23-07-2022, 02:25 PM
(23-07-2022, 12:30 PM)Baban Wrote:এখানে যখন সময় আর ডাইমেনশন নিয়ে লেখার ও আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে তখন দিদি তোমায় দুটো অদ্ভুত প্রশ্ন করতে চাইবো।
১) Temporal paradox, grandfather paradox সম্পর্কে তোমার মতামত কি হবে?
তোমার কি মনে হয় যদি কেউ অতীতে গিয়ে একজনকে হত্যা করে, তাহলে কি সেই মৃত ব্যাক্তির ভবিষ্যত ওখানেই শেষ? অর্থাৎ তার নাতি হয়তো সমাজে কোনো পরিবর্তন আনতে পারতো কিন্তু এবার আর তা আর হবেই না। কারণ দাদুই তো বিবাহ পূর্বে মৃত। নাকি পুরোটাই একটা নতুন টাইম লাইনে গিয়ে ক্রিয়েট হবে, অরিজিনাল টাইম লাইন নিজের মতোই অক্ষত থাকবে?
২) অনেকের মতে (তা সে ইচ্ছাকৃত ভাবেও কেউ বলতে পারে ) ভগবানেরা স্বয়ং নাকি এলিয়েন। তারা মহা উন্নত শ্রেণীর জীব, এবং তাদের বসবাস অন্য ডাইমেনশনে। ১৩ নম্বর হতেও পারে। তারা পৃথিবীতে এসে তাদের থেকে অনুন্নত মানব সভ্যতাকে জীবন বাঁচতে, কাজ করতে ও লড়তে শিখিয়েছে, সাথে শিক্ষা তো আছেই। এবং তারা আবার ফিরে গেছে নিজেদের স্থানে। আর পৃথিবীর মানব জাতি সেই মহান শক্তির সম্মানে তাদের কথা লিখে গেছেন।
এই দুটো সম্পর্কে কি বলবে তুমি?
এই টাইম লকার টা আসলে একটা টেম্পোরাল ক্যাসুয়ালিটি লুপ। যেখানে একটা ঘটনা তার সমগ্রতা কে নিয়ে, কোন স্বাধীন টাইম জোন এ , নিজের ঘটনা প্রবাহ কে বারংবার রিপিট করে একটা লুপের মতন। আমরা যেমন প্রোগ্রামিং এ লিখি, ইফ এক্স= ওয়াই, দেন এম= এ/ ওয়াই, এলস, এম = এ++। এই রকম ভাবে ভ্যালুর হেরফেরে কোন ইনফাইনাইট লুপ তৈরি হতে হবে। আমি এখানে সিউডো কোড টা ঠিক লিখিনি আমি জানি। জাস্ট একটা উদাহরণ দিলাম মাত্র।
১) এখন এই গ্রান্ড ফাদার প্যারাডক্স বা টেম্পোরাল প্যারাডক্স দেখতে গেলে তো প্যারাডক্স নয়। দেখ কনসেপ্ট টা কে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু সত্যি তো কেউ অতীতে গিয়ে নিজের দাদু কে হত্যা করার পরেও যদি সে জন্ম নিয়েছে জানতে হবে তার আসল দাদু অন্য কেউ। মজা করে বললাম কথাটা। কিন্তু ব্যাপার টা সত্যি। সেই জন্যেই পঞ্চম ডাইমেনশন এ গিয়ে এই প্যারাডক্স টা তৈরি হয়। যদি কোনদিন সত্যি আমরা পঞ্চম ডাইমেনশন কে কব্জা করতে পারি তবে এই ভয় টা তো রয়েই যাবে। আর এই নিয়ে গল্প ও আছে। দাদুকে মেরে ফেলেও জানতে পারে যে যাকে মেরেছে সে তার আসল দাদুই নয়। বায়োলজিক্যাল দাদু ছিল অন্য কেউ। যেমন কংস মেরেছিল আসল লোক কে ছেড়ে দিয়ে বাকি সবাই কেই। এমন প্যারাডক্স তো আমাদের চার ডাইমেনশন এও হয়। কাজেই তখনো থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। জীবন আরো জটিল হবে। আর সেটাই স্বাভাবিক। আমরা প্রাচীন কাল থেকে অনেক বেশী জটিলতায় বসবাস করি এখন।
২) আমার মনে হয় না সেটা। আসলে এই গুলো থিয়োরী। কোন থিয়োরীর বিশেষ কোন প্রমাণ নেই। আর প্রতিটা থিয়োরীর নিজের নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী একটা ফ্যান বেস আছে। ধর্ম আমাদের মূলত চারটে পুস্তকে বর্ণিত আছে। যদিও মনে করি সনাতন ধর্ম এর কোন বই নেই। কোন বই সনাতন ধর্মের দলিল হতে পারে না। সনাতন ধর্ম, নিজের মূল্যবোধ, কর্ম, জ্ঞান, মনুষ্যত্ব, আর বিবেকের উপরে প্রতিষ্ঠিত আছে। হ্যাঁ মাঝে এই সনাতন ধর্মের বিকৃতি হয়েছে। কিন্তু মূল ব্যাপার টা এটাই যেটা আমি লিখলাম। যা বলছিলাম, এই সনাতন ধর্মের যা যা রেফারেন্স আমরা পেয়েছি, তা মূলত চার ধরণের বই এর আছে। এক, উপনিষদ। দুই বেদ। তিন রামায়ণ। চার মহাভারত। বাকী যা যা আছে সব গুলোই পাওয়া গেছে খ্রীষ্ট জন্মের হাজার বছর পরের। ব্রহ্ম বৈবর্ত পূরাণ, বিষ্ণু পূরাণ, শিব পূরাণ সব ই অনেক পরে রচিত আর বহু প্রক্ষেপণ এর দুষ্ট। এটলিস্ট পরে উল্লেখিত বই গুলির কোন পুরোন রেফারেন্স পাওয়া যায় নি এখনো অব্দি। এখন এই চার ধরনের বই পরে যা মনে হয়েছে তাতে বুঝেছি, ভগবান বা দেবতার কনসেপ্ট অনেক পরে এসেছে।
ঋক বেদে কিন্তু দেবতা ছিল না। সর্বপ্রথম বেদ। ছিল পঞ্চ ভুত। মানে জল অগ্নি বায়ু আকাশ আর পৃথিবী। মানুষ মানত বা পূজো করত এই পাঁচ টি মহা ভূত কে। তারপরে এলো গুণের কনসেপ্ট। উপরের পঞ্চভূত পাঁচটি মহান রিসোর্স ছাড়া তো কিছু না। জীবনে বাঁচতে গেলে এই গুলোর সব থেকে বেশী দরকার। কেন দরকার সেটা আর লিখলাম না। সেটা সবাই বুঝতে পারছে। এখন ধীরে ধীরে মানুষের মানসিক উন্নতি ও হলো। আসলে অনেক বড়ো উত্তর লিখতে হবে। যাই হোক ওরা ভাবল যে, রিসোর্স এর তো মান্যতা হলো, এর পরে জীবনের গুণের মান্যতা দরকার। সেই ঋষি রা দেখলেন, জীবনের তিনটি মহান গুণের ওপরে সংসার চলে। সৃজণ , রক্ষণ আর মৃত্যু। মৃত্যু কেও মহানতম গুণের মধ্যে রেখেছিলেন সনাতনী রা। কারণ বুঝে ছিলেন। মৃত্যুর মান্যতা না থাকলে সৃজণের কোন গুরুত্ব থাকবে না। এই তিনটি মহানতম গুণ কে ত্রিদেব নামে আখ্যা দিলেন। এদের মধ্যে যার কোন সৃষ্টি নেই সেই ধ্বংস বা মৃত্যু কে দিলেন দেবাদিদেব বা আদি তম দেবের আখ্যা। কারণ জীব জন্মের বহু আগে থেকেই চলছে ধ্বংসের লীলা খেলা।যে তেত্রিশ রকমের দেবতার পুজো সনাতনী রা করে, তার মধ্যে ১১ টা রুদ্রের উল্লেখ থাকলেও মহাদেবের উল্লেখ নেই। বরং ব্রহ্মা বা নারায়ণ কে ১২ আদিত্যের মধ্যে ধরা আছে। আট টা বসুর মধ্যে ধরা আছে সম্ভবত পঞ্চভূত কে। যদিও সূর্য্য কে আদিত্য আবার সাবিত্র নামে একটি বসু ও আছে। আর বাকি দুটো অশ্বিনী কুমার দ্বয়। কাজেই এই দেবতার কনসেপ্ট এসেছে পরে। আর এটা সনাতনী ইতিহাসের একটা মানসিক অভিযোজন।
ধীরে ধীরে আর ও অনেক দেবতা এসেছে। অর্থাৎ এই ত্রিগুণ কে ভেঙ্গে যত গুণ হতে পারে সব গুণের এক একটি দেবতা কে তৈরি করা হয়েছে। মন্দ নয়। এই বিশাল সংসারে সবার ক্ষমতা সমান নয়। বা সবাই এক ভাবে বাঁচতে পারে না। তাই নানান গুণ সামনে আসতে আসতে দেবতাদের একটা বিশাল সম্ভার তৈরি হয়েছে। আর পুজো করছি আমরা সেই গুণের। বস্তুত আমরা এই সংসার সমুদ্র সফল ভাবে পার করতে যা যা গুণের দরকার সেই গুণের তপস্যা করছি। সমগ্র পৃথিবী এই ভাবেই চলছে। তাতে কেউ মেনে চলছে কেউ না মেনে। কেউ সামনে হোম বা যজ্ঞ কুন্ড বানিয়ে তপস্যা করছে তো কেউ অন্যভাবে।
এই ত্রিদেব আসলে মানসিক। সৃজণের জন্য জ্ঞান দরকার। তপস্যা দরকার। তাই এই সংক্রান্ত সকল গুণ কে এক এক টা দেব দেবীর মান্যতা দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর জন্য ধ্বংসের জন্য, কোন নোংরা সিস্টেম কে উপড়ে ফেলার জন্য যা যা গুন দরকার তাদের আলাদা আলাদা দেব দেবীর মান্যতা দেওয়া হয়েছে। যেমন ধর্ম, মৃত্যু জরা ইত্যাদি। বাকি রইল পালন আর রক্ষণ। বলা হয় এই কাজ টা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই কাজে, তাকে সৃজণের জ্ঞান থাকা দরকার, রক্ষা করার সামর্থ্য প্রয়োজন, দরকার তাকে পালনের জন্য ভালোবাসা। দরকার প্রভুত জ্ঞান। দরকার সব রকম কলার অধিকারী হওয়া। তাই ত্রিদেবের মধ্যে এই মাঝের দেব টি কে জগত প্রতিপালক বলা হয়। এটি কোন একটি গুণ নয়। সকল গুণের আধার বলা হয়ে থাকে। যাকে আমরা নারায়ণ বলে জানি। কাজেই এই ত্রিদেব এবং বাকি সকল দেব দেবী হলেন মানসিক আর ভার্চ্যুয়াল। আর কন্সেপ্ট টা কি সেটা উপরে লিখেই দিলাম।
আর প্রতিটা মানব বা জীব এই তিনটে ভূমিকা পালন করে তার জীবন চক্রে। সে সৃষ্টি ও করে, পালন ও করে , রক্ষা ও করে, আবার ধ্বংস ও করে। আবার সৃষ্টি কর্তা সেই মানব , রক্ষা কর্তা সেই মানব , ধ্বংস কারী সেই মানব, নিজেও সৃষ্টি হয়, পালিত হয় আবার সময়ে সে মারাও যায়। কাজেই, এই ভাবে সকল সৃষ্টি কর্তা , কোন পরমকর্তার ইশারায় চলছে। এই ভাবেই এসেছে আত্মা আর পরমাত্মার কনসেপ্ট। এই কনসেপ্ট গুলো অভিযোজিত। দুম করে চলে আসে নি। তিনহাজার বছর আগে যে মহাভারত লিখতে পারে, সে কত খানি জ্ঞানী ছিল এই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এমন নয় যে আমরা এখন অজ্ঞানী। জ্ঞানের পরিভাষা বদলাবে। আর বদলাচ্ছেও। কাজেই, এখন কোথাও কোন দ্বীপে কোন বাচ্চা ছেলে আটকে পরলে তাকে আদিম মানুষের মতন লক্ষ বছর ধরে আগুনের উৎপত্তি শিখতে হবে না। কারণ এই জ্ঞান টা তার ভিতরে অভিযোজিত হয়ে গেছে।
বাকী রইল এলিয়েন। এটার কোন প্রমাণ নেই। তাই বিশ্বাস হয় নি। এমন না যে আমি ব্যাপার টা তে খুব রিজিড। বিশেষ করে মিশরের পিরামিড। একমাত্র পিরামিড ই আমাকে একটু টলিয়ে দেয়। কারণ এই টা বানানোর মতন অবস্থা সেই সময়ের মানুষের ছিল কিনা সেটা এখনো গবেষণার ব্যাপার। কিন্তু এখানেও কিন্তু আছে। কোন মিসিং লিঙ্ক আছে। হতে পারে সেই মিসিং লিঙ্ক টা এলিয়েন বা জগতের অন্য কোন সনাতনী জ্ঞানীর কর্মকান্ড।
জানিনা কি সব লিখে দিলাম।