12-06-2022, 10:06 PM
৩১- খাঁচা - বাবান
আবার ওই আবার শুরু হলো ওদের ওই যুদ্ধ! আজ বোধহয় বৌদিটাকে মেরেই ফেলবে নাকি ওই পিশাচটা? হটাৎ একটা তীব্র চিৎকার ভেসে এলো কানে। উঠতে গিয়েও উঠলাম না। না ভীতু কাপুরুষ নই মোটেও কিন্তু তাও উঠলাম না ।
প্রায় প্রতিদিন রাতে এমন কিছুর সাক্ষী হতে হয় আমাকে। তাই তো মাঝে মাঝে তাড়াতাড়ি পড়াশোনা শেষ করে শুয়ে পড়ি কিন্তু তাও ওই আর্তনাদ ঘুম ভাঙিয়ে দেয় আমার অনেক সময়। আর তারপরে সেই বীভৎস সব আওয়াজ শুনতে হয় আমাকে। এক পুরুষের পুরুষত্ব ফলানোর নির্মম কায়দা আর এক নারীর ধর্ষ* মুক্তি যুদ্ধে হেরে যাওয়ার কান্না। তাদের আটকাতে চেয়েও যে আটকানোর অধিকার আমার নেই। কাগজে কলমে যে তারা একে ওপরের সবচেয়ে আপনজন। কিন্তু সেই কাছের মানুষই যখন হয়ে ওঠে অচেনা ক্ষুদার্থ নোংরা কেউ তখন যে ওপরজনকে জীবিত অবস্থাতেই প্রতিদিন সাক্ষী হতে হয় নরকের। প্রতি রাতে সেই শয়তান ফেরে বাড়িতে টলতে টলতে। আর তার কাঁপতে থাকা পা দুটো যখন আর নিজের ভার রাখতে পারেনা তখন সবার আগে তাকে বাঁচাতে যে মানুষটা ছুটে আসে, তাকেই কিনা ওই শয়তান একটু পরে....... ওহহহ্হ সেই নারীর আর্তনাদ! একটু মুক্তি কি তার ভাগ্যে নেই। প্রতিরাতের ওই নারকীয় অত্যাচার কেন সহ্য করতে হবে ওই নারীকে? কি দোষ তার? শুধু এই যে সে নারী? আর ওই শয়তান এক পুরুষ? সত্যিই কি সে পুরুষ? নাকি নিজের কমজোরি লুকাতে বার বার ওই নারীকে প্রমান করার চেষ্টা করে সে পুরুষ? বার বার ওই যোনিকে ওই দন্ড দিয়ে মেরে মেরে নিজের পৌরুষ প্রমানে অক্ষম সেই পুরুষের বিকৃত আনন্দ প্রাপ্তি বেড়েই চলেছে।
সকালে সেই মহিলার আবার অন্য রুপ। সারা বাড়ির দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে কাটিয়ে দেয় সময়। সাথে শশুর শাশুড়ির অপমান উপরি পাওনা। রোজ সে আসে এই ঘরে আমায় চা দিতে। তখন দেখি তাকে আর অবাক হই। এই কি সেই মহিলা যে হাসিমুখে এসেছিলো এই বাড়িতে ঘর আলো করে? আজ ঘর কতটা আলো করতে পেরেছে জানিনা কিন্তু নিজে একেবারে অন্ধকারে ডুবে গেছে। কোল আলো করে কাউকে যে নিয়ে আসবে সেই সুখও পায়নি সে। ওই মহান স্বামীর জন্য। সেই দুঃখও হয়তো মেনে নিতো যদি পাশে পেতো দেয়ালে টাঙানো ছবির তার পাশে দাঁড়ানো মানুষটার সাথ আর হাতে হাত। কিন্তু পেলোনা, বদলে পেলো ওই রাতের ধর্ষ*। এই না হলে যোগ্য স্বামী স্ত্রীর রসায়ন।
আজ এসেছিলো সে সকালে। বুকটা ধক করে উঠেছিল তাকে দেখে। নানা এ আমার বৌদি নয়! কে এ? কি হয়েছে ওই চোখে? অমন কালশিটে কেন? আর ঠোঁটের কাছেও অমন কালো কেন। হাত বাড়িয়ে বৌদির হাতটা ধরেছিলাম। সেও হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেছিলো। অবশ্য যাওয়ার আগে আমার টেবিলে রাখা ওই গ্লাস থেকে ছোট কাঁচিটা তুলে নিয়েছিল। পেছনে তাকিয়ে আমায় আরেকবার দেখে হেসে বিদায় নিয়েছিল। আর রাতে এই শেষ আর্তনাদ আবারো। তবে এটাই শেষ ছিল।
ওই বিকট আর্তনাদের পরে আবার ওদিকে সব নিস্তব্ধ। একজন হাসছে যেন দূরে দাদা বৌদির ঘরে। পাগলের হাসি নাকি মুক্তির হাসি? জানেনা সে। আমিও জানিনা। তবে এইটুকু জানি সে আজথেকে মুক্ত। ওই খাঁচা নিজেই খুলে দিয়েছে সে। কিন্তু পালায়নি, পালাবেনা সে। সে বন্দি হয়ে নতুন খাঁচায়। কিন্তু তাও সে মুক্ত.....সব চাহিদা থেকে।
#বাবান