Thread Rating:
  • 37 Vote(s) - 2.95 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller আউট অফ কলকাতা
#62
(16-04-2022, 08:30 PM)Anuradha Sinha Roy Wrote:
পর্ব ১৫


"ইট ইস টাইম তিস্তা, এই একাউন্টটাকে উপযুক্ত ভাবে ব্যবহার করার সময় এসে গেছে", তিস্তার দিকে  তাকিয়ে ঠাণ্ডা গলায় বলে উঠলেন পাণ্ডে-জি, আর ওনার মুখ থেকে সেই কথা শোনামাত্রই, তিস্তা নিজের মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাল আর সেই সাথে শুরু হল ওদের টাকার খেলা। পরবর্তী তিরিশ মিনিটের জন্য পাণ্ডে-জি ও তিস্তা, দুজনেই খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ল| তারা নিজেদের বিভিন্ন বৈধ, অবৈধ একাউন্টস, শেয়ারস, সোর্সেস থেকে সব ধনদৌলত, টাকা পয়সা সরিয়ে পাণ্ডে-জির সেই ডিএনএ প্রোটেক্টেড একাউন্টে ট্রান্সফার করতে আরম্ভ করল| আর প্রায় চোখের নিমেষের মধ্যে, কোটিকোটি টাকা বিশ্বের এক দিক থেকে আরেক দিক যেতে লাগলো আর সেই সাথে সেই একাউন্টে এসে সব জমা হতে লাগল |   

এরই মধ্যে পাণ্ডে-জি-র অনুমতি নিয়ে দীপা আর রুদ্র ওনার অফিসের চারিদিকটা ঘুরে দেখতে লাগলো। দীপার ছোটবেলা থেকেই বই পরার খুব সক ছিল, কিন্তু সে সব ইচ্ছে যুদ্ধের কারণে একদম শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে আজকে, পাণ্ডে-জির অফিসের ডেস্কের পাশে রাখা, সেই বিরাট বুক কেসটা দেখতে পেয়ে নিজের লোভ সামলাতে পারল না দীপা। সে অধীর আগ্রহে আস্তে আস্তে সেই দিকে এগিয়ে গেল। বুক কেসের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই সে দেখল যে, সেই বুক কেসের মধ্যে অজস্র নানান ভাষার বই সাজানো। তবে, সেই বইগুলর উপর জমে থাকা ধুলোর মোটা আবরণ থাকতে দেখে সে বুঝল যে সেগুলো পড়ার কোনও পাঠক ছিল না সেখানে |    

"তিস্তা, এই বুক কেসটা আমি খুলতে পারি কি?" দীপা বলে উঠল। 


ওইদিকে, দীপার সেই প্রশ্ন শুনে তিস্তা সামনের মনিটর থেকে নিজের চোখ তুলে বলল, "মমম...শিওর", তবে ওর সেই 'শিওরে' কিছুটা দ্বিধা থাকার বোধ করলো দীপা আর তারপর হঠাৎই সে আবার বলল, "শিওর, হয়াই নট...কিন্তু আজ নয় দীপা। মেবি অন্য কোনও সময়, অন্য কোন দিনে..." 

সেই শুনে দীপা নিজের মাথা নাড়িয়ে এবার ওদের দিকে তাকাল। তাকাতেই দীপা লক্ষ্য করে দেখল যে তিস্তা এবং পাণ্ডে-জি দুজনেই বেশ উত্তেজিত হয়ে তাদের কাজ করছিল । ওদের দেখে মনে হচ্ছিল যেন ওরা খুব চাপের মদ্ধে রয়েছে। ' কিসের এত চাপ ওদের কে জানে ?' দীপা নিজের মনে মনে বলে উঠেছে কি ওঠেনি, এমন সময় ওরা দুজনেই হঠাৎ একসঙ্গে চিৎকার করে উঠল। তবে সেই চিৎকার দুঃখের নয়, আনন্দের, উল্লাসের | 

"ওহ গ্রেট!" পাণ্ডে-জি চিৎকার করে উঠলেন আনন্দে, "আমরা শেষ পর্যন্ত এটা করতে পেরেছি..." 


"ওহ ইয়াস, বস," তিস্তাও চেঁচিয়ে উঠল আর তার সাথে সাথে হাততালি দিয়ে উঠল। তিস্তাকে সেই ভাবে নিজের চরিত্র থেকে বেরিয়ে এসে, বাচ্চাদের মতন হাততালি দিয়ে উঠতে দেখে রুদ্রর খুব হাসি পেল। তবে এবার দীপা আর রুদ্র দুজনেই কোন কিছুর প্রত্যাশায় ওদের দিকে তাকাল, আর পাণ্ডে-জিও তাদের হতাশ করলেন না। 

"এই প্রসেসটার ব্যবস্থা করার জন্য দীপা আর তোমাকে...মানে রুদ্রকে আমি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাতে চাই, ফ্রম নাও অন, আমি আমার সব ধনদৌলত আমার নিজের সাথে নিয়ে যেখানে ইচ্ছা যেতে পারবো, তাছাড়া এটা এত সিকিউর, তার মানে বুঝতে পারলে কি তোমার?"


"কি...পাণ্ডে-জি?" দীপা আর রুদ্র এক সঙ্গে বলে উঠল। 


"এর মানে? এর মানে...হা...হা..হা...এর মানে আমরা এই জাহান্নামের থেকে বেরিয়ে পৃথিবীর যে কোনও জায়গায়, যে কোনও দেশে গিয়ে নিজেদের মতন বাঁচতে পারবো"


"তার মানে, আপনি এখান থেকে চলে যাবেন? ইউ উইল বে আউট অফ কলকাতা সুন ?" রুদ্র প্রশ্ন করে উঠল। 


"ওহ ইয়েস মাই বয়...আর সেই ব্যাপারে তোমাদের দুজন ছাড়া আর কেউ জানবে না" পাণ্ডে-জি বলে উঠলেন ।দীপার আতদিনের আন্দাজই যে সম্পূর্ণ সঠিক, সেটা এইবার পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পাড়ল রুদ্র। তবে ওইদিকে, দীপার মগজে অন্য একটা খেলা চলছিল।    


"পাণ্ডে-জি, ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড...আমরা কি আপনাদের সঙ্গে আসতে পারি?" হ্যাঁ, লোহা গরম থাকাকালীন তাতে ঘা মাড়া যে সব থেকে সোজা সেটা দীপা জানত, তাই সে সরাসরি এই অনুরোধ করে বসলো।


"ওহ ইয়াস, নিশ্চই..নিশ্চই মাই ডিয়ার," এক কথায় রাজী হয়ে দীপার উদ্দেশে বলে উঠলেন পাণ্ডে-জি, "তোমাদের এখানে ফেলে যাওয়ার, আমাদের কোনও ইচ্ছা নেই আর সেকেন্ডলি, তোমারদের কি মনে হয় যে আমাদের ব্যাপারে এত কথা জানবার পর আমরা তোমাদের এখানে ফেলে রেখে চলে যাব? দ্যাটস নট এন অপসন ফর আস দীপা..."  


"তাহলে...কবে? কখন, কিভাবে?" উত্তেজিত হয়ে প্রশ্ন করে উঠল দীপা। 


"শীঘ্রই, তবে আমাদের এই ব্যাপারে এতটা জানার পর তোমাদের, আমারা ছেড়ে দিতে পারব না। আই মিন টু সে, যতদিন না আমাদের এখান থেকে যাওয়ার দিন আসছে, ততদিন তোমাদের এখানেই থাকতে হবে । আমাদের যাওয়ার দিন আসা না পর্যন্ত তোমরা কেউ এই বিল্ডিং থেকে বেরোতে পারবে না" শক্ত গলায় বলে উঠলেন পাণ্ডে-জি। 


পাণ্ডে-জির মুখে এই কথা শুনে আর তার সেই নো ননসেন্স অ্যাটিচিউড দেখে দীপা আর রুদ্র দুজনেই প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেল। পাণ্ডে-জিকে যতই ভালো মানুষ বলে মনে হোক না কেন, আসলে তো উনি মাফিয়া, তাই ভয়ে ভয়ে রুদ্র বলে উঠল, "তার...তার মানে আমরা আজ থেকে এখানে বন্দী থাকব? উই আর প্রিসনার্স?" 


"ওহ নো...মাই বয়! আবসোলিউটলি নট," পাণ্ডে-জি রুদ্রকে আশ্বস্ত করে বলে উঠলেন, " তোমরা আমাদের এত সাহায্য করলে আর সেই তোমাদের কেই কি ভাবে আমি বন্দি করে রাখি বলতো? তোমরা এখানে থাকবে ঠিকি, কিন্তু বন্দি হয়ে নয়, এই ফাইভ স্টার হোটেলের গেস্ট হয়ে। যতদিন না...." তবে পাণ্ডে-জিকে নিজের কথা শেষ না করতে দিয়ে দীপা শার্পলি বলে উঠলঃ      


"তবুও...আপনার আন্দাজে আরও কতদিন লাগবে, পাণ্ডে-জি?" 


"দ্যাখো দীপা, তুমি নিজে একটা একাউন্টেন্ট, তাই আশা করি তুমি সব কিছুই বুঝতে পাড়ছ। এখন যেহেতু আমার পুরো মানি মার্কেটটা পোর্টেবল, মানে ওটাকে আমার যেখানে ইচ্ছা এক্সেস করতে পারবো তাই আমাদের আর বেশি দিন লাগার কথা নয়, তবে তার আগে আমার অনেক কাজ বাকি...কিন্তু, কিন্তু, কিন্তু, এখন আমাদের এই সব নিয়ে আলোচনার করবার সময় নয়। এখন আমাদের এনজয় করার সময়, এই রাতে আমরা আমাদের এই সাকসেসের পার্টি করবো "  


"রাইট ইউ আর ,বস!" পাশ থেকে হঠাৎই বলে উঠল তিস্তা, "আর দীপাদি, তোমরা যদি ফ্রেশ হতে চাও, তোমাদের জন্য একটা লাক্সারি স্যুট রেডি করে রেখেছি আমরা " বলে করিডরে বেরনোর দরজার দিকে ইশারা করল তিস্তা।


আর ঠিক সেই মতই আধ ঘণ্টা পরে, ওরা চারজন মানে পাণ্ডে-জি, তিস্তা, দীপা আর রুদ্র, পাণ্ডে-জির সেই বিরাট লাক্সারি লাউঞ্জে নিজেদের পার্টি আরম্ভ করল আর তাদের জন্য তাদের সামনের টেবিলে বিভিন্ন সব পছন্দসই খাবার আর বিদেশি মদে ভোরে উঠলো। সেই বিলাসবহুল লউঞ্জের চারদিকে রাখা ছিল সব বিশাল বিশাল আরামদায়ক সোফা আর তাতে বসেই কথাবার্তা গল্পগুজব করতে লাগলো ওরা | পাণ্ডে-জি সূক্ষ্ম, সাদা, হাফ হাতা কুর্তা পড়ে বসে ছিলেন আর তার পাশেই বসেছিল দীপা। সে নিজের হাতের লম্বা কাঁচের মগ থেকে হোয়াইট ওয়াইনে চুমুক দিতে দিতে গল্প করতে লাগল | অন্যদিকে আরেকটা সোফাতে একে অপর কে সঙ্গ দেওয়ার জন্য বসেছিল তিস্তা আর রুদ্র । ওরা রামের সাথে কোলা মিশিয়ে খাচ্ছিল| ওদের দুজনকে দেখে মনে হতে লাগল যেন একে ওপরের সঙ্গকে তাদের বেশ ভাল লেগেছে বলে, আর সেটা লাগারই কথা। নিজের সমবয়সী কাউকে পেলে সবারই ভালো লাগে।  

"এই নাও...এটা টেস্ট কর, খুব ভালো খেতে এটা, দেখো" বলে সিক কাবাব থেকে একটা পিস বের করে রুদ্রর মুখে ঢুকিয়ে দিলো তিস্তা |


"আরে....মমম..বাহ্, সত্যি হেব্বি তো এটা.....উফফ কত বছর পর যে মাংস খাচ্ছি.. এই টুমিও...টুমিও খাও....প্রিজ" বলে নিজেও এবার তিস্তার মুখে একটা পিস ঢুকিয়ে দিলো রুদ্র ।  


"আচচ্ছা...রুদ্র, যুদ্ধের আগে তুমি কোথায় থাকতে?" কাবাবের পিসটা খেতে খেতে হঠাৎ করে সেই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে বসলো তিস্তা। 


"যুদ্ধ...? মানে..কোন...ওহ আচ্ছা.." বলে থমকে দাঁড়ালো রুদ্র, তারপর একটু ভেবে আবার বলে উঠলো "আমা...আমার ওই ব্যাপারে কিছু মনে নেই", সেই বলে নিজের মাথা নামিয়ে মেঝের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো ও | সত্যি, সেই ব্যাপারে তার কিছুই মনে নেই, তবে হ্যা্‌ ওর সেই মুহূর্তর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে যখন ও প্রথমবারের জন্য দীপাকে খুঁজে পেয়েছিলো |   
 

"দীপা, তুমি আজকে আমার অনেক বড়ো হেল্প করেছ", পাণ্ডে-জি বলে উঠলেন, "তবে, এবার আমার তার থেকেও বড়ো একটা হেল্প দরকার আছে তোমার কাছ থেকে..." 


"হ্যাঁ নিশ্চই, পাণ্ডে-জি....বলুন আমাকে..." তবে পাণ্ডে-জি নিজের সেই আবদার করে বসার আগেই তিস্তা ঘুরে জিজ্ঞাসা করলো, "তোমাদের মধ্যে কি কেউ সিনেমা দেখতে চাও?" 


"হ্যাঁ নিশ্চই..হোয়াই নট? কতদিন কোনও থিয়েটারে সিনেমা দেখিনি... তবে, কি সিনেমা আছে তোমার কাছে?" দীপা বলে উঠল।   


"এনিথিং...এভ্রিথিং ইউ উইশ ফর দীপা দি। এটা একটা প্রিমিয়াম অনলাইন স্ট্রিমিং সার্ভিস, তাই..." তিস্তা বলে উঠল। 


"ওহহহ! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে, এখানে আলট্রা হাই স্পিড ইন্টারনেট কানেকশান আছে আর তাই কোনও ব্যান্ডউইথ ইস্যুও নেই" পাস থেকে রুদ্র বলে উঠল । 


"একদম তাই...কিন্তু রুদ্র, তোমার একটু আগে কি হয়েছিল বল তো? একদম ওইরকম ভাবে চুপ করে গিয়েছিলে কেন "? তিস্তা বলে উঠল, কিন্তু তিস্তার সেই প্রশ্নকে এরিয়ে গিয়ে রুদ্র বললঃ 
 

"তোমার কাছে কি...কি সিনেমা আছে সেটা বল না..." 


"আরে ওই যে বললাম, সব কিছুই...তবে এই সিনেমাগুলো সাধারণ ভার্সনে নেই" তিস্তা বলে উঠল। ওইদিকে  তিস্তার কথার সেই হেঁয়ালি বুঝতে না পেড়ে দীপা বললঃ

"মানে ? সাধারণ ভার্সনে নেই, তো কি অসাধারণ..." 


"একদম তাই!" দীপাকে নিজের কথা শেষ করতে না দিয়ে উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল তিস্তা, "এই মুভিগুলো সব থ্রিডি হলোগ্রাম ভার্সন" 


"ওরে শালা!! আমি এটার ব্যাপারে আগে শুনলেও, রিয়েল লাইফে দেখার কোনও সৌভাগ্য হয়নি...তবে আমি শুনেছি যে, এটা দেখলে মনে হয় যেন সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আমাদের ঘরের মধ্যে দিয়েই হেটে চলে বেড়াচ্ছে"


"হ্যাঁ...তবে এবার কি চালাবো বলও?" তিস্তা বলে উঠল। 


"মমম...ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড, কিছু রগরগে গা গরম করা সিনেমা চালাও...মানে ওই বেসিক ইনস্টিংক্টর মতন" দীপা হঠাৎ বলে উঠল। 


"ওঃ ইয়েস, চলো লেটস ওয়াচ দ্যাট" এই বলে রুদ্র উৎসাহে চেঁচিয়ে উঠল আর তার সেই উৎসাহ দেখে দীপা হেসে উঠল ।

বাহঃ খুব চমৎকার এগুচ্ছে ,,, খুব ভালো লাগলো ,,, খুব শীঘ্রই মনে কোলকাতা থেকে বের হচ্ছে মনে দীপা আর রুদ্র। পরের আপডেট এর অপেক্ষা করছি
[+] 1 user Likes Shoumen's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আউট অফ কলকাতা - by Shoumen - 18-04-2022, 02:17 AM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)