05-06-2022, 08:54 PM
(This post was last modified: 05-06-2022, 08:55 PM by আমিও_মানুষ. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
যে রকম কথা হয়েছিল ঠিক সেই রকম ভাবেই সৌম্যর টাটা সুমো নিয়ে পরের দিন সকাল বেলাতেই বেড়িয়ে পড়া হোল ! ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া হোল কষা গ্রামে ! এই গ্রামটি বর্ধমান জেলার একটি গ্রাম ! গ্রামে আসার দুটি মাত্র উপায় ! মেমারি থেকে বাসে চেপে পুটশুরি গ্রামে নেমে ৪ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পৌঁছতে হয় ! আর না হলে নিজের গাড়িতে পৌঁছান যায় ! এখানে কোনও রিক্সা পাওয়া যায় না ! পুরো গ্রামে একটাও পাকা বাড়ি নেই ! মাটির দোতলা তিনতলা বাড়িই বেশি দেখা যায় ! পুরো গ্রামটা পুকুর আর চাষের জমিতে ভরা ! এখানাকার লকেদের মুখ্য জীবিকা মৎস্য চাষ এবং কৃষি ! মোটামুটি একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম ! ইলেক্ট্রিসিটি আছে তবে সে না থাকার সমান ! দেবুই পুরো রাস্তা গাইড করে নিয়ে গেলো ! দিদির বাড়ির সামনে গাড়ি দাঁড়াতেই দেবুর দিদি বেড়িয়ে এলো ! কাকাকে প্রনাম করতেই সবাই ঝপাঝপ দিদিকে প্রনাম করে নিলো ! "জামাইবাবুকে দেখতে পাচ্ছিনা ! কোথায় গেলো?" দেবু দিদিকে জিজ্ঞাসা করলো ! ও একটু আড়তে গেছে ! এখুনি চলে আসবে ! তোরা বস ! আমি ওদের খবর দিয়ে আসি !
দুটো বাড়ির পরেই মেয়ের বাড়ি ! দিদি আমাদের বাড়ির বারান্দায় বসিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গেলো ! সবাই মুগ্ধ দৃষ্টিতে দিদির বাড়ি দেখতে থাকলো ! মাটির দোতলা বাঁ তিনতলা বাড়ি আমরা সবাই প্রথম দেখছি ! দেবু আগেই দেখেছে যেহেতু ওর দিদির বাড়ি ও মাঝে মাঝেই আসে ! চারিদিকে আম কাঁঠালের গাছে ঘেরা ! বারান্দার এক কোনেই পুকুর ঘাট ! বাড়ির উঠানে একটা চাপা কল ! পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ...... কিছুক্ষণ পরেই দিদি ফাইল এলো সাথে একজন গরিব গরিব দেখতে লোককে ন্যে ! লোকটি হাত জোর করে সবার উদ্দেশ্যে নমস্কার জানালো ! "আমার নাম সুবল জানা ! আমি সুতপার বাবা ! এখন চলুন আমাদের বাড়িতে যাওয়া যাক ! একটু জলযোগ করতে হবে ! আপনারা অনেকক্ষণ বেরিয়েছেন ! নিশ্চয়ই সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয়নি ! আসুন সবাই গরিবের বাড়িতে একটু পদধুলি দিন ! "
ওনার পিছনে আমরা সবাই চলে পড়লাম ! দুটো বাড়ির পরেই দালানে শতরঞ্চি বেছান ছিল ! একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা ঘোমটা টেনে সবাইকে আহ্বান করলেন ! আমরা সবাই গিয়ে সেখানে বসে পড়লাম ! দুটি অল্প বয়সি মেয়ে দরজার আড়াল দিয়ে উঁকি দিচ্ছে ! একটির বয়স ১৭ কি ১৮ হবে আর একটি ১৫ কি ষোল !
ভদ্রমহিলা ডাকলেন " মা সতু ! সবাইকে প্রনাম করো ! " মেয়েটি বেড়িয়ে সবার আগে কাকাকে প্রনাম করলো ! আমাদের প্রনাম করতে গেলে আমরা সবাই তঠস্ত ভাবে প্রত্যাখান করলাম ! মেয়েটি চুপচাপ মাথা নিচু করে ঘরে চলে গেলো ! কিছুক্ষন পরেই মা এবং দুই মেয়ে সবাইকে জলখাবার পরিবেশন করতে শুরু করলো ! গরম গরম কচুরি আর ছোলার ডাল ! সাথে মাখা সন্দেশ ! সবাই খুব তৃপ্তি করেই খেলাম ! এমনিতেও খিদে পেয়েছিল বেশ ! সুবল বাবু সারাক্ষন হাত জোর করে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেন ! কাকা আর থাকতে না পেরে একটু ধমকে বলে উঠলেন " আপনি কি গরুচোর নাকি ? এই ভাবে হাত জোর করে দাঁড়িয়ে আছেন ! আমরা আপনার বাড়িতে অথিতি ! সুতরাং এতো ভয় পাবার কিছুই নেই !
- আজ্ঞে আমরা গ্রামের মানুষ ! তাই বড় ভয় হয় যদি আপনারা রুষ্ট হয়ে যান ! ওনার কথায় কাকা হাহা করে হেসে উঠলেন ! " আরে মশাই আমরাও মানুষ ! এসেছি আমাদের ঘরের মা লক্ষ্মী কে নিয়ে যাবার কথা বলতে ! আর আপনি কিনা এই ভাবে ব্যবহার করছেন ! যে মেয়েটি শারি পড়ে ছিল সেটিই কি আপনার বড় মেয়ে ?
- আজ্ঞে হ্যাঁ !
- আমাদের মেয়ে পছন্দ হয়েছে ! বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করুন !
কাকার কথার মাঝেই দেবুর জামাইবাবু দিপেন বাবু ঢুকলেন ! " বাহ ! এতো ভালো খবর ! তা আপনারা কবে বিয়ে দিতে চাইছেন ? " দিপেন বাবু বললেন !
- দেখুন আমাদের কথাতেই তো সব কিছু হবে না ! আগে মেয়েকে তো জিজ্ঞাসা করুন তার ছেলে পছন্দ হয়েছে কিনা ! আগে মেয়েকে ডাকুন !
কাকার কথার কেউ অমান্য করতে পারল না ! সুবল্ বাবু নিজের মেয়েকে ডাকলেন " মা সুতপা ! বাইরে আয় ! "
সুতপা ধীর পায়ে বাইরে এলো ! কোনও রকম কোনও মেকাপের ব্যাপার নেই ! সাধারন একটা শারি পড়া অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে ! কাকা উঠে দাঁড়িয়ে সুদিপকে বললেন " এইদিকে আয় তো বাবা একবার !"
সুদিপ ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালো ! সুতপাকে সুদিপের পাশে দাঁড় করিয়ে কাকা সবাইকে জিজ্ঞাসা করলেন " কি গো তোমারা বলও মানিয়েছে কি না ? !
আমরা সবাই হর পার্বতীর নতুন রুপ দেখলাম !
- হ্যাঁ রে মা ! আমার ছেলেকে তোর পছন্দ হয় ? কাকা সুতপা কে জিজ্ঞাসা করলেন !
সুতপা এক মুহূর্ত সুদিপের মুখের দিকে তাকিয়ে হ্যাঁ সূচক ঘার নারিয়ে এক ছুটে ঘরের ভিতর চলে গেলো !
- ওহে দিপেন ! গ্রামে কোনও পুরুত কে কি এখন পাওয়া যাবে? দ্যাখো তো ...... যদি পাওয়া যায় তাহলে আশীর্বাদ টা সেরে নিই !
এখন নয় বিকালে পাওয়া যাবে ! এখন সবাই পুজো করতে বেড়িয়ে গেছেন !
- ঠিক আছে ! বিকালেই ডাকো তাহলে ! আর সুবল বাবু ! আসুন দেনাপাওনার কথা বার্তা সেরে ফেলি !
দেনাপাওনার কথা শুনে শুবল বাবুর মুখ শুখিয়ে আমসত্তের মতো হয়ে গেলো !
- আরে বাবা আমাদের বেশি কিছুই দাবি নেই ! আগে শুনে নিন ! তারপর কথা বলুন !
- আজ্ঞে বলুন বাবু .........
-আবার বাবু ! আজ থেকে আমরা বেয়াই ! দেনাপাওনাতে আপনার মেয়েকে আমরা চাই শুধু মাত্র একটা লাল পার শাদা শাড়িতে ! বেনারসি আমরাই নিয়ে আসবো আমাদের মায়ের জন্য ! ! কিন্তু যৌতুকের ১১০০ টাকা আমাদের চাইই চাই ! ! ওখানে কোনও ছার নেই ! আমাদের বংশের প্রথা ! ১১০০ না পেলে বিয়ে হবে না !
সবাই কাকার কথা শুনে হেসে উঠল !
দুটো বাড়ির পরেই মেয়ের বাড়ি ! দিদি আমাদের বাড়ির বারান্দায় বসিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গেলো ! সবাই মুগ্ধ দৃষ্টিতে দিদির বাড়ি দেখতে থাকলো ! মাটির দোতলা বাঁ তিনতলা বাড়ি আমরা সবাই প্রথম দেখছি ! দেবু আগেই দেখেছে যেহেতু ওর দিদির বাড়ি ও মাঝে মাঝেই আসে ! চারিদিকে আম কাঁঠালের গাছে ঘেরা ! বারান্দার এক কোনেই পুকুর ঘাট ! বাড়ির উঠানে একটা চাপা কল ! পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ...... কিছুক্ষণ পরেই দিদি ফাইল এলো সাথে একজন গরিব গরিব দেখতে লোককে ন্যে ! লোকটি হাত জোর করে সবার উদ্দেশ্যে নমস্কার জানালো ! "আমার নাম সুবল জানা ! আমি সুতপার বাবা ! এখন চলুন আমাদের বাড়িতে যাওয়া যাক ! একটু জলযোগ করতে হবে ! আপনারা অনেকক্ষণ বেরিয়েছেন ! নিশ্চয়ই সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয়নি ! আসুন সবাই গরিবের বাড়িতে একটু পদধুলি দিন ! "
ওনার পিছনে আমরা সবাই চলে পড়লাম ! দুটো বাড়ির পরেই দালানে শতরঞ্চি বেছান ছিল ! একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা ঘোমটা টেনে সবাইকে আহ্বান করলেন ! আমরা সবাই গিয়ে সেখানে বসে পড়লাম ! দুটি অল্প বয়সি মেয়ে দরজার আড়াল দিয়ে উঁকি দিচ্ছে ! একটির বয়স ১৭ কি ১৮ হবে আর একটি ১৫ কি ষোল !
ভদ্রমহিলা ডাকলেন " মা সতু ! সবাইকে প্রনাম করো ! " মেয়েটি বেড়িয়ে সবার আগে কাকাকে প্রনাম করলো ! আমাদের প্রনাম করতে গেলে আমরা সবাই তঠস্ত ভাবে প্রত্যাখান করলাম ! মেয়েটি চুপচাপ মাথা নিচু করে ঘরে চলে গেলো ! কিছুক্ষন পরেই মা এবং দুই মেয়ে সবাইকে জলখাবার পরিবেশন করতে শুরু করলো ! গরম গরম কচুরি আর ছোলার ডাল ! সাথে মাখা সন্দেশ ! সবাই খুব তৃপ্তি করেই খেলাম ! এমনিতেও খিদে পেয়েছিল বেশ ! সুবল বাবু সারাক্ষন হাত জোর করে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেন ! কাকা আর থাকতে না পেরে একটু ধমকে বলে উঠলেন " আপনি কি গরুচোর নাকি ? এই ভাবে হাত জোর করে দাঁড়িয়ে আছেন ! আমরা আপনার বাড়িতে অথিতি ! সুতরাং এতো ভয় পাবার কিছুই নেই !
- আজ্ঞে আমরা গ্রামের মানুষ ! তাই বড় ভয় হয় যদি আপনারা রুষ্ট হয়ে যান ! ওনার কথায় কাকা হাহা করে হেসে উঠলেন ! " আরে মশাই আমরাও মানুষ ! এসেছি আমাদের ঘরের মা লক্ষ্মী কে নিয়ে যাবার কথা বলতে ! আর আপনি কিনা এই ভাবে ব্যবহার করছেন ! যে মেয়েটি শারি পড়ে ছিল সেটিই কি আপনার বড় মেয়ে ?
- আজ্ঞে হ্যাঁ !
- আমাদের মেয়ে পছন্দ হয়েছে ! বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করুন !
কাকার কথার মাঝেই দেবুর জামাইবাবু দিপেন বাবু ঢুকলেন ! " বাহ ! এতো ভালো খবর ! তা আপনারা কবে বিয়ে দিতে চাইছেন ? " দিপেন বাবু বললেন !
- দেখুন আমাদের কথাতেই তো সব কিছু হবে না ! আগে মেয়েকে তো জিজ্ঞাসা করুন তার ছেলে পছন্দ হয়েছে কিনা ! আগে মেয়েকে ডাকুন !
কাকার কথার কেউ অমান্য করতে পারল না ! সুবল্ বাবু নিজের মেয়েকে ডাকলেন " মা সুতপা ! বাইরে আয় ! "
সুতপা ধীর পায়ে বাইরে এলো ! কোনও রকম কোনও মেকাপের ব্যাপার নেই ! সাধারন একটা শারি পড়া অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে ! কাকা উঠে দাঁড়িয়ে সুদিপকে বললেন " এইদিকে আয় তো বাবা একবার !"
সুদিপ ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালো ! সুতপাকে সুদিপের পাশে দাঁড় করিয়ে কাকা সবাইকে জিজ্ঞাসা করলেন " কি গো তোমারা বলও মানিয়েছে কি না ? !
আমরা সবাই হর পার্বতীর নতুন রুপ দেখলাম !
- হ্যাঁ রে মা ! আমার ছেলেকে তোর পছন্দ হয় ? কাকা সুতপা কে জিজ্ঞাসা করলেন !
সুতপা এক মুহূর্ত সুদিপের মুখের দিকে তাকিয়ে হ্যাঁ সূচক ঘার নারিয়ে এক ছুটে ঘরের ভিতর চলে গেলো !
- ওহে দিপেন ! গ্রামে কোনও পুরুত কে কি এখন পাওয়া যাবে? দ্যাখো তো ...... যদি পাওয়া যায় তাহলে আশীর্বাদ টা সেরে নিই !
এখন নয় বিকালে পাওয়া যাবে ! এখন সবাই পুজো করতে বেড়িয়ে গেছেন !
- ঠিক আছে ! বিকালেই ডাকো তাহলে ! আর সুবল বাবু ! আসুন দেনাপাওনার কথা বার্তা সেরে ফেলি !
দেনাপাওনার কথা শুনে শুবল বাবুর মুখ শুখিয়ে আমসত্তের মতো হয়ে গেলো !
- আরে বাবা আমাদের বেশি কিছুই দাবি নেই ! আগে শুনে নিন ! তারপর কথা বলুন !
- আজ্ঞে বলুন বাবু .........
-আবার বাবু ! আজ থেকে আমরা বেয়াই ! দেনাপাওনাতে আপনার মেয়েকে আমরা চাই শুধু মাত্র একটা লাল পার শাদা শাড়িতে ! বেনারসি আমরাই নিয়ে আসবো আমাদের মায়ের জন্য ! ! কিন্তু যৌতুকের ১১০০ টাকা আমাদের চাইই চাই ! ! ওখানে কোনও ছার নেই ! আমাদের বংশের প্রথা ! ১১০০ না পেলে বিয়ে হবে না !
সবাই কাকার কথা শুনে হেসে উঠল !