05-04-2022, 08:38 PM
(This post was last modified: 10-04-2022, 08:31 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(৩)
অনিরুদ্ধর পছন্দ-অপছন্দ, ভালোলাগা-মন্দলাগা, রুচি-অরুচি .. এই কদিনে সবকিছুই প্রায় বৈশালীর আয়ত্তে, বলা ভালো নখদর্পনে চলে এসেছে। আর এই পুরো ব্যাপারটাতেই অনিরুদ্ধর কাছে একটা বিস্ময় তো বটেই তার সঙ্গে অসম্ভব ভালোলাগাও জড়িয়ে আছে। সে জানে, পৃথিবীতে একজনের জন্য আর একজনকে ঠিক করা থাকে, আর যাকে খুঁজে বেড়াতে হয় আজীবন .. অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই মনের মানুষের খোঁজ পাওয়া সম্ভবপর হয় না। তার স্ত্রী অরুন্ধুতী কোনোদিনই তার কাছের মানুষ এবং মনের মানুষ হতে পারেনি এ কথা অনিরুদ্ধ বিবাহের কিছুকাল পর থেকে প্রতি মুহূর্তে বুঝতে পেরেছে। কিন্তু আজ যখন সে বৈশালীকে খুঁজে পেয়েছে তখন 'কি চেয়েছি আর কি পেয়েছি ..' এই হিসেব সে করতে চায় না। সে এখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে করে।
বৈশালী আসার পর তার জীবনে আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন তার সকালের ব্রেকফাস্ট থেকে শুরু করে রাতের ডিনার পর্যন্ত সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে বৈশালী। অনিরুদ্ধর কথামতো মনে হাজার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এবং কষ্ট নিয়ে অরুন্ধতীকে তার হুকুম তামিল করতে হয়। আপাতদৃষ্টিতে মৌখিকভাবে হয়তো অনিরুদ্ধ তার দরকার কিংবা অপছন্দের কথা জানায়, কিন্তু পেছন থেকে যে সবকিছুই বৈশালীর অঙ্গুলিহেলনে চলে এ কথা অনস্বীকার্য। অফিসে কোন পোশাক পরে আসবে সেটা পর্যন্ত বৈশালী ঠিক করে দেয় অনিরুদ্ধ'র হয়ে। আসলে তার মনটাই যে বৈশালীর নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। তবে অনিরুদ্ধ এটাও জানে এবং মনে মনে স্বীকার করে, তার জীবন এখন অন্য খাতে বইতে শুরু করলেও সংসারকে অবহেলা করে সে কিছু করবে না। কারণ তার একমাত্র সন্তান গোগোল যে তার প্রাণের চেয়েও প্রিয়। এছাড়া স্ত্রীর প্রতি বিন্দুমাত্র ভালোবাসা অবশিষ্ট না থাকলেও তার প্রতি, বলা ভালো সংসারের প্রতি বরাবর কর্তব্য পরায়ণ অনিরুদ্ধ। এতদিন ধরে চলে আসা তার জীবনের সিস্টেমের পরিবর্তন করা কম কথা নয়। একটা সংস্কার ভাঙা ভীষণ কঠিন মধ্যবিত্ত সমাজের ক্ষেত্রে আর তা যদি মা-বাবার দেওয়া শিক্ষা অনুযায়ী শিশুকাল থেকেই মনের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকে।
অরুন্ধতীর মামা মারা গিয়েছে কয়েকদিন হলো। স্বভাবতই মনটা ভারাক্রান্ত তার .. শৈশবকালেই মা বাবাকে হারানোর পর ওই একটা মানুষের কাছ থেকেই তো নিঃস্বার্থভাবে স্নেহ ও ভালোবাসা পেয়েছিল সে। আগামীকাল শ্রাদ্ধানুষ্ঠান .. মামী লতিকা দেবী সেই অর্থে যেতে না বললেও, অরুন্ধতী একপ্রকার জোর করেই ওখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মামার কাজে উপস্থিত থেকে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা এবং সমবেদনা জানানোর প্রবল ইচ্ছা থেকে এইরূপ সিদ্ধান্ত তো বটেই। এছাড়াও বহুদিন পর তার জন্মস্থান কনকপুরে যাওয়ার একটা টান অনুভব করছিলো সে .. আসলে মানুষের মন যখন খারাপ হয় তখন তার ছোটবেলার স্মৃতি রোমন্থন করে সেটাকে ভুলে থাকার চেষ্টা করে সে। তবে মামীর ট্যাঁরাব্যাঁকা কথা শুনতে হবে জেনেও মামার বাড়ি যাবার সিদ্ধান্তের সব থেকে বড় কারণ হলো কাউকে তো দেখাতে পারবে যে তারও নিজের বলতে কেউ আছে এখনো। আসলে মানুষের মন বড়ই রহস্যময় .. কখন যে কি ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় তা বোধহয় সে নিজেও সব সময় বুঝতে পারে না।
★★★★
এর আগে বৈশালী একবার মাত্র অনিরুদ্ধর বাংলোতে এসেছে, তাও আবার চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মিস্টার চক্রবর্তীর সঙ্গে। আসলে গোগোলের জন্মদিনের নেমন্তন্নটা প্রতিবারের মতোই মিস্টার চক্রবর্তীর জন্যই ছিলো অরুন্ধতীর তরফ থেকে .. তিনি অরুন্ধতীকে নিজের মেয়ের মতো স্নেহ করেন। কিন্তু বৈশালী জোর করে অনিরুদ্ধকে দিয়ে নিজের নাম'টা নিমন্ত্রিত ব্যক্তিদের তালিকায় ঢুকিয়ে নেয়। এর পেছনে প্রধান এবং অন্যতম কারণ হলো সামনে থেকে একবার অনিরুদ্ধর স্ত্রীকে দেখা। বাহ্যিক রূপের চটক, উচ্চশিক্ষা, স্মার্টনেস .. এই সবে হয়তো সে অরুন্ধতীর থেকে এগিয়ে থাকলেও, শরীরের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য এবং আকর্ষণের দিক থেকে সে অরুন্ধতীর ধারেকাছেও আসতে পারবে না কোনোদিন, এটা ভেবে ভেতর ভেতর যথেষ্ট ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েছিলো বৈশালী।
অমৃত সমান গলদা চিংড়ির মালাইকারি আর মাটন কোর্মা মুখে তুলেই "বাবা বড্ড রিচ্ .. আমার পক্ষে খাওয়া সম্ভব নয়" এই বলে অনিরুদ্ধর দিকে কপট দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল সে। অল্প বয়সী যুবতী প্রেমিকাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস এবং ভরসা করা অনিরুদ্ধ, বৈশালীর পক্ষ নিয়ে তার স্ত্রীর এইরূপ তেল, ঝাল, মসলা দিয়ে রান্না করার বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছিল। অশ্রুসিক্ত অরুন্ধতীর চোখের দিকে তাকিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে উঠে মিস্টার চক্রবর্তী বলেছিলেন "আসলে সবার পেটে সবকিছু সহ্য হয় না তো .. তাই ভালো কে খারাপ আর খারাপ কে ভালো না বলে প্রকৃত গুণের কদর করা প্রকৃত মানুষের ধর্ম।" তার খাবারের প্রশংসা করে এইরূপ মন্তব্য করছে তার স্বামীর উর্দ্ধতন সহকর্মী এটা ভেবে অরুন্ধতী মনে-মনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও, মিস্টার চক্রবর্তী কথাগুলো শুধুমাত্র অরুন্ধতীর রন্ধনশৈলীতে নৈপুণ্যতার জন্য বলেননি। আসলে ততদিনে অফিসের প্রায় সর্বত্র অনিরুদ্ধ এবং বৈশালীর সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছিল। কন্যাসম অরুন্ধতীকে অপমানিত হতে দেখে তাই নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি মিস্টার চক্রবর্তী। বৈশালীর জন্য স্বভাবতই সেই সন্ধ্যার অভিজ্ঞতা ভালো ছিলো না, তাই অরুন্ধতী এবং গোগোলের অবর্তমানে অনিরুদ্ধর বাংলোতে পুনরায় আসার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইলো না সে।
★★★★
গ্রামের বাড়ি যাওয়া নিয়ে গতকাল রাতে স্ত্রীর সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হয়েছে তার। ক্লাস ফাইভে পড়া ছোট্ট গোগোল এতদিন তার বাবা-মার মনোমালিন্য, ঝগড়া এইসবের মধ্যে না থাকলেও (যদিও এই সবকিছুতে হস্তক্ষেপ করার বয়স তার এখনো হয়নি) গতকাল রাতে এই প্রথম মায়ের পক্ষে থেকে প্রতিবাদ করে তার বাবার উদ্দেশ্যে বলেছিলো "তুমি আজকাল একটুও ভালোবাসো না আমাকে, মা'কেও ভালোবাসো না .. সারাদিন শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকো, একটুও সময় দাও না আমাকে। কলেজের পেরেন্টস মিটিংয়ে কখনো যাও না, সবার বাবা যায় .. আমার কি ইচ্ছে করে না বলো! মা দাদুর বাড়ি যেতে চাইছে তাতেও তুমি বাধা দিচ্ছো .. কেনো? আমরা যাবোই।"
তার সন্তানকে সে ভালোবাসে না - এই কথাটা ছাড়া বাকি কথাগুলো তো মিথ্যে নয়, তাই প্রতিবাদ করতে পারেনি অনিরুদ্ধ। অরুন্ধতী গোগোলকে নিয়ে সকালবেলা কনকপুরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলেও তার স্বামীর জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করে যেতে ভোলে নি, আর সর্বক্ষণের সঙ্গী আর্দালি তো আছেই সবকিছু করে দেওয়ার জন্য। মন ভারাক্রান্ত অনিরুদ্ধর .. আর মনের সঙ্গে শরীর ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই আজ সে অফিস যায় নি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললো, খাওয়ার যে বিশেষ ইচ্ছে আছে তাও নয়। আর্দালিকে অর্ধ দিবসের ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে বৈঠকখানা ঘরে বসে খবরের কাগজের পাতা উল্টাচ্ছিলো অনিরুদ্ধ।
ডোরবেলের শব্দে উঠে গিয়ে দরজা খুলে প্রথমে কিছুক্ষণ বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকলো সে .. তারপর সাদা রঙের জামদানি এবং লাল রঙের স্লিভলেস ব্লাউজ পরিহিতা বৈশালীকে দেখে মন খারাপ এবং তার কারণ - সবকিছু ভুলে গেলো অনিরুদ্ধ। একটা অজানা শিহরণ জাগানো ভালোলাগায় ভরে উঠলো তার মন। হাসিমুখে বৈশালীকে ভেতরে নিয়ে আসলো অনিরুদ্ধ।
★★★★
"আজ অফিসে এলে না .. কাল রাতের পর তো একটাও ফোন করলে না আমাকে! আজ এতবার ফোন করলাম, তুললে না কেনো অনি? তুমি বুঝতে পারো না তোমার সঙ্গে বেশিক্ষণ কথা না হলে আমার টেনশন হয় .. তার উপর তুমি একা আছো! কি খাওয়া-দাওয়া করবে ভগবান জানে.." এক নিঃশ্বাসে অনুযোগের সুরে কথাগুলো বলে চললো বৈশালী।
অনিরুদ্ধ তাকে আশ্বস্ত করে বোঝানোর চেষ্টা করলো - সে এমনিতে ঠিক আছে, শরীরটা একটু ম্যাজম্যাজ করছে .. তাই আজ আর অফিসে যায় নি। স্ত্রী খাবার বানিয়ে গেছে, তাছাড়া আর্দালি একটু আগে সমস্ত খাবার গরম করে দিয়ে এখন বাড়িয়ে গেছে। তাই চিন্তার কিছু নেই।
কথাগুলো মোটেই পছন্দ হলো না বৈশালীর "যখন আমি এসে গিয়েছি, তখন তোমাকে ওইসব খাবার আমি খেতে দেবো না। আমি আমাদের দু'জনের জন্য জিরা রাইস আর চিকেন স্টু বানিয়ে এনেছি .. একসঙ্গে আজ লাঞ্চ করবো দু'জনে।" বৈশালীর কথাগুলো মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিলো অনিরুদ্ধ। অরুন্ধতীর বানানো খাবারগুলা টেবিলেই পড়ে রইলো। বৈশালীর আনা 'হেলদি ফুড' দিয়ে লাঞ্চ সম্পন্ন করার পর অনিরুদ্ধ যখন পুনরায় বৈঠকখানার ঘরে যাওয়ার উপক্রম করছিল, সেই মুহূর্তে বৈশালী বলে উঠলো "মুখেই শুধু বলো, আসলে তুমি আমাকে মোটেই তোমার কাছের মানুষ মনে করো না .. তা না হলে অতিথিদের মতো ড্রইংরুমে বসিয়ে রাখতে না.."
সব কথার উত্তর কথা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। বৈশালীর কথার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে এবং সেটাকে বাস্তবায়িত করতে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি দিয়ে বৈশালীর হাত ধরে দু'জনে একসঙ্গে অনিরুদ্ধ এবং অরুন্ধতীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করলো। যে ঘরের প্রত্যেকটি জিনিস .. কুশন কভার থেকে শুরু করে বিছানার চাদর, শো-পিস থেকে শুরু করে জানলার পর্দা .. সবকিছু অরুন্ধতীর নিজের হাতে যত্ন করে সাজানো। সাজানো বাগান বোধহয় এই ভাবেই তছনছ হয়ে যায়।
★★★★
বেডরুমে প্রবেশ করার পর বৈশালী ধীরে ধীরে অনিরুদ্ধর একদম কাছে এগিয়ে এলো .. বড় বড় শ্বাস নিচ্ছিলো সে। ডান হাত দিয়ে অনিরুদ্ধর বাঁ কাঁধটা চেপে ধরলো। ওর চোখ ঠিক অনিরুদ্ধর চোখের সামনে। নিস্পলক সেই ভাষা বুঝতে অনিরুদ্ধর বিশেষ অসুবিধে হলো না, ডান হাতে বৈশালীর সরু কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে আনলো।
মাথা টা একটু ঝুঁকিয়ে ওর ঠোঁটের সাথে ঠোঁট গুঁজে দিলো অনিরুদ্ধ। লিপস্টিকের স্বাদ কিছুটা মিষ্টি, বৈশালীর কাছ থেকে শুনেছে এটাকে 'আরডেন্ট অ্যাম্বার' বলে, ওষ্ঠ চুম্বনের সময় মুখনিঃসৃত লালার সঙ্গে যা পেটে চলে গেলেও কোনো ক্ষতি হয় না। আস্তে আস্তে ওর ওপরের আর নিচের ঠোঁট চুষে মুখের ভিতরে জিভ ঢুকিয়ে দিলো অনিরুদ্ধ।
বৈশালীর ঘাড়ের অনাবৃত অংশ থেকে নিঃসৃত বিদেশী পারফিউমের গন্ধে অনিরুদ্ধর নাক প্রায় বুজে আসছে। অনিরুদ্ধর মনে হলো - অরুন্ধতী বাড়িতে জীবনেও পারফিউম ব্যবহার করা তো দূর অস্ত বাইরে বেরোনোর সময়ও ওকে পারফিউম লাগানোর কথা মনে করিয়ে দিতে হয়। বিয়ের পর থেকে ওর গায়ের সেই চেনা নারী শরীরের মিষ্টি ঘামের গন্ধ প্রথমদিকে অমৃত সমান মনে হলেও এখন একঘেঁয়ে হয়ে গিয়েছে, আর ভালো লাগে না। বৈশালীর শরীর হতে নিঃসৃত পারফিউমের গন্ধ অন্য আঙ্গিকে পৌঁছে দিলো তাকে।
বৈশালী তাকে কোনও বাধা দিলো না, বরং অনিরুদ্ধর বাঁ হাতটা তুলে আনলো ওর বুকের ওপরে। ততক্ষণে খসে পড়া শাড়ির আঁচলের নিচে স্লিভলেস ব্লাউজের উপর দিয়েই ওর ব্রায়ের কাপ দুটো দুই হাতে টিপে ধরতে থাকলো অনিরুদ্ধ। শোবার ঘরের ঝোলানো তাদের স্বামী-স্ত্রীর বিয়ের ঠিক পরেই তোলা একটি এনলার্জ করে ল্যামিনেট করা ছবির পাশের দেওয়ালে ওকে ঠেসে ধরলো ব্যাল্যান্স মেইন্টেন করার জন্যে। বৈশালীর ঠোঁট, জিভ খাওয়া একটু থামিয়ে খুব কাছ থেকে ওকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে লাগলো অনিরুদ্ধ। দুধে আলতা গায়ের রঙ, উন্নত নাসিকা যুক্ত বৈশালী যেন কাজল নয়না হরিণী। দুই হাতের চুড়ির রিনিঝিনি আওয়াজ হচ্ছে নড়াচড়ায়। একটু হাঁপাচ্ছে ও .. অনিরুদ্ধ ধীরে ধীরে ওর দুটো চোখে চুম্বন করে ডান কানের লতিতে জিভ দিয়ে চেটে দিতে লাগলো। সুরসুরি পেয়ে খিলখিল করে হেসে উঠলো বৈশালী। এই মুহূর্তে তাকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ নারী মনে হচ্ছে অনিরুদ্ধর।
মন বলছে এটা হয়তো ঠিক হচ্ছে না, এর বেশি আর এগোনো উচিৎ নয়। কিন্তু শরীর চাইছে এক ভয়ঙ্কর ঝড়, যা সবকিছু ওলট-পালট করে দিলেও তারা আজ পিছ'পা হবে না। বৈশালীর খসে যাওয়া আঁচলের তলা দিয়ে অনিরুদ্ধ তার ডান হাত ভিতরে ঢুকিয়ে দিলো। নির্মেদ, চ্যাপ্টা পেটে হাত বুলিয়ে, তারপর কুয়াশা ঘেরা পূর্ণিমার চাঁদের মতো পূর্ণচন্দ্রাকৃতি অথচ সেই অর্থে অগভীর নাভির গভীরতা মেপে ধীরে ধীরে বৈশালীর স্তনযুগলের কাছে অগ্রসর হলো অনিরুদ্ধর হাত। বড় বড় চোখ করে অনিরুদ্ধর দিকে তাকিয়ে বৈশালী যেন অনুমান করার চেষ্টা করছে এর পড়ে ঘটতে চলা অবশ্যম্ভাবী ঘটনাপ্রবাহ। অনিরুদ্ধর আঙ্গুলগুলো ব্লাউজের হুকে ঠেকতেই জিজ্ঞাসু চোখে তার দিকে তাকিয়ে সঙ্কুচিত নেত্রে প্রথমে দু'দিকে মাথা নাড়িয়ে অসম্মতি সূচক ভঙ্গিমা করলেও, পরমুহূর্তে লজ্জাশীলা মুখে মুচকি হেসে নিজের দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো বৈশালী। এটা যে সবুজসংকেত ছাড়া আর কিছুই নয় তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি অভিজ্ঞ অনিরুদ্ধর।
হুকগুলো দ্রুতহস্তে খুলে, লাল রঙের স্লিভলেস ব্লাউজটা সম্পূর্ণ উন্মোচন করে খাটের উপর ছুঁড়ে ফেলে দিলো অনিরুদ্ধ। তারপর ব্রায়ের কাপ দুটো উপরে তুলে ধরতেই তার চোখের সামনে দৃশ্যমান হলো বৈশালীর স্তনদ্বয় .. তার পীতাভ শুভ্র দুটি স্তন যেন একে অপরের জায়গা দখল করে পরষ্পর চাপাচাপি করে আছে। পাণ্ডু-গৌর স্তনদ্বয়ের ওপর দুটি গোলাপি বৃন্ত। স্তনজোড়া এতটাই প্রবৃদ্ধ এবং বর্তুল যে সে-দুটির মধ্যে একটি সূক্ষ্ম মৃণালতন্তুও সম্ভবত প্রবেশ করানো যায় না। অনিরুদ্ধ কয়েক মুহুর্ত অপলক মুগ্ধ দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করতে লাগলো সেই দৃশ্য।
বৈশালী লজ্জায় চোখ বন্ধ করে মাথা পিছনের দিকে এলিয়ে দিলো। অনিরুদ্ধ ওর গলায় নাক গুঁজে শরীরের বিদেশী পারফিউম মিশ্রিত মাদকিয় গন্ধ শুঁকতে লাগলো। ভেজা ঠোঁট দিয়ে একের পর এক চুমু খেতে থাকলো ওর ঘাড়ে আর গলায়। “উম্মম্মম্ম” .. বৈশালীর গলা থেকে চাপা আওয়াজ বেরিয়ে এলো। অনিরুদ্ধ ওর ডান স্তনের বৃন্ত দু'আঙ্গুলের মাঝে নিয়ে সুরসুরি দিতেই, দুই হাতের নখ দিয়ে বৈশালী তৎক্ষণাৎ খামচে ধরলো তার সঙ্গীর পিঠ। ওর হাতের চুড়ির ছনছন শব্দ যেন আরও মাদকিয় করে তুলছে এই মূহূর্তটাকে। এবার অনিরুদ্ধ তার দু'হাত দিয়ে বৈশালীর স্তনজোড়া একসঙ্গে মর্দন করতে শুরু করলো। বৈশালী তার শরীরটাকে বাঁকিয়ে নিজেকে যেন অনিরুদ্ধর সাথে আরও বেশী করে মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। অনিরুদ্ধ নিজেকে ক্রমশ হারিয়ে ফেলছিলো ওর মাদকতাময় শরীরের মায়াজালে। দাঁড়ানো অবস্থায় এইরূপ যৌনক্রিয়া চালিয়ে যেতে পরস্পরের বিশেষত বৈশালীর অসুবিধা হচ্ছিলো। তাই অনিরুদ্ধ বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে ওকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে বিছানার উপর শুইয়ে দিয়ে পদস্খলনের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো .. সময় তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চলেছে।
ঘড়ির দিকে এক পলক তাকিয়ে একটু বিচলিত হয়তো বা কিছুটা উসখুস করে উঠলো বৈশালী। শরীরের গোপন অঙ্গগুলিতে অনিরুদ্ধর আদরে সে হয়তো অতি মাত্রায় উত্তেজিত হয়ে উঠেছে বা কে বলতে পারে তার হয়তো অন্য কোথাও যাওয়ার আছে। এমত অবস্থায় বৈশালী দু'হাতে অনিরুদ্ধকে আঁকড়ে ধরে ওর ঘাড়ে গলায় নাক ঘষতে ঘষতে কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বললো "এবার আমাকে নাও সোনা .. আমি যে আর পারছি না।"
সবুজ সঙ্কেত আগেই পেয়ে গিয়েছিলো, এখন আবার তার প্রেয়সীর কাছ থেকে মৌখিক মধু মাখানো অনুরোধ .. অনিরুদ্ধ ক্ষিপ্র হস্তে বৈশালীর কোমরে গোঁজা থাকা শাড়ির বাকি অংশটুকু নিমেষের মধ্যে খুলে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিলো। তারপর লাল সার্টিন কাপড়ের পেটিকোটের দড়িটা খুলে বৈশালীর কোমরের পিছনে হাত নিয়ে গিয়ে কিছুটা উপর দিকে উঠিয়ে আস্তে করে পেটিকোটটা পায়ের নিচ দিয়ে গলিয়ে শরীরের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিলো। গোলাপির উপর সাদা ফুল ফুল রঙের একটা প্যান্টি পড়ে আছে বৈশালী। অনিরুদ্ধ ধীরে ধীরে ওর কোমরের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে তলপেট এবং নাভির চারপাশে আলতো করে কামড় দিতে দিতে প্যান্টির ওপর দিয়েই নাক গুঁজে দিলো ওর দু'পায়ের মাঝখানে। বৈশালীর যৌনাঙ্গের রসে ভিজে গেলো অনিরুদ্ধর নাক এবং তার চারপাশের অংশ। কোমর বেঁকিয়ে বেঁকিয়ে বৈশালী সাড়া দিচ্ছিল তার সঙ্গীর প্রতিটা আগ্রাসনে। কোমরের দুই পাশে হাত নিয়ে গিয়ে প্যান্টির ইলাস্টিক ধরে টেনে নামিয়ে আনলো হাঁটু অবধি। বাধাহীনভাবে প্যান্টিটা পায়ের তলা দিয়ে গলিয়ে অনিরুদ্ধর চোখ নিজেকে ধন্য করলো বৈশালীর নির্লোম যৌনাঙ্গ দর্শনে। যৌনাঙ্গের পাঁপড়ি দুটি যেন ঠিক দুটো কমলালেবুর কোয়া পরস্পরের সঙ্গে সেঁটে আছে। নারীর শরীরের প্রকৃত কূট সোঁদা গন্ধ নয়, ওখান থেকেও পারফিউমের আর্টিফিশিয়াল গন্ধ নাকে এলো অনিরুদ্ধর .. হয়তো বৈশালী নিজের যৌনাঙ্গেও পারফিউম ব্যবহার করে।
দু'আঙুল দিয়ে পাঁপড়ি দুটো দু'দিকে টেনে সরাতেই উন্মুক্ত হলো বৈশালীর যোনিদ্বার। অনিরুদ্ধ কখনো তার ডান হাতের মধ্যমা দিয়ে সেই পিচ্ছিল পথে নেড়ে-ঘেঁটে দেখতে লাগলো, আবার কখনো ভিজে যাওয়া আঙ্গুল আগুপিছু করে খেঁচে দিতে লাগলো তার প্রেমিকা বৈশালীর যৌনাঙ্গ। যা করার অনিরুদ্ধকেই করতে হতো অর্থাৎ অ্যাক্টিভ পার্ট নিতে হতো তার লজ্জাশীলা পত্নী অরুন্ধতীর সঙ্গে রতিক্রিয়ার সময়। কিন্তু এক্ষেত্রে তার প্রেয়সী অর্থাৎ বৈশালী অফিসের মতোই বিছানাতেও স্মার্ট এবং যথেষ্ট অ্যাক্টিভ, সেটা তার কার্যকলাপই বোঝা যাচ্ছিলো। উর্ধাঙ্গের জামা আগেই খোলা হয়ে গিয়েছিল .. আধশোয়া অবস্থায় উঠে বসে সে দ্রুতহস্তে অনিরুদ্ধর ট্রাউজার এবং ফ্রেঞ্চি দুটোই একসঙ্গে খুলে নিচে নামিয়ে দিলো। অতঃপর অনিরুদ্ধর ঠাঁটানো পুরুষাঙ্গ স্প্রিঙের মতো লাফিয়ে বেরিয়ে এলো ওর হাতে। শরীরের রঙের মতোই যথেষ্ট পরিষ্কার এবং নির্লোম শক্ত সবল অনিরুদ্ধর পুরুষাঙ্গের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো বৈশালী।
তারপর একটু মিষ্টি হেসে বৈশালী নিজের ডান হাত দিয়ে তার সঙ্গীর উত্থিত পুরুষাঙ্গ চেপে ধরে আগুপিছু করতে শুরু করলো। তারপর একটু উঠে এসে পরম উৎসাহে অনিরুদ্ধর চোখে চোখ রেখে নিজের ভেজা অথচ উষ্ণ জিভ দিয়ে চেটে দিচ্ছিলো পুরুষাঙ্গের মুন্ডিটা। এর পূর্বে তার স্ত্রীর সঙ্গে রতিক্রিয়ার সময় মুখমৈথুন করার প্রচেষ্টা বা উল্টো দিক থেকে ইচ্ছা প্রকাশ কোনোটাই হয়নি অনিরুদ্ধর জীবনে। এহেন শিহরণ জাগানো ব্লোজবের প্রক্রিয়াতে ক্রমশ উত্তেজিত হয়ে ডিগনিফায়েড সুন্দরী প্রেমিকার মুখগহ্বরের ভিতরে অনিরুদ্ধ আরও বেশী করে ঠেলে দিচ্ছিলো নিজের পুরুষাঙ্গ। বৈশালীর মুখগহ্বর থেকে নিঃসৃত লালা তথা ওর সমগ্র শরীরের উষ্ণতা .. সবকিছু শুষে নিতে ইচ্ছে করছিলো অনিরুদ্ধর।
এইভাবে আর কিছুক্ষণ মুখমৈথুন চলতে থাকলে হয়তো বৈশালীর মুখের মধ্যেই বীর্যস্খলন হয়ে যাবে তার। এর ফলে তার সঙ্গিনী মনোক্ষুন্ন হতে পারে, তাই অনিরুদ্ধ আর সময় নষ্ট না করে বৈশালীর শরীরের ওপরে মিশনারি পজিশনে নিজেকে মেলে ধরে ওর দুই উরু দুই দিকে ফাঁক করে যৌনাঙ্গের ভিতর গুঁজে দিলো নিজের উত্থিত রসসিক্ত পুরুষাঙ্গ। রসে ভিজে টইটুম্বুর থাকার ফলে যোনির ভেতর প্রবেশ করতে খুব বেশি বেগ পেতে হলো না অনিরুদ্ধর পুরুষাঙ্গকে। “আহ্হ্হ্হ্ ... আহ্হ্হ্হ্” অনিরুদ্ধর প্রতিটা ধাক্কায় তার সঙ্গিনীর গলা দিয়ে এইরূপ চাপা শীৎকারের ন্যায় শব্দ হতে লাগলো। অনিরুদ্ধ মৈথুনের গতি বাড়িয়ে সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে বৈশালীর স্তনবৃন্ত দুটিতে পালা করে জিভ দিয়ে খেলতে লাগলো। রতিসুখের উত্তেজনায় বৈশালী সমগ্র শরীর অনিরুদ্ধর শরীরের নিচে উদ্বেলিত হয়ে উঠছে। “থপ থপ থপ থপ” মৈথুনের এই একটানা শব্দ পরস্পরের কানেই বারংবার প্রতিধ্বনিত হয় ফিরে ফিরে আসছে।
বৈশালী শুধুই তার প্রেমিকা বা বর্তমানে তার যৌনসঙ্গিনী নয়, সেইসঙ্গে সে একজন পরস্ত্রী, যতই তারা সেপারেশনে থাক .. এটা ভেবেই অনিরুদ্ধর শরীরে এবং মনে এক অন্যরকম নিষিদ্ধ আনন্দের শিহরণ জেগে উঠছিলো। যৌনবেগে উত্তেজিত হয়ে অনিরুদ্ধ সজোরে কামড়ে ধরেছিলো বৈশালীর বাঁ'দিকের স্তনবৃন্ত আর সেইসঙ্গে বেড়ে গিয়েছিল তার মৈথুনের গতি। বৈশালী বোধহয় আন্দাজ করেছিল যে অনিরুদ্ধর যে কোনও সময় বীর্যপাত হয়ে যেতে পারে। "আহহ .. অনি .. আহহ .. প্লিজ বাইরে ফেলো কিন্তু .. তুমি প্রটেকশন না নিয়ে করছো, এটা মাথায় রেখো..” বৈশালী কথায় ঘোর কাটলো অনিরুদ্ধর।
হুঁশ ফিরলো অনিরুদ্ধর .. হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া দুই প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর এই মিলনে আগে থেকে কোনো প্ল্যান করা ছিল না, তাই বলাই বাহুল্য কন্ডমের প্যাকেট সঙ্গে আনা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে যে কোনো মুহূর্তে বীর্যস্খলন হয়ে যেতে পারে, তাই অনিরুদ্ধ মৈথুনের গতি আস্তে আস্তে কমিয়ে দিলো। বৈশালীর যৌনাঙ্গের ভিতর থেকে নিজের উত্তেজনার চরম শিখরে পৌঁছে যাওয়া ঠাঁটানো পুরুষাঙ্গটা বের করে আনলো, তারপর এক হ্যাঁচকা টানে বৈশালীকে উপুড় করে দিয়ে সেই অর্থে ওর ভারী এবং মাংসালো না হলেও সুডৌল নিতম্বের খাঁজে চেপে ধরলো তার গুদের রসে ভেজা নিজের পুরুষাঙ্গ। মুহুর্তের মধ্যে ভল্কে ভল্কে বীর্যরস বেরিয়ে বৈশালীর পাছার খাঁজ বেয়ে থাই এর দিকে গড়িয়ে পড়লো। দীর্ঘদিন অনভ্যাসের ফলে অনেকক্ষণ ধরে চলতে থাকা রতিক্রিয়ায় ক্লান্ত অনিরুদ্ধ তার প্রেয়সী বৈশালীকে জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে হাঁফাতে লাগলো। ওই অবস্থাতেই আবার মাঝে মাঝে ওর ঘাড়ের চুল সরিয়ে জিভ দিয়ে আঁকিবুঁকি করে দিতে থাকলো, কখনো আবার আলতোভাবে স্তনজোড়া মর্দন করতে করতে স্তনবৃন্তে সুড়সুড়ি দিচ্ছিলো অনিরুদ্ধ।
কিছুক্ষণ এইভাবে থাকার পর ক্লান্ত অনিরুদ্ধকে বিছানায় রেখেই বৈশালী উঠে পড়লো .. তখন বিকেল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যে হতে চলেছে। নিজের সেলফোনটা নিয়ে কারো সঙ্গে ফোনে কয়েক মিনিট কথা বলে বেডরুম সংলগ্ন বাথরুমে ঢুকে গেলো নিজেকে পরিষ্কার করতে।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন