্যাপ্ত আলো, সামান্য আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো ঘর। দরজা খোলা, জগৎ দা বসে বসে কাগজ পড়ছেন। মঞ্চের বাঁ দিকে বসে আছে .. দরজা ডানদিকে। জার্সি গায়ে ছেলেদের প্রবেশ, হাতে ফুটবল।
রাজু - (দরজার সামনে) জগৎ দা, ভিতরে আসছি।
জগৎ - (চোখ তুলে) কি ব্যাপার রে, মাঠে যাসনি? আয় আয় ..
রাজু - (রাজুর পিছন পিছন সকলে ঢোকে) না জগৎ দা, প্র্যাকটিস হচ্ছে না।
দুলু - সকালেও হয়নি, এ বেলও হবে কিনা সন্দেহ।
জগৎ - (উৎকণ্ঠায়) প্র্যাকটিস হবে না কেন রে? কি হয়েছে?
দুলু - আর বলো কেন, একটা পাগল সকাল থেকে মাঠ দখল করে বসে আছে। আর ..
রাজু - শুধু তাই নয়, কেউ গেলেই লাঠি দিয়ে তেড়ে মারতে আসছে।
জগৎ - (উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে) আশ্চর্য .. পাগল এলো কোত্থেকে .. আর মাঠেই বা যাবে কেন? আর তোরাই বা কেমন, পাগল দেখে পালিয়ে এলি .. কাল ফাইনাল খেলা, এটা ভুলে গেলি?
রাজু - সেই জন্যই তো জগৎ দা আপনার কাছে এলাম ..
জগৎ - আমার কাছে এসে কি হবে? ওটাকে হটিয়ে অন্তত প্র্যাকটিসটা করা দরকার। শীল্ড ফসকালে মান থাকবে?
দুলু - কিন্তু জগৎ দা, আমাদের করবার কি আছে! ভয়ংকর জেদি পাগল, দেখবেন চলুন না। সমস্ত দুপুর ধরে মাঠে পাগলটা কি কান্ডই না করেছে।
জগৎ - কি .. করেছে কি?
রাজু - কি করেনি সেটাই বলুন, রাজ্যের মরা ডালপালা গাছ-গাছড়া নিয়ে এসে ভর্তি করে দিচ্ছে মাঠটা। বলছে এটা ওর মাঠ, ওর বাবার মাঠ, ওর চোদ্দপুরুষের মাঠ। কিছু বলতে গেলে লাঠি নিয়ে তেড়ে আসছে মারতে।
জগৎ - সে কি? মারতে আসছে .. নষ্ট করে ফেলল .. এতসব কান্ড ঘটে গেলো .. আর তোদের এতক্ষণে খেয়াল পড়লো! ক্লাবের প্রেসিডেন্টের কাছে গিয়েছিলি?
রাজু - (কাঁচুমাচু হয়ে) না .. ভেবেছিলাম ও চলে যাবে, আমরা এবেলা বেশি করে প্র্যাকটিস করবো, কিন্তু এ বেলাও যে মাঠ পাবো না, তা ভাবতে পারিনি।
জগৎ - আচ্ছা বল তো, পাগলটাকে আগে কখনো দেখেছিস?
রনি - না .. কোনোদিনই না, মনে হচ্ছে বাইরে থেকে এসেছে।
রাজু - (করুন ভাবে) কি হবে জগৎ দা?
(নেপথ্যে অন্তুর গলা) রাজু'দা রাজু'দা (তারপর ঝড়ের বেগে প্রবেশ)
অন্তু - এই যে রাজুদা তোমরা এখানে, শিগগির চলো দেখবে পাগলটা গোটা মাঠে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে কি কান্ড করছে!
রাজু - (অসহিষ্ণু হয়ে) শুনলে তো জগৎ দা!
জগৎ - শুনলাম কিছু তো একটা করতে হবে।
দুলু - থানায় খবর দিলে হয় না?
জগৎ - থানা! খেপেছিস? 'মশা মারতে কামান দাদা' .. থানায় গিয়ে মরি আর কি! পুলিশকে বিশ্বাস আছে? কোত্থেকে কি হয়ে যাবে। মাঝখান থেকে মাঠটাই বেহাত হয়ে যাবে। ও সবে কাজ নেই, অন্য কিছু ভাবতে হবে।
রাজু - তাহলে .. (হতাশ হয়ে) অন্য কি?
জগৎ - প্রেসিডেন্ট বাবু ছাড়া তো কোনো ভরসা দেখছি না। আগে তাকে গিয়ে বলা হোক, একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে। চল আগে সবাই তার সঙ্গে দেখা করি।
রাজু - হ্যাঁ হ্যাঁ তাই চলুন। চল রে সবাই ডাক্তার জেঠুর বাড়ি।
জগৎ - তোরা এগো, আমি আসছি (মঞ্চের বাঁদিকের দরজা দিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ে, আর ছেলেরা কথা বলতে বলতে মঞ্চের ডানদিকের উইংস দিয়ে বেরিয়ে যায়, মঞ্চ ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়।)
তৃতীয় দৃশ্য
দৃশ্যপট এবং সময় :- বিকেল পাঁচটা .. প্রেসিডেন্টের বৈঠকখানা ঘর কাম চেম্বার। দৃশ্য সজ্জার বিশেষ কিছু পরিবর্তন হবে না, শুধু মঞ্চের বাঁদিকে রোগী দেখার জন্য একটা হাই বেঞ্চ থাকবে। প্রেসিডেন্টকে সকলেই ডাক্তার জেঠু বলে ডাকে। মঞ্চে আলো জ্বলে ওঠার পর দেখা যাবে ঘরের মধ্যে সকলেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে।
ডাক্তার - (চিন্তিত হয়ে) সবই তো শুনলাম, কিন্তু উপায় তো একটা বের করতে হবে। এদিকে থানা পুলিশ করলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না।
দুলু - পাগলটাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেললে হয় না জেঠু?
ডাক্তার - তোরাই দেখছি পাগল। বুঝতে পারছিস না! ও হলো সেয়ানা পাগল। যে বলে আমার মাঠ, আমার বাবার মাঠ, আমার চোদ্দপুরুষের মাঠ .. এইসব কথা শুনে আমার মনে হচ্ছে সে রীতিমতো শেখানো পড়ানো পাগল।
শঙ্কু - হ্যাঁ জেঠু হতে পারে, মালতী কাজ করে ফেরার পথে দেখেছি ও প্যাকেট থেকে কেক বের করে খাচ্ছে। সঙ্গে আবার জলের বোতলও আছে।
জগৎ - স্যার আমার মনে হচ্ছে এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কেউ বা কারা নিশ্চয়ই করাচ্ছে, এর পিছনে ষড়যন্ত্র আছে।
ডাক্তার - অবশ্যই (উঠে দাঁড়িয়ে পড়েন) আমারও তাই মনে হচ্ছে। কেউ তোমাদের ম্যাচ পন্ড করতে চাইছে অথবা মাঠের দখল নিতে চাইছে।
রাজু - আমাদের সাথে কারই বা শত্রুতা আছে যে খেলা পন্ড করবে? আর মাঠই বা কেন নেবে?
ডাক্তার - নেবে রে নেবে। তোরা ছেলেমানুষ, এসব বুঝবি না। (জগৎ দার দিকে তাকিয়ে) আমাদের এখনি অ্যাকশান নিতে হবে, না হলে মাঠ হাতছাড়া হবে। বিনা কারণে একটা পাগল সারাদিন এক জায়গায় থাকতে পারে না।
জগৎ - আমিও তো তাই ভাবছি, কিন্তু কি করা যায়। তোদের মাথায় কি আসছে? (ছেলেদের দিকে তাকিয়ে)
(ছেলেরা কেউ কেউ মাথা চুলকায়, এ ওর দিকে তাকায়, কিছুই তাদের মাথায় আসে না)
ডাক্তার - আমি ভাবছি অন্য বিপদের কথা।
জগৎ - (উৎকণ্ঠায় উঠে পড়ে) সেটা কিরকম স্যার?
ডাক্তার - ভাবছি এই করতে করতে রাতে যদি দু-একখানা থান ইঁট গেঁথে দেয় কিংবা কোনো ঠাকুরের কাঠামো নিয়ে এসে বসিয়ে দেয় তাহলে আর কিছু করার যাবে না। পাগলটা তো উপলক্ষ মাত্র, আসল উদ্দেশ্য মাঠ দখল .. এরকম তো আজকাল হরদমই হচ্ছে।
জগৎ - এটা খুব সত্যি কথা, (ছেলেদের দিকে তাকিয়ে) আচ্ছা মাঠটা তো বিন্দা পিসির, সরকারদের বড়কর্তার মেয়ে। তোদের সঙ্গে কোনো ঝগড়াঝাঁটি হয়নি তো তার?
রাজু - না না পিসির সাথে কিছু হয়নি। তবে ওদের বাড়ির একটা লোক, কি যেন নাম রে দুলু (দুলুর দিকে তাকিয়ে)
দুলু - ঐ তো কি যেন .. দাঁড়া মনে করছি (একটু ভেবে) টুলু না টুনু কি যেন নাম .. খুব দুষ্ট লোক। খালি খালি এসে আমাদের বলবে এখানে বিল্ডিং উঠবে, এখানে খেলবি না।
জগৎ - (স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে) ব্যাপারটা এতক্ষণে পরিষ্কার হলো, এটা ওদেরই মতলব। তবে স্যার যা করতে হবে এক্ষুনি, আজ সন্ধ্যের মধ্যেই।
ডাক্তার - হ্যাঁ দেখছি। আমার মনে হয় দেবুকে একবার ডাকা দরকার, তার সাহায্যের প্রয়োজন আছে।
জগৎ - হ্যাঁ .. হ্যাঁ তাই করুন। দেবুই পারবে এ কাজ সামাল দিতে।
ডাক্তার - ঠিক আছে, দেবুকে একটা ফোন করে ডেকে নিই। (উঠে গিয়ে টেলিফোনের রিসিভার তুলে নেন এবং ফোন করেন) হ্যাঁ .. হ্যালো আমি ডাক্তারবাবু কথা বলছি . দেবু আছে? দেবু? নেই? কোথায় গেছে .. ক্লাবে? ও হ্যাঁ হ্যাঁ, ওর তো আজ ক্লাস আছে। আচ্ছা ঠিক আছে (ঘড়ি দেখে) এখন সাড়ে পাঁচটা বাজে .. ক্লাস শেষ হয়েছে এতক্ষণে হয়তো। অ্যাঁ .. না না . কিছু বলতে হবে না .. আমি দেখছি কাউকে পাঠিয়ে ডেকে আনতে পারি কিনা .. আচ্ছা ছাড়ছি।
ডাক্তার - (রিসিভার নামিয়ে) তোমরা একজন চট করে গিয়ে ক্লাব থেকে দেবুকে ডেকে আনো। বলবে আমি ডাকছি, তাড়াতাড়ি যাও।
রনি - আমি যাচ্ছি জেঠু, যাবো আর আসবো। (দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যায়)
ডাক্তার - (জগৎ দাকে ডেকে) আসুন এর মধ্যে আমরা একটা প্ল্যান করে নি।
(ওরা ঘরের এক কোণে গিয়ে শলাপরামর্শ করতে লাগলেন, এদিকে ছেলেরা মাটিতে বসে বল লোফালুফি করতে লাগলো)
(কিছুক্ষণ পরে দেবুর প্রবেশ)
দেবু - (সর্বাঙ্গে ঘাম, পড়নে শর্ট প্যান্ট আর স্যান্ডো গেঞ্জি) আমি সব শুনেছি জেঠু। (ছেলেদের দিকে তাকিয়ে) এই বোকাগুলো আমাকে কিচ্ছু বলেনি সকাল থেকে, তাহলে ওর খেলার মাঠে 'নগর-পত্তন' করা আমি ঘুচিয়ে দিতাম। বলুন স্যার, এখন কি করতে হবে?
ডাক্তার - এসো দেবু, দারুন সমস্যা, ইমিডিয়েটলি একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
দেবু - ঠিক আছে স্যার, আপনারা বসুন না, আমি ব্যাটাকে ঘাড় ধরে এনে আপনার কাছে ফেলছি।
ডাক্তার - (ব্যস্ত হয়ে) না না, ওসব নয় .. এতে বিপদ বাড়বে।
দেবু - কেন স্যার, কিসের বিপদ?
ডাক্তার - আরে বুঝতে পারছো না, ও যদি সত্যি পাগল হতো, তাহলে সারাদিনই মাঠটায় পড়ে থাকত না। একবার না একবার সে বেরিয়ে আসতো, সারাদিনে একটা হুল্লারি নিশ্চয়ই হতো। মাঠটা এভাবে আগলাতো না।
দেবু - তাহলে আপনি কি ভাবছেন? এর মধ্যে কারো কোনো চক্রান্ত আছে?
জগৎ - (ততক্ষণে জেঠুর পাশে এসে দাঁড়িয়ে) আমরা তো সেই রকমই একটা কিছু অনুমান করছি। শোন দেবু .. দাদা একটা প্ল্যান দিলেন, একটু কাজে লাগিয়ে দেখা যাক না, কিছু করা যায় কিনা।
দেবু - (উৎসুক হয়ে) কি রকম?
জগৎ - বলবো .. চল, পথে যেতে যেতে সকলকেই বলবো (ছেলেরা সবাই উৎসুক্য নিয়ে শুনছে ওদের দিকে তাকিয়ে এবং সকলকে একসঙ্গে জড়ো করে) তোরা সবাই চল .. আগে আমাদের বেণু সংঘ মাঠে যাওয়া দরকার। কাজটা খুব সাবধানে করতে। হবে কি বলুন দাদা? (জেঠুর দিকে তাকিয়ে)
ডাক্তার - অবশ্যই .. সবটা তো আমাদের অনুমান। তাই বিপদের একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
ছেলেরা - (সবাই মিলে) আমরাও যাবো?
জগৎ - তোরাই তো যাবি .. মাঠে ঢুকবি, ওকে চলে যেতে বলবি, দেবু থাকবে মাঠের পিছন দিকে। আর দেরি নয়, চল চল বেরিয়ে পড়ি। চলুন স্যার .. (একটু চিন্তা করে) ওঃ স্যার একটা গামছা নিয়ে আসুন। চল তোরা, স্যার আসছেন ..
(একে একে সকলে বেরিয়ে যায়, ইতিমধ্যে জেঠু ভিতর থেকে অর্থাৎ মঞ্চের বাঁদিকে উইংসের পাশ থেকে একটা গামছা নিয়ে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যান, মঞ্চ অন্ধকার হয়)