11-04-2022, 12:08 PM
পর্ব- সাত
হঠাৎ এমন কোন ভাবনার সমুদ্রে ডুব মারলি, কিছু ভাবছিলি?
-নারে, তেমন কিছু না। কেমন আছিস রে?
-তুই যেমন রেখেছিস?
-(ভীমড়ি খায় নিলয়) আমি? আমি কি করলাম?
-জানিস না! এভাবে হারিয়ে গেলি কেন আমার থেকে?
-হারাতে চাই নি রে। কিন্তু তর জন্মদিনের ঐ ঘটনার পর নিজেকে আর তর সামনে দাঁড়া করানোর মত শক্তি পেলাম না। মনে হলো এক মূহুর্তে তর বন্ধুত্ব, তর বিশ্বাস সব শেষ করে দিলাম আমি। কোন মুখে তর সামনে আসতাম আমি, তুই বল?
-ঐ দিনের জন্য তুই নিজেকে একা দোষী ভাবছিস কেন বোকা? তুই একা তো কিছু করিস নি। আমি যদি তকে প্রশয় না দিতাম তবে কি সেটা ঘটতো। আমি জানতাম তুই নিজেকে অপরাধী মনে করবি। তোকে তো আমি চিনি, সেই ছোট থেকে তোকে দেখছি। তর প্রতিটা শ্বাস- প্রশ্বাস আমার জানা। তাই বলে তুই আমাকেই ছেড়ে চলে গেলি?
-আমি ভেবেছি তুই আমাকে কখনো ক্ষমা করবি না।
-ক্ষমার প্রশ্ন আসছে কেন? তুই তো ভুল করিস নি। নিজের মাঝে অপরাধ বোধ টা আর বয়ে বেড়াস না। আমার কাছে তুই সেই আগের মতই আছিস। আমার কোন অভিযোগ নেই তোর কাছে। সেদিনের পর সেই যে পালিয়ে গেলি, কত চেষ্টা করেছি তর সাথে দেখা করার কিন্তু তর টিকি টারও নাগাল পেলাম না।
-(লম্বা নিশ্বাসের শব্দ) নিজেকে আজ মুক্ত লাগছেরে।
-এখন বল কেমন আছিস তুই? কি করছিস আজকাল?
নিজের সব কিছু খোলা বইয়ের মত দোলনের সামনে মেলে দেয় নিলয়। সব কথা বলতে থাকে। নিজের কথা, সেই সাথে তথার ব্যাপার গুলোও বলতে থাকে ওকে।
-(তথার কথা শুনে মুখটা একটু হলেও কালো হয়ে যায়, তবুও সেটা আড়াল করে)কিরে বেটা তর তাহলেও বউও আছে। তা তর বউটা কত সুন্দরী দেখাবি না আমাকে?
-ধুরু তুইও না। ও আমার বউ টউ কিছু না। নাম মাত্র বিয়েতে ওসব থাকে না। তবুও আয় একদিন বাসায়।
-তর বাসাটা কোথায়?
-ওইতো জুবলী ঘাটের রঘুনাথ মন্দিরের ওল্টো পাশেই। চার তলা বাড়িটা আছে সেটার ছাদে।
-একদিন চলে যাব হঠাৎ করেই তর বউ দেখতে।
-আবার শুরু করলি। ও তর মত সুন্দর না। তর মত লাল টুকটুকে গাল ও নেই।
-(মুখটা আরও লাল হয়ে যায়) একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
-তর আবার অনুমতি প্রয়োজন হয়!
-এতদিন ধরে একসাথে আছিস ওকে ভালবেসে ফেলিস নিতো নীলু?
-(ছোট করে হাসি দেয় নিলয়)
জানিস ভালবাসা ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত।
প্রকৃত পক্ষে কোন মানুষ কোন মানুষকে ভালোবাসে না। মানুষ বরং মানুষের কিছু অশংকে ভালোবাসে। কথাটা আরও পরিষ্কার ভাবে বলতে গেলে মানুষ মানুষের কাজকে, মানুষের সততাকে, সাহসকে, কথাকে, চাহুনিকে, বিশ্বাসকে, শাসনকে, সহযোগিতাকে ভালোবাসে। এছাড়া একেক জন মানুষ একেক জনকে আরো কয়েক হাজার অজানা কারনে ভালোবাসে কিন্তু মানুষ কখনো একটা মানুষকে শুধু মাত্র মানুষ হওয়ার কারনে ভালোবাসে না। কারন ছাড়া কেউ কাউকে ভালোবাসে না বরং প্রতিটা মানুষ প্রতিটা মানুষের কাছে ভালোবাসার কোন কারন খুজে না পেলে বিরক্তকর হয়ে ধরা দেয়।
সত্যি বলতে ওকে ভালবাসার মত কোন কারণ এখনো খুঁজে পাই নি। তবে ও আমার কাছে এখনো বিরক্তিকর হয়েও উঠেনি। যদি কখনও কারণ খুঁজে পাই সেদিন ভালবাসতেও পারি।
একমনে নিলয়ের কথা গুলো শুনতে থাকে দোলন। চোখের কোণে অশ্রু জমা হয়, নিলয়ের আড়াল করতে হাতের ওল্টা পিঠে মুছে নেয় জলটুকু।
-বুঝেছি বুঝেছি তুই ভালবাসার বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছিস। আজ উঠিরে কাজ আছে। আবার সময় করে আরেকদিন তর সাথে অনেক আড্ডা দেব। তরও তো কাজে যেতে হবে।
-(ঘড়িতে সময় দেখে) ঠিকি রে কখন এতটা সময় চলে গেল খেয়াল করিনি। চল তোকে রিক্সা করে দেই।
বাইরে বেড়িয়ে রিক্সা ডাকে নিলয়, দোলন উঠে বসে। দূর্গাবাড়ি নামিয়ে দিতে বলে পকেট থেকে টাকা বের করে ভাড়া দিয়ে দেয়। এই কেয়ার টা দোলনের ভাল লাগে, একটু আগেও আধার নেমে আসা মুখটাতে হাসির রেখা ফুটে উঠে।
দুজন দুজনকে হাত নাড়িয়ে বিদায় জানায়।
হঠাৎ এমন কোন ভাবনার সমুদ্রে ডুব মারলি, কিছু ভাবছিলি?
-নারে, তেমন কিছু না। কেমন আছিস রে?
-তুই যেমন রেখেছিস?
-(ভীমড়ি খায় নিলয়) আমি? আমি কি করলাম?
-জানিস না! এভাবে হারিয়ে গেলি কেন আমার থেকে?
-হারাতে চাই নি রে। কিন্তু তর জন্মদিনের ঐ ঘটনার পর নিজেকে আর তর সামনে দাঁড়া করানোর মত শক্তি পেলাম না। মনে হলো এক মূহুর্তে তর বন্ধুত্ব, তর বিশ্বাস সব শেষ করে দিলাম আমি। কোন মুখে তর সামনে আসতাম আমি, তুই বল?
-ঐ দিনের জন্য তুই নিজেকে একা দোষী ভাবছিস কেন বোকা? তুই একা তো কিছু করিস নি। আমি যদি তকে প্রশয় না দিতাম তবে কি সেটা ঘটতো। আমি জানতাম তুই নিজেকে অপরাধী মনে করবি। তোকে তো আমি চিনি, সেই ছোট থেকে তোকে দেখছি। তর প্রতিটা শ্বাস- প্রশ্বাস আমার জানা। তাই বলে তুই আমাকেই ছেড়ে চলে গেলি?
-আমি ভেবেছি তুই আমাকে কখনো ক্ষমা করবি না।
-ক্ষমার প্রশ্ন আসছে কেন? তুই তো ভুল করিস নি। নিজের মাঝে অপরাধ বোধ টা আর বয়ে বেড়াস না। আমার কাছে তুই সেই আগের মতই আছিস। আমার কোন অভিযোগ নেই তোর কাছে। সেদিনের পর সেই যে পালিয়ে গেলি, কত চেষ্টা করেছি তর সাথে দেখা করার কিন্তু তর টিকি টারও নাগাল পেলাম না।
-(লম্বা নিশ্বাসের শব্দ) নিজেকে আজ মুক্ত লাগছেরে।
-এখন বল কেমন আছিস তুই? কি করছিস আজকাল?
নিজের সব কিছু খোলা বইয়ের মত দোলনের সামনে মেলে দেয় নিলয়। সব কথা বলতে থাকে। নিজের কথা, সেই সাথে তথার ব্যাপার গুলোও বলতে থাকে ওকে।
-(তথার কথা শুনে মুখটা একটু হলেও কালো হয়ে যায়, তবুও সেটা আড়াল করে)কিরে বেটা তর তাহলেও বউও আছে। তা তর বউটা কত সুন্দরী দেখাবি না আমাকে?
-ধুরু তুইও না। ও আমার বউ টউ কিছু না। নাম মাত্র বিয়েতে ওসব থাকে না। তবুও আয় একদিন বাসায়।
-তর বাসাটা কোথায়?
-ওইতো জুবলী ঘাটের রঘুনাথ মন্দিরের ওল্টো পাশেই। চার তলা বাড়িটা আছে সেটার ছাদে।
-একদিন চলে যাব হঠাৎ করেই তর বউ দেখতে।
-আবার শুরু করলি। ও তর মত সুন্দর না। তর মত লাল টুকটুকে গাল ও নেই।
-(মুখটা আরও লাল হয়ে যায়) একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
-তর আবার অনুমতি প্রয়োজন হয়!
-এতদিন ধরে একসাথে আছিস ওকে ভালবেসে ফেলিস নিতো নীলু?
-(ছোট করে হাসি দেয় নিলয়)
জানিস ভালবাসা ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত।
প্রকৃত পক্ষে কোন মানুষ কোন মানুষকে ভালোবাসে না। মানুষ বরং মানুষের কিছু অশংকে ভালোবাসে। কথাটা আরও পরিষ্কার ভাবে বলতে গেলে মানুষ মানুষের কাজকে, মানুষের সততাকে, সাহসকে, কথাকে, চাহুনিকে, বিশ্বাসকে, শাসনকে, সহযোগিতাকে ভালোবাসে। এছাড়া একেক জন মানুষ একেক জনকে আরো কয়েক হাজার অজানা কারনে ভালোবাসে কিন্তু মানুষ কখনো একটা মানুষকে শুধু মাত্র মানুষ হওয়ার কারনে ভালোবাসে না। কারন ছাড়া কেউ কাউকে ভালোবাসে না বরং প্রতিটা মানুষ প্রতিটা মানুষের কাছে ভালোবাসার কোন কারন খুজে না পেলে বিরক্তকর হয়ে ধরা দেয়।
সত্যি বলতে ওকে ভালবাসার মত কোন কারণ এখনো খুঁজে পাই নি। তবে ও আমার কাছে এখনো বিরক্তিকর হয়েও উঠেনি। যদি কখনও কারণ খুঁজে পাই সেদিন ভালবাসতেও পারি।
একমনে নিলয়ের কথা গুলো শুনতে থাকে দোলন। চোখের কোণে অশ্রু জমা হয়, নিলয়ের আড়াল করতে হাতের ওল্টা পিঠে মুছে নেয় জলটুকু।
-বুঝেছি বুঝেছি তুই ভালবাসার বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছিস। আজ উঠিরে কাজ আছে। আবার সময় করে আরেকদিন তর সাথে অনেক আড্ডা দেব। তরও তো কাজে যেতে হবে।
-(ঘড়িতে সময় দেখে) ঠিকি রে কখন এতটা সময় চলে গেল খেয়াল করিনি। চল তোকে রিক্সা করে দেই।
বাইরে বেড়িয়ে রিক্সা ডাকে নিলয়, দোলন উঠে বসে। দূর্গাবাড়ি নামিয়ে দিতে বলে পকেট থেকে টাকা বের করে ভাড়া দিয়ে দেয়। এই কেয়ার টা দোলনের ভাল লাগে, একটু আগেও আধার নেমে আসা মুখটাতে হাসির রেখা ফুটে উঠে।
দুজন দুজনকে হাত নাড়িয়ে বিদায় জানায়।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।