03-08-2022, 09:45 PM
(03-08-2022, 08:55 PM)Sanjay Sen Wrote: গত সপ্তাহে এই বাড়িতে এসেছিলে? বিরুদার মেয়ের বিয়েতে খেয়ে তোমার নাকি সাংঘাতিক শরীর খারাপ হয়েছিল রাতের দিকে শুনলাম! তারপর পুলিশের বউ নাকি হেব্বি সেবা করেছে তোমার? খবর পেলাম
চারিদিকে চর ছড়িয়ে রেখে দিয়েছো নাকি যে এত খবর পাচ্ছ? হ্যাঁ কিছুটা ঠিক শুনেছো, তবে ওর মেয়ের বিয়েতে খেয়ে আমার শরীর খারাপ হয়নি। কারণ, আমি সেই ভাবে কিছুই খাইনি .. তুমি তো জানোই আজকাল বেশিরভাগ বিয়েতে আমার খাওয়ার স্টার্টারেই সীমাবদ্ধ থাকে .. মেইনকোর্স পর্যন্ত পৌঁছাই না।
আসলে কদিন ধরে শরীরের উপর ভীষণ ধকল যাচ্ছিল, আর প্রচন্ড অনিয়ম চলছিল। শরীরটা ক'দিন ধরেই ঠিক ভালো যাচ্ছিল না। রাতে শোবার পর এমনিতে সব ঠিকঠাক ছিল। তারপর মাঝরাত্রি থেকে শুরু হলো বমি। তবে সেই অর্থে পটি হয়নি। সেদিন এতবার বমি করেছিলাম ডিহাইড্রেশন হয়ে গিয়েছিল .. শরীর পুরো ছেড়ে দিয়েছিল। সকালবেলা কোনরকমে উঠে বাথরুমে গিয়ে মুখ হাত পা ধুয়ে দরজার ছিটকানিটা খুলে দিয়ে এসে আবার বিছানায় শুয়ে পড়ি। কারণ আমি জানতাম দরজা খোলা থাকলে হাওয়ায় দরজাটা বার বার খুলবে আর বন্ধ হবে সেই শব্দে কেউ না কেউ আসবেই। যার কথা বলছো তার ছেলেটা আমি ওই ফ্ল্যাটে গেলেই আমার কাছে আসে, তারপর আমার সঙ্গে মারপিট করে, খেলা করে .. এই আর কি। সেইদিন রবিবার ছিল, ওর কলেজ ছুটি। দরজা খোলা পেয়ে সোজা ভেতরে ঢুকে এসে খাটে উঠে আমার বুকের উপর চড়ে বসেছে .. এমনিতে ও এটাই করে থাকে। আমার তো তখন এমনিতেই অবস্থা খারাপ, যতই বাচ্চা হোক সেই সময় বুকের উপর ঐরকম একটা ভারী মানুষ যদি চেপে বসে, তাহলে কিরকম অবস্থা হয় বুঝতেই পারছো। আমার তখন সেই ক্ষমতা নেই যে ওকে বুকের উপর থেকে নামাবো।
আমার চোখ-মুখের অবস্থা দেখে বা হয়তো অন্য কিছু ভেবে জানি না ও আমার উপর থেকে নেমে সোজা বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। তার কিছুক্ষণ পর দেখলাম ওর মা'কে ডেকে নিয়ে এসেছে। সে তো আবার আরেক জিনিস। আমার শরীরের অবস্থা এমনিতেই ভালো নয় তার উপর চেঁচামেচি করতে শুরু করে দিলো "একটা ফোন করতে পারো না? একই আবাসনে থাকি, একে অপরের কাজে না লাগলে এক জায়গায় থেকে লাভ কি? আমার ছেলে যদি বুদ্ধি করে আমাকে ডেকে না নিয়ে আসতো তাহলে তোমার কি হতো বল তো? তোমার চোখ মুখের অবস্থা একদম ভালো লাগছে না আমার। এখনই তোমার দাদাকে বলে একটা ডাক্তার দেখার ব্যবস্থা করছি। দেখি তোমার ফোনটা দাও .."
আমি কোনরকমে কষ্ট করে বলতে পারলাম "আমার ফোন সুইচড অফ ফোন খুলে যে কাউকে কল করবো সে ক্ষমতাও আমার নেই।"
"তোমার এখন কাউকে ফোন করার দরকার নেই, আমি ফোন করবো তোমার বাড়িতে। এইরকম অসুস্থ মানুষকে এখানে একা একা কেউ ছাড়ে? তাড়াতাড়ি পাসওয়ার্ডটা বলো .." ঝাঁঝিয়ে উঠে উত্তর দিলো বৌদি।
কোনরকমে কাকুতি মিনতি করে বাড়িতে ফোন করা থেকে বিরত করলাম বৌদিকে, তা না হলে ভবিষ্যতে কোনোদিন আমাকে আসতে দেবে না তো। কারণ ওরা কেউ চায় না আমি এখানে আসি।
সেবা বলতে ওষুধ আর খাবারটা ঠিক মতো দিয়েছিল আমাকে। কিছুই না .. পেটে ইনফেকশন আর মারাত্মক রকমের ডিহাইড্রেশন হয়ে গিয়েছিল। ওষুধে খুব তাড়াতাড়ি কাজ হয়, সেদিন বিকেলেই গাড়িতে করে কেটে পড়ি আমি। ওখানে গিয়ে ব্যাপারটা পুরো চেপে যাই। তবে আমার মুখ চোখের অবস্থা দেখে ওরা সন্দেহ অবশ্যই করেছে। তারপরের দিন আমাদের অফিসের ডক্টর বক্সীকে দেখিয়ে উনার ওষুধ খেয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠি।