Thread Rating:
  • 63 Vote(s) - 2.92 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়)
-কইগো অনিবাবু মন ভালো হলো।
ডাক্তার দাদা ঘরে পা রাখলেন।
-আরি বাবা এতো মহা আড্ডা। বসার জায়গা নেই।
-আসুননা ভেতরে ঠিক জায়গা হয়ে যাবে। ইসলাম ভাই বললো।
-আমি একা নয়।
-আ মরণ, গোঁতা মারো কেনো। বড়মার গলা।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। অনাদি বাসুর দিকে ইশারা করলো চল এখন কেটে পরি। ওরা সুর সুর করে বেরিয়ে গেলো।
-তোমরা কোথায় যাচ্ছ। ডাক্তার দাদা বললো।
-কাজগুলো একটু সেরে ফেলি।
-অনিবাবু তুমি কিন্তু একটা অন্যায় কাজ করেছো। আমার খেঁজুর রস খেয়ে নিয়েছো।
আমি মাথা নীচু করলাম।
-অনিদা একা নয়। মিলি টিনা একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলো।
-দেখছো বান্ধবী পথও আটকাবে আবার চোখও রাঙাবে।
-ও কোনো অন্যায় করেনা। বড়মা বললো।
-তুমি পারবেনা ডাক্তার। কথা বলতে বলতে দাদা ঘরে ঢুকলো। পেছন পেছন বড়মা ছোটমা নিরঞ্জনদা মল্লিকদা।
বড়মা ছোটমা আমার মুখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে। আমি এগিয়ে গেলাম। একসঙ্গে দু’জনকে জড়িয়ে ধরালাম।
-ছোট তুই এবার রাগ করতে পারবি।
ছোট আমার থুতনিটা ধরে একটু নাড়িয়ে দিয়া মাথা নাড়লো।
আমি দুজনকে ধরে নিয়ে এসে খাটে বসালাম। দাদা, মল্লিকদা, ডাক্তারদা সোফায় নিরঞ্জনদা চেয়ারে। ওরা কেউ খাটে বসলো কেউ চেয়ারে।
-হ্যাঁরে তুই যে সকাল বেলা ওদেরকে নিয়ে ওখানে গেলি, জানিস জায়গাটা ভালো নয়।
-ও গল্প আবার তোমাকে কে দিলো।
-তোর কাকা।
-কাকাকে জিজ্ঞাসা করোনি কেনো জায়গাটা খারাপ।
-তা কি করে বলবো।
-কাকা বলেছে জায়গাটা খারাপ। আমি বলছি জায়গাটা ভালো। প্রমাণ করতে পারবে ভালো কোনটা খারাপ কোনটা
-এই তুই আবার তর্ক শুরু করলি।
-কেনো ওতো ঠিক কথা বলেছে। তুমি যুক্তি দিয়ে উত্তর দাও। দাদা বললো।
 
-আবার সাউকিরি করে।
-এডিটর তুমি পারবেনা। অনি পারবে। বল বাবা বল একটু শুনি। সকাল থেকে অনেক গালমন্দ খেয়েছি।
-ওই গাছটা চিকনাদের।
-ওটা এজমালি গাছ।
-সেটা আবার কি।
-সর্ব সাধারণের।
-সে কি করে হয়।
-খাস জমির ওপর গাছ। তাই সকলের।
-খাস জমিটা আবার কি।
-খাস মানে খাস। কারুর নামে জমিটা নেই।
-তুই জানতিস।
-হ্যাঁ। না জানার কি আছে। সকলে জানে।
-চিকনা যে বললো।
-ও না জেনে বলেছে।
-ওখানে প্রচুর বিষধর সাপ আছে।
-সে থাকতে পারে। সেতো আমাদের ওই পুকুরেই আছে।
-আমি তাহলে আর পুকুরে নামছিনা। মিলি বললো।
-কেনো!
-যদি কামড়ায়।
-ওদেরও ভয় আছে। ওরা ভয় পেলে কামড়ায়। তুমি ভয় না দেখালেই হলো।
মিত্রাকে জোঁকে কামড়ালো।
-সেতো ওর জন্য।
-আমার জন্য। না ? দিলো আমার পিঠে গুঁতো।
-দেখলে দেখলে। বড়মার দিকে তাকিয়ে বললাম। তুই ওখানে কি করতে গেছিলি।
-আমি বড়মাকে বলেছি। তোর মতো চেপে যাইনি।
-বুড়ো বয়সে প্রজাপতি……
সবাই আবার হেসে উঠলো।
-হ্যাঁরে অনি আজ কাগজটা দেখেছিস।
-না।
-তোর কাগজের প্রতি কোনো টান নেই।
-কাল রাতে দেখেছি।
-তার মানে।
-সন্দীপের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জেনে নিলাম।
-কি এডিটর উত্তর পেলে। তোমার থেকে অনেক এ্যাডভান্স।
মোবাইলটা আবার ম্যাসেজের সিগন্যাল দিলো। মিত্রা ছোঁ-মেরে মোবাইলটা নিয়ে নিলো। ইসলাম ভাই ছোটমাকে সরিয়ে খাটে উঠে মিত্রার পাশে বসলো।
সবাই ওদের দিকে তাকালো।
দেবাশিষ হাসছে।
-ডাক্তারদাদা তোমায় একটা কথা বলবো।
-বল।
-তোমায় যদি কিছু চাই দেবে।
-আমার দেবার কিছু নেই। শুধু ওই বাড়িটা পরে আছে।
-আমি যা চাইবো চেষ্টা করলে দিতে পারবে।
-বল একটু শুনি।
-মিত্রার নার্সিং হোমগুলোর একটু দায়িত্ব নিতে হবে।
ডাক্তার দাদা আমার চোখে চোখ রাখলেন। সবাই আমার কথা শুনে নড়ে চড়ে বসলো। ইসলাম ভাই মিত্রা আমার মোবাইলের ম্যাসেজ গোগ্রাসে গিলছে। ছোটমা আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে।
-তোর চালটা কি দুর্দান্ত হয়েছে রে অনি। ইসলাম ভাই আমার পিঠে চাপড় মারলো।
আমি ফিরে তাকাতেই ইসলাম ভাই সরি বলে চুপ করে গেলো।
-ও আবার কি চাল দিয়েছে রে মুন্না। ছোটমা ইসলাম ভাইকে জিজ্ঞাসা করলো।
সবার দৃষ্টি এখন ইসলাম ভাই-এর দিকে। মিত্রা মাথা নীচু করে।
মল্লিকদার চোখ ছোট ছোট। নিরঞ্জনদা হাঁ করে আছে।
-না কিছুনা।
-তোরা দুজনে অনির মোবাইল নিয়ে কাড়াকাড়ি করলি।
ইসলাম ভাই মিত্রা একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে।
-আরে বাবা কিছু হয়নি। খালি তোমাদের সন্দেহ।
-তাহলে ওরকম আহ্লাদে নেচে উঠলি।
-ঠিক, ঠিক বলেছে ছোট। দাদা বললো।
আমার দিকে তাকিয়ে। কিরে আবার ওখানে গন্ডগোল পাকিয়েছিস।
-আমি কেনো পাকাতে যাবো! সামন্ত ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে। ডাক্তার দাদা আমার প্রশ্নের উত্তরটা।
-ছোট এখন থাম, ওটা পরে দেখছি। বড়মা বললো।
-তুই না ভেবে আমাকে বলছিসনা এটা আমি ভালো করে জানি। তুই কি ভেবেছিস বল।
-এই তোমার প্রশ্নের উত্তর।
-বান্ধবী তোমরা ওকে কতটুকু চেনো আমি জানিনা। তবে এই কদিনে আমি ওকে হাড়ে হাড়ে চিনেছি।
-ও ছোট সামন্ত কি বলে রে।
-তুই আমাকে নিয়ে একটা নির্দিষ্ট প্ল্যান করেছিস। তোর এই বন্ধুদের তুই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিস। তারও একটা নির্দিষ্ট প্ল্যান আছে। তুই এমনি এমনি ওদের শুধু ঘুরতে নিয়ে আসিসনি। তুই বড় সাংঘাতিক। রথ দেখা কলা বেচা দু’টোই করবি।
আমি মাথা নীচু করে রইলাম। মনে মনে বললাম ডাক্তারের পাকা মাথা। মুখ তুললাম, ডাক্তারের দিকে তাকালাম।
-তুই আমার দিকে যতই ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাক তোর চোখ বলছে, তোর মাথাটা এক লক্ষ মাইল গতিতে দৌড়চ্ছে। আমি ডাক্তার। চল্লিশ বছরে অন্ততঃ চল্লিশ লক্ষ রোগীর চোখ দেখেছি। আমাকে ফাঁকি দিতে পারবিনা।
ফিক করে হেসে ফেললাম।
-তুই আগে তোর রোগটা বল, আমি তারপর ওষুধ দেবো।
বুঝতে পারছি সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। ব্যাপারটা এরকম, শেয়ানে শেয়ানে কোলাকুলি হচ্ছে আমরা সবাই নিরব দর্শক।
 
-জানিস অনি আমরা যখন ডাক্তারী পড়ি তখন আমাদের ফার্স্ট ইয়ারে সাইকোলজি পড়তে হয়। সাইকোলজি না পরলে রুগীর মনস্তত্ব জানা যায়না। আমি ওই পেপারটাতে হাইয়েস্ট নম্বর পেয়েছিলাম।
আমি এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছি।
-আমি তোকে গল্প বলছি এরি মধ্যে তুই তোর ঘুটি সাজিয়ে ফেল। এই ক্ষমতাটা তোর আছে।
তারপর বুঝলি যখন প্র্যাকটিস করতে শুরু করলাম। তখন ওই সাইকোলজি পড়াটা কতটা উপকারে এলো বুঝতে পারলাম। এখনও আমি সময় সুযোগ পেলে সাইকোলজিটা পরি।
-তুমি ফ্রয়েড পড়েছো।
-হুঁ। তুই আরো বেশি চালাক। বড় মাছকে খেলিয়ে তোলার ফন্দি করছিস।
-হাসলাম। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি।
-যদি বলি পড়িনি।
-তাহলে ফাইল ক্লোজ।
-ফাইল তুই ওপেন করেছিস। ক্লোজ করার দায়িত্ব আমার। যদি বলি পড়েছি।
-তাহলে প্রিকনসাস মাইন্ড সম্বন্ধে তোমাকে দু’চারটে প্রশ্ন করবো।
-বুঝেছি। তুই আমাকে নিয়ে ভালো হোমওয়ার্ক করেছিস।
-তোমাকে কতটুকু দেখেছি।
-আজকে নিয়ে চারদিন।
-তুমিও আমাকে চারদিন দেখেছো।
-তাহলে উত্তরটা হচ্ছে আমি তোর সম্বন্ধে এতটা জানলাম তুই কি কিছুই জানিসনা।
হাসলাম।
-কি বান্ধবী তোমার সব মাথার ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে।
-তোমাদের কথা কিছুই বুঝতে পারছিনা।
-জীবনে অনেক মানুষ নিয়ে ঘাঁটা ঘাঁটি করেছি। তোমার অনি আমার দেখা সেরা ছেলে।
-মিলির দিকে তাকিয়ে। মামনি নীপা মাকে একটু গরম জল দিতে বলনা।
-আমার দিকে তাকিয়ে। এটা তোর কথা। কেমন সঠিক জায়গায় ইনপুট করলাম বল।
আমি মুচকি মুচকি হাসছি।
মিত্রা আমার কাঁধে মাথা রেখে ডাক্তার দার কথা এক মনে শুনছে।
-তুমি দাঁড়াও মিলিদি আমি চায়ের কথা বলে এখুনি আসছি। ফাঁকটুকু তোমার কাছ থেকে শুনবো।
নির্মাল্য বেরিয়ে গেলো।
-তাহলে অনিবাবু ফ্রয়েড, প্রিকনসাস মাইন্ড। তাহলে তুমি আমার তৃতীয় চক্ষুর হদিস পেয়ে গেছো।
সবার মুখে বিস্ময়। মল্লিকদা একটু নড়ে চড়ে বসলো।
-তুমি এই বয়সে ফ্রয়েড গুলে খেয়ে ফেলেছো, তন্ত্র নিয়ে ঘাঁটা ঘাঁটি করছো, অবশ্য তোমার বড়মার মুখ থেকে শুনলাম। তুমি অনেকদিন বাঁচবে। বাকি কি রাখলে।
-ফ্রয়েড কেনো তার ঔরসজাত সন্তানকে বিয়ে করেছিলো। সেটা জানা বাকি রয়েছে।
-তারমানে! দাদা বলে উঠলো।
-কি এডিটর কিছুই পড়াশুনো করোনা। কি করে যে এতোবড়ো কাগজের এডিটর হলে ভগবান জানে।
ইসলাম ভাই আমার ঘাড়ের কাছে উঠে এলো। যেন আমাকে গিলে খাবে।
-জানিস অনি অনেকদিন পর কথাবলার মতো একটা যোগ্য লোকের সন্ধান পেলাম। কথা বলতে না পেরে বোবা হয়ে গেছিলাম। লোকে আমাকে বলে আঁতেল। আমার নাকি নাক উঁচু। লেবেল সমান সমান না হলে কথা বলে আনন্দ নেই। বুঝলি। কথা বলে যদি আনন্দ না পাই তাহলে কথা বলবো কেনো।
সামন্ত ডাক্তার চশমাটা খুলে চোখদুটো মুছলো।
-তুই উত্তর পেয়েছিস।
-এখনও সার্চ করছি।
-উত্তর তুই পেয়েছিস আমাকে বলছিস না।
-তোমার উত্তরের সঙ্গে আমারটা মেলে কিনা দেখছি।
সামন্ত ডাক্তার এবার আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন।
-এক্সপেরিমেন্ট! তবে তিনি ফ্রয়েড বলে কথা।
-তার বাইরেও কিছু আছে।
-তোর থার্ড সেন্সটা ভীষণ প্রখর। তাই তুই এতো তাড়াতাড়ি ডিসিশন নিতে পারিস। সাধারণ লোকে বলে ম্যাজিক। বিজ্ঞানের ভাষায় প্র্যাকটিশ। এ্যাম আই রাইট?
-হুঁ।
-কলকাতায় এবং এখানে এসে মামনির কাছে তোর কিছু কিছু গপ্প শুনছিলাম। আর মনে মনে জাজ করছিলাম। তুই আমাকে এরকম একটা প্রস্তাব আজ না হোক কাল দিবি।
-কি করে বুঝলে।
-এই মুহূর্তে তোর কাছে সেকেন্ড কোনো অপশন নেই। থাকলে তুই আমাকে বাজাতিস, সরাসরি অফার করতিস না।
আমি মাথা নীচু করে নিলাম।
-সেদিন তুই ওর ষোলোটা নার্সিংহোমের মধ্যে সাতটা রেজিস্ট্রি করিয়েছিস। বাকি নটা এখনো ওর নামে আছে। সেগুলোও তুই রাখবিনা। ধ্বংস করে দিবি। বিনিময়ে কিছু টাকা খিঁচে নিলি। তাও চেকে। সাদা টাকা। তুই কি ডেঞ্জার। তুই খেলাটা কোথায় নিয়ে যেতে চাস। এরা কেউ ধরতেই পারছেনা। এরইমধ্যে তোর কাজ তুই শুরু করে দিয়েছিস। এরা এখনো কেউ ঘুণাক্ষরেও জানেনা। ধরতেও পারছেনা।
আমি সামন্তর মুখের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকালাম।
সকলে চুপচাপ। নিস্তব্ধ ঘর। পিন পরলে আওয়াজ হবে।
 
-আমি সেদিন তোকে বলেছিলাম আমি ওর রেজিস্ট্রেশন ক্যানসেল করে দেবোচেষ্টা করলে পারতাম। যখনি শুনলাম তুই থেকে যাচ্ছিস আমাদের সঙ্গে আসছিস না, তখনই বুঝলাম তুই আমাকে এর মধ্যে জড়াতে চাসনা। তুই অন্যভাবে আমার সাহায্য চাস।
আমার চোখের পলক পরছেনা।
-তুই এও প্ল্যান করে রেখেছিলি। এমন জায়গায় তুই এই কথাটা বলবি যেখানে আমি তোকে না বলতে পারবোনা।
আমি এবার মাথাটা নীচু করলাম।
-লজ্জা পাসনা, তোকে নিয়ে এদের অনেক কিউরিসিটি। আমি জানি তুই থাকতে এদের শরীরে একটা লোমও কেউ ছুঁতে পারবেনা। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার মতো তোরও কথা বলার লোক নেই।
আমি মাথা তুললাম না।
-আর আমি যে তোর প্রতি দুর্বল এটাও তুই ধরে ফেলেছিস।
আমি আবার মাথা তুললাম।
-কি করে?
-আমার কলকাতা শহরে একটু আধটু প্রসার প্রতিপত্তি আছে। লোকে বলে বড় ডাক্তার। তোর সঙ্গে আমার সেই ভাবে কোনো সম্বন্ধ নেই। এডিটরের একটা কথায় আমি গাড়িতে উঠে বসলাম!
-বুঝলি অনি সেদিনও আমি গাড়িতে উঠে বসার আগে তোর চোখ দেখেছিলাম। তোর চোখ সেদিন বলছিলো ডাক্তার তুমি বহুত ধড়িবাজ, তুমি আমার শেকড়টা দেখতে যাচ্ছ। যাও। আমি তোমাকে ওখানে বধ করবো।
-কিরে ঠিক বলছি।
আমি মুচকি মুচকি হাসছি।
-প্রিকনসাস, ফ্রয়েড উপকাহিনী মূল কাহিনী আমি বলছি। তাবলে তুই ফ্রয়েড পরিসনি একথা বলছিনা। গুলে খেয়েছিস।
তুই ঠিক খবর নিয়ে নিয়েছিস আমি মামনির গ্রুপের তিনটে নার্সিং হোমের সঙ্গে এ্যাটাচড। তাই নিজের মেয়েকে বিয়ে করতে অসুবিধে কোথায়!
-কিরে দুষ্টু তোর পেটে পেটে এত বুদ্ধি। ছোটমা কানটা মূলে দিলো।
-ওঃ ছোট ব্যাথা লাগবে।
-তোমার জন্য ও লায় পাচ্ছে। ব্যাথা ওর লাগেনি তোমার লেগেছে।
-ওই হলো।
-ডাক্তারদাদা বলে তোকে ধরতে পেরেছে আমরা সাতজন্মেও তোকে ধরতে পারতামনা।
-ছোট জানো কাল খেতে বসার পর থেকে আমি লক্ষ্য করছি, ও এখানে ফিজিক্যালি প্রেজেন্ট, মেন্টালি নয়। তোমরা ধরতে পেরেছো।
-একদম না।
-আজ সকালে এদেরকে নিয়ে ও ঘুরতে গেছে। তার মধ্যেই ও ওর কাজ সেরে নিয়েছে। এরা কেউ ধরতে পারেনি।
-ও তো আমাদের সাথেই ছিলো। দেবাশিষ বললো।
-আমি তোর প্রস্তাব গ্রহণ করবো তার আগে তোকে একটা জিনিষ এদের সবার সামনে বলতে বলবো পারবি।
-না। মঙ্গলবার জানতে পারবে। দাদা আঁচ পাবে কাল বিকেল থেকে।
-দেখছো ছেলে কতটা এক্সপার্ট দিনক্ষণ সময় বলে দিচ্ছে।
-তুই যে এখুনি বললি কিছু হয়নি। দাদা বললো।
-কিছু হয়নি তো। যাও অনেক বেলা হয়েছে। স্নান করে খেয়ে নাও।
-তুই নিরঞ্জনকে বেঁধেছিস, তুই ইসলামকে বেঁধেছিস, তুই দামিনীকে বেঁধেছিস আমি জানি তুই থাকতে এদের কেউ স্পর্শ করতে পারবেনা। সব তাস তোর হাতে। নেক্সট কে ?
নিরঞ্জনদা এতোক্ষণ চুপচাপ বসেছিলো। এবার উঠে এলো। আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। আমার কাঁধটা ধরে ঝাঁকিয়ে বললো।
-অনিমেষদা তোকে ও ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে কি কথা বললো একটু বল। আমি ভেতর ভেতর ভীষণ অশান্ত।
-কিগো তোমরা এখন চা খাবে স্নান করবেনা বেলা গড়িয়ে গেলো। নীপা ঘরে ঢুকলো।
-থাম মুখপুরি। ছোটমা বলে উঠলো।
[+] 4 users Like MNHabib's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - by MNHabib - 30-05-2022, 07:25 AM



Users browsing this thread: