06-04-2022, 07:33 PM
পর্ব- চার
আর কিছুক্ষণ দাড়িয়ে চা শেষ করে নিজের রুমে চলে যায় নিলয়। অফিসের কিছু কাজে হাত দেয়। সেলসের জব হাঁড় খাটুনি কাজ। সারাদিন পায়ের উপর থাকতে হয়। প্রতি মাসের টার্গেট ফিলাপ করা, ডিলার-ক্রেতা দুজনকেই মুনাফার ভারসাম্য রেখে চালানো সহজ নয়। সেলস স্ট্র্যাটেজি সাজিয়ে নিতে থাকে।
রাত বাড়তে থাকে, খাবার গরম করতে হবে। তথা কি করছে একবার কি দেখে আসবে ভাবতে ভাবতে ওর রুমের দরজায় এসে দাড়ায় নিলয়।
দরজা টা খোলায় আছে।
টেবিলে বসে একমনে পড়াশোনা করে চলেছে। তথা মেধাবী ছাত্রী, কঠিন কঠিন সমস্যা গুলোকে সহজে বোধগম্য হবার মত করে সাজিয়ে নে ও। সাইন্সে পড়তে গেলে মেধাবী না হয়ে উপায় নেই। উচ্চতর গণিতের লগারিদম- ম্যাট্রিক্স-ভেক্টর-সমকরন-ব্যবকরন, পদার্থ বিজ্ঞানের ফোর্স ল'-ভেক্টর-অভিকর্ষণ, জীববিজ্ঞানের প্রাণী শ্রেনিবিন্যাস-কোষ বিভাজন-জীবনের ব্যবছেদ, রসায়নের অনু পরমানু- জৈব রসায়ন- ক্রিয়া বিক্রিয়ার হাজারো সূত্র আর তত্ত্ব মাথায় রাখা মোটেই সহজ নয়।
রান্না বসাতে হবে তাই নিলয়ে চুলোর দিকে যেতে চায়, কিন্তু কিছু একটা ওকে আটকে রাখে ওখানেই। নিলয় একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তথার দিকে। না, তথার মুখ দেখা যাচ্ছে না দরজা থেকে। টেবিলে বসা অবস্থায় পিছনের দিকে দরজা টা পরে। তাহলে নিলয় কি দেখছে মন্ত্রমুগ্ধের মত?
তথার খোলা চুল। পুরো পিঠ জোরে ছড়িয়ে আছে ঘন লম্বা চুলের বাহার। সিলিং ফ্যানের বাতাসে মাঝে মাঝে উড়ছে চুল গুলো। আহা কত সুন্দর মনোরম দৃশ্য। নিলয়ের মনে রোমাঞ্চ জেগে উঠে। ওর হৃদয় বলে উঠে দৌড়ে গিয়ে ঝাপটে ধরে খোলা চুলে মুখ বুজে দিতে। পাগলের মত চুলের ঘ্রান নিতে। মাদকতার মত টানে ওকে, এ নেশা ভয়ংকর নেশা। কোকেনের নেশা এই চুলের মাঝে মুখ বুজে গন্ধ নেয়ার কাছে তুচ্ছ। কিছুক্ষণের জন্য মনে হয় পৃথিবীর সব শান্তি হয়তো ওখানে লুকিয়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরুক, শরীর মিশিয়ে দেক ওর শরীরে সাথে। উষ্ণতা ভাগ করে নিক দুজন দুজনার থেকে। সারা রাত ওর চুলের ঘ্রানের আবেশে জড়িয়ে থাকুক, হয়তো বা হাতের আঙুল গুলো অবাধ্য হয়ে ছুটে যাবে যাবে এদিক ওদিক, হোক অবাধ্য। আঙুল গুলো চড়িয়ে বেড়াক সারা শরীরে। শিহরিত হয়ে উঠুক শরীর। না না আর ভাবতে পারছে না নিলয়৷ মন ওখান থেকে সরতে চায় না কিন্তু মস্তিষ্ক বলে চলে যা এখান থেকে, শান্ত কর নিজেকে। তর কোন অধিকার নেই ওর উপর।
খাবার গরম করে তথা কে ডাক দেয় নিলয়। খেতে বসে সেই দুপুরের আলু পটলের পাবদা মাছের তরকারি দেখে বিতৃষ্ণায় মুখশ্রী পাল্টে যায় তথার। ওর এক মাছ বারবার খেতে ভাল রাগে না। উঁচু স্বরে বলে উঠে
-এক মাছ আবার খেতে ভাল লাগে না। অন্য কিছু নেই? আমি এ মাছ এখন খেতে পারবো না।
-(শান্ত গলায়) আজ তো আর কিছু রান্না করা নেই।
-ধুর বাবা! তাহলে আর খাবই না। বলে উঠতে চলে তথা
-(নিলয় ওকে থামিয়ে দেয়) বসো এখানে দেখি অন্য কিছু ব্যবস্থা করা যায় কিনা।
ওঠে চুলার সাথের তাকে চোখ বোলায় নিলয়। তেমন কিছুই নেই ঘরে। কয়েকটা ডিম আছে দেখেই চটজলদি বুদ্ধি আটে। গুটি দুয়েক পেয়াজ, শশা আর গাজর কুচি করে কেটে নেয়। গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে কড়াই চাপিয়ে দেয়, তাতে তেল গরম করে কুচি করে রাখা পেয়াজ-শশা-গাজর গুলো দিয়ে দেয়। পেয়াজের রঙটা হালকা বাদামি হতেই একটা ডিম ভেঙে ওতে দিয়ে দেয়। সাথে একটু লবন আর হলুদ গুড়ো ছিটিয়ে দিয়ে ভাল করে নাড়াতে থাকে। হালকা নাড়ানোর পর তাতে তথার প্লেটের ভাত গুলো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নেয়। ম্যাগীর ম্যাজিক মশলা দিয়ে আরেকটু নাড়াতেই চটপট তৈরী হয়ে যায় গরীবের ফ্রাইড রাইস। প্লেটে করে নিয়ে যায় তথার সামনে।
-কি এবার চলবে তো?
-(ছোট্ট করে মেকি হাসি দিয়ে) কি করা যাবে। চালিয়ে নিতে হবে।
-(হতাশ সুরে) হায় ভগবান। এরপরও না চললে আমি কোথায় যাবো?
-না না কোথাও যেতে হবে না। আমি খেয়ে নিচ্ছি। মুখে নিতেই আনারি হাতের স্বাদ টা টের পায় তথা, খারাপ হয়নি। রেস্টুরেন্টে মত না হলেও খারাপ হয়নি৷ স্বাদটাও ভিন্ন লাগছে। মনে অনুশোচনা জাগে৷ তখন ওভাবে না বললেও হতো। সারাদিন পরিশ্রম করে এসে আবার আমার জন্য হাত পুড়াতে হলো। হুম রান্নাটা ভাল হয়েছে নিলয় কে কি একবার নিতে বলবে। না বাবা থাক।
নিলয় খেতে খেতে মাঝে মাঝে তথার মুখটা দেখছে। কি যেন বিড়বিড় করছে তখন থেকে। ভাল হয়নি হয়তো। নুন ঠিক আছে কিনা কে জানে। একবার কি জিজ্ঞেস করবো। না থাক! আবার যদি রেগে যায়৷ আবার তাকায় তথার মুখের দিকে। মনে হয় ও মুচকি হাসছে। ভুল দেখলাম না তো। এ কিরে বাবা এই বিরবির করে কথা বলছে এই মুচকি হাসছে। ভূতে ধরলো না তো আবার। তবে হাসিটা চোখে লাগে নিলয়ের। এ মেয়ে যে হাসতে জানে সেটাই তো দেখেনি কখনো। হাসলে আরও সুন্দর দেখা যায় তথা কে। মাঝে মাঝে একটু হাসতে পারে তো নাকি।
ও কি জানে এই হাসিতেই কত হৃদয় ফাঁসে....
আর কিছুক্ষণ দাড়িয়ে চা শেষ করে নিজের রুমে চলে যায় নিলয়। অফিসের কিছু কাজে হাত দেয়। সেলসের জব হাঁড় খাটুনি কাজ। সারাদিন পায়ের উপর থাকতে হয়। প্রতি মাসের টার্গেট ফিলাপ করা, ডিলার-ক্রেতা দুজনকেই মুনাফার ভারসাম্য রেখে চালানো সহজ নয়। সেলস স্ট্র্যাটেজি সাজিয়ে নিতে থাকে।
রাত বাড়তে থাকে, খাবার গরম করতে হবে। তথা কি করছে একবার কি দেখে আসবে ভাবতে ভাবতে ওর রুমের দরজায় এসে দাড়ায় নিলয়।
দরজা টা খোলায় আছে।
টেবিলে বসে একমনে পড়াশোনা করে চলেছে। তথা মেধাবী ছাত্রী, কঠিন কঠিন সমস্যা গুলোকে সহজে বোধগম্য হবার মত করে সাজিয়ে নে ও। সাইন্সে পড়তে গেলে মেধাবী না হয়ে উপায় নেই। উচ্চতর গণিতের লগারিদম- ম্যাট্রিক্স-ভেক্টর-সমকরন-ব্যবকরন, পদার্থ বিজ্ঞানের ফোর্স ল'-ভেক্টর-অভিকর্ষণ, জীববিজ্ঞানের প্রাণী শ্রেনিবিন্যাস-কোষ বিভাজন-জীবনের ব্যবছেদ, রসায়নের অনু পরমানু- জৈব রসায়ন- ক্রিয়া বিক্রিয়ার হাজারো সূত্র আর তত্ত্ব মাথায় রাখা মোটেই সহজ নয়।
রান্না বসাতে হবে তাই নিলয়ে চুলোর দিকে যেতে চায়, কিন্তু কিছু একটা ওকে আটকে রাখে ওখানেই। নিলয় একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তথার দিকে। না, তথার মুখ দেখা যাচ্ছে না দরজা থেকে। টেবিলে বসা অবস্থায় পিছনের দিকে দরজা টা পরে। তাহলে নিলয় কি দেখছে মন্ত্রমুগ্ধের মত?
তথার খোলা চুল। পুরো পিঠ জোরে ছড়িয়ে আছে ঘন লম্বা চুলের বাহার। সিলিং ফ্যানের বাতাসে মাঝে মাঝে উড়ছে চুল গুলো। আহা কত সুন্দর মনোরম দৃশ্য। নিলয়ের মনে রোমাঞ্চ জেগে উঠে। ওর হৃদয় বলে উঠে দৌড়ে গিয়ে ঝাপটে ধরে খোলা চুলে মুখ বুজে দিতে। পাগলের মত চুলের ঘ্রান নিতে। মাদকতার মত টানে ওকে, এ নেশা ভয়ংকর নেশা। কোকেনের নেশা এই চুলের মাঝে মুখ বুজে গন্ধ নেয়ার কাছে তুচ্ছ। কিছুক্ষণের জন্য মনে হয় পৃথিবীর সব শান্তি হয়তো ওখানে লুকিয়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরুক, শরীর মিশিয়ে দেক ওর শরীরে সাথে। উষ্ণতা ভাগ করে নিক দুজন দুজনার থেকে। সারা রাত ওর চুলের ঘ্রানের আবেশে জড়িয়ে থাকুক, হয়তো বা হাতের আঙুল গুলো অবাধ্য হয়ে ছুটে যাবে যাবে এদিক ওদিক, হোক অবাধ্য। আঙুল গুলো চড়িয়ে বেড়াক সারা শরীরে। শিহরিত হয়ে উঠুক শরীর। না না আর ভাবতে পারছে না নিলয়৷ মন ওখান থেকে সরতে চায় না কিন্তু মস্তিষ্ক বলে চলে যা এখান থেকে, শান্ত কর নিজেকে। তর কোন অধিকার নেই ওর উপর।
খাবার গরম করে তথা কে ডাক দেয় নিলয়। খেতে বসে সেই দুপুরের আলু পটলের পাবদা মাছের তরকারি দেখে বিতৃষ্ণায় মুখশ্রী পাল্টে যায় তথার। ওর এক মাছ বারবার খেতে ভাল রাগে না। উঁচু স্বরে বলে উঠে
-এক মাছ আবার খেতে ভাল লাগে না। অন্য কিছু নেই? আমি এ মাছ এখন খেতে পারবো না।
-(শান্ত গলায়) আজ তো আর কিছু রান্না করা নেই।
-ধুর বাবা! তাহলে আর খাবই না। বলে উঠতে চলে তথা
-(নিলয় ওকে থামিয়ে দেয়) বসো এখানে দেখি অন্য কিছু ব্যবস্থা করা যায় কিনা।
ওঠে চুলার সাথের তাকে চোখ বোলায় নিলয়। তেমন কিছুই নেই ঘরে। কয়েকটা ডিম আছে দেখেই চটজলদি বুদ্ধি আটে। গুটি দুয়েক পেয়াজ, শশা আর গাজর কুচি করে কেটে নেয়। গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে কড়াই চাপিয়ে দেয়, তাতে তেল গরম করে কুচি করে রাখা পেয়াজ-শশা-গাজর গুলো দিয়ে দেয়। পেয়াজের রঙটা হালকা বাদামি হতেই একটা ডিম ভেঙে ওতে দিয়ে দেয়। সাথে একটু লবন আর হলুদ গুড়ো ছিটিয়ে দিয়ে ভাল করে নাড়াতে থাকে। হালকা নাড়ানোর পর তাতে তথার প্লেটের ভাত গুলো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নেয়। ম্যাগীর ম্যাজিক মশলা দিয়ে আরেকটু নাড়াতেই চটপট তৈরী হয়ে যায় গরীবের ফ্রাইড রাইস। প্লেটে করে নিয়ে যায় তথার সামনে।
-কি এবার চলবে তো?
-(ছোট্ট করে মেকি হাসি দিয়ে) কি করা যাবে। চালিয়ে নিতে হবে।
-(হতাশ সুরে) হায় ভগবান। এরপরও না চললে আমি কোথায় যাবো?
-না না কোথাও যেতে হবে না। আমি খেয়ে নিচ্ছি। মুখে নিতেই আনারি হাতের স্বাদ টা টের পায় তথা, খারাপ হয়নি। রেস্টুরেন্টে মত না হলেও খারাপ হয়নি৷ স্বাদটাও ভিন্ন লাগছে। মনে অনুশোচনা জাগে৷ তখন ওভাবে না বললেও হতো। সারাদিন পরিশ্রম করে এসে আবার আমার জন্য হাত পুড়াতে হলো। হুম রান্নাটা ভাল হয়েছে নিলয় কে কি একবার নিতে বলবে। না বাবা থাক।
নিলয় খেতে খেতে মাঝে মাঝে তথার মুখটা দেখছে। কি যেন বিড়বিড় করছে তখন থেকে। ভাল হয়নি হয়তো। নুন ঠিক আছে কিনা কে জানে। একবার কি জিজ্ঞেস করবো। না থাক! আবার যদি রেগে যায়৷ আবার তাকায় তথার মুখের দিকে। মনে হয় ও মুচকি হাসছে। ভুল দেখলাম না তো। এ কিরে বাবা এই বিরবির করে কথা বলছে এই মুচকি হাসছে। ভূতে ধরলো না তো আবার। তবে হাসিটা চোখে লাগে নিলয়ের। এ মেয়ে যে হাসতে জানে সেটাই তো দেখেনি কখনো। হাসলে আরও সুন্দর দেখা যায় তথা কে। মাঝে মাঝে একটু হাসতে পারে তো নাকি।
ও কি জানে এই হাসিতেই কত হৃদয় ফাঁসে....
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।