14-04-2022, 09:05 AM
চোর
- হ্যালো, কে বাবা?
- না, আমি হাবলু বলছি ........
- আপনি কে?
- আমি হাবলু। চোর।
- মানে?
- কাল সন্ধ্যেবেলায় আপনার বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে দেখি আপনার বাবা হটাৎ অসুস্থ্ হয়ে পড়েছেন। তাই আর চুরি করা হয়নি। হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছি। আপনি কে বলছেন?
- আমি ওনার ছেলে। আমেরিকা থেকে বলছি। আপনি কি চ্যাংড়ামো মারছেন?
- চ্যাংড়ামো মারবো কেন? এই নিন হসপিটালের ফোন নাম্বার আর বেড নাম্বার। জিজ্ঞেস করে নিন। আর যত তাড়াতাড়ি পারেন আপনি চলে আসুন। এভাবে বাবাকে ছেড়ে দিয়ে আমেরিকাতে দিব্ব্যি আছেন আর আমাকে সব কাজকম্মো ফেলে আপনার বাবাকে দেখতে হচ্ছে। আপনি আবার বিকেলে ফোন করবেন বাবার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেব।
আসলে হয়েছে কি সেদিন সন্ধ্যাবেলায় হাবলু ওই রাস্তাটা দিয়ে যাচ্ছিল। এই বাড়িটার ওপর টার্গেট অনেকদিন ধরেই। একা বৃদ্ধ বাড়িতে থাকেন সেটা হাবলুর কাছে খবর আছে। দরজাটা খোলা দেখে হাবলু সুড়ুৎ করে ঢুকে সেঁধিয়ে যায় বাড়িটার মধ্যে। সন্ধ্যেবেলায় এমনি খোলা বাড়ি পাওয়া মানে হাতে স্বর্গ পাওয়া। খুব একটা খাটাখাটির দরকার নেই। জামা, জুতো, যা হাতের কাছে পায় তুলে নেয়। সঙ্গে হাতঘড়িটাও পকেটে চালান করে দেয়। একটু এদিক ওদিক দেখছে আর কি নেওয়া যায়। ঠিক সেই সময় সামনের ঘরটা থেকে একটা গোঙানির আওয়াজ পায় হাবলু। প্রথমে ভেবেছিল ওকে দেখে হয়তো চিৎকার করার চেষ্টা করছে। পালাতে যাবে ঠিক তখন ভাবলো - এটা তো ঠিক চিৎকার নয় - গোঙানি। জামা, জুতোটা নামিয়ে রেখে একটু সাহস সঞ্চার করে ঘরটায় উঁকি মারে হাবলু। দেখে একটা একা বৃদ্ধ খাটে গোঙাচ্ছে। হাতটা বুকের ওপর। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। ওকে দেখে কিছু যেন বলতে চাইল। হাবলু বুঝতে পারে কেস সুবিধার নয়। কি করবে ভেবে উঠতে পারে না। সুবর্ণসুযোগ - ঘরটা খালি করে দেবে? কিন্তু চোখের সামনে একজনকে মরতে দেখে তার সামনে দিয়ে সব কিছু নিয়ে চম্পট দেবে এই হাবলু চোর? একটু দোটানায় পড়ে। ঘর থেকে বেরিয়ে দুএকটা জিনিস আবার ব্যাগে ঢোকায়। কিন্তু গোঙানিটা যেন বেড়েই চলেছে। আবার ফিরে আসে ঘরে। বৃদ্ধলোকটা যেন কিছু বলতে চায় হাবলুকে। হাবলু বলে - দাঁড়ান, আপনাকে হসপিটাল নিয়ে যাচ্ছি এখুনি। বলে বাইরে গিয়ে একটা ট্যাক্সি এনে ট্যাক্সি ড্রাইভারকে নিয়ে বৃদ্ধকে ধরাধরি করে সোজা হাসপাতাল।
হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় বৃদ্ধের বালিশের তলা থেকে আলমারির চাবিটা পায়। সেটা দিয়ে আলমারি খুলে এদিক ওদিক হাতড়ে হাজার পঁচিশ টাকাও পায়। সেই টাকা দিয়ে বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তিও করে দেয় "শিশির মুখার্জী" নাম দিয়ে। বৃদ্ধকে তাড়াতাড়ি ICU তে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার দেখে বলে যে ম্যাসিভ কার্ডিয়াক এরেস্ট। এখুনি চিকিৎসা শুরু করতে হবে। যাইহোক চিকিৎসা শুরু হয় এবং চিকিৎসায় সারাও দেন উনি। ডাক্তার বলে - "ঠিক টাইমে রুগীকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে এ যাত্রায় বেঁচে গেল। কিন্তু এখনো কিছুদিন অন্তত হাসপাতালই থাকতে হবে”। এদিকে নার্সরা বৃদ্ধকে শিশিরবাবু বলে ডাকলে বৃদ্ধ বলেন - "আমাকে শিশিরবাবু বলে কেন ডাকা হচ্ছে? আমার নাম তো মৃনাল"। সেই কথা শুনে ওয়ার্ডের সিস্টাররা এ ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকেন। আর মৃণালবাবুকে বলা হয় - "কাকু আপনাকে যিনি ভর্তি করিয়েছেন তিনি তো এই নামেই ভর্তি করিয়েছেন"।
- হ্যালো, কে বাবা?
- না, আমি হাবলু বলছি ........
- আপনি কে?
- আমি হাবলু। চোর।
- মানে?
- কাল সন্ধ্যেবেলায় আপনার বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে দেখি আপনার বাবা হটাৎ অসুস্থ্ হয়ে পড়েছেন। তাই আর চুরি করা হয়নি। হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছি। আপনি কে বলছেন?
- আমি ওনার ছেলে। আমেরিকা থেকে বলছি। আপনি কি চ্যাংড়ামো মারছেন?
- চ্যাংড়ামো মারবো কেন? এই নিন হসপিটালের ফোন নাম্বার আর বেড নাম্বার। জিজ্ঞেস করে নিন। আর যত তাড়াতাড়ি পারেন আপনি চলে আসুন। এভাবে বাবাকে ছেড়ে দিয়ে আমেরিকাতে দিব্ব্যি আছেন আর আমাকে সব কাজকম্মো ফেলে আপনার বাবাকে দেখতে হচ্ছে। আপনি আবার বিকেলে ফোন করবেন বাবার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেব।
আসলে হয়েছে কি সেদিন সন্ধ্যাবেলায় হাবলু ওই রাস্তাটা দিয়ে যাচ্ছিল। এই বাড়িটার ওপর টার্গেট অনেকদিন ধরেই। একা বৃদ্ধ বাড়িতে থাকেন সেটা হাবলুর কাছে খবর আছে। দরজাটা খোলা দেখে হাবলু সুড়ুৎ করে ঢুকে সেঁধিয়ে যায় বাড়িটার মধ্যে। সন্ধ্যেবেলায় এমনি খোলা বাড়ি পাওয়া মানে হাতে স্বর্গ পাওয়া। খুব একটা খাটাখাটির দরকার নেই। জামা, জুতো, যা হাতের কাছে পায় তুলে নেয়। সঙ্গে হাতঘড়িটাও পকেটে চালান করে দেয়। একটু এদিক ওদিক দেখছে আর কি নেওয়া যায়। ঠিক সেই সময় সামনের ঘরটা থেকে একটা গোঙানির আওয়াজ পায় হাবলু। প্রথমে ভেবেছিল ওকে দেখে হয়তো চিৎকার করার চেষ্টা করছে। পালাতে যাবে ঠিক তখন ভাবলো - এটা তো ঠিক চিৎকার নয় - গোঙানি। জামা, জুতোটা নামিয়ে রেখে একটু সাহস সঞ্চার করে ঘরটায় উঁকি মারে হাবলু। দেখে একটা একা বৃদ্ধ খাটে গোঙাচ্ছে। হাতটা বুকের ওপর। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। ওকে দেখে কিছু যেন বলতে চাইল। হাবলু বুঝতে পারে কেস সুবিধার নয়। কি করবে ভেবে উঠতে পারে না। সুবর্ণসুযোগ - ঘরটা খালি করে দেবে? কিন্তু চোখের সামনে একজনকে মরতে দেখে তার সামনে দিয়ে সব কিছু নিয়ে চম্পট দেবে এই হাবলু চোর? একটু দোটানায় পড়ে। ঘর থেকে বেরিয়ে দুএকটা জিনিস আবার ব্যাগে ঢোকায়। কিন্তু গোঙানিটা যেন বেড়েই চলেছে। আবার ফিরে আসে ঘরে। বৃদ্ধলোকটা যেন কিছু বলতে চায় হাবলুকে। হাবলু বলে - দাঁড়ান, আপনাকে হসপিটাল নিয়ে যাচ্ছি এখুনি। বলে বাইরে গিয়ে একটা ট্যাক্সি এনে ট্যাক্সি ড্রাইভারকে নিয়ে বৃদ্ধকে ধরাধরি করে সোজা হাসপাতাল।
হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় বৃদ্ধের বালিশের তলা থেকে আলমারির চাবিটা পায়। সেটা দিয়ে আলমারি খুলে এদিক ওদিক হাতড়ে হাজার পঁচিশ টাকাও পায়। সেই টাকা দিয়ে বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তিও করে দেয় "শিশির মুখার্জী" নাম দিয়ে। বৃদ্ধকে তাড়াতাড়ি ICU তে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার দেখে বলে যে ম্যাসিভ কার্ডিয়াক এরেস্ট। এখুনি চিকিৎসা শুরু করতে হবে। যাইহোক চিকিৎসা শুরু হয় এবং চিকিৎসায় সারাও দেন উনি। ডাক্তার বলে - "ঠিক টাইমে রুগীকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে এ যাত্রায় বেঁচে গেল। কিন্তু এখনো কিছুদিন অন্তত হাসপাতালই থাকতে হবে”। এদিকে নার্সরা বৃদ্ধকে শিশিরবাবু বলে ডাকলে বৃদ্ধ বলেন - "আমাকে শিশিরবাবু বলে কেন ডাকা হচ্ছে? আমার নাম তো মৃনাল"। সেই কথা শুনে ওয়ার্ডের সিস্টাররা এ ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকেন। আর মৃণালবাবুকে বলা হয় - "কাকু আপনাকে যিনি ভর্তি করিয়েছেন তিনি তো এই নামেই ভর্তি করিয়েছেন"।