12-04-2022, 07:47 PM
পর্ব- আট
সন্ধ্যায় বিছানায় বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে মেঘাচ্ছন্ন আকাশটা দেখছিলো নিলয়। ফুঁড়ফুঁড়ে বাতাসটা ভালোই লাগছিল। তবু কোথায় কিসের জন্য যেন একটু কিছুর অভাববোধ করছিলো।
এখন রাত চারিদিকে ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার। নিস্তব্ধ চারিদিক আর নিলয় ছাদের এক কোণে বসে আছে। সীমাহীন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে ঘর থেকে আকাশটাকে কেমন দূরের মনে হয় আর এখন ঐ দূরের আকাশটাই আমার অনেক কাছে। দূরের ঐ তারারা ডাকছে আমায়, তারাদের হাতছানি আর ঝিঁঝি পোকার মধুর শব্দ সবকিছুই আমার মনে অন্য কিছু বলতে চাইছে। একেই হয়ত বলে প্রকৃতির লীলা নিমিষেই সব ভুলিয়ে দেয়। আর দেখ যে মশার শব্দ কানে পীড়া দেয় আজ তাদের নির্মম যন্ত্রণাকর শব্দটাই মধুর সঙ্গীত মনে হচ্ছে। এই মন চায় প্রকৃতির সান্নিধ্যে
চলে যাই হারিয়ে যাই এই অনন্ত সুখে।যেখানে সব কিছু একাকার হয়ে গেছে। ওরে তরা নিবি কি আমায় তোদের সঙ্গে করে?
আপন মনে ভাবনার সমুদ্রে ডুবে আছে নিলয়। ভাবছে দুঃখ-কষ্টের সময় গুলো না চাইলেও হয়তো অনেকটা সময় ধরে বয়ে চলে। আর আনন্দের মূহুর্ত গুলো নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। কদিন ধরে শরীরটা ভাল যাচ্ছে না নিলয়ের। কেমন দুর্বল লাগে শরীরটাকে, চোখ হঠাৎ ঝাপসা হয়ে আসে। ভিতরের অসুখ টা বাইরে প্রকাশ করে না, কাউকে বুঝতে দেয় না।
কিন্তু দোলন যেন কীভাবে সব কিছু বুঝে যায়। গলার স্বর শোনেও ওর সবকিছু বলে দিতে পারে। ওর কথাই সত্যি হয়তো, ও আমার শ্বাস-প্রশ্বাস টুকুও চিনে। নিয়ম করে তিনবেলা খবর নেয় আমার। খেয়েছি কিনা, বেশিক্ষণ রোদে ছিলাম কিনা, জল বেশি করে খাচ্ছি কিনা। ভাল লাগে ওর শাসনটুকু। ওই তো আজ বলে রেখেছে কাল আমাকে ওর সাথে হাসপাতালে আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে যেতেই হবে। আমি বারবার না করছিলাম, বলেছি দুদিনেই ঠিক হয়ে যাব। সাথে সাথেই মোবাইলে কড়া ধমকের সুরে বলে উঠলো
-আমি বলিছি আমার সাথে তুই কাল হাসপাতালে যাবি মানে কালই যাবি, তর ঘাড় যাবে।
সামনে থাকলে হয়তো তখনি ঘাড় মটকে দিত।
রাত বাড়ছে, নিলয় উঠে যায় চা বসাতে। মাথা হালকা ধরছে, একটু চা খেলে ভালই লাগবে। কড়া করে দুকাপ লাল চা বানায়। ওর বানানো লাল চা খু্ব ঝাঁঝ হয়। চায়ে চাপাতা সামান্য পরিমাণে সাথে লং,এলাচি,দারুচিনি,তেজপাতা আর আদা। দারুণ একটা গন্ধ বেরিয়েছে। নিজের চা টা টেবিলে রেখে তথার চা নিয়ে ওর ঘরের দিকে এগিয়ে যায়। দরজার কাছে ডাক দিতে গিয়ে ধমকে দাঁড়ায় নিলয়। ভিতর থেকে হাসির শব্দ আসছে।
এই মেয়েকে ভুতে ধরলো নাকি। একা একা হাসছে কেন, ঘটনা কি? এভাবে তো কখনো হাসতে দেখিনা ওকে, ভাল করে বুঝার জন্য দরজায় কান পাতে। হাসতে হাসতে কারও সাথে মোবাইলে কথা বলছে তথা। থাক এখন আর চা দেবার দরকার। ডাক দিতে গেলে হয়তো রেগে যেতে পারে। টেবিলে ফিরে এসে নিজের চায়ের কাপে চুমুক দেয়। কানে খিলখিল করা হাসির শব্দটা বাজতে থাকে। হয়তো আজ কোন কারণে মনটা ভাল আছে, নইলে তো এভাবে হাসে না তথা। ওর হাসি মাখা মুখটা দেখার জন্য মনটা আনচান করে উঠে নিলয়ের। কিন্তু উপায় নেই, চুরি করে দেখতে গিয়ে ধরা পড়লে আর রক্ষে নেই। অগত্যা চোখ বন্ধ করে মনে মনে তথার হাসি মাখা মুখের একটা ছবি আঁকার চেষ্টা করে।
-ইইইশ! ওর হাসিমাখা মুখটা পুরো আলাদা। মায়াবী রসধারায় সিক্ত। কল্পনার মাঝেই কেমন মায়া ধরে যাচ্ছে আমার হৃদয়ে। মনে মনে গুনগুন সুরে আওয়াজ আসছে
ভালবাসি তোমার ঐ রোদ্দুর হাসি
দেখে স্বপ্ন কাটে আমার দিবা নিশি
কি হল আজ আমি ভেবে না পাই
সব হারালেও শুধু তোমাকে চাই...
সব উপমা শেষে তুমি
তুমি আমার একটাই তুমি
কতশত ভুল আজ নিত্য চারিপাশে
ভুলগুলো ফুল হয়ে ফিরে আসে
ভালবাসি তোমার ঐ রোদ্দুর হাসি
দেখে স্বপ্ন কাটে আমার দিবা নিশি...
জোছনার এই রাত জাগে আমারি সাথে
দীঘির জলধারা তোমার ছবি আঁকে
কোথায় আমার আজ ঘুম হারালো
স্বপ্ন হয়ে তবু দু’হাত বাড়ালো।
দরজা খোলার শব্দে ঘোর ভাঙে, এদিকেই আসছে তথা।
-আমার চা টেবিলেই পড়ে আছে, একবার ডাক দিলেই পারতে।
-ডাক দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি হয়তো কারো সাথে কথা বলছিলে তাই আর ডিস্টার্ব করলাম না।
-(রাগি ভাব নিয়ে)আড়ি পেতে কথা শুনছিলে নাকি?
-(হতভম্ব হয়ে) আমি কেন আড়ি পাততে যাবো। তেমন আগ্রহ বা ইচ্ছে কোনটাই নেই আমার। আমি চা গরম করে দিচ্ছি তুমি গিয়ে পড়তে বসো।
-হুম সেটা জানি(বলে নিজের ঘরে দিকে চলে যায়)
নিলয়ও ওর মোবাইল টা হাতে নিয়ে উঠে চুলার দিকে যায় চা গরম করতে।
টেবিলে বসতেই তথার মোবাইলে টুং করে নোটিফিকেশনের আওয়াজ হয়। একটা মেসেজ এসেছে। মেসেজটা খুলে দেখতেই ওর মুখে হাসি খেলে যায়
"ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি তোমার ঐ হাসিটা বড্ড ভালবাসি"
এখন রাত চারিদিকে ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার। নিস্তব্ধ চারিদিক আর নিলয় ছাদের এক কোণে বসে আছে। সীমাহীন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে ঘর থেকে আকাশটাকে কেমন দূরের মনে হয় আর এখন ঐ দূরের আকাশটাই আমার অনেক কাছে। দূরের ঐ তারারা ডাকছে আমায়, তারাদের হাতছানি আর ঝিঁঝি পোকার মধুর শব্দ সবকিছুই আমার মনে অন্য কিছু বলতে চাইছে। একেই হয়ত বলে প্রকৃতির লীলা নিমিষেই সব ভুলিয়ে দেয়। আর দেখ যে মশার শব্দ কানে পীড়া দেয় আজ তাদের নির্মম যন্ত্রণাকর শব্দটাই মধুর সঙ্গীত মনে হচ্ছে। এই মন চায় প্রকৃতির সান্নিধ্যে
চলে যাই হারিয়ে যাই এই অনন্ত সুখে।যেখানে সব কিছু একাকার হয়ে গেছে। ওরে তরা নিবি কি আমায় তোদের সঙ্গে করে?
আপন মনে ভাবনার সমুদ্রে ডুবে আছে নিলয়। ভাবছে দুঃখ-কষ্টের সময় গুলো না চাইলেও হয়তো অনেকটা সময় ধরে বয়ে চলে। আর আনন্দের মূহুর্ত গুলো নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। কদিন ধরে শরীরটা ভাল যাচ্ছে না নিলয়ের। কেমন দুর্বল লাগে শরীরটাকে, চোখ হঠাৎ ঝাপসা হয়ে আসে। ভিতরের অসুখ টা বাইরে প্রকাশ করে না, কাউকে বুঝতে দেয় না।
কিন্তু দোলন যেন কীভাবে সব কিছু বুঝে যায়। গলার স্বর শোনেও ওর সবকিছু বলে দিতে পারে। ওর কথাই সত্যি হয়তো, ও আমার শ্বাস-প্রশ্বাস টুকুও চিনে। নিয়ম করে তিনবেলা খবর নেয় আমার। খেয়েছি কিনা, বেশিক্ষণ রোদে ছিলাম কিনা, জল বেশি করে খাচ্ছি কিনা। ভাল লাগে ওর শাসনটুকু। ওই তো আজ বলে রেখেছে কাল আমাকে ওর সাথে হাসপাতালে আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে যেতেই হবে। আমি বারবার না করছিলাম, বলেছি দুদিনেই ঠিক হয়ে যাব। সাথে সাথেই মোবাইলে কড়া ধমকের সুরে বলে উঠলো
-আমি বলিছি আমার সাথে তুই কাল হাসপাতালে যাবি মানে কালই যাবি, তর ঘাড় যাবে।
সামনে থাকলে হয়তো তখনি ঘাড় মটকে দিত।
রাত বাড়ছে, নিলয় উঠে যায় চা বসাতে। মাথা হালকা ধরছে, একটু চা খেলে ভালই লাগবে। কড়া করে দুকাপ লাল চা বানায়। ওর বানানো লাল চা খু্ব ঝাঁঝ হয়। চায়ে চাপাতা সামান্য পরিমাণে সাথে লং,এলাচি,দারুচিনি,তেজপাতা আর আদা। দারুণ একটা গন্ধ বেরিয়েছে। নিজের চা টা টেবিলে রেখে তথার চা নিয়ে ওর ঘরের দিকে এগিয়ে যায়। দরজার কাছে ডাক দিতে গিয়ে ধমকে দাঁড়ায় নিলয়। ভিতর থেকে হাসির শব্দ আসছে।
এই মেয়েকে ভুতে ধরলো নাকি। একা একা হাসছে কেন, ঘটনা কি? এভাবে তো কখনো হাসতে দেখিনা ওকে, ভাল করে বুঝার জন্য দরজায় কান পাতে। হাসতে হাসতে কারও সাথে মোবাইলে কথা বলছে তথা। থাক এখন আর চা দেবার দরকার। ডাক দিতে গেলে হয়তো রেগে যেতে পারে। টেবিলে ফিরে এসে নিজের চায়ের কাপে চুমুক দেয়। কানে খিলখিল করা হাসির শব্দটা বাজতে থাকে। হয়তো আজ কোন কারণে মনটা ভাল আছে, নইলে তো এভাবে হাসে না তথা। ওর হাসি মাখা মুখটা দেখার জন্য মনটা আনচান করে উঠে নিলয়ের। কিন্তু উপায় নেই, চুরি করে দেখতে গিয়ে ধরা পড়লে আর রক্ষে নেই। অগত্যা চোখ বন্ধ করে মনে মনে তথার হাসি মাখা মুখের একটা ছবি আঁকার চেষ্টা করে।
-ইইইশ! ওর হাসিমাখা মুখটা পুরো আলাদা। মায়াবী রসধারায় সিক্ত। কল্পনার মাঝেই কেমন মায়া ধরে যাচ্ছে আমার হৃদয়ে। মনে মনে গুনগুন সুরে আওয়াজ আসছে
ভালবাসি তোমার ঐ রোদ্দুর হাসি
দেখে স্বপ্ন কাটে আমার দিবা নিশি
কি হল আজ আমি ভেবে না পাই
সব হারালেও শুধু তোমাকে চাই...
সব উপমা শেষে তুমি
তুমি আমার একটাই তুমি
কতশত ভুল আজ নিত্য চারিপাশে
ভুলগুলো ফুল হয়ে ফিরে আসে
ভালবাসি তোমার ঐ রোদ্দুর হাসি
দেখে স্বপ্ন কাটে আমার দিবা নিশি...
জোছনার এই রাত জাগে আমারি সাথে
দীঘির জলধারা তোমার ছবি আঁকে
কোথায় আমার আজ ঘুম হারালো
স্বপ্ন হয়ে তবু দু’হাত বাড়ালো।
দরজা খোলার শব্দে ঘোর ভাঙে, এদিকেই আসছে তথা।
-আমার চা টেবিলেই পড়ে আছে, একবার ডাক দিলেই পারতে।
-ডাক দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি হয়তো কারো সাথে কথা বলছিলে তাই আর ডিস্টার্ব করলাম না।
-(রাগি ভাব নিয়ে)আড়ি পেতে কথা শুনছিলে নাকি?
-(হতভম্ব হয়ে) আমি কেন আড়ি পাততে যাবো। তেমন আগ্রহ বা ইচ্ছে কোনটাই নেই আমার। আমি চা গরম করে দিচ্ছি তুমি গিয়ে পড়তে বসো।
-হুম সেটা জানি(বলে নিজের ঘরে দিকে চলে যায়)
নিলয়ও ওর মোবাইল টা হাতে নিয়ে উঠে চুলার দিকে যায় চা গরম করতে।
টেবিলে বসতেই তথার মোবাইলে টুং করে নোটিফিকেশনের আওয়াজ হয়। একটা মেসেজ এসেছে। মেসেজটা খুলে দেখতেই ওর মুখে হাসি খেলে যায়
"ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি তোমার ঐ হাসিটা বড্ড ভালবাসি"
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।