13-07-2022, 05:26 PM
৩৮
দিমিত্রিভ খুজোস
পৃষ্টা ওল্টায় পর্ণা… আজকে একটা নতুন তারিখ ডায়রির… তবে খেয়াল করে এখান থেকে চন্দ্রকান্তা একটা তারিখের মধ্যে অনেকটা লেখেনি… বরং এখান থেকে তার লেখাটা প্রথম দিকে অনেকটাই ছোট ছোট আকারে ভাঙা… সম্ভবতঃ ছোট ছোট ঘটনা প্রবাহের অগ্রগতি সে লিপিবদ্ধ করে গিয়েছে… শুরু করে পড়া…
১৫ই মে, সোমবার
আজকে এখানের আর্ট কলেজে অ্যাডমিশন নিয়ে নিলাম… ইভিনিং ক্লাস করবো… কারন দিনের বেলায় আমার পক্ষে ক্লাস করা সম্ভব নয় কোন মতেই… তবে যতটা না আমার নিজের তাগিদে, তার থেকেও অনেক বেশি বলতে বাধ্য হচ্ছি দিম্মির ইচ্ছাকে সন্মান জানাতে… মানুষটা আমার মধ্যে যে কি দেখেছে কে জানে? একেবারে যেন ছিনে জোঁকের মত আমার পেছনে পড়ে গিয়েছিল হাত ধুয়ে আমায় আর্ট কলেজে ভর্তি করার জন্য নাটকের সেই শেষ দিন থেকেই… যত বলি যে না দিম্মি, এটা সম্ভব নয়… আমার হস্পিটালে যা শিডিউল, তাতে করে নিজের জন্য সময় এই ভাবে বের করা সম্ভব নয়… আমার পক্ষে সব ক্লাস অ্যাটেন্ড করা সম্ভব নয় কোন মতেই, কারন আমার প্রধান কাজ মানুষের সেবা… সেই কড়ারেই এই হস্পিটালে জয়েন করেছি… আমাদের মত সার্জনদের কোন নির্দিষ্ট ডিউটি আওয়ার্স নেই… কখন হস্পিটাল থেকে ডাক আসবে আমরা কেউ জানি না… যে কোন ইমার্জেন্সি বলে আসে না… এমন কতদিন হয়েছে, অফ ডে, কিন্তু হটাৎ করে হস্পিটাল থেকে ফোন… ডঃ চন্দ্রকান্তা… রিপোর্ট ইন ইআর থ্রি… স্ট্যাট… তখন হুড়তে পুড়তে একটা ক্যাব ডেকে দৌড়াতে হয়েছে হসপিটাল… সোজা অপরেশন থিয়েটর… সে রাত হোক বা দিন… হসপিটাল থেকে ডাক এলে যেতেই হবে, সেখানে নিজস্ব সময় বলে কিছু নেই… মানুষকে বাঁচিয়ে তোলাই তখন আমাদের মত সার্জেনদের এক এবং এক মাত্র উদ্দেশ্য… তাই এই ভাবে আর্ট নিয়ে ভাবার সময় বা সুযোগ কোনটাই আমার নেই… কিন্তু কে শোনে কার কথা… কানের কাছে সমানে ঘ্যানোর ঘ্যানোর করে গিয়েছে দিম্মি… আমার রক্তে যেটা আছে, সেটা কেন আমি এই ভাবে অপচয় করছি? কেন সেটা নিয়ে ভাবছি না? কেন শিল্পটাকে অবহেলা করছি শুধু মাত্র হস্পিটালের অজুহাত দিয়ে… এ মানুষটাকে বোঝাই কি করে যে মানুষকে সেবা দেওয়াটাও আমার কাছে অনেক দামী… অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার… তাই কিছুটা প্রায় বাধ্য হয়েই… দিম্মির কথাটাকে রাখতে ভর্তি হয়ে গেলাম আর্ট কলেজে… অন্তত যতটুকু সময় বার করতে পারবো, ততটুকুই না হয় দেবো ওখানে… তাতে যা হবার হবে… আমি তো আর আর্টিস্ট হতে যাচ্ছি না… জাস্ট নিজের ভিতরের আর্টটা যখন আছেই, তাকে একটু মাজা ঘষা করে আরো ধারালো করা… আর দিম্মি যে ভাবে আমায় সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে, বলছে যে আমি ক্লাস মিস করলেও ও আমার পাশে থেকে দেখিয়ে দেবে, তাতে জয়েন করলে খুব একটা অসুবিধা হবে না বলেই মনে হয়…
২৫শে মে, বৃহস্পতিবার
আজকে অনেকটা সময় দিম্মির সাথে কাটালাম… ঠিক সময় কাটালাম বলাটা ভুল হলো বোধহয়… ও প্রায় আমার সাথে বসে রীতি মত আঁকার ক্লাস নিলো বলা ভালো… কি ভাবে কতটা তুলির স্ট্রোক টানা উচিত… একটা মুখায়ব আনার সময় কি কি মাথায় রাখা উচিত তার একটা সবিস্তার বিশ্লেষণ আমার মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো যেন… কি সুন্দর করে বোঝায় ও… সময় নিয়ে… ঠান্ডা মাথায়… বার বার… যেখানটা আমার বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, সেটা ধৈর্য নিয়ে হাতে ধরে বুঝিয়ে দিয়েছে আমায়… খুব ভালো শিক্ষক ও… কেন ও বড় শিল্পী সেটা বোঝা যায়… ওর ধৈর্যটাই যেন ওর বিশেষ গুন… যেহেতু আমি ডাক্তার, তাই শরীরের অ্যানাটমিগুলো বুঝতে আমার অসুবিধা হচ্ছিল না ঠিকই… কিন্তু কিছু কিছু জায়গা আছে, যেটা শিল্পীর চোখ না থাকলে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব নয়… দিম্মির সাথে থাকলে কেমন আজকাল একটা অস্বস্থি বোধ করি… কেন জানি না… বুকের মধ্যেটায় একটা কেমন যেন করে!... আর হুট করে একটা বাচ্ছা মেয়ের মত কাজও করে ফেলেছিলাম আজ… ও সিঙ্গল কিনা জিজ্ঞাসা করে বসেছিলাম… ইসসস… প্রশ্নটা করেই নিজেকে কেমন খেলো খেলো মনে হচ্ছিলো… এই ভাবে জিজ্ঞাসা করাটা আমার উচিত হয় নি একদমই… অবস্য দিম্মির চোখ মুখ দেখে মনে হল না যে ও কিছু মাইন্ড করেছে আমার প্রশ্নের… বললো যে ওর সাথে আগে নাকি একটি মেয়ের অ্যাফেয়ার ছিল… কিন্তু বেশ কিছুদিন সেটা ব্রেকআপ হয়ে গিয়েছে… শুনে অস্বীকার করবো না, খারাপ লাগলো বটে, আবার মনে মনে কি একটু খুশিও হই নি?
৩১শে মে, বুধবার
না না না… হবে না আমার দ্বারা… দিম্মি যতই উৎসাহ দিক না কেন আমায়… কি করে সম্ভব? গত তিনদিন আমার এতটুকু সময় আমি বের করতে পারি নি ক্লাসে যাবার… এতটাই চাপ ছিল হস্পিটালে… রুগির যেন ঢল নেমেছে ওখানে… উফফফ… সারা দিন ধরে রুগি এসেই যাচ্ছে… কারুর অ্যাক্সিডেন্ট কেস তো কারুর অন্য কিছু… সারাটা দিন নিজের লাঞ্চ করারও সময় বের করতে পারি না, সেখানে আর্ট ক্লাস এ্যাটেন্ড করা… বলে দিয়েছি দিম্মিকে… সম্ভব নয় আমার পক্ষে এই সব… জোর্ডিও বলছে, কি করে পারবে তুমি দুই দিক সামলাতে? ঠিকই তো… জোর্ডি বুঝছে, আর দিম্মি বুঝতে পারছে না? এসব আর্ট ফার্ট কি আমাদের মত ডাক্তারদের দ্বারা হয়? তার ওপরে সার্জেন আমি, সারাটা দিন রুগির কাটাছেড়া করতেই কাবার হয়ে যায়…
২রা জুন, শুক্রবার
ক্লাসের মধ্যে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছি আমি… আর সারাদিনের পর যখন সন্ধ্যে বেলায় গিয়ে ক্লাসে ঢুকি তখন কিছুই প্রায় মাথায় ঢোকে না যেন… ওদিকে বোর্ডের উপরে স্কেচ করে ফ্যাকাল্টি বোঝায় আর আমি আমার সিটে বসে প্রায় ঢুলি… চোখ টেনে আসে ঘুমে… জানি না কত দিন এই ভাবে চালাতে পারবো…
১৫ই জুন, বৃহস্পতিবার
আমার সাথে চ্যালেঞ্জ নিলো শেষ পর্যন্ত? ও জানে আমায়? চেনে আমাকে? কি ভেবেছে? আমি ওর চ্যালেঞ্জ শুনে ভয়ে সিঁটিয়ে যাবো? ইসসস… সেটা আমার পক্ষে বেঁচে থাকতে কখনও সম্ভব হবে না… আমিও বলে এসেছি আজ… ঠিক আছে… চ্যালেঞ্জ রইলো… আমি যদি এক বছরের মধ্যে নিজেকে প্রমান না করতে পারি, তাহলে আমার নামে যেন দিম্মি কুকুর পোষে… ইসসসস… ঐ তো ভারী আঁকার ক্লাস… সেটা নাকি আমি পারবো না… আমার দ্বারা হবে না ওই সব আঁকা টাঁকা… চেনে না আমায় দিম্মি, তাই এই সব বলছে… জোর্ডিকেও বলেছি… দেখো জোর্ডি, আমি ঠিক নিজেকে প্রমান করে ছাড়বো… ও জানে না আমি কি পারি আর পারি না করতে… চ্যালেঞ্জ… হুঃ… দেখিয়ে দেবো আমিও… ও নিজেকে কি ভাবে? ওই আর্টিস্ট? আর সকলে এলেবেলে? পারে না ওর মত আঁকতে?
৩০শে অক্টোবর, রবিবার
দিন দিন যেন একটা কেমন নেশা চেপে যাচ্ছে আমার… প্রতিটা দিন একবার দিম্মির সাথে দেখা না হলে মনটার মধ্যে কেমন একটা শূণ্যতা গ্রাস করে… না না… সে সব কিছু নয়… আমি মোটেও প্রেমে পড়ি নি ওর… সে তো আমার জোর্ডি আছেই… ও যে ভাবে আমার খেয়াল রাখে, তাতে করে আমার জীবনে আর কারুর আসা কখনই সম্ভব নয়… এতগুলো দিন জোর্ডির সাথে থাকতে থাকতে যেন কেমন একটা অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছে আমার… জোর্ডি ছাড়া এখন আমি আর একটা পাও যেন চলতে পারি না… আমার সমস্ত কিছুতেই জোর্ডির অধিকার অনিবার্য ভাবে মিশে গিয়েছে… কিন্তু তাও… এমনটা কেন হচ্ছে আমার ভিতরে? এটা আমি বেশ কিছুদিন খেয়াল করেছি… রোজ দিম্মির পক্ষে তো আর আমায় সময় দেওয়া সম্ভব নয়… আর তাছাড়া আমারও তো এক একদিন ওটি শেষ করে বেরুতে বেরুতে বেশ রাত হয়ে যায়… ইমার্জেন্সি পড়লে বা হস্পিটালে কোন দিন কারুর অ্যাবসেন্সে চেক ইন করলে তো রাতেও ফেরা হয়ে ওঠে না আমার… আর সেই ক’টা দিন কেন এমন মনে হয় আমার? সব কিছুই যেন ঠিকঠাক আছে, তাও যেন কোথাও একটা ছন্দপতন… কিছুর একটা অভাব… আবার যেদিনটা দিম্মির সাথে থাকি, সেদিনটা কি অসম্ভব ভালো লাগে… তবে কি? তবে কি?... ইস… না না… এটা কি করে সম্ভব? জোর্ডিকে আমি কিছুতেই ঠকাতে পারবো না… এটা হয় না কোন মতেই…
২৬শে ডিসেম্বর, শনিবার
গতকাল ক্রিশমাসটা বেশ এঞ্জয় করলাম আমরা তিন জনে মিলে… জোর্ডি, দিম্মি আর আমি… সকালে আমার ডিউটি ছিল হস্পিটালে, তবে সুপারকে বলে একটু আগে বেরিয়ে এসেছিলাম… জোর্ডির তো অফই ছিল, তাই ওকে আর আলাদা করে ছুটি নিতে হয় নি… বাড়ি ফিরে ড্রেস চেঞ্জ করে জোর্ডিকে নিয়ে গিয়ে দিম্মির ফ্ল্যাটে উঠেছিলাম… তারপর দিম্মিকে সাথে নিয়ে একটা ইতালিয়ান রেস্টরেন্টএ… এমনিতে আমি চাইনিজ পছন্দ করি, কারন ঝাল মশলা খেতে কোন দিনই ভালো লাগে না আমার খুব একটা, আর সেই কারনে জোর্ডি যে একটু গজগজ করে রান্না করার সময় সেটাও বুঝি আমি, কিন্তু আমার মুখের উপরে কিছু বলতে পারে না… এদিকে ও জার্মান, তাই একটু স্পাইসি ফুড পছন্দ করে বেশি, তাই বাইরে কোথাও খেতে বেরুলে ও কিছুতেই চাইনিজ খেতে চায় না… গেলে হয় ঐ জার্মান রেস্টুরেন্ট গুলোতে নয়তো ইতালিয়ান… অন্য দিন হলে হয়তো না বলতাম, কিন্তু যতই হোক, এটা ওদের পরব… আমার দূর্গাপূজা তো আর নয়… তাই ওর কথা মতই এখানে আসা… তবে খুব যে স্পাইসি ডিশ অর্ডার করল তা নয়… কিছু পাস্তা আর স্প্যাগেটি… আমি অবস্য জুসএর উপরেই ছিলাম…
বেশ ভালো কাটলো সন্ধ্যেটা… ডিনার শেষে তিনজনে এমনিই ঘুরলাম বেশ খানিকটা রাস্তা ধরে… রাস্তায় বেশ ভীড় দেখলাম… ক্রিসমাস বলে কথা… সব দোকানগুলো খুব সুন্দর করে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে… ঠান্ডাটাও ততদিনে বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে… গায়ে মোটা জ্যাকেট না থাকলে এই ভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো সম্ভব নয়…
ইদানিং একটা জিনিস খেয়াল করেছি আমি… প্রথম প্রথম জোর্ডি খুব সহজ ভাবে মিশতো দিম্মির সাথে… কিন্তু আজকাল কি জানি একটু এড়িয়ে চলে ওকে… আমি জিজ্ঞাসা করলে পাশ কাটায় আমার প্রশ্নের… আবার আমি যদি খুব একটা দিম্মিকে নিয়ে কথা পাড়ি ওর সামনে, দেখি ও তাতে বেশ বিরক্ত হয়… এতে আমার হয়েছে বিপদ… জোর্ডিকে বোঝাতে পারি না যে ওর পজিশন আমার কাছে একেবারেই আলাদা… আর দিম্মি আমার খুব ভালো বন্ধু… কেন যে ও এটা বোঝে না?
১৪ই জানুয়ারী, বৃহস্পতিবার
আজকে আর্ট কলেজের একটা টেস্টএর রেজাল্ট বেরিয়েছে… তাতে আমার পজিশন বেশ ভালো… ভালোই নাম্বার পেয়েছি… দিম্মিকে দেখাতে ও মুখ ভেটকে বলল, ও আর এমন কি? এতে কি হবে? ইসসস… এই কয়েক মাসের মধ্যে এত ভালো রেজাল্ট করলাম, তাতে কিছুই না যেন… না… এটা অস্বীকার করবো না… টেস্টএর আগে দিম্মি কিন্তু খুব হেল্প করেছে আমায়… কি রকম কি আঁকতে দিতে পারে তার একটা গাইড লাইন করে দিয়েছিল, আর সেই মত আমায় প্রিপ্রেয়ারও করে দিয়েছিল… তাই ওখানে গিয়ে আমার আঁকাটা কমপ্লিট করতে অনেকটাই সুবিধা হয়েছে… আর শুধু তো আমি ওই আর্ট ক্লাসে গিয়ে শিখি তা তো নয়… আমায় দিম্মি আলাদা করে প্রায় রোজই আজকাল হাতে ধরে আঁকাটা দেখিয়ে দেয়… যার ফলে আগের থেকে আমার আঁকায় অনেক পার্ফেকশন এসেছে… আগের যে ছোট খাটো ভুল গুলো করতাম, সে গুলো অনেকটাই শুধরে গিয়েছে বেশ… এর জন্য অবস্যই দিম্মিরই কৃতিত্ব… জোর্ডি অবস্য কোন কৃতিত্বই দিতে চায় না দিম্মিকে… বলে ওটা তোমার রক্তে রয়েছে, তাই এত ভালো আঁকতে পারো তুমি… কিন্তু আমি তো জানি, শুধু শিল্প রক্তে থাকলেই হয় না, তাকে ঘষে মেজে তৈরী করতে হয়, আর সেই ঘষা মাজাটা দিম্মির ওই রকম সহমর্মিতা না থাকলে কোন দিনই সম্ভব হতো না… হয়তো আমি যে কোন দিন রঙতুলি ধরবো, সেটাই কখনও আমার মনের মধ্যে আসতো না… সারাটা দিন ওই ছুরি আর কাঁচি দিয়ে পেশেন্টদের শরীর কাটাছেড়া করে বেড়াতাম…
আর্ট কলেজে এখন আমার বেশ একটা নাম হয়ে গিয়েছে… প্রফেসারদের আমি এখন বেশ চোখে পড়েছি… ওনাদের বক্তব্য, এতো তাড়াতাড়ি এই ভাবে আঁকতে পারা নাকি বেশ ট্যালেন্ট লাগে… শুনতে ভালো লাগে… অস্বীকার করি কি করে… আজকাল আমাকে দিয়ে প্রফেসররা পোর্টেট আঁকার ট্রেনিং দিচ্ছে… ভাবছি জোর্ডিকে আমার মডেল করে ওর ওপরেই মকসো করবো… কিন্তু কখন? সারাদিনের পর যে আর শরীর চলে না… আর অফ ডে থাকলে সেটা আর এঁকে সময় নষ্ট করতে ইচ্ছা করে না কিছুতেই… কেন জানি না, আজকাল সময় সুযোগ পেলে দিম্মির সাথে একটু সময় কাটাতে ইচ্ছা করে, আর কিছুই না, এই আঁকার ব্যাপারে অনেক টিপস্ পাওয়া যায় ওর থেকে…
১৩ই মে, শুক্রবার
প্রায় একটা বছর পেরিয়ে গেলো আর্ট কলেজে ভর্তি হয়েছি… এর মধ্যে একটা সেমেস্টার ভালো ভাবে উৎরে গেছি… সেদিন দিম্মির সামনে দাঁড়িয়ে চোখ নাচিয়ে বলেছিলাম… কি? দেখো… কথা রাখতে পারলাম কি না? বলেছিলাম না, আমার সাথে চ্যালেঞ্জ নিতে এসো না… জানো না আমি চাইলে কি কি করতে পারি… শুনে কি বলল দিম্মি? না, ও নাকি জানতো… আমিই পারবো… আর সেটা জানতো বলেই আমায় খোঁচাটা দিয়েছিল… শুনে মাথাটা গরম হয়ে যায় না? যাক… এখন আর মাথা গরম করে কি হবে? বরং এখন স্বীকার করতেই হয়, যে সেদিন ওই খোঁচাটা যদি ও না দিতো, যদি না আমায় দিয়ে ওই চ্যালেঞ্জটা করিয়ে নিতো, তাহলে এই জায়গায় এসে পৌছতাম না… তবে হ্যা… এক সাথে দুটো দিক সামলাতে গিয়ে সত্যিই ভিষনই অসুবিধার মধ্যে দিয়ে চলতে হয়েছে… কিন্তু তাও… কমপ্লিট তো করেছি প্রথম সেমেস্টারটা… আর দুটো আছে… নিশ্চয়ই এগুলোতেও উৎরে যাবো ভালো করেই… দেখা যাক…