Thread Rating:
  • 60 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মায়া - আমরা সবাই বাঁধা যেখানে (সমাপ্ত)
পর্ব- একুশ





এসএসসি পরিক্ষা শেষ। এখন দুই মাসের লম্বা ছুটি। এরপর আবার একাদশ শ্রেণিতে কলেজ ভর্তি হবার পর সেই রুটিন জীবনে চলে যেতে হবে। আপাতত গৎবাঁধা জীবনটা থেকে কিছুদিনের জন্য মুক্তি। কিন্তু সময় কাটতে চায় না৷ এত বছরের সকাল থেকে সন্ধ্যার রুটিন জীবনটাতে মুক্তির স্বাদ আসলেও সেটার উপভোগ করার মত তেমন স্পৃহা মনে জাগে না। এরচেয়ে সেই প্রতিদিনকার কলেজ, টিউশন শেষে খেলার মাঠ সেটাই ভাল ছিল। কখন যে সারাটা দিন কেটে যেত টেরই পাওয়া যেত না। আর এখন অফুরন্ত সময় তবুও কিচ্ছু করার থাকে না।


আজ বিকেলে খেলার মাঠ থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে আসে নিলয়। সন্ধ্যায় দোলনদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ আছে৷ কিসের জন্য সেটাও জানে না। সত্যি বলতে এসব জানার আগ্রহ বেশি একটা নেই নিলয়ে। দোলন বলেছে সেজেগুজে যেতে। কিছু একটা আছে হয়তো, বিশেষ দিনের তারিখ টারিখ আবার ওর মনে থাকে না। সাদা কালো রঙের স্ট্রাইপ টিশার্ট আর জিন্স প্যান্ট গায়ে গলিয়ে দোলনদের বাড়ির দিকে যেতে যেতে সন্ধ্যা নেমে আসে। ওদের বাড়িতে গিয়ে বুঝতে পারে আজ দোলনের জন্মদিন। ওর মনটা খুঁত খুঁত করে ওঠে। ইশ দোলন যদি আগে বলতো তাহলে ওর জন্য কিছু একটা নিয়ে আসতো, বোকার মত খালি হাতে চলে এসেছে। বাসায় ঢুকতেই তৃষা দৌড়ে আসে চিৎকার করতে করতে। কাছে এসেই কোলে উঠার বায়না। লাল রঙের জামা গায়ে আর সুন্দর করে চুলে ঝুঁটি বেঁধেছে। কোলে উঠে নিলয়ের গালে হামি খায় আর ওর গালে হামি দেবার জন্য নিলয়ের দিকে বাড়িয়ে দেয়৷ নিলয় ছোট্ট করে তৃষার দুগালে হামি খায় আর পকেট থেকে চকলেট বের করে তৃষার হাতে দেয়। ওটা তৃষার জন্য আবশ্যিক। নিলয় এ বাড়িতে আসলেই তৃষার জন্য চকলেট আনতেই হবে।

-কিরে ঐ পেত্নিটা কই রে।

-দাদাভাই, তুমি দিদি কে পেত্নি বলো কেন। দিদি শুনতে পেলে তোমাকে আঁচড়ে দেবে।

-তুই না বললে জানবে কেমন করে। কি করে তোর দিদি।

-জানো দাদা ভাই দিদি না আজ অনেক সুন্দর করে সাজচ্ছে। (মুখ ভার করে) আমাকে একটু সাজিয়ে দিলো না। কত্ত সুন্দর জামা পড়েছে। জানো বাপি আমাকে নতুন জামা কিনে দিলো না। দিদি বলে বাপি নাকি আমাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছে তাই আমাকে কম ভালবাসে।

-(চোখ বড় বড় করে) দোলনের এত বড় সাহস তোকে এসব বলেছে। দাঁড়া আজ দেখবি ওকে কেমন বকা দেই। আমার ছোট্ট সোনা তোকে আমি আরও সুন্দর জামা কিনে দেব ঠিক আছে।

-(খুশিতে হাততালি দিতে দিতে) ইয়েহহ। আমি জানি তো দাদাভাই আমাকে কত্ত ভালবাসে।

-যা এখন খেলা কর তোর বন্ধুদের সাথে।

কিছুক্ষণ পর অনুষ্ঠানের মধ্যমণি বাইরের ঘরে চলে আসে। সত্যিই দারুণ সেজেছে আজ ও, একদম চোখ ফেরানো যাচ্ছে না। ক্রিম কালারের প্রিন্সেস ফ্রক গায়ে। মাথায় খোলা চুলের উপর তাজ, পিছনে রজনীগন্ধার ফুলের গাজরা। পুরো মুখ জোড়ে উজ্জ্বল মেকআপের ছোঁয়া। আইশেড আর আইলাইনারের স্পর্শে চোখ দুটো আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। গাড় লাল রঙের লিপস্টিক। আর কত সাজতে দেখেছে দোলন কে কিন্তু আজ একদম অন্যরকম লাগছে। যেন স্বর্গের কোন অপ্সরী ভুলে মর্ত্যলোকে নেমে এসেছে। পলকহীন চোখে কতক্ষণ দোলনের দিকে তাকিয়ে ছিল নিলয়ে খেয়াল নেই।

-কিরে নীলু এমন ঠ্যাব ঠ্যাব করে কি দেখছিস। কেমন লাগছে বল আমাকে।

-অপূর্ব। আজ তোকে সেই লাগছে রে৷ চোখ ফেরাতে পারছি না। আগে তো কেমন পেত্নি পেত্নি লাগতো তবে আজ লাগছে না।

-কি বললি? আমাকে পেত্নি বললি। তোকে আমি মেরেই ফেলবো।

ওদের দুটোর হাতাহাতি থেমে যায় দোলনের মায়ের ধমকে। একটু পর কেক কাটা হয়, ছবি তুলা আরও কত কি। দোলনের মা রাতে খেয়ে যেতে বলেছে নিলয়কে। নিলয় দোলনের রুমে তৃষাকে নিয়ে খুনসুটিতে মেতে আছে। কখন দোলন রুমে এসেছে ওদের সেদিকে নজর নেই।

-তর আস্কারা পেয়ে ওটা দিন দিন বাদড় হয়ে যাচ্ছে।

-(শাসিয়ে উঠে তৃষা) তুই বাদড়, তুই হনুমান তুই পেত্নি দাদাভাই বলেছে। 

-(হকচকিয়ে উঠে নিলয়) কিরে পাজি মেয়ে এটার মাঝে আমাকে টানলি কেন।

-(মেকি রাগ দেখিয়ে দোলন) তোদের দুটোকেই আমি মেরে ফেলবো। তৃষা এখন যা মা তোকে ডাকছে। (তৃষা গুটি গুটি পায়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়, নিলয়কে উদ্দেশ্য করে) নে তোর জন্য কেক আনলাম।

-তুই খেয়েছিস? 

-হুম, সবাই তো খাওয়ালো।

-তবুও আমার সাথে আরেকবার খা। 
দুজনের হুড়োহুড়িতে দোলনের মুখে কেক মেখে যায়৷ মেকাপ নষ্ট হয়ে যাওয়াতে দোলন মুখ ভার করে বসে থাকে। নিলয় টিস্যু নিয়ে এগিয়ে যায় কেক মুছে দেবার জন্য। মুছতে গিয়ে নিলয়ের হাতের স্পর্শ পড়ে দোলনের ঠোঁটে।

ঠোঁটে পুরুষালী স্পর্শে শরীর টা শিউরে উঠে দোলনের, দুখ চোখ বন্ধ করে নেয়। দু'হাতে আঁজলা করে দোলনে মুখটা উপরে তুলে এক পলকে চেয়ে থাকে নিলয়। নিজের কি হয়েছে বলতে পারে না রিমোট নিয়ন্ত্রিত রোবটের মত এগিয়ে এসে চুমো খায় দোলন কে। এর আগেও দোলন কে চুমো খেয়েছে দুষ্টুমির ছলে তবে সেটা ঠোঁটে নয়। নিজের ঠোঁটে উষ্ণ ছোঁয়াতে চোখ মেলে তাকায় দোলন৷ চোখে বারণ করার সুরের বদলে অন্য কোন সুর বাজছে। ওর ঠোঁট দুটি তিড়তিড় করে কাঁপছে। ও নিজেও জানে ওর মনে শরীরে কি চলছে। এই প্রথম কোন পুরুষ ঠোঁট ওর কোমল কমলার কোয়ার মত ঠোঁটে স্পর্শ করেছে। মস্তিষ্কের স্নায়ু গুলো ঠোঁট এগিয়ে দেবার বার্তা পাঠাতে থাকে, একটু এগিয়ে যায় দোলন। মূহুর্তের  মাঝে নিলয়ে ঠোঁট নেমে আসে ওর ঠোঁটের উপর। এবার আরেকটু গভীর ভাবে চুমু খায় নিলয়। দুজনেই সচল করতে থাকে নিজেদের। হালকা করে দোলনের ঠোঁট গুলো চুষে দেয় নিলয়। এই প্রথম কাউকে এভাবে চুমু খাচ্ছে নিলয় কিন্তু পরপর কাজ গুলো করে যাচ্ছে অভিজ্ঞের মত। একেই হয়তো বলে শরীরের প্রকৃতি প্রভাব। নিজেকে আলগা করে নেয় নিলয়। বন্ধন মুক্ত হতেই চোখ খোলে আকুতি ভরা চাহনিতে তাকিয়ে থাকে দোলন। কেন এই আকুতি, সে কি চাচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না। উষ্ণতার প্রভাবে ঘাম বিন্দু জমা হয়েছে দোলনের নাকের ডগায়। নিলয়কে সেটা যেন মন্ত্রের মত আকর্ষণ করছে। জিভের ডগা দিয়ে হালকা করে চেটে নেয় দোলনের নাকের ডগা৷
জিভের স্পর্শে নিজের শরীরে বাঁধ যেন আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে দোলনের। কি হয়ে চলেছে তার শরীরের ভেতর সেটা মুখে প্রকাশ করতে পারছে না, কিন্তু সেটা স্পষ্ট হচ্ছে চোখে মুখে পাল্টে যাওয়া অভিব্যক্তিতে। আরও শক্ত করে জড়িয়ে নেয় নিলয় দোলনকে কানের লতি, ঘাড় হয়ে আবার ফিরে আসে অমৃতসূদন ঠোঁট দুটির কাছে। ঠোঁটের সাথে জিভের কর্ষণে লালায় ভরে উঠে ওদের মুখ৷ শরীর কে কিছুই শিখিয়ে দিতে হয়, সেটাই সত্যি করতে ওদের হাতও কাজ করতে শুরু করে। নিজের বুকের উপর চাপ অনুভব করে দোলন। উত্তেজনার বশে একটু জোরেই চাপ দেয় নিলয়, মেয়েদের স্তন এত কোমল আর নরম হতে পারে সেটা কল্পনাও করেনি কখনো৷ এই প্রথম কোন পুরুষ হাতের শক্ত চাপে ব্যাথায় মুখ কুঁকড়ে উঠে দোলনের। কিন্তু সেই ব্যাথার থেকে আরও বেশি কিছু অনুভব করছে সে যেটা বলে প্রকাশ করা যাবে না কখনো। ডানহাতে বাম স্তন মলতে মলতে বা হাতে দোলনে জামা গুটাতে থাকে নিলয়। বাঁধা আসে বিপরীত পাশ থেকে তবে সেটা বাঁধা দেয়ার চেয়ে অনুমতি দেবার ভাব প্রকাশ করে বেশি৷ ফ্রকের নিজ দিয়ে হাত গলিয়ে দেয় নিলয়। দম টেনে ধরে সাহায্য করে দোলন, কেন এমন করলো সেটার উত্তর হয়তো কখনো জানা যাবে না৷ উপরে দু'জোড়া ঠোঁটের খেলা চলছে আর নিচে নিলয়ে হাত পৌঁছে গেছে দোলনের নরম অস্পৃশ্য স্তন দুটোর কাছে। স্পঞ্জ বলের মতই কোমল আর নরম দোলনের স্তন দুটি। নিলয়ের মাথা নেমে আসে বুকের কাছে ছোট্ট করে চুমু খায় দু স্তনের মাঝের গিরিখাতে।

হঠাৎ করেই কারও গলা শোনে দুজনেই চমকে উঠে। দিদি দিদি বলে এদিকেই আসছে তৃষা। এখনো ঘরে ভিতরে এসে পৌঁছায় নি সে। মূহুর্তের মাঝে নিজেদের আলাদা করে জামাকাপড় ঠিক করতে থাকে দুজনে৷ কেউ কারও দিকে তাকায়  না। তৃষা ঘরে ঢুকে

-(লাফাতে লাফাতে) মা তোমাদের খাবার খেতে ডাকছে। 

দুজনেই ঘর থেকে বের হয়ে যায়। খাবার সময়ও কেউ কারও দিকে তাকায় না৷ নিজের ভিতরে ভিতরে পাপ বোধ জাগতে শুরু করে নিলয়ের। একি করলো সে, নিজের সবচেয়ে কাছে মানুষের বিশ্বাস, ভালবাসা, আস্থা সব ভেঙে দিলো একটু খানি উত্তেজনার কাছে বশ মেনে। দোলনের কাছে নিজেকে ছোট লাগছে নিলয়ের। কোন মুখে আবার কখনো দোলনের সামনে দাঁড়াবে। কোন মতে খাবার শেষ করে বিদায় নিয়ে নিজের বাসার দিকে দৌড়াতে থাকে৷ কানে দোলন আর তৃষার গলা পৌঁছালেও পিছন ফিরে তাকাবার শক্তি বা সাহস কোনটাই হয় না নিলয়ের।



                            ----★★★----



বাসায় ঢুকতে গিয়েই কেমন একটা পোড়া পোড়া গন্ধ নাকে এলো। ভাল করে খেয়াল করতেই বুঝলো গন্ধ টা দুধ পুড়ে যাবার। ভিতরে ঢুকে তথার রুমে উকি দিয়ে দেখলো ঘর পুরো ফাঁকা। নিজের রুম বাথরুম কোথাও খুঁজে পেল না। গেল কোথায় মেয়েটা। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে গেছে, অভিমান করে যে আছে সেটা স্পষ্ট। কিন্তু যাবে কোথায়, বাইরে গেলে তো দরজায় তালা দিয়ে যেত। আর রাতে তো বাইরে যাবার কথাও না। বাইরে বেরিয়ে ছাদের এদিক ওদিক দেখতে লাগলো। হঠাৎ চোখ গেল পানির ট্যাংকের পাশে, কিছু একটা বাতাসে উড়ছে। কাছে যেতেই দেখে  ট্যাংকের আড়ালে তথা বসে আছে। ওর ওড়নাটাই বাতাসে উড়ছিল।

মেজেন্টা কালারের একটা থ্রি-পিস গায়ে৷ চুলের খোঁপায় প্লাষ্টিক ফুলের গাজরা। দু হাতে নানা রঙের কাঁচের চুড়ি৷ হয়তো কোথাও যাবার ইচ্ছে ছিল কিন্তু নিলয়ের দেরি হওয়াতে সব কিছু পন্ড। নিজের কাছেই খারাপ লাগে নিলয়ের। কিন্তু সবসময় তো সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আর আজ তৃষার আবদার ফেলার মত কোন অজুহাত নিলয়ের কাছে ছিল না। হালকা কাশি দিয়ে নিজের উপস্থিতির জানান দেয় নিলয়। শব্দ শুনেই এপাশে মুখ ঘুরিয়ে নিলয়ের দিকে তাকায় তথা৷ এতক্ষণ মুখটা দেখা যাচ্ছিলো না এদিক থেকে। এখন দেখতে পেরে বুকটা হু হু করে উঠে নিলয়ের। চোখে হয়তো কাজল দিয়েছিল কিন্তু সেই কাজল আর চোখের জল মিশে চোখের নিচ পুরো কালো হয়ে গেছে। মুখ জুগে কালো মেঘের ছায়া।

-(টিটকারি স্বরে) এ মা কখন এলে। আজ এতো তাড়াতাড়ি এসে গেলে যে। কাজ শেষ হয়ে গেছে বুঝি।

-(ক্ষমা প্রার্থীর মত) প্লিজ রাগ করে থেকো না। আসলে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম তো।

-হ্যাঁ হ্যাঁ আপনি অনেক ব্যস্ত মানুষ সেটা আগেই আমার বোঝার উচিত ছিল। আমার আর কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই তাই এত কাজ টাজ বুঝি না।

-আচ্ছা, মানছি তো অন্যায় হয়ে গেছে। আর এমন হবে না। এখন ঘরে তো চলো।

-(গোমড়া মুখে) এমনটা হবার আর সুযোগই কখনো আসবে না।

-সে পরে দেখা যাবে। এখন বলো তো কেন তাড়াতাড়ি আসতে বলেছিলে।

-এমনি। আমার ঘাঁট হয়েছে আর কোনদিন বলবো না। 

-আচ্ছা সেটা না হয় বুঝলাম। ঘরে দুধ পোড়ার গন্ধ কেন, কি করতে গিয়েছিলে।

-পায়েস বানাতে গিয়ে দুধ উপচে চুলায় পড়ে গিয়েছিল।

-পায়েস বানানোর কি দরকার পড়লো আবার। আর তুমি শিখলে কোথায়।

-ইউটিউব দেখে। আজ তোমার জন্মদিন তাই তোমার জন্য বানাতে চেয়েছিলাম।

-(মিথ্যে ভান করে) ও মা তাই নাকি। আজ আমার জন্মদিন একেবারেই মনে নেই। আহারে আগে বলবে তো।

-মিথ্যা বলো না। তোমার জন্মদিন তুমি জানবে না।

-সত্যিই জানি না। জানলে তো ঠিক আগে ভাগে চলে আসতাম। এখন ঘরে তো চলো পায়েস খাওয়াবে না।(তথার হাত ধরে টেনে তুলে ঘরে দিকে যেতে লাগলো)

নিজের রুমে জামাকাপড় চেঞ্জ করছে তখনি তথা এসে একটা প্যাকেট এগিয়ে দেয়।

- এটা পড়ে নাও।

-কি এটাতে?

-(শাসিয়ে উঠে) এত প্রশ্ন ভালো লাগে না। খুলে দেখতে থাকো।

প্যাকেট খুলে ভিতর থেকে ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবি টা বের করে আনে নিলয়।

-এসবের কি দরকার ছিল।

-এত কথা বলতে পারবো না। ইচ্ছে হয়েছে এনেছি। পছন্দ হলে পড়ো নইলে ফেরত দিয়ে দাও।

-সবসময় এমন রেগে আগুন হয়ে থাকলে চলে, তাপে পুড়ে যাচ্ছি তো। পছন্দ হবে না কেন, অনেক সুন্দর হয়েছে। আমার পছন্দ হয়েছে।

-সত্যি তো?

-হুম। তিন সত্যি। (তথার মাথায় হাত রেখে) তোমার দিব্যি 

- হু এটাই তো চাও যেন আমি যেন মরে যাই। এখন আর এত ভাব দেখাতে হবে না। ফ্রেশ হয়ে পাঞ্জাবি টা পড়ে বাইরে আসো।

নিলয় ফ্রেশ হয়ে গায়ে পাঞ্জাবি গলিয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে। এর মাঝে তথা মুখটা ধুয়ে হালকা চুল আঁচড়ে বাইরের ঘরে বসে আছে। মেজেন্টা কালারে জামাটা দারুণ মানিয়েছে তথার গায়ে। এখন অনেক ফ্রেশ লাগছে অনেক। নিলয় আসতেই একটা চেয়ারে বসে বলে। প্রথমে ধান দুর্বা দিয়ে নিলয়ের মাথায় হাত রেখে বিড়বিড় করে কি যেন বলে গেল। তারপর প্রদীপের আগুনের তাপ নিয়ে ওর কপালে আর বুকে ছুয়ে দেয়। শেষে চামচে করে পায়েস তুলে দেয় নিলয়ের মুখে। পায়েস টা মুখে নিতেই চোখের কোন ভিজে উঠে নিলয়ের। মায়ের কথা মনে পড়ছে। শেষ কখন মাকে দেখেছিল মনে পড়ে না। প্রতি জন্মদিনে মা ঠিক এভাবেই ধান দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করতো, প্রদীপের তাপ দিতো শেষে পায়েস খাওয়াতো। মায়ের জন্য ভিতরটা কেঁদে উঠছে।

-কি হলো, কাঁদছো কেন। কিছু হয়েছে কি, পায়েস টা ভাল হয় নি মনে হয়। কিছু ভুল করে ফেলেছি?

-না না। সব ঠিক আছে, মায়ের কথা মনে পড়ছে তো তাই। তা তুমি এত কিছু জানলে কি করে, সেই ইউটিউব দেখে?

-ওটাই শেষ ভরসা। 

-পাগলী একটা। চলো আজ বাইরে কোথাও খাবো। 

-(আনন্দের ছটা পুরো মুখ জুড়ে) সত্যি?

-আমার সব কথা মিথ্যে মনে হয় বুঝি।

-না না। চলো আমি রেডি।

একটা রেস্টুরেন্টে খেতে বসেছে ওরা দুজনে। আজ তথার পছন্দসই সব খাবার ওর্ডার করেছে নিলয়। তথার হাসি খুশি মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। মায়া ধরে যায় ওকে এভাবে দেখলে। তথা খেয়াল করছে নিলয় ওভাবে একদৃষ্টিতে দেখছে। ওর কাছে ভাল লাগে নিলয়ের এই চাওনি টা।

-আগামীবার তোমার জন্মদিনে আমি হয়তো থাকবো না

-এখন এসব বলছো কেন। সুন্দর সময়টাকে নষ্ট করার কি দরকার। ওটা নিয়ে পড়েও ভাবা যাবে। এখন একটু হাসো।

-(হাসির ভাব এনে) সব তোমারি হাতে।

শুধু মাথা নাড়ায় নিলয়। রেস্টুরেন্টে চারদিকে নানা রঙের নানা ধরণের বাতি জ্বলছে। এসির জেট এয়ার টা মাঝে মাঝে শরীরে কাঁপন ধরিয়ে যায়৷ নানা ধরণের কাগজের নকশা করা দিয়ে সিলিং আর সাইড ওয়াল ডেকোরেশন টা চোখের খিদে মেটায়। কয়েকটা চুল অবাধ্যের মত বারবার মুখের সামনে এসে বিরক্ত করে চলেছে তথাকে। নিলয় চুল গুলোকে কানের পিছনে গুঁজে দেয়। তথার চোখে মুখে এক প্রশান্তির ঢেউ বয়ে যায়। মুখে কিছু বলে না, তবে শান্ত দুই চোখ অনেক কিছুই বলে যায়।

Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মায়া - আমরা সবাই বাঁধা যেখানে - by nextpage - 25-04-2022, 10:58 PM



Users browsing this thread: 21 Guest(s)