02-08-2022, 03:16 AM
দেবী : ১৩ তলার ফ্ল্যাটটার জানলা থেকে সূর্যাস্তটা দেখতে ভালই লাগে বেশ। বড় ফ্রেঞ্চ উইন্ডো, লালচে আভায় ঘরটা ভরে গেছে। এই সময়টাতে দেবী রোজই জানলার সিলটাতে বসে থাকে। কেউ বেডরুমের দরজা থেকে জানলাটার দিকে তাকায়, ঠিক মনে হবে কোনো Disney সিনেমার সিন, এক রাজকুমারি আনমনে জানলার বাইরে দেখছে। কথাটা খুব একটা অত্যুক্তি করা হবে না কারন একটি ৬ বছরের ছেলে থাকা সত্ত্বেও, ৩৩ বছরের দেবীকে দেখে তার বোঝা মুস্কিল। টকটকে ফর্সা গায়ের রঙ, রেশমের মত উজ্জ্বল আর মাখনের মত নরম ত্বক, বড় বড় কালো চোখ, মিষ্টি মুখ, অল্প কোঁকড়ান চুল, গোলাপি ঠোঁট, ভারি কিন্তু সুডৌল বুক, বড় পাছা, কোমরের কাছে অল্প মেদ, সব মিলিয়ে নজরকাড়া সুন্দরী। তবে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে গালে টোল পড়া মিষ্টি হাসি আর হাসলে ওর গজদাঁত দুটো। একাধারে বুকে আগুন জ্বালানো সেক্সি আবেদনময়ী শরীর আর মিষ্টি মুখ, দেখলে চোখ ফেরানো মুস্কিল। তবে আজ মুখে হাসিটা নেই, বরং মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। গত রাতের কথা ভাবলে লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে। তার anxiety disorder প্রবলেমটার জন্য অনেক মুস্কিলেই পড়েছে সারা জীবন কিন্তু এর চেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা হয়ত তার জীবনে আর কখনও হয়নি। আসলে ছোটবেলা থেকেই দেবীর একটা প্রবলেম ছিল, সে অত্যধিক introvert, মুখচোরা। কখনও নিজের অসুবিধার কথা মুখ ফুটে বলতে পারে না। তার উপর একটু উত্তেজনাকর অবস্থায় তার কর্তব্যবোধ হারিয়ে ফেলে, কথা আটকে যায়, হাত পা ফ্রিজ হয়ে যায়। আর এর জন্য সে কম অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে নি। এই সব ভাবতে ভাবতে চোখে জল এসে গেছিল তার। নীলের মা ডাকে সম্বিত ফিরল তার। নীল পাশের ঘরে তার পিসতুতো দাদা রাজার সাথে খেলছিল। রাজা বয়েসে ১০ বছরের বড় নীলের থেকে, কিন্তু তাও নীলের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু তার রাজা দাদা। দেবী প্রথম বিয়ে করে এই পরিবারে এসেছিল, রাজার বয়েস তখন এখনকার নীলের মতই ছিল। রাজার কথা মনে পড়তেই দেবী শিউরে উঠল আবার। আজও রাজা থাকবে, অভীকও (দেবীর বর) ফিরবে কাল। আজ রাতের অজানা আশঙ্কা বুকে নিয়ে দেবী জানলা থেকে নেমে এল। নীলকে পড়াতে বসাতে হবে, রাতের রান্নার আয়োজন করতে হবে। আর মনে মনে সে ঠিক করে নিলো, ডিনার এর পরে রাজার সাথেও কথা বলতে হবে, এটাকে আর বাড়তে দেওয়া যায় না।