22-05-2022, 08:40 PM
(১০)
গোগোলকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় সাড়ে সাতটা বেজে গেলো। বাড়ি এসে ওকে ভাল করে স্নান করিয়ে ডিনার করাতে বসিয়ে দিলো অরুন্ধতী। আজ তাকে অনেকদিন পর তার মা নিজের হাতে খাইয়ে দিলো। গোগোলকে বেশি মেন্টাল স্ট্রেস দেওয়া যাবে না, তাই আজকের জন্য পড়াশোনা বন্ধ। ন'টার মধ্যে শুয়ে পড়লো গোগোল। নিশীথ বাবুর কাছ থেকে কথামতো আজকে বকেয়া টাকা না পেয়ে লতিকা দেবীর কিছু অবান্তর প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে অরুন্ধতীও অন্য দিনের তুলনায় তাড়াতাড়ি রাতের খাবার সারলো। বাড়িতে ফিরে হেডস্যারকে পৌঁছানো সংবাদ দিয়ে কারো সঙ্গে কথা বলতে ভালো না লাগায়, অরুন্ধতী ফোনটা সুইচড অফ করে দিয়েছিলো। তাই রাতের দিকে নিশীথ বাবু স্বয়ং এবং দু'দিন ছেলের সঙ্গে কথা না হওয়াতে কিছুটা মন খারাপ হওয়ার ফলে অনিরুদ্ধ ফোন করে মোবাইল বন্ধ পেলো।
পরেরদিন ঘুম থেকে উঠে ফোনের সুইচ অন করে দিয়েছিল অরুন্ধতী। আজ শনিবার, গোগোলদের ছুটি .. শনি আর রবিবার ওদের কলেজ ছুটি থাকে। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ অনিরুদ্ধ আবার ফোন করলো। মোবাইল স্ক্রিনে অনিরুদ্ধর নাম দেখে ফোনটা গোগোলকে ধরিয়ে দিলো অরুন্ধতী। তার বাবাকে দু'দিন পর ফোনে পেয়ে প্রথমে খুব অভিমান করলো গোগোল, তারপর গতকাল কলেজে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা নিজের মতো করে বললো। ছেলের সঙ্গে আরও কিছুক্ষণ কথা বলে তার মা'কে ফোনটা দিতে বললো অনিরুদ্ধ।
অরুন্ধতী ফোনটা ধরতেই ওপাশ থেকে অনিরুদ্ধর চিৎকার ভেসে এলো "তোমার মতো একটা হোপলেস মহিলা আমি জীবনে দেখিনি .. এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে আর তুমি আমাকে জানাওনি .. ফোনটা সুইচড অফ করে রেখে দিয়েছিলে? অবশ্য জানাবেই বা কোন মুখে .. এইসব কিছু হয়েছে তোমার গাফিলতির জন্য। কুয়ার ব্যাঙ সাগরে পড়লে যা হয় তোমার হয়েছে সেই অবস্থা .. এই বুড়ি বয়সে উনি আবার পড়াশোনা শুরু করবেন! একটা কাজ ঠিক করে করতে পারো না আর মুখে সবসময় বড় বড় কথা.. যাইহোক, আমার ফিরতে ফিরতে এখনো দিন তিনেক দেরি হবে .. ফিরে এসে সবকিছু সামলে নেবো.."
গত পরশু রাতে ভিডিওটি দেখার পর থেকে এমনিতেই মাথায় আগুন জ্বলছিল অরুন্ধতীর, তাই সে তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলো না। আজ অনিরুদ্ধর এই বাক্যবাণ ঘৃতাহুতির মতো কাজ করলো "বাহ্ বাহ্ .. এই না হলে সন্তানের বাবা? ছেলের এত বড় বিপদের কথা শুনেও বলছে আমার ফিরতে এখনো তিন দিন দেরি হবে .. অবশ্য তাছাড়া তো উপায়ও নেই .. তাহলে সহকর্মীর সঙ্গে মজাটা মাটি হয়ে যাবে না! ছেলে রসাতলে যায় যাক, আমার বেলেল্লাপনা চললেই হলো .. তাই না?"
"জাস্ট কিপ ইওর মাউথ শাট .. যা মুখে আসছে তাই বলে যাচ্ছো? একজন রেস্পেক্টেড এম্প্লয়ী হিসেবে কোম্পানি আমাকে এখানে একটা সেমিনারে পাঠিয়েছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসবো কি করে? অবশ্য তোমার মতো একজন পাতি হাউসওয়াইফ এগুলো বুঝবে না।" খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো গর্জন করে উঠলো অনিরুদ্ধ।
"গলা নামিয়ে কথা বলুন মিস্টার মুখার্জি .. লম্পট, চরিত্রহীন, ঠকবাজদের মুখে এত বড় বড় কথা মানায় না। আপনার বেলেল্লাপনার জ্বলন্ত প্রমাণ আমার কাছে আছে .. এলেই দেখতে পাবেন। আপনাকে ফোন করলে তো আপনি ধরেন না .. কিছুক্ষণ পর আপনার রক্ষিতা সরি সহকর্মী বৈশালী ফোন করে জানতে চায় আমি কেন আপনাকে ফোন করেছিলাম! অবশ্য আপনাদের দুজনের বাচনভঙ্গি আমার একই রকম মনে হয় আজকাল। কে যে কাকে ট্রেনিং দিচ্ছে বোঝা দায়। তাছাড়া আপনার সঙ্গে কথা বলতে ঘেন্না করে আমার .. তাই জানাইনি। জানালেই বা কি করতেন? সেই তো তিন দিন পরেই আসতেন। আর ফিরে এসে আপনাকে কিছু সামলাতে হবে না .. এদিকে যা করার আমিই করবো।" ঠান্ডা গলায় অথচ দৃঢ়ভাবে কথাগুলো বললো অরুন্ধতী।
একদা মুখচোরা, স্বামীকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করা, অরুন্ধতীর মুখে হঠাৎ করে 'আপনি' আর 'মিস্টার মুখার্জি' এই সম্ভাষণ শুনে এবং সর্বোপরি তার বলা প্রত্যেকটা কথা যে অক্ষরে অক্ষরে সত্যি এটা অনুধাবন করে .. জোঁকের মুখে নুন পড়লে যে রকম অবস্থা হয়, অনিরুদ্ধর ক্ষেত্রেও সেই একই অবস্থা হলো - "ঠিক আছে .. ঠিক আছে .. তোমার এখন মাথা গরম হয়ে আছে .. ফিরে এসো সবকিছু বুঝিয়ে বলবো তোমাকে .. এখন রাখছি .. কেমন!" এইটুকু বলে ফোন কেটে দিয়ে যেন পালিয়ে বাঁচলো অনিরুদ্ধ।
দরজার আড়াল থেকে ফোনের কথোপকথন শুনে এবং অরুন্ধতীর এই অজানা রূপ দেখে আগ বাড়িয়ে একটাও প্রশ্ন করার সাহস পেলেন না লতিকা দেবী। চুপচাপ রান্নাঘরের দিকে প্রস্থান করলেন।
দুপুরের দিকে নিশীথ বাবু ফোন করলেন - "তোমাকে কাল রাতে একবার ফোন করেছিলাম, ফোনটা বন্ধ ছিলো। যদিও সেটাই স্বাভাবিক .. গতকাল বিকেল থেকে যে ঘটনাপ্রবাহের সম্মুখীন হয়েছো তোমরা দুজনে, এরপর আর কারো সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে না। যাই হোক, আমি সন্ধ্যে ছ'টা নাগাদ তোমার ওখানে যাবো। তোমাকে একেবারে আমার গাড়ি করে ওখান থেকে নিয়ে যে মিটিংটা ফিক্স করেছি সেখানে যাবো। মনে আছে তো?"
তার স্বামীর সঙ্গে নিশীথ বাবুর কথা বলার কতটা তফাৎ .. কত মোলায়েম সুরে বিনীত ভাবে কথা বলেন স্যার তার সঙ্গে .. এটার একটা সম্যক তুলনা করে "হ্যাঁ মনে আছে .. আপনি অবশ্যই আসুন.." এইটুকু বলে ফোন রেখে দিলো অরুন্ধতী।
★★★★
দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর খুব ভালো ঘুম হলো অরুন্ধতীর .. যাকে বলে শান্তির নিদ্রা। বিকেল পাঁচটা নাগাদ যখন ঘুম ভাঙলো, তখন দেখলো চোখ মুখ ফুলে গিয়েছে তার। লতিকা দেবীর করে আনা চা খেয়ে তাড়াতাড়ি বাথরুমে ঢুকে গেল সে। তারপর ফ্রেস হয়ে বেড়িয়ে দেখলো ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটা বাজে। 'তাড়াতাড়ি রেডি হতে হবে এক্ষুনি, স্যার এসে যাবেন' - ভাবতে ভাবতে আলমারী থেকে একটি সাদা রঙের তাঁতের শাড়ি আরেকটি সাদা হাফস্লিভ ব্লাউজ বের করে পড়ে নিলো অরুন্ধতী।
সন্ধ্যে ছ'টার কিছু পরে নিশীথ বাবু এলেন। অরুন্ধতী তখন বেডরুমে গোগোলকে পড়াচ্ছিল। দরজা খুললেন লতিকা দেবী। "এখানে পাঁচ হাজার টাকা আছে .. যা পেতেন তার থেকেও অনেক বেশি দিলাম .. একটু পরে আপনার ভাগ্নিকে সাজিয়ে গুজিয়ে নিয়ে বেরোবো। ওর সাজ পোশাক দেখে কোনো উল্টোপাল্টা মন্তব্য করবেন না যেন .. কথাটা মাথায় রাখবেন।" দরজা দিয়ে ঢুকেই কথাগুলো বলে লতিকা দেবীর হাতে পকেট থেকে বের করে ৫০০ টাকার কয়েকটা নোট গুঁজে দিয়ে তার উত্তরের তোয়াক্কা না করেই ভেতরে ঢুকে গেলেন নিশীথ বাবু।
কলিং বেলের আওয়াজে অরুন্ধতী বুঝতে পেরেছিলো হেডস্যার এসেছেন। বেডরুমের দরজায় নক করে নিশীথ বাবু ভিতরে ঢুকতেই তার মায়ের ইশারায় তার কলেজের প্রধান শিক্ষককে "গুড ইভিনিং স্যার" বলে গোগোল বইপত্র নিয়ে পাশের স্টাডিরুমে চলে গেলো। তার দিকে ভুরু কুঁচকে, ঠোঁট উল্টে, ভাবলেশহীন মুখে নিশীথ বাবুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অরুন্ধতী প্রশ্ন করলো "কি হলো স্যার? আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো ব্যাপারে খুব চিন্তিত হয়ে আছেন।
"চিন্তিত নয় .. তোমার পরিধেয় পোশাক দেখে আমি বাকরুদ্ধ .. মানছি তুমি মানসিক দুঃখের মধ্যে আছো .. কিন্তু তাই বলে তো তোমার পতি-বিয়োগ হয়নি এখনো .. তাহলে এরকম বিধবাদের মতো শাড়ি ব্লাউজ পরেছ কেন? তাছাড়া তোমার সব চিন্তার, সব দুঃখের অবসান তো আজকেই হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা হতে গেলে একটু সেজেগুজে যেতে হবে তো! এইরকম ভাবে গেলে ওখানে কেউ তোমার কথা শুনবে না, সে তুমি যতই সুন্দরী হও না কেনো .. কথায় বলে পেহলে দর্শনধারী, পিছে গুণবিচারী। আমি তোমার জন্য একটা উপহার এনেছি .. এটা পড়েই তুমি যাবে .. না বলতে পারবে না কিন্তু। নাও প্যাকেটটা ধরো।" কথাগুলো বলে অরুন্ধতী দিকে একটি মাঝারি সাইজের প্যাকেট এগিয়ে দিলেন নিশীথ বাবু।
প্যাকেটটা হাতে নিয়ে সেটা খোলার পর অরুন্ধতী দেখলো তার ভেতরে লাল রঙের জমির উপর সোনালী রঙের ফুল ফুল নকশা করা একটি স্বচ্ছ সিফনের শাড়ি। অসাধারণ দেখতে এই শাড়িটা যে কোনো নারীর কাছেই লোভনীয় হবে। অরুন্ধতীর চোখে পড়লো শাড়ির গায়ে প্রাইস ট্যাগ জ্বলজ্বল করছে .. ৬৫০০ টাকা। তার সঙ্গে লেসের কাজ করা একটি অত্যন্ত পাতলা কাপড়ের সুতির কালো রঙের স্লিভলেস ব্লাউজ। শাড়িটা দেখে তার চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলেও নিজেকে সংযত করে অরুন্ধতী বললো "মাফ করবেন স্যার, এগুলো আমি নিতে পারবো না। প্রথমতঃ এত দামি উপহার আমি আপনার কাছ থেকে নেবোই বা কেনো .. দ্বিতীয়তঃ এই ধরনের ব্লাউজ আমি পড়ি না, জীবনে কখনো পড়ি নি। তার থেকে যে পোশাকে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, অর্থাৎ যেটা আমি পড়ে আছি সেটা পড়েই না হয় .."
গোগোলের মায়ের কথা শেষ হওয়ার আগেই তাকে থামিয়ে দিয়ে নিশীথ বাবু বলতে শুরু করলেন "জীবনে সব কিছুরই একটা প্রথম থাকে অরুন্ধতী। হামাগুড়ি দেওয়া অবস্থা থেকে শিশুরা যখন হাঁটতে শুরু করে তখন তাদের শিশুমনেও একটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে। 'হাঁটতে গিয়ে যদি পড়ে যাই' - মনে এইরূপ আশঙ্কা নিয়েও কিন্তু তারা দুই পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে, তা যদি তারা না করতো তাহলে চিরকাল হামাগুড়ি দিতে হতো। যেদিন সন্তানকে প্রথম কলেজে পাঠায় তাদের অভিভাবক, সেদিন তাদের মনেও একটা ভয় থাকে - 'আমার সন্তান জীবনে প্রথমবার বাড়ির বাইরে গিয়ে মানিয়ে নিতে পারবে তো? ওর কোনো ক্ষতি হবে না তো?' তবুও তারা তাদের ছেলেমেয়েদের কলেজে পাঠায়, তা না হলে তাদের সন্তান চিরকাল মূর্খ হয়ে থাকতো। জীবনে প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার পর, মহিলাদের প্রসব যন্ত্রণা যখন বৃদ্ধি পায় এবং সন্তান প্রসবের সমযকাল যখন ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে, তখন তাদের মনেও একটা ভীতির সঞ্চার হয় - 'যদি অপারেশন টেবিলে আমি মারা যাই বা আমার সন্তানের ক্ষতি হয়।' তবুও তো তারা মা হয়। ঠিক তেমনই জীবনে কোনোদিন হাত কাটা, বগল কাটা ব্লাউজ পড়োনি বলে আজকেও পড়তে পারবে না তার তো কোনো মানে নেই। অবশ্য তুমি ঠিকই বলেছো সব জিনিস তো সবাইকে মানায় না, সবাই সবকিছু ক্যারি করতে পারে না। আসলে তোমার মতো মধ্য ত্রিশের একজন আনস্মার্ট গৃহবধূকে এই পোশাক পড়লে সত্যিই হাস্যস্পদ লাগবে। তার থেকে যদি একজন স্মার্ট, স্লিম ফিগারের, একটু কম বয়সী কাউকে এই এক্সপেন্সিভ শাড়ি আর ব্লাউজ আমি গিফ্ট করতাম .. এই যেমন ধরো বৈশালী .. ওকে কিন্তু খুব মানাতো এই পোশাকে।"
প্রথম পর্যায়ে নিশীথ বাবুর মুখে জীবন-দর্শনের ভাষণ শুনে যেমন সরল মনের অরুন্ধতীর মস্তিষ্কে কথাগুলি গেঁথে গেলো এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে হলো। ঠিক তেমনই দ্বিতীয় পর্যায়ে নিশীথ বাবুর মুখে তার সঙ্গে বৈশালীর রূপ এবং যৌবনের তুলনা টানায় তার মনের ভেতরটা ঈর্ষার আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করলো। - "আমি আপনাকে আগের দিন বলেছি স্যার, না জেনে না বুঝে যার তার সঙ্গে আমার তুলনা করবেন না। আমাকে এগুলো মানাবে না একবারও বলেছি নাকি? আমি বলেছি আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। আপনি তো নিজেকে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী বলেন, একটা কথা বলুন তো, আপনি কি আপনার স্ত্রী বা বোন'কে এই ধরনের পোশাক পড়তে অনুমতি দিতেন?"
কেউ যখন পাশ কাটিয়ে চলে না গিয়ে কোনো বিষয়ে তর্ক জুড়ে দেয়, তখন বুঝতে হবে হাজার চেষ্টা করেও সেই বিষয়ে থেকে সে নিজেকে বের করে নিতে পারছে না। অভিজ্ঞ নিশীথ বাবু এটা বুঝতে পেরে অরুন্ধতীকে আরো বিভ্রান্ত করে দেওয়ার জন্য বললেন "প্লিজ, বোন শব্দ'টা এখানে ব্যবহার করো না। আসলে যে কোনোদিন জলে সাঁতার কাটতে নামেনি, সে ডোবাকেও সমুদ্র ভাবে। এই ধরনের পোশাক মানে? কোনো ধরনের পোশাক? তুমি যে পোশাকটা পড়ে আছো, তার সঙ্গে এর তফাৎ কি? তুমি তো শাড়ি পড়েই আছো এখন, আমিও তোমাকে একটা শাড়িই তো গিফ্ট করলাম .. শুধু তোমার হাফস্লিভ ব্লাউজের পরিবর্তে স্লিভলেস ব্লাউজ। আর আমার স্ত্রীর কথা বলছো? সেদিন রাতে তোমাকে যে নাইটিটা পড়তে দিয়েছিলাম সেটা তো আমার স্ত্রীর ছিলো। এছাড়াও ও সব সময় স্লিভলেস ব্লাউস আর নাভির নিচে শাড়ি পরতে পছন্দ করতো, মানে এখনও করে। এতে অন্যায়ের তো কিছু নেই, অশ্লীলতারও কিছু নেই .. তাই আমার অনুমতি নেওয়া বা না নেওয়ার কোনো ব্যাপার এখানে খাটে না।"
নিশীথ বাবুর এই অকাট্য যুক্তির সামনে কোনো কথাই বের হলো না অরুন্ধতীর মুখ দিয়ে .. চুপচাপ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইলো সে।
অরুন্ধতীর মৌনতাকেই সম্মতির লক্ষণে পরিণত করার লক্ষ্যে নিশীথ বাবু গলার স্বর কিছুটা নামিয়ে বললেন "তাহলে যাও, আমি যে উপহারগুলো দিলাম সেগুলো পড়ে এসো। শাড়িটা কিন্তু নাভির নিচে পড়ো প্লিজ .. দেখবে খুব সুন্দর লাগবে তোমাকে। এই অনুরোধটুকু আমার রাখো। দেখো, আমি তো আর কিছুই চাইছি না তোমার কাছ থেকে।"
"না না এটা আপনি কি বলছেন? আপনার এই অনুরোধটা রাখতে পারবো না। ওইরকম ভাবে আমি কখনো শাড়ি পড়িনি।" মৃদু প্রতিবাদ করে বললো অরুন্ধতী।
"ওইরকম ভাবে মানে? নাভির নিচে শাড়ি পরার কথা বলছো? তোমার বর যে তোমাকে গাঁইয়া বলে, ভুল কিছু বলে না। এতটা কনজারভেটিভ কেন তুমি? তোমাকে তো উত্তেজক কোনো মর্ডান ড্রেস পড়তে বলছি না। নাভির নিচে শাড়ি পড়াটা আজকাল খুব নর্মাল। শুধু আজকাল কেন, চিরকালই এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার ছিলো। আরে বাবা একটু স্মার্ট হয়ে সেজেগুজে যেতে হবে তো! না হলে অতো বড় দু'জন মানুষের সামনে বসে কথা বলবে কি করে? ছেলেকে বাঁচাতে হবে তো .. আর চাকরিটা .. চাই না?" চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো বলে অরুন্ধতীর কবরের শেষ পেরেকটা পুঁতলেন নিশীথ বাবু।
ঠিকই তো .. হেডস্যার তো তাকে অর্ধনগ্ন হতে বলছেন না .. শুধু একটা বিশেষ অনুরোধ করেছেন। রাস্তায় চলার মাঝে অনেক মহিলাকেই নাভির নিচে শাড়ি পরতে দেখেছে অরুন্ধতী। এমনকি তাদের ক্যাম্পাসে স্বামীর সহকর্মীর স্ত্রীদের মধ্যে অনেকেই নাভির নিচে শাড়ি পরে .. ব্যাপারটা চোখ এড়ায়নি তার। তার উপর গোগোলের কথা উঠতেই গতকালের সমস্ত কথা নিমেষের মধ্যে মনে পড়ে গেলো অরুন্ধতীর। একটু সেজেগুজে গেলে যদি তার সন্তানের মঙ্গল হয় এবং সেই বহুকাঙ্খিত চাকরিটা যদি সে পেয়ে যায়, তাহলে এর থেকে ভালো আর কিই বা হতে পারে। "ঠিক আছে স্যার .. আপনি যেমন বলছেন সেটাই হবে .. কিন্তু ওখানে আমাকে এভাবে দেখে ওরা খারাপ ভাববে না তো? যদি কোনো বিপদ হয়?" মৃদু কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলো অরুন্ধতী।
"আরে কিচ্ছু হবে না .. আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো না, কিন্তু আমি তো তোমাকে ভালোবাসি .. তাই নিজের ভালবাসার মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবো কেন? ভরসা রাখো আমার উপর .. অনেকটা দেরি হয়ে গেছে কিন্তু, তাড়াতাড়ি ড্রেস চেঞ্জ করে এসো।" অরুন্ধতীকে আশ্বস্ত করে কথাগুলো বললেন প্রধান শিক্ষক। গত পরশু রাতে অরুন্ধতীর ভেজা ব্লাউজ শুকাতে গিয়ে নিশীথ বাবু লক্ষ্য করেছিলেন তার ছাত্রের মা আটত্রিশ সাইজের ব্লাউজ পড়ে। ব্লাউজটা কেনার সময় স্লিভলেস ব্লাউজ পরতে হবে এটা ভেবে এমনিতেই যৎপরোনাস্তি বিব্রত এবং আরষ্ট হয়ে থাকা অরুন্ধতীকে অতিমাত্রায় লজ্জায় ফেলে দিয়ে নিজেদের কাম চরিতার্থ করার জন্য এই বিকৃতমনস্ক লোকটি ইচ্ছাকৃতভাবে এক সাইজ ছোট ব্লাউজ কিনে এনেছে।
নিশীথ বাবুর দেওয়া প্যাকেটটি হাতে নিয়ে ধীর পায়ে পাশের ঘরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলো অরুন্ধতী। মাঝারি আকারের এই ঘরটি অর্থাৎ আজকাল বেশিরভাগ রাতে তার সুন্দরী-যুবতী স্ত্রীকে ছেড়ে যেখানে অনিরুদ্ধ রাত্রিবাস করে, সেটি পাশের শোবার ঘরের মতো অত বড় নয়। ঘরের এক পাশে একটি ছোট খাট, তার পাশে দেওয়ালের দিকে একটি কাঠের আলমারি। খাটের ঠিক উল্টোদিকে পাশের বেডরুমের মতোই বেশ বড়সড় আপাদমস্তক দেখা যায় এইরকম একটি আয়না সমেত ড্রেসিংটেবিল। খাটের উপর প্যাকেটটা রেখে চুপচাপ আয়নার সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো সে। তারপর ধীরে ধীরে সাদা রঙের তাঁতের শাড়িটি খুলে ফেললো। শাড়ির নিচে কালো রঙের একটি সায়া পড়ে এসেছে সে। ব্লাউস এবং পেটিকোট পরিহিতা অরুন্ধতী নিজের দিকে একবার তাকিয়ে কিছু একটা ভাবলো, তারপর ধীরে ধীরে সায়ার দড়িটা খুলে ফেললো। কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা করার পর সায়াটিকে নাভির তিন আঙুল নিচে নামিয়ে পুনরায় সায়ার দড়ি বেঁধে নিলো।
গোগোল জন্মানোর পর থেকে একবছর পর্যন্ত তার শাশুড়ি অন্নপূর্ণা দেবী বাড়িতে বানানো একরকম আয়ুর্বেদিক তেল দিয়ে তার বৌমার পেটে মালিশ করে দিয়েছিল, ফলস্বরূপ ঈষৎ চর্বিযুক্ত তলপেট, নাভি এবং তার চারপাশে একবিন্দুও স্ট্রেচ মার্ক হয়নি অরুন্ধতীর .. জায়গাটা এখনো অসম্ভব তেলতেলে এবং মোলায়েম। এরপর আস্তে আস্তে সাদা হাফস্লিভ ব্লাউজটা খুলে ফেললো সে। ভেতরে একটি সাদা রঙের ব্রা পড়েছে অরুন্ধতী। এরপর হেডস্যারের দেওয়া পাতলা ফিনফিনে সুতির কাপড়ের কালো রঙের স্লিভলেস ব্লাউজটা দুই হাত দিয়ে গলিয়ে নিলো। এমনিতেই এক সাইজ ছোট ব্লাউজটাকে ব্রায়ের উপর চাপানো দুঃসাধ্য হয়ে যাচ্ছিল তার পক্ষে। তার উপর দেখা গেলো ব্লাউজের স্লিভস এতটাই সরু যে সাইড থেকে ব্রায়ের স্ট্র্যাপ মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে যাচ্ছে। সর্বোপরি ভিতরের সাদা ব্রা বাইরের কালো পাতলা ব্লাউজের কাপড়ের মধ্যে দিয়ে প্রকট থেকে প্রকটতর হয়ে উঠেছে। তাছাড়া ব্লাউজের পিছন দিকটা প্রায় অনেকটাই উন্মুক্ত। এমত অবস্থায় ভিতরে ব্রা পড়লে ব্যাপারটা ভীষণ দৃষ্টিকটু লাগছে। কিন্তু শুধু ব্লাউজ পড়ে যাওয়াটা তো বালখিল্যতা। তাই অরুন্ধতী ঠিক করলো ভেতরের সাদা ব্রা চেঞ্জ করে কালো ব্রা পড়বে, তাতে যদি কিছুটা চক্ষুলজ্জা নিবারণ করা যায়। এই ঘরের আলমারি তন্ন তন্ন করে খুঁজে একটাও কালো রঙের ব্রা পেল না সে। কাল যেটা কলেজে পড়ে গেছিলো, আজ সকালে সেটা ভিজিয়ে দিয়েছে সে। এছাড়া তার বেডরুমের আলমারিতে হয়তো আরো একজোড়া কালো ব্রা আছে, কিন্তু নিশীথ বাবুর সামনে এই অবস্থায় ওই ঘরে গিয়ে আলমারি খুলে ব্রেসিয়ার বের করে আনা একপ্রকার অসম্ভব। ওদিকে ততক্ষণে দরজায় বার দুয়েক টোকা দিয়ে তাড়া দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন হেডস্যার।
এমত অবস্থায় কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে শেষ পর্যন্ত অনেক কষ্ট করে ওই সাদা ব্রায়ের উপর ব্লাউজটা পড়তে সক্ষম হলো অরুন্ধতী। এতক্ষণ ধরে চলতে থাকা বিভিন্নরকম কথোপকথনের মাধ্যমে তার স্বামীর প্রতি ক্রমশ বেড়ে যাওয়া বিদ্বেষ, সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা এবং নিজের মনের সঙ্গে অনবরত সঙ্গে লড়তে থাকা - এই সবকিছুর প্রভাবে তাড়াতাড়ি করে ব্লাউজটা পড়ার আগে সাইজটাই দেখা হয়নি অরুন্ধতীর। এখন বুঝতে পারছে এটি প্রচণ্ড টাইট হয়ে তার গায়ে চেপে বসেছে। তার ভারী স্তনজোড়া প্রচন্ড আঁটোসাঁটো পাতলা সুতির কাপড়ে হাঁসফাঁস করতে করতে এদিক-ওদিক দুলছে। দুইপাশ থেকে প্রবৃদ্ধ এবং বর্তুল স্তনযুগলের চাপের ফলে স্তন বিভাজিকা গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। মনে হচ্ছে যে কোনো মুহূর্তে ব্লাউজের সামনের হুকগুলো ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবে। এরপর জীবন প্রথমবার নাভির প্রায় বেশ কিছুটা নিচে নিশীথ বাবুর দেওয়া শিফনের শাড়িটা পড়লো সে। নিজেকে আয়নাতে দেখে নিজেই চমকে উঠলো। সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থাতেও তাকে হয়তো এতোটা উত্তেজক এবং আকর্ষণীয়া লাগে না, এই পোশাকে তাকে যেরূপ লাগছে। নিজের অজান্তেই দুই পায়ের মাঝখানে কেমন যেন একটা শিরশিরানি অনুভব করলো অরুন্ধতী, তারপর ধীরপায়ে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো।
পাতলা সিফনের শাড়ির আড়ালে উঁকি দেওয়া বিপজ্জনক স্তন বিভাজিকা থেকে শুরু করে ঈষৎ চর্বিযুক্ত মোলায়েম প্রায় চ্যাপ্টা পেট এবং তার মাঝখানে বেশ বড়ো একটি গভীর উত্তেজক নাভি .. এই সবকিছুই দৃশ্যমান হওয়া স্লিভলেস ব্লাউজ এবং নাভির বেশ কিছুটা নিচে নামিয়ে শাড়ি পরিহিতা গোগোলের মাতৃদেবীর দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছিলেন না নিশীথ বটব্যাল। মুখে সেরকম চড়া মেকআপ না নিলেও হালকা ফেস পাউডারের ছোঁয়া, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, স্বামী সোহাগী না হলেও সধবা হওয়ার ফলস্বরূপ অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিঁথিতে চওড়া করে দেওয়া সিঁদুর, এবং কপালে লাল রঙের বড়োসড়ো একটি টিপ পড়াতে অরুন্ধতীর এই রূপ দেখে ব্রহ্মচর্য পালন করা থেকে সংসারধর্ম ত্যাগ করে বাণপ্রস্থে যাওয়া ব্যক্তিদের পর্যন্ত লোম খাড়া হয়ে যাবে .. এটা বললে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না।
নিজের মায়ের কোনোদিন না দেখা এরকম অদ্ভুত রূপ দেখে প্রথমে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে গোগোল বললো "এরকম সেজে তুমি কোথায় যাচ্ছো মা? তোমাকে দেখতে একদম ভালো লাগছে না।"
সন্তানের এইরূপ প্রশ্নে লজ্জিত এবং বিভ্রান্ত হয়ে গিয়ে অরুন্ধতী কিছু বলতে যাওয়ার আগে তাকে থামিয়ে দিয়ে নিশীথ বাবু বললেন "আমরা ফ্যান্সি ড্রেস কম্পিটিশনে যাচ্ছি অনির্বাণ .. সেখানে এই ধরনের পোশাক পরতে হয় .. তুমি তো এখন ছোট .. বড়ো হলে নিশ্চয়ই বুঝবে।"
"আমি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো .. তুমি কিন্তু লক্ষী সোনা হয়ে থেকো .. দিদাকে একদম জ্বালাতন করবে না .." তার সন্তান গোগোলকে আদর করে লতিকা দেবীর বিস্ময়কর দৃষ্টি উপেক্ষা করে তার সন্তানের কলেজের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে গাড়িতে গিয়ে বসলো অরুন্ধতী।
★★★★
এতক্ষণ ধরে চলা এত কথার মাঝে তাদের গন্তব্যস্থল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেছিলো সরল মনের অরুন্ধতী। গঙ্গানগর রেলস্টেশনকে পাশে রেখে যেতে যেতে একেবারে রেলওয়ে ওয়ার্কশপের শেষ সীমানায় পৌঁছে পৌরসভার মাঠ ছাড়িয়ে নিশীথ বাবুর গাড়ি যখন হাইওয়ে এক্সপ্রেসের উপর পড়লো তখন প্রায় সাড়ে সাতটা বেজে গিয়েছে। এত বছর এই এলাকায় থাকলেও এ দিকটা কোনোদিন আসেনি সে বা আসার দরকার হয়নি। তার উপর এরকম জনমানব শূন্য হাইওয়ে দেখে নিশীথ বাবুর দিকে তাকিয়ে অরুন্ধতী ভয় ভয় প্রশ্ন করলো "এখনই অনেকটা রাত হয়ে গিয়েছে স্যার, আমরা কি আপনার ওই সংস্থায় যাচ্ছি? নাকি কোনো রেস্টুরেন্টে? রাত্রে ফিরতে হবে তো আমাদের.."
"ওহো তোমাকে তো বলাই হয়নি .. তাছাড়া তুমিও তো জিজ্ঞাসা করোনি .. আমরা এখন এমএলএ সাহেবের বাড়ি যাচ্ছি .. উনি একজন বিখ্যাত মানুষ, পাবলিক প্লেসে তো উনি সবার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না, তাই বাড়িতেই মিটিং ফিক্স করতে হয়েছে .. এই তো এসে গেছি.. আর কিছুক্ষণ .. আসলে মিস্টার সামন্তর বাড়ি শহরের অন্যপ্রান্তে .. আগে তো পৌঁছোই .. ফেরার কথা পরে হবে" অরুন্ধতীকে অভয় দিয়ে কথাগুলো বললেন নিশীথ বাবু।
পৌনে আট'টা নাগাদ এলাকার বিধায়ক মানিক সামন্তর প্রাসাদোপম বাগানবাড়ির সামনে গাড়ি থামলো। যদিও গোগোলের মাতৃদেবীর কোনো ধারনাই নেই যে এটা এমএলএ সাহেবের বসতবাড়ি নয়, বাগানবাড়ি। তবুও এই প্রকাণ্ড অট্টালিকা দেখলে বাড়ির মালিকের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা জন্মায়।
দারোয়ান বাইরের লোহার গেট খুলে দেওয়ার পর সামনের অনেকটা জায়গা জুড়ে থাকা লন পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো নিশীথ বটব্যাল, তার পিছন পিছন ধীরপায়ে অগ্রসর হতে লাগলো অরুন্ধতী। অট্টালিকার একতলার ফটকের সামনে অতিথি অভ্যর্থনার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন বাড়ির মালিক মিস্টার সামন্ত। পাতলা হয়ে আসা অর্ধেকের বেশি পেকে যাওয়া মাথার চুল ব্যাকব্রাশ করে আঁচড়ানো, চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা পরা, অত্যাধিক পরিমাণে ফোলা ফোলা দুটি গাল দেখে মনে হয় কিছুক্ষণ আগেই সেভ করে এসেছেন, নাক আর ঠোঁটের মাঝখানে একটি কাঁচাপাকা মোটা গোঁফযুক্ত, পায়জামা-পাঞ্জাবি এবং জহরকোট পরিহিত বছর পঞ্চাশের হৃষ্টপুষ্ট এমএলএ সাহেবকে দেখতে অনেকটা ব্রিটিশ বুলডগের মতো। তিনি খাতির করে ওদের দু'জনকে ভেতরে একটি হলঘরের মতো বড়ো ড্রইংরুমে নিয়ে গেলেন। প্রকাণ্ড বৈঠকখানা ঘরের এক কোণে সোফার উপর বিরাজমান কদাকার ব্যক্তিটিকে দেখে অরুন্ধতী বুঝতে পারলো এখানে তার স্বামীর অফিসের জেনারেল ম্যানেজার মিস্টার কামরাজও উপস্থিত আছেন।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন