15-04-2022, 07:47 PM
পর্ব- এগারো
টেস্টের রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলেছিল জন্ডিস এর লক্ষণ। কিছু দিন পুরোদমে রেস্ট নিতে বলেছিল আর সাথে পুষ্টিকর খাবার, ফলমূল, শাক-সবজি বেশি করে খেতে বলেছিল। কিন্তু সেলসে কাজ করে যারা তাদের দম ফেলার জোঁ থাকে না। বিশ্রাম নিবে কি উল্টো গত পনের বিশ দিন ধরে খুব চাপ যাচ্ছে নিলয়ের উপর দিয়ে। হঠাৎ করেই মার্কেটে সেলস খুব ডাউন। সেটা নিয়ে প্রায়ই কথা শুনতে হচ্ছে টিএসএম এর কাছে। মাঝে মাঝে কিছু অকথ্য ভাষার গালিগালাজ পর্যন্ত শুনতে হয়। এই চাকরিতে এটা রেগুলার ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। টার্গেট মিস হচ্ছে কেন, সেলস বাড়ছে না কেন এসবের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে নিলয়।
মাস গেলে যে বেতন টা কোম্পানি দেয় তার চেয়ে দ্বিগুন পরিশ্রম করিয়ে নেয়। এমাসের শুরু থেকেই বৃষ্টি হয়ে চলেছে। বৃষ্টিতে এম্নিতেই দোকানে বেচাকেনা কমে যায় তার সাথে আবহাওয়া একটু ঠান্ডা হলে তো বেভারেজ পণ্যের চাহিদা একদম কমে যায়৷ মার্কেটে চাহিদা না থাকলে সেলস আসবে কোথা থেকে। সেটাই বুঝতে চায় না অফিসার গুলো, তাদের ঐ এক কথা সেলস বাড়াও সেলস বাড়াও। মেজাজ টা খুব বিগড়ে আছে কিছুদিন ধরে এ নিয়ে।
এদিকে তথার সাথেও আর ঐ বিষয়টা নিয়ে কথা বলা হয়নি৷ বলার সময় সুযোগ দুটোই হয়ে উঠে নি। এমনিতেই শরীরটা ঠিক চলছে না তার উপর মার্কেটের অবস্থা খারাপ, সেটা নিয়ে টেনশনে সারাদিন পর বাসায় ফিরে আর কথা বলতে ইচ্ছে করে না। খেয়ে দেয়ে মরার মত ঘুমাতে চলে যায় নিলয়। ভাবছে কথা টা না বললেই নয়। ওর এ মাসের টিউটোরিয়াল রেজাল্ট টা খারাপ হয়েছে সেটা কলেজ থেকে জানিয়েছে, সেই সাথে প্রায়ই খবর নিয়ে জানতে পারে টিউশন মিস দিচ্ছে তথা। ব্যাপার টার একটা বিহিত করতে হবে শীঘ্রই। নইলে নিজের ভবিষ্যৎ টা নষ্ট করবে মেয়েটা।
সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়ে চলেছে। সাথে ধমকা বাতাসের ঝাঁপটা, তাই ছাতা থাকা সত্ত্বেও ভালই ভিজে গেছে শরীরটা। না এভাবে ভিজে গায়ে সকাল থেকে কাজ করে চলেছে, এবার না আবার ঠান্ডা জ্বরে ভুগতে হয় কে জানে। ওসব ঠান্ডা-জ্বর নিয়ে যতটা না চিন্তা তার চেয়েও বেশি চিন্তা দোলন কে নিয়ে। ও যদি জানতে পারে বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর এসেছে তবে আর রক্ষে থাকবে না। বকবকানি আর শাসনে আরও জীর্ণ হয়ে যাবে নিলয়। শেষ বিকেলের দিকে বৃষ্টির বেগ বাড়তে থাকে, তাই নিলয়ও বাসায় চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। সারাদিনের ভিজে যাওয়া শরীরটাতে হালকা কাঁপুনি আসতে শুরু করেছে। এর মাঝেই দোলনের ফোন এসেছিল। বৃষ্টিতে যেন গা বাচিয়ে চলে সেটার জন্য সাবধান করে দিয়েছে। কিছু একটা বলে এবারের মত ওকে শান্ত করেছে নিলয়।
বাসায় ফিরতে ফিরতে সেই সন্ধ্যা হয়ে গেল। দরজার তালা খুলে নিজের রুমে গিয়ে ভিজে জামাকাপড় চেঞ্জ করে বাথরুমে চলে যায় নিলয়। ফ্রেশ হয়ে চা বসাতে যাবার আগে ঘড়িতে সময় দেখে, এতক্ষণে তো তথার চলে আসার কথা। বৃষ্টিও বাড়ছে কিন্তু এখনো তথার আসার নাম নেই। চা করতে করতে দু-তিনবার ফোন করেছে ওর মোবাইলে। রিং হয়ে চলেছে কিন্তু রিসিভ করছে না। কোথায় আছে কে জানে, বৃষ্টিতে কোথাও আটকে গেল কিনা কে জানে। নিলয় ভাবে একবার বের হয়ে দেখবে কিনা। ও ভাবে হয়তো টিউশনে আটকে গেছে, ওখানে একবার ফোন করে দেখা দরকার। টিউশনে ফোন করে নিলয়, কিন্তু স্যার আজ টিউশন পড়ায় নি। কি কাজে স্যার শহরের বাইরে আজ পড়াবে না সেটা আগেই বলে দিয়েছিল। তাহলে কোথায় গেল মেয়েটা। হয়তো ওর ঐ বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে গেছে, সে যেখানে খুশি সেখানে যাক। ভাল লাগে না এসব, এমনিতেই নিজের কাজ নিয়েই মেজাজ বিগড়ে আছে- ভাবতে থাকে নিলয়।
চা খেয়ে নিজের কাজ নিয়ে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু কিছুতেই মন বসাতে পারছে না। না এবার বেশিই চিন্তা হচ্ছে নিলয়ের। রাত হয়ে গেল, বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া দিচ্ছে৷ না আর বসে থাকলে হবে না, নিচে নেমে আসে পাশে একটু দেখা আসা দরকার- মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় নিলয়। অন্যদিকে ফোন করে চলেছে, এবার আর কল ঢুকছে না, নাম্বার বন্ধ দেখাচ্ছে। হাতে ছাতা নিয়ে বের হতে যায় ও, তখনি খেয়াল করে ঘরে দিকে আসছে তথা।
বৃষ্টির জলে পুরো ভিজে জবজবে হয়ে আছে। জামাকাপড় লেপ্টে আছে শরীরে সাথে। শরীরের লোকায়ত অঙ্গ গুলো ভিজে কাপড়ের উপর থেকে স্পষ্ট জানান দিচ্ছে। বুকের দিকের ওড়নাটা হয়তো বাতাসে সরে গিয়েছে। ভিজে যাওয়া জামা চেপে বসেছে ওর মাঝারী আকারের স্তনের উপর, ভিতরের ব্রা এর উপস্থিতি দৃশ্যমান। ভিজে শরীরের কাঁপুনি তে তথার সৌন্দর্যে যেন প্লাবন এসেছে। যে কোন পুরুষের নজর কারার জন্য এই মূহুর্তের কোন তুলনা নেই।
কিন্তু নিলয়ের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ঘরের ভিতরে আসতেই তথাকে জিজ্ঞেস করে।
-কোথায় ছিলে এতক্ষণ? আর ছাতা কোথায় তোমার?
-(ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে) টিউশনে ছিলাম। ছাতাটা ভুলে ওখানেই ফেলে এসেছি।
-(প্রচন্ডভাবে রাগান্বিত স্বরে) মিথ্যে বলছো কেন? আজ তোমার টিউশন ছিল না। কি মনে কর আমি কোন খবর রাখি না?
-(ভয়ে কেঁপে উঠে মাথা নিচু করে নেয় তথা)
-তুমি কি ভেবেছো তুমি, আমি ঘাসে মুখ দিয়ে চলি। সব খবরই রাখি তোমার আমি। টিউশনের কথা বলে ঐ ছেলেটার সাথে ঘুরতে গিয়েছিলে তাই না। তা ওখানে থেকে গেলেই পারতে। এই বৃষ্টিতে আসার কি দরকার ছিল।
কোন উত্তর দেয় না তথা।
-কদিন ধরেই দেখছি তোমার হাবভাব। লেখাপড়াতে মন নেই, টিউশনে ফাঁকি দিচ্ছ। নিজের অবস্থা কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ভেবে দেখেছো তুমি। এ মাসের কলেজের টিউটোরিয়াল পরিক্ষার রেজাল্ট কত ড্রপ করেছে তোমার সেদিকে কোন লক্ষ্য আছে তোমার?? মাস ছয়েক পর ফাইনাল পরিক্ষা সেসবের চিন্তা আছে কি? নাকি সব ধ্যান জ্ঞান এখন ঐ ছেলে কে ঘিরে। উত্তর দাও ( চিৎকার করে)
-(কাঁপতে থাকে তথা ঠান্ডা আর ভয় দুটোতেই, হয়তো কাঁদছেও কিন্তু ভিজে চুলের ফোঁটা ফোঁটা জলের আড়ালে চলে যাচ্ছে চোখের জল)
-কথা বলছো না কেন? তুমি কি নিজের আর স্যারের স্বপ্নের কথা ভুলে গেছ?? আমার তো তাই মনে হয়। লেখাপড়া ছাড়া আর সবকিছুই তোমার ঠিক মত চলছে। তোমার যদি এটাই ইচ্ছে হয় তাহলে সেটা তোমার ব্যাপার। কিন্তু এসব আমার এখানে থেকে চলবে না। সবটাই তোমার উপরে নির্ভর করছে। তুমি চাইলে এখান থেকে চলে যেতে পারো৷ আমি আটকে রাখবো না। তুমি তোমার ইচ্ছে স্বাধীন মত চলো কোন সমস্যা নেই। চাইলে ঐ ছেলের কাছেও চলে যেত পারো, আমি গিয়ে দিয়ে আসবো।
ঠকঠক করে কেঁপেই যাচ্ছে তথা৷ ঠান্ডায় ঠোঁট গুলো কালচে হয়ে গেছে, চোখ দুটো লাল বর্ণ ধরে গেছে। ঐদিকে নিলয়ে চিৎকারে আরও গুটিয়ে যাচ্ছে সে।
-যাও রুমে যাও এখন, গিয়ে চিন্তা করো কি করবে তুমি। এখন জামা কাপড় চেঞ্জ করে নাও, না হলে আবার জ্বর বাঁধাবে। (উঁচু স্বরে) যাও চেঞ্জ করো গিয়ে, আমি চা করে দিচ্ছি।
জবুথবু হয়েই রুমে ঢুকে যায় তথা। নিলয় চলে যায় চা করতে। চা করতে করতে ভাবে ওভাবে না বললেও হত। কথা গুলো তো ধীরেসুস্থে বলাই যেত। আসলে ঐ টিএসএমের রাগ টা তথার উপর দিয়ে বয়ে গেল। না চা টা দেবার সময় ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বললেই হবে। ওর নিজেরও তো বোধ টা থাকা দরকার, সামনেই ফাইনাল পরীক্ষা এখন যদি এভাবে পড়াশোনার বারোটা বাজায় তাহলে তীরে এসে তরী ডুবাবে মেয়েটা।
টেস্টের রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলেছিল জন্ডিস এর লক্ষণ। কিছু দিন পুরোদমে রেস্ট নিতে বলেছিল আর সাথে পুষ্টিকর খাবার, ফলমূল, শাক-সবজি বেশি করে খেতে বলেছিল। কিন্তু সেলসে কাজ করে যারা তাদের দম ফেলার জোঁ থাকে না। বিশ্রাম নিবে কি উল্টো গত পনের বিশ দিন ধরে খুব চাপ যাচ্ছে নিলয়ের উপর দিয়ে। হঠাৎ করেই মার্কেটে সেলস খুব ডাউন। সেটা নিয়ে প্রায়ই কথা শুনতে হচ্ছে টিএসএম এর কাছে। মাঝে মাঝে কিছু অকথ্য ভাষার গালিগালাজ পর্যন্ত শুনতে হয়। এই চাকরিতে এটা রেগুলার ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। টার্গেট মিস হচ্ছে কেন, সেলস বাড়ছে না কেন এসবের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে নিলয়।
মাস গেলে যে বেতন টা কোম্পানি দেয় তার চেয়ে দ্বিগুন পরিশ্রম করিয়ে নেয়। এমাসের শুরু থেকেই বৃষ্টি হয়ে চলেছে। বৃষ্টিতে এম্নিতেই দোকানে বেচাকেনা কমে যায় তার সাথে আবহাওয়া একটু ঠান্ডা হলে তো বেভারেজ পণ্যের চাহিদা একদম কমে যায়৷ মার্কেটে চাহিদা না থাকলে সেলস আসবে কোথা থেকে। সেটাই বুঝতে চায় না অফিসার গুলো, তাদের ঐ এক কথা সেলস বাড়াও সেলস বাড়াও। মেজাজ টা খুব বিগড়ে আছে কিছুদিন ধরে এ নিয়ে।
এদিকে তথার সাথেও আর ঐ বিষয়টা নিয়ে কথা বলা হয়নি৷ বলার সময় সুযোগ দুটোই হয়ে উঠে নি। এমনিতেই শরীরটা ঠিক চলছে না তার উপর মার্কেটের অবস্থা খারাপ, সেটা নিয়ে টেনশনে সারাদিন পর বাসায় ফিরে আর কথা বলতে ইচ্ছে করে না। খেয়ে দেয়ে মরার মত ঘুমাতে চলে যায় নিলয়। ভাবছে কথা টা না বললেই নয়। ওর এ মাসের টিউটোরিয়াল রেজাল্ট টা খারাপ হয়েছে সেটা কলেজ থেকে জানিয়েছে, সেই সাথে প্রায়ই খবর নিয়ে জানতে পারে টিউশন মিস দিচ্ছে তথা। ব্যাপার টার একটা বিহিত করতে হবে শীঘ্রই। নইলে নিজের ভবিষ্যৎ টা নষ্ট করবে মেয়েটা।
সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়ে চলেছে। সাথে ধমকা বাতাসের ঝাঁপটা, তাই ছাতা থাকা সত্ত্বেও ভালই ভিজে গেছে শরীরটা। না এভাবে ভিজে গায়ে সকাল থেকে কাজ করে চলেছে, এবার না আবার ঠান্ডা জ্বরে ভুগতে হয় কে জানে। ওসব ঠান্ডা-জ্বর নিয়ে যতটা না চিন্তা তার চেয়েও বেশি চিন্তা দোলন কে নিয়ে। ও যদি জানতে পারে বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর এসেছে তবে আর রক্ষে থাকবে না। বকবকানি আর শাসনে আরও জীর্ণ হয়ে যাবে নিলয়। শেষ বিকেলের দিকে বৃষ্টির বেগ বাড়তে থাকে, তাই নিলয়ও বাসায় চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। সারাদিনের ভিজে যাওয়া শরীরটাতে হালকা কাঁপুনি আসতে শুরু করেছে। এর মাঝেই দোলনের ফোন এসেছিল। বৃষ্টিতে যেন গা বাচিয়ে চলে সেটার জন্য সাবধান করে দিয়েছে। কিছু একটা বলে এবারের মত ওকে শান্ত করেছে নিলয়।
বাসায় ফিরতে ফিরতে সেই সন্ধ্যা হয়ে গেল। দরজার তালা খুলে নিজের রুমে গিয়ে ভিজে জামাকাপড় চেঞ্জ করে বাথরুমে চলে যায় নিলয়। ফ্রেশ হয়ে চা বসাতে যাবার আগে ঘড়িতে সময় দেখে, এতক্ষণে তো তথার চলে আসার কথা। বৃষ্টিও বাড়ছে কিন্তু এখনো তথার আসার নাম নেই। চা করতে করতে দু-তিনবার ফোন করেছে ওর মোবাইলে। রিং হয়ে চলেছে কিন্তু রিসিভ করছে না। কোথায় আছে কে জানে, বৃষ্টিতে কোথাও আটকে গেল কিনা কে জানে। নিলয় ভাবে একবার বের হয়ে দেখবে কিনা। ও ভাবে হয়তো টিউশনে আটকে গেছে, ওখানে একবার ফোন করে দেখা দরকার। টিউশনে ফোন করে নিলয়, কিন্তু স্যার আজ টিউশন পড়ায় নি। কি কাজে স্যার শহরের বাইরে আজ পড়াবে না সেটা আগেই বলে দিয়েছিল। তাহলে কোথায় গেল মেয়েটা। হয়তো ওর ঐ বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে গেছে, সে যেখানে খুশি সেখানে যাক। ভাল লাগে না এসব, এমনিতেই নিজের কাজ নিয়েই মেজাজ বিগড়ে আছে- ভাবতে থাকে নিলয়।
চা খেয়ে নিজের কাজ নিয়ে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু কিছুতেই মন বসাতে পারছে না। না এবার বেশিই চিন্তা হচ্ছে নিলয়ের। রাত হয়ে গেল, বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া দিচ্ছে৷ না আর বসে থাকলে হবে না, নিচে নেমে আসে পাশে একটু দেখা আসা দরকার- মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় নিলয়। অন্যদিকে ফোন করে চলেছে, এবার আর কল ঢুকছে না, নাম্বার বন্ধ দেখাচ্ছে। হাতে ছাতা নিয়ে বের হতে যায় ও, তখনি খেয়াল করে ঘরে দিকে আসছে তথা।
বৃষ্টির জলে পুরো ভিজে জবজবে হয়ে আছে। জামাকাপড় লেপ্টে আছে শরীরে সাথে। শরীরের লোকায়ত অঙ্গ গুলো ভিজে কাপড়ের উপর থেকে স্পষ্ট জানান দিচ্ছে। বুকের দিকের ওড়নাটা হয়তো বাতাসে সরে গিয়েছে। ভিজে যাওয়া জামা চেপে বসেছে ওর মাঝারী আকারের স্তনের উপর, ভিতরের ব্রা এর উপস্থিতি দৃশ্যমান। ভিজে শরীরের কাঁপুনি তে তথার সৌন্দর্যে যেন প্লাবন এসেছে। যে কোন পুরুষের নজর কারার জন্য এই মূহুর্তের কোন তুলনা নেই।
কিন্তু নিলয়ের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ঘরের ভিতরে আসতেই তথাকে জিজ্ঞেস করে।
-কোথায় ছিলে এতক্ষণ? আর ছাতা কোথায় তোমার?
-(ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে) টিউশনে ছিলাম। ছাতাটা ভুলে ওখানেই ফেলে এসেছি।
-(প্রচন্ডভাবে রাগান্বিত স্বরে) মিথ্যে বলছো কেন? আজ তোমার টিউশন ছিল না। কি মনে কর আমি কোন খবর রাখি না?
-(ভয়ে কেঁপে উঠে মাথা নিচু করে নেয় তথা)
-তুমি কি ভেবেছো তুমি, আমি ঘাসে মুখ দিয়ে চলি। সব খবরই রাখি তোমার আমি। টিউশনের কথা বলে ঐ ছেলেটার সাথে ঘুরতে গিয়েছিলে তাই না। তা ওখানে থেকে গেলেই পারতে। এই বৃষ্টিতে আসার কি দরকার ছিল।
কোন উত্তর দেয় না তথা।
-কদিন ধরেই দেখছি তোমার হাবভাব। লেখাপড়াতে মন নেই, টিউশনে ফাঁকি দিচ্ছ। নিজের অবস্থা কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ভেবে দেখেছো তুমি। এ মাসের কলেজের টিউটোরিয়াল পরিক্ষার রেজাল্ট কত ড্রপ করেছে তোমার সেদিকে কোন লক্ষ্য আছে তোমার?? মাস ছয়েক পর ফাইনাল পরিক্ষা সেসবের চিন্তা আছে কি? নাকি সব ধ্যান জ্ঞান এখন ঐ ছেলে কে ঘিরে। উত্তর দাও ( চিৎকার করে)
-(কাঁপতে থাকে তথা ঠান্ডা আর ভয় দুটোতেই, হয়তো কাঁদছেও কিন্তু ভিজে চুলের ফোঁটা ফোঁটা জলের আড়ালে চলে যাচ্ছে চোখের জল)
-কথা বলছো না কেন? তুমি কি নিজের আর স্যারের স্বপ্নের কথা ভুলে গেছ?? আমার তো তাই মনে হয়। লেখাপড়া ছাড়া আর সবকিছুই তোমার ঠিক মত চলছে। তোমার যদি এটাই ইচ্ছে হয় তাহলে সেটা তোমার ব্যাপার। কিন্তু এসব আমার এখানে থেকে চলবে না। সবটাই তোমার উপরে নির্ভর করছে। তুমি চাইলে এখান থেকে চলে যেতে পারো৷ আমি আটকে রাখবো না। তুমি তোমার ইচ্ছে স্বাধীন মত চলো কোন সমস্যা নেই। চাইলে ঐ ছেলের কাছেও চলে যেত পারো, আমি গিয়ে দিয়ে আসবো।
ঠকঠক করে কেঁপেই যাচ্ছে তথা৷ ঠান্ডায় ঠোঁট গুলো কালচে হয়ে গেছে, চোখ দুটো লাল বর্ণ ধরে গেছে। ঐদিকে নিলয়ে চিৎকারে আরও গুটিয়ে যাচ্ছে সে।
-যাও রুমে যাও এখন, গিয়ে চিন্তা করো কি করবে তুমি। এখন জামা কাপড় চেঞ্জ করে নাও, না হলে আবার জ্বর বাঁধাবে। (উঁচু স্বরে) যাও চেঞ্জ করো গিয়ে, আমি চা করে দিচ্ছি।
জবুথবু হয়েই রুমে ঢুকে যায় তথা। নিলয় চলে যায় চা করতে। চা করতে করতে ভাবে ওভাবে না বললেও হত। কথা গুলো তো ধীরেসুস্থে বলাই যেত। আসলে ঐ টিএসএমের রাগ টা তথার উপর দিয়ে বয়ে গেল। না চা টা দেবার সময় ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বললেই হবে। ওর নিজেরও তো বোধ টা থাকা দরকার, সামনেই ফাইনাল পরীক্ষা এখন যদি এভাবে পড়াশোনার বারোটা বাজায় তাহলে তীরে এসে তরী ডুবাবে মেয়েটা।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।