27-04-2022, 10:04 AM
(This post was last modified: 27-04-2022, 10:05 AM by ddey333. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
অস্তরাগের ব্যথা
বুড়ি মরে গেল।
বুড়োটা ভাঁজ হয়ে থাকা চামড়ার মাঝে ছোট্ট বসে যাওয়া চোখখানা দিয়ে দেখলো...
কিছু জল চোখের কোণ থেকে ঝরে পড়লো।
চেয়ে চেয়ে দেখলো লোক দেখানো শোক' চললো কিছুদিন, তারপর যেন এক নাটকের সমাপ্তি ঘটলো...
তার ব্যবহৃত শাড়ি নিয়ে মেয়েদের ভাগাভাগি চললো। কেউ বালিশের কভার বানাবে, কেউ বিছানার চাদর হিসেবে ব্যবহার করবে, কেউ কানের দুল নেবে, কেউ বালা জোড়া......
সংসার থেকে যেন একটা বোঝা নেমে গেল।.
বুড়ো একা বসে বসে দেখে তাদের কাণ্ডকারখানা।
মনের বাজারে স্মৃতির দর'কষাকষি করতে করতে সেটাও একসময় বিক্রি হয়ে যায় মস্তিষ্কের কোন এক ফাঁক ফোকরে।
সংসার চলে তার নিজের ছন্দে, যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়, শুধু বুড়ো একা হয়ে পড়ে।
হাতের লাঠিখানায় ভর করে এদিক সেদিক পায়চারী করে...
সেদিন ছোট নাতনী এসে বলে গেল "দাদু দাদু, তুমি মরে গেলে কিন্তু এই লাঠিখানা আমার, আমি খেলবো.!"
এদিক থেকে বৌমা দৌড়ে আসে "দাঁড়া, তোকে আজ মেরে ফেলবো। এসব কথা বলতে নেই, বলেছি না.?”
বুড়ো হাসে...
যে বৌমার এমন শাসন সেও গোপনে প্রতিবেশীর কাছে গল্প করে বুড়োটার ভারি কষ্ট, মরে গেলেই বাঁচে।
সেদিন নাতি তার বন্ধুদের নিয়ে তার ছোট ঘরে আড্ডা দিচ্ছে আর বলছে "দাদুর অবস্থাও বেশি ভাল না। কিছুদিনের মধ্যে উইকেট পড়ে যেতে পারে। তখন ওই ঘর আমার, তখন জমিয়ে আড্ডা হবে!"
বুড়ো শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।.
দুই ছেলের মাঝে তো প্রায় দিন ঝগড়া লেগেই থাকে, বুড়ো কার কাছে ক'দিন খাবে এই নিয়ে...
বুড়োটা আজ কারো বাবা নয়, আজ কারো শ্বশুর নয়, কারো দাদুও নয়, সে আজ শুধুই এক বোঝা।.
আজ বুড়োর জন্মদিন। গত বছর বুড়িটা বেঁচে ছিল, তাও একটু পায়েস রেঁধে খাইয়েছিলো...
আজ সারাটা দিন গেল, কেউ কিছুই বললো না...কিই বা বলবে !
যার মৃত্যুর জন্য সকলে মুখিয়ে আছে, কি বা দরকার তাকে সেই জন্মের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার! অথচ কিছুদিন আগে কত লোক খাইয়ে নাতনীর জন্মদিন পালন করা হলো।
বুড়োর হিসেব টা জমা পড়ে আছে, কারণ তার মৃত্যুর পরেও তো অনেক মানুষকে খাওয়াতে হবে।
সেখানেও দুই ভাইয়ের ঝগড়া হবে খরচ করা নিয়ে, বুড়িটার বেলা তে তো তাই হয়েছিল।
বুড়ো ভাবে, কিসের এ জীবন.? কাদের জন্য এতকিছু.!
বুড়ো চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে একটু মুছে নেয়। কেমন যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে বুড়ো একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো, মনে মনে এটাই বললো,
"পৃথিবীর সব বাবা যেন বাবা হয়েই বাঁচে, বোঝা হয়ে নয়।“
লেখা --- ভারতীয় দাদা
বুড়ি মরে গেল।
বুড়োটা ভাঁজ হয়ে থাকা চামড়ার মাঝে ছোট্ট বসে যাওয়া চোখখানা দিয়ে দেখলো...
কিছু জল চোখের কোণ থেকে ঝরে পড়লো।
চেয়ে চেয়ে দেখলো লোক দেখানো শোক' চললো কিছুদিন, তারপর যেন এক নাটকের সমাপ্তি ঘটলো...
তার ব্যবহৃত শাড়ি নিয়ে মেয়েদের ভাগাভাগি চললো। কেউ বালিশের কভার বানাবে, কেউ বিছানার চাদর হিসেবে ব্যবহার করবে, কেউ কানের দুল নেবে, কেউ বালা জোড়া......
সংসার থেকে যেন একটা বোঝা নেমে গেল।.
বুড়ো একা বসে বসে দেখে তাদের কাণ্ডকারখানা।
মনের বাজারে স্মৃতির দর'কষাকষি করতে করতে সেটাও একসময় বিক্রি হয়ে যায় মস্তিষ্কের কোন এক ফাঁক ফোকরে।
সংসার চলে তার নিজের ছন্দে, যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়, শুধু বুড়ো একা হয়ে পড়ে।
হাতের লাঠিখানায় ভর করে এদিক সেদিক পায়চারী করে...
সেদিন ছোট নাতনী এসে বলে গেল "দাদু দাদু, তুমি মরে গেলে কিন্তু এই লাঠিখানা আমার, আমি খেলবো.!"
এদিক থেকে বৌমা দৌড়ে আসে "দাঁড়া, তোকে আজ মেরে ফেলবো। এসব কথা বলতে নেই, বলেছি না.?”
বুড়ো হাসে...
যে বৌমার এমন শাসন সেও গোপনে প্রতিবেশীর কাছে গল্প করে বুড়োটার ভারি কষ্ট, মরে গেলেই বাঁচে।
সেদিন নাতি তার বন্ধুদের নিয়ে তার ছোট ঘরে আড্ডা দিচ্ছে আর বলছে "দাদুর অবস্থাও বেশি ভাল না। কিছুদিনের মধ্যে উইকেট পড়ে যেতে পারে। তখন ওই ঘর আমার, তখন জমিয়ে আড্ডা হবে!"
বুড়ো শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।.
দুই ছেলের মাঝে তো প্রায় দিন ঝগড়া লেগেই থাকে, বুড়ো কার কাছে ক'দিন খাবে এই নিয়ে...
বুড়োটা আজ কারো বাবা নয়, আজ কারো শ্বশুর নয়, কারো দাদুও নয়, সে আজ শুধুই এক বোঝা।.
আজ বুড়োর জন্মদিন। গত বছর বুড়িটা বেঁচে ছিল, তাও একটু পায়েস রেঁধে খাইয়েছিলো...
আজ সারাটা দিন গেল, কেউ কিছুই বললো না...কিই বা বলবে !
যার মৃত্যুর জন্য সকলে মুখিয়ে আছে, কি বা দরকার তাকে সেই জন্মের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার! অথচ কিছুদিন আগে কত লোক খাইয়ে নাতনীর জন্মদিন পালন করা হলো।
বুড়োর হিসেব টা জমা পড়ে আছে, কারণ তার মৃত্যুর পরেও তো অনেক মানুষকে খাওয়াতে হবে।
সেখানেও দুই ভাইয়ের ঝগড়া হবে খরচ করা নিয়ে, বুড়িটার বেলা তে তো তাই হয়েছিল।
বুড়ো ভাবে, কিসের এ জীবন.? কাদের জন্য এতকিছু.!
বুড়ো চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে একটু মুছে নেয়। কেমন যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে বুড়ো একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো, মনে মনে এটাই বললো,
"পৃথিবীর সব বাবা যেন বাবা হয়েই বাঁচে, বোঝা হয়ে নয়।“
লেখা --- ভারতীয় দাদা