02-08-2022, 05:23 PM
(29-07-2022, 10:48 AM)Akash23 Wrote:পতিতা পুত্র
শ্রী আ কা শ রা য়
অধ্যায় - ০
"দেখ বাবা গাঁয়ে যদি এক-আধটা বেশ্যা না থাকে তাহলে দেশটা যে উচ্ছন্নে যাবে! তাই বলছিলাম কী তোমার মা টা যখন আছেই তখন তাকে বারোভাতারি বানাতে দোষ কোথায়? তোমার মায়ের যা ডবকা যৌবন তাতে গাঁয়ের সবাই মিলে তোমার মাকে চুদলেও সমস্যা হওয়ার তো কথা নয়! আমার কথাটা একবার বিচার-ভাবনা করে দেখ বাপু!" হুঁকোয় টান দিয়ে হালকা খক্ খক্ করে কেশে শ্যামল পণ্ডিত বললেন কথাগুলো। উত্তরে কী বলব ঠিক খুঁজে পেলাম না।
এবার, রাগিনী বৌদি মুখে আঁচল চাপা দিয়ে একটু হেসে বললেন, "পণ্ডিতমশাই সেই কথায় তো বলছিলাম আকাশকে, যে তোমার বাবা থাকেন না যখন, তখন তোমার মায়ের ভরা যৌবন গাঁয়ের ছেলেপুলেরা একটু রসেবসে উপভোগ করবে এতে তো তোমার নিজেরই সম্মান বাড়বে তাই না? তাছাড়া, কথাতেই আছে মালিক যদি সম্পত্তির খেয়াল না রাখে তবে সে সম্পত্তি স্বাভাবিক নিয়মেই বারোয়ারি হয়ে যায় মানে জনগণের জিনিস আর কী! তা আকাশ কথাই শুনছে না। বলি তোমার মাকে যদি দু-দশজন একটু লুটেপুটে খেলই তাতে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হচ্ছে শুনি! এমন সুযোগ তো আর রোজ রোজ আসে না আকাশ, কত মানিগুণীজন তোমার মাকে বিছানায় নিয়ে গিয়ে খাট কাঁপাবে সেকথা ভেবে দেখেছো কী! রোজ রোজ এমন সৌভাগ্য ক'জনের আসে শুনি!" কথাগুলো শেষের দিকে রীতিমতো ঝাঁঝালো সুরে বললেন রাগিণী বৌদি। আমি খুবই অসহায় চোখে এদিক ওদিক তাকালাম! কোনভাবে কেউ যদি একটু ভুল করেই সই কিন্তু আমার পক্ষ সমর্থন করে! কিন্তু, দিনের শেষে প্রশ্নটা হল, আমি নিজে কোন পক্ষের লোক! আমার তো উচিৎ এই সবের তীব্র প্রতিবাদ করা! কিন্তু সেটা না করে এমন নীরব নির্বাক হয়ে সইছি কেন! মরিয়া হয়ে কিছু বলতে যাব এমন সময় পুষ্পা কাকীমা হাত তুললেন, "রাগিণী বৌদি ও পণ্ডিত মশাইয়ের সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করছি। আমাদের নিখোঁজপুরে সত্যিই একটা বেশ্যার বড্ড প্রয়োজন রয়েছে! উঠতি বয়সের ছেলেছোকরাগুলো এতটাই বেহায়া হয়েছে যে মা-মাসীর সম্মান অব্দি রাখছে না! এরকম চললে আমাদের নিখোঁজপুর তো গুণ্ডা-মাস্তানদের আখড়া হয়ে উঠবে! এমন অবস্থায় যদি গাঁয়ে আকাশের মায়ের মত একজন গতরবতী বেশ্যা থাকে তাহলে আর যাইহোক আমাদের মহিলাদের মানসম্মান বাঁচে!" একদমে নিজের বক্তব্য শেষ করলেন পুষ্পা কাকীমা! ওনার যুক্তিনিষ্ঠ কথার প্রভাব অনস্বীকার্য! বিশেষ করে গাঁয়ের বাকী মহিলাদের মানসম্মানের ব্যাপারটা শুনে বেশ গুঞ্জন উঠলো চৌহদ্দিতে; উপস্থিত অনেক মহিলাই যেভাবে ঘাড় হেলালেন তাতে আমার পক্ষে যে বিরোধ করা বৃথা সেটা ক্রমশঃ স্পষ্ট হয়ে উঠছে দিবালোকের মতই। এমন সময় চন্দ্রানী বৌদি উঠে দাঁড়ালেন, আমি ভীষণ আশাপ্রদ হলাম, চন্দ্রানী বৌদি যদি আমায় সমর্থন দেন তাহলে হয়তো হয়তো বাকীরাও এতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না। এসব সাতপাঁচ ভেবে আমি চন্দ্রানী বৌদির দিকে চাইলাম। বৌদি ঘোমটাটা একটু টেনে আমার দিকে আঙ্গুল তুলে মেঘমন্দ্র স্বরে বললেন, "এই গাঁয়ের সমস্ত পূজনীয় ব্যাক্তিদের আমার সশ্রদ্ধচিত্তে প্রণাম জানিয়ে জানতে চাই, বিয়ে হওয়া ইস্তক শুনে আসছি নিখোঁজপুরের হর্তা-কর্তা-বিধাতা গ্রামের সমস্ত মান্যবর জ্ঞানীরা। তারাই সবকিছু নির্ধারণ করেন। তাহলে সেক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হল এই সামান্য ব্যাপার নিয়ে এত দীর্ঘ আলোচনার কী প্রয়োজন রয়েছে! বিশেষকরে, গুরুপণ্ডিতবর্গ সকলেই যখন আকাশের মাকে বারোয়ারি করার পক্ষে মত দিচ্ছেন, সেক্ষেত্রে আকাশ কী চায় বা তার কী ইচ্ছা সে সম্পর্কে এত উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ আমি তো দেখছি না। আকাশ রাজী হোক বা নিমরাজী তা কি আদৌ কোনো মূল্য রাখে? নাকি, আজ গাঁয়ের পণ্ডিতবর্গ এতটাই দুর্বল হয়ে উঠেছেন যে আকাশের মত গাল টিপলে দুধ বেরোয় এমন বাচ্চার আপনাদের সপক্ষে মত না দিলে আপনারা সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছেন না? আমার ধিক্কার এই ক্ষীণ জীর্ণ নেতৃবৃন্দের প্রতি যাদের সামান্য বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে এত সময় লাগে, একজন বাচ্চাছেলের মতামতের প্রয়োজন হয়! যদি এই আপনাদের ক্ষমতা হয় তবে কি আদৌ ভবিষ্যতে কেউ আপনাদের বিচক্ষণতার প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করবে? বরং আমার মতে, আকাশের পণ্ডিতকূল ও গ্রামের বাকীদের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য ভয়ানক শাস্তি প্রদান করা উচিৎ! ওর সামনেই ওর মাকে উলঙ্গ করে ভোগ করা হোক তবেই ওর পাপের স্খলন হবে।" চন্দ্রানী কাকীমার উদ্দীপনাপূর্ণ বক্তব্য শেষ হতেই করতালি শব্দে উপস্থিতবর্গ নিজ সমর্থন জ্ঞাপন করল। আর বলতে গেলে এর সাথেসাথেই এই বিষয়ের কফিনে শেষ পেরেকটাও পোঁতা হয়ে গেল।
দোলনায় নিজের বিশাল বপুখানি হেলান দিয়ে জলভরা গড়গড়ায় হালকা হাতে গুড়গুড় করে টান দিতে দিতে বাদী-বিবাদী সব পক্ষেরই বক্তব্য শুনছিলেন আনোয়ার চৌধুরী! এই খাপ পঞ্চায়েতের উনিই প্রধান! গাঁয়ের পুরোনো জমিদার বলে কথা, এখনো আশেপাশের চব্বিশটা গাঁয়ের বকলমে উনিই সর্বাধিনায়ক! নিজের নধর শরীরটা সোজা করে বসলেন চৌধুরী সাহেব, উপস্থিতবর্গও সোজা হল, রায়দানপর্ব শুরু হচ্ছে বলে কথা, একঝাঁক কৌতূহলী চোখ এই মুহূর্তে চৌধুরী সাহেবের প্রতি নিবদ্ধ! গড়গড়াটা নামিয়ে রাখলেন চৌধুরী সাহেব, "তারপর গুরুগম্ভীর স্বরে বললেন, "সমস্ত পক্ষের মতামত শোনার পর, আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, সত্যিই নিখোঁজপুরে একজন প্রতিষ্ঠিত বেশ্যার বাস্তবিক প্রয়োজন রয়েছে! এবং আকাশের মায়ের মত এমন সুন্দরী রমণী যখন রয়েছে তখন তার সদ্ব্যবহার না করা তার নারী শরীরের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা। এমতাবস্থায়, আজ রাত থেকেই গ্রামের পুরুষদের আকাশের মাকে রতিক্রিয়ার মাধ্যমে ভোগ করার স্বাধীনতা দেওয়া হল!"
চৌধুরীবাবুর বক্তব্য শেষ হতেই শোরগোল শুরু হয়ে গেল, সবাই চৌধুরীবাবুর যৌক্তিক সিদ্ধান্তের মুক্তকণ্ঠে প্রশংসা শুরু করলো। গাঁয়ের মহিলারা তাদের মানসম্মান রক্ষা করার জন্যে গদগদভাবে সাধুবাদ দিলেন। শ্যামল পণ্ডিত উৎসাহে বেশ জোরেই হুঁকোয় টান দিয়ে চৌধুরীসাহেবের বিচক্ষণতার প্রতি নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিলেন।
আস্তে আস্তে, চৌহদ্দি হালকা হতে শুরু করল। মাটিতে বসে, গালে হাত দিয়ে আমি ভাবতে শুরু করলাম, এ কোনদিকে মোড় নিল ঘটনা! এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না, তবে কেন এমন হল! আমার ভাবনার সাক্ষী রইল আগত সূর্যাবসানের ঝিঁঝিরা!
★★★
(অধ্যায় -০ বা সূচনা এখানেই সমাপ্ত। পরবর্তী পর্ব:- অধ্যায় -১। শীঘ্রই আসছে)
বিঃ দ্রঃ এটি আমার প্রথম মৌলিক রচনা। বুঝতেই পারছেন কাঁচা হাতের রচনা। শুনেছি লিখতে লিখতেই হাত পাকে। সেই পাকা হাতের লেখা কবে উপহার দিতে পারব সে সম্পর্কে আমি নিজেও যথেষ্ট সন্দিহান। তবুও, আপনাদের সকলের গুরুত্বপূর্ণ মতামত চাইছি, গল্পের মোড় সম্পর্কেও নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী নির্ভাবনায় ব্যক্ত করুন। আশা করি, কোথাও ভুল ত্রুটি হলে আপনারা নিজ মহৎ গুণেই ক্ষমা মার্জনা করে দেবেন। এই আশাতেই সাহস করে লিখে ফেললাম পতিতা পুত্র ।