10-04-2022, 08:44 PM
(This post was last modified: 10-04-2022, 09:30 PM by Bumba_1. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
(৪)
কিছুদিন কনকপুরে থাকার ইচ্ছে ছিলো অরুন্ধতীর। যদিও সেই অর্থে অবশিষ্ট আর কিছুই নেই, তার স্বামী প্রায় সবকিছু বিক্রি করে দিয়েছে শরিকদের কাছে, তবুও শ্বশুরবাড়ির ভিটেতে একবারের জন্য হলেও ঘুরে আসার ইচ্ছে ছিলো তার। কিন্তু তার প্রতি চিরকালই উদাসীন থাকা মামীর তরফ থেকে সেইরূপ কোনো ইতিবাচক ইঙ্গিত না পেয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দু'দিন পরেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিলো অরুন্ধতী। তবে এক্ষেত্রে তার মামীকেও পুরোপুরি দোষ দেওয়া যায় না। মামাতো ভাই বোনেদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, সবাই নিজের মতো সংসার গুছিয়ে নিয়েছে। এতদিন সর্বোত্র ছড়ি ঘোরাতে থাকা মামীর জন্য বর্তমানে একটিমাত্র ঘর বরাদ্দ হয়েছে ছেলের নতুন সংসারে .. তবে পরিস্থিতি যে চরম সীমায় পৌঁছেছে তাতে ছেলে-বৌমার সংসারে লতিকা দেবী বেশিদিন থাকতে পারবেন বলে মনে হয় না। তাই তিনি যে কিছুদিন অরুন্ধতীকে থেকে যেতে বলবেন, সে উপায় যে তার নেই। তাছাড়া গোগোলের কলেজ খুলে যাচ্ছে সামনের সপ্তাহে। পঞ্চম শ্রেণী থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠেছে এবার সে .. গরমের ছুটির পর নতুন ক্লাসের শুরুতেই অনুপস্থিত থাকাটা যুক্তিযুক্ত হবে না। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ওদের ডে' সেকশন .. পড়াশোনার চাপ বাড়বে।
ট্রেনে ফেরার পথে অরুন্ধতী ভাবছিলো - বিবাহের পূর্বে তার জীবন এক রকম জীবন ছিলো। অন্যের সংসারে মানুষ হয়েছে বলে জীবনে কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা তো দূরের কথা, ছোটখাটো আকাঙ্খাটুকুও মনে আসবার স্থান দেয়নি সে কোনোদিন। কিন্তু বিবাহ পরবর্তী সময় প্রথম দুই থেকে তিন বছর স্বপ্নের মতো কেটেছিল তার। পরিবারে যে তারও গুরুত্ব থাকতে পারে একথা সে প্রথম জেনেছিল। সে একসময় ভেবেছিল, আবার পড়াশোনা শুরু করবে। কিন্তু তারপর থেকেই সবকিছু পাল্টে যেতে হতে শুরু করলো .. ক্রমশ দূরত্ব বাড়তে লাগলো তার স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু আসল সমস্যাটা যে কোথায়, তা সে আজও বুঝতে পারেনি।
সমগ্র অফিসে যখন অনিরুদ্ধ এবং বৈশালীর সম্পর্কের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, তখন তার আভাসটুকুও অরুন্ধতীর কানে আসেনি, এ কথা বলা বোধহয় ঠিক হবে না। তবে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর .. স্বামীকে অবিশ্বাস করে নিজের মনোকষ্ট আর বাড়াতে চায়নি অরুন্ধতী। প্রতিবাদ করেও যে বিশেষ লাভ হতো, তা তো নয়। শ্বশুরবাড়ি বলতে তো কিছুই নেই .. ভিটেমাটি সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাপেরবাড়ি সেই অর্থে কোনোদিনই ছিলো না, তার উপর এবার গিয়ে যা দেখে এলো - এমত অবস্থায় অল্প শিক্ষিত, পুরোপুরি স্বামীর উপর নির্ভরশীল অরুন্ধতীর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
★★★★
আজ কলেজের প্রথম দিন। এমনিতেই মায়ের ডাকে ঘুম ভেঙে যাওয়াতে স্বপ্নটাও ভেঙে গেলো তার .. একটুর জন্য ফার্স্ট প্রাইজ নেওয়া হলো না। তাই মনটা সকাল থেকেই ভারাক্রান্ত গোগোলের। সোয়া ন'টার সময় গাড়ি এলো .. বাবার অফিসের সেই নীল রঙের অ্যাম্বাসেডর, ড্রাইভার কাকু খুব ভালোবাসে তাকে। ওই গাড়ী করে অবশ্য তার সঙ্গে জেনারেল ম্যানেজার আঙ্কেলের মেয়ে রনিতা দিদি আর তার বাবার আরেকজন সহকর্মীর মেয়ে মিষ্টু দিদিও আসে। ওরা দুজনেই সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট কলেজে পড়ে, আগে নেমে যায়। ওদের দু'জনকেই অবশ্য পছন্দ নয় গোগোলের। ওদের আদরটা মাঝে মাঝে অদ্ভুত এবং অন্যরকম মনে হয় গোগোলের। ছোট হলেও 'ভালো স্পর্শ' আর 'খারাপ স্পর্শের' তফাৎ বোঝার বয়স হয়েছে তার।
গ্রীষ্মকালীন একমাস ছুটির পর আজ প্রথমদিন কলেজ খুললো। ছাত্র/ছাত্রীদের কাছে বিশেষত ভালো ছাত্র/ছাত্রীদের কাছে প্রথম দিন নতুন ক্লাসে যাওয়ার আকর্ষণটাই অন্যরকম হয়। ভোর ছ'টার বদলে নতুন সময় অর্থাৎ সকাল দশ'টায় কলেজ, নতুন বইয়ের গন্ধ, তার উপর নতুন মলাটের শোভা, নতুন ক্লাসরুম, পুরনো শিক্ষকদের মধ্যে থেকেই একজন নতুন ক্লাস টিচারের অন্তর্ভুক্তি এবং তার সঙ্গে পরিচয় .. এতকিছু নতুন জিনিস আজ একসঙ্গে ঘটতে চলেছে এটা ভেবেই বারবার রোমাঞ্চিত হচ্ছিলো সে। কলেজের সামনে গাড়ি দাঁড়াতেই, গাড়ির দরজা খুলে এক লাফে গাড়ি থেকে নেমে অর্ধেক খোলা অবস্থায় থাকা কলেজের প্রধান ফটক পেরিয়ে কলেজের মধ্যে এক দৌড়ে প্রবেশ করলো গোগোল।
ততক্ষণে সাড়ে ন'টা বেজে গিয়েছে। এখন তো ছাত্রদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে থাকার কথা সমগ্র কলেজ বিল্ডিং। কিন্তু, এ কি .. প্রায় জনমানব শূন্য কলেজের অবস্থা দেখে চমকে উঠলো গোগোল। দারোয়ান ওসমান চাচা আর পাম্পম্যান নিমাই কাকু ছাড়া আর কাউকে দেখতে পেলো না সে কলেজের ভেতরে। "আরে খোকাবাবু, তুমিও খবর না পেয়ে চলে এসেছো। তোমার মতো অবশ্য অনেকেই এসেছিলো, যারা এই নোটিশ বোর্ড'টা দেখে চলে গেছে। কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার নির্মল স্যার গতকাল রাতে মারা গেছেন, তাই আজ পূর্ণদিবস কলেজ ছুটি। কাল থেকে কলেজ শুরু হবে।" প্রধান ফটকের পাশে ব্ল্যাকবোর্ডের উপর চক দিয়ে লেখা নোটিশের দিকে ইশারা করে গোগোলের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললো ওসমান চাচা।
কলেজ বিল্ডিং প্রায় জনমানব শূন্য হওয়ার কারণ এতক্ষণে বুঝতে পারলো গোগোল। এর মধ্যেই গোগোলের সহপাঠী এবং প্রিয় বন্ধু সন্দীপ প্রবেশ করলো কলেজে। বলাই বাহুল্য, সেও খবর না পেয়ে এসেছে। সবকিছু শুনে দুই বন্ধু প্রকৃতপক্ষে বেশ খুশিই হলো .. আরো একদিন ছুটি পাওয়া গেলো এই ভেবে। ঠিক তখনই গোগোলের খেয়াল হলো তার বাবার অফিসের গাড়ির কথা .. কারণ ওই গাড়ি করেই তো বাড়ি ফিরতে হবে তাকে। এক ছুটে কলেজের বাইরে বেরিয়ে এম্বাসেডরটিকে আর দেখতে না পেয়ে তার মাথায় বাজ ভেঙে পড়লো। এই কথোপকথনের মধ্যে আনুমানিক ১০ মিনিট অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছিলো, ততক্ষণে গাড়ি গোগোলকে কলেজে নামিয়ে আবার ফিরে গিয়েছে।
"আমি এখন কি করে বাড়ি ফিরবো, গাড়ি তো সেই বিকেল সাড়ে তিন'টের আগে আসবে না.." এই বলে কান্নাকাটি জুরে দিলো আমাদের গোগোল। তাকে শান্ত করে তার বন্ধু সন্দীপ বললো "চিন্তা কিসের, আমি তো বাসে করে এসেছি, ওই পথেই ফিরবো। তোর কাছে টাকা না থাকে আমি দিয়ে দিচ্ছি .. তুই কালকে ফেরত দিয়ে দিস, চল এখন।"
বাসে করে যেতে হবে এটা শুনে গোগোল আরো মুষড়ে পড়লো। কারণ বাসে উঠলেই পেট্রোলের গন্ধ নাকে গিয়ে তার গা গুলিয়ে ওঠে এবং বমি পায়। পারতপক্ষে সে বাসে ওঠে না। বাসে ওঠার নাম শুনলেই কেঁদে-কেটে একসা করে আমাদের গোগোল। তাই তার মা-বাবাও তাকে নিয়ে কোথাও যেতে হলে বাসে উঠতে পারে না। এই ভাবেই তার বাসে চড়ার অভ্যেস একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আজ বাসে উঠলে তার বমি হবেই এবং সেটা যদি তার বন্ধু সন্দীপের সামনে হয় তাহলে অবশ্যই সে কালকে কলেজে এসে ব্যাপারটা রটিয়ে দেবে আর সবাই তাকে নিয়ে মজা করবে - এই ভেবে ভেতর ভেতর কুঁকড়ে গেলো গোগোল "আমি যাবো না, তুই চলে যা .. আমি বিকেল বেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।"
ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে মানে কারোর বয়সই ১০ - ১১ বছরের বেশী হবে না। তাই গোগোলের কথা শুনে তাকে দু-একবার বোঝানোর চেষ্টা করে তারপর বিফলমনোরথ হয়ে বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে ফিরে গেলো সন্দীপ। এদিকে গোগোলের চোখ দিয়ে তখন অশ্রুঝরা ক্রমবর্ধমান গতিতে বয়ে চলেছে। ফুঁপিয়ে কান্না ক্রমশ উচ্চস্বরের ক্রন্দনে পরিণত হলো। দারোয়ান এবং পাম্পম্যান দুজনই ছুটে এলো।
পাম্পম্যান নিমাই কাকু খবর নিয়ে এলো বিদ্যালয়ের রেজিস্টার সুজিত নিয়োগী দোতালায় তার ঘরে আছেন। দু'জনে মিলে ততক্ষণে কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলা গোগোলকে নিয়ে রেজিস্টারের ঘরে গেলো। সুজিত বাবু সদাহাস্যময় একজন ব্যক্তি, যিনি বাচ্চাদের খুব ভালোবাসেন। তাই তার সামনে গিয়ে ভয় অনেকটাই কেটে গেলো গোগোলের এবং মনে মনে ভাবলো হয়তো একটা কিছু সুরাহা হলেও হতে পারে। দারোয়ান আর পাম্পম্যানের মুখে ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ শুনে সুজিত বাবু কিছুক্ষণ তাকে নিরীক্ষণ করে হাসিমুখে গোগোলকে তার কাছে ডাকলেন এবং বললেন "তোমাকে তো আমি চিনি, তুমি এবার ফাইভ থেকে সিক্সে উঠতে থার্ড হয়েছো না? চিন্তা করো না আর কান্নাকাটি করো না, তুমি তো একজন ব্রেভ বয় .. দাঁড়াও, তোমাকে বাড়ি পাঠানোর একটা ব্যবস্থা আমি করছি।"
তারপর ওসমান চাচাকে নির্দেশ দিলেন গোগোলকে কলেজ থেকে অনতিদূরে হেড মাস্টারমশাই নিশীথ বটব্যালের বাড়িতে পৌঁছে দিতে। ওরা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই হেডস্যার নিশীথ বটব্যালকে ফোন করে সুজিত বাবু অনুরোধ করলেন "আপনার কাছে আমাদের কলেজের একজন ছাত্রকে পাঠাচ্ছি স্যার। আপনার বাড়িতে তো এখন আমাদের কলেজের ইলেকট্রিশিয়ান শিবু কাজ করছে, ওর বাইকে করে যদি ছেলেটিকে তার বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তাহলে ভালো হয়। আমি নিজেই গাড়ি ভাড়া করে ওকে পৌঁছে দিতে পারতাম, কিন্তু এখন কলেজ থেকে বেরোনোর উপায় নেই আমার .. গভর্নিং বডির সঙ্গে মিটিংয়ের কাগজপত্র সব তৈরি করছি। আপনি হয়তো চিনবেন, ছাত্রটির নাম অনির্বাণ মুখার্জি।"
রেজিস্টারের কথা শুনে প্রথমে নিশীথ বাবুর ইচ্ছে করলো মুখের উপর ফোনটা কেটে দিতে। কে না কে ছেলে তার ঠিক নেই, তাকে আবার বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে ইলেকট্রিশিয়ানকে দিয়ে তার নিজের বাড়ির কাজ বন্ধ করে। বিরক্তি প্রকাশ করে কিছু বলতে যাওয়ার মুহূর্তে "আপনি হয়তো চিনবেন, ছাত্রটির নাম অনির্বাণ মুখার্জি।" এই কথাটা যখন নিশীথ বাবুর কানে এলো তখন তিনি গলাটা যতটা সম্ভব নরম করে রেজিস্টার মহাশয়কে জানালেন - চিন্তা না করতে, তিনি অবশ্যই ব্যবস্থা করবেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই দারোয়ান ওসমানের সঙ্গে গোগোল নিশীথ বাবুর বাড়ি পৌছালো। নিশীথ বটব্যাল .. গোগোলদের কলেজ অর্থাৎ গুরুকুল বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক। রাশভারী স্বভাবের হেড মাস্টারমশাইকে প্রচন্ড ভয় পায় গোগোল। নামের মতোই তার চরিত্রেরও একটা গভীর অন্ধকার দিক আছে। স্বামী-পরিত্যাক্তা নারীর কথা শোনা যায়, কিন্তু স্ত্রী-পরিত্যাক্ত পুরুষের কথা খুব একটা শোনা যায় না আমাদের সমাজে। নিশীথ বাবু সেই ব্যাতিক্রমী মানুষ যাকে ছেড়ে দিয়ে তার স্ত্রী চলে গিয়েছেন। এর পেছনের কারণ অবশ্য গুরুতর বলেই কানাঘুষা শোনা যায়। এই ব্যাক্তিটির অনেক গুণের মধ্যে আরও একটি গুণ হলো প্রধান শিক্ষক নিশীথ বাবু একজন নারী শিকারী হিসেবে নিজের কীর্তি স্থাপন করেছেন। তবে বন্দুক দিয়ে বাঘ শিকারের মতো নারী শিকার করেন না উনি। রমণীগণকে খেলিয়ে ছিপে তুলে তার নিজস্ব ঈশ্বর প্রদত্ত বন্দুকের মাংসালো নল দিয়ে শিকার করেন। মেয়ে থেকে মহিলা অনেকের সতীত্ব হরণের ঘটনা নিশীথ বাবুর স্ত্রীর কানে এলেও, প্রথম দিকে তিনি সবকিছু অগ্রাহ্য করে ঘরকন্যার কাজে নিমগ্ন ছিলেন। কিন্তু তার একমাত্র বোনের সর্বনাশ করে যখন তাকে বেমালুম বেপাত্তা করে দিলো তার স্বামী। সেই থেকে নিশীথে বাবুকে ত্যাগ করে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন তার স্ত্রী।
মধ্য চল্লিশের, যথেষ্ট ফর্সা, মাঝারি উচ্চতার, একহারা চেহারার, মাথায় পাটের মতো শক্ত একরাশ কালো ঘন চুলের মধ্য দিয়ে উঁকি মারা কয়েকগাছি সাদা চুলের, শক্ত এবং ভারী চোয়াল যুক্ত, গুরুগম্ভীর গলার অধিকারী - নিশীথ বটব্যাল তার এই আপাত সুদর্শন চেহারার মায়াজালে নারীদের বশ করলেও এর আড়ালে তার নোংরা এবং বিকৃত মনের হদিশ যখন তার শিকারেরা পায় তখন আর কিছু করার থাকে না। ছাত্রদের প্রতি নির্দয় ব্যবহার এবং অকারণে প্রহারের জন্য তাকে সবাই এড়িয়ে চলতো। বিশেষত তার সৌম্যকান্তি মুখমন্ডলে দুটো ভয়ঙ্কর হিংস্র এবং ক্রুর চোখদুটোকে যমের মত ভয় করতো গোগোল। কথায় বলে 'যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়।' বেচারা গোগোলের সেই রকমই অবস্থা হয়েছে আজ হেডস্যারের বাড়িতে এসে। দারোয়ান ওসমান বিদায় নেওয়ার পরে ভয় আরষ্ট হয় থাকলো গোগোল।
কিন্তু সে লক্ষ্য করলো, তার প্রতি ব্যবহারের আমূল পরিবর্তন ঘটেছে তার কলেজের প্রধান শিক্ষকের। সর্বদা বিরক্তি প্রকাশ করে খেঁকিয়ে কথা বলা ছাড়া, ভালো করে কোনোদিন কথা পর্যন্ত বলেনি যে ব্যক্তি, তিনি আজকে গোগোলকে তার মধুর ভাষণে জর্জরিত করে ফ্রিজ থেকে বের করে এলাকার বিখ্যাত 'রসময় মোদক' মিষ্টান্ন ভান্ডারের সরপুরিয়া খেতে দিলেন। আর যাই হোক এখনো তো শিশুমন আছে তার, তাই পূর্বের সব স্মৃতি ভুলে গিয়ে বিনা বাক্যব্যায়ে তার প্রিয় মিষ্টান্ন সরপুরিয়া খেতে আরম্ভ করলো গোগোল।
প্রথমদিকে আরষ্টতা থাকলেও কথোপকথনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সখ্যতা গড়ে উঠলো শিক্ষক এবং ছাত্র দু'জনের ভিতর। নিশীথ বাবু জানালেন - শিবু এখন কাজে ব্যস্ত তাই তাকে বিরক্ত করে লাভ নেই, তিনি নিজেই তাকে তার নিজস্ব ছোট্ট মারুতি এইট হান্ড্রেড করে বাড়ি পৌঁছে দেবেন। অন্য সময় কথাটা শুনলে অবশ্যই গোগোলের শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত নেবে যেতো। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কথাটা শুনে গোগোলের ভয়ের থেকে আনন্দ হলো অধিক। আগামীকাল ক্লাসে সে বুক ফুলিয়ে গর্ব করে সবাইকে বলতে পারবে তাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে সে মিষ্টি খেয়ে এসেছে এবং তাকে গাড়ি করে তিনি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন।
ইলেকট্রিশিয়ান শিবুকে বাড়ির বাকি কাজ বুঝিয়ে দিয়ে গাড়ি করে গোগোলের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো তারা। গাড়িতে আসতে আসতে তার ফোন থেকে বিশেষ একজনকে ফোন করে অনির্বাণ অর্থাৎ গোগোলের বাবা অনিরুদ্ধর ঠিকুজি কুষ্ঠি অর্থাৎ তার অফিস সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য, বাড়ি থেকে বেরোনো এবং ফেরার সময়, তার স্বভাব চরিত্র, এমনকি কথা প্রসঙ্গে বৈশালী সঙ্গে তার সম্পর্কের গুঞ্জন .. এই সবকিছু জেনে নিলেন নিশীথ বাবু। বেচারা গোগোল তখন হঠাৎ করে ছুটি পেয়ে এবং স্বয়ং প্রধান শিক্ষকের গাড়িতে বাড়ি আসার আনন্দে কোনো কিছুই খেয়াল করলো না।
যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন .. এই বাণী সর্বদা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন নিশীথ বটব্যাল। তবে শেষের দুটো শব্দ অর্থাৎ 'অমূল্য রতনের' বদলে 'অপরূপা এবং আকর্ষণীয়া নারী' এই শব্দবন্ধটি উনার অভিধানে রাখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আসলে তখন সুজিত বাবুর কাছ থেকে গোগোল ওরফে অনির্বাণের নাম শুনে হেডমাস্টার মশাইয়ের এক বছরের আগের একটি ঘটনার কথা যা তিনি এতদিন নিজের মনের মণিকোঠায় এতদিন রেখে দিয়েছিলেন, সেটি মনে পড়ে গিয়েছিলো। তৎক্ষণাৎ তিনি গলার স্বর নরম করে সুজিত বাবুকে আশ্বস্ত করেছিলেন।
★★★★
ক্লাস ফোর থেকে ফাইভে ওঠার সময় গোগোল চতুর্থ হলেও ইংরেজি এবং ইতিহাস এই দুই বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলো ক্লাসের মধ্যে। প্রতি বছরের মতোই কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কৃত করা হয়। তাই স্বভাবতই ঐদিন পুরস্কার স্বরূপ গোগোল দুটি বই উপহার পায়। প্রত্যেকবার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের দিন গোগোল তার বাবার সঙ্গেই আসে। কিন্তু গত বছর অনিরুদ্ধ অফিশিয়াল কারণে না আসতে পারায় তার স্ত্রী অরুন্ধতী দেবী এসেছিলো। ওইদিন লাল রঙের কাঞ্জিভরম শাড়ি এবং কালোর উপর লাল রঙের চিকনের কাজ করা থ্রি-কোয়ার্টার ব্লাউজ পরিহিতা অরুন্ধতীর দিক থেকে চোখ ফেরানো সম্ভব হচ্ছিলো না অনেক পুরুষের পক্ষে। বাড়ির বাইরে গেলেই সর্বদা ছোট গলার থ্রি-কোয়ার্টার ব্লাউজ এবং নাভির অনেক উপরে শাড়ি পড়া অরুন্ধতীর ঈশ্বর প্রদত্ত শারীরিক বিভঙ্গ বোধহয় এই রুচিশীল পোশাকেও আড়াল করা সম্ভবপর হচ্ছিলো না।
অতি ভারী প্রবৃদ্ধ বক্ষ যুগলের ভারে সামনের দিকে ইষৎ ঝুঁকে যাওয়া গুরু নিতম্বিনী অরুন্ধতীর প্রতি কলেজের অন্যান্য পুরুষ শিক্ষক এবং ছাত্রদের পুরুষ গার্জেনরা মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেও প্রধান শিক্ষক নিশীথ বটব্যালের দৃষ্টিতে তার কলেজের ছাত্র অনির্বাণের মাতৃদেবীর প্রতি কাম এবং লালসা ঝরে পড়ছিল। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সবেমাত্র শেষ হয়েছে .. নিশীথ বাবু মঞ্চের উপর থেকেই লক্ষ্য করলেন অরুন্ধতী দেবী তার ছেলে অনির্বাণকে কিছু জিজ্ঞাসা করছে এবং পরমুহুর্তেই তাকে চেয়ারে বসিয়ে রেখে কলেজের অডিটোরিয়ামের ডান দিকের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলো। ব্যাপারটা দেখে কিছুটা খটকা লাগলো প্রধান শিক্ষক মহাশয়য়ের। পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠান শেষ হলেও এখনো খাবার প্যাকেট ডিস্ট্রিবিউশন করা বাকি আছে, তার মধ্যে নিজের সন্তানকে এখানে বসিয়ে রেখে তার মা কোথায় গেলো! বাড়ি চলে যায়নি নিশ্চয়ই .. ব্যাপারটা সরেজমিনে তদন্ত করতে হচ্ছে।
ঘটনাটা অন্য কেউ লক্ষ্য করেনি এটা নিশ্চিত হয়ে, "অনুষ্ঠান তো প্রায় শেষের দিকে .. আপনারা খাওয়ার প্যাকেট গুলো একটু দায়িত্ব নিয়ে ডিস্ট্রিবিউট করে দেবেন, আমি একটু আসছি" এইটুকু বলে নিশীথ বাবুও বেরিয়ে গেলেন অডিটোরিয়াম থেকে। বাইরে বেরিয়ে কাউকে দেখতে না পেলেও তার মনের মধ্যে যে সন্দেহটা তৈরি হয়েছিল, সেটাকে সম্বল করেই কলেজের শৌচালয়ের দিকে দ্রুত পায়ে অগ্রসর হতে লাগলেন। তার সন্দেহ যে অমূলক নয় তা অল্প সময়ের মধ্যেই বুঝতে পারলেন নিশীথ বাবু। কলেজ কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ শিক্ষকদের ব্যবহার করা শৌচালয়ের পাশে স্বয়ং প্রধান শিক্ষকের জন্য বরাদ্দ ছোট্ট ওয়াশরুমের ভেতর থেকে বন্ধ করা দরজার তলা দিয়ে আলোর রেখা প্রকটভাবে দেখা যাচ্ছে। তাই বলে এতটা আশা করেননি তিনি .. তার শিকার থুড়ি অনির্বাণের মাতৃদেবী তারই ব্যবহার করা বাথরুমে ঢুকেছে। নিশীথ বাবু মনে মনে ভাবলেন ভাগ্যিস তার ওয়াশরুমে বাইরে থেকে তালা দেওয়া নেই।
আসলে এই কলেজে ছাত্রদের ব্যবহার করার জন্য পৃথক শৌচালয় আছে .. যা একটি প্রকাণ্ড ঘরের মধ্যে অবস্থিত হলেও অপরিষ্কার শৌচালয়টির গ্রিলের দরজা সব সময় হাট করে খোলা থাকে। তার অনতিদূরেই শিক্ষকদের ব্যবহার করার জন্য পৃথক শৌচালয় আছে .. অপেক্ষাকৃত পরিষ্কার হলেও ওটারও তথৈবচ অবস্থা, দরজা সর্বদা খোলা থাকে। মর্নিং সেকশনে দু'জন শিক্ষিকা আছেন, তাদের জন্য একটি লেডিস টয়লেট আছে .. যা সর্বদা তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকে, প্রয়োজন হলে খুলে নিতে হয়। অরুন্ধতী টয়লেট করার জন্য গোগোলকে অডিটোরিয়ামে বসিয়ে যখন শৌচালয়ের দিকে এসেছিল, তখন তার পক্ষে ছাত্রদের ও শিক্ষকদের শৌচালয় ব্যবহার করা প্রচন্ড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেত। এদিকে লেডিস টয়লেটের বাইরে থেকে তালা বন্ধ। পেচ্ছাপের বেগ সামলাতে না পেরে তাই অরুন্ধতী বাধ্য হয়ে দরজা ভেজানো অবস্থায় থাকা প্রধান শিক্ষকের জন্য বরাদ্দ শৌচালয়টি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল .. সে ভেবেছিল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন টয়লেট'টি ব্যবহার করে সে চলে আসতে পারবে, কেউ টের পাবে না।
এদিকে নিশীথ বটব্যাল পা টিপে টিপে ওয়াশরুমের সামনে এসে দাড়ালেন। ওদিকে ততক্ষণে খাবারের প্যাকেট ডিসট্রিবিউশন শুরু হয়ে গিয়েছে .. ছাত্র/শিক্ষকদের সম্মিলিত কোলাহলে গমগম করছে অডিটোরিয়াম আর এদিকে নিশ্চুপ জনমানবশূন্য। নিশীথ বাবুর শরীরে শিহরণ খেলে গেলো। তিনি ভাবলেন এটাই সুযোগ .. এক লাথি মেরে সিনট্যাক্সের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে অরুন্ধতী দেবীকে ভোগ করবেন উনি, যদি বাধাপ্রাপ্ত হন তাহলে প্রয়োজনে ;., করবেন। কিন্তু পরমুহুর্তেই নিজের উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রন করলেন .. এইরূপ হঠকারী সিদ্ধান্ত নিলে তার শিক্ষক জীবন শেষ হয়ে যেতে বেশি সময় লাগবে না, এছাড়া হাজতবাস তো আছেই। নিজেকে সংবরণ করে বাথরুমের দরজায় সন্তর্পনে কান রাখলেন নিশীথ বাবু। তখন সবে টয়লেট করতে বসেছে অরুন্ধতী দেবী। তার কলেজের ছাত্র অনির্বাণের মাতৃদেবীর ছরছর করে পেচ্ছাপ করার শব্দ কানে এলো .. "মাগীর গুদের পাড় দুটো বেশ মোটা মনে হচ্ছে, না হলে পেচ্ছাপের এত ধার হতো না" অস্ফুটে বলে উঠলেন অভিজ্ঞ এবং বিকৃতকাম নিশীথ বটব্যাল।
পেচ্ছাপের শব্দ আস্তে আস্তে কমে আসছে .. এইবার মোক্ষম চাল দেওয়ার সময় এসেছে .. দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা মারতে শুরু করলেন নিশীথ বাবু, তারপর গুরুগম্ভীর গলায় বলে উঠলেন "ভেতরে কে? কার এত বড় সাহস, আমার ওয়াশরুম ইউজ করছে?" অরুন্ধতীর বুঝতে অসুবিধা হলো না এটা হেড মাস্টারমশাইয়ের গলা। অযাচিত ভাবে তার বাথরুম ব্যবহার করে অন্যায় তো সে করেইছে .. তার ওপর ধরা পড়ে গিয়ে এমনিতেই ভীতু প্রকৃতির মানুষ অরুন্ধতী ভীষণভাবে ঘাবড়ে গেলো।
পড়িমড়ি করে নিজের অবিন্যস্ত কাপড়টা গুছিয়ে নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত মুখে দরজা খুলে দাঁড়ালো অরুন্ধতী, "ক্ষমা করবেন স্যার .. আসলে লেডিস টয়লেটের দরজাটা বাইরে থেকে বন্ধ তো তাই আমি ঠিক বুঝতে পারিনি .. আমি এক্ষুনি বেরিয়ে যাচ্ছি .." এই বলে নিশীথ বাবুর পাশ কাটিয়ে চলে যেতে গেলো অরুন্ধতী।
"আরে দাঁড়ান ম্যাডাম, এত তাড়া কিসের? এতটা নার্ভাস হওয়ার দরকার নেই। ওদিকে প্রোগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। লেডিস টয়লেটের দরজা বন্ধ - সেটা তো বুঝলাম। কিন্তু আপনি কি বুঝতে পারেননি - সেটা বুঝলাম না।" অরুন্ধতীর পথ আগলে তার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে কথাগুলো বললেন নিশীথ বাবু।
- "না মানে, এটা আপনার ব্যবহার করার জন্য টয়লেট সেটা বুঝতে পারিনি।"
- "আচ্ছা তাই? কিন্তু দরজার বাইরে বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই তো বড় বড় করে লেখা আছে - শুধুমাত্র প্রধানশিক্ষক মহাশয়ের ব্যবহারের জন্য .. আপনি বোধহয় লক্ষ্য করেননি।"
- "না মানে, হ্যাঁ .. তাই হবে হয়তো .. আসলে এতটা প্রেসার .. তাই অতকিছু দেখার সময় পাইনি .. আচ্ছা আমি এখন যাই .."
- "প্রেসার? কিসের প্রেসার?"
প্রধান শিক্ষকের এই প্রশ্নে লজ্জায় রাঙা হয়ে কি বলবে বুঝতে না পেরে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো অরুন্ধতী। নিজের কলেজের ছাত্রের মায়ের এইরূপ অবস্থা দেখে ব্যাপারটা যৎপরোনাস্তি উপভোগ করছিলেন নিশীথ বাবু। "আচ্ছা পেচ্ছাপের প্রেসার? খুব জোর পেচ্ছাপ পেয়ে গেছিল মনে হয়, তাই না?" ইচ্ছাকৃতভাবে অরুন্ধতীর সামনে 'পেচ্ছাপ' শব্দটা বারংবার ব্যবহার করে তাকে আরও ভার্চুয়ালি সেক্সুয়াল হিউমিলিয়েট করার চেষ্টা করলেন নিশীথ বাবু।
"হ্যাঁ .. মানে, না না .. সেরকম কিছু নয় .. আমি এখন যাই? ছেলেটা একা বসে আছে।" এই বলে প্রধান শিক্ষককে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে এক প্রকার দৌড়ে পালালো গোগোলের মাতৃদেবী। দ্রুত পদচারণার ফলে অরুন্ধতীর ভারী তরঙ্গ তোলা নিতম্বের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ট্রাউজারের উপর দিয়ে নিজের পুরুষাঙ্গ এক হাতে ধরে আগুপিছু করতে করতে বাথরুমে প্রবেশ করলেন নিশীথ বটব্যাল।
তখনো বাথরুম জুড়ে অনির্বাণের মাতৃদেবীর হিসির গন্ধে 'ম ম' করছে। ট্রাউজারের চেইন খুলে নিজের পুরুষাঙ্গ বের করে পেচ্ছাপ করতে যাবেন, হঠাৎ তার চোখ পড়লো দেওয়ালে লাগানো টাওয়েল রেইলে একটি কালো রঙের প্যান্টি ঝুলছে। আর পাঁচটা ঘটনার মতো এটিকেও একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভেবে নিয়ে খুব বেশিদিন মনে রাখার হয়তো প্রয়োজন বোধ করতেন না নিশীথ বাবু। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের অত্যন্ত কর্কশ এবং উচ্চ গলার আওয়াজে প্রচন্ড রকম ভয় পেয়ে নার্ভাস হয়ে গিয়ে টয়লেট করার সময় খুলে রাখা নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস পড়তে ভুলে যাওয়াটা তার জীবনের একটা মস্ত বড় ভুল হয়ে যাবে, সেটা অরুন্ধতী কল্পনাও করতে পারেনি। টাওয়েল রেইল থেকে তার কলেজের ছাত্র অনির্বাণের মায়ের অন্তর্বাসটি নামিয়ে নিয়ে অনুভব করলো প্যান্টির সামনের দিকটা তখনও কিছুটা ভিজে রয়েছে। তৎক্ষণাৎ অন্তর্বাসের ওই বিশেষ জায়গাটি নাকের কাছে নিয়ে এসে অরুন্ধতীর পেচ্ছাপ মিশ্রিত যৌনাঙ্গের গন্ধ প্রাণভরে শুঁকলো হেডমাস্টার নিশীথ বটব্যাল .. তারপর অরুন্ধতীর অন্তর্বাস নিজের পুরুষাঙ্গে পেঁচিয়ে ধরে আগুপিছু করতে করতে অস্ফুটে বলে উঠলো "আজ তোমার প্যান্টি দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি সুন্দরী .. একদিন আমার কাছে সুযোগ আসবেই .. আর সেই দিন .."
"স্যার .. আমাদের ক্যাম্পাস চলে এসেছে।" গোগোলের কথায় অতীতের স্মৃতির সরণি বেয়ে বাস্তবের বর্তমানে ফিরে এলেন নিশীথ বাবু। ক্যাম্পাসের মেইন গেট দিয়ে ঢুকে কিছুক্ষণের মধ্যেই গোগোলদের বাংলোর সামনে গাড়ি দাঁড়ালো। প্রধান শিক্ষককে নামার অনুরোধ করে নিজে দরজা খুলে এক লাফে গাড়ি থেকে নেমে ডোরবেল বাজালো গোগোল। কয়েক সেকেন্ড পর দরজা খুলে গেলো।
দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে গোগোলের আনন্দ আর ধরে না .. সে বলে উঠলো "মা জানো .. আজকে আমাদের ছুটি, অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টারমশাই মারা গিয়েছেন তো, তাই। গাড়ি তো আমাকে রেখে দিয়েই চলে এসেছিলো। জানো তো আমি না খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আর খুব কান্নাকাটি করছিলাম। আমাকে কে বাড়ি পৌঁছে দিলেন জানো? ততক্ষণে নিশীথ বাবু দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন