Thread Rating:
  • 5 Vote(s) - 3.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery দীপ জ্বেলে যাই by Dipankar Ray
#2
“আর কিছু না। আমি জেগে উঠছি বুঝতে পেরে পিউ এর কাছে এসে ওকে দেখল তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। তখন বুঝলাম পিউ ভুল বলেনি, ওর বর আমাকে হয়ত পছন্দই করে।”

“এমন সুন্দরী মহিলাকে কে পছন্দ করবেনা? অনেক পুরুষমানুষ তো তোমার সাথে আলাপ করার অভিপ্রায়ে আমার সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করে।” বলে আমি জড়িয়ে ধরলাম শিখাকে।

“বাজে বোকো না তো! আমার চিন্তা অন্য জায়গায়। পিউও এসবের কিছু লক্ষ্য করেছে এবং এখন আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে ও ঠিক এবং আমি একটু চেষ্টা করলেই ওকে বাঁচাতে পারি। এই মুহূর্তে ওর মানসিকতা যে পরিমাণে দুর্বল, আমি ওকে দৃঢ়ভাবে না করতে পারছি না।”

“বলতে দাও ওকে যা বলার, কিছুদিন পরে সব ভুলে যাবে।”

“আমিও সেটাই আশা করেছিলাম, কিন্তু আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে সেই ভাবনাটা ভন্ডুল করে দিলো। এখন আবার নতুন করে চেষ্টা শুরু করেছে।” সেদিনের মতন আর কোন কথা হল না এই নিয়ে।

এরপর বেশ কয়েকদিন থাকবে বলে শিখাকে পিউদের বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আমি অফিস গেলাম। শিখাকে আগেই বলেছিলাম যে আমি ওখানে রোজ যেতে পারব না। তাই দিনের মধ্য বেশ কয়েকবার ফোনে কথা হতো, তবে আমার মনে একটা প্রছন্ন চিন্তা কাজ করত। হাজার হোক সুন্দরী বৌ অন্য কারুর বাড়িতে আছে, চিন্তা তো হবেই! সেদিন কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে গেছিল, হাত-মুখ ধুয়ে ওকে ফোন করে দেখি ফোনটা বন্ধ করা, ভাবলাম ঘুমিয়ে পড়েছে। একটু অদ্ভুত লাগলো, কারণ ফোন না করুক কিন্তু একটা মেসেজ না দিয়ে শুতে যাবার মেয়ে শিখা নয়। একরাশ বিরক্তি নিয়ে শুতে গেলাম। ঘুম থেকে উঠলাম তার থেকে বেশি অস্বস্তি নিয়ে। তক্ষুনি ফোন করলাম, এবারও বন্ধ পেলাম। পুরো বিরক্তি নিয়ে অফিস রওনা হলাম কিন্তু তার সাথে জড়িয়ে ধরল একটা অজানা ভয়। বেশ কয়েকটা কাজের মধ্যে আমারও ফোন করা হলো না। তবে কিছুক্ষণেই শিখার মেসেজ এলো “অফিস পৌঁছে গেছো, ব্রেকফাস্ট করেছো?” এটা পাওয়ার পরে কিছুটা আশ্বস্ত হলাম, কিন্তু পরমুহূর্তে রাগ হয়ে গেলো, তখন উত্তর দিলাম না, হাতের কাজ শেষ করে ফোন করলাম। ফোন বন্ধ করার কারণ যা বলল তা শুনে মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে গেলো, আর একটু আশ্চর্যও হলাম।

“গতকাল পিউ কান্নাকাটি করে ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়েছিল। আমার হাতে কোন কাজ ছিল না, মিটিং আছে জেনে তোমায় ফোন করতে পারছিলাম না। এতদিন বাড়ি ছাড়া, দুদিন তোমায় দেখিনি এইসব মিলিয়ে মনটা ভারাক্রান্ত ছিল। বাড়ি নিঃশব্দ, পিউ অঘোরে ঘুমাচ্ছে, দীপ নিজের ঘরে কিছু কাজ করছে। আমার মনে হচ্ছিল যে অদ্ভুত একটা পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়েছি, না পারি ছাড়তে না পারি কিছু করতে! এইসব এলোমেলো চিন্তা করতে করতে বারান্দায় বসেছিলাম রেড ওয়াইন নিয়ে। কিছুক্ষণ পরে দীপ ওখানে আসায় জিজ্ঞেস করলাম রাতের খাবার খেয়ে নেবে কিনা। ও পরে খাবে বলে নিজের জন্য ওয়াইন ঢেলে নিয়ে বসে পড়ল। সেই পেঁয়াজি রঙের নাইটিটা পরেছিলাম বলে একটু অস্বস্তি লাগছিল, কিন্তু কিছুই ভালো লাগছিল না তাই আলস্য করে বসেই রইলাম। বারান্দায় আলো জ্বালা ছিল না, তাই আর পাত্তা দিলাম না।”

যে নাইটির কথা বলছিল সেটা আমার বিশেষ প্রিয়। সাটিনের কাপড়ের ওপর লেসের কাজ করা, অন্য সবগুলোর মতন, তবে ওটার বিশেষত্ব হল ভীষণ পাতলা আর স্বচ্ছ। ওটা পরলে শিখার শরীরটা আলো-আঁধারির মতন উন্মোচিত হয়ে থাকে। ফোন করেনি তারপর এই সব কথা শুনে অফিসের ঠাণ্ডা ঘরে বসে একটা চাপা উৎকণ্ঠা অনুভব করলাম। না চেয়েও জিজ্ঞেস করে ফেললাম “সেকি? পিউয়ের ইচ্ছেটা পূরণ করলে নাকি?”

“না, তবে দীপের সাথে এতো গল্পও কখনো করিনি। ওকে যা ভাবতাম তার থেকেও ভালো, পিউয়ের সংবেদনহীনতা ওর জীবন আরও দুর্বিষহ করে দিয়েছে। ওর ছোটবেলার যা গল্প শুনলাম তাতে বুঝলাম দীপের মা বেশ জাঁহাবাজ মহিলা, ছেলেকে কখনো আত্মবিশ্বাসী হতে দেননি। নিজের ইচ্ছে-অনিচ্ছে দিয়ে ওর পুরো ব্যক্তিত্ব চেপে দিয়েছেন।আর পিউও অন্যভাবে সেই একই জিনিষ করছে।”

“দেখো আবার ওর প্রেমে পড়ে যেওনা!”

“প্রেম না, দয়া হয়।”

অফিসের কাজ আমায় সব কিছু থেকে মাঝে মাঝে দূরে নিয়ে যায়। এবারও অন্যথা হল না। মাস খানেকের জন্য দেশের মাটি ছেড়ে বিদেশ গেলাম, নতুন কিছু প্রোজেক্ট আর বিজনেস ডিলস ছিল মূল উদ্দেশ্য। পুরনো কিছু কন্ট্রাক্ট রিনিউ করার জন্য পুরনো সম্পর্ক গুলোকেও ঝালিয়ে নিতে হল। অ্যানার সাথে চেনা শোনা অনেক দিনের, রাতেরও চেনা বলা যায়, তবে শিখার কোন গুনই কারুর মধ্যে পাইনা, তাই সবকিছুই শুধুমাত্র দৈহিক শখ মেটানো হয়ে থেকে যায়, মন পড়ে থাকে শিখাতেই। তাই ফেরার সময় যখন প্লেন ল্যান্ড করছিল একমাত্র শিখা ছিল সমস্ত মন প্রাণ জুড়ে। কখন বাড়ি গিয়ে ওর শরীরের ঘ্রাণ নেবো, মিশে যাবো ওর সাথে সেই ভাবনায় নিজেই উত্তেজিত হচ্ছিলাম।

ফেরত আসার কিছুদিন পরে শুনলাম পিউ অন্তঃসত্ত্বা। ওর ব্যক্তিত্বতে আমূল পরিবর্তন এলো, ওদের জীবনে মেঘ কেটে সূর্য হেসে উঠলো, সংসারে শান্তি নেমে এলো। শিখাকে কৌতুক করে জিজ্ঞেস করেছিলাম “কি গো? তুমি জাদু করলে নাকি?”

সংক্ষেপে “হতে পারে” বলে আর কিছু বলেনি শিখা। আমিও আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি।

বেশ কিছুদিন পরে শিখা নিজে থেকেই পিউ পর্বের এই গল্প আমাকে বলতে শুরু করল। একদিন সকালে বলল “বিকেলে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরো, কিছু কথা আছে তোমার সঙ্গে।” রাতে বিছানায় শুয়ে কোন রকম ভণিতা ছাড়াই কথা শুরু করল শিখা।

“তুমি যখন ছিলেনা, একদিন আমি থাকাকালীন পিউ আবার দীপের সাথে ঝগড়া করে ওর মায়ের কাছে চলে গেছিল, আমিও আমাদের বাড়িতে ফিরে এসেছিলাম। পরে পিউকে ফোনে বুঝিয়ে ফেরার জন্য রাজি করিয়েছিলাম। ওর শর্ত ছিল আমি যদি ওর বাড়ি যাই তাহলেই ও ফিরবে। পরেরদিন রবিবার ছিল, কথা মতন বিকেলে ওদের বাড়ি গিয়ে দেখলাম পিউ ফেরেনি। দীপকে জিজ্ঞেস করে বুঝলাম স্বামী-স্ত্রীতে আবার সকালে কথা কাটাকাটি হয়েছে। পিউকে ফোন করলাম ফেরত আসার জন্য কিন্তু ও এলো না, নিজের জেদ নিয়ে বসে রইলো। পিউয়ের ব্যবহারে প্রচণ্ড বিরক্তি লাগছিল তাই আর বেশি কথা বাড়ালাম না। ফোন রেখে দীপকে বললাম, ‘তুমি ওকে জোর করে বাড়িতে আনতে পার না?’

ঈষৎ হেসে দীপ বলল ‘জোর আমি কাউকে করতে পারিনা শিখা। ও তো তোমার মতন না যে কথা শোনে। কথা না মানুক একজন মানুষকে কথা বলার সুযোগ দিতে হয়, সেটাও ওর জানা নেই।’

‘এইভাবে চলবে না দীপ, কিছুটা জোর করে হোক, তোমার কথাও ওকে মানতে হবে। তুমি যদি সেটা না পারো তবে শিখতে হবে। সবসময় চুপ করে ওর কথা মেনে নিলে চলবে না।’

তুমি বাড়ি নেই, খালি বাড়ি খাঁখাঁ করে, তাই ভাবলাম এসেছি যখন দীপের সাথে অল্পক্ষণ আড্ডা মেরে বাড়ি ফিরব। এ কথা, সে কথা করে আড্ডা জমে গেলো। ওয়াইন নিয়ে বারান্দায় বসে কথা বলছিলাম, কখন যে সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো টের পেলাম না। দীপের পেড়াপেড়িতে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম, ও দুপুরে রান্না করেছিল সেটাই আবার গরম করে খাওয়া হল।”

তারপর হঠাৎ সুর পাল্টে শিখা বলল “দীপ খুব ভালো রান্না করে, জানো বাড়িতে সব রান্না করেছিল! সেই দুপুরের খাওয়ারটা আবার গরম করে নিজের হাতে বেড়ে দিলো। এতো অনুভূতিপ্রবণ, নরম প্রকৃতির ছেলে! শিক্ষিত, বুদ্ধিমান, সৎ ওর বিয়ে পিউয়ের সাথে না হয়ে অন্য কারুর সাথে হলে ভালো হতো। যে ওকে বুঝতে পারত, ভালবাসত।”

তারপর আবার স্মৃতিতে ফেরত গিয়ে বলতে শুরু করল “খাবার পর আবার ওয়াইন আর আড্ডা চলছিল। দীপের সাথে যত কথা বলছিলাম, যত ওকে জানছিলাম, ততো ভালো লাগছিল! তাই যখন ওদের ওখানে রাতে থেকে যাবার কথা বলল তখন আর না করলাম না। দীপ বলার আগেই জানতাম আমি ওখানে থাকব, একটু বেশি ওয়াইন হয়ে গেছিল আর রাতও হয়ে গেছিল। কিন্তু সবচেয়ে বড় কারণ আমার ওখানে থাকতে ইচ্ছে করছিল, মনে হচ্ছিল আড্ডা চলতেই থাকুক, শেষ না হোক। তোমার ভালবাসাতে আমি এতো নিশ্চিন্ত যে কোন ভয় ছিল না আমার মনে। খালি একটাই অসুবিধে ছিল, ওখানে থাকব ভেবে যাইনি, একটা জিন্স আর টপ পরে গিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম পিউ ফিরলে ওকে বলে চলে আসবো। একা থাকলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভাব হবার সময় পাবে ওরা, এরকম একটা আশা ছিল মনে। কিন্তু ওখানে থাকতে গেলে তো আর জিন্স পরে শোওয়া যায় না! সেটা দীপকে বলাতে ও বলল পিউয়ের নাইটি পরে নিতে। কথাটা শুনে আমার হাসি পেল।

‘তোমার বউয়ের ওই মাসীমা মার্কা জামা আমি পরবো না, দেখি কি পরা যায়।’

ওদের শোওয়ার ঘরে যখন পোশাক বদলাচ্ছিলাম তখন নিজেকে ভীষণ দুঃসাহসী মনে হচ্ছিলো। পিউয়ের আলমারি খুঁজে একটা শাড়ি বের করলাম। পিউয়ের সাইজ আমার থেকে ছোট তাই ওর ব্লাউজ পরলাম না। পিউয়ের এতদিনের ঘ্যান-ঘ্যান, ওর জেদ নিয়ে রাগ, তোমার অনুপস্থিতি, আর দীপের সাহচর্য সব মিলিয়ে একটা বেপরোয়া ভাব। মনে হচ্ছিলো এমন কিছু একটা করি যাতে পিউয়ের কথা রাখতে পারি আর সেটা করতে গিয়ে ওর বরের কাছ খেলো না হয়ে যাই। তারপর আরও দুঃসাহস দেখিয়ে ব্রা আর সায়া পরলাম না, শুধু প্যান্টিতে গুঁজে শাড়িটা পরে নিলাম।”

আমি অবাক হয়ে শিখার কথা শুনে যাচ্ছিলাম। একদিকে ভয়, উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ আমাকে গ্রাস করছিল আর অন্যদিকে নিজের বউয়ের যৌন দুঃসাহসের কথা শুনে ভালো লাগছিল। শিখার প্যান্টিগুলো সব বিকিনি কাট, যা ঢাকে তার থেকে বেশি দেখায়। শুকনো ঠোঁটটা জিভ দিয়ে ভিজিয়ে বললাম “এতদিন বলোনি কেন?”

“কি ভাবে শুরু করব সেটা বুঝতে পারছিলাম না। তার থেকেও বেশি নিজের ব্যবহারে নিজেই আশ্চর্য ছিলাম, তুমি কি ভাবে জিনিষটা নেবে সেটা নিয়েও চিন্তা ছিল। তাই একটু সময় নিয়ে বললাম।” আবার স্মৃতিচারণে ডুবে গেলো শিখা।

“আঁচলটা পুরো শরীরে জড়িয়ে নেবো না একদিকে রাখব সেটা নিয়ে কিছুটা দোনোমোনো করে, একদিকে আঁচল রেখে বারান্দায় চলে গেলাম। বসবার ঘরে একটা আলো জ্বলছিল, বারান্দায় অন্ধকার। আমি বারান্দার কাছে এসে দরজা ধরে দাঁড়ালাম। দীপ পায়ের আওয়াজ শুনে পেছন ফিরে আমায় দেখে মুগ্ধ চোখে দিকে তাকিয়ে রইল।

‘তোমার জন্য আমার এই অবস্থা। তুমি থাকতে না বললে বলে এটা হতো না। তোমার বউয়ের ব্লাউজ আমার ভারি গায়ে হয় না, ছোট হয়।’

‘অঃ’ বলে ভ্যাবলার মতন তাকিয়ে রইল।

আমি সপ্রতিভভাবে চেয়ারে বসে পড়লাম, যদিও বুক ধুকপুক করছিল। কারণে-অকারণে দুই হাত তুলে চুলের খোঁপা ঠিক করছিলাম। কয়েকবার আড়মোড়াও ভাঙলাম, দীপের নজর আমার প্রতিটি শরীরের বাঁকে। আমিই বেশি কথা বলছিলাম। নিজের এই বেপরোয়া, প্রগলভতা, প্রলুব্ধকারিনী রূপে লজ্জা পেলেও ভালো লাগছিল। ওকে এইভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতায় নিজেই অবাক হচ্ছিলাম। কয়েকবার দীপের পুরুষত্বের অবস্থা দেখার চেষ্টা করলাম, কিছু বুঝতে পারলাম না। কিন্তু এটা বুঝতে পারছিলাম, এইখানে ছেড়ে দিলে দীপের পুরুষত্বের দীপ জ্বলবে না আর আমিও এইভাবে ওদের জন্য বারবার এইসব করতে পারব না। আশা করেছিলাম দীপই আমার কাছে এগিয়ে আসবে। আর ঠিক তখন আমি ওকে পিউকে আদর করার পরামর্শ দিয়ে, দায়িত্ব মুক্ত হব। কিন্তু দীপের দিক থেকে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখে বুঝলাম আমাকেই আর একটু এগোতে হবে। কিন্তু আমি বেশি অগ্রসর হলে দীপ ভয় পেয়ে যেতে পারে আর বেশি লাজুক হয়ে চুপ করে থাকলে হয়ত দীপের দ্বারা কিছু হবেনা। তাই ভেবে চিন্তে প্রতিটি কাজ আমাকেই করতে হবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ, বেশ আদুরে গলায় বললাম ‘বাড়িতে ওর সাথে শুই, এখানে পিউয়ের সাথে শুতাম, তাহলে আজকে কি আমাকে একলা শুতে হবে?’ কপট অভিমানে ঠোঁট ফোলালাম। এই প্রথম যেন দীপের মধ্য একটা আলোড়ন দেখলাম।”

আর থাকতে না পেরে বললাম “অ্যাঁ! তুমি ওকে তোমার সাথে শুতে বললে?”

“আর কি করতাম? পিউয়ের ঘ্যানঘ্যানানি আর সহ্য হচ্ছিল না।”

আমার আত্মবিশ্বাসী বউয়ের এই আত্মরক্ষামূলক ভাব দেখে আর কিছু না বলাই শ্রেয় মনে করলাম। “আচ্ছা তারপরে বল।”

“শোন, তোমাকে এই কথাগুলো বলতে আমাকে বেশ সাহস যোগাতে হয়েছে। তুমি এরকম বাধা দিলে আমার পক্ষে বলা আরও মুশকিল হয়ে যাবে।”

“আচ্ছা, আর বাধা দিচ্ছি না...”

একটু থেমে শিখা আবার স্মৃতিচারণে ডুবে গেলো। “দীপ বেশ উৎসাহের সাথেই বেডরুমে এলো। ঘরে ঢুকে আমি খাটের ধারে ধুপ করে বসে, হাত দুটো মাথার ওপরে তুলে শুয়ে পড়লাম। যেমন ভেবেছিলাম তেমনটাই হল, বুকের একদিক থেকে আঁচল সরে গেলো। তখন যদি তুমি আমার মুখ দেখতে তাহলে তুমিও ভাবতে যেন খেয়াল করিনি! দীপ খাটের ধারে দাঁড়িয়ে রইল, স্থির দৃষ্টি আমার বুকের উপর। এই প্রথম ওর শর্টসে কিছু নড়াচড়া খেয়াল করলাম বলে মনে হল। ঐভাবে শুয়ে থাকতে থাকতে ভাবলাম, এরপরেও যদি কিছু করার চেষ্টা না করে তাহলে নিজেকে ভীষণ বোকা মনে হবে। পিউয়ের চণ্ডালের মতন রাগের কারণটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে এইবার দীপ আর বোকামি করল না।

খাবি খেতে খেতে বলল ‘মানে… বলছিলাম যে… ইয়ে… মানে তোমার আঁচলটা সরে গেছে!’

বোকা আর কাকে বলে! আমি অন্যদিকের আঁচলটা সরিয়ে, বুকের মাঝখানে রেখে, দুটো স্তনই এবার ওর চোখের সামনে খুলে দিয়ে, ন্যাকা সুরে বললাম ‘এরকম?’

তুমি তো বল আমার বুক দেখলে সব পুরুষমানুষ নাকি গলে যাবে! ভাবলাম, সেই প্রভাব যদি ওকে একটু পুরুষ শক্তি এনে দেয়। আমি ওকে চোখের ইশারায় পাশে বসতে না বললে ওখানেই বিস্ফোরিত চোখে দাঁড়িয়ে থাকত। বসা মাত্র আমি ওর একটা হাত আমার বুকে তুলে দিলাম।”

এটা শুনে আমি খাবি খেলাম, ঠোঁটগুলো শুকিয়ে গেলো, শিখা সেটা দেখে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।

তারপর যখন আবার শুরু করল তখন গলায় একটা গ্লানি পেলাম “আমি এতটা যাব নিজেও ভাবিনি। ভেবেছিলাম আমার একটু শরীর দেখে যদি ওর ভালো লাগে এবং তাতে যদি ওদের উপকার হয় তাহলে দোষটা কোথায়? কিন্তু তুমি অনেকদিন নেই, পিউয়ের আত্মহত্যার চেষ্টা করে আমাকে প্রায় ব্ল্যাকমেল করা, দীপের এই বেচারা অবস্থা সব মিলিয়ে আমার মন কেমন করে দিয়েছিলো। তার ওপরে অতটা ওয়াইন, মাথাটা গুলিয়ে গেছিল। তবে তোমাকে মিথ্যা বলব না তখন নিজের এই দুঃসাহস ভালো লাগছিল, নিজেকে অঘটন পটীয়সী মনে হচ্ছিল, সব মিলিয়ে একটা উত্তেজনাময় পরিস্থিতি।”

শিখার কথাগুলো শুনতে-শুনতে চাপা উৎকণ্ঠা আর ভয়ে ভুগছিলাম। ঈর্ষা, রাগ ও হেয় হয়ে যাবার অনুভূতিগুলো মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল কিন্তু বুকের ধুকপুকুনিটা খালি এই কারণে ছিল না। নিজের মনের থই না পেয়ে বললাম “আমাকে বলেই করলে পারতে এসব, আমার জানা থাকলে এই ঈর্ষা ভাবটা থাকত না মনে।”

“তাই? কি বলতে? হ্যাঁ গিয়ে দীপকে প্রলুব্ধ কর?” ঠোঁট টিপে হাসল শিখা “তুমি যতই নারী স্বাধীনতার কথা বল না কেন, শেষমেশ তুমি কিন্তু একজন পুরুষমানুষ। নিজের বৌ অন্য কারুর সাথে কিছু করলে তখন আঁতে ঘা লাগবেই। এটা আমি আগে থেকেই জানি।”

কথাগুলো সত্যি, কলেজ জীবনে স্টুডেন্ট ইউনিয়ন করার সময় অনেক জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছি নারী স্বাধীনতার আর সমাজে স্ত্রীপুরুষের সমতা নিয়ে। তারপর বুঝেছি সমতাটাই শেষ কথা না, নারীর সম্মানটা বেশি বড় কথা। এখন বিশ্বাস করি পুরুষের বহুগামিতা যদি সমাজ মেনে নিতে পারে তাহলে নারীর সময় সেটা ভিন্ন কেন? সেটাও মেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু নিজের বৌ যখন বলে যে সে ব্লাউজ খুলে এক পরপুরুষের বিছানায় শুয়ে তার হাতটা নিজের বুকের ওপর তুলে দিয়েছে, তখন মাথার মধ্যে সেই কাল্পনিক ছবিটা সব চিন্তাভাবনা, সব বোঝা-জানা এলোমেলো করে দেয়। এরপরেও কিছু ঘটেছে নাকি? আমি বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম।

“আমার বুকে নরম করে হাত বোলাতে বোলাতে দীপ বলতে লাগলো যে আমাকে ওর খুব ভালো লাগে। অনেকদিন আমার কথা ভেবেছে, এইসব। আমার বুকের বৃন্তগুলো ভালোলাগায় কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। যখন তুমি আদর কর, তেমন। মনে হচ্ছিলো চোখ বন্ধ করে তোমার মুখটা দেখি আর কিছুক্ষণ আদর খাই। কিন্তু সেটা না করে বললাম-

‘তুমি তো খুব ভালো আদর করো, আমি তো ভালোলাগায় মরে যাচ্ছি। তাহলে পিউকে আদর করো না কেন?’ জোঁকের মুখে নুন পড়ার মতন অবস্থা হল। বুকের থেকে হাত সরিয়ে আমতা আমতা করতে লাগলো।

‘বিশ্বাস কর আমি পিউকে আদর করতে চাই, কিন্তু পারিনা...’

‘বাজে কথা বোলো না তো! আমি এখুনি বুঝলাম নিজের শরীরে... দিব্বি পারো, বেশ ভালই পারো।’

‘এটা তুমি বলে পারছি, পিউ হলে পারতাম না।’

‘কিন্তু আমি তো দেখি তুমি পিউকে মন থেকে ভালোবাসো।’ এসব কথা যখন হচ্ছে তখন আমার বুক আঁচল দিয়ে ঢাকিনি। এই প্রথমবার তুমি ছাড়া কারুর সামনে লজ্জা বিসর্জন দিয়ে এরকম উন্মোচিত হয়ে শুয়ে ছিলাম। লজ্জা আর ভালোলাগা মিলিয়ে একটা অদ্ভুত অনুভূতি।

‘হ্যাঁ, বিশ্বাস কর পিউকে আমি ভালোবাসি, কিন্তু ওর চাহিদার সামনে নিজেকে বড় ছোট মনে হয়, তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তুমি সব জানো, তোমাকে আর আলাদা করে কি বলব?’

‘আমি যা জানি পিউয়ের কথা শুনে জানি, তোমার মনে কি আছে সেটা জানিনা, তুমি বলো।’

দীপ আমাকে ওর মনের কথা বলতে শুরু করল, কি ভাবে ও বিয়ের আগে একটা নরম, মিষ্টি সম্পর্ক চেয়েছিল। ভেবেছিল ভালবাসা আর নরম আদর দিয়ে জীবন ভরে যাবে, যে ভালোবাসায় উদ্দামতা আর উন্মাদনা থাকবে কিন্তু সেটা মাঝে মধ্যে, ঝড়ের মতন। বাকি দিনগুলো মৃদু হাওয়ার মতন কাটবে। তারপর আমাকে অবাক করে ঝর ঝর করে কেঁদে ফেললো। আমি আঁচলটা টেনে নিয়ে উঠে বসলাম তারপর ওর মাথাটা আমার বুকে টেনে নিলাম।”

আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না, বাধা দিয়ে বলে উঠলাম “গেলো! তোমার ওই বুকে যখন টেনে নিয়েছো তখন তো দীপ দৃঢ় পুরুষমানুষ হয়ে তোমাকে দাবী করবে, এটাই হয়েছিল তো? এই ঘটনার শেষ আমি বুঝতে পারছি।”

“ইশ্! কিছুই জানো না!” রহস্যময় একটা হাসি ঠোঁটের কোন খেলে গেলো। “দীপ আমার বুকে মাথা রেখে কেঁদে গেলো, আর আমি ওর মাথায় বিলি কেটে দিতে লাগলাম। খুব ইচ্ছে করছিল ও আমার যে কোন বুকে মুখ রেখে আদর করুক, আমার থেকে ভালবাসা দাবী করে নিক। কিন্তু কিছুই করলো না, ঐভাবেই কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ল। আমি ওর মাথাটা কোলে নিয়ে হতবাক হয়ে বসে রইলাম।”

আমাদের শোওয়ার ঘরেও নিস্তব্ধতা নেমে এলো, ও চুপ করে ছিল আর আমি হতবাক হয়ে বসে ছিলাম। যেই প্রশ্নটা আমায় কুরে কুরে খাচ্ছিল সেটা করে ফেললাম-

“তুমি কি ওর প্রেমে পড়ে গেলে?”

একটু ভেবে শিখা বলল “প্রেমটা বিরাট ব্যাপার, অত বলতে পারব না। কিন্তু ভালোলাগা নিঃসন্দেহে আছে।”

“আচ্ছা, বেশ। তারপর?” প্রশ্নটাতে বেশ শ্লেষ ছিল। নিজেরই অবাক লাগছিল যে কেন শুনতে চাইছি?! না জানা তো একদিকে ভালো কিন্তু না জেনেও থাকতে পারব না।

“অত উৎকণ্ঠিত হতে হবে না, যে কাউকেই ভালো লাগুক না কেন, আমার জীবনের প্রেমের মানুষ শুধু তুমি”, ঈষৎ হাসল ও। “কিছুক্ষণ ঐভাবে বসে থাকার পর, দীপের মাথার তলায় বালিশ রেখে আমি বারান্দায় গিয়ে বসলাম। পরের দিন তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে দীপের ঘুম ভাঙিয়ে, ওকে বলে বাড়ি চলে এলাম।”

“বাঁচা গেলো! এখানেই শেষ তো?”

“এখানে শেষ করলে তোমার ভালো লাগবে?”

“না। আমি পুরো ঘটনা জানতে চাই।”

“আমিও তোমাকে পুরো ঘটনা বলতে চাই। না বললে মনে হবে তোমাকে প্রতারণা করলাম। বললে সেটা মনে হবে না।”

মেয়েদের মন পুরুষদের বোঝার বাইরে। আমাকে যদি শিখা এই ব্যাপারটা না বলত, তাহলে আমি কোনোদিন জানতে পারতাম না। চিরদিনই অন্ধকারে বোকার মতন সুখী থেকে যেতাম। কিন্তু ও এই কথা বলার সৎসাহস রাখে, না বলে বোকা বানিয়ে আমাকে হেয় করল না। সত্যিটা যতই কটু হোক না কেন কিন্তু জানার সুযোগ তো পেলাম! সেটাই কম কিসের? আমাদের দাম্পত্যে কখনই দৈহিক শুচিতার কোন বাধ্যবাধকতা ছিলনা, মনের শুচিতার অনেক বেশি মূল্য আমাদের কাছে। আমার সুন্দরী বৌ যে একজন পুরুষমানুষকে এভাবে বিচলিত করতে পারে, সেই ভালো লাগাও ছিল কোথাও। বড়ই অদ্ভুত এই মানুষের মন, একই সময় নিরঙ্কুশ বিপরীত স্রোতের চিন্তা চলে মনে। “তাহলে তারপর বল?”

“পরের দিন বেশ কয়েকটা কাজে ব্যস্ত ছিলাম, ফোনটা ব্যাগেই ছিল, কখন বেজেছে শুনতে পাইনি। দুপুরবেলায় বের করে দেখি বেশ কয়েকটা ফোন এসেছিল, তার মধ্য বেশীরভাগই দীপের। ওকে ফোন করাতে ও এমন ভাব করল যেন পিউয়ের খোঁজ নেওয়ার জন্যই আমাকে ফোন করেছে। যেই আমি বললাম পিউয়ের এখনো রাগ কমেনি ও পরে আসবে, অমনি সঙ্গে সঙ্গে আমি আসছি কিনা জিজ্ঞেস করল। মনে মনে ভাবলাম ‘পথে এসো চাঁদু।’ মুখে বললাম ‘কিছু কাজ আছে আজকে আসা মুশকিল।’ এরপর ওর পেড়াপেড়ি শুরু হল। ওকে বললাম যে তার পরেরদিন যাব কিন্তু থাকব না। দীপ সেটা মেনে নিলো।

পরেরদিন যাওয়ার আগে পিউকে ফোন করে বাড়ি ফিরতে বললাম কিন্তু ও নিজের জেদেই আটকে রইল। ওকে আর জানালাম না যে বিকেলে ওর বাড়ি যাচ্ছি। একটু দেরি করে সন্ধ্যাবেলা করে ওদের বাড়িতে পৌঁছলাম, দেখি দীপ আগেভাগে কলেজ থেকে ফিরে রান্না করে রেখেছে।

‘আমি খাব না দীপ, খেতে গেলে বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যাবে।’

‘আজকে না হয় থেকেই গেলে, কালকে তো আমার ছুটি, আমি তোমাকে গাড়ি করে ছেড়ে আসবো।’

‘তা হয় না, আমি বললাম তো যে থাকব না?’

দীপ আর কথা না বাড়িয়ে চট করে ওয়াইন ঢেলে নিয়ে এলো। যদিও আমি একটা গ্লাস নিয়ে বসে রইলাম ও কিন্তু নিজের জন্য বেশ কয়েকবার ঢালল। আড্ডা চলছিল দুর্বার গতিতে। আমি অনেকক্ষণ পরে বললাম ‘এবার উঠি, দেরি হয়ে যাবে।’ ও আবার অনুনয় বিনয় করতে লাগলো থেকে যাওয়ার জন্য। আমি তখন প্রথমবার ঘড়ি দেখার ভান করে বললাম ‘ইশ্! অনেক দেরি হয়ে গেছে। এবার কি করে যাব?’

‘তাহলে চল আমি তোমাকে ছেড়ে দিয়ে আসি।’ দীপের সরলতায় আমার প্রায় হাসি পেয়ে গেলো। কিন্তু তোমাকে সত্যি বলছি, ওর এই নিষ্পাপ মন দেখে ওর প্রতি ভালবাসা বেড়ে গেলো।

‘না থাক! তোমাকে আর এতো ওয়াইন খাবার পর ড্রাইভ করতে হবে না।’

‘কিন্তু তোমাকেও তো একা ছাড়ব না এতো রাতে!’

‘তুমি না!’ কপট রাগে বললাম ‘আবার আমাকে শুধু শাড়ি পরিয়ে রেখে দেবে!’

‘তাহলে কি পরা যায়?’ ওর অকৃত্রিম চিন্তা দেখে মায়াতে বুক ভরে গেলো।”
Like Reply


Messages In This Thread
RE: দীপ জ্বেলে যাই by Dipankar Ray - by ronylol - 25-05-2019, 04:29 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)