Poll: How is the story
You do not have permission to vote in this poll.
Good
100.00%
16 100.00%
Bad
0%
0 0%
Total 16 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 118 Vote(s) - 3.43 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica চন্দ্রকান্তা - এক রাজকন্যার যৌনাত্মক জীবনশৈলী
৩৭

ক্লিয়োপেট্রা – ১

সর্বশেষ যেখানটা অবধি ডায়রির লেখা পর্ণা পড়েছে, তারপর সে খেয়াল করে বেশ অনেকদিন আর কোন লেখা নেই… তারপর অনেকটা দিনের তফাতে ফের চন্দ্রকান্তা লিখতে শুরু করেছে… তার মানে নিশ্চয় এর মাঝের কটা দিন খুব ব্যস্ত ছিল… অথবা লেখার মত কোন ঘটনা ঘটেনি… তাই আর লিখতে বসে নি… পর্ণা পড়া শুরু করে…

১০ই মে, বুধবার

I dare not, dear,--
Dear my lord, pardon,--I dare not,
Lest I be taken: not the imperious show
Of the full-fortuned Caesar ever shall
Be brooch'd with me; if knife, drugs,
serpents, have
Edge, sting, or operation, I am safe:
Your wife Octavia, with her modest eyes
And still conclusion, shall acquire no honour
Demuring upon me. But come, come, Antony,--
Help me, my women,--we must draw thee up:
Assist, good friends.
.
.
.

উফফফফ… গতকালটা শেষ হতে যেন একটু নিশ্চিন্ত হলাম… বাপরে বাপ… গত প্রায় মাস চারেক ধরে যা গেছে আমাদের উপর দিয়ে… এই শুধু মাত্র এই ক’টা দিনের জন্য… যাক বাবা… কথায় আছে, সব ভালো যার শেষ ভালো… এবার ক’টা দিন একটু শান্তি পাবো… আর ঝক্কি ঝামেলা নেই… সব ঠিক ঠাক মিটে গিয়েছে… এতটাও ভালো হবে, সেটা অবস্য আমিও ভাবি নি… আমি তো প্রায় আপ্লুত… শুধু আমি কেন? আমাদের হস্পিটালের প্রত্যেকটা স্টাফ মেম্বার খুশি… পুরো অনুষ্ঠানটা এত সুন্দর করে সংগঠিত হয়েছিল যে বাইরের থেকে যত ডেলিগেটসরা এসেছিল, প্রত্যেকে প্রশংসায় প্রায় পঞ্চমুখ যাকে বলে… নাহ!... এই এত দিনের কষ্ট বিফলে যায় নি মোটেও… প্রশংসা পেয়েছি আমিও… খুব… খুব… আমার সংগঠনের সাথে করা কাজ আর শুধু তাই কেন? আমার করা অভিনয়ও… উফফফফ… কি যে আনন্দ হচ্ছে ভাবলেই… অ্যান্থনি ক্লিওপেট্রার মত একটা জগৎ বিখ্যাত নাটক আমরা নামিয়ে ফেললাম!... আর আমি… আমি কিনা ক্লিওপেট্রার অভিনয় করলাম… ভাবা যায়? উফফফ… ভাবলে এখনও যেন গায়ে কাঁটা দিচ্ছে আমার… অথচ আমার এই রোলটা প্লে করার কথাই ছিল না প্রথমে… কিন্তু কি ভাবে কি হয়ে গেলো… আমিই লিড রোলে প্লে করে বসলাম…

নাহ!... ব্যাপারটা গোড়ার থেকেই বলি… না হলে সবটা ঠিক বোঝা যাবে না… 


ফ্রান্স থেকে জার্মানিতে এসে রয়েছি তা প্রায় অনেক দিনই হয়ে গেলো… জোর্ডি আর আমি… দুজনে মিলে প্রায় সংসার করছি বলা যেতে পারে… সকালে ঘুম থেকে ওঠা… সংসারের টুকিটাকি কাজ সেরে হস্পিটাল দৌড়ানো… সেখানে গিয়ে যে যার ডিপার্টমেন্টে ঢুকে পড়া… সারা দিন রুগি সামলানো, অপরেশন থিয়েটারে একের পর এক কাটা ছেঁড়া করে যাওয়া… সেই সাথে চেম্বারে বসে রুগি দেখা… সব কিছু সামলে বেরুতে বেরুতে প্রায় সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হয়ে যায় এক একদিন… না না… সব দিন নয় তবে… যেদিন একটু হাল্কা থাকে… সেদিন নিজের চেম্বারে বসেই হয়তো বই পড়ি, কিম্বা অন্যান্য ডাক্তারদের সাথে আলোচনায় মাতি… কারন জোর্ডি অন্য ডিপার্টমেন্টের নার্স… ওর ডিউটির সাথে আমার কাজের কোন মিল নেই… তাই আমি ফাঁকা নিজেকে করতে পারলেও ও পারে না ওর রোস্টার থেকে বেরিয়ে আসতে… আর তাই আমাকেও ওর জন্য অপেক্ষা করতে হয়… প্রথম প্রথম জোর্ডি আমায় বলেছিল বটে, ওর জন্য অপেক্ষা না করে বেরিয়ে পড়তে, কিন্তু সেটা কি সম্ভব? একই বাড়িতে যাবো… সেখানে আমি আগে চলে যাবো আর ও পেছন পেছন পরে আসবে? তাই প্রথম দিকে জোর করলেও আমায় থেকে যেতে দেখে ও যে খুশিই হয়েছিল মনে মনে, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় নি আমার… আর আমারই বা কাজ কি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে? তার চেয়ে হস্পিটালেই খানিক সময় কাটালে আখেরে লাভই হয়… একটু বেশিক্ষন থেকে গেলে কতৃপক্ষেরও সুনজরে আসা যায়… সেই সুযোগই বা ছাড়ি কেন?

বাড়ি ফেরার পথেই টুকিটাকি দরকারি কিছু কেনা কাটা থাকলে সেরে নিই… কারন একবার বাড়ি ঢোকার পর আর বেরুতে ইচ্ছা করে না মোটেই… আর আমি চাইলেও জোর্ডি ছাড়ে না আমায়… বাড়ি ঢোকার পর থেকে এক মুহুর্ত কাছ ছাড়া করতে চায় না জোর্ডি… প্রায় পারলে যেন সারাক্ষন আমার সাথে আঠার মত লেপ্টে থাকে… 

শুধু কি ও? প্রশয় তো আমার তরফ থেকেও কিছু কম নেই… ও যেটা চায়, ইচ্ছা করেই তার তালে তাল মেলাই… জানি, এটা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ ঠিকই… কিন্তু একটু একটু করে আগের থেকে অনেকটাই ম্যাচিওর্ড হয়ে উঠেছি আমি ততদিনে… সেটাই তো স্বাভাবিক… তাই না? হোস্টেলে থাকতে যে বয়সটা ছিল আমার, সেটা আজ আর নেই… এখন আমি কিছু করার আগে ভাবি… তারপর পা ফেলি… না… তার মানে এটা ভাবার কোন কারন নেই যে আমার ভেতরের দর্পনারায়ণের মেজাজ একেবারে হারিয়ে গিয়েছে… সেটা প্রয়োজনে ঠিকই ঠিক সময় জেগে উঠবে যে, তাও জানি… কিন্তু তাও… আগের মত কথায় কথায় জেদ দেখাই না… পারিপার্ষিকতা বোঝার চেষ্টা করি কোন কিছু ডিসিশন নেবার আগে…

বাড়ি ফেরার পর রাতে তো কোন কথাই নেই… জোর্ডির আদরের ঠেলায় এক একদিন সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়ি… উফফফ… কি ভিষন ক্ষমতা ওর… সারাদিনের কাজের পরেও একটা দিনও আমায় ছাড়ে না আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে… প্রায় প্রতিদিনই বার দুয়েক আমার শরীরটাকে উল্টে পাল্টে না আদর করতে পারলে না কি ওর ভালো লাগে না… বোঝ একবার… তবে আমারও যে খারাপ লাগে, সেটাই বা বলি কোন মুখে? ওই পাগলিটাকে তাই তো যা চায়, তাই তুলে দিতে মন করে… যেমন করে চায় তেমন করেই ধরা দিই ওর বাহুডোরে…

এই ভাবেই বেশ কাটছিল আমাদের… প্রায় বলতে গেলে দুই কপোত কপোতির… তারপর একদিন হটাৎ করেই হস্পিটালে একটা সার্কুলার এলো হাতে… একটা অনুষ্ঠান হবে… হস্পিটালের পক্ষ থেকে… ম্যানেজমেন্ট ঠিক করেছে… সেটা কি? না প্রায় এক মাস ব্যাপি অনেক অনুষ্ঠানের সমষ্টি… ছোট ছোট আকারে সেগুলো রাখা হবে হস্পিটালের স্টাফ মেম্বারদের রোস্টার অনুযায়ী… যাতে হস্পিটালের কাজের কোন ক্ষতিও না হয়, আবার সকলেই যেন সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারে… 

ব্যাপারটা দেখে বেশ ভালো লাগলো… এমনিতে এই ক’মাসে আমার সাথে প্রায় সকলেরই একটা ভালো রিলেশন তৈরী হয়ে গিয়েছে… আমি শুধু মাত্র নিজের ডিপার্টমেন্টেই সীমাবদ্ধ থাকি না… হাতে কাজ না থাকলে বা সেই রকম কোন অপরেশন না থাকলে চেষ্টা করি অন্যান্য ডাক্তার নার্সদের সাথে আড্ডা দেওয়ার… অবস্য তাদের কাজের ক্ষতি করে মোটেই নয়… হি হি হি… আসলে আদতে তো যতই হোক, বাঙালীই না? তাই আড্ডাটা যেন না মারতে পারলে ঠিক পেটের খাবার হজম হয় না… এখন তো প্রায় অনেকেই হাত খালি থাকলে এসে হাজির হয় আমার চেম্বারেও… উঁকি দিয়ে দেখে ফ্রি আছি কি না… থাকলে ব্যস… বসে গেলো খানিকক্ষন… তাতে যেমন আড্ডাও হয়, আবার সকলের সাথে আলোচনায় অনেক ক্রিটিকাল কেস নিয়েও আলোচনা করা যায়… সমাধান সুত্র বেরিয়ে আসে কথার মধ্যে দিয়ে… খুব সহজে… 

যাক সে সব কথা… এসব তো নিত্যদিনই ঘটে… তার জন্য ডায়রির পাতায় লেখার প্রয়োজন নেই কিছু…

যেটা বলছিলাম আমি… তা, সার্কুলার দেখে আমি প্রথমে অতটা গুরুত্ব দিই নি সত্যি কথা বলতে… কারন আমি এখানে আসার পর কখনও এই ধরনের কোন অনুষ্ঠানে পার্টিসিপেট করি নি… সে দিক দিয়ে একেবারে নভিস আমি… আর তাছাড়া সার্কুলারের ভিতরে যা লিস্টি দেখলাম তাতে আমার করার কিছুই নেই… নাচ, গান, আবৃতি, নাটক… প্রায় এক মাস ধরে চলবে সেটা আগেই বলেছি… আবার শেষদিন নাকি শহরের টাউন হলে মঞ্চস্থ হবে নাটকটা… সেখানে অনেক বাইরের থেকেও ডেলিগেটস্রা আসবে দেখতে…

সত্যি বলতে জার্মান ভাষাটা বলতে এখন অসুবিধা হয় না আমার, কিন্তু তাই বলে তো আমি আর জার্মান হয়ে যাই নি… কাজ হয়তো চালিয়ে নিতে পারি, কিন্তু জার্মান ভাষায় গান করা বা আবৃতি করার ক্ষমতা এখনও হয় নি একেবারেই… আর নাটক… ওরে বাবা… ওটা কোনদিনই করি নি… তা আজকে হটাৎ করে কি করে করবো? দেখলাম কোনটাই আমার কাপ অফ টি নয়… তাই চুপ চাপ চেপেই গিয়েছিলাম…

চেপে গিয়েছিলাম, কিন্তু চেপে যেতে দিলে তো!... বাপরে বাপ… সকলে মিলে এসে ধরলো… তোমায় কিছু একটা করতেই হবে… যত বোঝাই যে না রে বাবা, আমি এই সব পারবো না, কে শোনে কার কথা… আমি নাকি এত বন্ধুবৎসল, আর আমি কিছু না করে থাকবো, চলবে না সেটা…

শেষে অনেক কষ্টে ওদেরকে বলে রাজি করালাম যে ঠিক আছে, আমি কালচারাল কমিটিতে থাকবো… শুনে তাতেই রাজি ওরা… বলল যে ক্যারেক্টের কাস্টিংটা আমাকে দেখতে হবে, পরিচালকের সাথে থেকে… তবে একটা রক্ষে, নাটকটা হবে ইংলিশে… কারন যেহেতু বাইরের ডেলিগেটস্রাও আসবে, তাই ওটা মঞ্চস্থ হবে ইংলিশ ল্যাংগুয়েজে… যাতে সকলের সুবিধা হয়…

সে যাই হোক… এবার আলোচনার বিষয় হলো নাটক সিলেকশন… কি নাটক হবে? আমি যেহেতু কালচারাল কমিটির মেম্বার তাই আমাকেও আলোচনায় রীতিমত পার্টিসিপেট করতে হলো… এটা না সেটা… সেটা না এটা… এ একটা সাজেস্ট করে তো অন্যে নাকচ করে দেয়, আবার সে ওটা সাজেস্ট করে তো এ বলে না, ওটা হবে না… যা হয় আর কি… শেষে সর্বসন্মতিক্রমে ঠিক হলো যে শেক্সপিয়রের অ্যান্থনি ক্লিওপেট্রা মঞ্চস্থ হবে… সকলেই মোটামুটি এক মত হলো সর্বশেষে… আমরাও, মানে কালচারাল কমিটির মেম্বাররা হাঁফ ছাড়লাম এক প্রকার… অন্তত একটা নামে তো সকলে এক মত হলো…

নাম তো ঠিক হলো, এবার শুরু হলো চরিত্র অনুযায়ী হস্পিটাল থেকেই ডাক্তার, নার্স, স্টাফদের সিলেক্ট করা… কারন নাটকে চরিত্র প্রচুর… আর সমস্তটাই হস্পিটালের স্টাফ মেম্বারই অংশগ্রহণ করবে… তাই কে কোন চরিত্রে সঠিক হবে, তার সিলেকশনটাও আমাদেরই করতে হবে… তার জন্য রীতিমত সকলকে অডিশনের জন্য ডাকা হলো… কাস্ট সিলেকশনে ছিলাম আমি, জুলিয়েট বলে আর একটি মেয়ে আর নাটকের পরিচালক… ও হ্যা… নাটকের পরিচালককে আমরা বাইরের থেকেই ঠিক করেছিলাম… উনি একদম প্রফেশনাল ডিরেক্টর… ওনার ডাইরেকশনে বহু নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে দেশের বহু জায়গায়… জার্মানির বাইরেও ওনার সুখ্যাতি রয়েছে এই ব্যাপারে… এক ডাকে সকলে ওনাকে চেনে… ওনাকে সহজে রাজি করানো যায় নি প্রথমেই… কারন এই ধরনের অ্যামেচার থিয়াটারের সাথে উনি আগে খুব একটা থাকেন নি… কিন্তু আমাদের হস্পিটালের ডিরেক্টর নিজে ওনাকে রিকোয়স্ট করাতে আর না করতে পারেন নি জেনেছিলাম, তাই ওনাকে পেয়ে আমাদের সত্যিই খুব সুবিধা হয়ে গিয়েছিল… পরের দিকে বুঝেছিলাম একজন সত্যিকারের প্রফেশনাল পরিচালক আর অ্যামেচারিস্টএর মধ্যে কতটা তফাৎ থেকে যায়… ওনারা যে দৃষ্টিকোন থেকে পুরো সিনটা ভাবেন, সেটা অ্যামেচারিস্টদের পক্ষে হয়তো অতটা ভাবাই সম্ভব হয়ে ওঠে না… ওনার সাথে থাকতে থাকতে দেখেছি, এমন কত ছোট ছোট ইন্সট্রাকশান, যেটা হয়তো আমাদের মাথাতেও আসেনি, সেই সমস্ত ইন্সট্রাক্সনে সেই সিনটা যেন আরো প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে…

যাক… যা বলছিলাম… তা ডাক্তার স্টাফদের মধ্যে থেকে নাটকের বিভিন্ন চরিত্রের কাস্টিং চলতে থাকলো… অ্যান্থনি, ক্লিওপেট্রা, অক্টাভিয়াস সিজার, জুলিয়াস সিজার, লেপিডাস, সেক্সটাস পম্পিয়াস, ডমিটিয়াস, ভেন্টিদিয়াস, ইরোস, স্কারাস… ইত্যাদি, ইত্যাদি… এছাড়া তো ছোট ছোট চরিত্র আছেই… লোক লস্কর, সৈন্য সামন্ত… মোটামুটি এক এক করে আমরা সে সব চরিত্র অনুযায়ী লোক ঠিক করতে থাকলাম… বেশ লম্বা প্রসেস… প্রথমে বুঝিনি সত্যি যে একটা নাটক মঞ্চস্থ করার আগে এত ঝক্কি থাকে বলে… 

সব হয়ে যাচ্ছে ঠিক ঠাকই… কিন্তু সমস্যাটা গিয়ে আটকে যাচ্ছিল আসল ক্যারেক্টার নিয়েই… ক্লিওপেট্রা… ওটা নিয়ে কিছুতেই যেন ফাইনাল করা যাচ্ছে না… এত জনের অডিশন নেওয়া হল, কিন্তু কাউকেই পরিচালক মশাইয়ের পছন্দ হয় না কিছুতেই… হয় বলেন না, ও মোটা হবে না… অথবা পাতলা বেশি, সম্ভব নয়… তা না হলে এত বেঁটে ক্লিওপেট্রার চরিত্রের সাথে খাপ খায় না… আমরা তো বলতে গেলে লোক খুঁজে খুঁজে পাগল একেবারে… তাহলে? একজনকে যদি বা একটু পছন্দ হলো, কিন্তু ডায়লগ থ্রোইংএ প্রবলেম দেখা গেলো… তার লুকস না হয় মেকআপ দিয়ে চালিয়ে নেওয়া যেত, কিন্তু ডায়লগটাই যদি ঠিকঠাক না বলতে পারে, তাহলে তো হবে না! ওনার বক্তব্য হচ্ছে আমি ঘসে মেজে নিতে পারি, কিন্তু ক্লিওপেট্রার মধ্যে যেটা প্রধান প্রয়োজন, সেটা হলো তার রাজকীয় মেজাজটা… ওটা ভেতর থেকে ন্যাচারিলি ফুটে না বেরোলে নাকি চরিত্রটাই দাঁড়াবে না… শেষে আমরা অনেক দেখে শুনে একটা মেয়েকে সিলেক্ট করলাম… নাম জিনা… তাকে স্ক্রিপ্ট পড়িয়ে রেডিও করে ফেললাম… মোটামুটি সকলের পছন্দও ছিল ওকে দেখে… ডায়লগ বেশ ভালোই বলছিল, দেখতেও বেশ লম্বা আর স্লিম… আমরা ভাবলাম যাক, তাহলে শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেলো…

সেদিন ডিরেক্টর এসে ঢুকলো ঘরে, বসেই আমায় বলল যে কোথায় তোমাদের ক্লিওপেট্রা? ডাকো…

ডাক দিলাম জিনাকে… সে এলো… ডিরেক্টরের সামনে কিছু ডায়লগ আওড়ালো… ও বাবা… তৎক্ষনাৎ নাকচ করে দিলো ডিরেক্টর… যাহ!... এটাও গেলো? আমরা তো প্রায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছি তখন!... এবার? আর তো কেউ নেইও হস্পিটালে সেই রকম যে ঐ চরিত্রে খাপ খাবে… প্রায় সবাইকেই দেখা হয়ে গিয়েছে… 

ডিরেক্টর তখন জিজ্ঞাসা করলেন, “আচ্ছা, এমন কোন রেসোলিউশন আছে কি আপনাদের, যে সিকেশন কমিটির মেম্বারদের মধ্যে থেকে কাউকে নেওয়া যাবে না?”

ওনার কথায় সকলেই মাথা নাড়ে… না, সে রকম তো কিছু নেই!

উনি শুনে মাথা নাড়েন… তারপর আমার দিকে ফিরে বলে ওঠেন… “ডঃ কান্তা… আমি লাস্ট দিন সাতেক ধরে আপনাকে অবসার্ভ করছিলাম… আপনি একবার ট্রাই করে দেখুন তো! আপনি তো এই ক’দিনে এই স্ক্রিপটা অনেকবারই শুনেছেন… অডিশন নিতে নিতে… আপনি একবার বলুন দেখি ওখানে দাঁড়িয়ে…”

আমি তো শুনেই সত্যি বলতে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম প্রথমে… যাহঃ… সেটা আবার হয় নাকি? না না… আমি পারবো না!... প্রায় লাফিয়ে উঠি আমি ওনার কথা শুনে… বললাম, “পাগল নাকি? আমি জীবনে কোনদিন কোথাও অভিনয় করি নি… এমন কি পাড়ার ছোটখাটো নাটকেও নয়… আর আমি করবো ক্লিওপেট্রার পার্ট? ইমপসিবল্…”

কিন্তু আমি না বললে কি হবে? ডিরেক্টরের কথা শুনে ততক্ষনে বোর্ড মেম্বাররা প্রায় চেপে ধরেছে আমায়… সবাই মিলে বলতে শুরু করে দিয়েছে, “আরে… একবার ট্রাই তো করো… পারা না পারাটা তো পরের ব্যাপার… আর যদি না পারো, তাহলে তো জিনা আছেই… ওকে দিয়েই চালিয়ে নিতে হবে আমাদের… কিন্তু উনি যখন বলছেন, তখন কিছু তো বুঝেই বলছেন… তাহলে একবার ট্রাই করতে দোষের কি?”

আমি চুপ করে একটু ভাবলাম… সত্যি বলতে ওদের ওই একটা কথায় আমার ভেতরের কে যেন নাড়া দিয়ে গেলো আমায়… “যদি না পারো, তাহলে তো জিনা আছেই”… যদি না পারো… এটা আমার পীঠে যেন একটা চাবুকের মত আছড়ে পড়ল কথাটা… আমি যদি অডিশন দিই… তাহলে আমায় পারতেই হবে… সেখানে আর কোন অপশন নেই… আমি একটা পরীক্ষায় বসবো, আর অকৃতকার্য হবো? সম্ভবই নয়… অডিশন দিলাম না, সেটা অন্য কথা… কিন্তু অডিশন দিলাম অথচ সিলেক্ট হলাম না… সেটা আমার সহ্য হবে না… আমি হারতে জানি না… ঠিক আছে… আগে কোনদিন করি নি তো কি হয়েছে? নতুন একটা কিছু শেখা হবে… সব কিছুরই তো প্রথম থাকে… মানুষ তো পেট সব কিছু জেনেই আসে না… আর সেটা যারা আসে, তারা ভাগ্যবান… আমি মনে মনে আমার মাইন্ড সেট করে ফেললাম… যে তিতাস ঘর ছেড়েছিল একদিন, যে মনের জোরে… সেই আর্জটাই সেদিন ফের সমুদ্র মন্থনের মত ভিতর থেকে উঠে এলো আমার মস্তিষ্কে… আমার শরীরের শিরা উপশিরাতে আবার আগুন হয়ে দৌড়তে শুরু করলো… “বেশ… আমি রাজি…দেবো অডিশন…” দৃপ্ত কন্ঠে বললাম আমি ওদের… “আমায় এক ঘন্টা শুধু সময় দাও ডায়লগটাকে মুখস্থ করতে…”

সিনটা ছিল ক্লিওপেট্রার সাথে অ্যান্থনির প্রথম দেখা হচ্ছে, ক্লিওপেট্রার রাজসভাতে…

এক ঘন্টাও পুরো নিলামনা ডায়লগ মুখস্থ করতে… ধীর পদক্ষেপে গিয়ে নিজের পজিশন নিলাম… সামনে সকলে… কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে… সকলের চোখ তখন আমার উপরে… অথচ কাউকেই যেন আমি তখন আর দেখতে পাচ্ছি না… কারন ততক্ষনে আমার ভিতরে যেন দর্পনারায়ণের রক্ত ঢেউএর মত উথাল পাথাল হতে শুরু করে দিয়েছে… কানে এলো পরিচালকের নির্দেশ… “অ্যাকশন…”

শিড়দাঁড়া সোজা হয়ে গেলো আমার… দৃপ্ত কন্ঠে শুরু করলাম ডায়লগ বলা… প্রতিটা শব্দ যেন রাজকীয় ভঙ্গিমায় ঝরে পড়তে লাগল আমার ঠোঁট থেকে… কি করে যে ওই ভাবে ভয়েস মডিউলেশন করতে থাকলাম, নিজেই বুঝতে পারলাম না… যেন সহজাত ভাবেই ডায়লগ গুলো বেরিয়ে আসছিল আমার ভিতর থেকে… কোন রকম বাড়তি প্রচেষ্টা ছাড়াই…

আমার সিনটা শেষ হলে কয়েক মুহুর্ত স্তব্দ হয়ে রইল পুরো ঘরটা… এই ভাবে সবাইকে চুপ থাকতে দেখে আমি বুঝে গেলাম… আমি অকৃতকার্য হয়েছি আমার পরীক্ষায়… ঠিক যেটা আমি চাইছিলাম না কিছুতেই… সেটাই ঘটল তাহলে আমার জীবনে… তাহলে তিতাসও হারতে পারে!... ভাবতে ভাবতে চোখের কোনে জল চলে এসেছিল আমার… মাথার মধ্যেটায় কেমন যেন করছিল একটা দুঃসহ যন্ত্রনায়… আর ঠিক তখনই… এক সাথে সকলের হাততালিতে ফেটে পড়ল যেন ঘরের বাতাস… আমার জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি হাততালি দিচ্ছেন পরিচালকও… সকলে থামলে এগিয়ে এলেন উনি… আমার হাতদুটো ধরে বললেন, “এইটা… এই অ্যাটিটিউডটাই খুঁজছিলাম আমি আমার ক্লিওপেট্রার মধ্যে… ওয়ান্ডারফুল… এক্সেলেন্ট… আমি জানতাম, আমার চয়েস কখনও ভুল হবে না… তুমিই উপযুক্ত এই চরিত্রের জন্য…”

আমি তখন কথা বলবো কি? নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছি না যে এতটা ভালো অডিশন দিয়েছি বলে… তাহলে তিতাস পারলো! 

এর পর যেন রিহের্সালের দিন গুলো প্রায় ঝড়ের গতিতে এগিয়ে চলল… সাথে নিজের সার্জারি… তখন যেন আমার আর নাওয়া খাওয়ারও সময় নেই… বাড়ি ফেরার কোন সময় অসময় নেই… জোর্ডি খিঁচখিঁচ করে… কিন্তু তখন আমি এক নতুন নেশায় মেতে উঠেছি… কোনদিন ভাবিনি যে অ্যাক্টিং করতেও এত ভালো লাগতে পারে বলে… ডায়লগ মুখস্থ করতে আর তা রিহের্সালের সময় থ্রো করার সময় যেন ভেতর থেকেই কেমন একটা পরিবর্তন ঘটে যেত আমার মধ্যে… তখন যেন আমি, চন্দ্রকান্তা নই… সত্যিই মিশরের রানী বলে মনে করতাম নিজেকে… যতবার আমি গিয়ে দাঁড়াতাম সার্কেলের মধ্যে, ততবার যেন ভিতরের রক্তকণিকা আগুন হয়ে ধমনীর মধ্যে দৌড়ে বেড়াতো… 

প্রান ঢেলে নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছিলাম নাটকটার জন্য… সকলে রিহার্সাল দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেলেও, আমার যেন উৎসাহের কোন খামতি ছিল না… সারাটা দিনের পরিশ্রমের পরে রিহার্সাল রুমে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ে থাকতাম স্ক্রিপ্ট নিয়ে… সিনগুলো মুখস্থ করতাম… তারপর সেই সিনের অন্যান্য চরিত্রের মানুষগুলোকে বাধ্য করতাম প্রায় আমার সাথে সেই সিনগুলো অভিনয় করে দেখার জন্য… কখন শুধু মাত্র একা একটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আউড়াতাম নিজের ডায়লগগুলো…

মোটামুটি বিকালের দিকেই আমাদের নাটকের পরিচালক আসতেন… উনিও দেখিয়ে দিতেন টুকটাক… কি করতে হবে আর কি না… প্রথম দিকে তো সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছিলাম হাতদুটোকে নিয়ে… ডায়লগ বলার সময় হাতদুটোকে কোথাও রাখবো, সেটাই যেন বুঝে উঠতে পারতাম না… আস্তে আস্তে শিখলাম সেটাও… মুখস্থ বিদ্যাটা আমার বরাবরই ভালো বলে সিনগুলো মনে রাখতে অসুবিধা হতো না… একবার পড়লেই মাথার মধ্যে ঢুকে যেত… তারপর শুধু একটু ঝেলে নেওয়া… ব্যস… তাই খুব তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে উঠতে লাগলাম নাটকটার জন্য আমি…

এর মধ্যে টোটাল মেকআপ আর প্রস্থেটিক্সএর জন্য পরিচালক দায়িত্ব দিয়েছে একটি আর্ট কলেজকে… কারন ওনার বক্তব্য হলো মেকআপ প্রফেশনালকে দিয়ে না করালে চরিত্রের চিত্রায়ণ ঠিক হয় না… 

কলেজ থেকেই ওদের বেস্ট কিছু সিনিয়র স্টুডেন্টকে পাঠিয়েছিল আমাদের সাথে মিট করার জন্য… মোট ছ’জনের দল… ওদের সাথে পরে কিছু জুনিয়র এসে যোগ দিয়েছিল ওদেরকে হেল্প করার জন্য… এই ছয়জনের দলে প্রত্যেকেই এক একজন বিভিন্ন আর্টএ পারদর্শী… বডি পেন্টিংএর জন্য যে এলো, সে, দিমিত্রিভ খুজোস… চেক ছেলে…

আমি প্রথমে বডি পেন্টিং শুনে একটু অবাকই হয়েছিলাম… কারন নাটকে সকলে সাজে জানতাম, কিন্তু বডি পেন্টিং আবার কিসের প্রয়োজন?... পরিচালককে জিজ্ঞাসা করতে উনি বললেন যে ওটা নাকি স্পেশালি ক্লিওপেট্রার জন্য দরকার… ক্লিওপেট্রার ফুল বডি পেন্টিং করানো হবে… সেই মতই আমার সাথে ছেলেটিকে ডেকে আলাপ করিয়ে দিলো পরিচালক…

শিল্পী মানুষ ছেলেটি… এই রকমই বোধহয় হয় শিল্পীরা… কেন জানি না! বাবার মুখটা হটাৎ করে ভেসে উঠেছিল আমার মনের মধ্যে এক ঝলকের জন্য দিমিত্রিভকে দেখার পরে… পাতলা গড়ন… বেশ লম্বা… গায়ের রঙ প্রচন্ড ফর্সা… ইংল্যান্ড বা জার্মানদের মত লাল মুখো নয় মোটেই… বরং উজ্জল ফর্সা যাকে বলে… মুখটা ইষৎ লম্বাটে… টিকালো নাক… একেবারে যেন টিয়াপাখির ঠোঁট… পাতলা ঠোঁটদুখানি… বেশ লাল… বোঝাই যায়, কোন সিগারেটএর নেশা নেই… তাই ঠোঁটগুলোতে কোন ছোপ পড়েনি… এক মাথা ঘন কোঁচকানো ঢেউ খেলানো সোনালী চুল… অগোছালো…  লম্বা… ঘাড় অবধি নেমে এসেছে… বোঝা যায় কোন রকমে যেন হাতের টানে আঁচড়ে রেখেছে চুলগুলো… একদম কেয়ারলেস অ্যাটিটিউড… কিন্তু সব কিছুর মধ্যে যেখানে আমার নজর আটকে গেলো, তা হলো দিমিত্রিভের চোখদুখানি… অদ্ভূত গভীর সবুজ… যেন পৃথিবীর সকল স্বপ্ন ওই সবুজ চোখের তারায় ভেসে রয়েছে… এত উদাসি… অথচ কি গভীর… চোখের উপরে চোখ রাখলে যেন বিশ্ব সংসার সব ভুলে যাওয়া যায়… ঠিক যেন জীবন্ত যীশু সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমার…

কথা বলে ভিষন আস্তে… একটু থেমে থেমে… যেন প্রতিটা কথা অনেক ভাবনা চিন্তা করে তবে বলে সে… কোন তাড়াহুড়ো নেই কথার মধ্যে… আর যখন কথা বলে, তখন একদম সোজা চোখের পানে তাকিয়ে কথা বলে মানুষটা… অন্য আর সব পুরুষদের মত ঠিক নয় যেন… কারন অন্য পুরুষদের দেখেছি কথার ফাঁকে তাদের চোখ ঘুরে বেড়ায় আমাদের শরীরের উপরে… কথার ফাঁকে মেপে নিতে চায় উল্টো দিকে থাকা নারীর সম্পদগুলো চোখ দিয়ে… কিন্তু সে দিকে এই মানুষটা সম্পূর্নই যে উদাসিন, সেটা বুঝতে পারি প্রথম দর্শনেই… হয়তো নারী শরীর এতটাই দেখেছে বডি পেন্টিং করতে গিয়ে যে সে সম্বন্ধে আলাদা কোন ট্যাবু আর অবশিষ্ট নেই মানুষটার… অস্বীকার করবো না, প্রথম দর্শনেই মানুষটাকে ভালো লাগে আমার… এটা হয়… সব সময় কিন্তু নয়… মাঝে মধ্যে… এমন কিছু মানুষ আছে, যারা তাদের ফার্স্ট অ্যাপিয়ারেন্সেই মন জয় করে নিতে পারে… কেমন যেন একটা আলগা ভালো লাগা মিশে থাকে তাদের দিকে তাকালেই… সে ভালো লাগার মধ্যে কোন তীব্রতা থাকে না… কিন্তু একটা আকর্ষণ কাজ করে অবচেতনে… দিমিত্রিভও যেন সেই ধরনেরই মানুষ… শান্ত… স্নিগ্ধ… পরিমার্জিত… আমার সাথে আলাপ করিয়ে দিতে আমি হাত বাড়িয়ে দিই ওর দিকে… “হাই… আমি চন্দ্রকান্তা…”

প্রত্যুত্তরে আমার হাতটা নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলে ওঠে “হ্যালো ডক্টর… নাইস টু মীট ইয়ু…” 

আমার ধরা হাতটার দিকে নজর নামাই… কি সুন্দর লম্বা সরু সরু আঙুলগুলো… আমার হাতটাও ধরেছে যেন কোন এক দামী শিল্পকর্ম হাতে তুলে রেখেছে… আলগোছে, কিন্তু যত্ন সহকারে…

পরিচালকের সময় নেই ওখানে দাঁড়িয়ে থাকার… তাই আলাপটা করিয়ে দিয়েই কাজের অজুহাতে চলে গেলেন কোথাও… 

আমার হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের পকেটে হাতদুটো ঢুকিয়ে রেখে মৃদু হেসে দিমিত্রিভ প্রশ্ন করে, “আপনি তো ক্লিওপেট্রা হচ্ছেন?”

মাথা নাড়ি আমি… হ্যা… তারপরেই আমার মনের ভেতরে থাকা প্রশ্নটা করি ওকে… “আচ্ছা, এখানে বডি পেন্টিংএর কি দরকার, সেটা বুঝলাম না…”

আমার প্রশ্ন আবার মৃদু হাসে দিমিত্রিভ… গভীর চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলে, “আপনি কখনও মিশরের রানীকে দেখেছেন?” তারপর একটু থেমে বলে, “মানে ছবিতে?”

আমি ফের মাথা ঝাঁকাই… হ্যা… দেখেছি বলে… কারন ছবিতে তো দেখে থাকাটা কোন নতুন কিছু নয়… তাহলে এ প্রশ্ন দিমিত্রিভ করছে কেন? জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাই ওর দিকে…

আমার প্রশ্নটা বোধহয় অনুভব করে দিমিত্রিভ… মৃদু হেসে বলে… “আমি আপনাকে প্রথম দেখে রীতি মত চমকে গিয়েছিলাম… সত্যিই বলছি… কারন আমাকে বলা হয়েছিল যে একজন কে সিলেক্ট করা হয়েছে ওই ক্যারেক্টারটার জন্য… কিন্তু বিশ্বাস করুন… সেটা যে এতটা পার্ফেক্ট, সেটা ভাবি নি… বিশেষ করে ক্লিওপেট্রার ওই স্লিম ফিগারের সাথে আপনার যেন হুবহু মিল রয়েছে…” বলতে বলতে থামে দিমিত্রিভ…

ওর মুখে শুনে বেশ ভালো লাগে আমার… আরে যতই হোক… নিজের প্রশংসা কোন মেয়ে না শুনতে ভালোবাসে? আমি কোন উত্তর দিই না… চুপ করে তাকিয়ে থাকি ওর পানে…

বলে চলে দিমিত্রিভ… “কিন্তু মিশরীয় রাজপরিবার যে ভাবে সাজ সজ্জা আর অলঙ্কার ব্যবহার করতো সে তো না হয় আমরাও আপনাদের সেই ভাবেই সাজিয়ে তুলবো, কিন্তু ওদের গায়ের রঙটা একটা বিশেষ রকমের… না তামাটে আবার না ফর্সা… বরং বলা যেতে পারে অনেকটাই গোল্ডেন ক্লিওপেট্রার গায়ের রঙ… আর সেই কারনেই আপনার গায়ের স্কিনের কালার আমরা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করবো একদম সেই ভাবেই… যাতে করে ফিগার আর লুকের সাথে আপনার অ্যাপিয়ারেন্সটাও একদম মিশরীয় করে তোলা যায়…”

এবার যেন অনেকটাই পরিষ্কার হলো আমার কাছে… “আচ্ছা… এবার বুঝেছি…” মাথা নাড়ি আমি… “কিন্তু শুধু গায়ের রঙ করার জন্য আপনার মত একজন প্রফেশনালকে কি প্রয়োজন ছিল?” ফের ঘুরিয়ে প্রশ্ন রাখি দিমিত্রিভের সামনে…

আমার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকালো দিমিত্রিভ… ঠোঁটের কোনে হাসিটা যেন লেগেই থাকে তখনও… “ঠিক… আপনি নিজেও নিজের গায়ের রঙটা যে কোন গোল্ডেন কালার দিয়ে রাঙিয়ে নিতে পারতেন… সেটা অস্বীকার করবো না… কিন্তু যখন আমার কাজ শেষ হবে, তখন আপনি আপনার এই প্রশ্নের উত্তর ঠিক পেয়ে যাবেন, কেন আমি… আর কোন অ্যামেচারিস্ট নয়… সেটা…”

আমি দিমিত্রিভের কথায় কাঁধ ঝাঁকাই… “বেশ… দেখবো… আপনার হাতের জাদুর…”

“আমি সেটা দেখানোর জন্য উদ্গ্রিব হয়ে অপেক্ষায় রইলাম…” ফের ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে উত্তর দেয় দিমিত্রিভ… তারপরেই কি ভেবে বলে ওঠে, “এবার আমায় যেতে হবে… পরে আবার কথা হবে’খন…”

আমিও হেসে ফের আর একবার হাত বাড়িয়ে দিই ওর দিকে… “নিশ্চয়ই… আবার দেখা হবে তো বটেই আমাদের… বাই…”

চলে যায় দিমিত্রিভ… আমি ফিরে আসি আমার চেম্বারে… 

ক্রমশ…
[+] 9 users Like bourses's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: চন্দ্রকান্তা - এক রাজকন্যার যৌনাত্মক জীবনশৈলী - by bourses - 04-07-2022, 06:31 PM



Users browsing this thread: 37 Guest(s)